ভালোবাসার নতুন প্রনয়ণ পর্ব-১২

0
680

গল্পের নামঃ- #ভালোবাসার_নতুন_প্রনয়ণ

লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)

part:12

হূর এক হাতে ছাতা আরেক হাতে শাড়ির কুঁচি ধরে হাটছে। বেশি দূর না আরেকটু৷ পার্ক সম্পূর্ণ ফাঁকা। বৃষ্টির কারণে কোনো পাখির আনাগোনাও নেই। হূর একটু সামনে আগেতেই দূরে থেকে দেখতে পায় কেউ দাঁড়িয়ে আছে গাছের নিচে যদিও ভিজে একাকার। হূরকে দেখে হূরের দিকেই আসছে সে। হ্যা এটা আর কেউ না সেই ব্যক্তি । সাদা পান্ঞ্জাবি কালো মাস্ক। মাঝে মাঝে আবার বাতস। ব্যক্তিটা যতো কাছে আসছে হূরের ভয়টা দিগুণ বারছে। লোকটা কাছে আসতেই হূর লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে

” আপনি এখানে? এরিশ মাস্ক টা খুলে বলে

” হুমম আমি হূরপরি। হূর এবার বুঝে যায় এটা এরিশই ছিল। হূর বলে

” এইসবের মানে কি?? এরিশ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে

” খুব সোজা আই লাভ ইউ। হূর বলে

” আপনি বললেই তো আর হলো না। আর আপনি যা বলছেন সেটা কখনোই সম্ভব না৷ একে তো পরিবারে ঝামেলা হবে, আর দ্বিতীয় আপনাকে আমি লাইক করি না । এরিশ মুচকি হাসি দিয়ে বলে

” হুমম তা আর বলতে হবে না। যদি কিছু ফিল নাই করতি তাহলে আর বৃষ্টি মাথায় করে এখানে আসতি না। হূর এখন এর জবাব কি দিবে। কিছু সময় চুপ করে হূর বলে

” আপনি কে সেটা জানার জন্যই এখানে আসা। এরিশ হূরের চোখের দিকে তাকিয়ে বলে

” হুমমম তা মানলাম। কিন্তু আমি যে বললাম নীল শাড়ি পরে আসতে তাহলে সেই শাড়ি পরে আসার কি দরকার ছিল? বা এই বৃষ্টির মাঝেই বা কেন? হূর কি বলবে!! এর উত্তর তার কাছে নেই। হূর বলে

” বাসায় গিয়ে দিয় দিব আপনার শাড়ি। এরিশ হূরের হাত থেকে ছাতাটা নিয়ে বলে

” শাড়ি দিবি ভালো কথা, বারণ করবো না কিন্তু দিলে এখনই দিতে হবে নয়তো আমি নিব না। এরিশের এমন কথা শুনে হূর রেগে বলে

” আপনি একটা জঘন্য রকম খারাপ মানুষ। এরিশ হূরের হাত ধরে বলে

” আই নো বেইবি। এতটা সময় হূরও ভিজে গিয়েছিস। এরিশ বলে

” এখন কথা না বলে বাসায় চল নয়তো জ্বর, স্বর্দি লাগবে। হূর বলে

” দেখুন আপনি যা বলছেন তা কখনোই সম্ভব না। এরিশ বলে

” কেন তুই মানুষ না পেত্নী? তোর জ্বর, স্বর্দি লাগবে না!!? হূর রেগে বলে

” আহাম্মক, আমি সেটা বলিনি আপনি যে বলেন আপনি আমাকে লাইক করেন ঐটা বলছি। এরিশও এবার রাগ জড়ানো কন্ঠে বলে

” একটা কথা বলবি কানের নিচে দিব সোজা এই কাঁদায় গরাগরি খাবি। বাসায় চল।

হূর এরিশকে কিছু না বলেই আগে আগে হাটতে লাগে। এরিশও তাকিয়ে আছে হূরের যাওয়ার পানে। পরে নিজেও যেতে লাগে হূরের সাথে।

____________

বাসায় এসে হূর মাথা মুছে ফ্রেশ হয়৷ তারপর নিজের গলার চেন টা খুলে পা বাড়ায় এরিশের রুমের দিকে। হূর ভাবে যদি আবার কিছু করে বসে। তাও পর্দা সরিয়ে উুকিঁ দিয়ে দেখছে এরিশ আছে কি না?! তখনই হূরের হাতের নিচে আরেকজন উুঁকি দেয়। হূর তাকিয়ে দেখে আলাইনা। আলাইনা হূরকে উদ্দেশ্য করে বলে

” আপ্পি তুমি কি চুরি করতে এসেছে?? হূর আলাইনার দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলে

” আমি কেন চুরি করব!? তুমি এখানে?? আলাইনা চোখ ছোট ছোট করে বলে

” আমি এখানে! তুমি কি কর?? নিশ্চয়ই কিছু একটা কান্ড করেছ,। হূর বলে

” না, আমি কি করব! সব করেছে তোমার ঐ এরিশ নামক প্যারিস ভাই।
তখনই কেউ হালকা কাশি দেয়। আলাইনা আর হূর তাকিয়ে দেখে এরিশ দাড়িয়ে। আলাইনা হূরের দিকে তাকিয়ে বলে

” লে হালুয়া। অখে বায় আমি যাই নিচে। বলেই আলাইনা দৌড়। আলাইনাকে দৌড়ে দিতে দেখে হূরও দৌড় দিতে যাবে তখনই এরিশ হূরের হাত ধরে টেনে নিজের রুমে নিয়ে আসে আর দরজটা বন্ধ করে দেয় । সেটা দেখে হূর বলে

” এই এই কি করছেন? কেউ দেখে ফেলবে। ছাড়ুন ছাড়ুন। এরিশ হূরকে ধমক দিয়ে বলে

” চুপ। হূর বলে

“, কেউ দেখলে কি না কি ভাববে? এরিশ বলে

” কি আর ভাববে? তোকে আমার সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে। আমার আর কিছু করতে হবে না৷ আর দরজা বন্ধ কেউ দেখবে না। হূর এরিশকে বলে

” পথ ছাড়ুন। এরিশ ভ্রু কুচকে বলে

” এই তুই কি আসলেই অন্ধ?? আমি কি পথ ধরে রেখেছি!? আর আমার রুমে এইভাবে বিড়ালের বাচ্চার মতো কি করছিলি?? তখনই হূরের মনে পরে চেনটার কথা। চেনটা এরিশের দিকে এগিয়ে দেয় আর বলে

” এই যে এটা দিতে এসেছিলাম। এরিশ বলে

” তোর কাছে ২ টা সুযোগ আছে….. ১ এটাকে চুপচাপ পরে থাক। ২….. ইচ্ছে না হলে ফেলেদে। আর হ্যা এটা ফেলে দিলে একটা চড় এইদিক সেইদিক যাবে না সব তোর গালে বসবে। হূর বলে

” এটা কেমন কথা!? এরিশ হূরের হাত ধরে একটা চুমু দিয়ে বলে

” সত্যি তো বললাম৷ হূর নিজের হাত ছাড়িয়ে বলে

” এই স্বভাবটা পাল্টান। হুটহাট চুমু হাত ধরা। এইসব কি?? কেউ দেখলে কি ভাববে?? এরিশ হূরকে উদ্দেশ্য করে বলে

” কথাটা মানতে পারছি না। কারণ আমার প্রতিটা স্পর্শ পবিত্র। দেখলে দেখুক। হূর বলে

” মানে!! এরিশ হূরকে উদ্দেশ্য করে বলে

” তোকে বলতে আমি বাধ্য না। আমার রুম থেকে বেড়িয়ে যা দুই মিনিট সময়।

হূরকে আর পায়কে তাড়াতাড়ি করে বেড়িয়ে যায় হূর কিন্তু সব কেমন আজব আজব লাগছে!? হূরের তো এখানে রাগ করার কথা ছিল৷ রিয়াকশন টা আলাদা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে কাজ করছে কিছুটা ভালোলাগা, কিছু টা ভয়, আবার কিছুটা সংশয়। হূর জানে এটা কখনোই ফ্যামেলি মানবে না। কারণটা সবারই জানা। তাও এরিশ কেন এমন করছে।

এইসব ভাবছে আর নিচে গিয়ে ড্রয়িং রুমে বসে পরে আলাইনার সাথে। আলাইনাকে দেখে হূর বলে

” আমাকে একা ফেলে পালালে কেন? আলাইনা বলে

” পালালাম কই? নিচে আসলাম। আম্মু না আলাইনা বলে ডাকলো?? হূর বলে

” অহহ আচ্ছা খেয়াল করিনি। তখনই এরিশ নিচে আসে আর তার আম্মুকে ডাকতে লাগে

” আম্মু….আম্মু এক কাপ কফি নিয়ে আসো না। আলাইনা রেগে এরিশের দিকে তাকিয়ে বলে

” এমন ষাঁড়ের মতো না চেঁচিয়ে রান্না ঘরে গিয়ে বললেই তো পারো?? আমি এখন সিরিয়াল দেখছি। যাও ডিসট্রাব করবা না। এরিশ আলাইনার চুল টেনে বলে

” ঐ তোর বয়সই বা কত? সিরিয়াল দেখছিস?? আলাইনা বলে

” এরিশ ভাইয়া নামক প্যারিস ভাইয়া চুল ছাড়ো আমার নয়তো আমি বড় বাবাইকে বলে দিব তুমি সিগারেট খাও। আমি নিজে দেখেছি। পরে বাঁশ খেয় পান্ডার মতো।

সাথে সাথে এরিশ আলাইনার চুল ছেড়ে দেয়। আর রান্না ঘরে যেতে যেতে মিন মিন করে বলে

” আজ যদি যতীন্দ্রমোহন বাগচী বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়তো নতুন করে এমন কিছু লিখতেন।

“বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ
চাঁদের জায়গায় চাঁদ রয়েছে বাঁশগুলো সব কই??” এই আলুর বাচ্চির জন্য জীবনটা আমার শেষ।

অপর দিকে হূর আলাইনার কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ। আলাইনা বলে

” হূর আপ্পি চুপ করো না। হূরও আলাইনাকে একা ছেড়ে দেয় আর রুমে চলে আসে।

____________

ভার্সিটি গিয়ে ক্লাসে ব্যস্ত হূর তখনই হূরের নজর যায় বাইরে দেখে এরিশ দাড়িয়ে। এরিশ হূরকে ইশারায় বলে বাইরে আসতে। হূর ইশারায় বলে না। এরিশ বলে

” তুই আসবি নাকি আমি আসবো?? হূর বলে

” না না। আমি আসছি। হূর কিছু বলতে যাবে তখনই

ক্লাস টিচার বলে

” হূর কি হয়েছে কোন সমস্যা?? তখনই এরিশ টিচারের পারমিশন নিয়ে ভিতরে আসে আর বলে

” স্যার বাসায় থেকে কল এসেছে। হূর আর আমাকে এখনই বাসায় ফিরতে বলেছে। টিচার বলে

” আচ্ছা হূর যাও। হূর তো ইচ্ছে মতো বকছে এরিশকে অহি আর তিথিও কিছু বলে না৷

চলবে