ভালোবাসি তাই ২ পর্ব-২৩+২৪

0
500

#ভালোবাসি তাই ২
#পর্বঃ২৩
#তানিশা সুলতানা

তানহাকে বাসে তুলে দিয়ে বাসায় ফিরছে অভি। মনটা বিষন্ন হয়ে আছে। বুকের বা পাশটা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে৷ মনে হচ্ছে খুব মূল্যবান কিছু হাতের নাগালের বাইরে চলে গেলো। রাফিদ এসেছিলো তানহাকে নিতে। যাওয়ার সময় একটা বারের জন্যও তানহা অভির দিকে তাকায় নি। কথাও বলে নি অভির সাথে। যতখন বাসটা দাঁড়িয়ে ছিলো অভি তানহার পাশেই বসে ছিলো তানহার হাতটা শক্ত করে ধরে। কিন্তু তানহা কানে হেডফোন গুঁজে বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিলো। চোখ দিয়ে তার বৃষ্টি ঝড়ছিলো।
মেয়েটা খুব অভিমানী।
বাসায় ফেরে না অভি। রাস্তার মাখখান দিয়ে অনমনে হাঁটছে। সকালে তিনঘন্টা অফিস করতে হয়।
হাঁটতে হাঁটতে অভির মাথায় আরও একটা জব নেওয়ার কথা মাথায় আসে। এভাবে ফাঁকা পকেট নিয়ে ঘোরা যায় না। তানহাও একটা জামাও কিনে দিতে পারে নি। মেয়েটা কষা মাংস আর লুচি খেতে খুব ভালোবাসে। তাও খাওয়াতে পারে নি।
এবার যখন তানহা পরিহ্মা দিয়ে ফিরবে তখন রানীর মতো সাজিয়ে দেবে তানহাকে। তার জন্য এখন অভিকে আরও একটা জব নিতেই হবে। হোক কষ্ট তবুও।
যাওয়ার সময় তানহার ভাড়াটাও দিয়ে দিতে পারে নি। কান্না পাচ্ছে অভির। এভাবে বাঁচা যায় না কি?
তানহা এখানে না আসলে হয়ত অভি বেঁচে থাকতো না।

হাঁটতে হাঁটতে একটা রেস্টুরেন্টের সামনে এসে পা থেমে যায় অভির। রেস্টুরেন্টের সামনে বড় বড় করে লেখা লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। বিষন্ন মনে একটুখানি আশার আলো খুঁজে পায় অভি।
মেনেজারের সাথে কথা বলে। তিনি বলেন প্রতিদিন পাঁচশো করে টাকা দেওয়া হবে। মাসে মাসে স্যালারি দেওয়া হবে না। অভি রাজি হয়। আর এখন থেকেই কাজ শুরু করে দেয়।
বাসন মাজা থেকে শুরু করে খাবার সার্ভ করা পুরোটাই করতে হবে।

সারা রাস্তা একটা কথাও বলে না তানহা। রাফিদ অনেক চেষ্টা করেছে তানহার সাথে কথা বলার কিন্তু পারে নি।
বাস এসে থামে। তানহা কান থেকে হেডফোন খুলে হনহনিয়ে নেমে যায়। মাএ থেমে যাওয়া বাসটা থেকে নামতে যেতেই আবার বাসটা চলতে শুরু করে টাল সামলাতে না পেরে পরে যায় তানহা। হেলপার ধরতে গেছে তানহা বাধা দেয়। হাতে পায়ে প্রচন্ড ব্যাথা পাওয়ার পরেও কোনোরকমে চোখ মুখ না কুচকেই উঠে দাঁড়ায়।
নেমে যায়।
রাফিদ পেছন থেকে অনেক ডাকে তানহাকে কিন্তু তানহা সারা দেয় না। চোখ মুছতে মুছতে বাড়ির দিকে যায়।

মহিউদ্দিন দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য বসেছে। তাজ স্কুলে গেছে। দাদিমা মহিউদ্দিনের পাশে বসে বাতাস করছে তাকে। তমা বেগম খাবার বেরে দিচ্ছে। অনেকদিন তৃপ্তি করে খাওয়া হয় না মহিউদ্দিনের৷ নিজের মেয়েটা বাইরে আছে। কি খেয়েছে না খেয়েছে জানে না। গলা দিয়ে খাবার তার নামে না।

“বাবা
ডাল দিয়ে ভাত মেখে সবেমাত্র মুখে পুরতে যাচ্ছিলো তখনই তানহার গলার স্বর শুনে হাত থেকে ভাত পরে যায়। তমা বেগম চোখ বড় বড় করে তাকায় তানহার দিকে।
দাদিমার চোখে পানি চলে এসেছে।
” মামানি
মহিউদ্দিন উঠে দাঁড়ায়। দুই হাত প্রসারিত করে দেয়। ইশারায় কাছে ডাকে তানহাকে। তানহা মাউ মাউ করে কান্না করে বাবার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
“আই এম সরি বাবা
আর কখনো কোথাও যাবো না। তোমাদের থেকে বেশি কেউ আমাকে ভালোবাসে না৷
কান্না করতে করতে বলে তানহা। মহিউদ্দিন পরম যত্নে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।
তানহা মায়ের দিকে তাকায়। করুন চোখে তাকিয়ে আছে তানহার দিকে৷ তানহা মায়ের কাছে যায়।
” সরি মা
দুই কানে হাত দিয়ে বলে। তমা বেগম হেসে তানহার চুল গুলো এলোমেলো করে দেয়।
“বুড়ি
দাদিমার ডাকে তানহা তার কাছে যায়। ফ্লোরে বসে দাদিমার কোলে মাথা রাখে।
” খেয়েছিস?
তানহা মাথা নারায়। মানে না।
“বউ মা ভাত বারো। মেইয়ারে খাওয়াই দাও
এক সাথে লান্স করে সবাই।

” কাকে ভালোবাসলাম আমি? মানুষ এতোটা স্বার্থপর কি করে হয়? অভির জন্য এতোটা পাগল হলাম। আর ও আমাকে তাড়িয়ে ছাড়লো। আর বাবা মাকে এতো কষ্ট দিলাম ওনারা আবার আমাকে আপন করে নিলো। তাচ্ছিল্য হাসে তানহা।
“আমাকে তে কখনো উনি ভালোই বাসে নি। বরাবরই আমি বিরক্তির কারণ ছিলাম ওনার। জোর করেই অধিকার খাটাতাম। ভুলেই গেছিলাম
” জোর করে পাগলামো করে শুধু পাগল উপাধিটাই পাওয়া যায়, কারো ভালোবাসা নাহহ”
আর কখনো বিরক্ত করবো না আপনাকে আই প্রমিজ।
রাত আনুমানিক বারোটা বাজে। তানহা ছাঁদের দোলনায় শুয়ে শুয়ে চাঁদ দেখছে। আপনাআপনি চোখ দুটো ভরে উঠছে। প্রচন্ড মিস করছে অভি নামক পাষাণ ছেলেটাকে।

সবেমাত্র বাসায় ফিরেছে অভি। হাতে চকচকে পাঁচশো টাকা। খুব ভালো লাগছে এখন। “পুরুষ মানুষের শূন্য পকেট কঠিন অসুস্থতার থেকও বেশি যন্ত্রণা দেয়”
তোষকের নিচে টাকা রেখে হাত মুখ ধুয়ে নেয়। বাসায় খাওয়ার মতো কিছুই নেই। রেস্টুরেন্টে আজ পাঁচ বছর পূরণ হওয়ার পার্টি ছিলো। সেখান থেকে কয়েক পিচ কেট দিয়েছে আর বিরিয়ানি দিয়েছে।
সেটাই খাওয়ার জন্য বসেছিলো অভি। মুখে নেওয়ার আগেই মনে পড়ে যায়। মেয়েটা বিরিয়ানি আর কেক খেতে খুব ভালো বাসে।
কিন্তু এখন তো তাকে এগুলো দেওয়া সম্ভব না।
ফোনটা হাতে নেয় অভি। রাফিদকে কল করে। বলে কাল সকালেই তানহার জন্য একটা বড় চকলেট কেক আর বিরিয়ানি নিয়ে যেতে।
রাফিদ খুব বিরক্ত হয়। এতো রাতে কল করে ঘুম ভাঙিয়ে এই কথা বলছে। চোখ মুখ কুচকে হ্যাঁ বলে।

“কাল তো রাফিদ কেক নিয়ে যাবেই। আমি এখন খাই।
অভি এবার খায়। খাওয়া শেষ করে।
বিছানায় ঠিকঠাক করে। তানহাকে কল করে।
দুই বার রিং হয় কিন্তু তানহা ফোন তুলে না। অভি ভাবে হয়ত ঘুমিয়ে পরেছে। তাই আর ডিস্টার্ব করে ন। ঘুমিয়ে পরে।

🥀🥀🥀🥀🥀
কাচা পেঁয়াজ মরিচ সরিষার তেল দিয়ে পোরা বেগুন ভর্তা আর ইলিশ মাছ দিয়ে কচু শাক সাথে চিকন চালের গরম ভাত।
স্মৃতির সামনে রাখে আবির৷ দেখেই জিভে পানি চলে আসে স্মৃতির। কিন্তু এই খাবার খাবে না স্মৃতি। এই দুমুখো সাপটা এসবের সাথে বিশটিশও মিশিয়ে দিতে পারে।
আবির নিজের প্লেটে ভাত বেরে খুব সুন্দর করে ভাত মাখাচ্ছে।
” বুজলে স্মৃতি তোমাকে না এতো তারাতাড়ি মারবো না। বিশ কিনতে তো টাকা লাগবে বলো? কিন্তু আমার কাছে তো টাকা নেই। দেখো না খাবার গুলো চার বাড়ি থেকে চেয়ে এনেছি। তো বিশ মিশালেও তো আবার কারো বাড়িতে চাইতে যেতে হবে বলো?
মৃদু হেসে বলে আবির।
স্মৃতি ভ্রু কুচকে তাকায়। এই লোকটা জানলো কি করে স্মৃতি এসব ভাবছে?
বেশ অবাক হয়েছে স্মৃতি কিন্তু সেটা প্রকাশ করবে না।
“দেখো তুমি আমার সাথে থাকবে না। পালাতে হবে। আর পালানোর জন্য প্রচুর শক্তি দরকার। পা টাও ভাঙা। তো চটপট খেয়ে শক্তি বারিয়ে পালিয়ে যাও।
স্মৃতির মুখের সামনে ভাত নিয়ে বলে আবির।
স্মৃতি মুখ ঘুরতে যায়।
” তোমাকে এখন আমি খাওয়াবোই। তো ভালোভাবে খেয়ে নিলে ঝামেলা মিটে গেলো। আর না খেলে জোর করতে হবে। এখানে সেখানে হাত লেগে যাবে। তুমি লজ্জা পাবে। সোটা আমাকে আরও ঘায়েল করে দেবে। তারপর যা হবে সেটার জন্য কিন্তু আমি মোটেও দায়ি না।
চোখ টিপ দিয়ে বাঁকা হেসে বলে আবির।
স্মৃতি ফট করে আবিরের হাত থেকে খাবারটা কেরে নিয়ে মুখে মুরে নেয়।
মাথা নিচু করে চিবতে থাকে। চোখটা বন্ধ করে আছে।
অসভ্য লোকটা
বিরবির করে বলে স্মৃতি।
আবির স্মৃতির মুখে ফু দেয়।
“গুড গার্ল

চলবে

#ভালোবাসি তাই ২
#পর্বঃ২৪
#তানিশা সুলতানা

জীবনটা বিষাদময় হয়ে উঠেছে মোহনার কাছে। চারপাশটা অন্ধকার হয়ে গেছে। খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে নিজের বলতে শুধু নিজেই আছে। ইদানীং মাও কেমন পর পর বিহেভ করে মোহনার সাথে। সব কিছু মিলিয়ে অভিকে ভীষণ মিস করে মোহনা। কতো ভালো ছিলো দিন গুলো। একসাথে কলেজ যাওয়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুসকা খাওয়া পাশাপাশি হাত ধরে হাঁটা। শপিং মলে গেলে যতদামি জিনিসই মোহনা চুজ করুক না কেনো অভি কিনে দিতো। কতো ভালোবাসতো মোহনাকে৷ এখন মনে হয় মা বাবাও মোহনাকে অতোটা ভালোবাসে নি যতটা ভালো অভি ওকে বাসতো।
কিন্তু এখন অভি কোথায়? মোহনার করা অতিরিক্ত অবহেলা অভিকে অনেক দুরে সরিয়ে দিয়েছে। এতোটাই দুরে সরিয়ে দিয়েছে মোহনার মৃত্যুও আর অভিকে ফেরাতে পারবে না।
বন্ধ ঘরে হাউমাউ করে কাঁদছে মোহনা। মোহনার কান্না শোনার মতো আজ কেউ নেই।
কথায় আছে না “উইপোকার পাখা গজায় মরিবার তরে”
মোহনার অবস্থাটাও সেরকম হয়েছে। বেটার কাউকে খুঁজতে গিয়ে বেস্ট কাউকে হারিয়ে ফেলেছে।

💔💔💔
সকাল হতে না হতেই রাফিদ তানহার জন্য চকলেট কেক আর বিরিয়ানি নিয়ে হাজির হয়েছে৷ বেশ রাত করে ঘুমানোর ফলে ঘুম ভাঙে নি এখনো তানহার।
রাফিদ চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দেয় তানহার। চোখ মুখ কুঁচকে তাকায় তানহা।
“তানহা জানিস স্মৃতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
গম্ভীর গলায় বলে রাফিদ। এক লাফে উঠে বসে তানহা। স্মৃতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মানে?
” কি বলছো তুমি?
“হুমম রে
কেউ নিয়ে গেছে স্মৃতিকে।
হু হু করে কেঁদে ওঠে রাফিদ।
তমা বেগম তানহার রুমে পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। রাফিদের কথা শুনে পা দুটো থেমে যায়। শেষবার যখন মেয়েটা এসেছিলো কতোই না কথা শুনিয়েছিলো মেয়েটা। বুকের মধ্যে হা হা করে ওঠে ওনার।
দ্রুত পায়ে তানহার রুমে ঢুকে।
” কি বলছো তুমি? কে নিয়ে গেছে?
উত্তেজিত হয়ে বলেন তিনি।
রাফিদ সবটা খুলে বলেন। তানহা ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে।
“হাসপাতালে তো সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে? আমাকে দেখাতে পারবে।
তানহা কান্না থামিয়ে বলে
” হুম পারবো।
ফোন বের করে দেখায় রাফিদ তানহা। আবিরকে দেখে মুচকি হাসে তানহা।
“চিন্তা করো না স্মৃতি ঠিক আছে।
তমা বেগম চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে। লজ্জা লাগছে খুব। এই ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছিলে? ছি ছি
দ্রুত চলে যায় রুমে থেকে।
” কি করে বললি ঠিক আছে?
রাফিদ কপালে ভাজ ফেলে বলে।
“ছেলেটা ভীষণ ভালোবাসে স্মৃতিকে। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে দুজনের। ভুল ভাঙাতেই নিয়ে গেছে।
অনমনে বলে তানহা।
” ডিটেলসে পরে বলবি। আগে বিরিয়ানি আরও কয়েকটা খেয়ে নে। আর ভাইয়ার সাথে একটু কথা বলে নে। পাগল করে দিলো আমায়।
রাফিদ পকেট থেকে ফোন বের করে তানহার হাতে দেয়।
“পরে খেয়ে নেবো।
বলেই তানহা ওয়াশরুমে চলে যায়।
” রাগারাগি ঝগড়াঝাঁটি হবে এদের আর মাঝখান থেকে আমাকে দৌড়াতে হবে। বউটা আমার একা একা আছে।
কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে রাফিদ।

“শুভ সকাল বাংলাদেশ। আজকে আপনাদের মন খারাপ ঠিক করতে চলে এসেছি আমি আর জে অভি। আজকে আপনাদেকে অন্য কারো গল্প শোনাবো না৷ নিজের পাগলিটার কথা শোনাবো।
তার সামনে এইচএসসি পরীক্ষা। তবুও সে জেদ ধরে ছিলো আমার সাথে থাকবে। এক্সাম দেবে না৷ তো তাকে জোর করে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য আমার সাথে রাগ করে কথা বলছে না। তো গাইস সাজেস্ট করেন কি করে দুর থেকে পাগলিটার রাগ ভাঙাবো?
সে কেনো বোঝে না? সে আমার থেকে দুরে আছে আমার মন থেকে নয়।
সবাই নানা রকমের কমেন্ট করছে। সব থেকে বেশি যে কমেন্টটা ছিলো সেটা হলো পাগলি টার নাম কি?

তানহা দেখছিলো অভির শো টা। রাফিদের কাছ থেকে জেনেছে কাল বিরিয়ানি খেতে বসে তানহার কথা মনে পড়েছিলো। সেই থেকেই তানহার মুখ থেকে হাসি সরছে না। তারপর আবার তানহাকে ডেডিকেট করে এতোকিছু বললো। মুহুর্তেই তানহার রাগ উধাও হয়ে যায়। তবুও ভেবে রেখেছে রিসিভ করবে না অভির কল। এক মাস পরে সামনা সামনি গিয়ে কথা বলবে।
” কাছে আসার জন্য মাঝে মাঝে দুরে যেতে হয়”
এউ দুরত্বটাই হবে অভি তানহার শেষ দুরত্ব। আর কখনোই অভিকে চোখের আড়াল করবে না।

🥀🥀🥀🥀🥀
স্মৃতি বলে দিয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যেই স্মৃতিকে বিয়ে করতে হবে। আর সেটা বাড়ির সবাইকে জানিয়ে বড় করে অনুষ্ঠান করে। আবির প্রথমে খুশি হলেও পরে মনটা খারাপ হয়ে যায়৷ কারণ স্মৃতির মনে খুব বড় কিছু চলছে সেটা ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে স্মৃতি। কিন্তু এখন স্মৃতির কথা মেনে না নেওয়ার কোনো অপশন নেই। কারণ জোর করে আর যাই হোক এক সাথে থাকা যায় না। পাশের মানুষটার চোখে প্রতিনিয়ত পালানোর ধান্দা ঘৃণা এসব থেকে থাকা যায় না কি?
স্মৃতি বাড়িতে কল করে বলে দিয়েছে আবিরের সাথে বিয়ে দিবে প্রমিজ করলে তবেই বাড়ি ফিরবে। আহাম্মদ চৌধুরী রাজি হয়ে যায়।

জানালা দিয়ে সূর্যমূখী ফুলের বাগান দেখা যাচ্ছে। স্মৃতি পাশ ফিরে শুয়ে সূর্যমুখী বাগানটা দেখছে এক মনে। আবির মার্কার দিয়ে আবিরের পায়ে স্মৃতি +আবির লিখছে।
“সবটা তো ঠিকঠাকই থাকতো যদি প্রথমে আপনি আমাকে না ঠকাতেন। যখন ইচ্ছে হয় চলে আসেন আবার যখন ইচ্ছে হয় চলে যান। আমিও তো মানুষ আবির। আমারও তো ভালো থাকার অধিকার আছে। আমারও তো আত্মসম্মান থাকতে পারে নিজের নিজস্ব কিছু মতামত থাকতে পারে। কেউ এভাবে আমাকে বদ্ধ উম্মাদ করে দিচ্ছেন।
শান্ত গলায় বলে স্মৃতি। প্রতিটি কথায় মিশে আছে আকাশ সমান অভিমান।
আবির স্মৃতির নিষ্পাপ মুখ টার দিকে এক পলক তাকায়। কিছু বলতে যায়।
” থাক আবির। আমি মিথ্যে পছন্দ করি না। আমাকে মানানোর জন্য এক্সকিউজ দিতে হবে না।
যেদিন প্রাণ খুলে সত্যি কথা বলতে পারবেন সেই দিন বইলেন।
আবিরের চোখ জোরা টলমল করে ওঠে।
“দ্বিতীয় বার ঠকে গেলে আমি আর বাঁচতে পারবো না। পরে আমার জন্য আফসোস করিয়েন না।
কন্ঠস্বর কেঁপে ওঠে স্মৃতির।
স্বপ্ন গুলো ভেঙে দিয়ে আবার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। মানুষ এতো স্বার্থপর কি করে হতে পারে? দু দিনের দুনিয়ায় কেনো এতো রং তামাশা দেখায়?
তারা কি জানে না মৃত্যুর পরে সব কিছুর হিসাব দিতে হবে?

🥀🥀🥀
চব্বিশ ঘন্টা তানহার ভয়েসটা শুনে না অভি। রেস্টুরেন্টে বাসন মাজছে আর ভাবছে কেনো তানহা কথা বলছে না?
হঠাৎ অভির ফোনটা বেজে ওঠে। প্যান্টে হাত মুছে ফোনটা রিসিভ করে।
মুহুর্তেি অভির চোখে মুখে খুশির ঝিলিক ফুটে ওঠে। চোখ বন্ধ করে খুশিটা উপভোগ করে।
“এতোবড় একটা সারপ্রাইজ নিয়ে আমি আসছি তানহা। রেডি থাকো। এবার আমি সেটাই করবো যেটা তুমি চাইছো।

চলবে