ভালোবাসার চেয়েও বেশি পর্ব-৫৯+৬০

0
2358

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি 💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৫৯

★ তানি একটা বোলের ভেতর অনেক গুলো চিট দিয়ে, বোলটা টি টেবিলের রেখে বললো।
…..এই বোলের ভেতর অক্ষর ওয়ালা চিট আছে। এর ভেতর থেকে একটা করে চিট তুলতে হবে। চিটে যে অক্ষর আসবে সেই অক্ষর দিয়ে গান গাইতে হবে । চিট উঠানোর দশ সেকেন্ডের মধ্যেই গান গাইতে হবে। নাহলে সে দল হেরে যাবে। বোঝা গেছে। তাহলে শুরু করা যাক।

সবাই মাথা ঝাকিয়ে সায় জানালো।

আবির বলে উঠলো।
….যেমন সবকিছুর আগে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। তেমনি এখনও আমরা জাতীয় সংগীত গেয়েই শুরু করবো। কারণ আমি একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক।

তানি বললো।
…ঠিক আছে, ঠিক আছে শুরু করো।

…কি শুরু করো। সবাইকে দাঁড়িয়ে গাইতে হবে। জাতীয় সংগীতের সম্মান দিয়ে গাইতে হয়। হুহ্ তুমি তো দেখছি কিছুই জানো না। তাতে আবার আইছে গানের কলি খেলতে।
তানি একটা ভেংচি কেটে দাঁড়িয়ে পড়লো।তারপর সবাই একসাথে দাড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়া শুরু করলো।

♬ আমার সোনার বাংলা
♬ আমি তোমায় ভালোবাসি ই ই ই
♬ চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস
♬ আমার প্রাণে,ওমা আমার প্রাণে
♬ বাজায় বাঁশি সোনার বাংলা
♬ আমি তোমায় ভালোবাসি ই ই ই
(সংক্ষিপ্ত)

এদের দেখে মনে হচ্ছে এরা কোনো যুদ্ধ জয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে।

জাতীয় সংগীত গাওয়া শেষে তানি বলে উঠলো। তাহলে এখন চিট তোলা যাক। কে তুলবে আগে?

তাসির বলে উঠলো।
…লেডিস ফাস্ট। তোমরাই আগে তোলো।

তানি ওকে বলে বোলের ভেতর থেকে একটা চিট তুললো। চিট খুলে সবাইকে দেখালো। চিটে ব লেখা আছে।

চিট দেখানোর সাথে সাথে আবিররা কাউন ডাউন শুরু করে দিয়েছে।
….টিক টিক ওয়ান টিকটিক টু

তানিরা তাড়হুড়ো করে গান মনে করার চেষ্টা করছে। আবিরদের পাঁচ পর্যন্ত গুনতেই তানি চট করে গেয়ে উঠলো।
♬ ♬ বাবলি না, আমি লাভলি না
♬ ♬ নইরে বিল্লো রানী
♬ ♬ খেলি ছিনিমিনি ছিনিমিনি ছিনিমিন
♬ ♬ মন নিয়ে ম্যাজিক মামনী
(তানি আবিরকে দেখিয়ে দেখিয়ে মেয়েদের সাথে নাচতে নাচতে গাইলো)
♬ ♬ হিরণী জেইছি আঁখে আমার
♬ ♬ চেহরা নূরানী
♬ ♬ খেলি ছিনিমিনি ছিনিমিনি ছিনিমিনি
♬ ♬ মন নিয়ে ম্যাজিক মামনী।
(সংক্ষিপ্ত)

আবির কম্পিটিশন কি করবে।তানির আদা দেখেই ফিদা হয়ে গেছে। আবালের মতো হা করে তাকিয়ে আছে তানির দিকে। সায়েম সেটা দেখে আবিরের কাধে হালকা ধাক্কা দিয়ে আস্তে করে বললো।
…..ব্রো ফোকাস, ফোকাস। এসব মেয়েদের ষড়যন্ত্র আমাদের দূর্বল করার জন্য। তুমি একদম ওদের ফাঁদে পা দিওনা।

আবির একটু নড়েচড়ে বসে বললো।
….হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিকই বলেছিস। আমি একদম ওদের ফাঁদে পা দিবনা।
এরপর আবির চিট তুললো। ওর চিটে স অক্ষর আসলো।

আবিররা গান মনে করতে লাগলো। আর তানিরা কাউন ডাউন শুরু করলো।
আবিরের গান মনে আসতেই, বাঁকা হেসে তানিদের দেখিয়ে টিচ করে গাইলো
♬ ♬ সুন্দরীদের মনে কি ছলনা
♬ ♬ আমার বাবার বাবাও তা জানেনা
♬ ♬ নারী হইলো বহুরূপী অন্তরে বাহিরে
♬ ♬ শাড়ী বদল করার মতো
♬ ♬ মন যে বদল করে
♬ ♬ তোমারা ছুরির ফলা
♬ ♬ জানো ষোলো কলা

♬ ♬ আমার বাবার বাবাও তা জানে। না।
♬ ♬ সুন্দরীদের মনে কি ছলনা
♬ ♬ আমার বাবার বাবাও তা জানেনা
(সংক্ষিপ্ত, এখানে শুধু মেল লিরিক্সগুলো দেওয়া হয়েছে)

আবিরের গান শুনে তানি রাগী চোখে তাকালো আবিরের দিকে। আবির সেটা দেখে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিল।

এবার নিশি চিট তুললো। ওর চিটে ফ অক্ষর এসেছে।

সায়েম আবিরের কানে কানে বললো।
…ওতো ননস্টপ বকবকই করতে পারে। গান কি গাইবে।

তবে সায়েম কে ভুল প্রমাণ করে নিশি মোবাইল সামনে নিয়ে হেলেদুলে গেয়ে উঠলো।
♬ ♬ ফেসবুক,ওয়াটস আপ,ইমো ভাইবার
♬ ♬ মনে লয় বন্ধু তোমায় দেখি বারবার
♬ ♬ এই পরাণে নাহি চায়
♬ ♬ আর তো দূরে দূরে নয়
♬ ♬ মোবাইল ফোনে ওইমুখ দেইখা
♬ ♬ দিওয়ানা হলেম

♬ ♬ এযে নজর কারা,ঝটকা লাগা
♬ ♬ ডিজিটাল প্রেম
♬ ♬ এযে ঝটকা লাগা,নজর কারা
♬ ♬ ডিজিটাল প্রেম
(সংক্ষিপ্ত)

সায়েম হা হয়ে তাকিয়ে আছে নিশির দিকে। আবির সেটা দেখে বলে উঠলো।
….কিরে আমাকে জ্ঞান দিয়ে, এখন নিজেই মতিভ্রষ্ট হয়ে গেলি?

সায়েম নড়েচড়ে বসে বলল।
….আরে নানা আমি ঠিক আছি
ওটা কিছুই না।

এবার সায়েম চিট তুললো।ওর চিটে ঝ এসেছে।

সায়েমরা সবাই অনেক চিন্তা করেও ঝ দিয়ে কোনো গান খুঁজে পাচ্ছে না। এদিকে তানিটা জোরে জোরে কাউন ডাউন শুরু করে দিয়েছে। কাউন ডাউনের শেষের দিকে এসেই সায়েমের গান মনে পড়ে গেল। সায়েম উঠে দাঁড়িয়ে দুই হাত ছড়িয়ে দিয়ে নাচতে নাচতে গাইলো।
♬ ♬ ঝাকানাকা ঝাকানাকা ঝাকানাকা
♬ ♬ দেহ দোলা না
♬ ♬ ঝাকানাকা ঝাকানাকা ঝাকানাকা
♬ ♬ দেহ দোলা না
(আবির আর তাসিরও সায়েমের সাথে উঠে দাঁড়িয়ে একসাথে কোমড় বামে ডানে দুলিয়ে নাচতে নাচতে গাইলো)
♬ ♬ মিরাবাঈ
♬ ♬ হেইলা দুইলা হেইলা দরবার নাচায়
♬ ♬ মিরাবাঈ
♬ ♬ হেইলা দুইলা হেইলা দরবার নাচায়

♬ ♬ ঝাকানাকা ঝাকানাকা ঝাকানাকা
♬ ♬ দেহ দোলা না
♬ ♬ মন বলে,মন বলে,মন বলে
♬ ♬ দেহ ঝাকা না
(সংক্ষিপ্ত)

পুরো গানটাতে তিনজন উড়া থুরা ডান্স করে, এটিটিউড নিয়ে বসে পরলো।

এরপর সানা চিট তুললো। সানার চিটে আ অক্ষর আসলো। সানা কতক্ষণ ভেবে গাওয়া শুরু করলো।
♬ ♬ আমি বঁধু সেজে থাকবো
♬ ♬ তুমি পালকি নিয়ে এসো
♬ ♬ শুধু দৃষ্টি বিনিময়ে
♬ ♬ একটু মিষ্টি করে হেসো।
♬ ♬ এই ছোট্ট জীবনে
♬ ♬ চাইনা কিছু আর
♬ ♬ শুধু ভালবেসো

♬ ♬ আমি বঁধু সেজে থাকবো
♬ ♬ তুমি পালকি নিয়ে এসো
(সংক্ষিপ্ত)

গান গাওয়ার সময় সানা আরচোখে বারবার তাসিরের দিকে তাকাচ্ছিল। তাসিরও নিচের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছিল। নূর এসব ভালোই খেয়াল করছিল।

এবার তাসির চিট তুললো।তাসিরের চিটেও এলো আ। তাসির কতক্ষণ ভেবে গাওয়া শুরু করলো।
♬ ♬ আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
♬ ♬ আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
♬ ♬ গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান
♬ ♬ মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম
(আবির স্টিলের পাতিল এনে তবলা বাজাতে লাগলো। আর সব ছেলেরা মিলে একসাথে গাইতে লাগলো)
♬ ♬ আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
♬ ♬ আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম
(সংক্ষিপ্ত)

এবার আদিত্য চিট তুললো। আদিত্যের চিটে এলো ভ। আদিত্য কোনো সময় না নিয়েই মুচকি হেসে নূরের দিকে তাকিয়ে গেয়ে উঠলো।
♬ ♬ ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু
♬ ♬ তোমায় যতনে
♬ ♬ আমার মনের ঘরে চাদের আলো
♬ ♬ চুইয়া চুইয়া পড়ে

♬ ♬ দুধে আলতা গায়ের বরন
♬ ♬ রুপযে কাঁচা সোনা
♬ ♬ আঁচল দিয়া ঢাইকা রাইখো
♬ ♬ চোখ যেন পড়ে না

♬ ♬ আমি প্রথম দেখে পাগল হইলাম
♬ ♬ মন যে আর মানে না
♬ ♬ কাছে আইসো আইসোরে বন্ধু
♬ ♬ প্রেমের কারণে
♬ ♬ ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু
♬ ♬ তোমায় যতনে
(সংক্ষিপ্ত)

গান শেষ হয়ে গেছে। তবুও আদিত্য আর নূর এখনো একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়েই আছে। চোখের পলকই পরছে না।

আবির আদিত্যর কাঁধে হালকা ধাক্কা দিয়ে বললো।
….ভাই গান শেষ হয়ে গেছে। বাস্তবে ফিরে আয় ভাই।

আবিরের কথায় সবাই হেসে দিল।

এবার চিট তুললো নূর। নূরের চিটে এলো ত। নূর মুচকি হেসে আদিত্যের দিকে তাকিয়ে গাইলো।
♬ ♬ তুমি আমার এমনই একজন
♬ ♬ যারে একজনমে ভালোবেসে
♬ ♬ ভরবে না এ মন

♬ ♬ এক জনমের ভালোবাসা
♬ ♬ এক জনমের কাছে আসা
♬ ♬ দুইটি চোখের পলক পরতে
♬ ♬ লাগে যতক্ষণ

♬ ♬ তুমি আমার এমনই একজন
♬ ♬ যারে ভালোবেসে ভরবে না এ মন
(সংক্ষিপ্ত)

দুইজন আবারও দুইজনের দিকে মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

আবির বিরক্তির সুরে বললো।
….কেয়া মুসিবাত হে ইয়ার? আমরা খেলায় কন্সেন্ট্রেট করবো। নাকি বারবার এদের হুঁশ ফেরাবো। আমি ভেবে পাইনা এরা এতো রোমাঞ্চ পায় কোথা থেকে?

আবিরের কথায় আবারও সবাই হেসে দিল।

তানি মনে মনে ভাবলো, এইভাবে চলতে থাকলে খেলা শেষ হবে না। কিছু একটা তো করতে হবে। তানি নূরের দিকে ঝুঁকে ফিসফিস করে বললো।
….শোন, আমাদের জিততে হলে তোর জিজুকে ডিসট্রাক করতে হবে।

নূর ভ্রু কুঁচকে বললো।
….কিন্তু কিভাবে?

…..এটাও আমাকে বলে দিতে হবে? বিয়ে তোর হয়েছে না আমার হয়েছে? যাইহোক শোন, যখন ওদের পালি আসবে, তুই তখন জিজুর দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে লাজুক লাজুক হাসবি। তাতেই কাজ হয়ে যাবে। জিজুকে ছাড়া ওরা এমনিতেই হেরে যাবে।

….কিন্তু এটাতো চিটিং হবে?

….হ্যাঁ তো?তুই কি চাস আমরা ওদের কাছে হেরে যাই? আমাদের নাক কাটা যাক? দেখ তুই যদি আমার কথা না শুনিস তাহলে কিন্তু আমি আর কখনো তোদের আসবোনা হুহ।

নূর আর উপায় না পেয়ে রাজি হয়ে গেলো।

এবার আবির চিট তুললো। চিটে এলো ড। আবির ড দিয়ে কোনো গান খুঁজে পাচ্ছে না। আবির সাহায্যের জন্য ওর টিমের দিকে তাকালো। নাহ ওদেরও কারোর মনে আসছে না। আবির আদিত্যর দিকে তাকালো।
তখনই তানি নূরকে খোঁচা মেরে ওর একশান শুরু করতে বললো।
তানির কথামতো নূর আদিত্যের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে লাজুক লাজুক হাসছে।

আদিত্য তো এমনিতেই নূরের দিওয়ানা। তারওপর নূরের এমন আবেদনময়ী মুভমেন্ট দেখে আদিত্যের মাইন্ড কোমায় চলে গেলো। ও মন্ত্রমুগ্ধের মতো হা করে নূরের দিকে তাকিয়ে রইলো।

এদিকে যে আবির ওকে ঢেলে যাচ্ছে, সেদিকে ওর কোনো হুশই নেই।
তানিরা জোরে জোরে কাউন ডাউন শুরু করে দিয়েছে। এবং শেষমেশ গান মনে না করতে পেরে ছেলেরা হেরে গেল।

আর ছেলেরা হেরে যেতেই তানি,সানা আর নিশি হই হই করে সোফায় উঠে লুঙ্গি ডান্স শুরু করে দিল। নূরও নরমাল হয়ে বসে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে লাগলো।

ওদের হইচই শুনে আদিত্যের ঘোর কাটলো। আদিত্য পাশে তাকিয়ে দেখলো আবির, তাসির আর সায়েম ওর দিকে ক্ষুদার্ত বাঘের মতো ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আদিত্য ভ্রু কুঁচকে বললো।
….কিরে তোরা এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? আমি কি করেছি?

আবির দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
…..কি করেছিস তাইনা? সালা, আমার আগেই মনে হয়েছিল যে ধোকা দিবি। তোর জন্য আজ আমরা হেরে গেলাম। এর প্রতিশোধ তো নিয়েই ছাড়বো দেখে নিস।

একটু পরে তানিরা ঠিক হয়ে বসে ছেলেদের দিকে তাকিয়ে বললো।
….তো, চ্যালেঞ্জের কথা নিশ্চয় মন আছে?তোমরা যেহেতু হেরে গেছ, তাই এখন আমরা যা বলবো তোমাদের তাই করতে হবে। রেডিতো তোমরা?
তানি সয়তানি হাসি দিয়ে বললো।
….ইট’স গোনা বি ফান গাইস। মুহ হা হা হা😈

তানির এমন হাসি দেখে আবিরের গলা শুকিয়ে আসছে। নাজানি এখন এরা কি করবে আমাদের সাথে? আবির তানির দিকে তাকিয়ে জোরপূর্বক একটা হাসি দিয়ে বললো।
…..তানি, আমার কিউটি কিউটি বেবি। তুমি আমার সাথে কিছু করবে না তাইনা? আমি না তোমার সুইট সুইট বয়ফ্রেন্ড? তুমি যা করার ওদের সাথে করো হ্যাঁ?

তানি বাঁকা হেসে বললো।
….নো নো ডিয়ার। এখন কোনো মেলোড্রামায় কাজ হবে না। চ্যালেঞ্জ যখন একসেপ্ট করেছ তখন পুরোন তো করতেই হবে।

সানা বলে উঠলো।
….হ্যাঁ তানি আপু ঠিকই বলেছে। তোমরা না বলো বি এ্যা ম্যান, বি এ্যা ম্যান। তো ম্যানগিরি কই গেল। চ্যালেঞ্জের সময়তো খুব এটিটিউড দেখিয়েছিলে। এখন সব ফুস হয়ে গেলো?

তাসির বলে উঠলো।
…..ঠিক আছে, ঠিক আছে। আমরা কি ভয় পাই নাকি? বলো কি করতে হবে?

তানি বাঁকা হেসে বললো।
….তেমন কিছুই না। শুধু একটু ডান্স করে দেখাতে হবে। আর কিছুই না। সবসময় শুধু মেয়েরা নাচনেওয়ালী সেজে নাচে আর ছেলেরা রাজা বাদশার মতো বসে বসে মজা নেয়। তাই আজ তোমরা নাচবে আর আমরা রাজা বাদশার মতো বসে বসে মজা নিবো।

আবির হাফ ছেড়ে বললো।
….আরে এইটুকু সামান্য ব্যাপার? শুধু নাচতেই তো হবে, এ আর এমন কি? আমরা এখুনি তোমাদের নেচে দেখাচ্ছি।

তানি বললো
…..আঃ আঃ আঃ, দেয়ার ইস আ টুইস্ট বেবি। তোমরা নাচবে ঠিকই, তবে গান আমরা সিলেক্ট করবো। আর গানের থিম অনুযায়ী তোমাদের ওইরকম কসটুম পরতে হবে।

সানা বললো।
…আর কসটুমের সাথে ওইভাবে মেক আপও করতে হবে।

আবির বলে উঠলো।
….মেক আপ? মেক আপ আবার কিসের? আমরা কি মেয়েদের মতো আটা ময়দা মাখবো নাকি?

তানি বলে উঠলো।
…এখুনি বুঝতে পারবে। চলো আমরা তোমাদের রেডি করে দিচ্ছি।
কথাটা বলে তানি, সানা আর নিশি আদিত্য বাদে বাকি তিনজনকে রুমের ভেতর নিয়ে গেল রেডি করতে।

প্রায় আধাঘন্টা পর ওরা বেড়িয়ে এলো। তানিদের পিছু পিছু আবিররা মাথা নিচু করে আসছে। ড্রয়িং রুমে এসে তানিরা সরে যেতেই আদিত্য আর নূর আবিরদের দিকে তাকালো। আর তাকাতেই ওদের চোখ চড়কগাছ হয়ে গেলো। চোখ দুটো কোটর থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম ওদের।
আবির, তাসির আর সায়েম তিনজনকেই একটা করে আনারকলি ড্রেস পড়ানো হয়েছে । ওড়না গুলো মাথায় ঘোমটার মতো করে দিয়ে দেয়া আছে। চোখে লম্বা আর মোটা করে কাজল,ঠোঁটে চারিদিকে ছড়িয়ে লিপস্টিক দিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোটকথা সব মিলিয়ে কোনো জোকারের চেয়ে কম মনে হচ্ছে না। বেচারারা মন খারাপ করে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

আদিত্য আর নিজের হাসি আটকিয়ে রাখতে পারলো না। হো হো করে অট্টহাসিতে ফেটে পরলো।হাসতে হাসতে সোফায় গড়িয়ে পড়লো।নূরও অনেক চেষ্টা করেও নিজের হাসি আটকাতে পারছে না। নূরও আস্তে আস্তে হাসতে লাগলো।

আবির কপট রাগ দেখিয়ে তানির দিকে তাকিয়ে বললো।
….দিস ইস নট ফেয়ার তানি। আমাদের এই হাল করেছ অথচ আদিত্যকে কিছুই করোনি? ওতো আমাদের দলে ছিল? বরং ওরতো আরো বেশি শাস্তি হওয়া দরকার। কারণ ওর জন্যই আমরা হেরে গেছি।

তানি বলে উঠলো।
….আদিত্য ভাইয়া আমার জিজু। তাই ওনাকে এসব শাস্তি দেওয়া যায় না। আর তাছাড়া চ্যালেঞ্জ তো তোমরা করেছ। জিজু তো আর করেনি। তাই ওনাকে কিছু করবো না।

আদিত্য মুচকি হেসে বললো।
…লাভ ইউ শালি সাহেবা।

তানিও মুচকি হেসে বললো।
….মেনশন নট জিজু।

আবির রাগে কটমট করে তাসিরের কানে আস্তে করে বললো।
….আমাদেরকে এভাবে ফাসিয় দিয়ে উনি মজা নিচ্ছে। দেখাচ্ছি মজা, রোমাঞ্চ করার খুব সখ না উনার। আজ জম্মের রোমাঞ্চ করাবো। শোন আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে।
আবির তাসিরের কানে প্ল্যান বললো।

তানি সোফায় আরাম করে রাজাদের মতো করে বসে। আবিরদের দিকে তাকিয়ে আদেশের মতো করে বললো।
…তাহলে শুরু তোমরা তোমাদের নাচ।আর আমাদের মনোরঞ্জন করো।
কথাটা বলে তানি গান প্লে করলো।

♬ ♬ ইয়ে কিসকা হে আহাট
♬ ♬ ইয়ে কিসকা হে ছায়া
♬ ♬ হুই দিলমে দাসতাক
♬ ♬ ইহা কন আয়া

♬ ♬ হামপে এ কিসনে হারা রাঙ ডালা
♬ ♬ ওও হামপে এ কিসনে হারা রাঙ ডালা
♬ ♬ খুশী নে হামারি হামে এএএ
(আবিররা নিচে ফ্লোরে বসে দুই হাত সামনে রেখে ঘষে ঘষে সামনের দিকে এগুচ্ছে, আবার এক হাত কপালে ঠেকিয়ে মাধুরির স্টেপ করতে করতে গাইলো।)
♬ ♬ মার ডালা,ও মার ডালা
♬ ♬ মার ডালা, মার ডালা, মার, ডালা

♬ ♬ হামপে এ কিসনে হারা রাঙ ডালা
♬ ♬ খুশী নে হামারি হামে মার ডালা
♬ ♬ হামে মার ডালা,হামে মার ডালা
♬ ♬ হামে এএএএ মার ডালা
♬ ♬ আল্লাহ মার ডালা, আল্লাহ মার ডালা আল্লাহ
(সংক্ষিপ্ত)

তানিরা নাচ দেখতে দেখতে রাজা বাদশাদের মতো ফুলের মালা ছুড়ে দিতে লাগলো।

গান শেষে তানি বলে উঠলো ।
….বাহ্ কেয়া বাত,কেয়া নাত, কেয়া বাত। মুগাম্বো খুশ হুয়া।

আদিত্যর এদিকে হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ।

আবির বাঁকা হেসে তাসিরের দিকে তাকিয়ে ইশারা করলো ওদের প্ল্যান চালু করতে। তাসির মাথা নেড়ে গিয়ে মিউজিক প্লেয়ারে একটা গান চালু করলো।
তারপর ওরা তিনজন ধীরে ধীরে আদিত্যের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।
ওদের কে এভাবে আসতে দেখে আদিত্য একটু থতমত খেয়ে গেল। মনে মনে ভাবলো,এরা এদিকে আসছে কেন?এদের হাবভাব সুবিধার মনে হচ্ছে না।

আবির আদিত্যর একপাশে এসে আদিত্যের কাঁধের ওপর ঝুকে পড়ে মেয়েদের মতো করে সিডিউস করার ভঙ্গিতে গেয়ে উঠলো।
♬ ♬ ও বেবি কাম টু মি
(সায়েম আদিত্যের আরেক কাঁধের উপর ঝুকে একই ভঙ্গিতে গেয়ে উঠলো)
♬ ♬ রাত হে জাওয়া জাওয়া জাওয়া
(তাসির আদিত্যের পিছনে এসে পিঠে স্লাইড করে গাইলো)
♬ ♬ ওয়াই ডোন্ট ইউ লাভ মি মোর
(এদের কাজকর্ম দেখে আদিত্যর বুঝতে বাকি নেই যে এরা কি করতে চাচ্ছে। আদিত্য ওদের কে ছাড়িয়ে উঠে যেতে নিলেই আবির আদিত্যর হাত ধরে কাছে যেয়ে গাইলো)
♬ ♬ জাতা হে কাহা কাহা কাহা
(আবির, তাসির আর সায়েম আদিত্যকে ঘিরে ধরে নানা ভাবে ছুঁয়ে ছুঁয়ে একে একে গেয়ে উঠলো )
♬ ♬ মজা কারাউঙ্গি,
♬ ♬ হ্যাভেন দেখাউঙ্গি
♬ ♬ লাইফ মে লে লে থোরা রিস্ক

♬ ♬ আই ওয়ানা তেরা ইস্ক ইস্ক
♬ ♬ তেরা ইস্ক ইস্ক
♬ ♬ তেরা ইস্ক ইস্ক
♬ ♬ মেরে জানিয়া

♬ ♬ আই ওয়ানা তেরা
♬ ♬ আই ওয়ানা তেরা
(আদিত্যকে নিয়ে তিনজন টানাটানি শুরু করে দিল। একজন চুল ধরে টানাটানি করছে, তো একজন কোমড়ে শুরশুরি দিচ্ছে। আবার আরেক জন পা ধরে টানাটানি করছে। একসময় আদিত্যকে নিচে ফেলে দিয়ে, আবির আদিত্যর উপর চড়ে গাইলো।)
♬ ♬ ওনলি ফর ইউর তারসে বডি
♬ ♬ তাড়পে মেরি সোল ভে
♬ ♬ তাড়পে মেরি সোল ভে
♬ ♬ তাড়পে মেরি সোল ভে

♬ ♬ ডোন্ট গো অ্যাওয়ে মাহি
♬ ♬ আজা মেরে কোল বে
♬ ♬ ওনলি ফর ইউ তারসে বডি
♬ ♬ তাড়পে মেরি সোল বে

♬ ♬ আজ না ছোড়ুঙ্গি
♬ ♬ হার লিমিট তরুঙ্গি
♬ ♬ চালনে না দুঙ্গি কোই ট্রিকস

♬ ♬ আই ওয়ানা তেরা ইস্ক ইস্ক
♬ ♬ তেরা ইস্ক ইস্ক
♬ ♬ তেরা ইস্ক ইস্ক
(আবির এবার আদিত্যর শার্ট এক টানে ছিড়ে ফেলে গাইলো)
♬ ♬ ফার দিয়া ক্যালেন্ডার মেনে
♬ ♬ তেরে ইন্তেজার কি
♬ ♬ মুঝপে আব বারছা দে রাজা
♬ ♬ শাওয়ার আপনে পেয়ার কি
♬ ♬ শাওয়ার আপনে পেয়ার কি
♬ ♬ শাওয়ার আপনে পেয়ার কি

♬ ♬ এক সে ভালে হে দো
♬ ♬ দো সে ভালে হে তিন
♬ ♬ আজা হোজায়ে সারে মিক্স

( আদিত্য এদের সাথে না পেরে নূরের দিকে করুন চোখে তাকালো। মেয়েরা এতক্ষণ ধরে হাসাহাসি করলেও আদিত্যর এমন করুন অবস্থা দেখে নূরের খুব মায়া হলো। নূর উঠে গিয়ে আবিরদের সরিয়ে দিয়ে আদিত্যকে বাঁচাল। তারপর আদিত্যর গলা জড়িয়ে ধরে মুচকি হেসে গেয়ে উঠলো)
♬ ♬ আই ওয়ানা তেরা ইস্ক ইস্ক

(তানি আর নিশিও উঠে গিয়ে ওদের পার্টনারদের ধরে নাচতে নাচতে গাইলো)
♬ ♬ তেরা ইস্ক ইস্ক
♬ ♬ তেরা ইস্ক ইস্ক
♬ ♬ মেরে জানিয়া

তারপর সবাই মিলে উড়াথুড়া ডান্স করতে লাগে।

চলবে……

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-৬০

★ সকাল ৮টা
নূর আড়মোড়া ভেঙে পিটপিট করে চোখ খুলে তাকালো। গতকাল অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দেওয়ায় ঘুম ভাঙতে দেরি হয়ে গেছে। নূর পাশে তাকিয়ে দেখলো আদিত্য নেই। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো আদিত্য আয়নার সামনে রেডি হচ্ছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে আদিত্য মাত্রই শাওয়ার নিয়ে এসেছে। চুলগুলো এখনো ভেজা,চুলের পানি শরীরেও ছিটিয়ে পরছে।আদিত্য শুধু প্যান্ট পরে আছে, খালি শরীরে পারফিউম স্প্রে করছে। আদিত্যকে এভাবে প্রচুর আকর্ষণীয় লাগছে নূরের কাছে। নূর লোলুভ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আদিত্যর দিকে। এমনিতেও নূরের ঘুম ঘুম ভাবটা পুরোপুরি কাটেনি,তারওপর আদিত্যকে এভাবে দেখে ঘোর লেগে যাচ্ছে ওর। ইশশ্ আমার বরটা কত্ত হ্যান্ডসাম, কত্তো হট। ইচ্ছে করে একদম খেয়ে ফেলি। নিজের ভাবনার ওপর নিজেই অবাক হয় নূর। আমি কবে থেকে এতো লুচু হয়ে গেলাম। আবার ভাবে লুচুর হওয়ার কি আছে? আমারিতো বর,ওকে নিয়ে যা খুশি তাই ভাবতে পারি, যা খুশি তাই করতেও পারি। নূরের মনে পরলো আদিত্য কাল বলেছিল, আজ নাকি আদিত্যর অনেক ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং আছে। একটা বড়ো প্রজেক্টে কাজ করছে আদিত্য, সেটারই মিটিং আজ। কথাটা ভাবতেই নূরের মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি এলো।

নূর ধীরে ধীরে গায়ের ওপর থেকে চাদর সরিয়ে বেড থেকে নেমে দাঁড়াল। নূরের গায়ে শুধু আদিত্যের একটা শার্ট পরা আছে। যা হাটুর কিছুটা ওপর পর্যন্ত ঝুলে আছে। এটা নতুন না,নূর প্রতিদিনই শোয়ার সময় নিজের কাপড় পড়ে শুলেও, ওঠার সময় ওর গায়ে আদিত্যর শার্ট বা টিশার্ট থাকে। এটা এখন নূরের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। আদিত্যর জামাকাপড় পরতে ওর নিজেরও ভালো লাগে। কারণ এতে আদিত্যর ঘ্রাণ মিশে থাকে।

নূর ধীরে ধীরে এস আদিত্যকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। আদিত্যর পিঠে নাক ঘষে পিঠে একটা চুমু খেল।

আদিত্য মুচকি হেসে নূরের হাত ধরে সামনে এনে বললো।
….গুড মর্নিং প্রাণপাখী।

নূর সামনে এসে আবারও সামনে থেকে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে ঘুমো ঘুমো কন্ঠে বললো।
….গুড মর্নিং।
কথাটা বলে নূর আদিত্যর বুকে একটা চুমু খেল।

আদিত্যও নূরকে জড়িয়ে ধরে মুচকি হেসে বললো।
….কি ব্যাপার, আজ সকাল সকাল এতো প্রেম আসছে আমার ওপর?

নূর মাথা তুলে আদিত্যর দিকে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো।
….কি করবো সকাল সকাল আমার বরটা যে এতো হ্যান্ডসাম লাগছে। তাইতো চোখ সরছেই না। আমার তো ভয় করছে কোনো পেত্নীর নজর না লাগে আবার তোমার ওপর।

আদিত্য নূরের কোমড় চেপে ধরে দুষ্টু হেস বললো।
….তাই? তাহলে নজর নামিয়ে দেও।

নূর বুঝতে পারছে যে,আদিত্য কি বলতে চাচ্ছে। নূর একটা আবেদনময়ী হাসি দিয়ে, আদিত্যর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো।
….শুধু নজর নামানো না, তুমি চাইলে আমি আরো কিছু করতে পারি। আই এ্যাম অল ইওরস নাও। ইউ ক্যান ডু ওয়াট এভার ইউ ওয়ান্ট। বাম্পার ওফার।

নূরের এমন কথায় আদিত্যর অবস্থা শোচনীয়। শরীরের সব লোম দাঁড়িয়ে গেল। গলা শুকিয়ে আসছে। নূর এর আগে কখনো আদিত্যকে নিজে থেকে এভাবে কাছে ডাকেনি। আদিত্য নূরের দিকে তাকিয়ে করুন সুরে বললো।
…দি দিস ইস নট ফেয়ার পা প্রাণপাখী। তুমি ভালো করেই জানো যে আমার এখন মিটিংয়ে যেতে হবে। তুমি এইসময় আমাকে এমন লোভনীয় অফার দিলে আমি কিভাবে যাবো?

আদিত্যর অবস্থা দেখে নূরের পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে। তবে সটা বুঝতে না দিয়ে নূর ড্রেসিং টেবিলের ওপর উঠে বসলো। তারপর হাত দুটো পেছন দিকে ড্রেসিং টেবিলের ওপর রেখে, হালকা পেছন দিকে হেলে পায়ের ওপর পা তুলে আবেদনময়ী ভঙ্গিতে বসে বললো।
…. আমার অফার দেওয়ার ইচ্ছে হলো তাই আমি দিয়েছি। এখন অফার নেওয়া না নেওয়া তোমার ওপর। আমি তো আর তোমাকে জোর করছি না তাইনা?

নূর ওভাবে বসায় নূরের ফর্সা মোলায়েম পা জোড়া আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। যা দেখে আদিত্যর কলিজার পানি সব শুকিয়ে যাচ্ছে। হুঁশ জ্ঞান সব হারিয়ে ফেলছে। নূরকে দেখলে এমনিতেই ওর কোনো হুঁশ থাকে না। তারওপর আজ নূরের এমন আবেদনময়ী রুপ দেখে আদিত্যর যেন অজ্ঞান হওয়ার উপক্রম।

আদিত্যর এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে নূর মুচকি হেসে বললো।
….কি হলো তুমি না মিটিংয়ে যাবে?

মিটিংয়ের কথা শুনে আদিত্যর হুঁশ এলো। আদিত্য নূরের দিক থেকে চোখ সরিয়ে মাথা ঝাকিয়ে নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করলো। নো আদিত্য ফোকাস, তোকে মিটিংয়ে যেতে হবে। দূর্বল হয়ে পরলে চলবে না। ওইদিকে তাকাস না। ওটা শুধু মোহ মায়া।
মনে মনে এসব হাবিজাবি বলে মনকে মিথ্যে বুঝ দিতে লাগলো আদিত্য।

আদিত্য তাড়াতাড়ি শার্ট পরে নিল। টাই গলায় নিয়ে লাগাতে লাগলো। হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও চোখ দুটো বারবার শুধু নূরের পায়ের দিকেই যাচ্ছে। আদিত্যর সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। টাই লাগাতে যেয়ে বারবার শুধু ভুল হয়ে যাচ্ছে।

নূর উঠে দাঁড়িয়ে বললো।
….আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।
কথাটা বলে নূর আদিত্যর গলায় টাই বেঁধে দিতে লাগলো।

টাই বাঁধার সময় নূরের গরম নিঃশ্বাস আদিত্যর গলায় ঘাড়ে পরছে। আদিত্যর অবস্থা আরো করুন হয়ে যাচ্ছে। নাহ শেষমেশ আর পারলো না আদিত্য। আদিত্য একটানে নিজের টাই খুলে ফেলে ফ্লোরে ছুড়ে মারলো। তারপর নূরের কোমড় চেপে ধরে বললো।
….গোল্লায় যাক মিটিং। আই একসেপ্ট ইউর অফার।
কথাটা বলেই আদিত্য নূরের কানের নিচ দিয়ে চুলের ভেতর হাত দিয়ে, নূরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরলো।পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো নূরের ঠোঁটে। চুমু খেতে খেতে পেছনে দেয়ালের সাধে লেগে গেল।

হঠাৎ আদিত্যর এমন এ্যাকশনে নূর ভ্যাবাচেকা খেয়ে খেল। ওতো শুধু মজা করছিল। এখন তো ওর মজা ওর ওপরই ভারী পরে গেল। এখন কি করবে ও? এই পাগল কে কিভাবে থামাবে? নূর চায় না আদিত্যর মিটিং মিস হয়ে যাক।তাই নূর দুই হাত দিয়ে আদিত্যকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো। মুখ দিয়ে উম উম শব্দ করতে লাগলো।

আদিত্য নূরকে ছেড়ে বললো।
….কি হলো? নিজেই অফার দিয়ে আবার নিজেই আটকাচ্ছ কেন?

নূর মাথা নিচু করে অপরাধীর সুরে বললো।
….আই এ্যাম সরি।আমিতো শুধু মজা করছিলাম। কিন্তু তুমি সত্যি সত্যিই আমার জন্য মিটিং মিস করলে আমার অনেক খারাপ লাগবে। প্লিজ তুমি মিটিংয়ে যাও। নাহলে তোমার এতদিনের মেহনত সব বিফলে যাবে।

আদিত্য মুচকি হেসে নূরের কপালে চুমু দিয়ে বললো।
….তো এইজন্য মন খারাপ করছ কেন পাগলী? তুমি আমার সাথে মজা করবে নাতো কার সাথে করবে? আমি তোমার হাসব্যান্ড, তুমি আমার সাথে যা খুশী তাই করতে পারো।

নূর আদিত্যর দিকে তাকিয়ে হাসি মুখে বললো।
….তারমানে তুমি অফিসে যাবে?

….হুম যাবো তবে আমার একটা শর্ত আছে।

….কি শর্ত?

আদিত্য নূরের গালে স্লাইড করে বললো।
….আমি মিটিং শেষে দুপুরেই চলে আসবো। সেই পর্যন্ত তোমার এই বাম্পার অফার চালু রাখা চাই। তাহলেই আমি যাবো, রাজি?

নূর নিচের দিকে তাকিয়ে লাজুক হেসে মাথা ঝাকালো। মানে সে রাজি। আদিত্য মুচকি হেসে নূরের কপালে চুমু দিয়ে, রেডি হয়ে বেরিয়ে গেল।
————-

সকাল ১০-৩০
নূর সানার রুমের সামনে এসে দরজায় নক করলো। সানা ভেতর থেকে বললো।
….দরজা খোলাই আছে।

নূর দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো। সানা কালকে এই বাসাতেই থেকে গিয়েছিল। নূরই বলেছিল সানাকে কিছুদিন এই বাসাতেই থাকতে। সানার কলেজ বন্ধ থাকায় সানাও খুশী খুশী রাজি হয়ে গেছে। নূরকে দেখে সানা মুচকি হেসে বললো।
….আরে ভাবি তুমি? তোমার আবার আমার রুমে আসতে নক করতে হয় নাকি?

নূর সৌজন্যেমূলক হাসি দিয়ে বললো।
…..কি করছিলে তুমি?

…..এইতো কি আর করবো, মোবাইল গুতাচ্ছিলাম।

…..তোমার সাথে কিছু কথা ছিল আমার।

….হ্যাঁ বলনা ভাবি, কি বলবে।

নূর একটু আমতা আমতা করে বললো।
….না মানে আসলে আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে, তুমি আর তাসির ভাইয়া কি একজন আরেকজনকে ভালবাসো?

নূরের কথায় সানা ঘাবড়ে গেল। কি বলবে বুঝতে পারছে না। মনে মনে ভীষণ ভয় করছে ওর।

সানার চুপ থাকা দেখে নূর আবার বললো।
….কি হলো চুপ করে রইলে যে? বলো?

সানা ভীতু ভাবে নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা ঝাকিয়ে বললো।
……হ্যাঁ ভাবি। তুমিই ঠিকই ধরেছ। আমি আর তাসির একজন আরেকজনকে ভালবাসি।

নূর একটু গম্ভীর স্বরে বললো।
…..হুম, তা এসব কবে থেকে চলছে?

….এইতো মাসখানিক হলো।

…..তো এসব আমাদের কবে জানানোর ইচ্ছে ছিল তোমাদের? নাকি এইভাবে সারাজীবন লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করারই ইচ্ছে ছিল হুম?

সানা ভয়ে কেঁদেই ফেলল। কাঁদতে কাঁদতে বললো।
….সরি ভাবি আসলে আমার অনেক ভয় করছিল। ভাইয়া যদি রাগ করে ভুল বুঝে আমাদের, সেটা ভেবে।

নূর মুচকি হেসে সানার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো।
….আরে পাগলি কাদছ কেন? আমিতো মজা করছিলাম। খুব ভালোবাস বুঝি ভাইয়াকে?

সানা মাথা ঝাঁকিয়ে বলল।
….হ্যাঁ ভাবি অনেক ভালোবাসি। ওকে ছাড়া আমি বাচবো না।

….হুম ঠিক আছে। তবে একটা জিনিস তোমরা ভুল করছ। আদিত্যের কাছ থেকে এসব লুকিয়ে। তোমাদের উচিৎ ওকে সবকিছু জানিয়ে দেওয়া। তুমি তো জানোই তুমি আর তাসির ভাইয়া দুজনেই আদিত্যর কাছে কতটা মূল্যবান ব্যাক্তি। তাহলে তোমাদের ব্যাপারে এতো বড়ো কথাটা যদি অন্য কোথা থেকে জানতে পারে। তাহলে ও অনেক হার্ট হবে।

…..হ্যাঁ ভাবি তুমি ঠিকই বলেছ। তাসিরও ভাইয়াকে বলে দিতে চায়। আমিই ওকে মানা করেছিলাম। কারণ আমার অনেক ভয় করে, ভাইয়া নাজানি কেমন রিয়াক্ট করবে?

….তুমি চাইলে আমি তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলতে পারি এই ব্যাপারে।

সানা খুশী হয়ে বললো।
….সত্যিই তুমি বলবে কথা?

….হুম অবশ্যই।

সানাা খুশী হয়ে নূরকে জড়িয়ে ধরে বললো।
….থ্যাংক ইউ। থ্যাংক ইউ সো মাচ ভাবি। ইউ আর দা বেস্ট।
——–

দুপুর ২-৩০
নূর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে। আদিত্য বলেছিল দুপুরে আসবে। তাই একটু সাজুগুজু করছে। সকালের কথা মনে করে বারবার লাজুক হাসছে।

তখনই আদিত্য চলে এলো। রুমে এসে দরজা আটকে দিল। নূর আদিত্যকে দেখে পেছনে তাকিয়ে বললো।
….তুমি এসে গে,,,,

আর বলতে পারলো না নূর। আদিত্য রুমে এসেই ওর একশান শুরু করে দিল। আদিত্য কোনো সময় নষ্ট না করে,কিছু না বলেই সোজা নূরকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে চুমু খাওয়া শুরু করে দিল।

আচমকা আদিত্যর অ্যাটাকে নূর প্রথমে একটু থতমত খেয়ে গেলেও। কিছুক্ষণ পরে নিজেও আদিত্যর সাথে তাল মিলাতে লাগলো। আদিত্য কিছুক্ষণ পর নূরের ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে নাকের উপর নিজের নাক ঠেসে ধরে হাঁপাতে হাঁপাতে নেশালো কন্ঠে বললো।
….আমি আর এক মূহুর্তও থাকতে পারবো না। অফিসে যেয়ে একসেকেন্ডও মন বসেনি। মাথায় শুধু তোমার সকালের সেই মূহুর্ত আর তোমার অফারের কথায় মাথায় ঘুরছিল। কোনরকমে মিটিং শেষ করে ছুটে এসেছি।আই কান্ট ওয়েট নাও। আই ওয়ান্ট ইওর অফার রাইট নাও। নাহলে পাগল হয়ে যাবো আমি।

আদিত্যর এমন মোহনীয় কথায় নূরও পাগল হয়ে যাচ্ছে। নূর এবার নিজে থেকেই আদিত্যর ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলো। নূরের সারা পেয়ে আদিত্যও পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো। চুষে নিতে থাকলো নূরের রসালো ঠোঁটের মধু। নূর চুমু খেতে খেতে আদিত্যর গায়ের কোট খোলার জন্য কাঁধের উপর থেকে নিচে নামাতে লাগলো। আদিত্য নিজেও সাহায্য করলো কোট খুলতে। আদিত্য কোট খুলে নিচে ফেলে দিয়ে, নূরের ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে নিজের টাই টাও খুলে ফেলে দিল। তারপর নূরের কোমড় ধরে উঁচু করে, নূরের দুই পা নিজের কোমড়ে পেচিয়ে কোলে তুলে নিল। নূরকে কোলে নিয়ে চুমু খেতে খেতে দেয়ালের সাথে লেগে গেল। আদিত্য নূরের ঠোঁট ছেড়ে এবার গলায় নেমে এলো। গলায় ঘাড়ে পাগলের মতো চুমু খেতে লাগলো। নূর আদিত্যর শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো। বোতাম খোলা শেষে শার্ট টাও খুলে ফেললো। আদিত্য নূরের গলায় চুমু খাচ্ছে, আর নূর আদিত্যর কাঁধে চুমু খাচ্ছে। আদিত্য চুমু খেতে খেতে নূরকে কোলে নিয়েই বেডের দিকে এগুলো। দুজন আবারও মেতে উঠলো ভালোবাসার আদিম খেলায়।

এক ঘন্টা পর ভালোবাসাবাসি শেষে, নূর আদিত্যর উন্মুক্ত বুকের উপর শুয়ে আছে। আদিত্য নূরের চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। দুজনের গায়ের ওপর শুধু একটা চাদর ছাড়া আর কিছুই নেই। নূর ভাবছে সানার কথাটা কিভাবে বলবে? আদিত্য যদি রাগ করে? তবুও বলতে তো হবেই। এসব ভেবে নূর আদিত্যর বুকে মাথা রেখেই বললো।
…..বলছি শোন না?

….বলো না প্রাণপাখী?

….একটা কথা বলার ছিল।

আদিত্য নূরের হাতের তালুতে চুমু খেয়ে বললো।
….. একটা কেন হাজার টা বলো।আমাকে কিছু বলতে আবার তোমার অনুমতি নিতে হবে নাকি? কি বলবে বলো?

….আ আসলে কথাটা সানার ব্যাপারে।

আদিত্য ভ্রু কুচকে বললো।
…..সানা? সানার কি হয়েছে?

নূর ভীতু স্বরে বললো।
…. আ আসলে স সানা আর তাসির ভাইয়া একজন আরেকজনকে ভালোবাসে।
কথাটা বলেই নূর চোখ খিঁচে বন্ধ করে নিল।

আদিত্য ভাবলেশহীন ভাবে বললো।
….হুম তো?

আদিত্যর এমন রিয়্যাকশন দেখে নূর চরম অবাক হয়ে গেল। নূর বললো।
….মানে? তুমি অবাক হওনি এই কথা শুনে?

….অবাক কেন হব?যে কথা আমি আগে থেকেই জানি, সেটা শুনে অবাক হওয়ার কি আছে?

নূর অবাক হয়ে মাথা তুলে আদিত্যের দিকে তাকিয়ে বললো।
….মানে তুমি আগে থেকেই জানতে?

আদিত্য মুচকি হেসে মাথা একটু উঁচু করে নূরের ঠোটে আলতো করে একটা চুমু খেয়ে বললো।
….ইয়েস বেবি, আমি অনেক আগে থেকেই জানি। তাসির কি ভাবে?শুধু ওই আমাকে বোঝে? আমি ওর মন বুঝি না? আরে আমি তো ছোটবেলা থেকেই বুঝতে পেরেছি যে তাসির পিচ্চির প্রতি দূর্বল। ওর চোখে পিচ্চির জন্য ভালোবাসা দেখেছি। তবে আমি ওকে এই বিষয়ে কখনো কিছু বলিনি। কারণ আমি চায়নি এই বিষয় নিয়ে আমাদের বন্ধুত্বের ভেতরে কোনো দূরত্ব তৈরি হোক। হ্যাঁ তবে পিচ্চিও যে তাসিরকে ভালোবেসে ফেলেছে এটা জানতাম না।

….তারমানে ওদের এই সম্পর্কে তোমার কোনো আপত্তি নেই?

…আপত্তি কেন থাকবে?তাসিরের মতো একটা ছেলে সানার জীবনসঙ্গি হলে, এটাতো ওর জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমি নিজেও হয়তো সানার জন্য ওরকম একটা ছেলে খুঁজে বের করতে পারতাম না।

নূর খুশী হয়ে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে বললো।
….সত্যিই? আই এ্যাম সো হ্যাপি।

আদিত্যও মুচকি হেসে নূরকে জড়িয়ে ধরলো। নূর বলে উঠলো।
….তাহলে এখন?

….কি এখন?

…..আরে এখন সামনে কি করবে ওদের বিষয়ে?

….আমি কিছুই করবো না। যতক্ষণ না তাসির এসে নিজে থেকে সবকিছু বলবে। আমি চাই ও নিজে এসে সানাকে বিয়ের কথা বলুক।

….হুম,, কিন্তু তাসির ভাইয়া যদি না বলে?

আদিত্য বাঁকা হেসে বললো।
….বলবে বলবে, অবশ্যই বলবে। শোন আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে।
আদিত্য নূরকে সব বুঝিয়ে বললো। নূরও মুচকি হেসে সায় দিল।
———-

রাত ৯টা
নূর ডাইনিং টেবিলে ডিনার রেডি করছে। তখনই বাসার কলিং বেল বেজে উঠল। নূর যেয়ে দরজা খুলে দিল। দরজায় তাসির দাঁড়িয়ে আছে। নূর মুচকি হেসে বললো।
….আরে ভাইয়া, আসুন ভেতরে আসুন।

তাসির মুচকি হেসে ভেতরে ঢুকলো। আদিত্য সোফায় বসে আছে। তাসির ভেতরে ঢুকে আদিত্যর দিকে তাকিয়ে বললো।
….কিরে হঠাৎ আসতে বললি যে?

আদিত্য উঠে দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে বললো।
…..আরে বলবো সবই, আগে আয় ডিনার করে নেই।

আদিত্য তাসিরকে নিয়ে ডিনার টেবিলে গিয়ে বসলো। নূর আর সানাও এসে বসলো।

ডিনার করতে করতে আদিত্য বলে উঠলো।
….হ্যাঁ তো, তোকে যে জন্য ডেকেছিলাম। আসলে আজ বাবা ফোন করেছিল। কাল সবাইকে ওই বাসায় যেতে বলেছে। আর তুইতো আমাদের ফ্যামিলিরই একজন মেম্বার। তাই তোকেও ডেকে পাঠালাম।

তাসির বলে উঠলো।
….হঠাৎ আঙ্কেল যেতে বলেছে কেন? কোনো বিশেষ কারণ আছে?

…হ্যাঁ বিশেষ কারণ তো আছেই। অনেক বিশেষ।

….কি কারণ?

….কারণ বাবা সানার বিয়ে ঠিক করেছে।

কথাটা শোনার সাথে সাথে তাসিরের গলায় খাবার আটকে গেল। বেচারা কাশতে শুরু করে দিল।

আদিত্য বাঁকা হেসে তাসিরের পিঠে হালকা করে চাপড় দিয়ে, পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বললো।
….আরে আরে কি হলো তোর আবার? পানি খেয়ে নে।

তাসির পানি খেয়ে কোনরকমে কাশি থামিয়ে বললো।
…. বি বিয়ে মানে? কিসের বিয়ে? কার সাথে বিয়ে? হঠাৎ বিয়ে কোথা থেকে আসলো? আর সানাতো এখনো ছোট। এখুনি কেন বিয়ে দিবি?

…..আরে আরে একসাথে এত প্রশ্ন করলে, কোনটার উত্তর দিব? ছেলে নাকি বাবার বন্ধুর ছেলে। বাবার অনেক পছন্দ। আর তুই তো জানিস , বাবার কথার ওপর আমি কখনো কথা বলতে পারি না। আর সানার বয়স কম দেখেই, এখন শুধু এঙ্গেজমেন্ট করে রাখবে। পরে বিয়ে হবে।

আদিত্যর কথা শুনে তাসিরের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। তাসির সানার দিকে তাকিয়ে দেখলো, সানা নির্বিঘ্নে খেয়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে এসব কথায় ওর কোনো ভাবন্তই নেই। এটা দেখে তাসির আরও বেশি অবাক। সাথে রাগও হলো প্রচুর। আমি এখানে টেনশনে মরছি।আর এই মেয়েটা কতসুন্দর ভাবে খেয়ে যাচ্ছে। যেন কিছুই হয়নি।
তাসির বলে উঠলো।
….আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসছি।
কথাটা বলে তাসির উঠতে নিলে,নূর বলে উঠলো।
….আরে ভাইয়া, খাবার তো শেষ করে যান।

…..আমার পেট ভরে গেছে।
কথাটা বলেই তাসির উঠে গেস্ট রুমের দিকে গেল। যেতে যেতে সানার দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় ওকে রুমে আসতে বললো।

তাসির চলে যেতেই সবাই হেসে উঠলো। নূর বলে উঠলো।
….আহারে বেচারা টেনশনে খাবারটাও খেলনা।

একটু পরে সানা উঠে তাসিরের কাছে গেল।

চলবে…..