#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
রানীকে বলে আমি রাজি করালাম। রানীর কথা বার্তা শুনে বুঝতে পারলাম, সে কিছু একটা চাই আমার দ্বারা। আর প্রিন্সেস এলিনার উক্তিও সঠিক এখানে। এ্যারসাক চাচ্ছে আমার গডহ্যান্ডের ব্যবহার করতে।
।।।
।।।
আমরা এ্যালকোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এ্যালকোর্ট মূলত তাদের অস্ত্রের জন্য বিখ্যাত। ইগড্রোলিয়া মিলিটারী ক্ষমতা, হিমরার তাদের আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং এ্যালকোর্ট তাদের অস্ত্রের জন্য বিখ্যাত। হিমরারে অনেক বিখ্যাত ডয়ারফস ও রয়েছে। তারা অনেক শক্তিশালী অস্ত্র বানাতে সক্ষম। তবে সেগুলো এক্সোনিয়ার ধারের কাছেও নাই। এক্সোনিয়ার যে ক্ষমতা রয়েছে, সেটা মনে হয় না এই দুনিয়ার অন্য কোনো তলোয়ারে রয়েছে। আমি, লুসি, লুসানা, হ্যারি, প্রিন্সেস এলিনা এবং এ্যারসাকের জেনারেল লুক সোজা এ্যালকোর্টের প্রবেশ এর গেইটে ঢুকলাম। এ্যালকোর্ট সহ বাকি তিনটা রাজ্যের চারিদিকে বিশাল উচু দেওয়াল রয়েছে, যেটা বানাতে কয়েক হাজার বছর সময় লেগেছে। অনেক শ্রমের প্রয়োজন হতো যদি ম্যাজিক না থাকতো এই দুনিয়াতে। একটা জিনিস আমার অনেক ভালো লাগে, সেটা হলো এই দুনিয়ার সবাই ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারে। এ্যারসাককে এ্যালকোর্টও নতুন রাজ্য হিসাবে মেনে নিয়েছে। তাই এ্যারসাকের অতিথি হিসাবে আমাদের ঢুকতে সমস্যা হলো না। এ্যালকোর্টে আমার এই প্রথম প্রবেশ। এ্যালকোর্টে বেশী ভাগ রয়েছে ভাইকিংসরা আমি শুনেছি এখানের রাজাও একজন ভাইকিংস। আমার চিন্তা হচ্ছে থরকে নিয়ে। সে কি এখনো জন্ম নিয়েছে? নাকি আরো পরে নিবে। সেটা পরে দেখা যাবে।
৷।
৷।
যেহেতু আমরা আরেক রাজ্যের অতিথি, তাই আমাদের সাদরে গ্রহন করলো এ্যালকোর্ট। একদম সোজা ক্যাপিটাল শহরে আমাদের টেলিপোর্ট করে দিলো একজন সেনা। যেহেতু আমাদের প্যালেসে কোনো কাজ নেই, তাই রাজার সাথে কথা বলার মানে হয় না। আমি এই রাজ্যের আর্কাইবে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম। হাটতে লাগলাম। আর প্রিন্সেস বলতে লাগলো,
.
–তোমার তো তলোয়ারে কোনো সমস্যা নেই, তাহলে ব্লাক স্মিথ দিয়ে কি করবে?(প্রিন্সেস)
.
–আমার কাছে আরেকটা ভাঙা তলোয়ার রয়েছে। যেটা ঠিক করতে হবে আমাকে।(আমি)
.
–কতগুলো তলোয়ার ব্যবহার করবে তুমি?(প্রিন্সেস)
.
–তিনটা।(আমি)
.
–এতোগুলো?(প্রিন্সেস)
.
–আমার মাস্টার ছয়টা ব্যবহার করতে পারবেন।(আমি)
.
–৬ টা তলোয়ার? কি নাম ছিলো তার?(লুক)
.
–লুসেফার।(আমি)
.
–লুসেফার? তার মুখে কি তলোয়ারের কাটা দাগ ছিলো?(লুক)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–লুসেফার। অন্যনাম সিক্স সোর্ড মাস্টার লুসেফার যে তার বয়সের সময়ের সেরা তলোয়ার এর যোদ্ধা ছিলো। কিন্তু হঠাৎ সে উধাও হয়ে যায়, তার খবর কেউই দিতে পারে নাই।(লুক)
.
–আপনি জানেন কিভাবে তার কথা?(আমি)
.
–আমার বাবা বলেছিলো আমাকে, তার সাথে লড়াই হয়েছিলো লুসেফারের সাথে।(লুক)
.
–তাহলে আমার মাস্টার লুসেফার আরসাকের ছিলো?(আমি)
.
–হ্যা। তবে সে তবে আমার বাবার মতে সে আরসাক থেকে নতুন কিছু খোজার জন্য বের হয়েছিলো। আর তখনি আমার বাবার সাথে তার লড়াই হয়। তার কাছ থেকে আমার বাবা খুব গুরুতর আহত হয়ে পালিয়ে ফিরে আসে।(লুক)
.
–ওওওও।(আমি)
.
–এখন কোথায় আছে লুসেফার? আমি আমার বাবার হারের প্রতিশোধ তার থেকে নিতে চাই। এতোদিনে তো অনেক বৃদ্ধ হয়ে গেছে মনে হয়।(লুক)
.
–সে মারা গেছে।(আমি)
.
–তাহলে আমি আপনার সাথে লড়বো আবার। তবে সামনে বার পুরো শক্তিতে লড়বো। আপনি আপনার তলোয়ার দিয়ে লড়বেন। আমিও আমার ম্যাজিক পাওয়ার দিয়ে।(লুক)
.
–হ্যা ঠিক আছে। তবে সেটার জন্য ব্লাক স্মিথকে খুজতে হবে আগে। তারপর এ্যারসাকে ফিরে আপনার সাথে লড়াই করা যাবে।(আমি)
.
–আমি শুনেছি ব্লাক স্মিথকে কয়েক বছর যাবৎ কেউই খুজে পাচ্ছে না, তাহলে কিভাবে বের করবো তাকে?(হ্যারি)
.
–আমি খুজে দেখতে পারতাম, তবে তাকে আমি কখনো দেখি নি। একবার একজনকে দেখলেই আমি সার্চ ম্যাজিক দিয়ে তাকে যেকোনো জায়গায় খুজে নিতে পারবো।(প্রিন্সেস)
.
–আমাদের শুধু ব্লাক স্মিথের একটা ছবির প্রয়োজন শুধু। আর সেটা আর্কাইবে গেলে হয়তো পেয়ে যাবো।(আমি)
.
–তাহলে যাওয়া যাক।(লুক)
।।।
।।।
হ্যারি, লুসি, লুসানা এবং লুক সামনে হেটে যাচ্ছে। আমি পিছনে পরেছিলাম। আমি পিছে থাকায় প্রিন্সেসও আমার পাশে হেটে যাচ্ছে। আমি সিওর করতে চাই এনার কিছু মনে আছে কিনা, তার জন্য কিছু পরীক্ষা আমাকে করতে হবে। যদি মনে থাকে তাহলে ও নিজেই স্বিকার করবে। আর মনে না থাকলে সেটাও বুঝতে পারবো আমি। আমি হঠাৎ প্রিন্সেসের হাত ধরে ফেললাম। এবং তালুতেই আমার তালু রেখে হাটতে লাগলাম। প্রিন্সেস অনেকটা চমকে গেলো। কিছুক্ষনপর বলতে লাগলো,
.
–জ্যাক আশেপাশের সবাই আমাদের দেখছে।(প্রিন্সেস)
.
–ও সরি প্রিন্সেস। আপনি হারিয়ে না যান, এজন্য আমি হাত ধরেছিলাম। দুঃখিত আমি।(আমি)
.
–না ঠিক আছে।(প্রিন্সেস)
।।।
।।।
আমি হাত ছেড়ে দিলাম। এমন কোনো কিছু বললো না যেটাই আমি কিছু বুঝতে পারবো, তাই আমি আপাতোতো আর কিছু করলাম না। পরে দেখা যাবে এটা। আপাতোতো আমরা আর্কাইবে গেলাম।
।।
।।
আর্কাইব থেকে কোনো প্রকার খবর পেলাম না। একটা ছবির আশা করেছিলাম। কিন্তু কোনো তথ্যই আর্কাইবে নেই। শুধু আর্কাইব নয়, বরং এই পুরো ক্যাপিটালের মধ্যে ব্লাক স্মিথ নিয়ে কোনো তথ্য নেই, যেটা আমরা দুইদিন ক্যাপিটালে থেকে বুঝতে পেরেছি
তারপরও বের হয়েছি তথ্য বের করার জন্য। আমি আজকে একাই বের হয়েছি। অন্য কাউকে আমার সাথে আনে নি। প্রিন্সেস আসতে চেয়েছিলো। কিন্তু সে ঘুমানোর পর আমি একাই চলে এসেছি।
।।।
।।।
একটা গলি দিয়ে হাটতে ছিলাম। হঠাৎ সামনে গলিতে একটা রোগা ছেলেকে কয়েকজন বড় বড় লোক মিলে মারছিলো। কাছে গিয়ে লক্ষ করলাম। ছেলেটা দুটো রুটি চুরি করেছে। আর তার ফলে তাকে মারছে রুটির মালিক এবং তার লোকেরা। ছেলেটাকে দেখে বুঝলাম সে আমার মতো একটা মানুষ। আমি দাড়িয়েই ছিলাম। সাহায্য করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু যখন লোকগুলোর মুখের কথা শুনতে পারলাম, তখন নিজের রাগ ধরে রাখতে পারলাম না।
.
–তোদের মতো দুর্বল মানুষদের তো মরেই যাওয়া ভালো। তোকে আজকে এখানে মেরে পুতে রাখলে কেউ কোনো কিছু বুঝবেও না।(মালিকটা ছেলেটাকে বললো)
।।।
।।।
আমি সোজা টাইম স্পেল ব্যবহার করলাম। এটার নাম টাইম স্টপ। এটা দিয়ে পুরো আধা মিনিট সময় আটকিয়ে রাখা যায়। সময়ের স্পেল গুলো গুরুত্বপূর্ন। এগুলো অনেক ক্ষতিকরও। যদি কিছু না বুঝেই আমি বারবার সময়ের স্পেল ব্যবহার করি তাহলে অনেক ক্ষতিকর কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। তাই সময়ের স্পেল খুব কম ব্যবহার করাই ভালো। আমি আমার হাত গুলো এখন কাজে লাগাতে পারবো। সময় আটকে যাওয়ায় আমি এগিয়ে গেলাম। মোট চারজন লোক দাড়িয়ে মারছিলো ছেলেটাকে। দুজন লাথি দিচ্ছিলো। একজন ঘুষি এবং একজন একটা লাঠি দিয়ে বারি দিচ্ছিলো। আমি আমার পিঠ থেকে চারটা হাত বের করে ফেললাম। আমার হাত আমি লুকের সাথে ব্যবহার না করলেও এখানে করতে পারবো ঠিকই। এই হাতগুলো শুধু আমার নিরাপত্তার জন্য না। প্রতি রাতে এই হাত গুলো বের করে এদের দ্বারা কি কি করা যায় সেটা আমি গবেষনা করেছি। আর আমার গবেষনা থেকে খুব ভালো জিনিসই পেয়েছি। আমি আমার পাঁচটা হাতকে ব্যবহার করতে পারবো যে কোনো কিছুর রূপ বানাতে। সাধারন কথায় আমি পাঁচটা হাত দিয়ে আমার ধারনা মতে কোনো যে কোনো কিছুর রূপ দিতে পারবো। এমনকি আমি জীবিত জিনিসের মতো রূপও দিতে পারবো, যাদের চেহারা থাকবে না তবে শরীর ঠিকই হবে। আর তাদেরকে আমার ইচ্ছামতো নারাতে পারবো। ক্ষমতাটা অস্থির। এটাকে গডহ্যান্ড বলা হয় কেনো সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। আমি চারটা হাত বের করে সেটা দিয়ে ভয়ানক হিংস্র নেকড়ে বাঘ বানিয়ে ফেললাম যেগুলো চারজনের উপরে ঝাপিয়ে পরলো। যেহেতু সময় বন্ধ ছিলো, তাই কেউ চিল্লানোর সুযোগ পেলো না। সাথে সাথেই তাদের পুরো শরীরে খেয়ে ফেললো আমার হাতের তৈরী নেকড়ে বাঘ গুলো। আধা সেকেন্ড হওয়ার পর আমি ছেলেটার মাথায় হাত দিলাম। এতে করে তার শরীরের ক্ষত ঠিক হতে লাগলো। ছেলেটার হাতে দুটো রুটি ছিলো যেটা অনেক শক্ত করে ধরে রেখেছিলো,
.
–আমাকে মারবেন না। আমি আর চুরি করবো না।(ছেলেটা)
.
–নাম কি তোমার?(আমি)
.
–আমার নাম আইরো।(আইরো)
.
–চুরি করেছো কেনো?(আমি)
.
–আমার ছোট বোন তিন দিন হলো কিছুই খাই নি। তাই আমাকে চুরি করতে হয়েছে।(আইরো)
.
–ও। রুটি দুটো তো ময়লা হয়ে গেছে। কি করবে? এটাই কি তোমার বোনকে খেতে দিবে?(আমি)
.
–তাছাড়া আর কি করবো। এটা না দিলে সে না খেয়ে মারা যাবে।(আইরো)
.
–তার থেকে তুমি কিছু টাকা নাও আমার থেকে। এবং এটা দিয়ে কিছু কিনে তোমার বোনকে এবং নিজে খেয়ো।(আমি)
.
–কিন্তু?(আইরো)
.
–কোনো কিন্তু নই।(আমি)
।।।
।।।
আমাকে ভয় পেয়ে ছেলেটা আমার থেকে কিছু অর্থ নিয়ে নিলো।
.
–দূর এখন ব্লাক স্মিথকে পাবো কোথায় বুঝতে পারছি না?(আমি ফিসফিসিয়ে বললাম)
.
–আপনি ব্লাক স্মিথকে খুজছেন?(আইরো)
.
–হ্যা। তুমি জানো তাকে?(আমি)
.
–এই রাজ্যের অধিকাংশ লোকই তার সম্পর্কে জানে। তবে কেউ তার চেহারা সম্পর্কে জানে না।(আইরো)
.
–কিন্তু কেউই তো বললো না তার সম্পর্কে কিছু।(আমি)
.
–সেটার কারন হলো সবাই ব্লাক স্মিথের সম্পর্কে গোপন রাখতে চাই সবকিছু।(আইরো)
.
–ওওও। তাহলে তুমি কি জানো তার সম্পর্কে।(আমি)
.
–শোনা যাচ্ছে সে একশো এক নং শহরে রয়েছে। সেখানে ব্লাক মার্কেট রয়েছে। শহরটা অনেক ঘনবসতী সম্পূর্ন, তাই কেউ এখনো খুজে বের করতে পারে নি তাকে।(আইরো)
.
–ওওওও। ধন্যবাদ তোমাকে।(আমি)
.
–আমি আপনার আর কোনো সাহায্যে আসতে পারলে বলবেন। আপনি আমার জীবন বাচিয়েছেন, আমি আমার জীবন দিয়ে সব কিছু করতে রাজি।(আইরো)
.
–তুমি তোমার বোনের খেয়াল রেখো ঠিকমতো তাহলেই হবে।(আমি)
.
–ঠিক আছে।(আইবো)
।।।
।।।
আমি আইবোর থেকে সরে আসলাম। অনেকটা গুরুত্বপূর্ন তথ্য পেয়ে গেলাম। যদিও সবাই ব্লাক স্মিথের সম্পর্কে জানে, কিন্তু কেউ আমাদের বললো না তাহলে। জানি না কেনো। হয়তো তার সম্পর্কে সব কিছু গোপনই রাখতে চাই। আমাকে এখন যাইতে হবে একশো এক নং শহরে। সেখানে গিয়ে খুজতে হবে ব্লাক স্মিথ কে।
।।।
।।।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো গলিটা পার হওয়ার পরই আবার সেই হুড পরা মেয়েটাকে দেখতে পেলাম যেটা কিনা জেসি। বুঝতে পারছি না ও এখানে কি করছে। কিন্তু আমার ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করলে ঠিকই আমার কাছে আসবে ও। আর সেটা আমি চাই না। আমি পিছনের দিক দিয়ে বের হয়ে গেলাম। জেসিকে অনেক কিছু বলার ছিলো। কিন্তু আপাতোতো এটা ভালো সময় না। এখন আমাকে ব্লাক স্মিথকে খুজতে হবে। কোনোরকম ঝামেলায় পরা যাবে না আমার।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩১
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমরা এ্যালকোর্টের ক্যাপিটাল ছেড়ে রওনা দিলাম একশো এক নং শহরের দিকে। ছোট ছেলেটার থেকে জেনেছি একশো এক নং শহরের মধ্যে অনেক বিশাল একটা কালো বাজার রয়েছে। যেখানে অনেক মূল্যবান জিনিস খুব কম দামেই পাওয়া যায়। আমার আপাতোতো কোনো জিনিসের উপরে আগ্রহ নেই। আমার শুধু ব্লাক স্মিথকে খুজতে হবে। কিন্তু সেটা অনেক ঝামেলার হবে। আমি ছোট বাচ্চাটার সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম কেউ ব্লাক স্মিথের ব্যাপারে জানলেও সেটা কাউকে তারা জানাবে না। হয়তো ব্লাক স্মিথের সুরক্ষার জন্যই। যাইহোক, আমরা সবাই রওনা দিয়েছি একশো এক নং শহরের দিকে। ছোট একটা কালো ঘোড়ার যানে আমরা চড়ে যাচ্ছি। এখানে হিমরারের মতো আধুনিক যান নেই। তাই আমাদেরকে সাধারন যানে করেই যেতে হচ্ছে। কতক্ষন লাগবে পৌছাতে সেটা বলতে পারছি না। তবে রাত হয়ে গেছে।
।।।
।।।
পরের দিন সকালের দিকে আমরা পৌছালাম একশো এক নং শহরে। যদিও উন্নত যান থাকলে এখানে আসতে বেশী ক্ষন সময় লাগতো না। তবে ঘোড়ার যানে সময় একটু বেশীই প্রয়োজন হলো। আমি বেশী সময় নষ্ট করলাম না। সোজা কালো বাজারে ঢুকে পরলাম আমি। আমার সাথে প্রিন্সেস এলিনা আছে। আর লুসি, হ্যারি, এবং লুসানা আলাদা হয়ে খুজতে বের হয়েছে। আর লুক একাই একদিকে যাচ্ছে। মোটকথা আমরা তিনটা দলে বিভক্ত হয়ে কালো বাজারের মধ্যে ঢুকে পরেছি। এটা পুরো এ্যালকোর্টের মধ্যে নামকরা ব্লাক মার্কেট। এখানে সব কিছুই পাওয়া যায়। সোনা, রূপা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মারাত্মক অস্ত্র যেগুলো এখানে পাওয়া যায়। এখানে যা কিছুই আনা হয় তার পঁচানব্বই শতাংশই চুরি করা জিনিস। রাজ্যে ছোট খাটো অনেক ব্লাক মার্কেট থাকলেও এটাই সবচেয়ে বড় এবং নামকড়া। আমাদের ব্লাক মার্কেটে ঘুরতে অনেক ভালোই লাগছে। এখানে প্রতিটা জিনিসই অনেক কাজের। এগুলো নিয়ে রাখলে পরে কাজে দিতো। তবে এগুলোর দিকে নজর দিলে আমার হবে না। আমাকে ব্লাক স্মিথকে খুজতে হবে। সমস্যা একটাই, কোনোদিনও তাকে আমি কিংবা আমার সাথের কেউ দেখে নি। তাছাড়া এখানে তাকে কেউ চিনলেও আমাকে কেউ বলবে না। হয়তো ব্লাক স্মিথের জীবন ঝুকির পথে। তাইতো কেউ তার সম্পর্কে কিছু বলছে না। যদিও ঔ ছেলেটাও বলতো না যদি তাকে আমি সাহায্য না করতাম। যাইহোক আপাতোতো কি করা যায় সেটা দেখি। আমি প্রিন্সেস এর সাথে সাথে হেটে যাচ্ছি। আমি এদিক ওদিক ডয়ারফসদের খুজছি শুধু। প্রিন্সেস আমাকে কিছু বলতে চাচ্ছে, কিন্তু পারছে না। আমি তার দিকে লক্ষ না করে সামনের একটা গলির দিকে চলে গেলাম। এখানের সব জায়গায় শুধু দোকান। অস্ত্র, মেডিসিন, খাবার সব কিছুর দোকান এক এক করে রয়েছে। এক রকম দোকানেই ভরা সব। এক এক জায়গায় একরকম জিনিস পাওয়া যায়। আবার দাম ও এক এক দোকানে এক এক রকম। এখানে লোকজনের অনেক ভীর। যেহেতু ক্যাপিটালের থেকে সবচেয়ে কম দামে এখানে সব কিছু পাওয়া যায়, তাই এখান দিয়ে লোকজনের সংখ্যাও বেশী। আমাদের এতোক্ষন হাটতে সমস্যা না হলেও এখন ভিরের কারনে হাটতে সমস্যা হচ্ছে।
।।।
।।।
কিছুক্ষন হাটার পরে যেটা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না সেটাই দেখতে পেলান। জেসিকে আবারো দেখতে পেলাম। যদিও জেসি কিনা আমি সিওর না। কিন্তু সেদিনের ঔ একই রকমের হুড পরা মেয়েকে দেখলাম যেটা ক্যাপিটালেও দেখেছিলাম। আমি প্রিন্সেসকে নিয়ে একটু পিছিয়ে গেলাম। প্রিন্সেস তার ম্যাজিকাল ডিভাইস একটা হ্যারির কাছে এবং একটা লুকের কাছে দিয়েছে। এটা দিয়ে প্রিন্সেস শুধু অন্যের কথা দূর থেকে শুনতে না বরং তাদের সাথে কথাও বলতে পারে। অনেকটা আগের দুনিয়ার পৃথিবীর মোবাইল ফোনের মতো। কিন্তু এটার জন্য কোনো কিছু কানে দিতে হবে না। শুধু শরীরের যে কোনো একটা অংশে ছোট একটা চিপ এর মতো জিনিস লাগাতে হয়, আর যার শরীরে লাগানো হয় তার সমস্ত কথা প্রিন্সেস নিজে শুনতে পারবে। প্রিন্সেস সেটা লুক এবং হ্যারির হাতে একটা করে দিয়েছে। যার কারনে আমরা এখন হ্যারি এবং লুকের সাথে সরাসরি কথা বলতে পারবো। প্রিন্সেস অন্যের কথা শুনতে এবং তাদের সাথে কথা বলতেও পারে এটার মাধ্যমে। এক দিক দিয়ে বলা যায় এটা ম্যাজিকাল মোবাইল ফোন। হ্যারির সাথে কথা বললাম আমি।
.
–কিছু কি পেয়েছো তুমি?(আমি)
.
–না আমরা যেখানে এসেছি এদিকে কোনো ডয়ারফসই নেই। আর এদিকের কেউই ব্লাক স্মিথ সম্পর্কে জানে না।(হ্যারি)
.
–ওওও। আচ্ছা তাহলে আরেকটু খুজে দেখো।(আমি)
.
–ওকে ঠিক আছে।(হ্যারি)
।।।
।।।
আমি জানি বিষয়টা বিরক্তকর। তারপরও আমাকে করতে হচ্ছে। আমি যত তারাতারি সম্ভব শক্তিশালী হতে চাই। এই দুনিয়াতে শক্তিশালী না হলে দাম নেই। অবশ্য জন্ম থেকে শক্তিশালী থাকা বিষয়টা একদম বোরিং। একদম জিরো থেকে হিরো হওয়ার মজাটাই বেশী। তাই আগের দুনিয়া থেকে আমি এটাকে বেশী পছন্দ করা শুরু করেছি। আমি লুকের সাথে যেগাযোগ করলাম।
.
–জেনারেল লুক কিছু কি পেয়েছেন?(আমি)
.
–হ্যা আমি। ব্লাক স্মিথের ঠিকানা পেয়ে গেছি।(লুক)
.
–এতো তারাতারি কিভাবে পেয়ে গেলেন?(আমি)
.
–সেটা সামনা সামনি বলি।(লুক)
।।।
।।।
লুকের বলা জায়গায় আমি চলে গেলাম। সেখানে হ্যারিরাও এসেছে। লুক একটা দোকানে দাড়িয়ে আছে। সেই দোকানের অবস্থা টাইট। শুধু সেটা না আশেপাশের দুটো দোকানও ভেঙে গেছে। লোকজন সেগুলো ঠিক করা নিয়ে ব্যস্ত। আমি বুঝতে পারলাম এখানে লড়াই হয়েছে।
.
–এখানে ভাঙচুর হয়েছে নাকি?(আমি)
.
–হ্যা কথা বের করার জন্য তো ভাঙচুর করতেই হয়।(লুক)
.
–তাহলে এই কাজ আপনার?(আমি)
.
–হ্যা। কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তারা ব্লাক স্মিথের কথা শুনে প্রথমে একে অপরের দিকে তাকায়, যার ফলে আমি বুঝতে পারি যে তারা তার সম্পর্কে ঠিকই জানে।(লুক)
.
–ভালোই তো মাথা খাটিয়েছেন।(আমি)
.
–তাদের দুটো ঘুষি দেওয়ার পরই মুখ খুলে। ব্লাক স্মিথ এই গলির ডানপাশেরটাই একটা দোকানের নিচে থাকে। যেখান থেকে একটা দোকানের জন্য সাধারন ম্যাজিকাল অস্ত্র বানানোর কাজ করে। তার সম্পর্কে গোপন রাখা রাজার আদেশ। তাই কেউ তার সম্পর্কে বলে না।(লুক)
.
–ওওও তাহলে তারাতারি যাওয়া যাক। যেহেতু এখানে লড়াই হয়েছে, তাই রাজার সেনা চলে আসবে।(আমি)
।।।
।।।
আমরা এগিয়ে গেলাম। পাশের গলির দোকানের ভিতর গেলাম। তবে সেখানের দোকানের অবস্থাও টাইট।
.
–আপনি এখানেও ভাঙচুর করেছেন?(আমি)
.
–না আমি তো এখানে আসি নি।(লুক)
.
–তাহলে কে করলো?(আমি)
।।।
।।।
আমি প্রথমে এই দোকানকে লক্ষ করলাম। কিন্তু একটু ভালো করে লক্ষ করে দেখলাম এই গলির সব গুলো লোক মাটিতে পরে আছে। আমি হাত দিয়ে বুঝতে পারলাম সবাই বেহুশ হয়ে আছে। বেশী সময় নষ্ট করলাম না। লুক বাইরেই রইল আমাদের সুরক্ষার জন্য। আমরা ভিতরে ঢুকলাম। দোকানের পিছনের দিক দিয়ে একটা সিড়ি চলে যাচ্ছে নিচের দিকে। আমরা একটা সেটা দিয়ে নিচে যাচ্ছি। আমি ছোট খাটো একটা লাইট ম্যাজিক এর স্পেল বানালাম। যেটা একদম দিনের মতো আলো করে দিলো। আমরা সিড়ি দিয়ে নেমে যাচ্ছি নিচে। নিচের দিকে অনেক বড় একটা রুম। যেখানে দেওয়াল ভরাই তলোয়ার রয়েছে। একদম এক সাইডের তলোয়ারগুলো দেওয়াল থেকে নিচে পরে আছে। আর সেখানেই একপাশে একটা ডয়ারফস এর রক্তাক্ত শরীর নিচে পরে আছে। আমি দৌড়ে গেলাম তার কাছে।
।।।
।।।
পেটের মধ্যে দুটো গুরুতর আঘাত লেগেছে লোকটার। লোকটা ব্লাক স্মিথ কিনা আমি সিওর না। তবে বাচাতে পারলেই হয়তো জানতে পারবো। আমি আমার হাত তার ক্ষতের উপরে রাখলাম। এবং তাকে হিল করতে লাগলাম। তার ক্ষত মারাত্মক হওয়ায়, আমার ক্ষমতা দিয়ে কাজ হচ্ছে না শুধু। লুসি এবং লুসানাও হিল করতে লাগলো তাকে। পুরো বিশ মিনিট হিল করার পর তার জ্ঞান ফিরে আসলো। অনেকটা রক্ত বের হওয়ার ফলে তার মাথা ঘুরছে। আমি উচু করে তাকে একটা টেবিলে বসিয়ে দিলাম। কিছুটা পানি পান করতে দিলাম। যদিও সাইজে একটা মানুষের থেকে অর্ধেক হয় ডয়ারফস। তারপরও একটা মানুষের চেয়ে বেশী তাদের শরীরের ওজন হয়। আমি ঠিক বলতে পারবো না তার ওজন কতো হবে। কিন্তু তাকে উচু করতে গিয়ে আমার দম বের হয়ে গিয়েছিলো।
।।।
।।।
.
–তোমরা কারা? তোমাদের তো আগে কখনো দেখি নি।(ডয়ারফস)
.
–আমরা এখানে ব্লাক স্মিথের খোজে এসেছিলাম।(আনি)
.
–যদি ব্লাক সোর্ডের জন্য এসে থাকো তাহলে সেটা এখন আর আমার কাছে নেই।(ডয়ারফস)
.
–তাহলে আপনি ব্লাক স্মিথ।(আমি)
.
–হ্যা। একটু আগে একটা ডেভিল আমাকে আক্রমন করে ব্লাক সোর্ড নিয়ে গিয়েছে।(ব্লাক স্মিথ)
.
–আমরা এখানে ব্লাক সোর্ডের জন্য আসে নি। বরং আমি এখানে এসেছিলাম, আমার পুরাতন একটা তলোয়ার নতুন করতে।(আমি তলোয়ারটা বের করে হাতে দিলাম ব্লাক স্মিথের)
.
–সাধারন সময় হলে আমি কখনো এই তলোয়ার ঠিক করতে রাজি হতাম না, কারন এটার মধ্যে মারাত্মক ক্ষমতা রয়েছে, যেটা ব্লাক সোর্ডের মতোই ভয়ানক। তবে আমার জীবন বাচানোর জন্য আমি এইটুকু করতেই পারি।(ব্লাক স্মিথ)
।।
।।
ব্লাক স্মিথ আমার হাত থেকে এক্সোনিয়ার হাতল নিয়ে নিলো। এবং সেটার ভাঙা ব্লেড আগুনে ঢুবিয়ে দিলো। বাইরে থেকে সেটার ভিতরে কিছু ম্যাজিকাল পাউডার নিক্ষেপ করলো। এবং কয়েকটা স্পেলও ব্যবহার করলো। আমি তলোয়ার বানানো সম্পর্কে কিছু জানি না, তাই কি করছে সেটা আমি বুঝতে পারছি না। তবে অবাক হয়ে দেখছি আমি তার কাজ৷
।।।
।।।
পুরো দুই ঘন্টা সময় পর আগুন থেকে বের করলো এবং একটা লোহার উপরে রেখে বারি দিতে লাগলো। আগুনের ভিতরে ভাঙা ব্লেড ব্লাক স্মিথের স্পেলের ফলে আবার নতুন হয়ে গেছে। যদিও এটার ব্লেডের তেমন ধার ছিলো না। তাই ব্লাক স্মিথ সেটাকে ম্যাজিকাল একটা হাতুড়ি দিয়ে পিটাচ্ছে। প্রতিটা বাড়িতে এক একটা ফুলকি বের হচ্ছে আগুনের। আর সেটা হাওয়ার মধ্যেই একটা করে ডিমেনশন কাট দিচ্ছে। যদিও এটা আমার আর ব্লাক স্মিথের নজরেই পরছে। বাকি সবাই চেয়ারের উপর বসে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পরেছে। এতোক্ষনে লুকের অবস্থা সম্পর্কে আমি জানি না। তবে বাইরে সমস্যা হচ্ছে সেটা আমি নিশ্চিত। তবে এই কাজ তারাতারি করা যাবে না সেটাও আমি জানি।
।।।
।।।
পুরো এক ঘন্টা পিটানোর পরে এক্সোনিয়ার কাজ শেষ হয়ে গেলো। একদম আগের মতোই লাগছে এটা। আর এর ম্যাজিক পাওয়ার আমি আবার দেখতে পেলাম। এতোক্ষন ম্যাজিক পাওয়ারহীন হয়ে ছিলো। তবে ব্লাক স্মিথের ম্যাজিকের ফলে আবার জীবিত হয়ে গেছে। ব্লাক স্মিথের সাথে অনেকটা কথা হয়েছে এক্সোনিয়া ঠিক করার সময়। সেটা শুনে আমি অবাক হয়ে গেছি। আপাতোতো আমি সবাইকে জাগিয়ে নিলাম। এবং এখানে থেকে বের হয়ে গেলাম।
।।।
।।।
বাইরে বের হয়ে যেটা দেখতে পেলাম সেটার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। লুক আশেপাশের সমস্ত জিনিস ভেঙে ফেলেছে শুধু আমরা যেখানে ছিলাম সেটা বাদে। অনেকের রক্তাক্ত শরীর পরে আছে মাটিতে। তাদের দেখে বুঝলাম তারা এ্যালকোর্টের সেনা। এখানে লড়াই এর খবর পেয়ে এসেছিলো। কিন্তু কারো চেহারা বোঝা যাচ্ছে না মুখের রক্তের কারনে। এক একটা ঘুষিতে সবার মুখে রক্তের বন্যা বইছে। এখানে পরিস্থিতি মোটেও সুবিধার না। আরো কিছুক্ষন থাকলে পুরো রাজ্য আমাদের পিছে পরবে। আর তখন লুক হয়তো পুরো রাজ্যের সেনাকে ঘুষি মারতে যাবে। এবার প্রিন্সেস এলিনা আমাকে জরিয়ে ধরলো৷ এবং উড়তে শুরু করলো। আমার কথা ছিলো ব্লাক স্মিথকে খোজার পর আবার এ্যারসাকে ফেরত যেতে হবে আমাকে। তাই আপাতোতো সেটাই করছি আমি। এ্যারসাকে আমাকে যেতে হবে আপাতোতো সময়ের জন্য। কারন এ্যারসাকই আমার জন্য কিছুটা সময়ের জন্য নিরাপদ হবে। তাছাড়া আমি ব্লাক স্মিথের থেকে যেটা শুনেছি।
।
।
প্রথম ব্লাক স্মিথ যে কিনা পনেরশ বছর আগে একটা তলোয়ারের ভাঙা ব্লেড খুজে পায় একটা গুহার মাঝে। যে ব্লেডের রং থাকে কালো। ব্লেডটার মাঝে একদম হালকা ম্যাজিক পাওয়ার থাকে, সেই গুহার মাঝেই ছিলো ব্লাক ড্রাগন। যাকে প্রথম ব্লাক স্মিথ মুক্ত করে। যার ফলে তার হাতে একটা ছোট ছুড়ি চলে আসে যেটার মাঝে ইগড্রাসিলের মতো ঔ ব্লাক ড্রাগনের ক্ষমতা ছিলো। যেহেতু ছোট ছুড়ি দিয়ে লড়াইয়ে বেশী সুবিধা হয় না, তাই প্রথম ব্লাক স্মিথ সেই ছুড়ি উঠিয়ে রেখেছিলো। ডয়ারফসরা লড়াই করে না। আর সে ছাড়া আর কেউ ঔ ছুড়ি কেউ উঠাতেই পারতো না বলে সেটাকে বিক্রীও করতে পারে নি সে। তাই একটা সিন্দুক এর মাঝে সেটা বন্ধী করে রাখে। সেই সাথে সিন্দুকের মাঝে গুহার মধ্যে পাওয়া সেই ভাঙা কালো ব্লেড রেখে দেয়। কিন্তু কয়েকশ বছর পর যখন পঞ্চম ব্লাক স্মিথ সেই সিন্দুক থেকে ব্লাক ড্রাগনের সেই ছুড়ি এবং সেই ভাঙা ব্লেডের টুকরো পাই। ছুড়িটা সে বিক্রী করতে চাইলেও সে ছাড়া কেউ উঠাতে পারতো না। একদিন সে চিন্তা করলো ছুড়িটাকে যদি একটা পাতলা তলোয়ারে রূপ দিতে পারে সে, তাহলে হয়তো অন্য কেউ উঠাতে পারবে। আর না উঠাতে পারলেও নিজের কাছে রেখে দিবে সেটা।
।।।
।।।
তাই সে ছুড়িটাকে সেই ভাঙা কালো ব্লেডের সংমিশ্রনে বিশাল একটা ছুড়ি বানিয়ে ফেলে। যেটার রং বানানোর পর থেকেই একদম গাঢো কালো। রঙের দিক দিয়ে তার নাম রাখে সে দ্যা ব্লাক সোর্ড। তলোয়ারটা বানানোর সময় সে খুশি ছিলো। কিন্তু বানানোর পরে সে বুঝতে পারলো অনেক বড় ভুল করেছে সে। তলোয়ারটা নিয়ে প্রথম প্রাকটিস করার সময় সেটা তার ছেলের শরীরে স্পর্শ করে শুধু। সাথে সাথে তার ছেলের পুরো শরীর তলোয়ারের মাঝে চলে যায়। এভাবে আস্তে আস্তে সে যাকে তলোয়ার দিয়ে স্পর্শ করে সেই তলোয়ারের মধ্যে ঢুকে যায়। তলোয়ার সবাইকে এবজোর্ব করে নেই, তাকে যে স্পর্শ করে। পঞ্চম ব্লাক স্মিথ বুঝতে পারে সে ভয়ানক একটা জিনিস বানিয়েছে। তাই সেটাকে একটা সিন্দুকে ভরে গোপন একটা জায়গায় লুকিয়ে ফেলে সে। আর নিজে আত্যহত্যা করে ফেলে। ব্লাক স্মিথ হলে একজন ডয়ারফস আগের সকল ব্লাক স্মিথদের স্মৃতি মনে রাখতে পারে। তাই পঞ্চম ব্লাক স্মিথের পরে সকল ব্লাক স্মিথ এক এক করে সবাই সেই তলোয়ারের সম্পর্কে ব্লাক স্মিথ হওয়ার পর থেকেই জেনেছে। ব্লাক সোর্ডকে সুরক্ষা রাখার দায়িত্বও তাদের ছিলো। তাই তাদের সবাইকে গোপন ভাবে থাকতে হয়েছে। যদিও বর্তমান ব্লাক স্মিথের আগের ব্লাক স্মিথকে ডেভিল কিং নিজে মেরে ফেলেছি। আর তখন থেকে ডেভিল কিং ব্লাক সোর্ডের পিছনেই পরে আছে।
।।।
।।।
আর আজকে ডেভিল কিং সেটার সন্ধান পেয়ে গেছে। যদিও ব্লাক স্মিথের কাছে ব্লাক সোর্ড ছিলো না। তবে সে জানতো সেটা কোথায়। আর যে ডেভিলটা এসেছিলো সেটার সন্ধানে, সে মাইন্ড রিডিং স্পেল ব্যবহার করে ব্লাক স্মিথের মনের সকল কথা জানতে পেরেছে। এর ফলে সিন্দুকের জায়গাও সে জেনে যায়। আর ব্লাক স্মিথকে আহত করে সে চলে যায় সেখানে। এখন অবস্থা তেমন ভালো না। বিষয়টা ব্লাক স্মিথ কাউকে বলে নি। তার রাজ্য শুধু জানতো ব্লাক স্মিথের কাজে একটা ভয়ানক অস্ত্র ছিলো, যেটা অন্য কেউ জানতে পারলে পুরো একটা রাজ্য ধ্বংস করে দিতে পারবে। এজন্য পুরো এ্যালকোর্ট রাজ্য ব্লাক স্মিথের ব্যাপারে সবকিছু গোপন রেখেছিলো। তবে আমি বুঝতে পারলাম না আমাদের আগে কোন ডেভিল ব্লাক স্মিথের কাছে আগে পৌছালে। আমার জেসির কথা মনে হচ্ছে। তারপরও সিওর বলতে পারি না। জেসি আগে বলেছিলো ও এতো সুন্দর একটা দুনিয়া বানাবে, যেটা বানিয়েছেও। তাহলে সেটার মধ্যে ও ডেভিল কিং কে ভয়ানক একটা অস্ত্র কেনো ধরিয়ে দিবে? ব্লাক স্মিথের বিবরন শুনে আমি বুঝতে পেরেছি ব্লাক সোর্ডের ক্ষমতা সব কিছু এবজোর্ব করা। ম্যাজিক পাওয়ার থেকে শুরু করে জীবিত বস্তু, সব কিছুই সেটা এবজোর্ব করে নিতে পারে। আর সেটা জন্য তাকে আল্টিমেট অস্ত্রও বলা হয়ে থাকে। আমি জানি না সেটার বিরুদ্ধে কোনো কিছু আছে কিনা। তবে একটা ড্রাগন এবং একটা আননোন ব্লেডের সংমিশ্রণে তৈরী ঔটা। ড্রাগনের ক্ষমতা তো হবে না। তবে ঔ ব্লেডটা হয়তো এক্সোনিয়ার মতোই কোনো আগের দুনিয়ার ব্লেড, যেটা অনেক শক্তিশালী ছিলো। দেখা যাক কি হয়। আমি এ্যারসাকে ফিরে সোজা এক্সোনিয়ার মাধ্যমে লিম্বো ডাইমেনশনে পা দিলাম। পুরো লিম্বো ডাইমেনশন ঠিক আগের মতোই আছে। শুধু সমস্যা হলো কিছুটা নতুন কিছু এড হয়েছে এখানে। লিম্বো ডাইমেনশনে আমি আগের দুনিয়ায় এতো বড় প্যালেসে দেখি নি। প্যালেসের উপরে বিশাল করে লেখা, “এজগার্ডে স্বাগতম”।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩২
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি লিম্বো ডাইমেনশনে এসে এতো বড় শক হবো সেটা বুঝতেই পারি নি। আমার কৌতহল বেরে যাওয়ায় আমি বিশাল প্যালেসটার মধ্যে প্রবেশ করলাম। বাইরে তো বড় করে এজগার্ডের সাইনবোর্ড লাগানো আছে, তবে জায়গাটার সম্পর্কে আমার কৌতহল বারছে শুধু। ভিতরে আমি কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। পুরো প্যালেসটা একদম ভুতুরে জায়গা হয়ে আছে। যার মধ্যে কেউ নেই। প্যালেসের বাইরে থেকে সব কিছু নতুন মনে হলেও ভিতর থেকে দেখতে গেলে একদম নোংরা একটা জায়গা। কত বছর যাবৎ পরিস্কার করা হয় না এটা তার ঠিক নেই। আমার ধারনা যেটা সেটা হলো নতুন দুনিয়া তৈরীর আগেই জায়গা এটা। কারন এই প্যালেসের মধ্যে সব কিছুই আমি আগের দুনিয়ার দেখতে পাচ্ছি। অনেক যন্ত্রপাতি রয়েছে যেগুলো বিজ্ঞানের সাহায্যে চলে। আর এই নতুন দুনিয়ায় বিজ্ঞানের কোনো অস্তিত্ব নেই। আমি অবাক হলাম সব জিনিসই একদম নতুনের মতো। তবে সেগুলো এলোমেলো রাখার ফলে নোংরা লাগছে তাদের। এদের দেখে মনে হবে আজই তৈরী হয়েছে এগুলো৷ লিম্বো ডাইমেনশনের একটাই সুবিধা। এখানে সময়ের কোনো দাম নেই। এখানে ঢুকে গেলে সময় সব কিছুর জন্য থেমে যাবে। এমনকি একটা প্রানী এখানে ঢুকতে পারলে চিরজীবন বেঁচে থাকতে পারবে। তবে সমস্যা একটাই লিম্বো ডাইমোনশনে শ্বাস নেওয়ার অক্সিজেন পাওয়া যায় না। কোনো মানুষের এখানে থাকা সম্ভব হতো না আগের দুনিয়াতে। শুধু যারা ম্যাজিক দিয়ে ব্যারিয়ার তৈরী করতে পারতো তারাই কিছুক্ষনের জন্য লিম্বো ডাইমেনশনে থাকতে পারো। এমনকি আমি নিজে ডেভিল কিং হওয়ার পরও আমার লিম্বো ডাইমেনশনে বেশীক্ষন থাকতে সমস্যা হতো। তবে এই জায়গাটা অন্যরকম। প্যালেসের বাইরে আমার ম্যাজিক পাওয়ার দিয়ে একটা ব্যারিয়ারের প্রয়োজন হয়েছিলো শ্বাস নেওয়ার জন্য। তবে প্যালেসের ভিতরে সেটার কোনো সমস্যা হচ্ছে। প্যালেসের ভিতরে কি রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে এখানে আমার একদম আগের পৃথিবীতে থাকার মতো ফিলিংস আসছে। যেখানের পরিবেশ অনেক শান্ত এবং পরিস্কার।
।।।
।।।
আমি আস্তে আস্তে আগাতে লাগলাম। পুরো প্যালেস এক এক করে ঘুরে দেখতে লাগলাম। এখন পর্যন্ত আমি কাউকে দেখতে পাই নি এখানে। তবে আমার মনে হচ্ছে এই প্যালেসের মধ্যে কেউ আছে। কারন আমি ইলিকট্রিসিটি দেখতে পেয়েছি। কিছু বাল্ব জ্বলছে বিদ্যুৎ এর মাধ্যমে। এবং একটা বিশাল রুমে শুধু খাবার আর খাবার পরে আছে। খাবার গুলো বিভিন্ন জায়গার। বেশীর ভাগ রয়েছে আগের দুনিয়ার পৃথিবীর হালকা খাবার, বিভিন্ন ধরনের চিপস, চকলেট, কোল ড্রিঙ্কস। এগুলোতেই রুমে ভরা। পাশে একটা রুমে নেশাজাতক দ্রব্যে ভরা। বিশেষ করে মদ্য পন্য। আমি আরো এক্সপ্লোর করতে লাগলাম। সাথে দুই প্যাকেট চিপস এর প্যাকেট ও উঠিয়ে নিয়েছি আমি। আর হাটতে হাটতে চাবাচ্ছি। অনেক ভালোই লাগছে। প্রায় কয়েক লক্ষ হাজার বছর পর আমি চিপসের স্বাদ পেলাম। অবশ্য আমার জন্য সেটা হয়তো ষোলো কিংবা সতের বছর হবে। দুনিয়ার সময় নিয়ে কনফিউশনে পরে যেতাম যদি আমার স্মৃতি না সিল করা থাকতো। প্রথম থেকেই আমি আগের জন্মের কাহিনী মনে করলে বেশী কনফিউশনে থাকতাম এবং কোনো কিছু সহজে নিতে পারতাম না। কিন্তু একটা জিনিস মানতে হবে, আগের দুনিয়ায় আমার মেমোরী এতো সার্প থাকলে অনেকটা ভালো হবে। একটা জিনিস একবার পড়ে মুখস্ত করার বিষয়টা অনেক ভালোই। আমি হাটতে হাটতে শুধু শুধু চিপসের প্যাকেটের লেখা পড়ে ফেললাম। যেটা রোবটের মতো আমার মেমোরীতে সেভ হয়ে গেলো। আমি জানি না আমার মাথা কতটুকু জ্ঞান ধরে রাখতে পারবে। যদি আমি এই দুনিয়ার সমস্ত জ্ঞান আমার মাথায় ঢুকানোর চেষ্টা করি, তাহলে কি কিছু হবে আমার? আমার মনে হয় সেটা করলে আমি গাজনি হয়ে যাবো। বিজ্ঞানের দুনিয়াতেও সব কিছুর একটা লিমিট ছিলো। মানুষেরও একটা লিমিট ছিলো। হয়তো এই দুনিয়াতেও আমাদের একটা লিমিট আছে। যেটার বাইরে আমরা যেতে পারবো না।
।।।
।।।
হাটতে হাটতে অনেকটা উপরে চলে এসেছি। হাপিয়ে যাচ্ছি আমি। কারন এখানে গ্রাভিটি অনেক বেশী। নিচের দিকের টান অনেক বেশী হওয়ার ফলে হাটাচলায় বেশী সমস্যা হচ্ছে। যদিও আগের দুনিয়ায় এন্জেলরা গ্রাভিটি স্পেল ব্যবহার করতে পারতো, তবে সেটা সম্পর্কে আমার কোনো জ্ঞান নেই। আমি আগের দুনিয়ার এন্জেলদের স্পেল সম্পর্কে খুব কম জানি। এমনকি এই দুনিয়ার এন্জেলদের সম্পর্কেও কম জানি। আমি জেসির সময়ের স্পেল ব্যবহার করা দেখেই নিজে সময়ের স্পেল ব্যবহার করা শিখেছি। তবে তাছাড়া কোনো ভয়ানক স্পেল সম্পর্কে আমার জানা নেই। কিছুক্ষন কষ্ট হলেও আমি পরে বুঝতে পারলাম আমার কাছে ভ্যাম্পায়ারের ক্ষমতা রয়েছে। ভ্যাম্পায়ার যে অনেকটা ভয়ানক হয় সেটা তারা নিজেও জানে না। অবশ্য তারা নিজের ক্ষমতা কখনো পুরোপুরি ভাবে ব্যবহার করতে পারে না। শুধু কিছু সংখ্যক রয়েছে যারা তাদের ক্ষমতা পুরোপুরিভাবে ব্যবহার করতে পেরেছে, যাদের ভ্যাম্পায়ার গড বলা হতো আগের দুনিয়ায়। অবশ্য সেটা পৃথিবীতে একটা কাল্পনিক কাহিনী ছিলো। তারপরও ধারনা করা হতো সিলভার লোটাস রাজ্যের ভ্যাম্পায়ারদের চেয়ে শক্তিশালী ভ্যাম্পায়াররা পৃথিবীতে মানুষের সাথেই বাস করতো। যারা মানুষের ব্লাড খেয়ে খেয়ে এরকম ক্ষমতা অর্জন করেছিলো যে তারা তখনকার ডেভিল কিং এর সাথেও টক্কর দিতে পারতো। এসব জিনিস ধারনা করা হলেও কিছুটা সত্য আমি সেটা বুঝতে পেরেছিলাম। কারন মনস্টার ওয়ার্ল্ডেই অনেক দশজন মনস্টার ছিলো যাদের ক্ষমতা একত্রে করলে তারা ডেভিল কিং কে ও হারাতে পারতো। আমি একটু ভিতরে এবং উপরে গেলাম।
।।।
।।।
আমি অনেক চেষ্টার পরে আমার ভ্যাম্পায়ার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারলাম। যেটাকে বলে গ্রাভিটি কন্ট্রোল। এটার মাধ্যমে আশেপাশের সকল গ্রাভিটি কন্ট্রোল করা যায়। যদিও এটা উড়াও কাছে কিছুটা ব্যবহার করে ভ্যাম্পায়াররা। কিন্তু আমি এটাকে এক্সট্রিমে নিয়ে গিয়েছি। আমার চারপাশের গ্রাভিটির সরে গেছে, যেটার কারনে আমি সহজে হাটতে পারছি। একদম হাটতে হাটতে আমি উপরে চলে এসেছি। আর আমার চিপসও শেষ হয়ে গেছে। তবে আসার পথে আমি একটা রুমের মধ্যে কিছু চুইগাম পায়। যেটার ডেট অবশ্য ছিলো না। তবে চাবাতে আগের মতোই লাগছিলো। বড় একটা বল ফুলিয়ে ফুলিয়ে আমি একদম শেষ রুমের দিকে চলে এসেছি। যেটা এই প্যালেসের সবচেয়ে উপরে রয়েছে। আমি ভিতর থেকে হাসাহাসির শব্দ শুনতে পেলাম। অনেক জোরে জোরে শব্দ শোনা যাচ্ছে। শব্দ গুলো এরকম
.
–এইবার যদি লোকি হেরে যায় তাহলে মুরগি হয়ে নাচবে ও।
.
–আমি হারবো না থর। হারবে তো তুমি এবার। তুমি যদি হারো তাহলে আমার চাবুকের একশো ঘা বাড়ি খাবে।
.
–হাহাহাহা। তোমরা দুজন এক দলেই, তাই তোমরা দুজনই এক সাথে হারবে।
.
–ড্রাকুলা এবার তোমার চাল দাও।
।।।।
।।।।
ভিতরে কি হচ্ছে সেটা আমি জানি না। তবে থর, লোকির নাম শোনাতে আমি আশ্চর্য না। কারন আমি এজগার্ডের সাইনবোর্ড দেখে এইটুকু তো নিশ্চিত ছিলাম। তবে সমস্যা হচ্ছে যে আওয়াজটা ড্রাকুলার নাম বললো। অবশ্য সেটা একদম আমার নিজের আওয়াজের মতো। আরো একটা জিনিস ড্রাকুলার নাম শুনে। যে কিনা পাঁচ ভ্যাম্পায়ার গডদের মধ্যে একজন। যাকে পুরো পৃথিবীর অনেক মানুষ ভয় পেতো কল্পনাতেই। সে এখানে কি করছে। আমি দরজা খুলে দিলাম। ফ্লোরের উপরে খাবারের বিভিন্ন জিনিস পরে আছে, সফট ড্রিঙ্কস এবং মদের বতলও পরে আছে। একপাশে বসে আছে লোকি এবং থর। আরেকপাশে বসে আছে ড্রাকুলা, যাকে আমি প্রথমবার দেখলাম। তার লাল চোখ এবং দাত দেখেই আমি বুঝতে পারলাম সে ড্রাকুলা। যদিও আগে শুধু কাল্পনিক জিনিসেই তার নাম শুনেছি। আমি মনস্টার দুনিয়ায় গিয়েও তার সম্পর্কে কিছু শুনি নি। শুধু এটুকুই জানতাম পৃথিবীতে অনেক শক্তিশালী ভ্যাম্পায়ার রয়েছে, যারা ডেভিল কিং এর সমান ছিলে শক্তিতে। তবে তারা সে মনস্টার ওয়ার্ল্ড থেকে পৃথিবীতে চলে যায় ভালোবাসার কারনে। আর পৃথিবীতেই মানুষের মাঝে বসবাস করে। যদিও এটা আগের দুনিয়ার কাহিনী।
।।।।
।।।।
ড্রাকুলার পাশে যে বসে ছিলো আমি তাকে দেখে অবাক হলাম। একদম আমার মতো দেখতে সে। শুধু তার পুরো শরীর কালো হয়ে আছে। আমি বুঝতে পারলাম সে আমার ডেভিল সত্ত্বা। কিন্তু সে এখানে কি করছে কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাকে দেখে থর বলতে লাগলো,
.
–যাক শেষ মেষ আসল জ্যাক এসেছে এখানে। আমি চিন্তাই পরেছিলাম হয়তো এই জায়গা থেকে কখনো বের হতে পারবো না।(থর)
।।।
।।।
পরিস্থিতি বুঝতে আমার সমস্যা হচ্ছে। থর, লোকি, ড্রাকুলা এবং আমার ডেভিল সত্ত্বা চারজন বসে লুডু খেলছে আর মদ্য পান করছিলো। অবশ্য আমার সত্ত্বার কিছু খেতে বা পান করতে হচ্ছিলো না। মোট কথা আমি তাদেরকে দেখে শিহরিত। সবচেয়ে বেশী শিহরত আমার ডেভিল সত্ত্বাকে দেখে। কিছুক্ষন তাদের সাথে কথা বলার পর আমার ডেভিল সত্ত্বা আমার সাথে কথা বলার জন্য চলে বাইরে আসলো।
.
–এতোদিনে তো বাকি তিনটা সত্ত্বা পেয়ে গেছো তাই না।(ডেভিল সত্ত্বা)
.
–হ্যা। এখন তোমাকেও পেয়ে গেছি।(আমি)
.
–হ্যা। তবে দুঃখের ব্যাপার হলো। আমার ক্ষমতা তোমার মাঝে যেতে পারবে না।(ডেভিল)
.
–কেনো?(আমি)
.
–আমি সঠিক করে বলতে পারছি না। তবে তোমার চার সত্ত্বাকে সিল করার সময় আমি আমার আসল শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে লিম্বো ডাইমেনশনে আটকা পরি। তবে আমার প্রধান শরীর দুনিয়াতেই থাকার কথা ছিলো।(ডেভিল সত্ত্বা)
.
–ওওওও। হয়তো আমার ব্যাগের মাঝে বইয়ের মধ্যে সিল রয়েছে।(আমি বইটা তার তাকে দেখালাম)
।।।
।।।
ডেভিল সত্ত্বা বইয়ের উপরে হাত দিয়ে বললো,
.
–এটার মাঝে আমার শরীর বন্ধী নেই। আমি কেনো প্রকারের ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করতে পারছি না।(সত্ত্বা)
.
–তাহলে কি সেটা অন্য জায়গায় সিল রয়েছে?(আমি)
.
–সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে আমার প্রধান শরীরের ক্ষমতা আমি কারো মধ্যে ফিল করছি যেটা দুনিয়াতে কোথাও এক জায়গায় ঘুরে বেরাচ্ছে।(সত্ত্বা)
.
–তুমি সিওর?(আমি)
.
–আমি প্রধান শরীরের একটা অংশ। যদি লিম্বো ডাইমেনশনে না থাকতাম তাহলে প্রধান শরীরের মধ্যেই থাকতাম। তবে দুঃখের ব্যাপার আমি জীবিত থাকতাম না আর। তবে আমি এখান থেকেই আমার ক্ষমতা যার মধ্যে তাকে ফিল করতে পারছি কিছুটা।(সত্ত্বা)
.
–সে কে?(আমি)
.
–আমি সেটা বলতে পারছি না। কারন ডাইমেনশনের অনেক দূরত্ব। এজন্য সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। এতোদিন আমি ফিল করি নি। তবে আজকেই বুঝতে পারছি।(সত্ত্বা)
.
–ওওওও। হয়তো সেটা তোমার ক্ষমতা সকল বর্তমান ডেভিল কিং এর কাছে গিয়েছে।(আমি)
.
–নতুন ডেভিল কিং কিরকম? আমাদের থেকে শক্তিশালী নাকি?(সত্ত্বা)
.
–হ্যা বলা যায়।(আমি)
.
–তুমি তোমার শরীরে শুধু আমার স্থান দিলে তুমিই সবচেয়ে শক্তিশালী হতে।(সত্ত্বা)
.
–আমি অবাক হচ্ছি।(আমি)
.
–কেনো?(সত্ত্বা)
.
–তোমার মাঝে আগের মতো রাগ, প্রতিবাদ তেমন নেই।(আমি)
.
–কারন আমি তোমার সত্ত্বার একদম ছোট একটা অংশ। আমার মাঝে পুরো ইমোশন নেই।(সত্ত্বা)
.
–এক কাজ করো তোমার ঔ ছোট ক্ষমতাই আমাকে দিয়ে দাও, কাছে দিবে।(আমি)
.
–তোমার মাঝে যেহেতু বাকি সত্ত্বাগুলোর ক্ষমতা রয়েছে, এর মানে বাকি সত্ত্বাগুলো তাদের ক্ষমতা তোমাকে দিয়েছে, এর বিনিময়ে তারা তোমার শরীরে জায়গা পাই নি। বরং চিরদীনের জন্য হারিয়ে গেছে। আমার এই সামান্য শক্তিতে কিছুই হবে না তোমার। আর এটুকু দিয়ে আমি তাদের মতো হারিয়ে যেতে চাই না।(সত্ত্বা)
.
–তুমি তো আমারই সত্ত্বা। এটা তো তোমার দায়িত্ব।(আমি)
.
–হ্যা আমার দায়িত্ব, তবে আমি দিতে চাই না। আমি এভাবেই ভালো আছি। তুমি এক কাজ করো, দুনিয়ার মধ্যে যে ডেভিল কিং রয়েছে তাকে মেরে তার হৃদপিণ্ড খেয়ে ফেলো, তাতে করে আমার আসল শরীরের সমস্ত ক্ষমতা তুমি পেয়ে যাবে।(সত্ত্বা)
.
–তুমি অনেক জেদি।(আমি)
।।।
।।।
আমার ডেভিল সত্ত্বার সাথে অনেকক্ষন কথা বললাম, কিন্তু সে বেচে থাকতে চাই। আমারও খারাপ লাগছে তার ক্ষমতা নেওয়ায়। এমনিতেই তার ম্যাজিক পাওয়ার অনেক কম, যেটা আমার কোনো কাজে দিবে না। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজ হলো আমার থরকে দিয়ে। থরের থেকে আমি ট্রেনিং নিতে পারবো এখানে। আমি আবারো রুমের মধ্যে চলে আসলাম। আমি ট্রেনিং এর কথা থরকে বলতে যাবো এমন সময় ড্রাকুলা তার ক্ষমতা ব্যবহার করলো। আমার চারিদিক দিয়ে গ্রাভিটি একদম বেরে গেলো। যেটা আমাকে সাথে সাথে একদম ফ্লোরে ফেলে দিলো। আমার মুখের অনেকটা জায়গা কেটে গেলো গ্রাভিটির চাপে ফ্লোরে গুতা লেগে।
.
–শুনতে পেলাম তোমার নাকি ট্রেনিং এর প্রয়োজন। সেটা থর কেনো? আমিও শিখানে পারি কিছু।(ড্রাকুলার)
।।।
।।।
ড্রাকুলার কথা শুনে বুঝতে পারলাম সে আমার মাইন্ড রিডিং করেছে। আর তার গ্রাভিটি কন্ট্রোল করার যে ক্ষমতা রয়েছে এটা মারাত্মক। আমি নিচে পরে যাওয়ায় ফ্লোর অনেকটা ভেঙে গেছে। যদিও একটু পর সেটা আপনাআপনি ঠিক হয়ে গেলো।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।