ভালোবাসি তাই ২ পর্ব-২৯+৩০

0
463

#ভালোবাসি তাই ২
#পর্বঃ২৯
#তানিশা সুলতানা

“আপনার চোখ দুটো কেমন চেনা চেনা লাগছে?
হালিজা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে বলে।
আবির ঢোক গিলে। এখন ধরা পরে গেলে মানসম্মান থাকবে না।
” আপনার কি বিয়ে হয়ে গেছে? তমা বেগম বিরিয়ানির প্লেট এনে আবিরের সামনে রেখে বলে। আবিরকে অবশ্য হালিজা আর তমা বেগম ধরে বেঁধে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে এসেছে। এতো লম্বা মেয়ের মুখ দেখেই ছাড়বেন তমা বেগম।
“ইয়ে মানে হ্যাঁ
আবির ইনিয়ে বিনিয়ে বলে।
” তোমার বর কি আপনার থেকেই লম্বা?
“সমান সমান দুজন।
” ভালো
এবার বিরিয়ানি টা খাও
“না মানে আমি খাবো না।
” না খেলে মুখটা দেখাও
স্মৃতি দুর থেকে দেখছিলো ওদের কান্ডকারখানা। খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে আবিরের মুখ এরা দেখেই ছাড়বে।
এরই মধ্যে সেখানে চলে আসে আহাম্মদ চৌধুরী। তার দৃষ্টিও এতোখন লম্বা রমণীর দিকে ছিলো। কিন্তু হুট করেই তো কোনো মহিলাকে জেরা করা যায় না। তাও আবার মেয়ের শশুড় বাড়ির লোক উনি।
“একি আপনি খাচ্ছেন না কেনো?
আহাম্মদ চৌধুরী মেকি হেসে বলে।
” ওয়াশরুমে যাবো।
আবির কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে।
“মুখ না দেখালে এখান থেকে যেতে দেবো না। কড়া গলায় বলে দেয় তমা বেগম।
” ইয়ে আমার এক পেয়েছে না থুক্কু দুই পেয়েছে।
তবুও কেউ যেতে দেবে না।
আবির এবার বুদ্ধি খাটায়।
“আপনার পেছনে সাপ
বলতেই তমা বেগম আর হালিজা লাফিয়ে ওঠে। আহাম্মদ চৌধুরী সাপ খুৃঁজতে থাকে। এই ফাঁকে বোরকা কোমর ওবদি তুলে আবির ভৌ দৌড় দেয়।
” এনা এটা তো ছেলে?
হালিজা বলে ওঠে।
আবিরকে আর পায় কে? এক দৌড়ে চলে যায়।

যখন কষ্ট আসে তখন সব দিক থেকেই কষ্ট আসে। আবার যখন সুখ আছে তো সব দিক থেকেই সুখ সুখ লাগে। আজ নিজেকে ভীষণ রকমের সুখী ব্যক্তি মনে হচ্ছে অভির। অথচ এক মাস আগেই জীবনের প্রতি মায়াটা হারিয়ে ফেলেছিলো। আত্নহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলো। আজ মনে হচ্ছে সেদিন মরে গেলে এই সুখ গুলো উপলব্ধি করা হতো না।

তানহা একটা ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। ছেলেটা অভির মামাতো ভাই আকাশ। ভীষণ মিশুক আর বাচাল। তো তানহাও বাচাল। দুই বাঁচালে মিলে কথার ঝুঁড়ি খুলে বসেছে।
তানহা কথার ফাঁকে ফাঁকে অভির দিকে তাকাচ্ছে। অভি জেলাস কিনা এটাই বোঝার চেষ্টা করছে। কিন্তু নাহহহ অভি কোনো জেলাস ফিল করছে না। কিন্তু কেনো? আমি অন্য কারো সাথে চলে গেলেও কি লোকটার কিছু আসে যায় না? অবশ্য আমি যাবোও না।

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হতে বারোটা বেজে যায়। যে যারা রুমে চলে যায় ফ্রেশ হতে। বাড়িতে প্রচুর মেহমান থাকায় অভির সাথে আকাশ আর রাব্বি ঘুমবে বলে ঠিক করে। তানহার রুমেও কয়েকটা মেয়ে থাকবে বলে ঠিক করেছে। তানহা অপরিচিতদের সাথে থাকতে পারবে না। তাই বালিশ নিয়ে চলে গেছে স্মৃতির রুমে।

অভির বেশ বিরক্ত লাগছে। এদের সাথে কিছুতেই রুম শেয়ার করবে না। আর অভি কি এখন সিঙ্গেল না কি? বউ আছে ওর। কই রাফিদের রুমে তো কেউ গেলো না ঘুমতে। তাহলে ওর রুমেই কেনো? অবশ্য ওদের বিয়ের কথা তো কেউ জানে না।
“তোরা অন্য রুমে যা।
অভি কপালে চুলকে বলে।
” কেনো ভাই? তুই তো একাই থাকবি। তো পবলেম কি ইয়ার।
আকাশ আয়েশ করে শুয়ে বলে।
রাফিদ আসে সেই সময়।
অভি রাফিদের দিকে তাকায়।
“রাফিদ ওদের থাকার ব্যবস্থা কর অন্য কোথাও।
” কিন্তু ভাই বাড়িতে
অভি কটমট চোখে তাকায় রাফিদের দিকে। রাফিদ চুপসে।
“তোরা ঠিকঠাক ভাবে শুতে পেরেছিস?
আনিকা বেগম বলতে বলতে রুমে ঢোকে। আনিকা বেগমের পেছনে তানহা।
তানহা আনিকা বেগম আর ওর মায়ের সাথে থাকবে। অভিদের রুমের পাশ দিয়ে যাচ্ছে তাই দেখে যাবে।
” মা আমি কারো সাথে রুম শেয়ার করতে পারবো না।
অভি কাঠকাঠ বলে দেয়।
“সে কি কেনো? কয়েকটা দিনেরই তো ব্যাপার বাবা।
” ভাই বলছি
রাফিদ আবারও কিছু বলতে যায়।
“মা আমি তোমাকে তো বলেদিলাম। আমি এখন একা ঘুমতে পারবো না।
আমতাআমতা করে বলে অভি। তানহা গোলগোল চোখ করে তাকায় অভির দিকে। নিলজ্জ লোক। ছি ছি কি বলছে এসব? লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে তানহার।
” লে খোকা
একবার বলছিস কারো সাথে রুম শেয়ার করবি না। তো আবার বলছিস একা ঘুমতে পারবি না। পাগল পাগল হলি না কি?
আকাশ গালে হাত দিয়ে অধশোয়া হয়ে বলে।
আনিকা বেগম মুখ চেপে হাসে।
অভির মুখটা থমথমে হয়ে যায়।
“এখান থেকে সরছি না আমরা। এখানেই থাকছি আজকে।
আকাশ সোজাসাপ্টা বলে দেয়।
” অভি আজকের রাতটা
অভি আনিকা বেগমকে থামিয়ে বলে ওঠে
“মা রাফিদের রুমটাতে ওরা থাকুক। মায়া তোমার সাথে থাকবে।
অভির কথায় রাফিদ অসহায় ফেস করে তাকায় অভির দিকে।
” আমি ওর সাথেই থাকবো। ইটস ফাইনাল।
তানহার দিকে তাকিয়ে বলে অভি।
তানহা মাথা নিচু করে আছে। কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। কেমন লজ্জায় ফেলে দিলো তানহাকে। এভাবে মায়ের সামনে কেউ বলে “আমি বউকে ছাড়া থাকতে পারবো না?” নিলজ্জ বেহায়া লোক একটা।
মনে মনে অভিকে হাজারটা গালি দিতে থাকে তানহা।
“কেসটা কি?
আকাশ চিন্তিত হয়ে বলে
” তোকে আমি বুঝিয়ে বলবো। এখন চল তোরা।
রাফিদ বাংলার প্যাচের মতো মুখ করে বলে।
“আসছি আমি
আনিকা বেগম তানহার কাঁধে হাত দিয়ে বলে। তানহা মাথা তুলে তাকায় না।

সবাই বের হতেই অভি দরজা বন্ধ করে এসে খাটে বসে। ঘেমে গেছে। মনে হয় এতখন যুদ্ধ করেছে।
” ওদের তাড়ালেন কেনো?
তানহা কোমরে হাত দিয়ে অভির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলে
“তোমার সাথে থাকবো বলে।
হাই তুলে বলে অভি।
” এমন ভাবে বললেন যেনো বউকে চোখে হারান। কিন্তু এদিকে বউকে কখনো ছুঁয়েও দেখেন নাই। সবাই উল্টাপাল্টা ভাবলো।
মুখ বাঁকিয়ে বলে তানহা।
“একটু আগেও না ছুঁয়ে দিলাম।
অভিকে কপালে তিনটে ভাজ ফেলে বলে।
তানহা নিজের চুল নিজে টানতে টানতে অন্য দিকে চলে যায়।
অভি মুখ টিপে হাসে।
” লাইট অফ করে দিয়ে এসে শুয়ে পড়ো। ভীষণ ঘুম পাচ্ছে আমার।
অভি শুতে শুতে বলে।
“আপনার ঘুম পাচ্ছে আপনি ঘুমান। আমার ঘুম পাচ্ছে না আমি ঘুমবো না।
” ওকে। তাহলে শুধু লাইট অফ করে দাও।
কম্বল মুরি দিয়ে বলে অভি।
“আস্ত একটা নিরামিষ।
তানহা বিরবির করে বলে।
” বুঝলাম না হঠাৎ রেগে গেলো কেনো? অভি মনে মনে বলে।

চলবে

#ভালোবাসি তাই ২
#পর্বঃ৩০
#তানিশা সুলতানা

“ভীতুর ডিম একটা।
তানহা ভেংচি কেটে অভির পাশে শুয়ে বলে।
” আমি খুব সাহসী। একদম ভীতু বলবা না।
বুক ফুলিয়ে বলে অভি।
“ভীতুর বাপের আবার বড় কথা
বিরবির করে বলে তানহা।
” শুনো আমি যে কতো বড় সাহসী তার প্রমাণ কাল দেবো।
“কি করে? তানহা উৎসাহ নিয়ে হাতের ওপর মাথা ভর দিয়ে অভির দিকে ঝুঁকে বলে.
” কাল আর পালিয়ে যাবো না৷ বেলা করে ঘুম থেকে উঠে সকলের সামনে দিয়ে যাবো৷ বুঝলে?
“ওরে আমার বীর পুরুষ রে।
” বীর পুরুষ না হলে এটা করার কথা ভাবতাম?
“শুনুন সব ছেলেরা বিয়ের পর বউয়ের সাথেই থাকে। আর এটা সবাই জানে।
আজাইরা
” কথায় কথায় রেগে যাচ্ছো কেনো?
“কারণ আপনি একটা যাতা
তানহা মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পরে। কেনো রাগ হচ্ছে এটা নিজেও জানে না।
অভি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তানহাকে।
” অভি চৌধুরীও রোমান্টিক। শুধুমাত্র সঠিক সময়ের জন্য প্রমাণ করতে পারে নি।
ফিসফিস করে তানহার কানের কাছের মুখ নিয়ে বলে অভি।
তানহা মুচকি হাসে।
“ভীষণ আসক্ত হয়ে গেছি তানহা নামক মাদক তায়।
” তুমি কি চাইছো আমি তোমাকে ছুঁয়ে দেই?
অভি প্রশ্নটা ছুঁড়ে দেয় তানহার দিকে। আবার রেগে যায় তানহা। অভির হাতটা ছাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে।
“যাহহহহ বাবা রেগে গেলে কেনো?
আরও শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে বলে অভি।
” কারণ আপনি বাজে একটা মানুষ।
“এই বাজে মানুষটাকেই সারাজীবন সয্য করতে হবে।
অভি মুচকি হেসে বলে।
” করবো না সয্য। চাপকে ভালো করে নেবো।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে তানহা।
“আচ্ছা
দুষ্টু হেসে বলে অভি।
” একটা কথা কি জানো?
তুমি আমার পাশে শুধু তুমি থাকলেই হবে তানহা। আমার আর কিচ্ছু চায় না। বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি তোমায়।
তুমি জানো আমি তোমাকে ভালো একটা জামা কিনে দেবো বলে রেস্টুরেন্টে বাসন মেজেছি আমি। সারাদিন রাত বাসন মেজেছি ঝাঁড়ু দিয়েছি। শুধু তোমায় ভালো রাখবো বলে। এতোটা ভালোবাসতে কবে শিখলাম আমি?
নিজের মনে মনে কথা গুলো বলে নিজেই অনমনে হাসে অভি।
“কোন গার্লফ্রেন্ডের কথা মনে করে হাসছেন?
তানহা কপালে ভাজ ফেলে তাকায় অভির দিকে।
” তোমাকে ছোঁয়ার কথা ভাবছি। আচ্ছা তোমাকে কিস করলে তুমি লজ্জা পাবে?
তানহা মুখ বাঁকায়।
অভি তানহার দিকে ঝুঁকে। তানহা চোখ বড়বড় করে তাকায়।
“ভয় দেখাচ্ছেন?
মুখ বাঁকায় তানহা।
অভি এবার তানহার দুই গালে হাত দেয়। তানহা মিষ্টি হাসে।
” রেডি ওয়ান টু থ্রি
তানহার মুখের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে থেমে যায়।
“হাওয়া ফুসসসস
তানহা চোখ রাঙিয়ে বলে।
“নার্বাস হয়ে গেছি।
বাদ দাও ঘুমিয়ে পরো।
বলেই অভি টানটান হয়ে শুয়ে পরে। তানহা মুখ টিপে হাসে।
” পাগল একটা
মনে মনে বলে। বুকে হাত দিয়ে বার কয়েক শ্বাস নেয়। কারণ একটা অদ্ভুত কাহিনি করতে চাইছে তানহা। তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমান সাহস দরকার।
তারপর টুপ করে অভির ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।

❤️❤️❤️
স্মৃতির ফোনটা অনেকখন যাবত বাজছে৷ কিন্তু স্মৃতি ফোন তুলছে না। এখনো শাড়ি টাও খুলে নি। উদাসীন ভাবে বেলকনিতে বসে আছে। পাশেই ফোনটা রাখা। ফোন বাজার আওয়াজটা কানে ঢুকছে কিন্তু তুলতে ইচ্ছে করছে না। ভীষণ রাগ হচ্ছে ওই লোকটার ওপর। কতোবড় অসব্ভ্য নিজের গায়ে হলুদের নিজেই বোরকা পরে এসেছে। সবাই বুঝে গেলো কি একটা বাজে পরিস্থিতি সৃষ্টি হলো?
ভাগ্যিস বুঝে যায় নি ওটা আবিরই ছিলো।
হঠাৎ পেটে শীতল অনুভব হতেই চট করে ভাবনার জগৎ থেকে বের হয় স্মৃতি। বেশ খানিকটা চমকে যায়।
সেই শীতল হাতের ওপর নিজের হাত দুটো দিয়ে ছাড়ানোর চেষ্টা করে।
মাথা ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে যায় এক জোড়া তৃহ্ম চোখের সাথে। যেই চোখে ছিলো এক রাশ মাদকতা।
সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নেয় স্মৃতি।
“আআপনি এখানে?
এতস্থত বোধ করে রিনরিনিয়ে বলে স্মৃতি।
” বাহহ রে সবাই আমার বউকে হলুদ মাখালো আমি একটু মাখাবো না?
কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে আবির। চোখে মুখে তৃপ্তির হাসি।
স্মৃতি ঠোঁট কামড়ে চোখ বন্ধ করে।
“ছাড়ুন হয়েছে
হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলে স্মৃতি।
” যদি না ছাড়ি?
স্মৃতির হাত দুটোকে আকড়ে ধরে শরীরের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলে আবির।
“নাছাড়লে কিছু করার নেই। জোর তো সব সময় আপনিই খাটাতে পারেন। আমার তো সেই অধিকার নেই মিস্টার আবির।
খুব আবেগী হয়ে তাচ্ছিল্য হেসে বলে স্মৃতি।
আবির হাসে।
” তাহলে মেনে নিলে তোমার অধিকার চলবে না? আমি কিন্তু অতোটাও খারাপ না। তবে হ্যাঁ ভালোবাসার হ্মেএে কোনো অধিকার খাটবে না। আমার পাওনা আমি আদায় করে নিতে জানি।
স্মৃতির মাথায় হালকা মাথা ঠেকিয়ে বলে আবির।
স্মৃতিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয় আবির। স্মৃতি চোখ বন্ধ করে আছে।
স্মৃতির কানের দুল খুলে দেয়। একে একে সব গহনা খুলে দেয়। গলায় মুখে হলুদ মাখিয়ে দেয়।
শাড়ির পিন খুলতে গেলে স্মৃতি আবিরের হাত দুটো ধরে ফেলে।
“প্লিজ না
রিনরিনিয়ে বলে স্মৃতি।
” আমি পারবো।
“ওকে
তাহলে আমি আসি।
আবির যেতে নিলে স্মৃতি আবার আবিরের বা হাতটা ধরে। আবির ভ্রু কুচকে তাকায় স্মৃতির দিকে।
” এখান দিয়ে লাফিয়ে যাবেন না। মই বেয়ে নামুন
আদেশের সুরে বলে স্মৃতি।
আবির হাসে। স্মৃতির মুখে লেপ্টে থাকা ছোট চুল গুলো কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে স্মৃতির কপালে চুমু এঁকে দেয় আবির।
“ভালোবাসি তাই
এতোটা রিক্স নিয়ে তোমার পানে ছুটে আছি।

❤️❤️❤️
ফজরের আজানের সময় ঘুম ভেঙে যায় তানহার। অভির বুকের সাথে লেপ্টে ঘুমিয়ে ছিলো। অভির নিশ্বাস তানহার চুলের ভাজে পরছে। তানহা মিষ্টি হাসে। আরমোরা ভেঙে উঠে বসে। তানহা উঠতেই নরেচরে পাশ ফিরে শয়।
তানহা উঠে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। গোলাপি রংয়ের পর্দাটা সরিয়ে দিতেই একরাশ বাতাস ছুঁয়ে দিয়ে যায় তানহার শরীর। কেঁপে ওঠপ তানহা। মনে পরে যায় রাতে কথা। লজ্জায় নেতিয়ে ওঠে। মুখে ফুটে ওঠে লজ্জামাখা হাসি।
” জীবনটা পরিপূর্ণ মনে হচ্ছে। এক জীবনে এতো সুখ লেখা ছিলো আমার কপালে? কখনো কোনো কষ্টই পেলাম না। জীবনের স্বাদটা উপলব্ধি করতেই পারলাম না। তবে হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ আমাকে এতো সুন্দর একটা জীবন দেওয়ার জন্য। এতো ভালো বাবা মা পরিবার আর স্বামী দেওয়ার জন্য।

অনেকখন যাবত অভি বিছানায়,বসে হাসফাস করছে। ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে যাচ্ছে। বারবার নিজেকে সাহসী করে তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু হচ্ছে না। কিভাবে যাবে সকালে সবার সামনে দিয়ে?
তানহা গোছল সেরে তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে ওয়াশরুম থেকে বের হয়। অভিকে হাসফাস করতে দেখে ভীষণ হাসি পাচ্ছে তানহার।
“এই তুমি গোছল কেনো করছো?
অভি কপালে ভাজ ফেলে বলে।
” মানে কি?
তানহা রাগী সুরে বলে।
“তারাতাড়ি চুল শুকাতে হবে।
অভি তারাহুরো করে তানহাকে খাটে বসায়। ফ্যান ছেড়ে দেয়। সাথে নিজেও ফু দিচ্ছে।
এভাবে তানহা বাইরে গেলে মানসম্মান থাকবে না। একে তে তানহার রুমে তারওপর আবার
নাহ নাহ এটা হতে দেওয়া যাবে না।
ফুল স্পিডে ফ্যান ঘুরছে তবুও অভিকে ঘামছে।
তানহা হাসবে না কি কাঁদবে বুঝতে পারছে না। এটা বর? এতো লাজুক কারো বর হয়?

চলবে