#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩৭
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
ড্রাকুলার এভাবে এ্যারসাকে এট্রি নেওয়াটা অনেক রহস্য জনক। আমার জানা মতে রানীর ইচ্ছা ছাড়া এখানে ডেভিল কিং ও প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু ড্রাকুলার ক্ষেত্রে সেটা আলাদা দেখছি। আমার মনে হয় আমার সাথে লিম্বো থেকে সে এ্যারসাকেই এসেছিলো, যদিও এটা আমি চিন্তা করছি কিন্তু আমি কোথাও তার প্যালেস দেখতে পাই নি। তাছাড়া তার প্যালেস এ্যারসাকে আসলে এন্জেলরা আগে থেকেই জানতো পারতো। কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না। আর প্রিন্সেসকে রানী বানানোর কথা চিন্তা করছে কেনো ড্রাকুলা? তবে কি প্রিন্সেস এলিনাকে বিয়ে করবে সে? হয়তো হতে পারে। আমার এতো চিন্তা করে লাভ নেই। আপাতোতো এন্জেল রানী সহ এখানের সবাই তাদের হাটুতে ভর করে ছিলো। ড্রাকুলা সাথে সাথে অদৃশ্য হয়ে গেলো এবং সোজা প্রিন্সেস এর পাশে গিয়ে দাড়ালো। এতো দ্রুত ছিলো যে মনে হলো এক পলকের মধ্যে সে টেলিপোর্ট হয়ে গেলো। কিন্তু সে তার আল্ট্রা স্পিড ব্যবহার করেছে যেটা আমার দেখা সবচেয়ে দ্রুত। এরপর ড্রাকুলা বলতে লাগলো,
.
–জ্যাক তাহলে দেখা হবে তোমার সাথে আমার প্যালেসে। তারাতারি এসো, তোমার জন্যও অপেক্ষা করবো।(ড্রাকুলা)
।।।
।।।
ড্রাকুলা এটা বলেই টেলিপোর্ট হয়ে চলে গেলো। আর আশেপাশের সব গ্রাভিটি একদম ঠিক হয়ে গেলো। রানীর দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলাম সে ভয়ে কাপছিলো, এরকম কিছু হয়তো সে কখনো দেখে নি। আমি সবার শরীরের ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারলেও ড্রাকুলার শরীর থেকে বের হওয়া ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারছি না। এতে করে বোঝার ক্ষমতা নেই সে কতটা শক্তিশালী। যাইহোক আমি কি করবো আপাতোতো বুঝতে পারছি না। লুকের অবস্থা সেরকম ভালো না। যদিও আমার ইন্জুরিও অনেক। তারপরও আমার ক্ষত হিল হচ্ছে। আর হ্যারি, লুসি এবং লুসানাও আমার কাছে এসেছে। লুসি এবং লুসানা দুজনে আমার পায়ের ক্ষত হিল করে দিচ্ছে। কোনো এন্জেল কোনো কথা বলছে না। হয়তো তারা ভাবছে একজন লোক কিভাবে রানী আদেশ ছাড়া এখানে আসতে পারে। অবশ্য এটা আমারও প্রশ্ন। তবে আপাতোতো প্রশ্ন রেখে লাভ নেই মাথায়। আমরা চারজন একসাথে দাড়িয়ে ছিলাম। রানী আফরিয়েল যেখানে বসে ছিলো সেখানেই কাপছিলো। আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ তার নজর আমার দিকে পরলো। এবং সাথে সাথে সে আমাকে সহ হ্যারি, লুসি এবং লুসানাকে টেলিপোর্ট করে দিলো সোজা ইগড্রোলিয়াতে।
।।।
।।।
হঠাৎ করে ইগড্রোলিয়াতে আসবো সেটা ভাবতে পারি নি। তারপর আমার ইচ্ছা ছিলো এ্যারসাক থেকে বের হওয়া। কতগুলো এন্জেলদের মধ্যে থাকা অনেকটা অস্বস্তি লাগে।
.
–জ্যাক যে লোকটা এসে প্রিন্সেস এলিনাকে নিয়ে গেলো, সে কে ছিলো?(হ্যারি)
.
–তার নাম ড্রাকুলা।(আমি)
.
–তার ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করতে পারি নি আমরা। সে কি সেটাও বুঝতে পারি নি।(লুসি)
.
–সে একজন ভ্যাম্পায়ার।(আমি)
.
–ভ্যাম্পায়ার?(লুসানা)
.
–হ্যা। অনেকটা বলা যায় সে ভ্যাম্পায়ার গড।(আমি)
.
–তার কোনো ম্যাজিক পাওয়ারই অনুভব করতে পারি নি আমি। কিন্তু তার একটা কথাতেই আমাদের সবাইকে হাটু গেথে বসতে হয়েছে।(হ্যারি)
.
–চারিদিকের গ্রাভিটি চেন্জ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এতো শক্তিশালী গ্রাভিটি কেউ নিয়ন্ত্রন করতে পারে সেটা আমার আগে জানা ছিলো না।(লুসি)
.
–তোমার সাথে যেভাবে কথা হলো তাতে বুঝতে পারলাম সে তোমাকে চিনে?(হ্যারি)
.
–হ্যা সেটা অনেক প্যাচালো বিষয় তোমাদের বললেও বুঝতে পারবে না।(আমি)
.
–আচ্ছা থাক তাহলে, কিন্তু এখন প্রিন্সেস এলিনার ব্যাপারে কি করব আমরা? ড্রাকুলা যে তাকে নিয়ে গেলো?(লুসানা)
.
–দেখা যাক রাজা কি বলে সেটার ব্যাপারে।(আমি)
।।।
।।।
আমাদেরকে রানি সোজা ইগড্রোলিয়ার ক্যাপিটালে টেলিপোর্ট করেছে। এখান থেকে আমাদের প্যালেসে যেতে সময় লাগবে না। হ্যারি, লুসি এবং লুসানা প্যালেসের বাইরেই রইলো। আর আমি ভিতরে ঢুকলাম। রাজার কাছে পৌছালাম আমি এবং প্রিন্সেস এলিনার সাথে কি হয়েছে সেটা আমি জানালাম।
.
–কে এই ড্রাকুলা? যে আমার প্রিন্সেস এলিনাকে কিডন্যাপ করার সাহস করলো?(রাজা)
.
–মাই কিং সে একজন ভ্যাম্পায়ার। এবং উচ্চ লেভেলের একজন। সে তার মুখের কমান্ড দিয়ে যে কাউকে যেকোনো জিনিস করাতে বাধ্য করতে পারে। অবশ্য তার ব্যাপারে আমি এইটুকুই জানি।(আমি কিছুটা ফাপর মারলাম)
.
–এটাকে স্বাভাবিক ভাবে দেখা যাবে না। প্রথমে এ্যারসাক, আরসাক এখন আবার ড্রাকুলা। আমি বুঝতে পারছি না এরা হঠাৎ করে কেনো আসছে?(রাজা)
।।।
।।।
সভা কিছুক্ষন চুপ রইলো। এখানে প্যালেসের সকল লোকজন জড়ো হয়েছে। কিছুক্ষন চুপ থাকার পরে রাজা বলতে শুরু করলো।
.
–জেনারেল জ্যাসন, আমি চাচ্ছি আমাদের সকল শক্তিশালী মিলিটারি সেনাকে পাঠিয়ে দিন প্রিন্সেস এলিনাকে খুজে ফিরিয়ে আনতে।(রাজা)
.
–জ্বী মাই কিং।(জেনারেল)
।।।
।।।
সাথে সাথে জেনারেল তার সেনার শক্তিশালী সেনার একটা গ্রুপ বানিয়ে দিলো। এবং তাদের পাঠিয়ে দিলো প্রিন্সেসকে খোজার জন্য।
.
–এখন জ্যাকসন, তুমি প্রিন্সেস এলিনার রয়েল গার্ড হওয়ার পরও তাকে সুরক্ষা করতে পারো নি। বরং তাকে শত্রু পক্ষের হাতে তুলে দিয়ে চলে এসেছো। এটার জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।(রাজা)
.
–কিন্তু মাই কিং, আমরা এ্যারসাকের রানীর বিরুদ্ধে লড়তে ছিলাম এমন সময় ড্রাকুলা এসে প্রিন্সেসকে নিয়ে যায়।(আমি)
.
–কোনো কথা শুনতে চাই না। জ্যাক তুমি আমার মেয়েকে সুরক্ষা করতে পারো নি, এজন্য তাকে না পাওয়া পর্যন্ত তুমি রয়েল প্রিজনের মধ্যে আটক থাকবে। প্রিন্সেসকে ফিরিয়ে আনার পর তোমার বিচার হবে।(রাজা)
.
–কিন্তু মাই কিং।(আমি)
.
–কোনো কথা নয়। রাজা যেটা বলেছেন সেটাই মানতে হবে।(জেনারেল)
।।।
।।।
জেনারেল আমাকে সোজা টেলিপোর্ট করে নিয়ে আসলো প্রিজনে। সেখান থেকে আমার থেকে আমার দুটো অস্ত্র নিয়ে প্রিজনের একটা রুমে রেখে দিলো। দুটো একটা ভিরুদা আর একটা ভ্যালি। আমাকে একটা সেল এর মধ্যে আটক করে রেখে দিলো। আমি এটা চিন্তা করি নি। এরকম হলে আমি এখানে কখনো আসতাম না। তারপরও কিছু করার মতো দেখছি না আমি আপাতোতো। আগের লড়াইয়ে আমি অনেক ক্লান্ত। ঘুম পাচ্ছে অনেক। তাই চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পরলাম সেল এর মধ্যে থাকা বিছানায়। অনেকটা জেলখানার মতো জায়গা এটা। রয়েল প্রিজনে শুধু রাজার বংশের মধ্যে যারা রাজার আইন অমান্য করে তাদেরকে রাখা হয় এখানে। এক হিসাবে আমার মধ্যেও রাজার বংশের রক্ত বইছে, যদিও আমি এটা কখনো চাই নি। তাই আমাকেও রয়েল প্রিজনে আনা হয়েছে। রয়েল প্রিজন সাধারন প্রিজন থেকে অনেক আলাদা। এখানে আমার সময় কাটানোর মতো সব কিছু পাবো। আপাতোতো আমি আমার সময় নষ্ট না করে ঘুমিয়ে পরলাম।
।।।
।।।
রয়েল প্রিজনের সেল গুলো এক একটা প্যালেসের রুমের মতো। ভিতরে দামী দামী বিছানা, শোয়ার জিনিস এবং ভালো খাদ্য পাওয়া যায় এখানে। যদিও এর একটাতে ও আমার সময় কাটবে না। আমি ঘুম থেকে কখন উঠলাম সেটা জানি না। তবে উঠার পর আর এখানে থাকতে মন চাচ্ছে না। নিজের কাছে আসামী আসামী ফিল হচ্ছে। আমি কিছুই করি নি এর জন্য আমাকে জেল খাটতে হবে এটা কোনে কথা? কিছু করলে কি হতো সেটা বুঝতে পারছি না। যাইহোক আমি প্রথমে ভাবলাম এক্সোনিয়া তো নেই নি আমার থেকে। আর এক্সেনিয়া সব সময় অদৃশ্যই থাকে, তাই সেটা দিয়ে দেওয়াল ভেঙে আমি বের হয়ে যাবো এখান থেকে। কিন্তু পরক্ষনে ভাবলাম সেটা করলে রাজ্যের সবচেয়ে বড় আসামীর খাতায় আমার নাম হয়ে যাবে। সব কিছু ভাবতে ভাবতে আমি ডান পাশে একটা টেবিল দেখতে পেলাম যেটার পাশে একটা বুক সেল্ফ রয়েছে। সেখানে অনেক বই রয়েছে। বই দেখলে আমি ঠিক থাকতে পারি না। পড়ার উত্তেজনা দেখা দিতে থাকে আমার মাঝে। যাইহোক আমি সকল উত্তেজনা মাথায় নিয়ে টেবিলে বসে এক এক করে বই পড়তে শুরু করলাম। এখানে ক্ষুদায় যাতে না মারা যায় তার জন্য ভিআইপি খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তাই সমস্যা নাই আমার। আমি এক এক করে বইগুলো পড়তে লাগলাম। বুক সেল্ফে বইয়ের সংখ্যা অনেক, এবং তাদের সাইজও বিশাল। একবার করে পড়তেও আমার অনেক সময় লাগছে। যদিও আমি অনেক তারাতারি বই শেষ করতে পারি অন্য কারো তুলনায়। তারপরও আমি আজকে আস্তে আস্তে পড়ছি। পুরো দুইদিন সময় চলে গেলো আমার এভাবেই প্রিজনের মধ্যে।
।।।
।।।
এরমধ্যে আমি বইগুলোও শেষ করেছি পড়া। এখন আর কিছু করার নাই এখানে। তাই আর এটার মধ্যে থাকতে ভালো লাগছে না। আমি কোনো টেলিপোর্ট স্পেল জানি না। জানলেও কোনো কাজে দিবে না। এই পুরো প্রিজন রুমের মধ্যে একটা ব্যারিয়ার রয়েছে, যেটা আমাকে এবং অন্য কাউকে এখানে টেলিপোর্ট হতে দিবে না। কিছুক্ষন বসে ভাবছিলাম কি করবো। হঠাৎ আমার পাশের দেওয়াল ভেঙে গেলো। আমি কিছুটা শিহরিত হলাম প্রথমে। কিন্তু থরের মিওনির দেখতে পেয়ে আমি বুঝতে পারলাম এটা থরের কাজ। থরের ভাঙা দরজা দিয়ে হাটতে হাটতে আমার কাছে চলে আসলো। তার হাতে আমার ব্যাগ এবং তাতে থাকা আমার দুটো তলোয়ার ও রয়েছে।
.
–তো জ্যাক তুমি এখানে। আমি তো তোমাকে খোজার জন্য এই জায়গার সব কয়টা রুমই ভেঙে দিয়েছি।(থর)
.
–এটা কি করেছেন?(আমি)
.
–কেনো?(থর)
.
–এখন পুরো মিলিটারি সেনা এখানে চলে আসবে।(আমি)
.
–সেটার চিন্তা করতে হবে না। নাও আসার সময় এগুলো দেখতে পেয়ে মনে পরলো এগুলো তো তোমার কাছেই ছিলো।(থর)
.
–হ্যা ধন্যবাদ এগুলো দেওয়ার জন্য। কিন্তু আপনি এসেছেন কেনো এখানে?(আমি)
.
–অবশ্যই তোমাকে খোজার জন্য।(থর)
.
–আমাকে কেনো?(আমি)
.
–ড্রাকুলার জন্য।(থর)
.
–কেনো ড্রাকুলা কি কোনো খারাপ চিন্তা করছে?(আমি)
.
–না বরং ওর চিন্তা ভাবনা একদম পারফেক্ট। আমি ওর কাজের জন্যই তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি।(থর)
.
–আপনি গড অফ থান্ঠার হয়ে ড্রাকুলার কথা শুনছেন?(আমি)
.
–কিছু করার নাই এই সব একটা গেমের মধ্যে হয়, যেখানে আমি হেরে যায়। আমার শর্ত ছিলো ওর প্যালেসের নাম হবে এজগার্ড। হেরে যাওয়ার পর ও আমাকে শর্ত দেই যে তোমাকে নিয়ে যেতে।(থর)
.
–আমাকে কেনো?(আমি)
.
–ড্রাকুলার কাছে একটা ক্ষমতা রয়েছে, যেটার নাম এবসুলেট কমান্ড। যেটা দিয়ে সে যাকে ইচ্ছা কমান্ড করতে পারবে। আর ড্রাকুলা যে কমান্ড দিবে সেটা শুনতে বাধ্য থাকতে হবে। অবশ্য এটা মানুষের উপরে কাজ করতো আগের দুনিয়ার পৃথিবীতে। কিন্তু এখন এই দুনিয়াতে সেটা সবার উপরেই কাজ করে। কিন্তু শর্ত ড্রাকুলাকে একবার রক্ত খেতে হবে যাকে সে কমান্ড করবে তার। প্রিন্সেস এলিনাকে সে নিয়ে এসেছিলো তার প্যালেস এর রানী করার জন্য। কিন্তু প্রিন্সেস কিছুতেই রাজি হচ্ছে না। ড্রাকুলা এখানে যাদের উপরে তার নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা ব্যবহার করেছে সবার উপরেই কাজ করেছে, কিন্তু প্রিন্সেস এলিনাকে নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না সে। এজন্য তোমাকে সেখানে প্রয়োজন।(থর)
.
–একজনকে নিয়ন্ত্রন করা এটা কি খারাপ বিষয়? ড্রাকুলা তো এখানে যুদ্ধ ছড়াতে চাচ্ছে।(আমি)
.
–আমি ওর প্লান সঠিক করে তুলনা করতে পারবো না। সেটার জন্য তোমাকেই কথা বলতে হবে ওর সাথে।(থর)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে, আমাকে ওর কাছে নিয়ে যান।(আমি)
।।।
।।।
ড্রাকুলা প্রিন্সেস এলিনাকে কন্ট্রোল করে কি করতে চাচ্ছে বুঝতে পারছি না। সে নিজেই এতো শক্তিশালী, সে নিজেই রাজা হয়ে একটা রাজ্য চালনা করতে পারবে। কিন্তু সে এটার জন্য প্রিন্সেস এলিনাকে চুজ করলো কেনো? আর কি করতে চাচ্ছে সে সেটাও বুঝতে পারছি না। সব কিছু হয়তো তার সাথে কথা বলার পরই জানতে পারবো। আমি থরের বাম হাত ধরলাম। থর তার ডান হাত দিয়ে মিওনিরকে ধরলো এবং মিওনির তাকে উড়িয়ে নিতে লাগলো। অনেক স্পিডে আমরা উড়ে যাচ্ছি। ঠিক আলোর স্পিড মনে হবে। নিচের কিছুই আমি সঠিক করে ফোকাস করে দেখতে পাচ্ছি না। আপাতোতো আমার যাত্রা ড্রাকুলার প্যালেসে
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩৮
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
থরের সাথে আমি উড়ে যাচ্ছি অনেক স্পিডে। জানি না কোথায় ড্রাকুলার হোটেল রয়েছে। অবশ্য এখন আর হোটেল বলা যাবে না। সেটা একটা প্যালেস। আর সেটাই হয়তো ড্রাকুলার নতুন রাজ্যের ক্যাপিটাল হবে। যাইহোক থরের সাথে আমি উড়ে যাচ্ছিলাম এমন সময় থরের মিওনির হঠাৎ থেমে গেলো। আমি আর থর একদম নিচের দিকে পরতে লাগলাম। কি হলো কিছু বুঝতে পারলাম না। দুজন অনেক স্পিডে নিচে পরছি তখনি থর বলতে লাগলো।
.
–এই জায়গায় কিছু একটা আছে যেটার কারনে মিওনির উড়তে পারছে না।(থর)
.
–এটা কি ভালো খবর নাকি খারাপ?(আমি)
.
–অবশ্য খারাপ। এতো উপর থেকে পরছি, হাড় তো আমার কয়েকটা ভাঙবে। কিন্তু তোমার কি হবে সেটা নিয়ে ভাবছি।(থর হেসে বললো)
.
–এখন মজা করার সময় না।(আমি)
।।।
।।।
থর হেসে যাচ্ছে। এদিকে আমরা দুজনেই অনেক স্পিডে নিচের দিকে পরছি। নিচে পরলে আমার অবস্থা খারাপ হবে সেটা বোঝায় যাচ্ছে। তাই আমি বাম হাত দিয়ে ভ্যালির তলোয়ার বের করলাম। এবং সেটা দিয়ে মাটি থেকে উপর পর্যন্ত একটা পানির টর্নেডো বানালাম। যেটার উপরে আমরা পরার পরে ঘুরতে ঘুরতে মাটিতে আস্তে নেমে গেলাম।
.
–আমি তো ভাবছিলাম আমাদের অবস্থা এখানেই শেষ।(থর তার মিওনির উঠিয়ে বলতে লাগলো)
.
–হ্যা। আমার জন্য বেঁচে গেলেন।(আমি)
.
–আমি বুঝতে পারছি না, মিওনির কে তো আমি উঠাতে পারছি। কিন্তু মিওনির এর ভিতর আমার ক্ষমতা যাচ্ছে। এটা একদম সাধারন হয়ে গেছে।(থর)
।।।
।।।
থর তার মিওনিরকে উল্টিয়ে উল্টিয়ে দেখতে লাগলো। আর এদিকে ভ্যালি এবং ইগো আমাকে বলতে লাগলো,
.
–জ্যাক আসে পাশে আমি ড্রাগনদের ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পাচ্ছি।(ভ্যালি)
.
–তারমানে এখানে ড্রাগন ব্লেড আছে?(আমি)
.
–যে ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারছি তাতে বলা যাচ্ছে এখানে স্কাই ড্রাগন রাইকুয়া এবং থান্ডার ড্রাগন বোল্ট রয়েছে।(ইগড্রাসিল)
.
–আচ্ছা। ধন্যবাদ তোমাদের।(আমি)
.
–একটু সাবধানে থাইকো। এই পুরো শহরটা দুই ড্রাগনের ব্যারিয়ার দিয়ে ঘিরা রয়েছে। এখানে ড্রাগন স্পেল ছাড়া সাধারন কোনো ম্যাজিক পাওয়ার কাজে দিবে না।(ভ্যালি)
.
–আচ্ছা।(আমি)
।।।
।।।
ভ্যালি এবং ইগড্রাসিলের কথা শুনে বুঝতে পারলাম আমরা একটা খারাপ জায়গায় এসে গেছি। যেখানে আসা আমাদের ঠিক হয় নি। দুটো ড্রাগনের ব্যারিয়ার থরের মিওনিরকে ও সাধারন হাতুড়ি বানিয়ে দিয়েছে। থর তার মিওনির নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আমাদের কথা শুনতে পারে নি। আমি থরের কাছে গেলাম। এবং ড্রাগনদের ব্যাপারে সব কিছু এক এক করে থরকে বলতে লাগলাম। যাতে ব্যাপারটা সে বুঝতে পারে।
.
–ও তাহলে এই কথা, সকল ড্রাগন মারা গিয়েছে, শুধু শক্তিশালী ছয় ড্রাগন বেঁচে আছে তাউ আবার সেটা অস্ত্র হয়ে।(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–এরকম একটা অস্ত্র তো আমারও দরকার। মিওনির এর অযোগ্য কখনো হয়ে গেলে হয়তো সেটাই আমার কাজে দিবে।(থর)
.
–এতো সহজ নয়।(আমি)
.
–কেনো তুমি তো বললে কেউ তোমার অস্ত্র উঠাতে পারবে না। কিন্তু আমি তো তখন দুটোই তোমার কাছে এনে দিলাম।(থর)
।।।
।।।
আগের বিষয়টা আমি খেয়াল করি নি আসলেই আমি প্রিজনের মধ্যে আটকা থাকার পরে থর আমার ব্যাগসহ দুটো তলোয়ার আমার হাতেই তুলে দিয়েছিলো। যেটা আমি বাদে কেউই ব্যবহার করতে পারি না। আমি সবকিছু চেক করার জন্য থরের হাতে ভিরুদাকে তুলে দিলাম। ঠিকই থর উঠাতে পারলো, কিন্তু থরের হাতে সেটা সাধারন একটা তলোয়ার। যার মধ্যে কোনো ক্ষমতা নেই।
অবশ্য এটার লজিক আমি নিজেও দিতে পারছি না। ইগড্রাসিল এবং ভ্যালির ব্যাপারে কিছু বলি নি যে তারা আমার সাথে কথা বলতে পারে, তাই আপাতোতো তাদেরকে জিজ্ঞেস করতেও পারবো না। যাইহোক আমরা আগাতে লাগলাম।
।।।।
।।।।
আমরা একটা শহরের উপরে পরেছি, মূলত খোলা একটা মাঠের উপরেই পরেছি উপর থেকে। কিন্তু এটা একটা শহর। বিশেষ করে অনেক গরীব একটা শহর। আমরা জনগনের এলাকায় আসার পরই বুঝতে পারলাম এই শহরের অবস্থা সেরকম ভালো না, যেরকমটা অন্যগুলোর ছিলো। এখানের লোকজন মূলত অন্যরকম। তার একে অপরকে দেখতে পারে না। খাবারের অনেক অভাব এখানে। আমরা যেটার উপরে পরেছি সেটা খাবার চাষ করার মাঠ। কিন্তু অলসতার কারনে কেউ চাষ করে না এখন। আর সেটার জন্য এখানে লোকজন খাবারের অভাবেও থাকে সব সময়। জায়গাটা কিছুটা পরিচিত মনে হলেও আমি সঠিক মনে করতে পারছি না। আমি আর থর হাটছি শহরের বাসাবাড়ির মধ্য দিয়ে। সব লোকজন কিরকম আজব লুক নিয়ে দেখছে আমাদেরকে। আমার গায়ে দামী একটা পোষাক, আর থরের শরীরে আগের দুনিয়ার পোষাক যেটা এরা কখনো দেখে নি। এক হিসাবে কিছু কিছু লোকের চাউনি দেখে বুঝতে পারলাম তারা লুটতে চাচ্ছে আমাদেরকে। যাইহোক আমাদের বেশীদূর যেতে হলো না। আমার দেখা হয়ে গেলো একজন মহিলার সাথে, যাকে দেখার পর আমি বুঝতে পারলাম আমি এখন কোথায় আছি। আমি এখন আটশো দুই নং শহরে আছি। যেটা কিনা আমার নিজেরই শহর। এখানেই আমার জন্ম হয়েছে। যাইহোক সামনে আমার আম্মা দাড়িয়ে আছে। সে আমাকে দেখা মাত্রই বলতে লাগলো,
.
–জ্যাক তুমি কখন আসলে?(আম্মা)
.
–এইতো মাত্র।(আমি)
.
–আমরা তো আশায় ছিলাম যে তুমি আমাদের সাথে আরো আগে দেখা করতে আসবে, কিন্তু….(আম্মা)
.
–আমি সকল কিছু ভুলে গিয়েছিলাম যেটা আমার সাথে হয়েছিলো, শুধু আমার চেনা লোকদের মুখের ছবি এবং পড়া বই বাদে আমার কিছুই মনে ছিলো না।(আমি)
.
–ওওও বুঝতে পেরেছি, তাহলে সে তোমার উপরে মেমোরী কন্ট্রোল স্পেল ব্যবহার করেছিলো। আপনি কে? নিশ্চয় জ্যাকের পার্টনার?(আম্মা)
.
–আমার নাম থর। আমি পার্টনার না। অনেকটা জ্যাকের মাস্টার।(থর হাসতে হাসতে বললো)
.
–ওও।। আচ্ছা জ্যাক চলো বাসায় যাওয়া যাক তাহলে। এলেন এবং এলিন তোমাকে দেখে অনেক খুশি হবে।(আম্মা)
.
–হ্যা। আমিও তাদের সাথে দেখা করতে চাই।(আমি)
।।।
।।।
যদিও তাদের সাথে কাটানো আমার কোনো স্মৃতি মনে নেই। তারপরও আমি শুধু এইটুকু জানি আম্মার এবং দুটো বোন রয়েছে। এই মেমোরীর ব্যাপারটা আজব। আমার আগের দুনিয়ার স্মৃতি ফিরে আসলেও এখানে ভুলে যাওয়া গুলো আসছে না। যাইহোক আমি আম্মার সাথে হেটে হেটে যাচ্ছি। সাথে থরও আসছে। আম্মার সাথে আমার কথা হওয়ার পর বুঝতে পারলাম সেরকম টান নেই আমাদের মাঝে। কিন্তু কেনো এটা বুঝতে পারছি না। সন্তানদের প্রতি একটা টান থাকে মাতার সেটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু এতোদিন পর আমাকে দেখতে পেয়েও আমি সেরকম কোনো টান দেখতে পেলাম না। যাইহোক আমি আমার দুই বোনদের নিয়েও একই মনোভাব করতে ছিলাম। কিন্তু দুজন আমাকে দেখার পরই ঝরিয়ে ধরলো।
.
–জ্যাক এতোদিন পর আমাদের কথা মনে পরলো তোমার?(দুই বোন)
.
–আমি বলতে পারছি না কে কোনজন?(আমি)
.
–কেনো এখান থেকে যাওয়ার আগেই তো তোমাকে বলে দিয়েছিলাম আমাদের মধ্যে কোনটা কে? থাক আবার বলছি আমি এলিন এবং ও এলেন।(এলিন)
.
–ওওওও।(আমি)
।।।
।।।
দুজনের সাথে অনেকক্ষন গল্প করতে লাগলাম। থর কি করবে বুঝতে পারছে না। চুপচাপ বসে আছে। আম্মা কোথায় গেছে বুঝতে পারছি না। আমাদের এখানে দিয়ে সে উধাও হয়ে গেছে। এখনো তার কোনো খবর নাই। এদিকে আমি এলেন এবং এলিনকে আমার স্মৃতি হারানোর ব্যাপারে বলে দিয়েছি।
.
–দুইবার তোমার স্মৃতি হারায় কিভাবে?(এলেন)
.
–জানি না। হয়তো আমার মেমোরীতে লোড বেশী হয়ে যায়।(আমি)
.
–কেনো তোমার মতো তো আমাদের দুজনের ক্ষমতা রয়েছে এক বার কোনো জিনিস পড়লে মুখস্ত হওয়ার। আমাদের সাথে তো এরকম হয় না।(এলিন)
.
–কি তোমাদের কাছেও আছে?(আমি)
.
–হ্যা। এটা আমাদের পরিবারের জন্মগত ক্ষমতা।(এলেন)
.
–ওওও।(আমি)
.
–আচ্ছা আমাদের আম্মা কি করেন এখানে?(আমি)
.
–কেনো হঠাৎ এই প্রশ্ন?(এলেন)
.
–না তার ছেলে এতোদিন পর তার কাছে আসলো দেখা করতে, কিন্তু সে এখানে না থেকে কোথায় উধাও হয়ে গেলো।(আমি)
.
–আম্মা এরকম ছিলো না। কিন্তু তোমার জন্মের পর থেকে সে পুরো পাল্টে গেছে।(এলেন)
.
–আমার জন্মের পর থেকে?(আমি)
.
–হ্যা। ক্যাপিটালে যেহেতু ছিলে তারমানে জেনারেল এর সাথে নিশ্চয় দেখা হয়েছে তোমার?(এলিন)
.
–হ্যা। সে অনেকটা কথাও আমাকে বলেছে।(আমি)
.
–হ্যা। তিনি আমাদের বাবা। বিষয়টা তোমার থেকে আম্মা গোপন রাখতে বলেছিলো।(এলিন)
.
–কি হয়েছিলো তাদের মাঝে?(আমি)
.
–সেটা আমরাও জানি না। হঠাৎ তোমার জন্মের কিছুদিন আগেই সব কিছু বদলে যায়।(এলিন)
.
–তোমাদের কথা কিছুই আমি বুঝতে পারছি না।(আমি)
.
–যেদিন আম্মা জানতে পারলো যে তার আরেকটা বাচ্চা হবে, কিছুদিন সে অনেক খুশি ছিলো। আগে অনেক স্বাভাবিকও ছিলো সে। কিন্তু হঠাৎ যখন বাবা চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে, তখনি আম্মা পুরো পাল্টে যায়। আমাদের সাথে সেরকম কথা বলে না। এবং একা একায় তার সবটা সময় পার করতে শুরু করে।(এলিন)
.
–কি করে এটা দেখো নি তোমরা?(আমি)
.
–চেষ্টা করলেও আম্মা কোথায় যায় সেটা আমরা কখনো বের করতে পারি নি। সে সব সময় টেলিপোর্ট স্পেল ব্যবহার করে চলে যায়। তাকে আমরা এই পুরো শহর খুজেও দেখেছি কিন্তু এখনো বের করতে পারি নি সে কোথায় যায়।(এলেন)
.
–ওওও(আমি)
.
–অনেক মিস্ট্রিয়াস তোমার আম্মা জ্যাক।(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
।।।
।।।
হঠাৎ একটা ভূমিকম্প শুনতে পেলাম। বাইরে থেকে কিছু একটা ফিল করতে পারলাম। আমি এবং থর সোজা দৌড়িয়ে বাসা থেকে বের হলাম। সামনের বাসা পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে। এবং সেই ধ্বংসের মধ্যে দাড়িয়ে আছে একটা হুড পরা মেয়ে। তাকে দেখে বুঝতে পারলাম সে জেসি। আজকে সে হুড টা নামিয়ে ফেললো। ওর চেহারা আমি আজকে একদম ক্লিয়ার ভাবে দেখতে পাচ্ছি। সেই একই চেহারা, একই লুক। সবই একরকম। আমি দাড়িয়ে ছিলাম। আমাকে দেখে কিছুটা হেসে দিলো।
.
–ওয়াও। দেখো কে এখানে? আমার ভাই জ্যাক এবং থর।(জেসি)
.
–তাহলে এটা জেসি?(থর)
.
–হ্যা।(আমি)
.
–জেসি তুমি যে অন্যায় করেছো সেটা থেকে বেঁচে যাবে এটা ভেবো না। তারপরও আমি ধন্যবাদ তোমাকে এতো সুন্দর একটা দুনিয়া তৈরীর জন্য।(থর)
.
–থর এটা কিরকম কথা?(আমি)
.
–যদিও দুঃখ লাগছে আমার এজগার্ডের জন্য। কিন্তু সমস্যা নাই আমি এখানেই আমার এজগার্ড তৈরী করে নিবো।(থর)
.
–এটা কোনো কথা। এখানে আমরা একন হিরো। আর সামনে জেসি এখন ভিলেন। আমাদের লড়তে হবে।(আমি)
.
–আমার মিওনির এখন কাজ করছে না এজন্য আমি আউট। পুরো ময়দান এখান তোমার।(থর শিষ দিতে দিতে এক পাশ কেটে হেটে যাচ্ছে)
।।।
।।।
আমি বুঝতে পারলাম থর লড়াই এ যেতে চাচ্ছে না। ওর কাজ কর্ম দেখে মনে হচ্ছে ভয় পাচ্ছে জেসিকে দেখে। জেসির ম্যাজিক পাওয়ারও হাই লেভেল এজন্য ভয় করাই কথা।
.
–তাহলে এখন আমি আর তুমি ভাইয়া?(জেসি)
.
–একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি?(আমি)
.
–হ্যা।(জেসি)
.
–কে আপনি? আমাকে ভাই বলছেন?(আমি চাইছি না জেসি জানুক আমার আগের দুনিয়ার স্মৃতি মনে পরেছে)
.
–নাটক করে লাভ কি? থর এখানে মিওনির হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে তোমার পাশে। এরমানে তো ঠিকই বোঝা যাচ্ছে তোমার স্মৃতি ফিরে এসেছে।(জেসি)
.
–যাক তাহলে নাটক করে লাভ হবে না। তো কি করতে এসেছো এখানে?(আমি)
.
–আগে বলো রাগ করে আছো নাকি আমার উপরে?(জেসি)
.
–আগের দুনিয়াতে কি হয়েছে সেটার কোনো কিছু এটার সাথে সম্পর্কিত নয়। তবে এখানে যা হবে তার সাথে সম্পর্কিত হবে। তাই এখানে খারাপ কিছু করলে সেটার জন্য রাগ তো করবোই।(আমি)
.
–ওওও এই বাসার জন্য আমি দুঃখিত। আসলে টেলিপোর্ট হয়ে উপরেই উড়ছিলাম। কিন্তু আমার ম্যাজিক কাজ করা বন্ধ হয়ে গেলো। তখনি নিচে পরে গেলাম। এবং বাড়ি ভেঙে গেলো।(জেসি)
.
–আমি অনেক আগে থেকে লক্ষ করছি তুই আমার পিছনে লেগে আছিস। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই তোকে দেখতে পাই। এবার আমাকে দিয়ে কি চাস?(আমি)
.
–আমি তোকে দিয়ে কিছু চাই না ভাইয়া, মূলত আমি যেটা চেয়েছিলাম সেটা আমি পেয়েই গেছি। কিন্তু এখানে আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে আগে কিংবা পরে তুই চলে আসছিস।(জেসি)
.
–তোর মুখে ভাইয়া ডাক এখন কেমন জানি লাগে।(আমি)
.
–হ্যা লাগবেই, এখন আমাদের দুজনেরই নতুন পরিবার আছে। নতুন উদ্দেশ্য আছে।(জেসি)
.
–তাহলে আমি যেটা বুঝতে পারছি এখানে কিছু একটা উদ্দেশ্যের জন্য এসেছিস?(আমি)
.
–হ্যা। একজন ডেভিল হওয়ায় আমার মন, শরীর সব কিছু আমার ডেভিল কিং এর। আর তার আদেশ আমাকে মানতেই হবে।(জেসি)
.
–কি চাচ্ছে ডেভিল কিং?(আমি)
।।।
।।।
হঠাৎ তখনি একটা লাইটনিং স্পেলের মতো কিছু একটা জেসিকে আঘাত করলো। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম থর আঘাত করেছে। যেহেতু থরকে গড অফ থান্ডার বলা হয়। তাই লাইটনিং এর ক্ষমতা তার কাছেই থাকা উচিত। কিন্তু পিছনে তাকিয়ে লক্ষ করলাম আমার দুই বোন। একজনের কাছে একটা ধনুক রয়েছে, যেটা দিয়ে ম্যাজিকাল লাইটনিং তীর বের হয় সুতা টান দিলে। আর আরেকজন এর কাছে রয়েছে দুটো মাঝারি সাইজের তলোয়ার, যেটার হাতল একটা লম্বা চেইন দিয়ে বাধা। সে তার দুটো তলোয়ার থেকে একটা তলোয়ার ছুড়ে মারলো জেসির দিকে। তলোয়ারটার সাথে একদম জড়ো বাতাস যাচ্ছিলো, যেটা সামনের সকল কিছু উড়িয়ে নিচ্ছিলো। জেসি শরীরে ছুড়িটা আঘাত করবে তার আগে সে পিছ দিক দিকে ব্যাক ফ্লিপ করলো অনেকগুলো। এবং সর্বশেষ ব্যাকফ্লিপ অনেক উচু করে পিছনের একটা গাছের খুটির উপরে দাড়িয়ে পরলো। আমি এখন বুঝতে পারলাম আমার দুই বোনের কাছেই রয়েছে দুটো ড্রাগনের ক্ষমতা।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৩৯
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি দাড়িয়ে আছি স্থির ভাবে। আমার দুইবোনের কাছে রয়েছে দুটো ড্রাগনের ক্ষমতা। একটা যেটা দুটো তলোয়ারের আকার নিয়ে আছে সেটা স্কাই ড্রাগন রাইকুয়া। তার ক্ষমতা হলো বায়ুর। আর একজনের কাছে ধনুক আকারে আছে থান্ডার ড্রাগনের ক্ষমতা যার কাছে থান্ডার এর ক্ষমতা রয়েছে৷ যাইহোক দুজন আমার পাশে এসে দাড়ালো৷ আমি তাদের কিছু বলতে যাবো, তার আগেই তারা জেসির দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,
.
–কোনো ডেভিল আজ পর্যন্ত আমাদের শহরে পা রাখে নি, আজ কি মনে করে একটা ডেভিল এখানে আসলো?(এলিন)
.
–আমি একটা গুরুত্বপূর্ন কথা বলছিলাম। আর তোমরা এসে সেটাই হাড্ডি বাজালে। যাইহোক আমি এখানে যে কাজের জন্য এসেছিলাম সেটা প্রথমে আমাকে করতে হবে। কিন্তু সেটার জন্য প্রথমে এই ড্রাগন ব্যারিয়ার আমাকে বন্ধ করতে হবে। এটার জন্য ম্যাজিক পাওয়ার ব্যবহার করতে পারছি না।(জেসি)
।।।
।।।
জেসির কথা শুনে আমার দুই বোনই অবাক হয়ে গেলো। কেউ হুট করেই থান্ডার এবং স্কাই ড্রাগনের ব্যারিয়ার সম্পর্কে জানে পারবে এটা তারা হয়তো আশা করে নি। যাইহোক,
.
–কি উদ্দেশ্যে এসেছো এখানে?(এলেন)
.
–আমার উদ্দেশ্য না হয় পরে কোনোদিন বলা যাবে।(জেসি)
।।।
।।।
জেসি সেখান থেকে লাফ দিলো। এবং আল্ট্রা স্পিডে চলে আসলো এলেন এর কাছে। এলেন এর কাছে রয়েছে ধনুক এবং এলিন এর কাছে রয়েছে দুটো তলোয়ার। জেসি তার হাত থেকে একটা তলোয়ার বের করলো। দেখে সাধারন তলোয়ারই মনে হচ্ছিলো। যেহেতু তিনজনই আমার বোন তাই আমি তাদের লড়াই দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখতে পারছি না। জেসি এই দুনিয়ায় আমার আপন বোন না হলেও আগের দুনিয়ায় ও আমার আপন জমজ বোনই ছিলো। আমি আমার দুটো তলোয়ার দুই হাতে নিয়ে সোজা দাড়িয়ে পরলাম এলেন এবং এলিন এর সামনে। জেসি ওর তলোয়ার নিয়েই আসছিলো আঘাত করতে। আমি আমার তলোয়ার দুটো ক্রস করে সামনে তুলে ধরলাম। জেসির আঘাত আমার তলোয়ারে লাগলো। এবং থেমে গেলো। পিছন থেকে এলেন এবং এলিন ও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
–জেসি আমি আগের দুনিয়ায় তোকে কিছু বলতে পারি নি। কিন্তু এখানে সেটার সুযোগ হারাবো না। আগের টায় যা করেছিস আমি ভুলে গেছি সেটা সম্পর্কে। কিন্তু এখানে তেমন কিছু করলে আমি মাফ করতে পারবো না।(আমি)
.
–আমার কিছু করার নেই। ডেভিল কিং এর আদেশ আমার মানতেই হবে। তার হুকুম আমি কিছুতেই অমান্য করতে পারবো না।(জেসি)
।।।
।।।
জেসি এটা বলে আমার উপরেই আঘাত করতে লাগলো। এতোক্ষন ওর চোখ হালকা কালো থাকলেও এখন পুরো লাল হয়ে গেছে। ওর চোখের মনি কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আমি এরকম দেখি নি আগে। তারপরও ভয় লাগছে কিছুটা। অনেক জোরে চিল্লানি দিলো ও। ওর তলোয়ার দিয়ে আরেকটা আঘাত করলো। আমিও দুটো দিয়ে আটকিয়ে রাখলাম। কিন্তু একটা লাথি দিলো আমার বুকে ব্যাক ফ্লিপ দিয়ে, যেটার ফলে আমি দূরে গিয়ে পরলাম। মাথায় কিছুটা আঘাত লেগে যায় একটা পিলারে বাড়ি খেয়ে। যার ফলে আমি কিছুক্ষনের জন্য বেহুস হয়ে গেলাম। কিছুক্ষন পর আমার জ্ঞান ফিরলো। আমি একটা লোহার পিলারের সাথে বারি খেয়েছিলাম। মাথার ক্ষত হিল গেছে আপাতোতো। আমার পাশেই থর বসে আছে। আর দূরে আমার দুই বোন এলিন এবং এলেন ও পরে আছে। দুজনের অবস্থাও তেমন ভালো না। অনেক গুরুতর আহত হয়েছে তারা দুজনেই। কি হয়েছে এখানে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
.
–জেসি তার নিজের কন্ট্রোলে নেই।(থর)
.
–কি?(আমি)
.
–হ্যা। তোমাকে লাথি দেওয়ার সময়ই ওর শরীর থেকে ওর নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে যায়। ও অন্য রকম একটা জিনিসে ট্রান্সফর্ম হয়ে যায়।(থর)
.
–কোথায় ও এখন?(আমি)
.
–উপরে দেখো তোমার আম্মার সাথে লড়াই করছে।(থর)
।।।
।।।
আমি উপরে তাকিয়ে দেখতে পারলাম আমার আম্মা কোনো প্রকার ডানা ছাড়ায় আকাশে উড়ছে। একজন মানুষ হয়ে এভাবে উড়া সম্ভব আমি কখনো ভাবি নি। আর জেসিকে দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। জেসির পুরো শরীর ট্রান্সফর্ম হয়ে গেছে একটা পুরো ডেভিল মনস্টার এর রূপে। তার শরীরের আকার বেড়ে গেছে। হাত এবং পায়ের নখগুলো বড় হয়ে গেছে। শরীরের সব মাংসপেশীও মোটা হয়ে গেছে। চেহারা আর আগের মতো সুন্দর লাগছে না। এখন একদম একটা মনস্টারের মতোই লাগছে, যেরকমটা আগের দুনিয়ায় মনস্টার ফর্ম ছিলো। যদিও এই দুনিয়ায় কেউই মনস্টার ফর্ম ব্যবহার করতে পারে না। কিন্তু জেসি বর্তমানে আছে মনস্টার ফর্মে, আর এখন ওর শরীরের উপরে ওর কোনো নিয়ন্ত্রন নেই। আমি একটা জিনিসই বুঝতে পারছি না। থর এইভাবে দাড়িয়ে আছে কেনো। ও লড়াই এ যাচ্ছে না। ও কি ভয় পাচ্ছে, নাকি নতুন দুনিয়ার লড়াইয়ে যেতে চাচ্ছে না। যাইহোক এটা পরে জানা যাবে।
।।
।।
আমি তাদের দুজনের পুরো লড়াই দেখতে পারি নি। আমার আম্মা অনেক হাপিয়ে গেছে। বুঝতে পারলাম লড়াই কোনদিকে যেতে চলেছে। জেসি কাছে এতোটা ক্ষমতা থাকবে সেটা আমি বুঝতে পারি নি। জেসি আমার আম্মার গলা ধরলো এবং নিজের স্বাভাবিক ফর্মে চলে আসলো। এরপর ডান হাত দিয়ে আম্মার মাথায় হাত রাখলো। আমি বুঝতে পারলাম বিষয়টা খারাপে দিকে যাচ্ছে। এতোক্ষনে ড্রাগন ব্যারিয়ারও ভেঙে গেছে। তাই আমি সোজা আমার শরীরের ডান অংশ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিলাম। এবং আমার ডান পা এবং ডান হাতের তালু দিয়ে সরু ভাবে আগুনকে অনেক স্পিডে বের করতে লাগলাম। এতে করে লুকের সাথে লড়ার সময়ের মতো আমি উড়তে লাগলাম। আমি আগুনের স্পিড অনেক বাড়িয়ে দিলাম। যার ফলে আমার উড়ার স্পিডও বেড়ে গেলো। আমি আমার পিঠের হাত বের করলাম দুটো। এবং দুটোকে একসাথে করে বিশাল একটা হাত বানালাম। যেটা দিয়ে আমি ঘুষি মারলাম সোজা উড়ে জেসিকে।
।।
।।
জেসি আমাকে খেয়াল করে নি। ও আমার আম্মার মাথায় হাত দিয়ে কিছু একটা করার জন্য বিজি ছিলো। আর সেই সুযোগে আমার দুটো হাত দিয়ে বানানো বিশাল হাতের ঘুষি খেয়ে জেসি একদম নিচের দিকে অনেক স্পিডে পড়লো। জেসিও লড়াই করতে করতে অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। আর আমার বিশাল একটা আঘাতে জেসি একদম রাস্তা ভেঙে গর্তের মধ্যে পরে গেলো। আম্মা অজ্ঞান হয়ে গেছে পরিমানের থেকে বেশী ম্যাজিক পাওয়ার ব্যবহার করার জন্য। আমি আমার দুহাত দিয়ে তাকে ধরে নিচে নামিয়ে দিলাম আস্তে আস্তে। যদিও আমার উড়ার বিষয়টা আমি এখনো ঠিকমতো কন্ট্রোল করতে পারি নি, তারপরও ঠিকমতোই আমি নিচে নেমে আসলাম।
।।।
।।।
আমি জেসির পরার জায়গায় এগিয়ে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম জেসি চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।
.
–রাগ হচ্ছে তোর অনেক তাই না? হবেই না কেনো নিজের আম্মা, বোনদের উপরে কেউ আক্রমন করলে তো রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক তাইনা?(জেসি)
.
–তুই বিষয়টা ভালো করেই জানিস। তারপরও এটা কেনো করলি? আগের জিনিসের জন্য না হয় তোকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি, কিন্তু তুই এখানেও যদি একই রকম অপরাধ করিস, কয়বার তোকে আমি ক্ষমা করবো?(আমি)
.
–সেন্টিমেন্টাল হস না। তোর নতুন দুইন বোন এবং আম্মার সাথে লড়ে আমার অনেকটা ম্যাজিক পাওয়ার হারিয়ে গেছে। আর তোর ঔ হাতগুলোর আঘাতে আমার পুরো ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হয়ে গেছে। এখন শরীর নারানোর মতো শক্তিও আমার নেই। এটাই সুযোগ আমাকে মেরে ফেল।(জেসি)
.
–কি বলছিস তুই?(আমি)
.
–এই জীবন যতদিন থাকবে ততদিন আমি ডেভিল কিং এর গোলামি করতেই থাকবো। তার আদেশ মানা ছাড়া আমার কোনো উপায় নাই। তাই আমি চাই তুই আমাকে মেরে ফেল।(জেসি)
।।।
।।।
আমি জেসির কাছে গেলাম। একটা ভাই হয়ে তার ছোট বোনকে কখনি কষ্টে রাখা যায় না। যদিও আমার আগের দুনিয়ার বোন ও। কিন্তু এখনো আগের দুনিয়ার স্মৃতি আমার মাথায় টকবগ করছে। তাই ভাই হয়ে নিজের বোনকে আমি কষ্ট দিতে পারি না। আমি জেসির কাছে গিয়ে ওর পেটে হাত রাখলাম। এবং ওকে হিল করতে লাগলাম।
.
–কি করছিস এটাই তোর সুযোগ আমার কাছ থেকে মুক্ত হওয়ার।(জেসি)
.
–হয়তো তুই জানিস না একটা বড় ভাই কিংবা বোন হওয়াটা কিরকম হয়। নিচের চোখের সামনে তিন বোনদের রক্তাক্ত শরীর দেখাটা কিরকম সেটাও হয়তো বুঝবি না। নিজের শরীরের ক্ষতের থেকে এই জিনিসটা অনেক কষ্ট দেই।(আমি)
।।।
।।।
আমি জেসিকে কিছুটা হিল করতে লাগলাম। আর সাথে সাথে আমার পিঠ থেকে আমি দুটো হাত বের করলাম। এবং দুটোর একটা এলেন এবং আরেকটা এলিন এর মাথায় রাখলাম। এবং তাদের দুজনকেও হিল করতে লাগলাম। আম্মার শরীরে তেমন ক্ষত নাই, শুধু ম্যাজিক পাওয়ার শেষ হওয়ার ফলে সে অজ্ঞান হয়ে গেছে, কিছুটা রেস্ট নিলে সে একাই ঠিক হয়ে যাবে। হঠাৎ জেসি আমাকে বলতে লাগলো,
.
–অনেক কিছুই তোকে বলার ছিলো, কিন্তু হয়তো এই দুনিয়াতেও সেটা বলার সুযোগ হবে নারে ভাইয়া।(জেসি)
.
–সবই আস্তে আস্তে বলতে পারবি।(আমি)
।।।
।।।
আমি জেসিকে হিল করতে ছিলাম। কিন্তু হঠাৎই ও যেখানে শুয়ে ছিলো সেটার নিচে একটা পোর্টাল খুললো। এবং জেসিকে দুটো হাট ভিতরে টেনে নিয়ে গেলো। জেসি যাওয়ার আগে শুধু একটা হাসি দিলো। হাসিটা বানানো ছিলো সেটা আমি বুঝতে পারছি। ওর কথার মধ্যেও অনেক রহস্য ছিলো। যার কিছুটা আমার মাথায় ঢুকলো না। কিছু একটা বলতে চাই জেসি আমাকে। কিন্তু বলতে পারছে না হয়তো। আমি উঠে চলে দাড়ালাম। থর আমার কাছে এসে দাড়ালো। আমার মন অনেকটা ভেঙে গেছে। যদিও আমার জেসির উপরে রাগ হওয়ার কথা। কিন্তু ওর মুখ দেখলে আমার মনেই হয় না ও এরকম কিছু নি ইচ্ছায় করতে চাইবে। আগের দুনিয়ায় জেসির সাথে যতটা দিন আমার কেটেছে আমি এটা ভালোভাবেই বলতে পারি ওর মতো সুন্দর মনের মতো কেউ হতে পারে না। কিন্তু তারপরও বিষয়টার মধ্যে অনেক রহস্য রয়েছে। ও ডেভিল কিং এর কথা উল্লেখ করেছিলো। আমার মনে হচ্ছে এই ডেভিল কিং এর সাথে আগের দুনিয়ায় জেসির কোনো একটা লিংক ছিলো। সবই কোনোরকম এখন আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। এসব জিনিসে পরে বিস্তারিত যাওয়া যাবে।
.
–আপনার তো মিওনির এখন কাজ করছে থর, তাহলে এই লড়াই তো চাইলেই থামাতে পারতেন।(আমি)
.
–দেখো চাইলেই আমি জেসিকে মিওনির ছাড়াই আটকাতে পারতাম। কিন্তু তাতে আমার কাজটা অন্যায় হয়ে যেতো। আমি এই দুনিয়াতে জন্ম নেই নি এখনো, তাই এখানে লড়াই করাটাও আমার ঠিক হবে না।(থর)
.
–এটা কি রকম কথা?(আমি)
.
–সঠিকভাবে বলতে গেলে এই নতুন দুনিয়ার ক্ষমতার লেভেল অনেক কম আমাদের আগেরটা থেকে। আগের দুনিয়ায় সবাই ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারতো না। কিন্তু এখন সবাই পারে ম্যাজিক ব্যবহার করতে।(থর)
.
–আপনার কথা আমি বুঝতে পেরেছি। সবার মাঝে ম্যাজিক এই দুনিয়াতে ভাগ হয়ে যাওয়ার ফলে আগের রিয়েলিটি এবং এই রিয়েলিটির পাওয়ার লেভেল কমবেশী হয়ে গেছে। এটাই তো বলতে চাচ্ছেন?(আমি)
.
–হ্যা। এখন ড্রাকুলা, লোকি এবং আমার জন্য এটা অনেকটা পৃথিবীতে আসার মতো হয়ে গেছে। যেখানে ম্যাজিকাল ক্ষমতা দিক দিকে সবার উপরে আমরাই।(থর)
.
–এখন বুঝতে পেরেছি আপনি কেনো কোনো লড়াই এ যেতে চাচ্ছেন না।(আমি)
.
–হ্যা।(থর)
.
–তো এখানে তো আপনাদের বোরিং লাইফ যাবে।(আমি)
.
–মোটেও না। বরং এই দুনিয়া আমাদের অনেক ইন্টারেস্টিং লেগেছে। ড্রাকুলা চাচ্ছে প্রিন্সেস এলিনাকে রানী বানিয়ে একটা রাজ্য তৈরী করাতে, যেখানে সে সুন্দর একটা স্কুল বানিয়ে সেটার শিক্ষক হবে। লোকি তার নিজের চিন্তায় আছে। এবং আমিও আমার গোল পেয়ে গেছি।(থর)
.
–আপনি কি করবেন?(আমি)
.
–আমি এখানে এজগার্ড তৈরী করবো। যেটার রানী হবে তোমার বোন এলেন😉।(থর)
.
–কি?(আমি)
.
–হ্যা। আমি থর গড অফ থান্ডার আমার রানী হিসাবে তো গডেস অফ থান্ডারই প্রয়োজন😎।(থর)
.
–😱😱😱(আমি)
.
–অবাক হচ্ছো কেনো? এই দুনিয়াতে যাতে বোর না হয় তার জন্য তো রাজ্য পরিবার সবই প্রয়োজন।(থর)
.
–হ্যা হ্যা। কোনো সমস্যা নাই।(আমি)
।।।
।।।
থরের চরিত্র এরকম প্লে বয় হবে সেটা বুঝতে পারি নি। আমার বড় বোনের উপরে লাইন মারতে চাচ্ছে তার উপরে সেটা আমাকে বলছে আগে। যাইহোক আমি এতে মানা করার কেউ না। আমার বোন তাতে রাজী থাকলে আমিও রাজি। অনেকক্ষন হিল করার পর এলেন এবং এলিন উঠে গেলো। আমি তাদেরকে নিয়ে বাসার মধ্যে ঢুকলাম। আম্মাকে তার রুমের মধ্যে শুইয়ে দিলাম। তার বিশ্রামের প্রয়োজন।
.
–ঔ ডেভিলটা চলে গেছে তাহলে? জ্যাক তোমার কিছু হয় নি তো?(এলিন)
.
–না আপু, আমি ঠিক আছি।(আমি)
.
–আমি বিশ্বাস করতে পারি নি, আমাদের দুটো ড্রাগনের ক্ষমতা থাকার পরেও আমরা দুজন একটা ডেভিলকে হারাতে পারি নি।(এলিন)
.
–জ্যাক তোমার কাছে তো দুটো ড্রাগন আছে তাই না?(এলিন)
.
–হ্যা। কিন্তু তোমাদের দুটো পেলে কিভাবে তোমরা?(আমি)
.
–এই দুটো আমাদের নানার কাছে ছিলো। আমাদের দুজনের বয়স যখন এক বছর তখন আমাদের নানা এখানে আসে এবং তার কাছ থেকেই আমরা দুজন দুটো তলোয়ার পায়।(এলেন)
.
–আমাদের সঠিক মনে নেই, কিন্তু আম্মা বলেছিলো যে আমরা দুটো তলোয়ার হাতে নেওয়ার পর সেটা থেকে আলো বের হতে শুরু করে। এবং দুটো তলোয়ারেরই রূপ বদলে যায়। এলেন এর টা ধনুক হয়ে যায় এবং আমারটা দুটো তলোয়ার হয়ে যায় যেটা চেইন দিয়ে আটকানো থাকে।(এলিন)
.
–কিন্তু তোমার দুটো পেলে কিভাবে?(আমি)
.
–এটা অনেক বড় কাহিনী।(আমি সব বলে দিলাম)
.
—তাহলে ডেভিলটাকে হারালো কে? তোমাকে তো বেহুস হয়ে যেতে দেখলাম?(এলেন)
.
–জ্যাকের মাস্টার হিসাবে আমি ওর উপরে কনফিডেন্ট ছিলাম যে ও হারাতে পারবে। কিন্তু সবাই অজ্ঞান হওয়ার পর আমাকেই হারাতে হলো ডেভিল তাকে। ডেভিলটাকে মারতে গিয়েছিলাম তার আগেই সে পালিয়ে যায় পোর্টাল দিয়ে।(থর)
।।।
।।।
আমি থরের দিকে তাকালাম। এতো বড় মিথ্যা কথা কেউ বলতে পারে সেটা আমি আজ জানতে পারলাম। কিন্তু তার উদ্দেশ্য যে আমার বোনের সাথে ফ্লার্ট করা সেটা আমি বুঝতে পারলাম। এটা ড্রাকুলার মতো কিডন্যাপ করার মতো লোক না। বরং আস্তে আস্তে মন জয় করার লোক। তারপর দেখা যাক কি হয়।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।