ভুলি কি করে তোকে পর্ব-০৮

0
16

গল্প #ভুলি_কি_করে_তোকে

(এ প্রথম লেখা লেখি করছি জানি না কেমন লাগবে ভুলক্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন)

(কাজিন রিলেটেড + রোমাঞ্চকর+থ্রিলার)

লেখক : #নুরজাহান_আক্তার_স্নিগ্ধা……

📌কপি সম্পুর্ন নিষিদ্ধ

#পর্ব_৮

মাহদি
-এই বজ্জাত এর বাচ্চা এটা কি করলি তুই জানিস না। ওর অনুভূতি যে আমি বুঝি এটা এখনো প্রকাশ করতে চাই না। তারপরও এ কাজ টা কেন করলি।ও যদি বুঝে যেত তখন।

নিশিতা নিচে আসার পরে মাহদি চোখ রাঙিয়ে রাদিফ এর দিকে তাকিয়ে বলে।

রাদিফ
-আরে ভাই কুল থাকো তো। প্যারা নিও না তো শুধু শুধু ওই পাগলটার এত বুদ্ধি হয়নি এত কিছু বুঝবে।ও যেভাবে তাকিয়ে ছিল যে কেউ বুঝে ফেলবে ও তোমার প্রতি ফিদা

মাহদি
-তোর বোন তো যখন পারে ঢেব ঢেব করে তাকিয়ে থাকে। আশেপাশের সব ভুলে যায়। এখন জানি না বলে কন্ট্রোলে থাকে যদি জানে আমি জানি তখন তো সার্টিফিকেট পেয়ে যাবে তাকানোর। তখন আমার কন্ট্রোল করতে সমস্যা হবে। না যেনেই আমাকে পাগল করে দিচ্ছে।

রাদিফ
-তুমি যাই বলো তুমি খুব লাকি যাকে ভালোবাসো সে তো তোমার জন্য পাগল। কিন্তু পাগলটা তোমার ভালোবাসা বুঝেই না সে নাকি আবার “ল” নিয়ে পরবে পাশ তো করে ভালো নাম্বারেই কিন্তু লাভ কি এতো ভালো ছাত্রী হয়ে মনই তো বুঝে না মন চাচ্ছে পাগলটাকে মনের কথা বুঝতে একটা কোর্স দিতে।কিন্তু যতোই হোক বড় ভাই তো ছোট বোনকে কিভাবে কোর্স দেই।মাহদি রাদিফ এর কথা শুনতে শুনতে ছাদের রেলিঙের দিকে যেয়ে রেলিঙের উপরে বসে। মাহদির পিছে পিছে রাদিফ এসেও রেলিঙের উপর বসতে বসতে বলে আবার ও বলে

-ভাই আমি তো ভেবে ই দেখিনি তোমাদের বিয়ে হয়ে গেলে আমি কিন্তু তোমার হবু সমুন্ধি। তোমার মেহুর বড় ভাই আমি আর জানো তো সমুন্ধিকে সম্মান দিতে হয়। তার কথার ধরন এমন যে সে সমুন্ধি হতে পারবে এটা নিয়ে গর্ববোধ করছে।

-ওওও তাই তো এটাতো ভেবেই দেখিনি। তাহলে সমুন্ধি সাহেব সম্মান দিতে হবে আপনাকে তাই না। চলেন তাহলে আপনাকে আমি সম্মানের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দিবে। সম্মান দিয়ে কাধে উঠাবো। রাদিফের আর বুঝতে বাকি নেই আকে কেমন সম্মানের কথা বলা হচ্ছে সে এখন নির্ঘাত কেলানি খাবে

__________

নিশিতা নিজেকে বকতে বকতে নিচে এসে নিধির রুমে যায় তার কাজ এক এক করে সব ভাইবোনদের তারা দেওয়া। নিধির রুমে এসে ভ্রু কুচকে ফেলেছে সে বোন একটা পেয়েছে যখন তখন সাজবে যখন ইচ্ছে করবে শাড়ি পরবে বাংলা বিভাগের ছাত্রী বলে কথা সব সময়ে উপন্যাস সাহিত্য নিয়েই থাকে। সে সারাদিন বই নিয়ে পরে থাকবে।আর না হয় গল্পের চরিত্রে রূপান্তরিত হবে। সে নিজে ও গল্প লিখতে পছন্দ করে লিখেছেন ও তার ইচ্ছে আছে উপন্যাসের বই বের করবে।আজ ও ব্যতিক্রম কিছু হয়নি নিধির রুমে এসে দেখতে পায় নিধি নীলরঙের শাড়ীর মধ্যে সোনালী পাইর দেওয়া সুতি শাড়ি পরে আছে সাথে সোনালী রঙের ছোট ঝুমকো গলায় চিকন চেইন হাতে চিকন সোনালী রঙের চুরি দুধে আলতা গায়ে রঙের দেহে প্রত্যেক জিনিস ফুটে উঠেছে।ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক ব্যবহার করছে চোখে কাজল কপালে ছোট কালো টিপ।চুলে ঢিলে বিনুনি সামনে দিকে কিছুটা চুল বের করা। একদম নতুন বউ বউ লাগছে। তার বোন খুবই মায়াবতী। যে কেউ তার মায়ায় পরে যাবে।সবমসময় মুখে মায়া লেপ্টে থাকে।এতো কম সাজে ও কি সুন্দর দেখতে লাগছে।নিশিতা রুমের ভিতরে যেয়ে নিধির পিছনে থেকেই ডান দিকে ঝুঁকে নিধিকে দেখছে মুখ দেখছে এতে নিধি একটু বিব্রত হয়ে যায় এভাবে তাকে দেখার কি আছে। সে কি এই প্রথম সেজেছে নাকি নিধিতা আস্বস্তি নিয়ে বলে উঠে

-এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন। আমাকে আগে দেখিসনি কখনো?

নিধির কথা শুনে নিশিতা প্রশস্ত হাসি দিয়ে বলে

-মাসাআল্লাহ! তোমাকে অমায়িক সুন্দর লাগছে। আমিতো কখনো অমন ভাবে দেখিনি। আমার বোন যে এতো মায়াবতী। একদম নতুন বউ বউ লাগছে।

-তাই।নিধি নিশিতা কথা শুনে মুচকি হাসলো।তার বোন গুলো একটা ও কম যায়না ওকে সুন্দর লাগলে মন ভরে প্রশংসা করে লজ্জা দিবে।

-হ্যাঁ তাই যে কেউ তোমাকে দেখলে উষ্ঠা খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়বে।আজ যদি কেউ তোমাকে দেখতে আসতো সত্যি বলছি দেখতে এসে বিয়ে পড়িয়ে সাথে নিয়ে যেত।রেখে যেতে পারতো না।

নিশিতার কথা শুনে নিধি লজ্জা পেল।
-আচ্ছা অনেক হয়েছে আর বলতে হবে না।যা এখন

-রেডি হয়ে ছাদে আসো।বলে নিশিতা যেতে নিয়ে থেমে যায়। নিধির সামনে যেয়ে চোখের থেকে কাজল নিয়ে নিধির কানের পিছনে দিয়ে দেয়।নিধি হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তার বোন করছেটা কি।এর মধ্যে নিশিতা আরেকটা কাজ করে ফেলে

-আপু তুমি কি কারো জন্য সেজেছো। নিশিতার কথা শুনে নিধি একটু ভড়কে যান সাথে সাথে নিজের সামলে নিয়ে বলে

-না! যা তুই এখন

নিশিতা আর কিছু না বলে নাদিফ এর রুমে যায়। যেয়ে দেখে সে।অফিসের কাজ করছে।নাদিফ পড়াশোনা সাথে অফিসে ও যায় তা রাজনীতি /মারামারি তেমন পছন্দ না। সহজে রাগে ও না। শান্ত স্বাভাবের।নিশিতাকে দেখতে পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বলেন

-কিছু বলবি

-হ্যাঁ ছাদে যেতে বলছে সবাইকে। আজও কাজ করতে হবে ভাইয়া।

-খালি বসেছিলাম তাই কিছুতা আগিয়ে রাখলাম।

-আর করতে হবে না চলো।সবাই মজা করবো আড্ডা দিব।(আনন্দিত হয়ে)

-আচ্ছা যা আসছি আমি। (মুচকি হেসে)

নিধিতা বের হয়ে আরোহী রুমে যায়। যেয়ে দেখে ম্যাডাম বিভোর ঘুম ওকে ডাকাডাকি করে উঠিয়ে।বলে নাহিয়ান ,ইরা,রাফি কে ডাকতে। আরোহী না করে দেয় সে ইরা,রাফিকে ডাকবে।নাহিয়ানকে ডেকে আনতে নিশিতা কে বলে।

-এই নাহিয়ান ভাই এসেই আমার পিছে পড়ে আসে।তোর ভাই তুই যা

-তোমার ও ভাই আমি ইরা ,রাফি কে ডাকি তুমি রুমে যাবেই তো ভাইয়াকে ডেকে দিও। আমি উঠে আর নামতে পারবো না।

নিশিতা বিরক্তি নিয়ে বের হয় এখন সে নাহিয়ানকে ডাকতে যাবে।নিশিতা নাহিয়ান এক রুমের সামনে এসে কয়েকটি টোকা দেয় দরজায়। খুলে না তার জানা মতে নাহিয়ান রুমেই বের হয়নি।নাহিয়ান ঘুমে ভেবে লকে যে না মোচড় দিয়ে রুমে ঢুকবে ঠিক তখনি নাহিয়ান দরজা খুলে দেয়। এতে নিশিতা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মেজেতে পরে যায়। নাহিয়ান তার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

-তুই আমার রুমে কি করিস? উকিঁঝুকি দিচ্ছিলি নাকি আমাকে।

আজবতো ও কি আসতে চেয়েছে। আসতে হয়েছে।ও কোন দুঃখে উকিঁঝুকি দিতে যাবে মনে ভেবে মুখে বলে

-ডাকতে এসেছি। ছাদে যাওয়ার জন্য। আমি রুমে আসতে চায়নি আপনি দরজা খুলেনি দেখে দেখতে চেয়ে ছিলাম আপনি ঘুমে নাকি বাহিরে।

-আচ্ছা! তো নিচে বসে থাকবি নাকি উঠবি আমি কোলে করে উঠাতে পরবো না।

নিশিতা কিছুটা ব্যথা পেয়েছে। তাই উঠতে কষ্ট হচ্ছে। নাহিয়ান দেখে হাত বারিয়ে দেয়। নিশিতা হাত ধরে উঠে দারায়। কিছু না বলে দরজা দিকে যেয়ে দরজা খুলেতে লসে হাত দিতে। আবার নাহিয়ানের দিকে তাকায়

-সবাই ছাদে যাচ্ছে চলে আসবেন।

-সবাই তো তাদের জন্য আনা গিফ্ট নিল তুই নিবি না।

-এনেছেন আমার জন্য ও

-তোর জন্য আনা বারন নাকি তুই এবাড়ির কেউ না

–আমি কি তা বললাম নাকি আচ্ছা বলেন কি কি এনেছেন আমার জন্য। বলেই আরাম করে খাটে বসে যায়। নাহিয়ান ওর দিকে তাকিয়ে লাগেজ খুলে আর জন্য আনা পারফিউম ,ঘড়ি,হেয়ার এক্সসারিস দেয়,ডেনিম,অনেকগুলো চকলেট।

-পছন্দ হয়েছে। নিশিতা অন্য কিছু দেখছিল নাহিয়ানের লাগেজে মেয়েদে আরো কতোগুলো ড্রেস ছিল। নাহিয়ানের কণ্ঠ শুনে তাকালো হাসি দিয়ে বলল

-ধন্যবাদ অনেক পছন্দ হয়েছে।একটা কথা বলব।

নাহিয়ানের জিজ্ঞাসু দৃষ্টি

-না মানে কেউ কে পছন্দ করেন। ভালোবাসানে। বিয়ে করবেন না।

নাহিয়ান বাকা হেসে বলে

-কেন জিজ্ঞেস করেছিস। বলে নিশিতার কাছে যাচ্ছিল। ঠিক তখনি ফোন বেজে ওঠে মিলি কল দিয়েছে। নাহিয়ানকে আসতে দেখে তার বিপদসংকেত এই লোকের বিশ্বাস নেই থাপ্পড় টাপ্পর মেরে দিলে । তাই সে সাথে সাথে কল রিসিভ করে রুম থেকে বের হয়ে যায় কিছু না বলেই।

চলবে…..