#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ১৭
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি দাড়িয়ে আছি মুখে হাত দিয়ে। ভাবতে লাগলাম এই জায়গা থেকে কিভাবে বের হওয়া যায়। আমি মনস্টার দুনিয়ার এক অজানা জায়গায় আটকা পরেছি। ইগড্রাসিল থাকলে তো আমার সাহায্য করতো। কিন্তু কোথায় গেলো বুঝতে পারছি না। হয়তো সে তার দুনিয়াতে ফেরত গিয়েছে। আমি চুপচাপ বসে বসে ভাবার চেষ্টা করছি।
।
আমি এখন যেখানে আছি এই দুনিয়াটা মনস্টারের। এখানের সবাই বিভিন্ন রকম মনস্টার। শুধু তাই নয় এখানের সবাই ম্যাজিকও ব্যবহার করতে পারে। আমি যেখানে বড় হয়েছি মানে মানুষের দুনিয়া সেখানে ম্যাজিক পুরো কল্পনীয় একটা বিষয়। সেখানে ম্যাজিকের জায়গা দখল করে নিয়েছে বিজ্ঞান। আমি একাডেমীর লাইব্রেরীর একটা বই থেকে পরেছি, পৃথিবীর সকল বিজ্ঞান ম্যাজিক থেকেই শুরু হয়েছে। জানি না বিষয়টা কতটা সত্য। তারপর ও কিছু ম্যাজিক আছে যেগুলো মানুষের দুনিয়াতে ব্লাক ম্যাজিক নামে পরিচিত। কিন্তু এখন আমি এই জায়গা থেকে কিভাবে ফিরবো সেটা বুঝতে পারছি না। চারিদিকে যতদূর তাকাচ্ছি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। রাত অনেক হয়ে গেছে। চাঁদের আলোতে আশেপাশের সব দেখা যাচ্ছে। তিনটা চাঁদ খুব সুন্দর সাদা মিষ্টি আলো দিচ্ছে। পরিবেশটা নিরব, তবে এতোটাও আমার কাছে এখন লাগছে না। আমার মাথার মধ্যে এখন রাগ হচ্ছে। শুধু একবার এনার ভাইটাকে হাতের কাছে পাই। ওর যা হাল করবো সেটা কোনোদিন ভুলবে না। ইগড্রাসিলের উপরে ও রাগ হচ্ছে। চলে যাবি যেতি, কিন্তু আমাকে তো অন্তত এই জায়গা থেকে ভালো কোথাও নিয়ে যেতি। আমার রাগ অনেক বেরে গেলো। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। বেশী চিন্তার কারনে আমি ভুলেই গেছি আমার ডানা আছে। আমি আমার ডানা দুটো বের করলাম। উড়তে যাবো তখনি মনে পরলো আমি লড়াই ছাড়া আমার ডানা নিয়ন্ত্রন করতে পারি না। উড়তে গেলে ঠিক আছে নাকি কয়টা হাত পা ভাঙবে। তারপরও একটা চেষ্টা করা যায়।
।।
।।
আমি আমার ডানা দুটো দিয়ে উপরে উড়তে যাবো কিন্তু হঠাৎ আমার ডান পাশের সাদা ডানাটা বেশী জ্বলতে লাগলো। বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে। তবে আমার পিঠে অনেক ব্যথা শুরু করছে। ব্যথাটা এতো মারাত্মক যে আমাকে সাথে সাথে মাটিতে ফেলে দিলো। আমার মাথাটাও যন্ত্রনায় ফেটে যাচ্ছে। একরকম কালো ধোয়া বের হচ্ছে আমার শরীর দিয়ে। শুধু ধোয়া নয় আমার চারদিক বরাবর ছয়টি লাইন দেখা দিতে লাগলো। আস্তে আস্তে ছয়টি লাইন আমার থেকে সামান্য দূরে গিয়ে জ্বলতে লাগলো। এবার আমার সারা শরীর ব্যথায় নেতিয়ে পরলো। আমি আমার কোনো অঙ্গকেই নারাতে পারছি না। উপর হয়ে পরে আছি আমি। শুধু দেখা ছাড়া আর কিছু করার নাই এখন। আমার শরীরের কোনো বোধ পাচ্ছি না এখন। জানি না কি হচ্ছে আমার সাথে, তারপরও তখনকার ব্যথা এখন আর অনুভব করছি না বলে একটু স্বস্তি হলো।
।।।
।।।
হঠাৎ ছয়টি লাইনের মধ্য থেকে একটি আস্তে আস্তে বাকি গুলোর দিকে যেতে লাগলো৷ সেটা আরেকটার সাথে স্পর্শ করার সাথে সাথেই দুটো এক হয়ে গেলো। দেখতে দেখতে ছয়টি লাইন এক হয়ে একটি হয়ে গেলো। এবার সেটি আমার দিকে আস্তে লাগলো। আমার নরাচরা করার কোনো ক্ষমতা নাই এখন। জানি না কি হচ্ছে তবে চোখ মুখ বুঝে সহ্য করতে হবে।
।।
।।
আমি শুধু লাইনটাকে আমার দিকে আসা দেখেছি। তারপর আর কিছু মনে নেই। আমি অজ্ঞান হয়ে পরেছিলাম। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন দেখলাম আমি পরে আছি একটা গুহার মধ্যে। এই গুহা আসলো কোথা থেকে বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে টেলিপোর্ট হয়ে আসছি এখানে। আশে পাশে তাকালাম, কিছু দেখতে পারলাম না। একটু স্বস্তি লাগলো যে বেঁচে আছি। আমি মাটিতে একটু বসলাম। পুরো শরীর আমার ধুলো মাটিতে মেখে গেছে। হঠাৎ গুহার মধ্যে কেউ ঢুকলো,
.
–কে?(আমি ভয় পেয়ে বল্লাম)
.
–আমি ইগড্রাসিল।(ইগড্রাসিল)
.
–ও। যাক আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।(আমি)
.
–আমি দুঃখিত যদি তোমাকে ভয় দেখিয়ে থাকি।(ইগড্রাসিল)
.
–না সমস্যা নাই। এটা কিছুই না কালকে রাতের থেকে।(আমি)
.
–কেনো কালকে রাতে কি হয়েছিলো?(ইগড্রাসিল)
.
–তুমি জানবে কিভাবে? তুমি তো হঠাৎ কোথায় উধাও হয়ে গেলা।(আমি)
.
–আমাদের ড্রাগনদের দুনিয়া ছাড়া বাইরের কোনো দুনিয়াতে থাকার জন্য অনেক ম্যাজিক পাওয়ারের প্রয়োজন হয়। যেটা আমি এতোদিন একবারও রিচার্জ করতে পারি নাই। তাই কালকে আমি আমার ম্যাজিক পাওয়ারটা রিচার্জ করে নিয়েছি।(ইগড্রাসিল)
.
–ম্যাজিক পাওয়ার রিচার্জ করে কিভাবে?(আমি)
.
–অনেক ভাবে করা যায়। কিন্তু কিছু আলাদা রকম ড্রাগনদের পার্টনার হলে সেসব ড্রাগনরা তাদের পার্টনারের ম্যাজিক পাওয়ার থেকে নিজেদের ম্যাজিক পাওয়ার বারাতে পারে। আমিও সেটাই করেছি।(ইগড্রাসিল)
.
–তাহলে কি সেটা করলে আমার কোনো ক্ষতি হওয়ার কথা?(আমি)
.
–সাধারন কোনো মনস্টার হলে আমার ম্যাজিক পাওয়ার ফুল করার জন্য সেই মনস্টারের জীবন চলে যাবে হয়তো। কিন্তু তুমি তো ডেভিল কিং তাই কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।(ইগড্রাসিল)
.
–হুমমম। কালকে যা হয়েছে। তার উপর আবার কোনো খারাপ জিনিস হয়। প্যারালাইসিস হয়ে আমার প্যান্ট ভিজে আছে এখনো।(আমি)
.
–সেটা আমি কিছু বলতে পারবো না। তবে আমাদের পার্টনারশীপ এখনো পূরন হয় নি। এখন আমাকে একটা ডাক নাম দিতে হবে।(ইগড্রাসিল)
.
–ডাক নাম?(আমি)
.
–হ্যা।(ইগড্রাসিল)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। আমি তোমাকে ডাকবো ভি রু দা। নামটা কেমন?(আমি)
.
–ভি রু দা? একদম সুন্দর। আজ থেকে আমি ভি রু দা ইগড্রাসিল দ্যা ফায়ার ড্রাগন কিং।(ইগড্রাসিল)
.
–হুমমম সংক্ষেপে আমি ভিরু বলবো সেটা সহজ হবে।(আমি হাসতে হাসতে বল্লাম)
.
–হুমমম আমি পছন্দ করেছি।(ভিরু)
।।।
।।।
।।।
মানুষের দুনিয়ার কাউকে এই নাম দিলে আমাকে জুতা পিটা করতো। কিন্তু এখানে এমনিতেও সবার নাম আজব। আরো আজব নাম দিলে কোনো সমস্যা হবে না।
.
–আচ্ছা ভিরু তাহলে এখন এখান থেকে আমাদের বের হতে হবে।(আমি)
.
–হ্যা।(ভিরু)
.
–হ্যা কিন্তু সমস্যা হলো আমি ঠিক মতো উড়তে পারি না।(আমি)
.
–তুমি হবে ডেভিল কিং আর তুমি বলতেছো তুমি উড়তে পারো না।(ভিরু)
.
–সেটা আমিও বুঝতে পারতেছি না। সবই ঠিক আছে। কারো সাথে লড়াই করতে গেলে ঠিকই নিজের ইচ্ছা মতো উড়তে পারি। কিন্তু সাধারন সময়ে আমি উড়ার চেষ্টা করলেও উড়তে পারি না।(আমি)
.
–দেখি ডানাটা বের করো তো।(ভিরু)
.
–ঠিক আছে।(আমি)
।।।
।।।
আমি ডানা দুটো বের করলাম। ইগড্রাসিল শুধু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বুঝতে না পেরে আমিও আমার পিছনে দেখলাম। দুটো ডানার জায়গায় আমার পিঠে চারটা ডানা হয়ে গেছে। ডান পাশের সাদা ডানার নিচে একটা কালো ডানা হয়েছে আবার বাম পাশের কালো ডানার নিচে একটা সাদা ডানা হয়েছে। আমি অবাক হলাম কিছুটা।
.
–এটা তো অনেক অবাক করার বিষয়। আমি আজ পর্যন্ত এমন কাউকে দেখি নি যে ডেভিল আর এন্জেল দুটোর ক্ষমতা বহন করতে পারে। দুটো ডানা কালকে বেরেছে কি?(ভিরু)
.
–আমি ঠিক জানি না। আজকেই প্রথম দেখতেছি ডানা দুটো।(আমি)
.
–এখন উড়তে কোনো সমস্যা হবে না তোমার (ভিরু)
.
–সেটা তুমি কিভাবে বলতেছো। ডানা নাহয় দুটোর জায়গায় চারটা হয়েছে তাই বলে কি আমার উড়ার কোনো পরিবর্তন হবে?(আমি)
.
–হ্যা। অবশ্যই। এন্জেলদের সাদা ডানা রাতের সময় বেশী শক্তিশালী হয়। বিশেষ করে চাঁদের আলো যত বেশী হয় তখন সাদা ডানার পাওয়ার বেশী হয়। আর দিনের সময় ডেভিলদের ডানার ক্ষমতা আশেপাশের সবার ভয়ের কারনে বেশী হয়। আশেপাশে যত ভয়ভীতি থাকবে ডেভিলদের ক্ষমতা তত বারে। সেই সাথে ডেভিলদের ডানার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাই।(ভিরু)
.
–এখন আমি বুঝতে পেরেছি কি হচ্ছে। আমার ডানার পার্থক্যের জন্য আমি ঠিক করে উড়তে পারছি না। কিন্তু এখন আমার দুই পাশের ডানার পাওয়ার লেভেল সমান হয়ে গেছে।(আমি)
.
–হ্যা এখন মনে হয় না তোমার উড়তে কোনো সমস্যা হবে।(ভিরু)
.
–ধন্যবাদ বিষয়টা শেয়ার করার জন্য।(আমি)
.
–তো এখন কোনো সমস্যা নাই তুমি উড়ে যেতে পারবে।(ভিরু)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু তোমার কিছু একটা করার দরকার। তোমার সাইজ এমনিতেই অনেক বড়। আবার তোমাকে যদি আমি সাথে করে নিয়ে যায় তাহলে কিছুটা সমস্যা হবে।(আমি)
.
–আমি বুঝতে পেরেছি। কোনো চিন্তা করো না। আমি আমার নিজের সাইজকে কনট্রোল করতে পারি।(বলেই ভিরু একদম ছোট বিড়ালের সাইজের মতো ড্রাগন হয়ে গেলো)
.
–ওয়াও।।। তোমাকে তো এই সাইজে অনেক কিউট লাগছে।(আমি ওকে কোলে নিয়ে বল্লাম)
.
–হুমমম দেখতে হবে না কে আমি।(ভিরু)
।।।
।।।
আমি আর কিছু বল্লাম না। ওকে কোলে রেখেই আমি উড়তে শুরু করলাম। এবার আর কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমি যেভাবে চাচ্ছি উড়তে পারছি। ডানার বিষয়টা খারাপ লাগে না। শুধু সেটাকেও হাতের মতো মনে করতে হয়। অনুভব করতে পারলে ডানা নরানো কোনো সমস্যা নয়। প্রথমে একটু সমস্যা হচ্ছিলো কারন দুটোর জায়গায় এখন চারটা ডানা হয়েছে। আমি এতো দিন এই ছোট একটা বিষয় বুঝতে পারি নি। আমার সাদা আর কালো ডানার মধ্যে শক্তির পার্থক্য থাকায় ঠিক করে উড়তে পারে না। রাতের বেলাতে সাদা ডানার ক্ষমতা বেশী থাকায় এবং দিনের বেলা কালো ডানার ক্ষমতা বেশী থাকায় দুই সময়েই আমি উড়তে পারি না। কিন্তু লড়াই এর সময় হয়তো দুই ডানার ক্ষমতা কোনো কারনে এক রকম হয়ে যায়। আর সেটার কারনে আমার উড়তে সমস্যা হয় না।
।।।
।।।
আমি আর ভি রু দা পুরো অর্ধেক বেলা উড়ার পর একটা রাজ্যের বর্ডার দেখতে পেলাম। দূর থেকেই দেখতে পাচ্ছি বিরাট একটা গোল জায়গার চারদিকে বিশাল উচু দেওয়াল দিয়ে বেষ্টিত করা। আমি দূরের রাজ মহল দেখেই বুঝতে পারলাম এটা সিলভার লোটাস রাজ্য। যাক ঠিক জায়গাতেই আমি এসে পৌছালাম। আমি রাজ্যের বর্ডারের অনেকটা দূরে নামলাম।
.
–এটা তো সিলভার লোটাস। ভ্যাম্পায়ারের বংশরা এটা শাসন করে। আমি শুধু শুনেছিই আগে কখনো দেখি নি।(ভিরু)
.
–কেনো এই দুনিয়া ঘুরতে বের হও নি কখনো?(আমি)
.
–আমি এইখানে আছি এখানের সবাই জানতে পারলে ভয়ের মধ্যে থাকতো। তাই আমি কখনো ইন্টারেস্ট দেখায় নি। তাই হয়তো বেশীরভাগ মনস্টারই আমার এখানে থাকার বিষয়টাকে একটা গুজব মনে করে উড়িয়ে দিয়েছে।(ভিরু)
.
–তাহলে তো মনে হয় এই প্রথম এতো বছর পরে এই দুনিয়া ঘুরে দেখবে তুমি?(আমি)
.
–হ্যা। আর সেটার জন্য আমি অনেক উৎসাহিত।(ভিরু)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে চলো এবার হাটা যাক।(আমি)
.
–হাটবে কেনো? তুমি তো বলেছিলে তুমি রাজার মেয়ের হবু জামাই। তাহলে হেটে যেতে হবে কেনো?(ভিরু)
.
–দেখো আমিই যে ডেভিল কিং হবো সেটা আমি আমার আর তোমার মধ্যেই রাখতে চাই। তুমি তো জানোই সবাই ডেভিল কিং এর ব্যাপারে জানতে পারলে অনেক ভয় পাবে। হয়তো পুরো পাঁচ রাজ্য আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করবে। আর আমি সেটার জন্য এখনো প্রস্তুত ও হয় নি।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে আমি বুঝতে পেরেছি। তাহলে আমাদের সাধারন হয়ে থাকতে হবে। তুমি তোমার নিজের পরিচয় গোপন রাখবে আর আমি আমার নিজের।(ভিরু)
.
–হ্যা।(আমি)
।।।
।।।
আমি হাটতে লাগলাম আস্তে। এখনো কোনো রাজ্যের বাইরে আমার যাওয়া হয় নি। এই দুনিয়াতে আসার পর আমার দিন শুধু লোচার্ট একাডেমিতেই কেটেছে। তারপর এনার সাথে ওদের রাজ্যে এসেছি ট্রেনে। তারপর রাজ্যের কড়া সিকিউরিটি দিয়ে আমাদের রাজ প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি এই রাজ্যের কিছুই দেখতে পারি নি এখনো। এতোক্ষন আমি আর ইগড্রাসিল এই দুনিয়ার সুন্দর্য দেখতে ছিলাম। আমি এ দুনিয়ার সুন্দর্যে অনেক মুগ্ধ হয়েছি। চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। যেদিকে দেখবো সেদিকেই বড় বড় পাহাড়, নদী, বন। ভিরু আমার ডান কাধের উপরে গিয়ে বসলো।
।।
।।
আমি আস্তে আস্তে রাজ্যে ঢোকার বড় দরজার দিকে আস্তে লাগলাম। দেখতে পেলাম একটা পাকা রাস্তা রাজ্যের ভিতরে চলে গেছে। বাইরের রাস্তা দিয়ে হয়তো অন্য কোনো রাজ্যে যাওয়া যায়। আমি বড় দরজার দিকে আগাতে লাগলাম। আমি দেওয়ালের যত কাছে যেতে লাগলাম ততই অবাক হলাম। প্রায় পঞ্চাশ মিটারের দেওয়াল হবে। কেউ উড়ে রাজ্যে যাতে প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য দেওয়ালের উপরে অনেক সৈন্য দাড়িয়ে আছে। সবার হাতে ধনুক থাকলেও তীর নেই। হয়তো ম্যাজিক দিয়ে তীর বানিয়ে সেগুলো দিয়ে আঘাত করে যারা উড়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। আবার শত্রু পক্ষ আক্রমন করলেও নিরাপত্তা হয়তো এভাবে নেওয়া হয়।
।।
।।
আমার সামনে সবাই লাইন ধরে দাড়িয়ে আছে। রাজ্যের ভিতরে যেতে হলে হয়তো সবাইকেই চেক করাতে হয়। বড় দরজার সামনে অনেক সৈন্য দাড়িয়ে আছে। তারা এক এক করে সবাইকে চেক করে ঢোকাচ্ছে। একটা জিনিস খেয়াল করলাম যারা হান্টার তাদের কোনো চেকের প্রয়োজন হয় না। বরং তারা তাদের কার্ডটা দেখিয়েই ঢুকে যেতে পারে। কিন্তু সাধারন লোকজনের অনেক সময় লাগে ঢুকতে। আমার সামনে প্রায় বিশ জনের মতো দাড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে বেশীরভাগই ব্যবসায়ী। সবার সাথে বড় বড় গাড়ি আছে। সেগুলো চেক করাতে অনেক সময় নিচ্ছে। ভিরু আপাতোতো কথা বলতেছে না। এমনিতেই সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো তারা কখনো ড্রাগনের বাচ্চাকে দেখে নি। আর ড্রাগন এমনিতেই অনেক রেয়ার হয়। আমি ভয়ে আছি ভিরু কথা বললে এরা কি বলবে সেটা নিয়ে।
।।।
।।।
কিছুক্ষনের মধ্যে দুইজন সৈন্য আসলো আমার সাথে কথা বলার জন্য। দুজনই ভিরুর দিকে তাকিয়ে আছে। আমার মনে হচ্ছে ও ইগড্রাসিল এটা মনে হয় বুঝে গেছে।
.
–আপনি কি হান্টার?(এক সৈনিক আমাকে জিজ্ঞাসা করলো)
.
–না।(আমি)
.
–আপনার পরিচয় কি? একজন হান্টার ছাড়া একটা ড্রাগন কিংবা ড্রাগনের বাচ্চা নিজের কাছে রাখা অনেক বড় অপরাধ।(সৈনিক)
.
–আমি তো সেটা জানি না।(আমি)
.
–কোন রাজ্য থেকে এসেছেন আপনি? কোনো গুপ্তচর নাতো আবার?(সৈনিক)
.
–আরে কি বলতেছেন।(আমি)
।।।
।।।
আমাকে আর কিছু বলতে দিলো না। আমার সারা শরীর চেক করতে লাগলো। হঠাৎ একটা কয়েনের মতো কিছু একটা বের করলো আমার পকেট থেকে। আমার মনে আছে সেটা এনার বাবা আমাকে দিয়েছিলো এনগেজমেন্টের রাতে। আমি নাকি এটা দিয়ে এই রাজ্যের যেখানে সেখানে আমার মন মতো ঘুরতে পারবো। কয়েনটা দেখে সেটা আবার জায়গা মতো রেখে দিয়ে এবার আমাকে কুর্নিশ করলো,
.
–আমি অনেক দুঃখিত জনাব। আপনি যে রাজার বংশের কেউ সেটা আমি জানতাম না। আমাকে মাফ করবেন। আপনি আমার সাথে আসুন। আমি আপনাকে ভিতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছি।(সৈনিক)
.
–কোনো সমস্যা নেই। তাহলে কি রাজার বংশের কেউ হলে কি আমি এই ড্রাগনের বাচ্চাটা রাখতে পারবো?(আমি)
.
–জনাব, রাজা কোয়াডার্টের যদি কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।(সৈনিক)
.
–ঠিক আছে আমি রাজার সাথে কথা বলবো।(আমি)
.
–আপনাকে কি কোথাও পৌছে দিবো জনাব?(সৈনিক)
.
–না সেটার প্রয়োজন নেই। আমি নিজেই যেতে পারবো।(আমি)
.
–আচ্ছা সাবধানে যাবেন জনাব।(সৈনিক)
।।
।।
যাক রাজার দেওয়া কয়েনটা কাজে দিলো। কয়েনটা হয়তো রাজার বংশের সবার কাছেই থাকে। এটা কাছে থাকা মানে আমি সব কিছু করতে পারবো। আমার খুব ক্ষুদা লেগেছে। সেই রাজ প্রাসাদ থেকে বের হওয়ার পর থেকে আর কিছু খাওয়া হয় নি। এর ভিতরে কত কিছু হয়ে গেলো। আমার ক্ষিদে ও বেরে চলেছে। দেখা যাক আশে পাশে কোনো খাবার হোটেল আছে নাকি। এই কয়েন দেখালে নাকি সব কিছু খাওয়া যাবে ফ্রিতে। দেখা যাক কি পাওয়া যায়।
।।।
।।।
খুজতে খুজতে আমি একটা খাবার হোটেল পেলাম। তেমন আহামরী না। কিন্তু খাবার গুলো বেশ জোশ। আমি হঠাৎ ভিরুর আওয়াজ শুনতে পেলাম। ও এমনি মুখ দিয়ে কিছু বলছে না। বরং মনে মনে বলছে কিন্তু সেটা আমি শুনতে পাচ্ছি।
.
–এখানে আশার আগে একটা সৈনিকের কথা শুনেছি কিছুটা। তুমি আশে পাশে খাবারের দোকান খুজতে বিজি ছিলে বলে হয়তো খেয়াল করো নি।(ভিরু)
.
–আমি তোমার কথা শুনতে পাচ্ছি কিভাবে? তুমি তো মুখ দিয়ে কিছু বলতেছো না?(আমিও মনে মনে বল্লাম)
.
–আমার সাথে পার্টনার হয়েছো এজন্য আমি যা ভাববো সেটা তুমি শুনতে পাবে যদি আমি সেটা তোমার সাথে শেয়ার করতে চাই তাহলে।(ভিরু)
.
–ওওও। কি শুনেছো তুমি?(আমি)
.
–কারো নিখোজের ব্যাপারে বলতে ছিলো। বিবরন শুনে মনে হলো তোমার কথা বলতে ছিলো।(ভিরু)
.
–হ্যা হয়তো আমার রাজ প্রাসাদে যাওয়া উচিত। কিন্তু যাওয়ার সময় সেই সৈনিককে একটু দেখিয়ো তো আমাকে।(আমি)
.
–ঠিক আছে।(ভিরু)
।।।
।।।
দুজনে পেট ভর খাবার খেলাম। এখানের প্রধান খাবার হলো বোর নামক একটা প্রানী মনস্টারের মাংসের কাবাব। অনেক টেস্ট সেটা খেতে। নতুন সব মসলার স্বাদ পেলাম আজকে। আমি আর ভিরু খেয়ে তো নরতে পারছি না। দুজনে বের হলাম দোকান থেকে। আসলেই রাজার দেওয়া কয়েনটা ভালো কাজে দিলো। কোনো বিল লাগলো না আমাদের।।।।
।।।
।।।
এরপর ভিরু সেই সৈনিককে খুজে বের করলো। আমি ওর সাথে একটু কথা বলতে লাগলাম। প্রথমে কিছু বলতে রাজি হচ্ছিলো না। কিন্তু রাজার দেওয়া কয়েনটা দেখানোর পর আমাকে উচু বংশের ভেবে ভালো করে কথা বলতে লাগলো,
.
–আমি শুনলাম কেউ নিখোজ হয়েছে বলে কথা বলছিলেন আপনি? সেটা কে?(আমি)
.
–আমাদের প্রিন্সেস এলিনার সাথে দুইদিন আগে এনগেজমেন্ট হয়েছিলো লংস্টারের বড় প্রিন্সের সাথে। রাজা আজকে ঘোষনা দিলো সে নিখোজ হয়েছে।(সৈনিক)
.
–ওওওও। কিভাবে হয়েছে সেটা কি জানেন?(আমি)
.
–সেটা রাজা বলে নি। তবে আমাদের রাজ্যের বাইরে খুজতে যেতে বলেছে। হয়তো অন্য রাজ্যের কেউ তাকে অপহরন করে নিয়ে গেছে।(সৈনিক)
.
–ওওওও। আচ্ছা খুজে দেখেন পেয়ে যাবেন।
।।।।
।।।।
হয়তো প্রিন্স এলেক্স ফিরে এসেছে ওর মিশন কম্পিট করে। যাক থরকে আমি বাস্তবে হয়তো দেখতে পারবো এটা ভেবে আমার মনটা পুলকিত হয়ে উঠলো। আবার অন্যদিকে কিছু শয়তানি বুদ্ধিও মনে আসা শুরু করলো। আমি রাজ প্রাসাদের দিকে রওনা হলাম। ভি রু দা তো আমার সাথেই আছে। এবার আমি আল্ট্রা স্পিড ব্যবহার করলাম। সবার বাড়ির উপর দিয়ে আমি যেতে লাগলাম।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ১৮
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আল্ট্রা স্পিড জিনিসটা আমার খুব ভালো লাগে। এতে করে আমার আশে পাশের সব কিছু আস্তে আস্তে চলতে থাকে। তখন মনে হয় আমিই শুধু স্বতন্ত্রভাবে চলতে পারি, বাকি সবাই কচ্ছপের মতো। আমি লোকজনের বাসার উপর দিয়ে লাফিয়ে যেতে লাগলাম। মনে হচ্ছে আমার স্পিড অনেক বেরে গেছে। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমি প্রাসাদের সামনে পৌছে গেলাম। প্রাসাদের সামনে আগের তুলনায় গার্ড বেরে গেছে। আমি এবার আস্তে আস্তে গার্ডদের দিকে যেতে লাগলাম। আমাকে দেখে প্রথমে সবাই নিজেদের কাছে থাকা এ-কে-৪৭ তাক করে ধরলো। পরে আমাকে কাছ থেকে দেখতে পেয়ে গার্ডদের প্রধান সেনাপতি আমার কাছে এসে বলতে লাগলো,
.
–প্রিন্স জ্যাকসন আমাদের ক্ষমতা করবেন। আমরা প্রথমে বুঝতে পারি নি এটা আপনি। আমি রাজার রয়েল গার্ডের সেনাপতি আজগর ওক(সেনাপতি)
.
–কোনো সমস্যা নেই।(আমি)
.
–প্রিন্স রয়েল পরিবারের সবাই আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। সবাই অনেক চিন্তিত ছিলো আপনার নিখোজের জন্য।(সেনাপতি)
.
–ও।(আমি)
.
–চলুন আমি আপনাকে ভিতরে নিয়ে যাচ্ছি।(সেনাপতি)
।।।।
।।।।
আমি রয়েল গার্ডের সেনাপতির সাথে ভিতরে যেতে লাগলাম। প্রাসাদটা এতো বড় যে কোথায় দিয়ে কোথায় যেতে হয় তাই মনে থাকে না। সেনাপতি আমাকে সরাসরি রাজসভায় নিয়ে গেলো। রাজসভায় রাজা সিংহাসনে বসে আছেন। তাছাড়া এনা, জেসি, হ্যারি, এলেক্স ও আছে সেখানে। আমাকে রাজ সভায় ঢুকতে দেখে এনা, হ্যারি, জেসির মুখে হাসি ফুটলো। জেসি এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো। এনা ও আমার সাথে এসে কথা বলতে লাগলো। দুজনেই কাদছে।
.
–আমি তোকে বলেছিলাম যে যেতে হবে না। তারপরও আমার কথা শুনলি না। যখন শুনলাম তুই ড্রাগন বোট থেকে পরে গেছোস জানোস কতটা চিন্তিত হয়েছিলাম আমি?(জেসি)
.
–দ্যা ড্রাগন বোট এমন একটা আবিষ্কার যেটা নিডাভেলির ডয়ারফস রা বানিয়েছে। সেটা দিয়ে এক দুনিয়া থেকে আরেক দুনিয়াতে যাতায়াত খুব কম সময়ের মধ্যে করা যায়। কিন্তু এটা ডিমেনশন স্পেশের মধ্য দিয়ে চলাচল করায় এ নৌকা থেকে যে পরে যাবে সে এই পুরো বিশ্বের যে কোনো এক জায়গায় গিয়ে পৌছাতে পারে।(হ্যারি)
.
–আমার ভাগ্য ভালো ছিলো যে আমি এই রাজ্যের পাশে এসেই পরেছিলাম।(আমি)
।।।।
।।।।
এনা কিছু বলতে পারছে না। শুধু কেঁদেই যাচ্ছে। আর এদিকে এলেক্স আমাকে দেখে অনেক অবাক হয়েছে। আমি চাই না এলেক্সকে কিছু করতে এখন। যা হওয়ার সেটা পরেই হবে।
.
–প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিট, শুনলাম তুমি নাকি ড্রাগন বোট থেকে পা পিছলে পরে গেছো। বিষয়টা কত চিন্তার সেটা তুমি হয়তো জানো না। ভাগ্য ভালো তোমার যে আমাদের রাজ্যের আশে পাশে ছিলে। যদি অন্য কোনো দুনিয়াতে পরে যেতে তাহলে অনেকটা সমস্যা হতো।(রাজা)
.
–মহারাজ আমি জানতাম না যে ঔ নৌকা থেকে কেউ পরে যেতে ও পারে। কিন্তু পাশে দাড়িয়ে হঠাৎ আমার মাথা ঘুরছিলো তাই আমি পরে গিয়েছিলাম।(আমিও মিথ্যা বললাম। রাজার কথা শুনে বুঝতে পারলাম এলেক্সও মিথ্যা বলেছে আমার নৌকা থেকে পরে যাওয়া সম্পর্কে)
.
–যাক যেটা হয়ে গেছে। সেটা নিয়ে কথা না বলায় ভালো। এমন আর যেনো না হয় সেদিকে খেয়াল রেখো। এখন তুমি শুধু তোমাকে নিয়ে ভাববে না, এখন থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে ও তোমাকে ভাবতে হবে।(রাজা)
.
–জ্বী।(আমি)
.
–থর কি ফিরেছেন?(আমি)
.
–হ্যা গড অফ থান্ডারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে লংস্টারে।(রাজা)
.
–তাহলে মহারাজ আমি, আমার বোন, আর হ্যারি আজকেই লংস্টারে যেতে চাই।(আমি)
.
–নো নিড তো ওয়ারি ইয়াং ম্যান। তোমার রাজ্য তুমি যখন তখন যেতে পারবে।(রাজা)
.
–কিন্তু মহারাজ ও তো মাত্রই ক্লান্ত হয়ে ফিরে এসেছে।(এনা)
.
–যেতে চাচ্ছে যাক। আমার তথ্য অনুযায়ী প্রিন্স জ্যাকসন এখনো তার নিজ রাজ্যে ফিরে যায় নি।(রাজা)
.
–তাহলে মাই কিং, আমিও যেতে চাই সেখানে।(এনা)
.
–না সেটার অনুমতি আমি দিতে পারবো না। এখনকার অবস্থা মোটেও ভালো না। থর সেখানে আছে বলা যায় না লোকি কখন আক্রমন করে বসে সেখানে।(রাজা)
.
–হ্যা এনা তুমি আপাতোতো এখানেই থাকো। আমরা দুইদিনের মধ্যে ফিরে আসবো।(আমি)
.
–ওকে ঠিক আছে। মন্ত্রী আপনি ওদের আমাদের টেলিপোর্টেশন রুমে নিয়ে যান।(রাজা)
।।।।।।
।।।।।।
রাজার মন্ত্রী আমাদের নিয়ে একটা রুমের মধ্যে এলেন। বিশাল বড় একটা রুম। রুমের মধ্যখানে চারপাশে চারটা বড় পিলার। মাঝখানে ফ্লোরে অনেক আজব রকমের নকশা কাটা। আমরা নকশার উপরে পা দিতেই সেটা জ্বলতে শুরু করলো।
.
–আপনারা তিনজন এই সিলের মধ্যে দাড়ান। আমি এখন টেলিপোর্ট স্পেল পরবো। আপনারা একটু পরই লংস্টারের টেলিপোর্টেশন রুমে পৌছে যাবেন।(মন্ত্রী)
.
–টেলিপোর্ট করার জন্য স্পেলের প্রয়োজন হয়?(আমি)
.
–হ্যা স্পেলের প্রয়োজন হয়। আমাদের এই দুনিয়ার মধ্যে শুধু ডেভিল কিং ই পারতেন কোনো টেলিপোর্টেশন পিলার ছাড়া এক যে কোনো জায়গায় যেতে। কিন্তু আমাদের সেটার জন্য কিছু শর্ত আছে আমরা এক টেলিপোর্ট পিলার থেকে আরেক টেলিপোর্ট পিলারেই যেতে পারি।(মন্ত্রী)
.
–ওয়াও। জিনিসটা তো সুন্দর। আপনি শুরু করেন।(আমি)
।।।
।।।
মন্ত্রী স্পেল পড়তে শুরু করলেন। স্পেল পড়া শেষ হওয়ার পরই আমাদের চারপাশ দিয়ে একটা সাদা আলো দেখা দিলো। এক মুহুর্তের মধ্যেই আমরা তিনজন টেলিপোর্ট হয়ে গেলাম। এতোক্ষনে রাজার সাথে কথা বলতে বলতে আমি ভিরুর কথা ভুলেই গেছি। বেচারা আমার সাথে নেই যখন থেকে আমি রাজ প্রাসাদের সামনে গিয়েছি। বুঝতে পারছি না কোথায় ও। ঠিক ই চলে আসবে আমার কাছে সময় হলে। এখন ওর প্রয়োজন নেই। আর এমনিতেও বেশীক্ষন ও আমার থেকে দূরে থাকলে ওর শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। তখন ফিরে আসবে।
।।।
।।।
আমরা লংস্টারের একটা রুমে এসে পৌছালাম। আমাদের সামনে একটা হুড পরা লোক। তার পুরো মুখ ঘুমটার মতো হুডে থাকা। তিনি বলতে লাগলেন,
.
–প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিট এবং প্রিন্সেস জেসিকা ব্রিট আপনাদের দুজনকে লংস্টারে স্বাগতম। আপনাদের দুজনের অপেক্ষায় অনেক দিন বসে ছিলাম। আমি এই প্রাসাদের প্রধান ম্যাজিশিয়ান। আমার নাম অস্ট্রিড হোন। আর অন্য দিকে বলতে গেলে আমি সপ্তম ডিউকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলাম।(অস্ট্রিড)
.
–সপ্তম ডিউক আবার কে?(আমি)
.
–তোকে বলেছিলাম না আমাদের দাদা। বাবা তাকে জেলে খানায় বন্ধি করে রেখেছে।(জেসি)
.
–হ্যা আপনাদের অপেক্ষায় বসে আছেন রাজা।(অস্ট্রিড)
.
–আমরা মাত্রই তো সিদ্ধান্ত নিলাম আসার জন্য। এতোক্ষনে এখানে খবর আসলো কিভাবে?(আমি)
.
–রাজা কোয়াডার্ট আমাদের কল করে জানিয়েছেন আপনারা আসবেন তাই আমরা জানতে পারি।(অস্ট্রিড)
.
–তাহলে এখানেও মোবাইল ফোন আছে।(আমি)
.
–আমার সাথে আসুন। আমি আপনাদের রাজ সভায় নিয়ে যাচ্ছি।(অস্ট্রিড)
।।।।
।।।।
আমরা অস্ট্রিডের পিছু নিতে লাগলাম। হ্যারি আর জ্যাসিকে আমি চুপ চাপ বললাম আমার সাথে নৌকায় কি হয়েছিলো৷ ওরা প্রথমে শুনে বিশ্বাস করে নি। কিন্তু যেটা সত্য সেটা তো বিশ্বাস করতেই হবে। আমি হাটতে লাগলাম আর একটা প্লান করতে লাগলাম। যেহেতু আমরা এখানে এসেছি কিছু মজা করা যাক। আমি অস্ট্রিডকে বলতে লাগলাম।
.
–তো অস্ট্রিড, আমার বাপের সম্পর্কে কিছু বলো। আমার বাপ হঠাৎ পালটে গেলো কিভাবে?(আমি)
.
–ঠিক বুঝলাম না প্রিন্স আপনার কথা?(অস্ট্রিড)
.
–মানে আমাদের বাবা হঠাৎ পালটে গেলো কিভাবে? কি হয়েছিলো তার সাথে?(আমি)
.
–আমি এতোসব জানি না। কিন্তু একটা জিনিস বলতে পারি সেটা হলো রানী কর্ডিলা একজন সাকুবিচ্। তার এই মহলে প্রবেশ করার পরই সব পালটে গেলো।(অস্ট্রিড)
.
–ওওও।(আমি)
.
–তাহলে সব নষ্টের মূলে নতুন রানীর হাত।(হ্যারি এবার বলতে লাগলো)
.
–প্রিন্সেস জেসিকা আপনি এই রুমে গিয়ে একটু বিশ্রাম করুন। আর আপনারা দুজন আমার সাথে আসুন।(জেসিকে একটা রুমে ঢুকতে বলে অস্ট্রিড আমাদের নিয়ে যেতে লাগলেন)
.
–সাবধানে যাস।(জেসি)
.
–ঠিক আছে।(আমি)
।।।
।।।
আমি আর হ্যারি দুজনে যেতে লাগলাম। আমাদের দুজনকে একটা রুমের সামনে ছেড়ে দিয়ে অস্ট্রিড যেতে যেতে বললো,
.
–ভিতরে থর বসে আছেন। তিনি আপনাদের দুজনের সাথে কিছু কথা বলতে চান।(অস্ট্রিড)
.
–থর আমাদের সাথে কথা বলবে?(আমি অবাক হয়ে বললাম)
.
–হ্যা।(অস্ট্রিড চলে গেলো)
।।।
।।।
হ্যারি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমার মতো ও নিজেও অবাক। এমনিতেও আমার লংস্টারে আসার একটাই কারন হলো আমি থরকে নিজ চোখে দেখবো। পৃথিবীতে তো মার্ভেলের যে কয়টা মুভি ছিলো সেখানে আমি থরের বিশাল ফ্যান ছিলাম। সেটা তো কাল্পনিক ছিলো, বাস্তব থর কেমন সেটা দেখার অনেক আগ্রহ আমার প্রথম ওর নাম শুনেই হয়েছিলো। কিন্তু এটা আশা করি নি থর আমার সাথেই কথা বলতে চাইবে।
আমি আর হ্যারি দুজনে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলাম। ভিতরে থর শুয়ে ঘুমাচ্ছে। এতো জোরে নাক ডাকছে যে আমাদের কান ফেটে যাবে বলে মনে হচ্ছে। সাইজে তো আমার থেকে আরো পাঁচ ফুট বড়। দাড়ি আছে মুখে কালো। ডান পাশের চোখটা নেই। মনে হচ্ছে সেটা দান করা হয়ে গেছে। একটা হাত ও নাই। সেখানে স্টিলের হাত লাগানো। মুভির কাল্পনিক কাহিনীর সাথে তো পুরো মিলে যায়। শরীরটা একটা বডিবিল্ডারের মতো। দেখেই ভাইকিং ভাইকিং ফিল আসে। সব ভাইকিং রাই যদি স্বাস্থের দিক দিয়ে এতো ভয়ানক হয় তাহলে তো অবস্থা আমাদের কাহিল হয়ে যাবে একজনের সাথে লড়তে গেলে। আমি থরের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলাম। যতটা আশা করেছি তার থেকেও বেশী পেয়েছি। এখন যদি থরের হাতুড়ি দেখতে পেতাম তাহলে তো আরো ভালো হতো। আমাদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে থান্ডার গড উঠে গেলো। আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
–তো লুসেফার এর ছেলে হ্যারি অদ্রি, লুসেফার কেমন আছে? অনেকদিন হলো ওর সাথে দেখা সাক্ষাত হয় না।(থর)
.
–আপনি আমাকে চিনেন?(হ্যারি)
.
–হ্যা চিনবো না কেনো? ডেভিল কিং এর পরবর্তী প্রধান জেনারেল হবে তুমি। না চেনার কি আছে?(থর)
.
–আর প্রিন্স সাহেব হা করে দেখার কিছু নাই। ৩য় আর চতুর্থ ডানা কি হয়েছে?(থর)
.
–আমার ডানার সম্পর্কে জানেন কিভাবে আপনি?(আমি)
.
–এখনকার জেনারেশন এর এই সমস্যা। তাদের সম্পর্কে কিছু বললেই সেটা কিভাবে জেনেছি সেটা নিয়ে প্রশ্ন করে।(থর)
.
–বুঝলাম না।(আমি)
.
–দেখো জিনিসটা শুধু আমি না। এতোক্ষনে লোকি ও জেনে গেছে। ওর সমস্ত প্লান করা শেষ। এখন শুধু ডেভিল কিং এর পুরোপুরি জন্ম নেওয়ার অপেক্ষায় আছে।(থর)
.
–কিসের প্লান?(আমি)
.
–আমি বলবো এটা ওর এই পুরো বিশ্বকে নিজের করে নেওয়ার নব্বইহাজার একশো নয় নম্বর প্লান। তবে আগের গুলোর থেকে এটা অনেক মারাত্মক হবে। আর সময় ও ভালো একটা বেছে নিয়েছে, ঠিক যখন আমার মিওনির এর জন্য অযোগ্য হয়ে গেছি আমি তখনই ওর প্লান অনুযায়ী কাজ করা শুরু করেছে।(থর)
.
–তাহলে বন্ধী করে রাখতে পারেন না তাকে? কিংবা মেরে ফেলতে পারেন?(হ্যারি)
.
–লোকি ওর ইলুশন ম্যাজিকের জন্য সবচেয়ে ধূর্ত একজন ব্যক্তি। ওকে কখনো মারা যায় না। প্রতি বারই ও ওর ইলুশন ম্যাজিক দিয়ে বেঁচে যায়। আর ওকে বন্দী করে রাখাও সবচেয়ে কষ্টের। এক বার বন্ধী করলে পঞ্চাশ বছর ঠিকই বন্ধী থাকবে, কিন্তু পরে বেরিয়ে যাবে।(থর)
.
–ও।(আমি)
.
–দেখো প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিট। আমার তোমার সাহায্যের প্রয়োজন এখন। আমি একা লোকির কিছু করতে পারবো না। আর এই পুরো মনস্টার রাজ্য ও আমার সাথে লড়লে কিছুই করতে পারবে না।(থর)
.
–আমিই কেনো? আমি বাদেও তো অনেক প্রিন্স আছে?(আমি)
.
–কিন্তু আর সবাই তো ডেভিল কিং হবে না। পরবর্তী ডেভিল কিং তো তুমিই। আর মাত্র কয়েকদিনেই তোমার পুরো ট্রান্সফর্ম হবে।(থর)
।।।
।।।
থরের কথা শুনে হ্যারি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকালো। ও অবাক হলো কারন এটা জানতে পেরে যে এতোদিন পরবর্তী ডেভিল কিং এর সাথে ছিলো কিন্তু ও বুঝতে পারে নি। সাথে সাথে আমার সামনে কুর্নিশ করলো ও।
.
–মহারাজ আমি বুঝতে পারি নি আপনিই ডেভিল কিং হবেন। আমাকে ক্ষমা করবেন।(হ্যারি ফরমালিটি দেখিয়ে)
.
–আরে এসবের দরকার নাই হ্যারি। তুমি আমার ভাইয়ের মতো। এতো সম্মান দেখানোর দরকার নাই।(আমি)
.
–তুমি আগের সব ডেভিল কিং এর থেকে স্পেশাল অনেক। এমনিতেও এই পুরো মনস্টার দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিই হলো ডেভিল কিং। আর তুমি তো তার থেকেও বেশী কিছ।(থর)
.
–আচ্ছা বলবেন আপনি এতো কিছু কিভাবে জানলেন?(আমি)
.
–মাইকেলের সাথে আমার কথা হয়েছিলো। মাইকেলই বলেছে আমাকে তোমার কথা। পুরো কাহিনীই বলেছে। দেখো আমার মিওনির এখন আমার কাছে নেই। আমি সেটা ব্যবহার করতে পারবো না। সেটা ছাড়া আমি লোকির এতো বড় আর্মির সাথে লড়তে পারবো না। আমাকে এই পাঁচ রাজ্যের কেউ সাহায্য করতে পারবে না। আমার তোমার সাহায্যের দরকার। আমার আন্ডারওয়ার্ল্ড এর সৈন্য প্রয়োজন।(থর)
.
–কিন্তু আমি তো এখনো পুরো পুরি ডেভিল কিং এ ট্রান্সফর্ম হয় নি।(আমি)
.
–এ সেটা জানি। সেটার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।(থর)
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
পর্বঃ১৯
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
থরের বলা কথাগুলো আমি ভাবতে লাগলাম। শুধু আমিই নয় আমার সাথে হ্যারি ও ভাবতে লাগলো। আমি রাজার রুমের দিকে যাচ্ছিলাম। সেখানে বাবা নাকি আমার সাথে কথা বলবে। আর হ্যারি যাবে রাজার অথিতিশালায়। হ্যারি কোনো কথা বলতেছে না। আমাদের দুজনের মধ্যে নিরবতা থরের রুম থেকে বের হওয়ার পর থেকেই। হয়তো হ্যারি আশা করে নি ও যাকে ভালোবাসে তার বড় ভাই হবে ডেভিল কিং। হঠাৎ নিরবতা ভেঙে হ্যারি বলতে লাগলো,
.
–আমি বুঝলাম না।(হ্যারি)
.
–কি বুঝলে না তুমি?(আমি)
.
–না আপনি নাহয় ডেভিল কিং হবেন। কিন্তু আমি কিভাবে আপনার জেনারেল হবো? আমার মধ্যে তেমন কোনো কিছুই নেই। আমি তো জেনারেল লুসেফারের ছেলে নামে কলঙ্ক।(হ্যারি)
.
–দেখো হ্যারি আমাকে আপনি করে বলতে হবে না। আর আমি যদি ডেভিল কিং হয়েই থাকি তাহলে তুমি হবে আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত জেনারেল এটা আমি জানি।(আমি)
.
–কিন্তু আমার কাছে তো আমার বাবার মতো কোনো শক্তি নেই।(হ্যারি)
.
–ডেভিল রয়েল জেনারেল হতে হলে কোনো শক্তির প্রয়োজন হয় না তুমি সেটা ভালো করেই জানো। রাজার প্রতি জেনারেলের যত বেশী বিশ্বাস থাকবে সেই জেনারেল তত শক্তিশালী হবে।(আমি)
.
–কিন্তু…..(হ্যারি বলতে চাইলো কিন্তু আমি ওকে আটকে দিয়ে বলতে লাগলাম)
.
–থাক আপাতোতো এইসব কথা না বলায় ভালো। দেখো আমি এখানে এসেছি আমার আপন পরিবারকে খুব কাছ থেকে দেখার জন্য। তাই আমি এইসব ডেভিল টেভিল নিয়ে এখন কথা বলবো না। আর কেউ আমাদের কথা শুনে ফেললে আরো খারাপ হবে।(আমি)
.
–হ্যা ঠিক বলেছেন।(হ্যারি)
.
–আমি বলেছি আমাকে সম্মান জানিয়ে আপনি বলার দরকার নাই।(আমি)
।।।
।।।
থরের রুমের সামনে দুইজন গার্ডের থেকে অতিথি শালার ফ্লোরে চলে আসলাম। সেখানে এক রুমে হ্যারিকে দিয়ে আমি আবার হাটতে লাগলাম। আমার উদ্দেশ্য হলো রাজার রুম মানে আমার বাবার রুম। কিন্তু আমি আগে কখনো এখানে না আসায় কিছু চিনি না। আর আসার সময় কয়েকটা গার্ড দেখলেও এখন কোনো গার্ড দেখতে পাচ্ছি না। আমি মেঝেতে তাকিয়ে হাটছিলাম। ফ্লোরগুলো অনেক সুন্দর নকশা করা। একজন গার্ড দেখতে পাবো সেই আশায় আমি হাটছিলাম। কিন্তু কাউকে দেখতে না পেয়ে হতাশ হলাম। হঠাৎ একটা মেয়ে আমার সামনে আসলো। বয়সের দিক দিয়ে হয়তো ১১/১২ বয়সের হবে। কিংবা তারচেয়ে বেশী ও হতে পারে। দেখতে অনেকটা চিনাচিনা লাগছে। মনে হয় কোথাও দেখেছি। পরনে অনেক দামী একটা ড্রেস। ড্রেসের ভাব দেখেই মনে হচ্ছে প্রিন্সেস। হতে পারে কহিলের বোন এটা। কহিলের বোন মানে তো আমারও বোন। সৎ হলেও কি বোন তো বোনই।
.
–এদিক সেদিক হাটলে কখনো বাবার রুমের দিকে যেতে পারবে না।(মেয়েটা)
.
–….(আমি কিছু না বলে ওর দিকে তাকালাম। চেহারাটা এতো সুন্দর যে পুরো এনাকেও হার মানাবে)
.
–কি হলো এভাবে তাকিয়ে থাকবে?(মেয়েটা)
.
–কে তুমি?(আমি)
.
–আমি ক্যারেন ব্রিট। এতোদিন জানতাম ফার্স্ট প্রিন্সেস অফ লংস্টার। কিন্তু ইদানিং আমি ক্যারেন ব্রিট সেকেন্ড প্রিন্সেস অফ লংস্টার।(ক্যারেন)
.
–তারমানে তুমি আমার সৎ বোন।(আমি)
.
–কি তাহলে তুমি জ্যাকসন? কোথায় আমি ভাবছিলাম এই সুন্দর হ্যান্ডসাম ছেলেটা কে? প্রেম করা যায় কিনা সেটা নিয়ে ভাবছিলাম, আর তুমি আমার সৎ ভাই হলে।(একটু ভাব নিয়ে বললো)
।।।
।।।
মেয়েটা বলে কি? এমনিতেই ছোট মেয়েদের বেশী ভাব থাকে। আর এ তো নিগ্গী কোয়ালিটির মেয়ে মনে হচ্ছে। যাইহোক এর ভাবসাব মোটেও ভালো লাগছে না আমার।
.
–তো আমার সাথে চলো আমি নিয়ে যাচ্ছি বাবার কাছে।(ক্যারেন)
.
–ওকে, ঠিক আছে।(আমি)
.
–শুনেছি তুমি নাকি কহিলকে হারিয়ে দিয়েছো ডুও ফাইটে?(ক্যারেন)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–তাহলে তো কহিলের থেকেও বেশী শক্তিশালী তুমি।(ক্যারেন)
.
–সেটা জানি না।(আমি)
.
–হ্যা শক্তিশালী হবে না কেনো? তুমিই তো পরবর্তী ডেভিল কিং হবে।(ক্যারেন)
.
–কি? আমি ডেভিল কিং হবো কিভাবে?(আমি)
.
–লুকানোর চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই। আমি তোমার আর ঔ হ্যারি নামক ছেলেটার সব কথা শুনেছি।(ক্যারেন)
.
–তো এখন কি ব্লাক মেইল করার চেষ্টা করবে? নাকি সবাইকে বলে দিবে?(আমি)
.
–বলে দিলে তোমার বিপদ। আমি যতদূর জানি তোমার শক্তি এখনো পুরোপুরি হয় নি। আর এখন কেউ জানতে পারলে তোমাকে মেরে ফেলবে।(ক্যারেন)
.
–তাহলে ব্লাকমেইল করতে চাচ্ছো? ঠিক আছে কি লাগবে?(আমি)
।।।
।।।
মেয়েটাকে ছোট মনে হলে কি হবে। এই বয়সেই বড় হয়ে গেছে। এমনিতেই মনস্টারদের দুনিয়াতে প্রিন্স আর প্রিন্সেসরা খুব কম বয়সেই ম্যাচুয়ার হয়ে যায়। ১০ বছর বয়সের পর থেকেই নাকি তাদের বিয়ে দেওয়া যায়। জানি না সাধারন মানুষেরা শুনলে এটা নিয়ে কি বলতো। কিন্তু ক্যারেনের কথা শুনে আমার মনে হচ্ছিলো ও এই রাজ্যের ভার আমাকে নিতে দিবে না। হয়তো নিজেই এখানের রানী হওয়ার শর্ত দিবে,
.
–আমি এখন এই কথাটা কাউকে বলবো না। বাট আমার একটা শর্ত আছে।(ক্যারেন)
.
–কি শর্ত?(আমি)
.
–আমাকে বিয়ে করতে হবে। আমি ডেভিল কিং এর স্ত্রী হতে চাই। আমি ডেভিল কিং এর বাচ্চার মা হতে চাই।(ক্যারেন)
.
–কিসব যাতা বলতেছো? তুমি আমার ছোট বোন এটা কি মাথায় আছে।(আমি)
.
–আমি তোমার সৎ বোন এটা মাথায় রেখো। যেহুতু আমরা একই মায়ের পেটের না তাই আমাদের মধ্যে বিয়ে কোনো অন্যায় ব্যাপার না।(ক্যারেন)
.
–ঠিক আছে তুমি যা করার করো। আমি তোমার শর্তে কখনো রাজি হতে পারবো না। তোমার মতো পিচ্চি মেয়ে এতো মারাত্মক একটা জিনিস বলতে পারে আমি কখনো ভাবি নি।(আমি)
.
–যা বলার ভেবে বলো। আমি কোনো পিচ্চি না। আর এটা আমার আসল ফর্ম নয়। আমার আসল ফর্ম দেখলে চোখ নামাতে পারবে না আমার থেকে।(ক্যারেন)
.
–ছিঃছিঃ একজন প্রিন্সেস হয়ে নিজের বড় ভাইয়ের সাথে এমন কথা বলতে লজ্জা করছে না?(আমি)
.
–আমি আমার কথাটা বললাম। ডেভিল কিং এর রানী হবো এটা আমার ছোট থেকেই স্বপ্ন। সেটার জন্য কোনো কিছুই করতে পারি আমি।(ক্যারেন)
.
–কি করবে তুমি? তোমার মতো ছোট বাচ্চা আর কি করতে পারবে?(আমি)
.
–আমি একজন সাকুবিচ্। আমাদের একটা স্পেশাল ক্ষমতা আছে। আমরা যে কোনো একটা ছেলেকে চিরকালের জন্য নিজেদের করে নিতে পারি। কিন্তু সমস্যা হলো এই স্পেলটা শুধু একবারই একজনের উপর কাজ করে। আর এটা কোনো ছেলের উপর ব্যবহার করলে অন্য কোনো ছেলের সাথে কোনো রকম শারিরীক সম্পর্কের কথা ভাবলে সেটা নিজের জীবন নিয়ে যাবে। তাই কোনো সাকুবিচ্ এই স্পেল ব্যবহার করলে তার উপরই ব্যবহার করে যাকে চিরকাল ভালোবাসবে। আর আমি তো ডেভিল কিং এর প্রেমে ছোট থেকেই পাগল। আমি শুধু তার সামনে একবার আসার জন্য এতোকাল অপেক্ষা করেছি।(ক্যারেন)
.
–পাগল মনে হচ্ছে তোমাকে।(আমি)
।।।।
।।।।
ক্যারেন আর কিছু না বলে ছোট একটা স্পেল পরলো। আমি একটু আগেই কিছুটা দূরে সরে এসেছি। ব্যাপারটা মোটেও ভালো লাগছে না। ও যে স্পেলের ব্যাপারে বলছে সেটা আমি একটা বইয়ে পড়েছি। ওর স্পেল টা কোনো কাজের না। সেটা শুধু হিপনোটাইজ করার জন্য। এই স্পেলের মধ্যে যে আসবে সে তার সামনে থাকা যে বিপরীত লিঙ্গের মনস্টারকে দেখবে তার ঠোটে চুমু দিবে। আর সাকুবিচ্ দের যদি কেউ এই স্পেলে আক্রান্ত হয়ে কিস করে তাহলে পুরো জীবন তার শেষ। এই সাকুবিচের সাথে পুরো জীবন কাটাতে হবে। কিন্তু এটা খারাপ কোনো স্পেল না। যদি ছেলেটার মনে অন্য কোনো মেয়ে থাকে তাহলে সে তাকে ভুলবে না এই স্পেলের জন্য। বরং দুজনকে ভালোবাসবে তখন থেকে।
।।।
।।।
আমি প্রথমে ভয়ানক কিছু আশা করছিলাম। কিন্তু এটা নরমাল একটা স্পেল। সব সাকুবিচ্ দের কাছেই এটা একবার ব্যবহার করার জন্য থাকে৷ সাকুবিচ্ রা এটা দিয়ে তাদের ভালোবাসার মানুষের মনে ভালোবাসা জন্মাতে পারে। কিন্তু এটা ব্যবহার করলে সমস্যাও আছে। কোনো সাকুবিচ্ এটা ব্যবহার করলে সে তার সাকুবিচ্ এর সমস্ত ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তাই কোনো সাকুবিচ্ এটা ব্যবহার করে না। যারা সাধারন জীবন চাই শুধু তারাই এটা ব্যবহার করে। কিন্তু বেশীর ভাগ সাকুবিচ্ই ছেলেদের বশে করে নোংরা কাজই করতে পছন্দ করে।
।।।
।।।
আমি ক্যারেনের মাঝে কিন্তু নিষ্পাপ একটা বাচ্চার ছবি দেখতে ছিলাম এতোক্ষন। কিন্তু হঠাৎই যে ওর আমার প্রতি কামক্ষুদা জেগে যাবে সেটা কে ভাবছে? আমি আমি রানী কর্ডিলার ব্যাপারে শোনার পর থেকে সাকুবিচ্ দের সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। সাধারন জ্ঞান রাখা ভালো। কারন এরা অনেক নোংরা আর ভয়ানক মনস্টার পুরুষদের জন্য। যাক সেদিকে বেশী কথা বল্লাম না। আমার দিকে একটা আলোর মতো কিছু আসছিলো ক্যারেনের হাত থেকে। আমার স্পিড আগের থেকে চারগুন বেড়ে যাওয়ায় আমি সেটাকে আসতে আসতে আমার দিকে আগাতে দেখলাম। আমি প্রথমেই ওর থেকে পিছনে সরে এসেছিলাম। আমি বুঝতে পারলাম এটা আমার শরীরে লাগলে আমি সোজা গিয়ে ওর ঠোটে কিস করবো। যেহেতু সাধারন একটা স্পেল তাই এর থেকে বেশী কিছু হবে না। কিন্তু কর্ডিলা মানে আমার সৎ আম্মা বাবার উপরে যে স্পেলটা ব্যবহার করেছে সেটা অনেক শক্তিশালী। সেটার জন্য আরো বেশী নোংরা কাজ করতে হয়।
।।
আমি ক্যারেনের ছোড়া আলোর গোলা থেকে সরে গেলাম। আমার কি ভাগ্য। পিছনে ঠিক দাড়িয়ে আছে হ্যারি। ওর শরীরে আলোটা লেগে গেলো। আর কি হওয়ার ক্যারেন তো প্রথম চুমু খাওয়ার উত্তেজনায় নিজের চোখ বন্ধ করে আছে। ছোট মেয়ে কি আর হবে। আর এমনিতেও সাকুবিচ্ আমার ওর এই ভাব আর দেখতে মন চাচ্ছে না। এমনিতেই সাকুবিচ্ দের ছোট সময়ে ভাবসাব বেশী ভালো থাকে না। তারা যে কোনো সময় প্রবল উত্তেজিত হতে পারে। আর এটাই ছেলে বশ করার জন্য তাদের একটা বড় এডভান্টেজ। আর আমার ছোট বোনের এমন অবস্থা দেখে আমার ঠাপ্পর দিতে মন চাচ্ছিলো৷ কিন্তু আমি কিছু করলাম না। জানি সামনে কি হবে। আমি আগাতে লাগলাম সামনের দিকে৷ সিড়ি দিয়ে আরো দু তলা উঠার পর আমি রাজার রুমে চলে গেলাম। হ্যারির ভাগ্য পুরো খুলে গেলো। সে পরবর্তীতে ডেভিল কিং এর দুই বোনের জামায় হবে। কিন্তু আমার জেসির জন্য খারাপ লাগছে। তারপরও ক্যারেনের মাথা এমনিতেই খারাপ। স্পেলটা আমার শরীরে লাগলে ভাইবোনের বিয়ে হয়ে যেতো। সৎ হলেও তো বোন ও আমার। আর এখন নাহয় দুই বোন এক জনের জামায় হলো, বিষয়টা এতোটাও খারাপ না। যাইহোক সবকিছুই এই দুনিয়াতে আজব। নিয়মকানুন সব কিছুই উল্টা পাল্টা। রাজারা কি এসব নিয়মকানুনের উপর একটু সতর্ক হতে পারে না? আরো অলস রাজা হলে তো রাজ্য ধ্বংসের পথে চলে যাবে।
।।।
।।।
আমি বাবার রুমের দরজা খুললাম। ভিতরে জ্যাসন ব্রিট মানে আমার জন্মদাতা বাবা বিছানায় বসে আছেন। বর্তমান রানী মানে আমার সৎমা তারই পাশে বসে হেসে হেসে কথা বলছিলেন।
.
–ভিতরে আসার পূর্বে নক করে আসতে হয় এটা রাজ্যের বড় প্রিন্স কি জানে না?(আমার দিকে নিচু করে দেখে বললো রানী)
.
–আমি আপনার ছেলে না। তাই শুধু শুধু লেকচার দিবেন না। কি করতে হবে না হবে সেটা আমি বুঝবো।(আমি একটু রেগে বললাম)
.
–জ্যাকসন এটা কিরকম কথা। উনি তোমার আম্মা হন।(রাজা)
.
–আম্মা? হাহাহা। আমার আম্মা তো সেই কবে আপনার আদেশে মারা গেছে। তার বিরুদ্ধে তো পরকিয়ার দোষ দিয়ে তাকে মেরেছিলেন।(আমার কথা শুনে অনেক অবাক হলো রানী। কিন্তু বাবার চোখে আমি বেদনা দেখলাম কিছুটা)
.
–দিন দিন অনেক নরম হয়ে যাচ্ছেন মহারাজ আপনি। এরকম চললে রাজ্য তো আপনি সামলাতে পারবেন না।(আমার সামনেই কোনো লজ্জা ছাড়া সাকুবিচ্ টা বাবাকে একটা কিস করলো)
।।।।
।।।।
বুঝলাম এটা শুধু কিস ছিলো না। এটা একটা স্পেল ছিলো। এখন আমি আমার আশে পাশে কোনো স্পেল ব্যবহার করলে না দেখলেও অনুভব করতে পারি। এটা হয়েছে আমার ২ টা ডানা বের হওয়ার পর থেকে। হঠাৎ বাবার বেদনা ভরা মুখ বদলে গেলো। সাথে সাথে সে পুরো পাল্টে গেলো।
.
–মহারাজ আপনার সামনে আপনার রানীকে অসম্মান করলো আপনি কি তাকে শাস্তি দিবেন না?(রানী)
.
–হ্যা নিশ্চয়। প্রিন্স জ্যাকসন আমি এই রাজ্যের অষ্টম ডিউক, রাজা জ্যাসন ব্রিট জানাচ্ছি যে আজকেই তোমার বাম হাত কেটে নেওয়া হবে। গার্ডস ভিতরে আসো এবং প্রিন্স জ্যাকসন ব্রিটকে আটক করে বাইরের রাজসভায় নিয়ে যাও।(জ্যাসন)
।।।
।।।
কথাটা শুনে রানী অনেক খুশী হলো। কয়েকজন গার্ড এসে আমাকে ধরে নিয়ে গেলো। বুঝতে পারলাম ব্যাপারটা মোটেও সুবিধার হচ্ছে না। কয়েকটা গার্ড নয় বরং কিছুদূর হেটে যাওয়ার পর পুরো একশো গার্ড আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। ভয়ানক একটা কান্ড এখানে। আমার বাম হাত কাটার কথা মনে করেই আমার গা শিহরিত হয়ে যাচ্ছে। আর এদিকে রক্ত বের হবে সেটা মনে করে আমার রক্তের ক্ষুদা লাগতে লাগলো। এখন মন চাচ্ছে আশে পাশে কাউকে মেরে তার রক্ত পান করি। কিন্তু সেটা করলে আরো কঠিন শাস্তি হবে। আর বর্তমান সময়ে আমি এতোটাও শক্তিশালী নয়। এখন যে শক্তি আছে তাতে এই একশো জনকে মনে হয় আমি মারতে পারবো, কিন্তু তখন পুরো রাজ্য আমাকে বিদ্রোহী ঘোষনা করবে। তখন রাজ্যের সমস্ত সেনা আমার মাথা কাটার জন্য লেগে পরবে। থর এখন ঘুমাচ্ছে। মনে হয় না ওনার থেকে এখন সাহায্য পাবো। কিন্তু কিছু একটা তো করতেই হবে আমাকে। নাহলে আমার ডান হাত যে কেটে ফেলবে। আমাকে বাইরের রাজসভায় নিয়ে গেলো আধা ঘন্টা পর। এতোক্ষনে জেসি আর এনা দুজনেই আমার কাছে এসেছিলো। আমি জেসিকে বলে দিয়েছি চিন্তা না করতে। একটা হাত গেলে আপাতোতো কিছুই হবে না। হ্যারি বিষয়টা মানতে পারে নি। কিন্তু আমি জানি ডেভিল কিং হিসাবে পুরো ট্রান্সফর্ম হলে আমার হাত আবার ঠিক হয়ে যাবে। আধা ঘন্টা পর আমাকে প্রাসাদের বাইরে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে অনেক লোক জড়ো হয়েছে। প্রিন্সের শাস্তি দেখতে প্রজারা ভীর করে দাড়িয়েছে৷ রাজা প্রাসাদে দ্বিতীয় তলায় বেলকনিতে থাকা একটা সিংহাসনে বসে আছেন। আর রানী তার পাশের একটা আসনে বসে আছে। আমার বাম হাত রাখা হলো একটা কাঠের উপরে। একটা লোক বিশাল চাইনিজ কুরাল দিয়ে আমার বাম হাতের উপরে কোপ মারবে। ঠিক তখনি মনে পরলো আমার বাম হাত যদি কেটে ফেলা হয় তাহলে আমি দুই নাম্বার সেরে পানি দিবো কিভাবে? বিষয়টা বেশ চিন্তায় ফেলে দিলো। এই চিন্তাই কখন যে আমার হাত কেটে ফেলেছে আমি চিন্তাই করি নাই। শরীরে তেমন ফিল হচ্ছে না আমার। বাম হাতের কব্জি থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে, আর সেটা দিয়ে রক্ত পরেই যাচ্ছে। কাটা হাত টুকু নিচে পরে রক্তে মাখিয়ে গেছে। আমার রক্ত দেখে রক্ত পিপাসা আবার লেগে গেলো। তাই কাটা হাত টুকু হাতে তুলে একটু জিব্হা দিয়ে চেটে দেখলাম। না একদম জগন্য লাগলো। নিজের ব্লাড নিজে খেলে যে এতো জগন্য লাগবে সেটা বুঝতে পারি নাই। হাতে এবার কিছুটা ব্যথা শুরু হতে লাগলো, হঠাৎ আমি ভিরুর আওয়াজ পেলাম,
.
–জ্যাক তারাতারি কাটা হাতটুকু যেখানে লাগানো ছিলো সেই জয়েন্টে রাখো। দুই মিনিটের মধ্যেই আসল ব্যথা শুরু হবে।(ভিরু)
.
–কোথায় তুমি?(আমি)
.
–আমি কোথায় সেটা ব্যাপার না। তোমার শরীর অনেক তারাতারি রিজেনারেট করতে পারে। তাই ব্যথা বেশী হওয়ার আগে জোড়া লাগাও।(ভিরু)
.
–ঠিক আছে।(আমি)
।।।
।।।
আমার হাত ধরে আজব জিনিস মানে নিজের ব্লাড নিজে চেটে খাওয়া দেখে সবাই অবাক হলো। সৈন্যরা ভয় পাচ্ছে হয়তো ব্লাড দিয়ে আমি কোনো ব্লাক ম্যাজিক করবো সেটা ভেবে। তাই আমার হাত বন্ধি করতে আসতে লাগলো। তখনি আমার ছায়ার মধ্য থেকে ভিরু বের হলো। বুঝলাম না আমার ছায়ার মধ্যে একটা ড্রাগন কিভাবে থাকতে পারে,
.
–কেউ আর এক পা আগালে আমি সবাইকে জ্বালিয়ে দিবো(ভিরু)
।।
।।
ভিরুর ধমক শুনে কেউ ভয় পেলো না। বরং অবাক হলো। ছোট বাচ্চা ড্রাগন কিভাবে কথা বলতে পারে। এদিকে এটা দেখে আমার ভি রু দা গেলো রেগে। সে নিজের আসল সাইজে চলে আসলো। এবার তো পুরো রাজ্যের মনস্টার ভয়ে কাতর। ভিরু রাগে গর্জে উঠে বলতে লাগলো,
.
–আমার নাম ইগড্রাসিল। দ্যা ফায়ার ড্রাগন কিং। আমি জ্যাকসন ব্রিট যে কিনা লংস্টারের প্রিন্স এবং পরবর্তী ডেভিল কিং হবে তার ড্রাগন পার্টনার।(ভিরু)
।।।
।।।
যা ভিরুর বাচ্চা ভিরু আমার বাঁশ দিয়ে দিলো। এবার তো পুরো পাঁচ রাজ্য আমার পিছু নিবে। আমার তো এখনি আন্ডারওয়ার্ল্ডে চলে যেতে হবে মনে হচ্ছে। আমি আমার কাটা হাতটা জায়গা মতো রাখতেই সেটা জোড়া লেগে গেলো। মনে হচ্ছেই না কোনো কিছু হয়েছিলো। শুধু মাথা কিছুটা ঘুরছে বেশী ব্লাড বের হওয়ার জন্য। আমার এখনিই কারো ব্লাড খেতে হবে শরীর ঠিক করতে হলে। তাই আমি সোজা ইগড্রাসিলকে আমার ভ্যাম্পায়ার দাঁত দিয়ে কামড় দিলাম। এবং পরিমান মতো গরম টগবগে রক্ত পান করে নিলাম।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))