#তাসনিম_তামান্না
#ভালোবাসি_প্রিয়তম
#পর্ব_১৫
🍁🍁🍁
তুষার আর তুষারের ফেন্ডরা সাথে কুয়াশা আর মেঘা বসে গল্প করছে কিন্তু কুয়াশার গল্পে কোনো মন নাই ওর মনে বারবার একটা কথায় আসছে “কেনো ভাইয়া ওদের ডাকলো? কেনো?” তুষার কুয়াশার আসার সময় থেকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সবাই ব্যপারটা খেয়াল করলের কিছু বলছে না কিন্তু কুয়াশা একবারও তাকায়নি ওর মাথায় ঔ প্রশ্ন টাই ঘুরছে কেনো ডাকলো। মেঘা কুয়াশাকে ধাক্কা দিলো।
-কুয়াশা তুমি তো কিছুই বলছো না (তন্নি)
-শরীর খারাপ লাগছে বুঝি (মুন)
-না না আপু (একটু হাসি দিয়ে বলল কুয়াশা তুষারের দিকে চোখ যেতেই সাথে সাথে চোখ ফিরে বলল) আপনারা কথা বলেন আমি একটু পর আসছি
কাউকে কিছু বললার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো। ওরা ঠোঁট উল্টে আবার গল্পে মন দিলো। তুষার ভ্রু কুচকে ওর যাবার দিকে তাকিয়ে রইলো। কুয়াশা সোজা কুশানের রুমে গেলো। গিয়ে দেখলো কুশান রেডি হচ্ছে আয়নার সামনে দাড়িয়ে আর পাখি দরকারি জিনিসপত্র এগিয়ে দিচ্ছে।
-আসবো (কুয়াশা)
ওরা দুজন তাকিয়ে দেখলো কুয়াশা অবাক হয়ে পাখি বলল
-রুমে আসার জন্য পারমিশন নিচ্ছিস কেনো (পাখি)
-আমি তো তোমাদের কেউ হইনা তাই (কুয়াশা)
পাখি আর কুশান আরও অবাক হলো কুয়াশার কথায়
-কি যাতা বলছিস (কুশান)
-ঠিকিই তো বলছি (কুয়াশা)
পাখি কুয়াশাকে বেডে বসিয়ে বলল
-কি হইছে বল তো এমন করছিস কেন হঠাৎ (পাখি)
-তো কেমন করবো তোরা ওদের কে বাসায় ডাকছো কেনো (কুয়াশা একটু জোরেই বলল)
কুশান ভ্রু কুচকে বলল – আস্তে কথা বল (কুশান)
-আমি আস্তে কথা বলতে পারি না (কুয়াশা)
-কুয়াশা (কুশান)
-তোমরা আমাকে পর করে দিবা? আমি কোথাও যাবো না! তোমাদের ছাড়া থাকতে পারবো না। আমি তো এ বিয়ে মানিই না (বলতে বলতে কেঁদে দিলো কুয়াশা)
কুশান একটা তপ্ত শ্বাস নিয়ে কুয়াশার পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল
-এসব কি বলছিস তুই (কুশান)
-ঠিকি বলছি আমি এ বিয়ে মানি না কোথাও যাবো না তোমাদেরকে ছেড়ে (কুয়াশা)
-আচ্ছা কিন্তু বিয়েটা তো হয়ে গেছে। আর তুষার তুহিন আংকেলর ছেলে (কুশান)
-এসব শুনে আমি কি করবো হ্যাঁ এসব কিছু আমি শুনতে চাইছি না (কুয়াশা)
-কুয়াশা বোন আমার এসব বলতে নাই বিয়ে হয়ে গেছে এখনতো কিছু করার নাই তাই সবটা মেনে নে আর এখন তো তোকে সংসার করতে হচ্ছে না আমাদের থেকে দূরেও যেতে হচ্ছে না আগে তোরা দু’জন দু’জনকে জান বোঝ এসব এখনো অনেক সময় বাকি। আর একদিন না একদিন তো বিয়ে করতে ই হতো তাহলে (পাখি)
কুয়াশা পাখির কথা শুনে মাথা নাড়িয়ে বলল ‘আচ্ছা’
-আচ্ছা থাকো তোমরা ওরা নিচে আছে আজ দুপুরে রান্না কর ওদের জন্য আর বোন ভাইয়া ভুল বুঝছিস না (কুশান)
কুয়াশা মুচকি হাসি দিলো কুশান চলে গেলো সবার থেকে বিদায় নিয়ে। পাখি ও নিচে এসে ওদের সাথে কুশন বিনিময় করে রান্না ঘরের দিকে গেলো। কিছুক্ষণ পর কুয়াশা আর মেঘও আসলো ওরা গল্প করে দুপুরে খেয়ে চলে গেলো। এর মধ্যে তুষার আর কুয়াশা কেউ কারোর সাথে কথা বলেনি। কুয়াশা সবার প্রশ্নে হুম, হ্যাঁ উত্তর দিয়েছে। মেঘা আর রিদের চোখাচোখি হয়েছে অনেক বার রিদ মেঘার সাথে সবার সামনে কথা বলেছে মেঘাও না পেড়ে দাঁত কটমট করে উত্তর দিয়েছে।
★★★
কলেজ শেষে বাসায় যাবার জন্য মাঠ পেরিয়ে যাচ্ছিলো কুয়াশারা। তখন তুষার ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো।
-আহুম আমি কুয়াশাকে নিয়ে যেতে পারি (তুষার)
তুষারের কথায় ওরা দাঁত কেলালো। অনু, রাহুল, ঈশান ওরা সব জানে তাই ঈশান বলল
-হ্যাঁ হ্যাঁ অব্যসই আপনার বউকে আপনি নিয়ে যাবেন এতে আমাদের কি (ঈশান)
কুয়াশা ঈশানের মুখে ‘আপনার বউ’ কথাটা শুনে ওর কেমন লাগলো। কিন্তু কিছু বললো না, না চাইলেও ওকে সব মানতে হবে। তুষার মুচকি হেসে বলল
-চলো (তুষার)
কুয়াশা কিছু না বলে মূর্তির ন্যায় তুষারের সাথে যেতে লাগলো। তুষার আর কুয়াশা পাশাপাশি হাটছে কলেজের পিছন দিকে জায়গাটস ফাঁকা, গাছের ছায়ার জন্য রোদ লাগছে না মৃদু বাতাস বইছে। নিরবতা ভেঙে তুষার বলল
-তুমি এ বিয়েটা মানছো (তুষার)
তুষারের কথায় কুয়াশা একটু নড়েচড়ে উঠে জ্বী দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলল
-না মানার কি আছে ভাইয়া যেটা চাই সেটাই রাজি আমি (কুয়াশা)
তুষার ঠোঁট কামড়ে হাসলো সে হাসি কুয়াশার চোখ এড়ালো না মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখলো সে হাসি তুষার হাসলে খোচা খোচা দাঁড়ির মাঝে টোল পড়ে ঠোঁট কামড়ে হাসায় ঠোঁট আরো গোলাপি হয়ে গেছে। তুষার কুয়াশা উত্তর এমন কিছু হবে আগে থেকেই জানতো।
-কিছু খাবে? (তুষার)
-খেতে ইচ্ছে করছে না (কুয়াশা)
-ওহ। আমার সম্পর্কে কি জানো (তুষার)
-আপনি মানুষ এটার থেকে বেশি কিছু জানি না (কুয়াশা)
তুষার আবারও নিঃশব্দে হাসলো। কুয়াশার তুষারের এবারের হাসি দেখে রাগ হলো রাগ নিয়ে বলল
-এতে এতো দাঁত কেলানোর কি আছে (কুয়াশা)
তুষার কুয়াশার কথায় পাত্তা না দিয়ে বলল
-আমি কিন্তু তোমার সম্পর্কে অনেক কিছু জানি (তুষার)
কুয়াশা ভ্রু কুচকে বলল
-কি জানেন (কুয়াশা)
-এই যে তুমি ভিতু (তুষার)
কুয়াশা তুষারের কথা শুনে আরো রেগে গেলো রাগ নিয়ে বলল
-কিহহ! আমি মটেও ভিতু না আপনি ভিতু আপনার চোদ্দগুষ্টি ভিতু (কুয়াশা)
কুয়াশা রাগ দেখে তুষারের ভালোই লাগছে ওর এই প্রথম কুয়াশার রাগ দেখছে ও। তাই রাগানোর জন্য দুষ্টুমি করে আরও বলল
-আমার চোদ্দগুষ্টির মধ্যে কিন্তু তোমার ফিউচার বেবিগুলাও পড়ে তাই একটু দেখে শুনে কথা বলো (তুষার)
তুষারের কথা শুনে কুয়াশার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। এতোক্ষণ বুঝতে পারলো রাগের মাথায় উল্টা পাল্টা বলছে। তাই শুকনো ঢোক গিলে তুষারের দিকে তাকাতেই তুষার চোখ টিপ মারলো। কুয়াশা ভীতু মুখ নিয়ে ওখান থেকে দৌড় দিলো। তুষারও আর বাঁধা দিলো না ওখানে দাঁড়িয়েই হাসতে লাগলো তুষার। কুয়াশা মাঠে গিয়ে দেখলো মেঘারা এখনো কেউ যায় নি তাই মেঘাকে নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলো। কেউ কিছু বুঝতে পারলো না। ঈশান বলল
-এতো তাড়াতাড়ি প্রেম আলাপ হয়ে গেলো আমি তো ভাবলাম আজ সারাদিন চলে যাবে তোদের (ঈশান)
কুয়াশা রাগ নিয়ে বলল
-একদম ফালতু কথা বলবি না (কুয়াশা)
ওরাও আর কিছু বললো না।
#চলবে
#tasnim_tamanna