ভুলি কি করে তোকে পর্ব-১১

0
16

গল্প #ভুলি_কি_করে_তোকে

(এ প্রথম লেখা লেখি করছি জানি না কেমন লাগবে ভুলক্রুটি হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন)

(কাজিন রিলেটেড + রোমাঞ্চকর+থ্রিলার)

লেখিকা_#নুরজাহান_আক্তার_স্নিগ্ধা……

📌কপি সম্পুর্ন নিষিদ্ধ

#পর্ব_১১

আজকের আকাশ যেন মন খুলে হাসছে। চার দিকে শীতল হাওয়া হয়ে।চাদের মৃদু আলোতে চারপাশে আলোকিত। তার সাথে মন খুলে হাসাহাসি শব্দের চারপাশে ঘিরে আছে। নিশিতারা ছাদে আড্ডায় মশগুল। নাদিফ ,রাদিফ বারবিকিউ করছে আর কথা বলছে হাসাহাসি করছে।মাহদি ওদের সাহায্য করেছে আর আড্ডা দিচ্ছে। ইভান রাফি আর ইরা মাঝে মেয়েদেয়ের সাথে বসা কথা বলতে সে প্রচুর ব্যস্ত আর নিধী তাকে দেখতে ব্যস্ত মাঝে মাঝে দুই একটা কথা বলছে।নাহয় সে শুনতে আর দেখতে ব্যস্ত। আর নাহিয়ান সবার থেকে দূরে ছাদে চারপাশে যে দেয়াল থাকে সেখানে বসে বাহিরের দিকে পা ঝুলিয়ে বসে আসে।তার ওদের দিকে কোন মনযোগ নেই।সে নিজ ভাবনায় বিভোর। আসেপাশে কি হচ্ছে না হচ্ছে তার এসব কিছু তে মন নেই। সে নিজেতে মগ্ন। নাহিয়ানকে অনেকক্ষন যাবত খেয়াল করছে নাদিফ।এই দেড় ঘন্টা যাবত একই ভঙ্গিতে বসে আছে নাহিয়ান।নাদিফ এবার ওঠে নাহিয়ানের দিকে পা বাড়াল দেয়াল ঘেঁষে নাহিয়ানের পাশে দাড়ান

-ভাই আর ইউ ওকে?কিছু নিয়ে চিন্তিত? এসে থেকে এই ভাবে বসে আছো।

নাদিফের কন্ঠে নাহিয়ানের ধ্যান ভাঙ্গলো।তার দৃষ্টি আকাশের দিকে ছিল। সেখানে থেকে দৃষ্টি সরালো মাথা নিচু করে বা দিকে মুখ ঘোরাল। নাদিফের দিকে একপলক তাকালো দৃষ্টি সরিয়ে সামনে তাকিয়ে

-হু! বুঝালো হ্যাঁ সে ভাবছিল কিছু একটা।

-ভাই তুমি কি এখনো ভুলতে পারো নি?

-হু

-ভাই এই একটা কারণে এতগুলো বছর দেশে ফিরে তাকাও নি।আর কত নিজেকে কষ্ট দিবে।নাদিফের কথা শুনে নাহিয়ান শ্বাস ছেড়ে বাকা হাসলো।এর মধ্যে রাদিফ ডাকলো নাদিফকে।নাদিফ আর কথা বাড়ালো না নাহিয়ানের সাথে।সে জানে নাহিয়ানকে শান্তনা দেওয়ার মতো ভাষা নেই তার কাছে।তার ভাই কাউকে কিছু বলবে না।ভিতরে সব চাপা রাখবে।

________________
বারবিকিউ করা শেষ বাড়ি বড়রা কেউ নেই এখানে। তার ছেলেমেয়েদের মাঝে আসেনি।সব ভাইবোন একসাথে হয়েছে এতদিন পরে করুক না হয় একটু আনন্দ-ফুর্তি। বারবিকিউ করা কিছু চিকেন আরোহী,ইরা নিচে বড়দের জন্য নিয়ে যাচ্ছে। এদিকে মিলি,রাফি,রাদিফ,মাহদি মিলে নিচে থেকে কোক ,নুডুলস,চিপ্স,পিজ্জা,প্লেট নিয়ে আসে নিধী আর ইভান বসে আছে নিধী শাড়ি পরা বলে তাকে কিছু করতে হচ্ছে না আর ইভান মেহমান মিলিও মেহমান কিন্তু না সে তো বাড়ির সদস্যদের মতো থাকে এ বাড়িতে নিধীকে একা পেয়ে দু তিন বার চোখ টিপ দিয়ে ফেলেছে ইভান এতোক্ষণে আর প্রতিবার নিধী লজ্জা মুখ লুকিয়েছে। আর নাহিয়ান সে কলে কথায় ব্যস্ত।সব কিছু আনা শেষ।এখন সব শার্ভ করবে নিধী ,নিশিতা শার্ভ করতে ব্যস্ত। সবাইকে সব দেওয়া হলে এখন 7আপ,কোকাকোলা দিয়ে একটা 7আপ,একটা কোকাকোলা থাকে যা নাহিয়ান আর নিশিতার নিশিতার হাতে তা দেখে ইভান বলে

-তোমার নাহিয়ান ভাই কিন্তু কোকাকোলা খায়। 7আপ ও খায় না।নিশিতা ডানদিকে মাথা কাত করে নাহিয়ান এর দিকে পা বাড়ায়। এর মধ্যে রাফি বলে ওঠে।

-এখন কি হবে। কোকাকোলা একটা ভাইয়া আপু দুজনেই কোকাকোলা খায়। আপুর ও 7আপ পছন্দ না।এরা কি এনিয়ে ঝগড়া করবে। নিশুপু যা ঝগড়াটে।

নিশিতা ওর কথার মধ্যেই নাহিয়ানের কাছে চলে যায় সৌজন্য বজায় রেখে বলে

-নাহিয়ান ভাই আপনার কোকাকোলা। বলে হাত বারিয়ে দেয়। ক্ষিপ্ত চোখে তাকিয়ে ঝাড়ি মেরে বলে ওঠে

-তোকে কে বলেছে আলগা পিড়িত দেখিয়ে আমাকে এটা দিতে।নিয়ে যা এটা। নাহিয়ানের হঠাৎ ঝাড়িতে
আঁতকে ওঠে পুরো শরীর নিশিতার চোখের কোনে পানি চলে আসে।হঠাৎ কোন কিছু ও নিতে পারে না। ধমক,ঝাড়ি আরও আগে না।সে এমন কি করেছে যে এভাবে প্রতিক্রিয়া করা লাগবে। কিছু তো করে নি। না বেয়াদবি করেছে। শুধু তার পছন্দ বলে কোকটা দিয়েছে একে তার দোষ কোথায়।চোখের একফোঁটা পানি ঘড়িয়ে পড়তে পড়তে নিশিতা রাগে ,জেদে ,কষ্টে হাতে দুটো ক্যান শব্দ করে নাহিয়ানের পাশে রেখে বিনা বাক্যে চলে আসে।এসে কোনায় দোলায় বসে। মাহদি এতক্ষণ ওদের দেখছিল নাহিয়ানের কান্ডে সে প্রচুর বিরক্ত। বিরক্তে চোখ বন্ধ করে মাথা দুদিকে নাড়িয়ে “চ” শব্দ করে ওর আর নিশিতার খাবার নিয়ে নিশিতার পাশে বসে। নিশিতা মাথা নিচু করে ছিল। কারো উপস্থিতি টের পেয়ে। মাথা তুলে মাহদির দিকে তাকিয়ে। মাহদি দেখে ঝাড়ি খেয়ে কান্না করে দিয়ে নিশিতা। ওকে সারা দিন ঝাড়লে ও কিছু বলবে না। কারণ ছাড়া হঠাৎ ঝাড়ি দিলে ও নিতে পারে না।মাহদি মায়াভরা কন্ঠে ডাকলো

-মেহু

নিশিতার দিকে তাকিয়ে

-জ্বি নেভি সাহেব। নিশিতা মাহদির প্রতি ওর অনুভূতি বুঝতে পারার পর থেকে না পারলে ভাই ডাকে না।যখন দেখে নাম নেওয়া লাগবে তখনই বলে এ ছাড়া “নেভি সাহেব” বলে সম্বন্ধ করে।

-খাবে না।

-ইচ্ছা করছে না পরে খেয়ে নিব। আপনি খেয়ে নিন।মুচকি হেসে। মাহদি কিছু না বলে পেল্টে হাত দেয় ও জানে এই মেয়ে ঝাড়ি খেয়ে পেট ভরে ফেলেছে ও আর খাবে না কিছু আজ।মাহদি খাবার হাতে নিয়ে নিশিতার মুখের সামনে দেয়। নিশিতা মাহদির হাতে খাবারের দিকে তাকিয়ে মাহদির মুখে তাকিয়ে আবার খাবারে দৃষ্টি নিয়ে মুখে নিয়ে নেয় খাবার। ওর সাধ্যের বাইরে মাহদির হাতের খাবার অস্বীকার করা। যাকে ভালোব্সে তাকে কিভাবে ও না করবে।খাবার চিবাতে চিবাতে বা হাত দিয়ে গাল থেকে চোখের পানি মুছে নিল তা দেখে মাহদি মুচকি হাসলো।এর মধ্যে রাফি এসে খাবার নিয়ে নিশিতার মুখের সামনে ধরে নিশিতা তা দেখে অভিমানে মুখ ঘুড়িয়ে নিল।এই বিচ্ছুটার বলার কারণে নাহিয়ান ওর সাথে এমন করলো।রাফি কষ্ট পেল নিশিতার অভিমান দেখে। রাফি নিধীর দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টে ফেলে। নিধী এসে নিশিতার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে

-ছোট মানুষ ও। আদর করে দিয়েছে খেয়েনে পাখি।

নিশিতা শুনলো বোনের কথা নিল খার মুখে। রাফি খুশি হয়ে নিশিতার গালে চুমু দিল নিশিতা হাসলো সাথে সবাই।এতে মাহদি চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে। রাফিকে হিংসা লাগছে ওর।এরপর নিধী,নাদিফ ,মিলি,আরোহী,ইরা নিশিতাকে একে একে সবাই খাওয়ালো।

চলবে……