ভ্যাম্পায়ার কুইন পর্ব-৬০+৬১

0
13

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৬০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
এক সপ্তাহ সময় হলো আমি আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে এসেছি। ভাগ্য ভালো ছিলো সেদিন বেশী কিছু হয় নি। এমনও হতে পারতো আমি এখন ডেভিল কিং এর তলোয়ারের মাঝে থাকতাম। আমার এন্জেল ফর্মে থাকা অবস্থায় তার তলোয়ার আমার শরীরের প্রায় অনেকটা ম্যাজিক পাওয়ার শেষ করে দিয়েছে, যেখানে হাজার হাজার সেনা বানিয়েও আমার ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয় না এন্জেল ফর্মে। পুরো একদিন সময় লেগেছিলো আমার পুরো ম্যাজিক পাওয়ার সংগ্রহ করতে। আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে জেসি এবং বাকিদের গলার চেইন ক্যান্সেল করে আনলেও তারা স্লিপ স্পেলের মধ্যে ছিলো। যেটা ক্যান্সেল করার পরও এখনো তারা ঘুমিয়ে আছে। হয়তো ব্লাড রিচুয়াল শেষ না হওয়ার সাইড ইফেক্ট এটা। কিন্তু কে জানে, আমি একটা নতুন প্রতিষ্ঠানের কথা ভাবছিলাম। যদিও আমাদের শহরে কোনো অন্যায় হয় না। তারপর আমি একটা প্রতিষ্ঠান করতে চাচ্ছি আগের দুনিয়ার পুলিশ সেন্টারের মতো। বিষয়টা নিয়ে ভাবছিলাম তখনি খবর পেলাম জেসি এবং বাকি মেয়েগুলো ঘুম থেকে ফিরেছে। তাদের খেয়াল রাখছে আমাদের কুইন নিজেই। অবশ্য তাদেরকে প্যালেসে এনে রাখার পর প্রথমে কুইন অনেক রেগে গিয়েছিলো, হয়তো ভেবেছিলো আমি মনোরঞ্জনের জন্য তাদের এনেছি, কিন্তু জেসিকে আমার বোনের পরিচয় দেওয়ার পর থেকে কুইন নিজ থেকেই জেসি সেবা করছিলো বেশী করে। আমি বিষয়টা জানি না কেনো। অবশ্য আমার পরিবারের সাথে থর বাদে এখনো কেউ পরিচিত হয় নি। তাই হয়তো আমার বোনের পরিচয় দেওয়ায় কুইন তার যত্ন নিচ্ছে।
।।।
।।।
আমিও কাজ ফেলে টেলিপোর্ট হয়ে প্যালেসের মধ্যে চলে আসলাম। এখনল আমার এন্জেল ফর্মেই আছি আমি। তাই টেলিপোর্ট স্পেলই ব্যবহার করলাম। এক সেকেন্ডেই আমি যেখানে জেসি সেখানে চলে আসলাম। জায়গাটা খাওয়ার টেবিল আমি আশা করি নি এখানে থাকবে ও। রানী তার চেয়ারে বসে আসে চুপ চাপ। আর জেসি বসে খাচ্ছে তারই পাশে। বাকি মেয়েদের হয়তো অন্য জায়গায় রাখা হয়েছে, অবশ্য আমি ওদের আনার পর থেকে প্যালেসেই মেয়েদের দেখতে বলে বের হয়েছিয় আর ওদের দেখতে আসি নি।
।।।
।।।
জেসি বসে বসে বিশাল বড় মাংসের পিসের উপরে কামড় দিচ্ছিলো। ওর খাওয়াটা অনেকটা একমাস না খাওয়া অভাগীর মতো লাগছিলো আমার কাছে। তাই না হেসে পারলাম না। আমার হাসা দেখতে পেয়ে জেসি সাথে সাথে রেগে উঠলো এবং ওর হাতে খাওয়া মাংসের একটা হাড় আমার গলায় ধরলো। প্রথমে বুঝতে পারে নি আমি ওর পাশে ছিলাম। হয়তো এন্জেল ফর্মে আছি বলে। আমাকে দেখতে পেয়ে ছেড়ে দিলো এবং আবারো খেতে শুরু করলো।
.
–তাহলে তুই আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছিস ডেভিল কিং এর থেকে।(জেসি একটা ষাড়ের বিশাল লেগপিসের উপরে কাপড় বসিয়ে দিলো এবং চাবাতে চাবাতে বলতে লাগলো)
.
–হ্যা ভাবলাম আমার সেনা তাতে অনেক বড় হবে।(আমি)
.
–কাজটা মনে হয় না ঠিক করেছিস। আমি জানি তোর আমার জন্য চিন্তা হচ্ছিলো। এজন্য আমাকে নিয়ে এসেছিস। কিন্তু শুধু আমাকে নয়। তুই ডেভিল কিং এর শক্তিশালী সেনার সব উনিশ জেনারেলকেও সাথে করে নিয়ে এসেছিস যাদের গোলাম করে রেখেছিলো ডেভিল কিং।(জেসি)
.
–কি ঔসব গুলো মেয়ে ডেভিল কিং এর জেনারেল?(আমি)
.
–হ্যা। এটার জন্য আমার মনে হয় ডেভিল কিং শীঘ্রই এই রাজ্যের সাথে যুদ্ধে আসবে। সে হয়তো দেরী করছে কারন নতুন জেনারেল খোজে আছে নিশ্চয় এখন।(জেসি)
.
–আসুক সমস্যা কোথায়। মার্ডিলা কোনো দুর্বল রাজ্য নয়। তাছা আমাদের সেনা অনেক শক্তিশালী বাকি সকল রাজ্যদের থেকে।(কুইন এলিহা)
.
–তোর এনার কি খবর রে?(জেসি)
.
–জেসি আমরা এখন কুইনের সামনে আছি। একটু ফরমালিটি দিয়ে কথা বললে ভালো হয়। আর তাছাড়া আমি একজন মিনিস্টার।(আমি)
.
–তুমি কি রানী এলিনার কথা বলছো? সে আমার মেঝো বোন। আমি কুইন এলিনার ছোট বোন এলিহা।(কুইন এলিহা)
.
–তুই তো দেখছি বাজি মেরে দিয়েছিস। একসাথে দুই বোন।(জেসি)

।।।
।।।
রানী মনে মনে রাগতেছে সেটা আমি বুঝতে পারছি। কারন তার সামনে এলিনার কথা বলছে এজন্য। এলিনা তো সবার সামনে বলে বেড়ায় আমাকে সে ভালোবাসে, বিশেষ করে এজন্য রানী রাগ করে। আমি জানি কুইন এলিহার মনের মধ্যেও আমার জন্য জায়গা আছে। তাই কাউকেই আমি কষ্ট দিতে চাই না। আমি আমার এন্জেল ফর্মে আছি, কিন্তু জেসি পাশে থাকায় আমি কুইনের সাথে কথা বলতে পারছি না। কারন ও যতো খাচ্ছে ওর শরীর দিয়ে ততো মারাত্মক ধরনের ম্যাজিক পাওয়ার বের হচ্ছে, যেটা আমাকে ভয় পায়াচ্ছে।
.
–তো কুইন বললো আমাকে তোর রাজ্যের বিশপ বানাতে চাস। আমি আপত্তি করবো না। তবে আমার রুলস থাকবে কিছু।((জেসি)
.
–হ্যা। বলো তুমি। আমি সব গুলো মেনে নিবো।(কুইন)
.
–প্রথমত আমি কোনো কাজ করতে পারবো না। কারন হ্যারিকে নিয়ে আমি ফিউচার প্লানিং করবো, এইবার কোনো সাকুবিচকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না আমাদের মাঝে, আর দ্বিতীয়ত এরকম খাবার প্রতিদিন লাগবে আমার।(জেসি)
.
–হ্যা বুঝতে পারছি এরকম পুরো বিশাল এক টেবিল খাবার কোনো পেয়ে খায় সেটা আজকে জানলাম।(আমি)
.
–আমার শর্তে রাজি আছোস কিনা বলেন মিনিস্টার স্যার।(জেসি)
.
–হ্যা।(আমি)
।।।
।।।
আমিও আমার কিংডম ক্রিয়েশন স্পেল ব্যবহার করলাম। যেটা দিয়ে বিশপ বানিয়ে দিলাম আমি জেসিকে। কেনো জানি না তবে ওকে বিশপ বানানোর পর আমার মাথা হালকা ঘুরান দিলো। আমি বুঝতে পারলাম না কিসের জন্য। হয়তো ডেভিল কিং এর সাথে লড়ার সময় আমার ম্যাজিক পাওয়ার হারিয়েছিলো অনেকটা সেজন্য, নাহলে হয়তো সবচেয়ে বেশী ম্যাজিক পাওয়ার লেগেছে জেসিকে বিশপ বানানোর পর।
.
–নে দুজনে প্রেম কর এখন আমি যায় হ্যারির কাছে।(জেসি)
।।।
।।।
জেসি উঠে চলে গেলো। আর আমি আর কুইন এক রুমে আলাদা। কুইন লজ্জায় লাল হয়ে গেলো আমার দিকে তাকিয়ে। যেহেতু আমি এন্জেক ফর্মে আছি তাই কুইন আমার সাথে একা থাকলে অনেক ভয় পাই। ভয় বলতে লজ্জাজনক ভয় পায়। এজন্য একা থাকলে তার সাথে বেশী কথা হয় না আমার। কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে কুইনই কিছু কথা বলতে চাচ্ছে। আমি বুঝতে পারলাম কুইন আমার বোন মানে জেসির সাথে ভালো সম্পর্ক করতে চাচ্ছে, যাতে আমি এলিনাকে রেখে তাকে বিয়ে করি। অবশ্য বিয়ের চিন্তা কাউকেই করার ইচ্ছা আমার আপাতোতো নেই। পরে দেখা যাবে সেটা।
।।।
।।।
আমি বুঝতে পারলাম জেসিকে বিশপ বানানোর ফলে আমার অনেক ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয়েছে, যেটা আগে কখনো হয় নি। বাকি বিশপেরা আমার এন্জেল পাওয়ারের পনেরো ভাগ পেয়েছে, তবে আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে আমার এন্জেল পাওয়ারের অর্ধেক জেসি পেয়েছে, হয়তো আমার মনের ভুল হবে। তারপরও জেসিকে বিশপ বানানোর পর থেকে ওর মাঝে আমি এন্জেল এবং ডেভিল দুই ধরনের ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করতে পারছি। বিষয়টা ভালো ভাবে একটু দেখতে হবে। যেহেতু এন্জেল ফর্মে অনেকটা দুর্বল লাগছে আমার, তাই আমি মানুষের ফর্মে চলে আসলাম। মানুষের ফর্মে এখন বেশীক্ষন আমার থাকা হয় না। আমার উড়তে সুবিধা হয় এন্জেল ফর্মে তাই সব সময় এন্জেল ফর্মেই থাকি। আমাকে আমার ম্যাজিক পাওয়ার আবারো সংগ্রহ করতে হবে বিশ্রাম নিয়ে।
।।।
।।।
আবারো একদিন বিশ্রাম নিতে হলো আমাকে, কারন জেসিকে বিশপ বানানোর ফলে আমার অনেকটা ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয়ে গেছে। মূলত স্পেলটা অনেক ম্যাজিক পাওয়ার শেষ করেছে ওকে বিশপ বানাতে, কিংবা অন্য কিছুও হতে পারে। আমি জেসির সাথে মেয়েগুলোকে নিয়ে আসার সময় জানতাম না তারা ডেভিল কিং এর জেনারেল ছিলো। তারা ঘুমের মধ্যে ছিলো বলে আমি তাদের ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করতে পারি নি। তবে আজ যখন এন্জেল ফর্মে এসেছি, তখনি তাদের ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করেছি, তারা যেহেতু ডেভিল কিং এর জেনারেল এক একজন, তাই শক্তিশালী তো হবেই। ডেভিল কিং হয়তো চাচ্ছিলো তার সকল জেনারেল এর ক্ষমতা জেসির মধ্যে দিয়ে জেসিকে শক্তিশালী একজন ডেভিল বানাবে এবং তাকে বিয়ে করবে। কিন্তু আমার জন্য তার সেই ইচ্ছা হলো না।
।।।।
।।।।
আমি বাকি মেয়েদের নাইট বানিয়ে দিলাম। তারা সবাই ডেভিল কিং এর থেকে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য আমাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে, এবং আমাদের কুইনের আদেশ মানতে রাজি হয়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের রাজ্য এখন সেনার দিক দিয়ে অনেক উন্নত। তবে কিছু জিনিস রয়েছে যেগুলো আমাকে আরো উন্নত করতে হবে। তাই আমি আমার বোনের রাজ্য এজগার্ডে চলে গেলাম। যেটা আকাশে উড়ছে। থর তার মিওনির দিয়ে আমাদের যে শহর ছিলো, সেটাকে আকাশে উঠিয়ে দিয়েছে। এবং তার চারপাশ দিয়ে আমার দুই বোন এলেন এবং এলিন তাদের ড্রাগন ব্যারিয়ার তৈরী করেছে চারদিক দিয়ে। যার কারনে সেখানে একবার প্রবেশ করলে অন্য কোনো ম্যাজিক কিংবা ক্ষমতা কাজ করবে না। সেটা এতো শক্তিশালী এর আগে থরের মিওনির ও তার ক্ষমতা হারিয়েছিলো। যায় হোক আমি টেলিপোর্ট হয়ে সোজা এজগার্ডের প্যালেসে আসলাম। মূলত এখনো কোনো প্যালেস তৈরী হয় নি এখানে, আমাদের আগের বাসাটাকেই দালানের তৈরী করে সেটাকেই প্যালেসের রূপ দেওয়া হয়েছে। আমার বোন এলেন হলো এই রাজ্যের রানী। অবশ্য আমার বোন অনেক জ্ঞানী টাইপের। আমার থেকেও বেশী জ্ঞান তার মধ্যে আছে। আমি জানি না, হয়তো আমাদের বংশগত ক্ষমতাই একবার কোনো বই পড়লে সেটা কখনো ভুলবো না। যদিও আমি এদেরকে আমার পরিবার বলে মেনে নিয়েছি, কিন্তু আসলে তো এরা আমার পরিবার নয়। বরং আমি তাদের মৃত ছেলে যে আমার মতোই দেখতে তার শরীর কনট্রোল করছি। যদিও এই শরীরটা এখন আমার হয়ে গেছে, কিন্তু একটা প্রশ্ন আমার কাছে আছে। আমি অন্য কারো শরীরে প্রবেশ করতে পারবো? আমি তো ডেভিল কিং এর মতো আলাদা শরীর পাই নি। সে আমার সত্ত্বা হওয়ার পরও এই দুনিয়ায় আলাদা একটা শরীর পেয়েছে যেটা কারোরই না। কিন্তু আমি তো অন্যের শরীরে বাস করছি যেটা আমার না। তাহলে কি আমি অন্য কারো শরীরে প্রবেশ করতে পারবো। অবশ্য এসব চিন্তা পরে বৃদ্ধ হলে করা যাবে। আপাতোতো আমি যে জন্য এসেছি সেটা করতে থাকি। রানী আমার বোন হলেও তাকে সম্মান দিতে হয়। আমি হাটু গেড়ে সম্মান জানালাম, যেহেতু তার রাজ্যে আমি একজন মেহমান।
.
–কুইন অফ এজগার্ড এলেন, আমার সম্মান নিবেন।(আমি)
.
–এতো সম্মান জানাতে হবে না। তুমি আমার ভাই, নিজের বাসায় আসছো, তাই স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলো।(এলেন)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু কি করছো তুমি? একজন রানী হয়ে নিজে রান্না করছো?(আমি এলেনের রান্না দেখে বল্লাম)
.
–আমার রান্না ছাড়া নাকি থর খেতে পারে না। তাই আমাকেই রান্না করতে হয়। যতই হোক তার জন্য আমরা আজকে একটা স্বাধীন রাজ্য, ইগড্রোলিয়ার কোনো জুলুম হয় না আমাদের উপরে, আর তোমার উপদেশ মতো কাজ করে আমাদের রাজ্যও এখন উন্নতির দিকে, কেউ বসে নেই আর। সবাই চেষ্টা করছে উন্নত হওয়ার। আর এই সবের জন্য আমি থরকে ধন্যবাদ জানায়।(এলেন)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–তবে আমার রাজ্য চালানোর কোনো ইচ্ছা নেই, মন চাই আম্মা এবং এলিনকে নিয়ে তোমার রাজ্যে চলে যায়। কিন্তু একটা বড় কর্তব্য এখন আমার মাথায়। আমি যেহেতু রানী হয়েছি এই রাজ্যে, তাই আমাকে কষ্ট করতেই হবে এই রাজ্যের জন্য।(এলেন)
.
–ভালো কথা এলিন এবং আম্মা কোথায়?(আমি)
.
–আম্মা আগের মতোই গায়েব হয়ে যায়, তবে থর আম্মাকে খুজে বের করার চেষ্টা করছে। আর এলিন রাজ্যের সেনাদের ট্রেনিং দিচ্ছে।(এলেন)
.
–ও ভালো কথা। আমি এসেছিলাম আম্মাকে আমার সাথে আমাদের রাজ্যে নিয়ে যেতে।(আমি)
.
–কেনো আম্মা তো এখানেই ভালো আছে।(এলেন)
.
–আম্মার সাহায্য আমাদের দরকার। তাই তাকে আমাদের রাজ্যে নিয়ে যেতে চাই।(আমি)
.
–ঠিক আছে, আম্মা আসলে আম্মাকে বইলো সে যাবে কিনা।(এলেন)
.
–আমি জানি সে কোথায়, তাই এখনি তার কাছে যাচ্ছি আমি।(আমি)
।।।
।।।
যেহেতু আমার ম্যাজিক পাওয়ার এবং ক্ষমতা কোনোটাই কাজ করবে না এই এজগার্ডে ড্রাগন ব্যারিয়ারের ফলে, তাই আমি মানুষের ফর্মেই ছিলাম। টেলিপোর্ট হতে পারবো না তাই আমি সোজা সোজি সেই আন্ডারগ্রাউন্ড বেসমেন্টে চলে আসলাম যেখানে আগের বার এসেছিলাম। আর আম্মাকে এখানেই পেলাম আমি। আম্মা একটা কেমিক্যাল নিয়ে কাজ করছেন যেটায় তার মনযোগ। তবে আমার পায়ের শব্দ শুনে সে পিছনে তাকালো। প্রথমে অবাক হলো, কিন্তু পরে আমাকে জরিয়ে ধরলো।
.
–আম্মা কেমন আছেন?(আমি)
.
–ভালো বাবা তুমি তো একদমই আসো না আমাদের কাছে এখন। আমাদের কি ভুলে গেছো?(আম্মা)
.
–একটা রাজ্য চালাতে হলে অন্য কথা মনে থাকে না আম্মা।(আমি)
.
–আমি এসব করছি একথা কাউকে বলো না। সবাই অন্যরকম চিন্তা করবে। কারন এসব জিনিস বলতে কিছু নেই।(আম্মা)
.
–কেনো যেসব করছেন এগুলো তো অনেক সুন্দর জিনিস, যেটা অনেকের কাজে আসবে। এটা লুকানোর কি আছে। বরং আপনাকে এর জন্য সম্মান দেওয়া দরকার।(আমি)
.
–আমি ছোট থেকেই আজব আজব স্বপ্ন দেখতাম। দেখতাম আগের জন্ম নিয়ে, যেখানে আমি একটা সাইন্টিস্ট ছিলাম। নতুন জিনিস আবিষ্কার করতাম। প্রথমে আমি এসব কোনো কিছুতে গুরুত্ব দেই নি। তবে যেদিন আমি তোমার বাবার থেকে একটা বই নিয়ে পড়লাম সেটা পড়ার পর থেকে আমার মনে হলো আমার কাছে আগের দুনিয়ার স্মৃতি চলে এসেছে।(আম্মা)
.
–আগের দুনিয়া মানে পৃথিবীর?(আমি)
.
–তাহলে তোমারও সেই স্মৃতি মনে আছে? আমি জানতাম আমি একা নই। অনেকেই আছে যারা আগের দুনিয়া সম্পর্কে জানে।(আম্মা)
.
–আম্মা আপনি আমার সাথে আমার রাজ্যে চলুন, সেখানে গিয়ে আপনি আপনার সাইন্টিস্ট এর কাজ ভালো ভাবে শুরু করতে পারবেন।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৬১
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আজ এক বছর সময় অতিবাহিত হলো আমি এজগার্ড থেকে এসেছি। এরমাঝে আর মার্ডিলা থেকে কোথাও বের হয় নি। বর্তমানে কয়েক লক্ষ জনসংখ্যার বিশাল রাজ্য হয়েছে আমাদের। যদি এটা চার বিশাল রাজ্য ইগড্রোলিয়া, হিমরার, এ্যারসাক, এবং এ্যালকোর্টের কাছে পিপড়া মাত্র। তারপরও এজগার্ড এবং জেলিনার কাছে অনেক বড়ই আমাদের রাজ্য। আমাদের কন্ট্রাক মতো জেলিনাতে সব রকম সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক, পুলিশ স্টেশন এবং বাকি নানা প্রতিষ্ঠান। তবে আপাতোতো আর কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে না তাদের। শুধু আমাদের বিশজন ডয়ারফস সেখানে ঘর তৈরী এবং নির্মাণ মেরামতের কাজ করছে। আর এর মাঝে আমাদের রাজ্যে দাড়িয়ে না থেকে অনেক উন্নত করেছে। আমাদের রাজ্যও অনেক চেন্জ হয়ে গেছে। বর্তমানে সব রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত হলো আমাদের রাজ্য। যেটায় সাইন্স এবং ম্যাজিক দুটোর ব্যবহার হয় সমান ভাবে।
।।।
।।।
জমগনের সুবিধার্থে রাস্তা ঘাট অনেক পাকা করা হয়েছে, বাসা বাড়িও ইট এবং পাথর দিয়ে শক্তিশালী ভাবে এবং সুন্দর ভাবে তৈরী করা হয়েছে, তাছাড়া রাস্তা ঘাটে যান চলে বলে ট্রাফিক রুলস ঠিক করা হয়েছে। এর মাঝে সবচেয়ে বেশী অদ্ভুদকর বিষয় তৈরী হয়েছে আমাদের রাজ্যে, যেটা হলো বিদ্যুৎ। আমাদের রাজ্যের পিছনের দিকে বিশাল সাগর। যেটার পাশেই আমরা আমাদের রাজ্য বাড়িয়েছি। একটা বিশাল ল্যাব তৈরী করা হয়েছে সাগরের মাঝে। অবশ্য পানির মাঝে বানানোর মতো সামর্থ হয় নি আমাদের। সেটার জন্য অনেক ম্যাজিক পাওয়ার প্রয়োজন হবে। কিন্তু একটা দ্বীপ ছিলো সাগরের কিনারায়, সেখানের চারিদিকে একটা ব্যারিয়ার তৈরী করে ভিতরে বানানো হয়েছে বিশাল একটা ল্যাব। ল্যাবটা ছয় মাস লেগেছে এক হাজার ডয়ারফস এর বানাতে। আমাদের অনেকটা সময় এইখানে লেগেছে, তাই এটার সিকিউরিটির জন্য আমি বারোজন নাইট এবং একটা জায়েন্ট রুক রেখেছি ল্যাবের বাইরে। যারা এটার সুরক্ষা করবে। ল্যাবের মধ্যে শুধু আমার আম্মা নয়। বরং ব্লাক স্মিথের জন্যও জায়গা করে দেওয়া হয়েছে, যারা নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কারে ব্যস্ত। তাছাড়া রাজ্যে যারা সামান্য তম সাইন্সের বিষয় বুঝে তাদের ল্যাবের মধ্যে কাজ দেওয়া হয়েছে, যারা নতুন জিনিস নিয়ে রিসার্স করছে। আম্মাকে রাজ্যে আনার সবচেয়ে বড় সুবিধা হয়েছে তাতে ম্যাজিকাল এবং সাইন্টিফিক ভাবে আমাদের রাজ্য উন্নত করতে পারছে। আমার আম্মার আগের দুনিয়ার কথা মনে আছে, যেখানে সে নাসার একজন গবেষক ছিলেন। বিশেষ করে মহাকাশ নিয়েই তার গবেষনার কাজ ছিলো। কিন্তু তার শেখা সকল জ্ঞান এই দুনিয়ায় আমাদের কাজে দিচ্ছে।
।।।
।।।
আম্মা এবং ব্লাক স্মিথের ক্রাফটিল এর সাহায্যে আমাদের রাজ্যের জন্য বিশাল পাওয়ার প্লান্ট তৈরী হয়েছে, যেটা দ্বীপের এই ল্যাবেই অবস্থিত। মোট চার ভাবে পাওয়ার সংগ্রহ করা হয়, প্রথমত সূর্যের আলো থেকে, এরপর বাতাস থেকে, এরপর পানি থেকে। এবং সবশেষে যারা লাইটনিং ব্যবহার করতে পারে তাদের থেকে। চারপ্রকারে বিশাল পাওয়ার প্লান্টে পাওয়ার সংগ্রহ করা হয়। যেটা পুরো রাজ্যের পাওয়ারের কাজ করে। পৃথিনীর ভাষায় সহজ করে বলতে গেলে এটাকে বিদ্যুৎ বলে। যেটা আমরা ম্যাজিক এবং সাইন্সের মাধ্যমে তৈরী করেছি। আমাদের রাজ্যের প্রতিটা গলিতে গলিতে, বাসায় বাসায় এখন বিদ্যুৎ আছে। আম্মার বানানো বাশের ফিলামেন্টের লাইটগুলোও এখন উন্নত করা হয়েছে, সব কিছু সম্ভব হয়েছে বাইরের রাজ্য থেকে মূল্যবান সামগ্রী কিনে আনার ফলে, আমরা নিজেরা এসব জিনিস বানাতে গেলে আরো অনেকটা সময়ের প্রয়োজন হতো। এখন প্রতিটা বাসায় আলো রয়েছে, যার ফলে রাতেও অনেক সুন্দর লাগে দেখতে রাজ্যটাকে। রাজ্যের সবথেকে উচু ভবন বানানো হয়েছে ক্রেন্দীয় ব্যাংককে। যেটার উপরে আমি এখন বসে রাজ্যের সুন্দর্য দেখছি। আমি ভাবতেই পারি নি এতো কম সময়ে আমি আমার রাজ্যকে পুরো পৃথিবীর একটা শহরের মতো বানিয়ে ফেলতে পারবো। তবে হয়তো আমার ভাগ্য ভালো ছিলো বলে এসব হয়েছে, যেরকম দিন যাচ্ছে তাতে আমার আর কিছু করার প্রয়োজন হয় না। এখন রানীই সব দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে, সে রাজ্যকে দেখছে নিজের মতো। এবং আমি মিনিস্টার হয়ে শুধু বসে আছি, মূলত আমি জীবনে কিছু খুজে পাচ্ছি না আর। লাইফের মিনিং টা কি আমার জন্য সেটাও আমি খুজে বের করতে পারছি না। আমি কোনো মানুষ না, তাছাড়া আমি কোনো এন্জেল ও না, আমি ডেভিল ও না, আমি ভ্যাম্পায়ারও না, আমি ডিম্যানও না। তাহলে কি আমি। এই প্রশ্নের উত্তর আমি কিছুদিন হলো খুজে বেড়াচ্ছি। একজনের মাঝে এতো সত্ত্বা থাকে কিভাবে, আমার আসল পরিচয় কোনটা আমি সেটায় বুঝতে পারছি না। আমি আমার পরিচয়কে সন্দেহ করতে শুরু করেছি এখন। এরকম মনে হচ্ছে এই দুনিয়া আমার থাকার কোনো মানেই হয় না। কারন এখানে আমার জন্ম হয় নি, তাই এখানে থাকার কোনো হক আমি পাই না। কিন্তু এখানে জন্ম না হওয়ার পরও আমি এই দুনিয়াকে নিজের হাতে চেন্জ করতে চাচ্ছি, কেনো করছি আমি এটা। আমি কে সেটায় বুঝতে পারছি না। আচ্ছা আমি যদি এই দুনিয়াকে আমার মতো চেন্জ করি যেখানে আমার একটা পরিচয় থাকবে, যেখানে আমার জন্ম হবে। যেখানে আমি সাধারন একটা জীবন যাপন করবো, তাহলে কেমন হয়।
।।।
।।।
আমি বসে আছি ভাবছি আমার অতীতের কথা অনেক কিছুই তো হয়ে গেছে আমার সাথে। আচ্ছা আমি তো অন্য একটা মৃত ছেলের শরীরে আছি, যেখানে শুধু আমার মাইন্ড পরে আছি। যদি আমার এই শরীরটা মারা যায়, তাহলে আমার কি হবে। কি হবে আমার। হঠাৎ আমার মাথা ঘুরাতে লাগলো তাই আমি বিশ্রাম নেওয়ার জন্য আমার রুমে চলে আসলাম টেলিপোর্ট হয়ে। শুয়ে থাকলাম কিছুক্ষন এবং পূর্বের কথা ভাবতে লাগলাম আবারো। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম আমি।
।।।
।।।
গভীর ঘুমে আমি স্বপ্ন দেখতে লাগলাম, স্বপ্নটা অনেক আজব। মূলত স্বপ্ন নয় বরং একটা হিন্ট পেলাম মনে হলো। একজন লোক বলছিলো
.
–একটা গল্প শোনায় তোমাকে, এক লোক এমন শক্তিশালী হবে যে একদিন এই পুরো দুনিয়ার মালিক হবে সে, যেদিন এই পুরো দুনিয়া তার হাতের মুঠোই হবে, ঠিক তার কয়েক বছর পর সে এই দুনিয়ার প্রতি মায়া ছেড়ে দিবে, কারন সবই তার পাওয়া হয়ে গেছে, তো আর কি করবে এই দুনিয়ায় সে, তাই সে নতুন কিছু উদ্দেশ্য খুজে, নতুন কিছু খোজা শুরু করে যেটা তার পাওয়া হয় নি এমন কিছু সে খুজতে থাকে, আর তখনি সে পেয়ে যায়। বিশাল সৃষ্টিকর্তার ডিভাইন গেইট, যেটা দিয়ে যে কেউ যে কোনো ইচ্ছা পূরন করতে পারবে সৃষ্টিকর্তা কাছ থেকে। ডিভাইন গেইটের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার থেকে একদম যে কোনো ইচ্ছা, হোক তো অমরত্ব, কিংবা দুনিয়াকে নিজের করে নেওয়া সবই সম্ভব। তো তোমার কি মনে হয় লোকটা ডিভাইন গেইট পাওয়ার পরে কি করেছিলো?(আজব একটা লোক যাকে দেখতে অনেকটা অস্পষ্ট)
।।।
।।।
স্বপ্নটা দেখার পর কি করবো বুঝে উঠতে পারি নি। আমি এরকম আজব স্বপ্ন দেখি নি কখনো। প্রথমে বিষয়টা স্বাভাবিক স্বপ্ন ভেবে ছেড়ে দিয়েছিলাম কিন্তু পুরো একমাস আমি ঠিক একই স্বপ্ন দেখতে লাগলাম। যেটা আমাকে অনেক চিন্তায় ফেলে দিলো। আমি বুঝতে পারছি হয়তো আমার স্বপ্নের মাধ্যমে কেউ আমাকে কিছু বলতে চাচ্ছে, কিন্তু কে সে। সৃষ্টিকর্তা কি কিছু বোঝাতে চাচ্ছে আমাকে স্বপ্নের মাধ্যমে, নাকি আমার অবাস্তব কিছু চিন্তা ভাবনার জন্য এটা হচ্ছে। প্রতিদিন একই স্বপ্ন দেখার কোনো মানে আমি দেখি না। আমার উপরে কেউ কোনো স্পেলের ব্যবহারও করে নি, যেটা আমি ক্যান্সেলেশন ক্ষমতা ব্যবহার করে লক্ষ করেছি, তবে কি হচ্ছে আমার সাথে। হঠাৎ করে মনে হচ্ছে আমার সাথে কেউ কথা বলার চেষ্টা করছে। কিন্তু সে অনেক দূরে হওয়ার কারনে আমার স্বপ্নে এসে বলছে এগুলো।
।।।
।।।
যাইহোক এই স্বপ্নটার কারনে আমি কোনো কিছুতেই ফোকাস করতে পারি নি একমাস। আগেই বলেছি কুইন জিনিসপত্র এখন নিজেই দেখতে শিখে গেছে। তার সুরক্ষার জন্য বিশপ ইকারেস আছে, যে সব সময় তার সাথেই থাকে। অবশ্য আমি প্যালেসে গেলে কুইন এলিহা ইকারেসকে অন্য কাজে পাঠিয়ে দেই, কারন সহজ ইকারেস আমার উপরে সবার থেকে বেশী দুর্বল। আর কুইনের সেটা পছন্দ নয়।
।।।।
।।।।
আমি আজকেও একই স্বপ্ন দেখেছি। উঠে আমার ব্যাগটাকে লক্ষ করলাম ডান পাশে, এখন আর এটাকে সাথে করে নিয়ে যাওয়া হয় না কোথাও। দেড় বছরের মতো হয়ে যায় এই ব্যাগ তার জায়গায় পরে আছে, আমি প্যালেসে থাকি না। বরং প্যালেসের জায়গার মধ্যেই পাশে একটা ছোট বাড়িতে থাকি আমি, এখানে অন্য সবার ঢোকা নিষেধ। এমনকি রানী নিজেও এখানে প্রবেশ করতে পারবে না। আমি রানীকে কোনো আদেশ দি না, তবে এটাই তাকে দেওয়া প্রথম আদেশ, যেটা সে কখনো অমান্য করতে পারবে না। আমি এই জিনিসটা প্রথমে পছন্দ করলেও এখন ভালো লাগছে না একদম সুন্দর একটা রাজ্য বানিয়েছি আমি যেখানে কোনো অন্যায় হয় না, যেখানে কোনো দুঃখ নেই। সবাই সব সময় হাসি খুশি থাকে, কিন্তু তারপরও এমন মনে হচ্ছে আমার এটুকু যথেষ্ট নয়। আমার আরো দরকার। যতটুকু এই দুনিয়া আমাকে দিতে পারবে ততো আমার দরকার।
।।।।
।।।।
অনেক দিন চুপ থাকলেও আমি আর চুপ থাকলাম না। আমি অনেক দিন চুপ ছিলাম। এখন আমার স্বপ্নের মানে আমি বুঝতে পেরেছি। স্বপ্নে অস্পষ্ট লোকটা যার কথা উল্লেখ করেছে সেটা আমিই, যে এই পুরো দুনিয়া নিজের করবে। তাই আর সময় নষ্ট না করে স্বপ্নটাকে সত্য করার সময় হয়ে গেছে। আশা করি যা হবে সেটা আমি সামলাতে পারবো। তবে প্রথমেই আমাকে ইগড্রোলিয়াকে নিজের কনট্রোলে আনতে হবে, কারন সেটাকেই প্রথমে আমাদের সাথে লড়ার কথা ছিলো। আমি টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করলাম এবং সোজা লিম্বো ডাইমেনশনে চলে গেলাম। যেখানে আমার ডেভিল সত্ত্বা রয়েছে। আমার ডেভিল সত্ত্বার অংশ হিসাবে এটা পরিচয় দিয়েছিলো, কিন্তু আসল কথা বলতে লিম্বোতে যেটা রয়েছে সেটায় আমার আসল ডেভিল সত্ত্বা, যে সাটানের সত্ত্বার সাথে মিশে নিজের অস্তৃতি হারিয়েছিলো। এবং দুনিয়া ধ্বংসের সময় সে সাটানের সত্ত্বা থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছিলো এবং লিম্বোতে চলে আসে। ভালো ভাবে বলতে গেলে আমি যখন ডেভিল কিং হয়েছিলাম তখন আমার মাঝে ডেভিল সত্ত্বা ছিলো একটা আমার নিজের, তবে সেটাকে সাটানের সত্ত্বা এবজোর্ব করে নেই এবং মূল ডেভিল সত্ত্বা সেই হয়ে যায়। আর এখন সাটানের সত্ত্বা নতুন দুনিয়াতে একটা আলাদা ফর্ম পেয়েছে, আর আমার নিজের ডেভিল সত্ত্বাও লিম্বো ডাইমেনশনে নিজের ফর্মে আছে, যদি এটা স্টাবেল না এখনো। সে দুনিয়ায় চলে গেলে তার ক্ষমতা ডেভিল কিং এর মাঝে নয়, বরং সেটা আমার মাঝে চলে আসবে। যেহেতু তার ফলে সে পুরোপুরি মারা যাবে, তাই সে আমার শরীরে না আসার জন্য মিথ্যা বলেছে, বিষয়টা আমি ডেভিল কিং এর সাথে কথা বলার পর কনফার্ম হয়েছি।
।।।
।।।
কারন ডেভিল কিং নিজেই বলেছিলো সে আমার ডেভিল সত্ত্বাকে নিজের কনট্রোলে করে নিয়েছিলো, তার মানে এখন যেটা লিম্বোতে আছে সেটা আমার নিজের ডেভিল সত্ত্বা। সত্ত্বাগুলোর ক্ষমতা থাকে অনেক। যদিও সাটানের থেকে আমার ডেভিল সত্ত্বার ক্ষমতা বেশী ছিলো, কিন্তু সেটার ব্যবহার না জানায় আমার সত্ত্বা হয়তো কিছুই করতে পারে নি তখন। কিন্তু এখন সে ভালোই বসে বসে ঘুমাচ্ছে লিম্বোতে। আমি উঠালাম তাকে,
.
–হাই জ্যাক। কেমন আছো, অনেক দিন দেখা হয় না তোমার সাথে, ও সরি, এখানে তো সময়ের মূল্য নেই, তাই কতদিন হলো বলতে পারছি না।(ডেভিল সত্ত্বা)
.
–দুই বছর হবে হয়তো।(আমি)
.
–ও এতো দিন। তবে আমার তো মনে হচ্ছে সেইদিন আসলে তুমি এখানে, যাইহোক কি মনে করে এখানে?(সত্ত্বা)
.
–তোমাকে লাগবে আমার।(আমি)
.
–আগেই বলেছি আমি মাত্র সামান্য পরিমান তোমার ডেভিল সত্ত্বার। তার চেয়ে তোমার পুরোটা ডেভিল কিং এর কাছে রয়েছে যেটাকে তোমার নেওয়া দরকার।(সত্ত্বা)
.
–সে আমার সত্ত্বা না। সে ডেভিল কিং সাটান ক্রস।(আমি)
.
–ওও তাহলে সত্য জানতে পেরেছো?(সত্ত্বা)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–তো কি হয়েছে। আমি না চাইলে তো আমাকে তোমার শরীরে নিতে পারবে না। দেখো ড্রাকুলা আমার উপরে একটা সিল দিয়েছে, যেটার কারনে আমি তোমার শরীরে প্রবেশ করতে পারবো না। তাই কষ্ট করে লাভ হবে না।(সত্ত্বা)
.
–তাহলে বুঝতে পেরেছো আমি অনেক সিরিয়াস।(আমি)
.
–হ্যা। দেখো আমি জানি আমার তোমার শরীরে যাওয়া উচিত। কারন সেটা ছাড়া তোমার সম্পূর্ন ক্ষমতা পূর্ন হবে না। তবে ড্রাকুলার সাথে প্রথম দেখা হওয়ার পরেই একটা সিল আমার উপরে দিয়েছিলো সে, যেটার কারনে আমি চাইলেও তোমার শরীরে প্রবেশ করতে পারবো না।(সত্ত্বা)
.
–ঔ ড্রাকুলার বাচ্চা। আচ্ছা তারপরও চেষ্টা করে দেখা যাক।(আমি)
.
–না আমি প্রথম দিনেই চেষ্টা করেছিলাম তুমি এখানে আসার পর, কিন্তু আমি আমার শরীরকে তোমার ভিতরে পাঠাতে পারে নি, বরং সেটা করার চেষ্টা করলে আমার বিদ্যুতিক শক লাগে একটা।(সত্ত্বা)
.
–তাহলে ড্রাকুলা আমার সব সত্ত্বা পূরন করা থেকে আমাকে বিরত করতে চাচ্ছে, কেনো সেটা বুঝতে পেরেছি, আগের দুনিয়ায় ডেভিল সত্ত্বায় তুমি ছিলে না, বরং সেটা সাটান ছিলো তোমার জায়গায়, এজন্য আমি আমার সম্পূর্ন ফর্ম কম্প্লিট করতে পারি নি। আর যেহেতু ড্রাকুলা এখন এই দুনিয়ার একজন সর্বশক্তিমান লোক, সে চাইছে তার সামন লেভেলে যাতে কেউ না যাক। আমি জানি লোকি এবং থরের থেকেও মারাত্মক এই দুনিয়ায় ড্রাকুলার ক্ষমতা। যেটা অনেক ভয়ঙ্কর। কিন্তু সে যেহেতু আমার ডেভিল সত্ত্বাকে আমার শরীরে প্রবেশ করতে দিতে চাচ্ছে না তারমানে আমাকে সে ভয় পায়। এজন্য আমার ডেভিল সত্ত্বার উপরে একটা সিল দিয়েছে। ওকে কোনো সমস্যা নাই ড্রাকুলা। তোমার সিলও একটা স্পেলই শুধু। আমি আমার মানুষের ফর্মে চলে আসলাম। এবং আমার পিছন থেকে আমার গডহ্যান্ড বের করলাম। যেটা দিয়ে আমি আমার ডেভিল সত্ত্বাকে ধরতে গেলাম। কিন্তু একটা লাইটনিং এসে লাগলো তার শরীর থেকে, আমি বুঝতে পারলাম এটা ড্রাকুলার স্পেলই। তাই সময় নষ্ট করলাম না। কারন বেশী সময় আমার নেই। আমাকে জলদি ডিভাইন গেইট খুজতে হবে, যদিও সেটার জন্য আমাকে প্রথমে এই দুনিয়া নিজের করতে হবে স্বপ্নে বলা লোকটার মতো। আমি চাই না সেই লোকটা অন্য কেউ হোক, তাই এটা আমাকে জলদিই শেষ করতে।
।।।।
।।।।
আমি দাড়িয়ে না থেকে আমার পিঠ থেকে পুরো একশো হাত বের করলাম। এবং সেগুলো দিয়ে আমার সত্ত্বার শরীর ধরার চেষ্টা করলাম। তবে সবগুলো লাইটনিং এর শক খেতে লাগলো, যেটা তাদের অনেক দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আমি লাইটনিং টা এরানোর কোনো উপায় দেখছি না। সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি পেলাম আমি, সাথে সাথে আমার এক্সোনিয়া দিয়ে একটা কাট দিয়ে পোর্টাল তৈরী করলাম। এবং আমি সাথে সাথে একটা ব্লাক হোল তৈরী করলাম আমার ভ্যাম্পায়ার ফর্মে এসে। যেটা এখানে সব কিছুকে পোর্টের মধ্যে চুষে নিয়ে যাচ্ছে। পুরো বাড়ি চলে গেলো ড্রাকুলার স্পেলের কারনে আমার সত্ত্বার কিছুই হলো না। এখন মনে মনে ড্রাকুলাকে গালি দিতে মন চাচ্ছে। তারপরও নিজের মনকে স্থির রাখলাম। এবং লাইটনিং এর বিরুদ্ধে লড়ার ভালো উপায় বের করতে লাগলাম। যদিও লাইটনিং এর কোনো দুর্বলতা নেই, তারপরও একটা বের করলাম। লাইটনিং সব সময় উচু জায়গায় আগে পরে, তাই আমার একশো গডহ্যান্ড দিয়ে যখন আগের বার একসাথে আঘাত করেছি তখন সব গুলো লাইটনিং এক সাথে লেগেছে, যার জন্য কাজ হয় নি। তবে আমি যদি এক এক করে এক সাইট ছোট ছোট করে আঘাত করি, তাহলে একশো হাতের একটা তো লাগবেই তার শরীরে। আর শরীরে লাগলেই আমি স্পেলটা ক্যান্সেল করে দিতে পারবো। হয়তো ড্রাকুলা জানতো না আমার কাছে স্পেল ক্যান্সেলেশন ক্ষমতা আছে। অবশ্য না জানারই কথা, গডহ্যান্ড সম্পর্কে সে কিভাবে জানবে। আমি যেটা ভেবেছিলাম সেটাই হলো। এবারের একশো হাতের মধ্যে একটা আমার সত্ত্বার শরীরে লাগলো, সে এতোক্ষন আমার ব্যর্থ চেষ্টা দেখে সোফায় বসে মজা দেখছিলো কিন্তু আমার গডহ্যান্ডের এক স্পর্শে পুরো সিল ক্যান্সেল হয়ে গেলো। আমি এবার আর সময় নষ্ট করলাম না। কারন সত্ত্বার সাথে কথা বলা অনেকটা সময় নষ্টের কাজ। তাই ভ্যাম্পায়ার সত্ত্বায় এসে আবারো একটা ব্লাক হোল স্পেল ব্যবহার করলাম। যেটা এবার আমার সত্ত্বা সহ আমাকে পোর্টালের ভিতর দিয়ে দুনিয়ায় নিয়ে আসলো। আমি দুনিয়ায় আসার সাথে সাথে দেখতে পেলাম আমার ডেভিল সত্ত্বায় শরীর থেকে আলো বের হচ্ছে আগের গুলোর মতোই। এবং সে আলো আমার শরীরে মধ্যে প্রবেশ করলো। আমি তাকিয়ে রইলাম ডেভিল সত্ত্বার শেষ হাসিটার দিকে। হয়তো তারও বাঁচবার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু সেটা শক্ত করে বলতে পারে নি, কারন সে আমার শরীরের অংশ বলে।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।