ভালোবাসা তারপর পর্ব-১২+১৩

0
171

#ভালোবাসা_তারপর
#পর্ব:১২
#তামান্না_শাহরিন_শশী

কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত।

অনুমতি ব্যাতিত কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

রোদসীর মনে হচ্ছিলো সে বিপদের অথৈজলে পড়েছে। মাথায় আসছে না এখানে আসলো কি করে? আর ও তো এভাবে গাড়িতে ঘুমায় না তাহলে হঠাৎ এমন হলো কেনো?

এসব ভাবতে ভাবতেই ঘরের দরজা খুলে কেউ একজন ভেতরে আসে। রোদসী তাকাবে না তাকাবে না করেও তাকায়। একজন মহিলা এগিয়ে এসে দাড়িয়ে আছে হাতে ট্রেতে কিছু খাবার। হঠাৎ খাবার দেখে মনে হলো সে সারাদিনে কিছু খায়নি। পেট মুচড়ে উঠলো। চোখে ঘুরিয়ে ঘড়ি খুজে সময় দেখলো সন্ধ্যা সাতটা বাজে। এতো সময় রোদসী তাহলে অচেতন ছিলো। রোদসী চোখ ঘুরিয়ে আবারও মহিলার দিকে তাকায়। বয়স্ক মহিলা নন তবে বয়সের চিহ্ন চেহারায় বিরাজমান। রোদসী একটু জড়সরো হয়ে বসলো। তারপর মহিলার দিকে তাকিয়ে সময় নিয়ে জিজ্ঞেস করে,

“কে আপনি? এটা কার বাসা? আপনার আমার সাথে খারাপ কিছু করবেন না তো।”

রোদসীর মুখ ভীত দেখালো। তা দেখে মহিলাটা স্মিথ হাসলো, তারপর জানালো,

“এটা ডাক্তার সাহেবের বাসা!”

রোদসী চমকে বললো,

“ডাক্তার সাহেব?”

“হ্যা। যে তোমাকে এনেছে। অবশ্য তোমার তখন জ্ঞান ছিলো না। বিকেলের দিকে এনেছে। সে কি গা কাপিয়ে জ্বর। আমি তো তার সাথে তোমাকে দেখে অবাক তবে যখন বললো তুমি তার ছোটো বোন লাগো আর চিন্তা লাগলো না। তবে ডাক্তার সাহেব অনেক চিন্তিত। ঔষধ আনতে বাহিরে গেছে।”

“আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। কার কথা বলছেন আপনি?”

“ওমা। মেয়ে কি বলে যার সাথে আসলে। যে তোমার ভাই তাকেই চেনো না? আশ্চর্য।”

রোদসী এবার চুপ করে মহিলার দিকে তাকিয়ে থাকে। মহিলাটি জানায় তার নাম মিলি। তার পর সে বলে তাকে যেনো মিলিখালা বলেই ডাকে। এবং তিনি যে খাবার গুলো এনেছেন তা খেয়ে নিতে বলে।

ডাক্তার সাহেব এসে চেইক আপ করবে। রোদসী দেমনা করে খাবারটা নিলো। মিলি খালা চলে যেতেই রোদসী উঠে দাড়িয়ে রুমটা দেখলো। ভালোই বড়। আর রুম দেখে মনে হচ্ছে কোনো মেয়ের ঘর। তাহলে মিলি খালা শুধু ডাক্তার সাহেবের কথা বললো কেনো? এসব ভাবতে ভাবতে মাথায় টনটন ব্যাথার অনুভব হলো। রোদসী ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার খেলো। তারপর ব্যাগ থেকে একটা শাড়ি বের করে পাল্টে বারান্দায় যেয়ে দাড়ালো। বাড়ির চারপাশে প্রাচীর করা। বোঝাই যাচ্ছে বাংলো টাইপ বাড়ি। আচ্ছা বাড়িতে কেউ থাকে না নাকি ?

কিছু সময় পর রোদসীর রুমের দড়জায় নক করলো কেউ। রোদসী অলসভাব নিয়ে দরজার কাছে গেলো। অলস্যভাব নিয়ে দরজা খুলতেই শব্দকে দেখে রোদসী একটু পিছনে ছিটকে এলো। এতে শব্দও বিব্রতবোধ হয়। তবে হাসার চেষ্টা করে বলে,

“হাই সিস্টার?”

রোদসীও হাসার চেষ্টা করে বলে,

“আপনি এখানে? আপনি আমাকে এখানে এনেছেন? কই মিলি খালা তো আপনার কথা বললো না। বললো ডাক্তার সাহেব। আমি ভাবলাম কোনো বয়স্ক লোক হবে।”

রোদসীর কথার ধরণ দেখে শব্দ হেসে উঠলো। তারপর কোনমতে হাসি চাপিয়ে বলে,

“কেনো বয়স্ক মানুষ হলে ভালো হতো? আর আমি বুঝি তোমাকে বিক্রি করে দেবো? শোনো মেয়ে আগেই বলেছি তুমি আমার বোনের বয়সী আর তোমাকে দেখে আমার বোনের কথা মনে পড়েছে। গাড়িতে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলে সেন্স ছিলো না উপায় না পেয়ে বাসায় নিয়ে এসেছি। তার বেশি কিছু নয়। আমার কোনো খারাপ মতলব নেই।”

রোদসী একটু বিব্রতবোধ করলো। চোখে নামিয়ে নিয়ে আবারো রুমে চোখ ঘুরিয়ে বলে,

“এটা তো মনে হয় কোনো মেয়ের রুম। মানে হয়তো আপনার বোনের রুম। এটায় আমাকে থাকতে দিলেন। ও থাকবে কোথায়!”

শব্দের মুখে কালোছায়া নেমে এলো মনে হলো। সে পাশ কাটিয়ে রোদসীর রুমে ঢুকে ঔষধ গুলো রাখতে রাখতে বলে,

“সে নেই তাই তোমাকে তার রুম দিলাম। ও বোন ছিলো। আর তুমিও বোন।”

রোদসী হাসার চেষ্টা করলো। রোদসী শব্দের কথার কোনো কিছুই বোঝে নি৷ ছিলো বলতে কি বোঝালো?

শব্দ আবারো বলতে শুরু করলো,

“ঔষধ গুলো খেয়ে নিও। রাতের তো খাবার খেয়েছোই এখন ঔষধ গুলো খেয়ে নেও। আর রাতে আবারো জ্বর বাড়তে পারে। যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে ওই যে পাশে ল্যান্ডলাইন ফোন আছে কল দিও। তোমার নাম কি? জানিনা তো! আর সাথে বোধহয় ফোনও নেই তাই না?”

রোদসী নিজেকে সামলে বলে,

“আচ্ছা খেয়ে নেবো।”

একটু চুপ থেকে রোদসী তার নাম বলে,

“আমার নাম রোদসী তাবাসসুম। আর ফোন আমার সাথেই আছে তবে সিম নেই।”

শব্দ বুঝেগেছে এমন ভাব করে মাথা নাড়লো। তারপর জানালো,

“আমি কালকে নতুন সিম তুলে এনে দিবো। এখন ঔষধ গুলো খেয়ে চটপট ঘুম দেও।”

এই বলে চলে যেতে নিলেই রোদসী শব্দকে ডাক দিয়ে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করে। শব্দ হাসে। তারপর সে জানায়,

“আমি মুনীব শব্দ। পেশায় ডাক্তার বলতে কার্ডিওলজিস্ট বলতে পারো। ভয় পেতে হবে না। আমি যথেষ্ট ভদ্রলোক। তবে তোমার পরিচয় জানা হলো না। তুমি অসুস্থ তাই প্রেশার দিবো না। সুস্থ হও তারপর না হয় একদিন জানা যাবে।”

এটা বলেই শব্দ রোদসীর রুম ত্যাগ করে। শব্দ যেতেই রোদসী বেডে যেয়ে বসে। কপালে উল্টো হাত ছোঁয়ায়। হ্যাঁ জ্বর আছে তবে সে খেয়ালই করেনি। এইসব ভেবে উঠে এসে ঔষধ গুলো খেয়ে দরজা লাগিয়ে সুয়ে পড়ে। তার মাথায় এখন অন্য কিছু ঢুকছে না। বারবার শব্দরের বোনের কথা জিজ্ঞেস করায় যে মলিন মুখটা দেখলো বারবার তাই চোখের সামনে ভেসে উঠছে। কি ঘটেছে শব্দের বোনের সাথে যার কারণে লোকটা তাকে বোনের জায়গা দিতে চাচ্ছে। তারথেকেও বড় কথা একটা অপরিচিত মেয়েকে বাসায় এনে উঠালো। যদি রোদসী খারাপ হতো? বা তার খারাপ উদ্দেশ্য হতো। পৃথিবীতে খারাপ মানুষের অভাব নেই। এসব ভেবেই হতাশ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে চোখ বুঝলো। তলিয়ে গেলো ঘুমের অতলে।

——-

“ভাইয়া আপুকে পেয়েছেন?”

“না। লোক যাওয়ার আগেই বাস ছেড়ে দিয়েছে। রোদসী নামের কোনো টিকেট কাটা হয় নি। আর ওখানে অনেক গুলো বাস কোনটা রেখে কোনটা খুঁজবো। আমি চট্রগ্রাম লোক লাগিয়েছি। যদি ওরা রোদসীকে কোথাও দেখতে পায়। তাহলে আমাকে জানাবে।”

রুহিকে অত্যন্ত চিন্তিত দেখালো। আর উচ্ছ্বাসের অবস্থা পাগল প্রায়। বাসার বাকিরা এখনো স্তব্ধ। রোদসী প্রচন্ড শান্ত স্বভাবের মেয়ে আর রুহি তার বিপরীত স্বভাবের। রোদসী যে এমন একটা বোকামি করবে কেউ কল্পনাও করেনি।

——-

“তারপর বলো কোথায় যাচ্ছিলে?”

রোদসী একটু বিব্রতকর পরিস্থিতি পড়লো তা রোদসীর মুখ দেখেই আচ করতে পাড়লো শব্দ। তাই শব্দ এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য বললো,

“থাক বলতে হবে না। কোনো এক সময় বলো। আমার আজকে আসতে দেড়ি হবে। দুটো অপারেশন আছে।”

রোদসী শুধু মাথা নাড়িয়ে আচ্ছা বললো। তা দেখে শব্দ হেসে বলে,

“তুমি অনেক চুপচাপ তবে আমার বোন অনেক চঞ্চল ছিলো। সে যাইহোক শোনো, কিছু লাগলে মিলি খালাকে ডেকে নিও। সেই তোমার যত্ন নিবে। আর সাবধানে থেকো। আল্লাহ হাফিজ।”

রোদসী শব্দের পিছন পিছন হেটে দরজা পর্যন্ত যেয়ে শব্দকে বিদায় জানালো। তা দেখে শব্দ হাসলো যাক মেয়েটাকে যতটা শান্ত ভেবেছিলো ততটা না। কেয়ারিং আছে বটে। রোদসী দরজা লাগিয়ে এসে নিজের রুমে বসলো। পুরো রুমে বারদুয়েক চোখ বুলিয়ে বারান্দায় যেয়ে বসে। বাড়ির আশে পাশে গাছ লাগানো তাই বাড়িটা মোটামোটি ভালোই শান্ত দেখায়। রোদসী একটা গভীর নিশ্বাস ছেড়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে চোখ বন্ধ করে থাকে। পরিবেশটা অনুভব করে আর মনে জড়ো হয় নানা ভাবনা। রোদসীর এখন নিজেকে কেমন মুক্ত মনে হচ্ছে। উচ্ছ্বাস সারাদিন রোদসীকে সন্দেহ করতো। এদিকে যাবে না ওটা করবে ইত্যাদি ইত্যাদি। নিজের কোনো মত প্রকাশ করতে পারতো না। রোদসীর ওইরকমের বন্দী জীবন কখনোই চায়নি। সে ওমন দায়বদ্ধতার সম্পর্ক থাকতে চায় না। সে একটা সুস্থ সম্পর্ক নিয়ে বেঁচে থাকতে চায় যেখানে থাকবে সুখ, খুশি, আর আনন্দ। ওখানে থাকবে রোদসী আর? আর উচ্ছ্বাস। আচ্ছা উচ্ছ্বাস কি সবসময়ই এমন পাগলামি করবে? সন্দেহ করবে? সে তো এমন কোনো কাজ করে নি তাহলে উচ্ছ্বাস রোদসীকে এতো সন্দেহ কেনো করে?

—–

“রোদসী আমাদের মিথ্যে বলেছে।”

“মানে?”

“রোদসী চট্টগ্রাম যায় নি। আর না ও সায়দাবাদ থেকে কল করেছিলো।”

“তাহলে ও ঢাকায়ই আছে?”

“হয়তো।”

“পাবো কি করে?”

“জানিনা।”

“আমি বুঝিনা এতো ভালোবাসার পরও মানুষ পালায় কেনো? আর আমার কেনো যেনো মনে হচ্ছে ওকে কেউ এই বুদ্ধি দিয়েছে কারণ ওর মাথায় এইসব চিন্তা আসবে না আর ও পালানোর মতো মেয়ে না। ও কখনো একা কোথাও যায় নি। সেই মেয়ে এতো বড় একটা কান্ড ঘটিয়ে ফেলবে তা আমাদের সবার কাছে অবিশ্বাস্য।”

কথা হচ্ছিলো উচ্ছ্বাস আর রেদোয়ানের সাথে। তবে বাসার সবাই এখানে উপস্থিত। এখানে সবার মুখে চিন্তার ছাপ থাকলেও একজনের মুখে আতঙ্কের ছাপ। মিসেস বিপাশা বেগম ঘামতে শুরু করেন। এমনিতেই তার প্লান মাফিক কাজ হয় নি তারওপরে রোদসীকে পাওয়া যাচ্ছে না তাহলে রোদসী গেলো কোথায়?

——–

রাতের দিকে শব্দ যখন বাসায় ফিরলো। তখন দেখলো রোদসী তারজন্য এখনো খাবার নিয়ে বসে আছে। হয়তো খায়নি। ব্যাপারটা অনেক বছর পরে ঘটলো। তার বোনও তার জন্য এমন অপেক্ষা করতো। এখন আর কেউ করে না। তাই রাতে মন চাইলে খায় না হলে সোজা ঘুমিয়ে পড়ে। শব্দ ডাইনিং টেবিলের দিকে একটু এগিয়ে গেলো তারপর রোদসী কে ডাক দিলো,

“তাবাসসুম এখনো বসে আছো কেনো?”

রোদসী মুখ তুলে তাকালো। সে এখানে এতোক্ষণ ঝিম মেরে বসে শব্দের জন্য অপেক্ষা করছিলো। রোদসী মুখ খোলার আগেই শব্দ আশপাশ পর্যবেক্ষণ করে বলে,

“কি ব্যাপার? তুমি রাতের খাবার এখনো খাও নি? তোমার না রাতে মেডিসিন আছে।”

“হ্যা। একা খেতে ভালো লাগছিলো না। তাই ভাবলাম আপনার জন্য অপেক্ষা করি একসাথে খাবো। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি খাবার রেডি করছি।”

এ কথা শুনে শব্দ মনে মনে খুশি হলেও মুখে বললো,

“তুমি অসুস্থ তাবাসসুম। সুস্থ হলে তখন হলে না হয় অপেক্ষা করতে সমস্যা ছিলো না। এখন যে খাবার মেডিসিনের অনিয়ম করছো এগুলো কিন্তু ঠিক না।”

“আচ্ছা সে পরে দেখা যাবে আপনি আগে জান তো। ফ্রেশ হয়ে আসুন।”

শব্দ আর কিছু না বলে হেসে রুমের দিকে চলে গেলো। যাক এখন না হয় বাসায় কেউ একজন অপেক্ষা করে বসে থাকবে। আর সেই তারায় বাড়িতে তারাতারি ফিরতে হবে। এসব ভেবেই একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে রুমের দিকে চলে গেলো।

——-

দেখতে দেখতে প্রায় বারোদিন কেটে গেলো, এখন রোদসী মোটামোটি আগের থেকে সুস্থ। জ্বরের সাথে শরীর কিছুটা দুর্বল ছিলো তাই সময় করে শব্দ রোদসীকে স্যালাইন দিয়েছিলো। রোদসী হাতের দিকে তাকালো। ক্যানলা যে হাতে লাগানো ছিলো সে হাত ফুলে আছে। কালকে রাতেই ক্যানলা খুলেছে শব্দ। এতো দিনে শব্দের সাথে রোদসীর সম্পর্কটা আর পাচঁটা ভাই-বোনের মতো গড়ে উঠেছে। রোদসী বাহিরে আকাশের দিকে তাকালো। তারপর বড় একটা নিঃস্বাশ টানলো। এই ঘ্রান টা তাকে টানে। গত রাতে বৃষ্টি হওয়ার দারুণ আজকে ভোর এতো সুন্দর। আশে পাশে কেমন একটা ঘ্রাণ সাথে কোথাও যেন শিউলি ফুল ফুটেছে মনে হলো রোদসীর সেই ঘ্রান ভেসে আসছে। আজকে সকাল সকালই রোদসীর ঘুম ভাঙ্গে আর আজকে যেহেতু সপ্তাহের শেষের দিন। শব্দও বাসায় তাই নিজের হাতে কিছু রান্না করতে চায় রোদসী। রোদসী শখবশত বাবার বাড়ি রান্না করতো তবে বিয়ের পর উচ্ছ্বাস রুম থেকে বের হওয়া পছন্দ করতো না বিধায় ওই বাসায় কিছু রান্না করা হয় নি। শব্দও পছন্দ করে না তারওপরে রোদসী ছিলো অসুস্থ তাই রোদসীও সাহস করে কিচেনে যাওয়ার নাম নেয় নি। তবে সবার আগে যেহেতু আজকে তার ঘুম ভেঙ্গেছে তাই সুযোগ হাত ছাড়া না করে সে চলে যায় কিচেনে। আকশটা এখনো মেঘলা যেকোনো সময় মনে হচ্ছে বৃষ্টি নামতে পারে। আর বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা তাই যেই ভাবা সেই কাজ। খিচুড়ি, ডিম ভাজা, বেগুন ভাজা, আর গরুর মাংস কষা রান্না করে রুমে যেয়ে গোসল করে একটা সুন্দর দেখে শাড়ি পড়ে শব্দকে ডাক দেয়। শব্দ জানায় আসতে একটু লেট হবে তার একজন বন্ধু আসবে তাই সে ওয়েট করছে। রোদসী বলে,

” তারাতারি নিচে আসতে খাবার ঠাণ্ডা হয়ে গেলে আর ভালো লাগবে না।”

এই বলে রোদসী নিচে নেমে এসে শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুজেঁ বাঙ্গালী রমনীর মতো খাবার সাজাতে থাকে। কাজ প্রায় শেষেদিকে আসলে কলিংবেল বেজে ওঠে রোদসী এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে না দেখে সে দরজা খুলতে এগিয়ে যায়। কে এসেছে তা না দেখেই দরজা খুলে দেয়। একটা আটাশ কি উনত্রিশ বছর বয়সি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটি বোধহয় রোদসীকে আশা করেনি তাও এভাবে দরজা খুলে দেবে। ছেলেটি বিব্রত হয় চোখ নামিয়ে নেয়। রোদসী নিজের দিকে তাকিয়ে থতমত খায় তারপর কোমড় থেকে শাড়ির আঁচল বের করে তা ডানপাশের কাঁধে উঠিয়ে নেয়। এরমধ্যে শব্দও উপস্থিত হয়। ছেলেটিকে দেখে শব্দ এগিয়ে আশে। এবং রোদসীকে বলে ভিতরে চলে যেতে। তারপর ছেলেটিকে নিয়ে ড্রইংরুমে যেয়ে বসে।

রোদসী কিছুক্ষন দেমোনা করে শব্দের কাছে যেয়ে খেতে আসতে জানায়। শব্দ মুখ তুলে রোদসীর দিকে তাকায়। তারপর বলে,

“আসছি।”

খেতে বসে রোদসী জানতে পারে ছেলেটি শব্দের কলিগ সাইফ। তিনিও কার্ডিওলজিস্ট। রোদসী কোনো আগ্রহবোধ করলো না। চুপচাপ খেয়ে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো। সাইফ এতো ক্ষণ রোদসীকে আড়চোখে পর্যবেক্ষণ করছিলো। রোদসী উঠে চলে গেলেই মুখ খুলে শব্দ কে জিজ্ঞেস করে

“মেয়েটা কে?”

শব্দ একটু হেসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে বলে,

“মেয়েটা আমার বোন রোদসী তাবাসসুম।”

“কখনো শুনি নি তো তোমার বোন আছে।”

“ও কখনো বাসায় আসে নি তাহলে শুনবে কি করে।”

সাইফ আর কথা বাড়ালো না।

——-

“রান্না কেমন ছিলো ভাইয়া?”

শব্দ অবাক হয়ে রোদসীর দিকে তাকায়। তারপর শুধালো,

“যেমন করে বলছিস মনে হচ্ছে তুই রান্না করেছিস।”

রোদসী শব্দের এমন কথা শুনে মিটমিট করে হাসে। তারপর বলে,

“হ্যাঁ। আমিই রেঁধেছি।”

“ভালো হয়েছে তবে যদি কিছু হয়ে যেতো। এখনো অসুস্থ তুই। সুস্থ হোস নি।”

কথাটি প্রচন্ড গম্ভীর হয়ে ঠান্ডা কন্ঠেকথাটি বললো শব্দ রোদসীর দিকে তাকিয়ে । ওর এমন কথায় রোদসী মুখটা কাচুমাচু করে বলে,

“অনেকদিন হয় না রান্না ঘরে যাই না। আমি ভেবেছিলাম যদি রান্না ভুলে যাই তা ভেবে রান্না করেছি। দেখো আমার কিছু হয় নি।”

এই বলেই হাত বাড়িয়ে দেখানোর ভঙ্গি করে রোদসী বোকাবোকা হাসলো।

শব্দ চোখ ছোটো ছোটো করে রোদসীর দিকে চাইলো। তা দেখে রোদসীর হাসি আরো চওড়া হলো। শব্দ রোদসীর এমন বোকা হাসি দেখে স্বশব্দে হেসে দিলো আর তা দেখে রোদসীও হেসে দিলো।

চলবে।

#ভালোবাসা_তারপর
#পর্ব:১৩
#তামান্না_শাহরিন_শশী

কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত।

অনুমতি ব্যাতিত কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ঝা চকচকে সকাল। কালকে রাতে ঠিক মতো ঘুম হয় নি রোদসীর। তাই শরীরটা ম্যাজম্যাজ করছে। কাল রাতে শব্দের সাথে রোদসীর তুমুল কথা কাটাকাটি হয়। শব্দ সেই থেকে রাগ করে রোদসীর সাথে কথা বলছে না। এই সমস্যার কারণ হলো শব্দ চায় রোদসী নতুন করে জীবন শুরু করুক কিন্তু রোদসী সেটা চায় না। হয়তো মনে মনে এখনো উচ্ছ্বাসকে ভালোবাসে। রোদসী উঠে কিচেনে যায় এবং তার জন্য কড়া করে এক কাপ কফি বানায়। তা নিয়ে আবার রুমে যেয়ে বারান্দায় এসে বসে। কফি খেতে খেতে শব্দের সাথে পরিচয় হওয়া থেকে এই পর্যন্ত সব ঘটনা একবার মনে করে। চোখ বোঝে তারপর হতাশ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। মানুষের জীবন কত অদ্ভুত আমারও তাদের সাথে কিভাবে যেন জড়িয়ে যাই।

শব্দ ভালো মানুষ তবে জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছে। শব্দেরও সুন্দর একটা পরিবার ছিলো। মা, বাবা, বোন আর শব্দ। শব্দ যখন স্কুলে ভর্তি হয় তখন হঠাৎ একদিন শব্দের বাবা স্ট্রোক করে মারা যায়। সে শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই আটারো দিনের মাথা শব্দের মা’ও মারা যায়। রয়ে যায় শব্দ আর তার ছোট বোন। শব্দকে হোস্টেল দিয়ে দেওয়া হয়। আর বোন তার নানু মনির কাছে নিয়ে যায়।

রোদসী আবারো চোখ খোলে। একটা মানুষ কতটা দুঃখ পেলে এমন শক্ত হতে পারে। শব্দের এমন ব্যক্তিত্ব রোদসীকে বরাবরাই মুগ্ধ করে। শব্দ যেন ধাড়ালো কাচঁ যা দেখা তো যায় সুন্দর তবে ধরতে গেলেই কেটে র ক্ত গড়িয়ে পড়বে।

——

রোদসী শব্দের বাসায় থাকার ঠিক তিন দিন পর,

রোদসী শব্দের রিডিং রুমের সামনে যেয়ে দাড়িয়ে কিছুক্ষণ দেমোনা করে দরজায় নক করে। তাতে শব্দ দরজার দিকে তাকায়। রোদসী দেখে হেসে ভিতরে আসার অনুমতি দেয়। তাই রোদসী গুটিগুটি পায়ে সামনে আসে। শব্দ চোখের রিডিং চশমাটা খুলো রেখে রোদসীর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,

“কিছু বলবে?”

“হুম।”

“বলো!”

রোদসী পাশের চেয়ারে বসে। তারপর রুমটা ভালোমতো চোখ ঘুরিয়ে দেখে তারপর বলে,

“আপনার সাথে কিছু বলার আছে।”

“বলো।”

“আপনার আমার পরিচয় না জেনেই বাসায় জায়গা দিলেন। এটা কি ঠিক?”

“তুমি অসুস্থ ছিলে সাথে প্যানিক ছিলে। যেহেতু আমি একজন ডাক্তার এইসব ব্যাপার গুলো আমার ভালোই আয়ত্বে আছে। তাই প্রেশারাইজ করিনি। দেখো সুস্থবোধ করতেই এই প্রশ্নটা তুমি নিজেই করলে। আমি এটাই চাচ্ছিলাম। আর তুমি সেটাই করলে।”

রোদসী হাফ ছাড়ে। তারপর বলতে শুরু করে,

“ভাইয়া আমি বিবাহিত।”

শব্দ চকিতে রোদসীর দিকে তাকায়। তবুও প্রথমে কিছু আচ করেছিলো। এখন সিওর হলো আর কি। শব্দ নিজেকে সামলে বলে,

“তাহলে সে কোথায় আর একাই বা কোথায় যাচ্ছিলো?”

প্রশ্নটা গম্ভীর অথচ সবাবলীল শোনালো। রোদসী নিজেকে সামলে তারপর বলে শুরু করে।

“মাহাদী আমার এক কাজিন রেদোয়ান ভাইয়ের বন্ধু। তাকে আমি ভাইয়ার বিয়ের সময় প্রথম দিকে। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তার সাথে প্রথম দেখাটাই একটা বাজে পরিস্থিতিতে হয়।”

এটুকু বলেই রোদসী থামে আর শব্দ একটু নড়েচড়ে বসে। রোদসী শব্দের দিকে চোখ তুলে তাকায়।

“তারপর? থামলে যে?”

রোদসী একটু শ্বাস ভিতরে টেনে নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে তারপর আবারো বলতে শুরু করে,

“ওই পরিস্থিতিতে আমি মাহাদীকে ভুল বুঝি এবং ওখানে একটা বাঝে পরিস্থিতি তৈরি হয়। ও আমাকে বোঝাতে চায় তবে আমি রাগ করে ওকে চড় দিতে বসি। আমার মনে হচ্ছিলো ও নিজে ইচ্ছে করে কাজটা করেছে।”

কথাটা বলে আবারো নিচের দিকে তাকায় রোদসী। শব্দ হাফ ছেড়ে পাল্টা প্রশ্ন করে,

“যদি কিছু মনে না করো তাহলে আমি কি জানতে পারি সে কি করেছিলো?”

“বিয়ে বাড়ি কে কোথায় বুঝতে পারে নি। আমি আমার রুমে শাড়ি বদলাচ্ছিলাম। আমার কাজিনও ছিলো সাথে। ওর শাড়ি পড়া হয়ে গেলে ও চলে যায়। আমার আর দরজা লাগাতে খেয়ালা ছিলো না। আর মাহাদী আমাদের বাসায় নতুন এসেছিলো হয়তো ভুলবশত আমার রুমে এসে পড়েছিলো। তাই আমি রাগ করে ওকে থাপ্পড় মেরে বসি। তারপর..! তারপর কি করলো জানিনা তারপরের দিন বাবা জোড় করে ওর সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। তারপর মাহাদী তাদের বাসায় নিয়ে যায়। থাকলাম তবু ও কারো সাথে মেশা পছন্দ করতো না তাই আমি কারো সাথে মিশতাম না। দেবর ননদদের সাথেও না। তারপর ওর সন্দেহ দিনদিন বেড়েই চলেছে। মারধোর তো আছেই। ধীরে ধীরে মেনে নিতে চেয়েছিলাম তবে ওর দিন দিন এমন পাগলামি পজেসিভ নেস আমার অনেক ভয় হতো। আমার.. আমার মনে হতো ওর কোথাও সমস্যা আছে। ওর ডাক্তার দেখানো উচিত। ওর মানষিক সমস্যা আছে। তারপর সৎ মা আছে একজন কিন্তু ও পছন্দ করতো না তাকে আর না কথা বলতো। আমাকেও কথা বলতে দিতো না। ও টোটালি রুম থেকেই বের হতে দিতো না। আমার দিন দিন ভয় বেড়েই চলেছিলো। তাই ওর সৎ মায়ের বুদ্ধিতে আমি পালিয়ে আসি।”

রোদসীকে একনাগাড়ে এতগুলো কথা বলে থামলো। শব্দ রোদসীর দিকে তাকিয়ে ছিলো। রোদসীকে কেমন অস্থির দেখালো। শব্দ কিছুক্ষণ পর মহখ খুল্লো,

“আর তুমি তার বুদ্ধিতে পালিয়ে গেলে? যদি তিনি একটা খারাপ চক্রান্ত করতো? বা তুমি যেখানে যাচ্ছো সেখানে খারাপ কিছু হতো? বা তারা লোকই খারাপ? তখন নিজেকে মাফ করতে পারতে তো?”

এটুকু বলেই শব্দ থামলো। রোদসী অবাক হয়ে তাকালো। আসলেই তার এসব কিছু ভাবা হয় নি। সে যদি যেত আর এই কথা গুলো সত্যি হতো তাহলে? ভাবতেই রোদসীর শরীরে কাটা দিয়ে উঠলো। শব্দ আবারো বলতে শুরু করলো,

“তুমি বুঝেছো তোমার স্বামী অসুস্থ। তাহলে তাকে ডাক্তার না দেখিয়ে তুমি পালিয়ে এলে? এটা কি ঠিক হলো? আসলে এটা কি কোনো স্ত্রীর দায়িত্বের নয়? যে অসুস্থ স্বামীকে সেবা না করে পালিয়ে এসেছো। আচ্ছা তাও বুঝলাম এখন তুমি বলো তার কাছে ফিরে যেতে চাও?”

রোদসীকে আতংকিত দেখালো। সে চকিতে জবাব দিলো।

“না, আমি তার কাছে ফিরতে চাই না। আমি মানছি পালানো উচিত হয় নি। তবে এখন ফিরে গেলে সে আমাকে মেরে ফেলবো।”

“আচ্ছা বুঝলাম। তাহলে? ভবিষ্যতের কথা কি ভাবলে?”

“মানে?”

“এই যে নতুন করে শুরু করবে কিনা বা কিছু।”

রোদসী জবাব দিলো না। চুপচাপ বসে রইলো কিছু সময়। তারপর সময় নিয়ে শব্দের মুখের দিকে চাইলো সাহস করে প্রশ্ন রাখে শব্দের কাছে,

“আপনি আপনার বোনের কথা এখনো বলেন নি।”

শব্দ হাসলো। মেয়েটা কথা ঘুড়াতে চাইছে। তাই কথা না বাড়িয়ে সে জবাব দেয়,

“সে অনেক বড় কাহিনী। তোমাকে দেখলেই আমার বোনের কথা মনে পড়ে। ওই যে তোমার থুতনির তিলটা? বাসে প্রথম দেখে সর্বপ্রথম আমার শ্রেয়ার কথা মনে পড়ে। একসেকেন্ডে মনে হলো আমি আমার বোন শ্রেয়াকেই দেখছি।”

এটুকু বলেই শব্দ থামে। রোদসী অনেক অবাক হয়। উচ্ছ্বাসও রোদসীর এই থুতনির তিলটা অনপক পছন্দ করে আর এখানে আরেকজন তার বোনের সাথেই মিল পেলো। হতাশ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে আবারো শব্দের দিকে তাকালো,

“শ্রেয়া আমার চার বছরের ছোটো বাবা-মা মারা যাবার পর আমি হোস্টেল আর ও নানুমনির কাছেই বেড়ে ওঠে। ওর ইচ্ছে ছিলো অনেক বড় ফ্যাশন ডিজাইনার হবে আমরাও মানা করিনি। উৎসাহিত করতাম। তারপর দিন আমাদের ভালোই কাটতে লাগলো। হঠাৎ একদিন শুনি শ্রেয়ার এক্সিডেন্ট হয়েছে। তখন আমি কেবল ডাক্তার হয়েছি। আমার চোখের সামনে ওই প্রথম মৃত্যু দেখলাম। জানো কার? আমার বোনের! আহা সে কি করুন দৃশ্য। রিপোর্ট বের হলো সি ইজ গ্যাং র‍্যাপড। ফাইলটার দিকে আমি তাকিয়েই ছিলাম। পরে জানতে পারলাম এমনিই পাবলিক ট্যান্সপোর্টেই এই সর্বনাশ টা করলো। আমার জীবনের মা বাবার দেয়া শেষ চিহ্নটুকুও আমি হারিয়ে ফেল্লাম। কেস ফাইল থেকে কোর্ট পর্যন্ত সব করলাম তাও কিছু হলো না। হার মেনে নিলাম কি করবল বলো? এদেশের আইন আছে?”

“সেইদিন বাসে তোমাকে প্রথম দেখে আমার শ্রেয়ার কথা মনে পড়লো। আমি ভয় পেয়েছিলাম। আর তোমার মুখেও আতঙ্ক ছিলো। তাই আমার মনে হচ্ছিলো আবার ইতিহাস পুনরাবৃত্তি হবে। তাই ভয় কাটানোর জন্য তোমার সাথে কথা বলতে চেষ্টা করছিলাম। কিছুক্ষণ বাদে যখন তুমি প্যানিক এট্যাক করো আমি ভীষণ ভয় পেয়েযাই তারপর তুমি অজ্ঞান হলে আমার ভীষণ চিন্তা হয়। যখন তোমার হাত ধরি দেখি তোমার জ্বর এসেছে তাই কিছু না ভেবেই বাশায় নিয়ে আসি। আর তুমি বললে না যে যদি তোমার উদ্দেশ্য খারাপ হয়। তাহলে আমি বলবো বোনেরা কখনো ভাইয়ের কাছে খারাপ হয় না। তোমার মাঝে আমি আমার শ্রেয়াকে খুঁজে পেয়েছি। তাই আমি এতকিছু ভাবি না।”

একনাগাড়ে কথা গুলো বলে শব্দ থামলো। রোদসী চোখ থেকে পানি ঝড়ছে। যা দেখে শব্দ আলতো হেসে উঠে দাড়িয়ে রোদসীর মাথায় হাত রেখে বলে,

“এতো নরম হলে হয় না তাবাসসুম। নিজেকে শক্ত করে গড়ে তোলো। নিজেকে সময় দেও। আমি রুমে যাচ্ছি।”

এবলেই শব্দ নিজের রুমের দিকে চলে যায়। আর রোদসী মুখ তুলে শব্দ কে দেখে। একটা মানুষ কতটা শক্ত হলে কারো সাথে এভাবে ইমোশনান ছাড়া শক্ত কন্ঠে এভাবে সব বলতে পারে। রোদসী শব্দকে যতবার দেখে ততবার অবাক হয়।

——

মিলি খালার ডাকে রোদসী ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসে। রোদসী মিলি খালাকে ঈশারায় জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে। মিলি খালা জানায় শব্দ রোদসীকে রেডি হয়ে নিচে যেতে বলেছে। এতে রোদসী অবাক হয়। রেডি হবার কি আছে? তাও মিলি খালাকি ঠিক আছে বলে বিদায় করে নিজেও শাড়ি আর টাওয়াল নিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায়।

চলবে……

ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।