ভ্যাম্পায়ার কুইন ২ পর্ব-৫৬+৫৭

0
12

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৫৬
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
দেখতে দেখতে আরো দশটা দিন কেটে গেলো। এর মাঝে আমাদের রাজ্যের অনেকটা উন্নয়নও হয়েছে। ত্রিশটার মতো ঘর বানানো শেষ হয়েছে। এবং সেই সাথে ডয়ারফসরা প্যালেসের কাজ ও শুরু করে দিয়েছে। আর ঘর তৈরী হওয়ার পর বাইরে থেকে লোকজনও আসছে এদিকে। আপাতোতো বেশ কয়েকজন আমাদের রাজ্যে থাকতে এসেছে, অবশ্য তাদের আনার জন্যও একটা কাজ করতে হয়েছে। আমি এবং হ্যারি তিনটা রাজ্যে গিয়েছিলাম, ইগড্রোলিয়া, হিমরার এবং এ্যালকোর্টে। যেখানে গিয়ে অনেক গুলো পোস্টার বিভিন্ন জায়গায় লাগিয়ে দিয়ে এসেছি। পোস্টারে আমাদের রাজ্যের সম্পর্কে ছিলো, যেখানে প্রজাদের অনেক সুবিধার কথা বলা হয়েছিলো। এজন্য বেশ অনেকজনই আমাদের রাজ্যে এসেছি। আমার ধারনা আরো অনেকে আসবে। এমনিতেও অনেক সময়ের পথ এখানে আসতে। আর দ্বিতীয়ত, কেউ চাইলেই অন্য রাজ্যে গিয়ে থাকতে পারে না। অন্য রাজ্যের অধিবাসী হতে হলে নিজের রাজ্যে আর ফেরত যাওয়া যাবে না। তবে যারা তাদের রাজ্য থেকে বিরক্ত বোধ করে তারা আমাদের রাজ্যেই চলে আসবে। আমার রাজ্য সমস্ত গোত্রের প্রানীর জন্য খোলা থাকবে। যেখানে কোনো গোত্র নিজেদের বড়াই করতে পারবে না। সবার সমান অধিকারই থাকবে। তারপরও এখন নিজের রাজ্য বলা চলে না এটাকে। কারন এটা টেকনিক্যাল ভাবে আমার রাজ্য হলেও সবার সামনে এটা ভ্যাম্পয়ার কুইন এলিহার রাজ্য। তাই আমাকেও সেরকম ভাবতে হবে।
।।।
।।।
এই দশদিন সময়ের মাঝে আমি আরো দুজন বিশপের খোজ করতে পেরেছি। যাদেরকে আমি আমার রাজ্যে নিয়ে এসেছি। দুজনের একজন হচ্ছে একজন মেয়ে, যে কিনা এন্জেল। তাকে আমি এ্যারসাক থেকে ধরে নিয়ে এসেছি। অবশ্য এন্জেল ফর্মে আমার এ্যারসাকে টেলিপোর্ট হতে কোনো সমস্যা হয় না। যদিও মেয়েটাকে আমি ধরে আনি নি, সে নিজেই আমার রূপে মুগ্ধ হয়ে চলে এসেছে আমার সাথে। এন্জেল ফর্মে আমি দূর থেকে শক্তিশালী ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করতে পারি। তাই বিশপ খুজতে আমার সমস্যা হয় নি। এন্জেল বিশপের নাম ইকারেস। এন্জেল জেনারেল লুকের কন্যা সে। আমি দেখেছিলাম লুকের শরীরে অনেক শক্তিশালী ক্ষমতা ছিলো। আর তার কন্যার কাছেও যে ক্ষমতা থাকবে না সেটা মানা যায় না। তাই তাকে এ্যারসাকে গিয়ে আমি নিয়ে এসেছি। অবশ্য তাকে আমার রানীর বিশপ হওয়ার কথা বলার সাথেই সে রাজি হয়ে যায়। সে নাকি আমার চেহারার উপরে পাগল হয়েছে, এবং আমাকে বিয়ে করতে চাই। জানি না এন্জেল ফর্মে মেয়েরা এতো পাগল হয় কেনো। মানুষের ফর্মে থাকলে দুজন ছাড়া তো কেউই কথায় বলতে চাই না।।।।
।।।।
।।।।
যাইহোক আমাদের দুটো বিশপ হয়েছে, একজন হলো এন্জেল ইকারেস। যে কিনা আগের দুনিয়ায় শক্তিশালী একটা কুইন ছিলেন। যে ডেভিল কিং এর সাথে লড়াই এ প্রত্যেকবারই জিতেছেন। আর দ্বিতীয় বিশপ হলো একজন সাধারন মানুষ। হ্যা একজন সাধারন মানুষের মাঝে আমি এতো ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করেছি যেটা আমাকে অবাক করে দিয়েছে। তার নাম লুইস। অবশ্য এই দুনিয়াতে সবাই তার আগের দুনিয়ার ফর্মে জন্ম নেই নি। কিছু কিছু লোক আছে যাদের ফর্ম চেন্জ হয়ে গেছে। যেমন এই লুইস। সে আগের জন্মে একজন ডেভিল ছিলো। এবং ডেভিল কিং এর একজন জেনারেল ছিলো। অবশ্য আমারো জেনারেল ছিলো। সে এই দুনিয়ায় জন্ম নিয়েছে একজন মানুষ হয়ে। এরকম হাজারে একজন কিংবা দুইজন দেখা যায়। যাদের ফর্ম চেন্জ হয়েছে এই দুনিয়ায়। তবে এ সম্পর্কে তারা জানে না, তাই চিন্তা করার কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। যায়হোক আমাদের রাজ্যে দুটো বিশপ এসেছে আরো, যাদের একজন হলো এন্জেল এবং একজন মানুষ। তিনজন বিশপই আমি আপাতোতো রাখতে চাই। কারন একজন রুক যদি একটা পর্বত ভেঙে দিতে পারে, তাহলে বিশপদের ক্ষমতা আমার বোঝা হয়ে গেছে। বেশী বিশপ রাখলে সেটা সমস্যা হবে পরের জেনারেশন এর জন্য।
।।।
।।।
আমি শুধু রুক জোগাড় করি নি। সেই সাথে রাজ্যের জন্য মোট ত্রিশটা নাইট ও জোগাড় করেছি এই সময়ের মধ্যে। অবশ্য তাদেরকে জোড় করে আনতে হয়েছে আমাদের রাজ্যে। কিন্তু তারা এখানে আসার পর নিজেদের ইচ্ছামতোই থাকতে রাজি হয়েছে, তাই তাদেরকে নিয়ে আর চিন্তার বিষয় আমার নেই।
।।।
।।।
আপাতোতো আমি প্যালেসের কাজে নিযুক্ত হয়েছি। বিভিন্ন কাজে ডয়ারফসদের সাহায্য করছি। ব্লাক স্মিথ এখানে এসেছে বলে সেই খবর শোনার পর আরো অনেক ডয়ারফস আমাদের রাজ্যে বসবাস করার জন্য রাজি হয়েছে, যারা একদিন পরই পরিবার সহ এদিকে চলে আসবে। দেখতে দেখতে আমাদের রাজ্যও একদম শূন্য থেকে বড় হচ্ছে। রাজ্যে আপাতোতো কোনো কিছু বেচাকেনা শুরু হয় নি। তবে সেটাও শুরু হবে। কিছুক্ষন কাজ করার পরে আমাদের একটা মিটিং বসলো। প্যালেসটার কাজ এখনো চলছে। প্যালেসটা নির্মান হচ্ছে সেই ভাঙা বাড়ির জায়গাতেই। যেটাকে অনেক সুন্দর করে তৈরী করা হবে। তবে সেটা পরে হবে। আগে মিটিং এ যাওয়া যাক। মিটিং এ আপাতোতো কুইন, আমি, তিনজন বিশপ, ব্লাক স্মিথ যে কিনা রুক এবং পাচজন নাইট আছে। ত্রিশটা নাইটের মধ্য থেকে পাঁচজন প্রধান নাইট সিলেক্ট করে দিয়েছে হ্যারি, যারা বাকিদের সমান ভাগে ভাগ করে নিয়ে আদেশ দিবে। আর সেই পাঁচজনের মাঝে লুসি এবং লুসানাও আছে। যাইহোক মিটিং শুরু হলো।
।।।
।।।
.
–আমাদের রাজ্য আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে। লোকজন আরো আসছে এখানে থাকার জন্য। আমাদের দ্রুত তাদের জন্য ঘর বানাতে হবে।(কুইন)
.
–হ্যা তবে এভাবে সবাইকে ঘর তৈরী করে দেওয়া ঠিক হচ্ছে কি? তারা তো কিছু সাহায্যও করছে না। বরং এসেই থাকছে। তাছাড়া তাদের খাবারের সকল ব্যবস্থা আমাদেরই করতে হচ্ছে। এভাবে তো প্রজাদেরকে আমাদেরই পালতে হবে।(বিশপ লুইস)
.
–তাহলে কি করতে পারি আমরা এই বিষয়ে?(লুসি)
.
–মাই কুইন মিনিস্টার স্যারের আদেশ অনুযায়ী আমরা প্রতিটা বাড়িতে সমান জায়গা মেপে শুধু একটা বাসা এবং একটা পুকুর তৈরী করে দিয়েছি। আমাদের পাঁচজন ডয়ারফস এবং একজন জায়েন্ট এর একটা বাসা সেভাবে তৈরী করতে দুই থেকে তিন ঘন্টা সময়ের প্রয়োজন হয়। এখন আমাদের কাছে রিসোর্সের কোনো কম নেই, কিন্তু এইরকম সাধারন কাঠের ঘরে প্রজারা থাকতে চাইবে না। কিছুদিন পর তারা নতুন ভাবে তৈরী করতে বলবে আবার।( রুক ব্লাক স্মিথ)
.
–মাই কুইন, আপাতোতো খাবারের ব্যাপারটা আমাদের নাইটদের নিতে হচ্ছে। এভাবেই কি আমাদের খাবার খাওয়াতে হবে সবাইকে চিরকাল?(লুসানা)
.
–হ্যা সবার সমস্যা বুঝতে পেরেছি। আমার কাছে খবর এসেছে আমাদের রুক ব্লাক স্মিথের এখানে আসার কারনে আরো অনেক ডয়ারফস তাদের পরিবার নিয়ে এদিকে আসছে। তখন তারা নির্মাণের কাজে আমাদের সাহায্য করতে পারবে। তাছাড়া খাবারের ব্যাপারটা প্রজারা নিজেই দেখতে পারবে।(কুইন)
.
–কুইন আপনার কথাট সত্য। তবে সেভাবে কাজ করলে কেউ এখানে থাকতে চাইবে না। যদিও এটা মাত্র রাজ্যের শুরু। এখানে সবাইকে তাদের কাজ করতে হবে। খাবারের সমস্যা অনেকটা গুরুতর। সেটাকে কম ভাবে দেখলে হবে না।(আমি)
.
–তো কি করলে ভালো হবে আমাদের জন্য।(কুইন)
.
–আপনি এখনো ভালো ভাবে জানেন না কি করলো ভালো হয়। তাই মাই কুইন আপনার হয়ে আমাকেই সব কিছু দেখতে দিন। আমি কিছুদিনের মধ্যেই আপনার শাসন করার জন্য সুন্দর একটা রাজ্য তৈরী করে দিবো।(আমি)
.
–ঠিক আছে।(কুইন)

।।
।।
কুইন আমি এন্জেল ফর্মে থাকলে কিছু বলে না আমার বিরুদ্ধে। তবে আমি মানুষের ফর্মে থাকলে অনেক কিছুই বলে।
.
–তো শুনো সবাই। কাল থেকে সকল প্রজাদের জন্য কাজ শুরু হবে। রুক ব্লাক স্মিথ আপনি কাল থেকে কোনো নির্মান এর কাজ করবেন না। আপনার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ন কাজ রয়েছে, সেটা হলো আপনি কাল থেকে নতুন এক ধরনের নতুন কাগজ তৈরী করবেন। যেটা আমাদের রাজ্যের আপাতোতো অর্থ হবে।(আমি)
.
–কাগজের অর্থ সেটা কিরকম?(ব্লাক স্মিথ)
.
–চারকোনা একটা ম্যাজিকাল নোট হবে, যেটা তৈরীর সিকরেট শুধু আপনিই জানবেন। অনেক সময় লাগবে আপনার। এজন্য কাল থেকে লেগে পরবেন। যত পন্য প্রয়োজন হয় সেটা বাকি রুকদের একজনকে বলবেন এনে দিতে।(আমি)
.
–হ্যা ঠিক আছে মিনিস্টার স্যার।(রুক ব্লাক স্মিথ)
.
–এখন ঘরের বিষয়ে আসা যাক। প্রতিটা বাসায় একটা করে ঘর এবং একটা পুকুর ই থাকবে। তাদের ঘরগুলো মেরমত কিংবা নতুন ভাবে নির্মান করতে হলে তাদের অর্থ দিতে হবে। তাছাড়া খাবারও তারা ফ্রিতে পাবে না। প্রতিদিন তাদের জন্য নির্দিষ্ট কাজ থাকবে। যেগুলো শেষ করার ফলে তারা অর্থ পাবে। এবং সেই অর্থ দিয়ে তাদের খাবার কিনে খেতে হবে।(আমি)
.
–তাহলে আমাদের রুক ব্লাক স্মিথের কাগজের অর্থ তৈরীর অপেক্ষা করতে হবে মিনিস্টার স্যার?(বিশপ লুইস)
.
–হ্যা। কাগজের অর্থ তৈরী না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ফ্রিতে খাবার, পোষাক এবং বাসস্থানের ব্যবস্থা আমাদেরই করতে হবে।(আমি)
.
–ঠিক আছে তাহলে আমরা সেটাই করবো।(সকলে একসাথে বললো)
।।।
।।।
আমাদের রানী এখনো কোনো আদেশ দিতে পারে না। সে সবকিছুতে আমার উপরে নির্ভর করে। যেটা অনেকটা ভালো লাগলেও ভালো বিষয় না। আমি চাই সে তার রাজ্যের ব্যাপার টা বুঝে নিক। কারন আমি তো আর রাজ্য চালাইতে চাই না। বিষয়টা অনেক বাজে লাগে। সেনার প্রধান হওয়াটা অনেক ভালো মানায় আমাকে। যাবো একটা রাজ্যে, গিয়ে যুদ্ধ করবো তাতেই মজা। তাছাড়া আমার মনে হয় না রানী আমাকে ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিবে। ব্যাপারটা তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে। যাইহোক আমি আর সেদিকে নজর দিলাম না। অনেক কাজ বাকি আছে। যদিও কাজ করতে মন চাই না। তারপরও ভালো লাগছে। একটা রাজ্যকে কিছু না থেকে বানানোর মাঝে অন্যরকম একটা মজা। যেটা বানানো রাজ্যের রাজা হলেও মজা পাওয়া যায় না।
।।।।
।।।।
পুরো দুইদিন সময় লাগলো রুক ব্লাক স্মিথের কাগজের অর্থ তৈরী করতে। এটা অনেকটা আগের দুনিয়ার পৃথিবীর টাকার মতো। তবে অন্যরকম। তবে এটা সেই টাকার থেকে আলাদা। ম্যাজিকাল পাথর এবং বাশ দিয়ে এই কাগজের নোট তৈরী। যেটার নকল করা একদমই অসম্ভব। ভিতরে আমাদের কুইনের ছবি দেওয়া আছে। এবং বেশ কিছু লেখা আছে। লেখা এবং অংকনের কাজটা ব্লাক স্মিথ আমার থেকেই নিয়েছে। আমি যেটা লেখতে হবে আঁকতে বলেছি সেটাই সে লেখেছে এবং এঁকেছে। টাকা তৈরী হওয়ার পর আমরা প্রজাদের এক এক করে কাজ দিতে লাগলাম। শুধু প্রজা নয়, বরং রাজ্যের রানী সহ সবাইকেই একটা নির্দিষ্ট টাকার বেতন ঠিক করা হলো। শুধু রানীর টাকাটা রাজকোষেই জমা হবে। সকল টাকা রাখার জন্য একটা রাজকীয় প্রতিষ্ঠান খুললাম, যার নাম দেওয়া হলো ব্যাংক। যেটাকে পৃথিবীর মতোই অনুসরন করেছি। রাজ্যের সকল টাকা ব্যাংকের মধ্যেই জমা হবে। বেশ কয়েকটা প্রতিষ্ঠান খোলা হলো, যেগুলো সাধারন জনগনদের কাজ দিবে। কাজগুলো এক একরকমের।
।।।
।।।
অনেকের কাজ গাছ কাটা, কারো কাজ ফল সংগ্রহ করা, কারো কাজ বন্য পশু শিকার করা, কারো কাজ ফুল সংগ্রহ করা, কারো কাজ, অনেকের কাজ মূল্যবান পাথর সংগ্রহ করা। যারা নির্মাণের কাজ করে তাদেরও আলাদা একটা প্রতিষ্ঠান তৈরী করে দেওয়া হলো, যেখানে তারা টাকার বিনিময়ে তাদের শ্রমিক পাঠিয়ে কাজ করাবে। দেখতে দেখতে রাজ্যে শত রকমের কাজ দেখা গেলো, যেগুলো দিন শেষে করার ফলে তারা অর্থ পায়। এবং সেই অর্থ গুলো দিয়ে তারা খাবার ক্রয় করে।
।।।
।।।
রাজ্যে আস্তে আস্তে জনগন বারতে লাগলো। কারন আমাদের মতো অন্য কোনো রাজ্য এরকম সুবিধা দেই না। আমাদের রাজ্যে খাবারের কোনো অভাব নেই, সেই সাথে সবার ছোট ছোট কাজের জন্য অনেক অর্থ তারা পায়, যেটা দিয়ে তারা আমাদের রাজ্যেই অনেক কিছু করতে পারবে। দেখতে দেখতে লোকজন নিজেরাও কুইনের থেকে আদেশ নিয়ে নিজেদের জমিতে দোকান খোলা শুরু করেছে। যেখানে তাদের জমাকৃত মূল্যবান জিনিস, ধাতু এবং বিভিন্ন ফল, খাবারের জিনিস তারা বিক্রী শুরু করেছে। তাছাড়াও কুইনের থেকে অনেকে জমি লিজ দিয়ে কৃষি কাজও শুরু করেছে, যেটা আমাদের রাজ্যের খাবারের অনেক উন্নতি করবে। আর তাছাড়াও যেসব নাইটের পানির এট্রিবিউট আছে, তারা রাজ্যের সুন্দর্যের জন্য বিশাল পুকুর বানাচ্ছে। অবশ্য পুকুর খননের কাজটা পাঁচটা জায়েন্ট রুকই করেছে, নাইটরা শুধু পানি দিয়ে ভরে পুকুর বানাচ্ছে।
।।।।
।।।।
কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের রাজ্যকে রাজ্য বলা যায়। তারপরও অনেক কাজ রয়েছে, তাছাড়া আমার মনে পরেছো রানী এলিনা বলেছিলো সে এক মাসের মধ্যে আমাদের সাথে যুদ্ধে যেতে চাই। অবশ্য আপাতোতো যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছা আমার নেই। কারন একটা রাজ্য তৈরী করতে অনেক মজা লাগে, যেটা আমি এখন অনুভব করেছি। অবশ্য ক্ষমতা থাকলে বিষয়টা অনেক সহজ হয়ে যায়। তাছাড়াও আমার রাজ্যটা বাকি সব কিছুর থেকে আলাদা হবে। আমি জানি না ড্রাকুলা কেমন রাজ্য বানাবে, কিন্তু আমারটা আগের দুনিয়ার পৃথিবীর মতো হবে, যেখানে সবাই সুখে শান্তিতে বাস করতে পারবে। অবশ্য একবার রাজ্যটা সম্পূর্ন তৈরী হয়ে গেলে এটাকে গনতান্ত্রিক ভাবে চালাতেও কোনো সমস্যা হবে না। তারপরও আমার কিংডম ক্রিয়েশন স্পেলের জন্য সেটা সম্ভব হবে না। কারন এই রাজ্যে সবারই তাদের কুইনের উপরে ভক্তি থাকবে, এবং সবাইকে যে ক্ষমতা দিয়েছে, তার হুকুমও মেনে চলতে হবে। মানে এই রাজ্যে মিনিস্টার এবং কুইনের আদেশ তাদের মানতে হবে।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ৫৭
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
দেখতে দেখতে রাজ্যের চেহারা বদলে গেলো। কাগজের নোটগুলো উৎপাদনের পর থেকে পুরো অর্থনৈতিক চাহিদা চলে আসলো আমাদের রাজ্যে। কাগজের অর্থগুলোকে টাকার নাম দেওয়া হয়েছে। যেটা বলতে অনেকটা সহজ হয়। টাকা আসার পর থেকে রাজ্যের সবাই সমান ভাবে কাজ করা শুরু করেছে, অনেকে বেশী অর্থ উপার্জনের জন্য বেশী কাজ করছে, আবার অনেকে বেশী অর্থ দেই সেরকম কাজ করা শুরু করেছে। দেখতে দেখতে একমাস সময় অতিবাহিত হলো। অবশ্য একমাস সময়ের মধ্যে রানী এলিনার সাথে আমাদের যুদ্ধ হওয়ার কথা ছিলো। তবে আপাতোতো আমাদের ভ্যাম্পায়ার কুইন এলিহার সাথে রানী এলিনার চুক্তি হয়েছে, যেখানে আমাদের দুটো রাজ্য পুরোপুরি শক্ত হয়ে দাড়ালে দুটোর মধ্যে যুদ্ধ হবে। রানী এলিনার রাজ্যও এখন নতুন থেকে তৈরী হচ্ছে। তাই এখনি যুদ্ধের দিকে যাওয়া ঠিক হবে না কারোরই। আমি প্রথমে যুদ্ধ করতে রাজি হলেও এখন আপাতোতো যুদ্ধে দিকে আমার ইন্টারেস্ট নেই। কারন একটা রাজ্যকে তৈরী করার মাঝে আলাদা একটা মজা থাকে, যেটা সবাই অনুভব করতে পারে না।
।।।
।।।
আমাদের রাজ্যে পনেরো বছরের নিচে সবার কাজ থেকে ব্যান করা হয়েছে। পনেরো বছরের নিচে সবাই বাচ্চা, যাদের কাজ করা নিষেধ। কেউ ধরা পরলে তার পরিবারকে অনেক গুরুতর শাস্তি দেওয়া হবে। তাছাড়া আজকে কিছু ডয়ারফসকে আদেশ দিয়েছি একটা প্রতিষ্ঠান খুলতে, যেখানে পাঁচ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে পনেরো বছরের বাচ্চাদের সব কিছু শিক্ষা দেওয়া হবে, পড়া লেখা থেকে শুরু করে লড়াই এর সব কিছু সেখানো হবে এই প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিক করা হয়েছে স্কুল। রাজ্য বড় হলে এরকম অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান তৈরী হবে, তবে আপাতোতো একটাই যথেষ্ট। দেখতে দেখতে আমাদের রাজ্যে এখন লোকের অভাব নেই। এই এক মাসে প্রায় পাঁচশো বাসা তৈরী হয়েছে, এবং সে পাচশো ঘরে পাঁচশোটা পরিবার রয়েছে, তাছাড়া প্রতিনিয়ত আরো অনেক পরিবার আসছে আমাদের রাজ্যে, যাদের ঘর বানিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের ডয়ারফসরা সবসময় প্রস্তুত। ডয়ারফস দের কাজের জন্য তারা প্রতিদিনই টাকা পাই। যেটার জন্য তাদের কষ্ট বিফলে যায় না। আর তারা এই নতুন সব কাজে খুশিও।
।।।
।।।
বাকি সকল রাজ্য যেখানে একই রকম অর্থ চলে, আমি সেখানে নতুন একটা অর্থ তৈরী করেছি, যেটা আমাদের রাজ্যকে উন্নতি করতে খুব সাহায্য করছে। আমি যদি পুরাতন অর্থই ব্যবহার করতাম তাহলে এতো মানুষকে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হতো না। কারন তাদের দেওয়ার মতো অর্থ আমাদের কাছে থাকতো না। তখন বাকি রাজ্যদের সাথে চুক্তি করতে হতো, তাদের সাহায্য নিতে হতো। আমি চাই না বাকি রাজ্যের সাহায্যে আমাদের রাজ্য গঠিত হোক। তাই নতুন অর্থ তৈরী করা হয়েছে, যেটা খুব ভালোই কাজে দিচ্ছে। এখন এই অর্থকেও মন মতো বানানো যাবে না। তাতে অর্থের মান কমে যাবে অনেক। আমি পৃথিবীতে যতদিন ছিলাম সেই অনুযায়ী অর্থের মান নির্ধারন করেছি, যেটা অনেকটা সুবিধার হচ্ছে অর্থনৈতিক ব্যাপারে।
।।।
।।।
এই কিছুদিনের মধ্যে কয়েকটা প্রতিষ্ঠান তৈরী হয়েছে, যাদের মাঝে একটা হলো হসপিতাল। আপাতোতো কিছু নাইট যারা হিলিং ম্যাজিক জানে তারা হসপিতালে সবার চিকিৎসা করছে। তবে শীঘ্রই আমি সেখানে ম্যাজিকাল হিলিং এর সাথে প্রাকৃতিক হিলিং এর ব্যবস্থাও করবো। যেমনটা পৃথিবীতে হতো। ঔষধের আবিষ্কার করবো এখানে, যেটা আমাদের রাজ্যকে অনেক আগিয়ে দিবে। প্রাকৃতিক অনেক ঔষধের ব্যবহার এই দুনিয়ায় হয়। কারন শারিরীক অসুস্থকে সব ম্যাজিক হিলিং ঠিক করতে পারে না। কিছু কিছু সমস্যা আছে যেগুলোর জন্য ভেষজের সাহায্য নিতেই হয়। আর আমি যদি সব ধরনের রোগের ঔষধি তৈরী করতে পারি তাহলে সেটা আমাদের রাজ্যের অর্থনৈতিক বিষয়ে অনেক প্রভাব ফেলবে, যেটা আপাতোতো আমাদের দরকার।
।।।
।।।
যাইহোক রাজ্যের উন্নতি চলছে অনেক দ্রুত ভাবে। আমাদের রাজ্যে এখন তিনজন বিশপ, একশো নাইট, পঞ্চাশ জন রুক। এবং বাকি কিছু পন রয়েছে, তাছাড়া মোট পাঁচশো টা পরিবার হয়েছে আমাদের রাজ্যে যেটা অনেকটা বড় করেছে আমাদের রাজ্যকে। এদিকে প্যালেসটারও নির্মান কাজ শেষ হয়েছে, কুইন এখন প্যালেসেই থাকে, আমার প্যালেসে থাকার বিষয়টা ভালো লাগে না। আমি প্যালেসের পাশে থাকা একটা বাসা নিয়েছি, যেখানে একাই থাকি। কুইনের সুরক্ষার জন্য বিশপ ইকারেসকে নিযুক্ত করা হয়েছে, সে সবটা সময় কুইনের সাথেই থাকে। যদিও আমাদের কুইন এখন আমার থেকে ক্ষমতা পেয়ে অনেক শক্তিশালী, তারপরও তারও সুরক্ষার প্রয়োজন আছে, আর সে অন্য কোনো ছেলেকে তার সুরক্ষার জন্য নিতে চাই নি, তার জন্য বিশপ ইকারেসকেই তার সুরক্ষার জন্য রাজি হতে হয়েছে। আমি চাচ্ছি আমার রাজ্যের জন্য আরো একজন শক্তিশালী বিশপ খুজতে। তবে সেটা এখন আর সহজ হবে না।
।।।
।।।
রানী এলিনাও পুরো তিন রাজ্য থেকে শক্তিশালী লোক খোজা শুরু করেছে, যাদেরকে তার সেনায় যুক্ত করছে সে। আমি জানি না তার রাজ্য কিরকম, তবে সেটা দেখার অনেক ইচ্ছা জাগছে আজকে। আর এমনিতেও কিছু কাজের জন্যও আমাকে যেতে হবে তার রাজ্যে। তার রাজ্যের নাম দিয়েছে সে জেলিনা। নামটা অনেকটা আজব। নামের অর্থ আমি বুঝতে পেরেছি। সেটা আমার এবং রানীর নামের সংমিশ্রনে তৈরী। আমি জানি না এমন আজব নাম কিভাবে সিলেক্ট করলো সে, আর এটাকে ড্রাকুলা কিভাবে এপ্রোভ করলো। তবে নাম দিয়ে কি হবে।
।।।
।।।
জেলিনা রাজ্যের সাথে আমাদের মার্ডিলা রাজ্যের মধ্যে একটা চুক্তি করতে হবে, যেটা আমাদের রাজ্যের জন্য অনেক সুবিধা হবে। আমি জানি ড্রাকুলাও হয়তো নতুন অর্থ তৈরী কথা ভাবছে, যেটা তারা এখনো তৈরী করতে পারে নি। তাদের রাজ্যে আমার একটা নাইট আছে, যাকে আমি গুপ্তচর হিসাবে পাঠিয়েছি। সে সেখানের সকল খবর নিয়মিত আমাকে জানাচ্ছে। যার ফলে আমি জানতে পেরেছি রানী এলিনা এখন নতুন অর্থ তৈরীর কথা ভাবছে, যেটাকে আন্তর্জাতিক অর্থ হিসাবে পরিচয় দিবে তারা।
।।।
।।।
জেলিনা রাজ্য ইগড্রোলিয়া, এ্যারসাক এবং হিমরারের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কে আছে, তাছাড়া থরের নতুন এজগার্ড, যেটা কিছুদিন হলো তৈরী হয়েছে সেটাও জেলিনার সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কে আছে। মানে আপাতোতো আমরা বাইরের দুনিয়া থেকে একদম ছিন্ন আছি, যেটাকে জোড়া লাগাতে হবে। আমার আপাতোতো একটা লক্ষ আছে, যেটা হলো আমাদের অর্থকে আন্তর্জাতিক মান দেওয়া। যেটা সব জায়গায় চলবে। এখন ড্রাকুলা যদি আমাদের আগে সেটা করতে সক্ষম হয়, তাহলে বাকি রাজ্যের সাথে আমরা কখনো চুক্তিতে যেতে পারবো না। আর বাকি সকল রাজ্য একসাথে হয়ে গেলো আমাদের শক্তিশালী সেনা দিয়েও কাজ হবে না। তাই প্রথমে সকল রাজ্যের উপরে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে প্রভাব ফেলতে হবে আমার।
।।।
।।।
আমি চলে আসলাম রানী এলিনার রাজ্যে যারা নাম জেলিনা। নামটা শুনলে নিজের কাজেই খারাপ লাগে। যাইহোক রাজ্যটা আমাদের মতো তেমন উন্নতি না করতে পারলেও রাজ্যের লোকসংখ্যা অনেক বেশী। আমার মনে হচ্ছে সকল রাজ্যের মানুষেরা এদিকে এসেছে, অবশ্য মানুষের ভিড়ে অন্য কোনো গোত্রের প্রানী দেখায় যাচ্ছে না। আমি বুঝতে পারছি না এতো মানুষ তারা কিভাবে এনেছে, যদিও ঘরের সংখ্যা তেমন বেশী না। মানুষেরাই নিজেদের ঘর একা একাই তৈরী করছে, যেখানে আমরা প্রজাদের বাসা তৈরী করে দি। মানুষেরা হয়তো এখানে তাদের স্বাধীনতার জন্য এসেছে, সকল মানুষ অন্য সকল রাজ্যে সবচেয়ে অবহেলিত ভাবে জীবন কাটায়। যেখানে ড্রাকুলার উদ্দেশ্য মানুষের জন্য একটা সুন্দর জায়গা তৈরী করা, যেখানে মানুষেরা সুন্দর জীবন কাটাতে পারবে। যেখানে মানুষের উপরে কোনো জুলুম হবে। সকল জুলুম হবে বাকি গোত্রের প্রানীর উপরে। আমি এখনো এখানে মানুষ বাদে অন্য কোনো প্রানী দেখতে পাচ্ছি না।
।।।
।।।
জেলিনায় আমি একা আসি নি। আমার সাথে বিশপ লুইস এসেছে। হ্যারি কিছু কাজ করছে রাজ্যে, যার জন্য সে আসতে পারে নি। তবে লুইসকে সাথে করে নিয়ে এসেছি আমি। যদি কোনো কিছু খারাপ হতে চাই, তাহলে আমি লড়াই থেকে বিরত থাকতে চাই। আমি আমার সাধারন মানুষ ফর্মেই আমার বেশীরভাগ সময় কাটায়। কারন সেটায় আমি কমফোর্ট ফিল করি। মানুষ বাদে অন্য কোনো ফর্মে গেলে আমার পারশোনালিটি কিছুটা বদলে যায়। যেটা মাঝে মাঝে আজব লাগে। আমি মানুষ ফর্মে টেলিপোর্ট স্পেল ব্যবহার করতে পারি না, এজন্য আমরা যানে এসেছি। আমাদের ডয়ারফসরা একধরনের বিশেষ যান তৈরী করেছে, যেটা এই দুনিয়া থেকে পুরো আলাদা। যানটা কোনো ম্যাজিকাল পাওয়ারে চলে না, বরং সেটা কয়লা কিংবা যেকোনো জ্বালানি শক্তির মাধ্যমে চলে। ব্লাক স্মিথের অবদান রয়েছে এই যানটা তৈরী করতে। অনেকটা পৃথিবীর ইন্জিনের মতো সে তৈরী করেছে, যেটা যেকোনো জ্বালানীতে চলে, বিশেষ করে আগুনের প্রয়োজন হয় এই যানটাকে চলতে। আমার মনে হয় সময় গেলে আরো উন্নত হয়ে যাবে যানটা। এবং পৃথিবীর গাড়ির মতো যান পাওয়া যাবে একটা সময়। হয়তো সেটার জন্য আরো কিছু বছর অপেক্ষা করতে হবে।
।।।
।।।
যাইহোক যানের মাধ্যমে আমরা জেলিনাতে চলে এসেছি। অনেকটা রাস্তার পথ ছিলো। তবে আমার মানুষ ফর্মে থাকায় আমার আগুন ব্যবহার করতে পেরেছি আমি। যে ইন্জিনের মতো জিনিসটা বানিয়েছে ব্লাক স্মিথ, সেখানে জ্বালানি পোড়ালেই চলতে শুরু করে যান টা। সেখানে কোনো জ্বালানি না দিয়ে বরং আমি আমার ডান হাত থেকে সোজা আগুন সেটার ভিতরে দিয়েছি, যেটার তাপে যানটা অনেক স্পিডে চলতে শুরু করেছে। অবশ্য যানের মাধ্যমে অনেকটা সময় লেগেছে পৌছাতে। তবে নতুন একটা কিছুতে চড়ার মাঝে আনন্দ আলাদা রকম।
।।।
।।।
আমি জেলিনাতে চলে আসলাম। রাজ্যে এখনো শৃংখলার দেখা পাচ্ছি না আমি। আমাদের টা অনেক সুন্দর করে সাজানো হলেও এখানের অবস্থা অনেক খারাপ। যেহেতু লোকসংখ্যা বেশী এবং তাদের নিয়ন্ত্রনের অভাব তাই অনেক ঘনবসতিপূর্ণ লাগছে। আমি বাইরে সময় নষ্ট না করে পিছনের দিকে যেতে লাগলাম আমার যান নিয়ে। রাজ্যে সেনার ব্যবস্থা অনেক কড়া ভাবে করা হয়েছে। আপাতোতো ছোট বর্ডার বানানো হয়েছে পাথর দিয়ে, যেটার চারপাশে সেনা নিযুক্ত রয়েছে, চারটা গেইট দিয়ে জেলিনাতে প্রবেশ করতে হয়। যেটাতেও সেনা রয়েছে, আমাদের দেখে এমনিতেই ঢুকতে দিয়েছে, কোনো সমস্যা হয় নি। রাজ্যের পিছনের সাইডে উচু পর্বতের উপরে এই রাজ্যের ড্রাকুলার হোটেল যেটা কিনা এখন এই রাজ্যের প্যালেস সেটা অবস্থিত। আমি অবাক হলাম প্যালেসের সৌন্দর্য দেখে, কারন প্যালেসটা অনেক মারাত্মক সুন্দর জায়গায় দাড়িয়ে আছে, যেখানে আমাদেরটা দেখতে একদম খারাপ লাগে। আমাদের যান সরাসরি প্যালেসের দিকে চলে যাবে। যেহেতু আমরা অন্য রাজ্য থেকে এসেছি, তাই সাধারন সম্মান তো দিতেই হবে। তবে মনে হচ্ছে একটু বেশীই সম্মান পাচ্ছি। কারন আপাতোতো আমরা এখন বাকি সবগুলো রাজ্যের জন্য শত্রু। যদিও রানী এলিনা সেই চোখে আমাকে দেখে না। কিন্তু তার বোনের মিনিস্টার হওয়ার কারনে সে তার বোনের উপরে অনেক ক্ষেপে আছে সেটা আমি বলতে পারি।
।।।
।।।
আমরা প্যালেসে ঢুকে পরলাম। এবার নিজের এন্জেল ফর্মে চলে আসলাম। কারন আমি জানি ড্রাকুলা আমার এন্জেল ফর্মে আমার মনের কথা শুনতে পারবে না। আমার মনে কি চলছে সেটা ড্রাকুলা না জানলে তেমন কিছুই করতে পারবে না। তাই আমি এখন আমার এন্জেল ফর্মে চলে আসলাম। দুজন গার্ড আমাদের নিয়ে গেলেন প্যালেসের ভিতরে রানীর কক্ষে, যেখানে একটা রাউন্ড টেবিল বসেছে, এবং সেখানে শুধু রানী এলিনা একা নয়। বরং তার সাথে সেখানে বাকি রাজা এবং রানীরাও রয়েছে অন্য রাজ্যের। আমি এরকম একটা মিটিং এর মাঝে চলে আসবো সেটা বুঝতে পারি নি।
।।।
।।।
রাউন্ড টেবিলে বসে আছে ইগড্রোলিয়ার রাজা, হিমরারের রাজা, জেলিনার রানী এলিনা, এ্যারসাকের রানী আফরিয়েল এবং নতুন এজগার্ডের রানী এলেন যে আমার বড় বোন।
.
–মিনিস্টার জ্যাক আপনাকে স্বাগতম আমাদের রাজ্যে। অবশ্য ঠিক সময়ে এসেছেন, কারন আমাদের সকল রাজ্যের রাউন্ড টেবিল চলছিলো, চাইলে আপনিও যোগ দিতে পারেন।(ড্রাকুলা পিছন থেকে এসে বললো)
.
–বলতে হবে আমার ভাগ্যবান দিন এটা। আমি ভেবেছিলাম সকল রাজ্যের রাজা কিংবা রানীর সাথে এক এক করে কথা বলতে, কিন্তু সকলে যখন একত্রিত হয়েছে তখন আর আমার কষ্ট করতে হলো না।(আমি)
.
–এটা তো রাজা এবং রানীদের রাউন্ড টেবিল এখানে একজন মিনিস্টারের জায়গা হয় কিভাবে?(হিমরারের রাজা)
.
–আপনি হয়তো তাকে চিনতে পারেন নি। সে কোনো শহরের মিনিস্টার না। বরং সে ভ্যাম্পায়ার কুইন এলিহার মিনিস্টার বা মন্ত্রী যেটা বলেন।(ড্রাকুলা)
.
–ওওও তাহলে ঠিক আছে। দুঃখিত আমি, আমার তো আগে কখনো দেখা হয় নি আপনার সাথে এজন্য চিনতে পারি নি।(হিমরারের রাজা)
.
–তো মূল বিষয়ে আশা যাক। আমাদের কুইন কোনো রকম যুদ্ধে যেতে চাই না কারো সাথে। অবশ্য আমার প্লান ছিলো যুদ্ধ করার। কিন্তু রানী যেহেতু আদেশ দিয়েছে, তাই আমরা কোনোরকম যুদ্ধে যেতে চাই না।(আমি)
.
–এই বিষয়ে আমরাও একমত। আপাতোতো আমাদের বিরুদ্ধে ভয়ানক একটা শত্রু আছে, যেটা পুরো দুনিয়াকে নিজের করে নিতে চাই। তার ইচ্ছা এবং আশা সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। এর মধ্যে আমাদের মধ্যে যুদ্ধ করলে তারা অনেক বড় সুযোগ পেয়ে যাবে আমাদের ধ্বংস করার জন্য।(রানী আফরিয়েল)
.
–হ্যা সেটা ঠিক। ডেভিল কিং এর ক্ষমতা আমি নিজ চোখে দেখেছি। আর সেই সাথে আবার নতুন জায়েন্টদের সেনা, যারা ইগড্রোলিয়াতে আক্রমন করেছিলো, তবে মার্ডিলার কুইনের একটা বিশপ যখন একশো জায়েন্টকে এক স্পেলেই শেষ করে দিলো সেটা জানতে পেরে সকল জায়েন্ট আপাতোতো সময়ের জন্য পিছু নিয়েছে।
(রানী এলিনা)
.
–আমাদের তখন ইগড্রোলিয়াকে সাহায্য করার কোনো ইচ্ছা ছিলো না। শুধু আমরা নিজেদের সেনা বারানোর জন্য সেটা করেছি।(আমি)
.
–হ্যা তবে সেটার জন্য ধন্যবাদ মার্ডিলার কুইনকে। কারন তা নাহলে আমাদের রাজ্যে অনেক লোকের মৃত্যু হতো।(ইগড্রোলিয়ার রাজা)
.
–দেখুন আপনারা কি বিষয়ে কথা বলছিলেন সেটা আমি জানি না। আপনাদের সাথে আমার কুইন বন্ধুত্ব পূর্ন সম্পর্ক করতে চায় তবে সেটার জন্য আমাদের একটা শর্ত আছে, যেটা আপনাদের সবাইকে মানতে হবে।(আমি)
.
–হ্যা বলুন আপনার শর্ত।(সবাই একসাথে)
.
–এইযে এইটা দেখতে পারছেন। এটাকে আমরা ম্যাজিকাল নোট বলি, যেটা আমাদের রাজ্যের অর্থ। এটার কপি করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। আর আমার শর্ত আপনাদের সবার রাজ্যে আজ থেকে এই অর্থ চলবে।(আমি)
.
–এতে আমাদের কি লাভ হবে?(রানী এলিনা)
.
–এই টাকা আপনাদের রাজ্যে চালানোর ব্যবস্থা করুন, এর বিনিময়ে আপনাদের সকল অর্থনৈতিক সাহায্য আমরা করবো, তাছাড়া আমি দেখলাম জেলিনার সামাজিক অবস্থা তেমন ভালো না। নির্মাণের কাজ এখানের প্রজা দিয়ে করানো হচ্ছে। আমাদের শর্তে রাজি হলে জেলিনার সকল নির্মানের কাজ আমরা ফ্রিতে করে দিবো। শুধু জেলিনা নয় বরং বাকি রাজ্যের নির্মাণের কাজগুলো আমরা ফ্রিতে করে দিবো।(আমি)
.
–শুধু নির্মাণের কাজের জন্য আপনাদের অর্থকে আমাদের রাজ্যে চালালে আমাদের তেমন লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না।(হিমারারের রাজা)
.
–তাহলে আপনারা কি চান।(আমি)
.
–আমরা এই শর্তে রাজি। তবে আমরা সরাসরি কোনো টাকা মার্ডিলা থেকে চাই না। বরং আমাদের পন্য সামগ্রী বিক্রী করবো যেটা আপনাকে কিনে নিতে হবে এই অর্থ দিয়ে। আর সেটার বিনিময়ে আপনাদের রাজ্যের মতো আমাদের রাজ্যে নির্মান এবং বাকি সুবিধা করে দিতে হবে।(ড্রাকুলা)
.
–কিরকম সুবিধা?(আমি)
.
–ব্যাংক, স্কুল এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে করে দিবেন।(ড্রাকুলা)
।।।।
।।।।
।।।
।।

((চলবে))

।।
।।।
।।।।
।।।।