ভালোবাসি তাই ২ পর্ব-২১+২২

0
509

#ভালোবাসি তাই ২
#পর্বঃ২১
#তানিশা সুলতানা

পুরো বাড়িটা খুঁজেও তানহাকে পায় না অভি। ভেবে নেয় হয়ত অন্য কোথাও গেছে। তাই আর না খুঁজে ফোন নিয়ে বসে।
হঠাৎ বাইরে থেকে চিৎকার চেচামেচি করার শব্দে অভি ফোন রেখে বাইরে বের হয়।
ছাঁদ থেকে শব্দ আসছে। অভি বড় বড় পা ফেলে ছাঁদে যায়।
রেলিং এর কাছে তানহাকে পরে থাকতে দেখে বুকের ভেতর ধক করে ওঠে অভির। তারাহুরো করে দৌড়ে যায় তানহার কাছে। রিনা খানের কোল থেকে তানহার মাথাটা নিয়ে নিজের কোলে রাখে অভি।
“কি হয়েছে বলো তো মেয়েটার? এখানে পরে আছে কেনো?
রিনা খান ওড়না দিয়ে বাতাস করতে করতে বলে।
” এই কি হয়েছে তোমার?
তানহার গালে আলতো করে থাপ্পড় দিয়ে বলে অভি।
তানহা নরে চরে ওঠে। পিট পিট করে চোখ খোলে।
তানহাকে চোখ খুলতে দেখে অভি বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নেয়।
“কি হয়েছিলো তোমার? আমি ছাঁদে না আসলে তো তুমি এখানেই পরে থাকতে।
তানহা রিনা খানের কথার উওর দেয় না। উঠে বসে। অভির দিকে তাকায়। অভির চোখে মুখে ভয় স্পষ্ট।
” রুমে যাবো
আস্তে করে বলে তানহা।
অভি হাত ধরে তানহা কে দাঁড় করায়।
“আসছি
আলতো হেসে রিনা খানের দিকে তাকিয়ে বলে তানহা।
তারপর অভির হাত ধরে আস্তে আস্তে হেঁটে রুমে যায়।

খাটে বসিয়ে দেয় অভি ওকে। তারপর তানহার পায়ের কাছে হাঁটু মুরে বসে।
” কি হয়েছিলো?
শান্ত গলায় প্রশ্ন করে।
তানহা অভির চোখের দিকে তাকায়। অভির হাত জোরা নিজের হাতের মুঠোয় পুরে নেয়।
“আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। মনে আছে আপনার?
শক্ত গলায় বলে তানহা।
” মনে থাকবে না কেনো?
ভ্রু কুচকে অভি পাল্টা প্রশ্ন করে।
অভির শার্টের কলার চেপে ধরে তানহা। মুখোমুখি হয় দুজনে।
“তাহলে অন্য মেয়েদের সাথে ঢলাঢলি কেনো করেন? মেয়ে দেখলেই নিকনিক করতে ইচ্ছে হয়? ফারদার যদি দেখি তো চোখ উপড়ে ফেলবো। মাইন্ড ইট
দাঁতে দাঁত চেপে বলে তানহা।
” আপনি শুধু আমার। শুধু আমার। আপনাকে জড়িয়ে ধরার অধিকার শুধু আমার আছে। কিস করার অধিকারটাও শুধু আমারই আছে। বুঝলেন?
অভির খোঁজা খোঁজা দাড়ি গুলে দুই আঙুলে টেনে বলে তানহা।
অভি ব্যাথা পেয়ে “আহহহহ” করে ওঠে।
“ওহহহ সোনা লাগলো?
আদুরী গলায় বলে তানহা। অভি দাড়িতে হাত বুলিয়ে মাথা নারায়। মানে হ্যাঁ।
” লাগুক। এটা জাস্ট নমুনা। নেক্সট টাইম দেখলে চামড়াসহ দাড়ি কেটে ফেলবো। বলে দিলাম।
বলেই অভিকে ধাক্কা দেয়। তাল সামলাতে না পেরে অভি ফ্লোরে বসে পরে।
“এটা কে রে বাবা? ডাইনি একটা
বিরবির করে বলে অভি।
তানহা চুল গুলো হাত খোপা করে নেয়। রাগ কিছুতেই কমছে না।
” আপনার ফোন কই?
ঝাঁঝালো গলায় বলে।
“বালিশের নিচে
অভি ঢোক গিলে বলে।
” ওকে
তানহা বালিশের নিচে থেকে ফোন আনে।
তারপর কারো নাম্বারে কল করে। অভি সোজা হয়ে বসে গালে হাত দিয়ে তানহার কান্ড দেখছে।

অভির নাম্বার থেকে ফোন পেয়ে মোহনা বাঁকা হাসে।
“আমি জানতাম অভি তুমি আমাকে কল করবেই। কারণ ভালোবাসো তো।
কিন্তু আমাকে অপমান করার শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে।
বাঁকা হাসে মোহনা।
ফোনটা রিসিভ করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই কারো কর্কশ গলার কথা ভেসে আসে।
” এই মাইয়া অভির দিকে তাকালে তোর চোখ আমি উপরে ফেলবো। মোহনাকে মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দেবো বলে দিলাম।
নেক্সট টাইম যেনো অভির আশেপাশে মাছির মতো ভনভন করতে না দেখি।
বলেই ফোনটা কেটে দেয়।
মোহনা এখনো হা করে তাকিয়ে আছে।
“কে ফোন করেছিলো? আর থ্রেট কেনো দিলো?

তানহা মোহনার নাম্বারটা ব্লক করে দেয়।
অভি এখনো গালে হাত দিয়ে তানহার দিকে তাকিয়ে আছে।
কিছু বলতে চাইছে কিন্তু তানহার রুপ দেখে বলার সাহস পাচ্ছে না। শান্ত শিষ্ট মেয়েটা হঠাৎ রনোচন্ডী হয়ে গেলো কি করে?

🥀🥀🥀🥀
” তুমি আমার মেয়েকে কোলে কেনো নিয়েছো?
অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন আনিকা বেগম।
আবির ভরকে যায়। শুকনো একটা ঢোক গিলে। স্মৃতি কাঁদো কাঁদো ফেস করে আবিরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
“কথা বলছো না কেনো? কিছু জিজ্ঞেস করছি তো আমি।
কপালে ভাজ ফেলে ভেতরে ঢুকে বলে আনিকা বেগম।
” ইয়ে মানে
আপনিই তো বললেন হেল্প করতে। ওনাকে গাড়িতে তোলার জন্য। তো এখন কোলে না নিলে কি করে গাড়ি ওবদি নিয়ে যেতাম।
আমতা আমতা করে মাথা নিচু করে বলে বলে আবির।
“সরি।
তুমি সাহায্য করছো আমিই তোমায় ভুল বুঝলাম। ভেরি সরি।
বলেন আনিকা বেগম।
” ইটস ওকে আন্টি। এটা আমার কর্তব্য।
এক গাল হেসে বলে আবির।
স্মৃতি দাঁত কটমট করে আবিরের দিকে তাকায়।
“আমাদের গাড়িটা বাইরেই। চলো
আনিকা বেগম আগে আগে চলে যায়।
” কেমন দিলাম ম্যাডাম?
চোখ টিপ দিয়ে বলে আবির।
“এমনিতে তো বাঘের মতো গর্জন করতেন। মায়ের সামনে বিড়ালের মতো মিউমিউ শুরু করে দিলেন।
ভেংচি কেটে বলে স্মৃতি।
” এখন হিরো গিরি দেখালে তো শাশুড়ী মা পছন্দ করবে না। তাই না?
মুচকি হেসে বলে আবির।
“আমি মরে যাবো কিন্তু কখনোই আপনার মতো ধক কে বিয়ে করবো না।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে স্মৃতি।
” করবেন ম্যাডাম।

চলবে

#ভালোবাসি তাই ২
#পর্বঃ২২
#তানিশা সুলতানা

একটা ছেলের সিগারেট খাওয়ার দৃশ্য এতো সুন্দর হতে পারে? না কি যাকে ভালো লাগে তার সব কিছুই ভালো লাগে? বুঝে উঠতে পারছে না তানহা বা বুঝতে চাইছে না?
অভি এক মনে সিগারেট টেনে যাচ্ছে। তানহা পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। খুব ভালো লাগছে। এতোটাই ভালো লাগছে যে পলক ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে না মনে হচ্ছে পলক ফেললেই যদি একটু খানি মিস করে ফেলে।
”এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
অভি তানহার দিকে না তাকিয়েই বলে।
তানহা কিছুটা নরেচরে বসে। বার কয়েক চোখের পলক ফেলে।
“আপনি তো মন প্রাণ দিয়ে সিগারেট খাচ্ছেন তো বুঝলেন কি করে আমি আপনার দিকে তাকিয়ে আছি?
গালে হাত দিয়ে বসে বলে তানহা।
অভি মৃদু হাসে।
” এটাই তো আমার স্পেশালিটি।
সিগারেটের ধোঁয়া আকাশে উড়িয়ে দিয়ে বলে অভি।
তানহা মোরা টেনে অভির সামনা সামনি বসে।
“সিগারেট কেনো খান আপনি?
” ভালো লাগে
“আমিও খাবো
অভি ফট করে তানহার মুখের দিকে তাকায়। তানহা গাল ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে অভির দিকে।
” এইসব সবাই খেতে পারে না।
দুই ঠোঁটের ভাজে সিগারেট নিয়ে বলে অভি।
“আপনি পারলে আমিও পারবো।
“যাও তো এখান থেকে।
তানহা অভির ঠোঁটের ভাজ থেকে সিগারেটটা টেনে নেয়।
অভি চোখ মুখ শক্ত করে তানহার দিকে তাকায় অভি।
” খাবো বলছি তো খাবোই
বলেই মুখে পুরতে যায়। অভি হাত ধরে আটকে দেয়।
“বললাম না খাবো
অভির হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে তানহা।
অভি তানহার দুই হাত শক্ত করে ধরে।
” আমি বললাম না তুমি খাবে না।
তানহার হাত থেকে সিগারেটটা নিতে নিতে বলে অভি।
তানহা চোখ পাকিয়ে তাকায়। কিছু বলে না।
অভির হাতের বাঁধন হালকা হতেই সুযোগ বুঝে সিগারেটটা হাতে নিয়েই মুখে পুরে নেয়।
টান দিতেই নাক মুখ দিয়ে ধোঁয়া উঠে যায়। সাথে সাথে ফেলে দেয় তানহা। কাশতে থাকে।
অভি তানহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। চোখে মুখে রাগ ফুটে উঠেছে।
“একটা কথাও আমার শুনো না তুমি।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে অভি।
তানহা বুকে হাত দিয়ে শ্বাস নিচ্ছে।
” এসব মানুষ খায়? ঠোঁট পুরিয়ে ধোঁয়া উড়িয়ে কি শান্তি পান?
চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে বলে।
অভি কিছু বলে না।
“শুনুন আর সিগারেট খাবেন না আমায়। আর যদি সিগারট খান তো
থেমে যায় তানহা।
” তো কি?
উৎসাহিত হয়ে জিজ্ঞেস করে অভি।
“এখন বলবো না। পরে বলবো।
মিষ্টি হেসে বলে তানহা।
” এখন কেনো বলবে না?
বুকে হাত গুঁজে জিজ্ঞেস করে অভি।
“যখন আমাকে ভালোবাসবেন তখন বলবো।
লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিমায় বলে তানহা।
“আসো কাছে আসো ভালোবাসি। চলবে? না কি আর অন্য কোনো ওয়ে আছে ভালোবাসার?
তানহাকে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে বলে অভি।
এটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না তানহা। দুই ঠোঁটটা আলাদা হয়ে যায়। চোখ দুটোও বড় বড় হয়ে যায়।
পরে যাওয়ার ভয়ে অভির হাতটা শক্ত করে খামচে ধরে।
তানহার চুল গুলো খোপা করা ছিলো। অভি খুলে দেয়। তানহার শেম্পু করার চুলে নাক ডুবায়।
তানহা শিউরে ওঠে। চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে কোমর থেকে অভির হাত ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পরে।
” এএএভাবে ভালোবাসে না কি?
রিনরিনিয়ে থেমে বলে তানহা।
“তাহলে কিভাবে ভালোবাসে? মুখে শখানেক ভালোবাসি বললেই কি ভালোবাসা হয়ে যায় না কি? আমি কথায় না কাজে বিশ্বাসী। তো ভালোবাসি না বলে কাজে করে দেখাচ্ছি।
ঘাড়ে ঠোঁট ছুঁয়িয়ে ঘোর লাগা কন্ঠে বলে অভি।
” আর জীবনেও ভালোবাসতে বলবো না। পাক্কা প্রমিজ
তানহা ঢোক গিলে বলে।
অভি তানহার ঘাড় থেকে মুখ তোলে।
তানহা অভির হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে চলে যায়। বুকের ভেতর ধক ধক করছে। হাত পা কাঁপছে এখনো।
এতোদিন জোর করে অভিকে স্পর্শ করেছে। এই প্রথমবার অভি নিজে থেকে স্পর্শ করলো। এ কেমন অনুভূতি? মন চায় স্পর্শটা পেতে কিন্তু বিবেক বলে পালা।
কেনো এমন হয়?
ভয় হয় না তবুও হাত পা কাঁপছে। মুচকি হাসে তানহা। হাতটা আপনাআপনি ঘাড়ে চলে যায়।
“এই টুকুতেই এই অবস্থা। উনি যদি আরও একটু গভীর স্পর্শ করে না জানি কি হবে আমার। আমি তো পাগল হয়ে যাবো।
তানহা বিরবির করে বলে।

অভি আকাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।
” পাগলীটা।
অবশেষে পাগলিটাকে জব্দ করার রাস্তা খুঁজে পেলাম।

🥀🥀🥀🥀🥀
আবিরকে আনিকা বেগমকে ধোঁকা দিয়ে স্মৃতিকে নিয়ে চলে গেছে। চিৎকার করে কাঁদছে আনিকা বেগম। আহাম্মদ সাহেব চলে গেছে পুলিশকে কমপ্লেন করতে। রাফিদ আর হালিজা শান্তনা দিচ্ছেন আনিকা বেগমকে।

আবির স্মৃতিকে নিয়ে শহর ছেড়ে গ্রামের চলে এসেছে। শহর থেকে অনেক দুরে। স্মৃতি অনেকখন দাঁপড়াদাঁপড়ি করে এখন শান্ত হয়ে চোখের পানি ফেলছে। এছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই। এখান থেকে তো আবিরের ইচ্ছে ছাড়া মুক্তি পাবে না ও। একেতে পা ভাঙা আর ওপর আবার এখানকার কিছুই চেনে না।
আবির আরচোখে স্মৃতির দিকে তাকাচ্ছে বার বার।
আবিরের ফোন বেজে ওঠে।
ফোনের স্কিনে তাকাতেই আবিরের চোখে মুখে বিরক্তি ফুটে ওঠে।
“হ্যাঁ বল
” ভাই তুই কোথায়?
মোহনা জিজ্ঞেস করে।
“এয়ারপোর্টে এসেছি। সিঙ্গাপুর যাচ্ছি।
আবিরের কথা শুনে মোহনার মুখটা খুশিতে চকচক করে ওঠে।
” রাখছি। আর ফোন করবি না। ফোন বন্ধ থাকবে।
বলেই ফোন কেটে দেয়।
স্মৃতি কান্নার মাঝেই মুখ বাঁকায়। কতো নির্বিঘ্নে ফটফট করে মিথ্যে কথাগুলো বলে গেলো। এই মিথ্যেবাদিটাকে একদম বিশ্বাস করতে পারে না স্মৃতি। একবার মন নিয়ে খেলেছে। আবার এই সুযোগটা দেবে না স্মৃতি।

সবুজ টিনের ঘরের সুন্দর একটা বাড়ির সামনে গাড়ি থামায়। বাড়িটা খুব সুন্দর।
স্মৃতি এক পলক তাকায় বাড়িটার দিকে। বাড়ির উঠোনটা গাঁধা গোলাপ ঘাস ফুল গাছ দিয়ে বোঝায়। বেতের গেইট আছে। তাতে ঘাস ফুল গাছে জড়িয়ে আছে।

আবির স্মৃতির ছিট বেল্ট খুলে দেয়।
“কেমন আমাদের ছোট্ট ঘর?
ভ্রু নাচিয়ে হাসি মুখে জিজ্ঞেস করে আবির।
স্মৃতি মুখ ঘুরিয়ে নেয়। চোখ মুখ ফুলে গেছে। পাপড়ি গুলো ভিজে গেছে।
আবির কোলে তুলে নেয় স্মৃতিকে। স্মৃতি গলা জড়িয়ে ধরে না।
লাথি দিয়ে দরজা খুলে ফেলে আবির। তারপর রুমের ভেতরে ঢোকে।
ভেতরটা আরও সুন্দর। কাঠের তৈরি ড্রেসিং টেবিল খাট আলমারি সব।
আবির খাটে বসিয়ে দেয় স্মৃতিকে। খুব যত্ন করে পা টা বালিশের ওপর রেখে দেয়।
” আজকে থেকে আমাদের নতুন জীবন শুরু। এখানে কেউ থাকবে না। শুধু আমি আর তুমি।

🥀🥀🥀🥀
তানহা চা বানাচ্ছে। অভি তানহার জামাকাপড় গুছিয়ে দিচ্ছে। কাল সকালেই তানহা কে বাসে তুলে দেবে।
“আমি যাবো না। আর গেলে আপনি আমার সঙ্গে যাবেন।
তানহা চা টা কাপে ঢেলে বলে।
” যাবে
তানহা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে অভির পাশে এসে বসে।
“সোজাসাপ্টা একটা কথা বলছি।
আপনাকে ছাড়া আমি দুই মিনিটও থাকতে পারবো না। আমি যদি যাই তো আপনি আমার সঙ্গে যাবেন। অফারটা পছন্দ হলে এক চাপুন না হলে দুই চাপুন।
দ্বিতীয় বার কাপে চুমুক দিয়ে বলে তানহা।
অভি ঠাস করে হাতে থাকা তানহার জামা ফেলে দেয়। তানহার দুই বাহু শক্ত করে ধরে।
” আমার এখানে আসার পর থেকে ভালো কিছু খাওয়াতে পারি নি। যে জামা নিয়ে এসেছো সে গুলো পুরনো হয়ে গেছে। তাই পরে আছো। কি সুখ দিতে পারছি আমি তোমাকে।
জীবনে এই রকম পুরনো জামা পেরেছো তুমি?
গলার স্বর কাঁপছে অভির।
তানহা মুচকি হাসে। অভির বুকে মাথা রাখে।
“আমার কিচ্ছু চায় না। শুধু এখানে মাথা রেখে বাকিটা জীবন কাটাতে দিলেই হবে।
অভি তানহার মাথায় হাত বুলায়।
” এভাবে বাঁচা যায় না। জীবনে টাকা না থাকলে দাম থাকে না।
“টাকা আসবে তো। মাস শেষেই গুনেনগুনে চল্লিশ হাজার টাকা পাবেন আপনি। আমাদের দিন বদলে যাবে। আস্তে আস্তে আপনার সেলারি অনেক বেরে যাবে। নিজের টাকায় রং চটা বাড়িটা রং করবেন। অনেক টাকা থাকবে। আমাকে ভালো ভালো জামা কিনে দেবেন। আমাদের ছোট ছোট বাচ্চা হবে। তাদের ভালো স্কুলে পড়াবো।

অভি চোখ বন্ধ করে নেয়।
একজন জীবন থেকে সবটা কেরে নিলো। আরেকজন জীবনটাকে গুছিয়ে দিলো। ভালোবাসা সব সময় নিশ্ব করে না। ভালোবাসা বাঁচতেও শেখায়।

চলবে

গঠন মূলক মন্তব্য করবেন প্লিজ😊😊😊
বানান ভুল থাকতে পারে। রিচেক করা হয় নি।