ভ্যাম্পায়ার কুইন ২ পর্ব-২০+২১+২২+২৩

0
29

#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২০
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমি আবারো গুপ্ত রাস্তা দিয়ে প্যালেসের মধ্যে ঢুকে পরলাম। অনেক রাত হয়েছে তাই আমি আমার রুমের মধ্যে গিয়ে শুয়ে পরলাম। আজকে পুরো দিনের মধ্যে ভ্যালি আর ইগড্রাসিলের কোনো কথা শুনতে পাইনি। তাই আমি হাতের ব্যান্ডেজ খুলে ফেললাম। দুজনেই ঘুমাচ্ছে, তাই ডাক দিলাম না আর। মনে হচ্ছে সারাদিনই ঘুমিয়েছে। মূলত আমি তলোয়ার দুটো না ধরলে ওরা সব সময়ই ঘুমাবে। ওদের ঘুম মুক্ত করতে হলে আমাকে তলোয়ার ব্যবহার করতে হবে। বিষয়টা ভালোই, কারন লোকজনের সামনে হঠাৎ দুজন কথা বলে উঠলে অনেকটা খারাপ হবে। আপাতোতো প্যালেসের অনেকেই জানে আমার কাছে ফায়ার ড্রাগনের অস্ত্র রয়েছে। এক্সিবেশন ম্যাচে আমার লড়াই দেখেছে তারা৷ আমার উচিত হয়নি ভিরুদাকে ব্যবহার করা। আমি চাচ্ছিলাম ভিরুদার ক্ষমতার দরকার পরবে না আমার জন্য। কিন্তু পরিস্থিতি আমার অনুকূলে ছিলো না। আপাতোতো সেই চিন্তা বাদ দিলাম। আমি ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুম থেকে সকালে উঠলাম।
।।।
।।।
হাতের ব্যান্ডেজ কাপড় গুলো খুলে ফেলে রেখেছিলাম রাতে। আবার সেগুলো পরে নিলাম। রাতে প্যালেসে আসার সময় লাইব্রেরীর গুপ্ত রাস্তার শেষ প্রান্তে যেখানে ঔ ভুতুরে জায়গা ছিলো সেখানেই কালো জামাগুলো খুলে রেখে এসেছি। আমি প্যালেসে ঔটা নিয়ে আসতে চাই না। কারন অনেকেই সন্দেহ করবে তাতে। আমি কোনো রকমের প্রমান রাখতে চাই না। আজকেও নাস্তা করতে হলো উপরে উঠে। যে রাজাকে মারতে চাচ্ছি, তার সাথে এক টেবিলে বসে নাস্তা খেতে কেমন জানি লাগছে। তারপরও কিছুই করার নাই। আমি আজকেও প্রিন্সেস এলিহার পাশে বসে নাস্তা করছি। আর প্রিন্সেস এলিনা আবারো আমার পাশে এসে বসলো। মূলত সে কিছু বলতে চাচ্ছে আমাকে, কিন্তু বলার সাহস পাচ্ছে না হয়তো। নাস্তা শেষ হওয়ার পর, রাজা এবং জেনারেল প্যালেসের সকল গার্ডকে রাজ সিংহাসনে যেতে বলেছে। কারন কিছুটা হয়তো আমি বুঝতে পেরেছি। যাইহোক কিছু না জানার ভান করে আমরাও আদেশ মতো চলতে লাগলাম। আপাতোতো আমরা দশজন রয়েল গার্ড রয়েছি প্যালেসের মধ্যে। সকল রয়েল গার্ডদের মধ্যে ফার্ষ্ট এবং সেকেন্ড প্রিন্সেস এর রয়েল গার্ডই সবচেয়ে শক্তিশালী। আমি কয় নম্বরে আছি সেটা সঠিক বলতে পারছি না। তবে সম্মানের দিক দিয়ে আমি তৃতীয় স্থানে আছি, যেহেতু জেনারেল আমাকে ছেলে দাবী করেছেন, আর তিনি রাজ্যের একজন প্রিন্স। আর প্রিন্সের ছেলে প্রিন্সই হয় হয়তো। সেদিকে ভাবলাম না। রাজা তার থ্রোনে বসে আছে। আমরা সবাই এক হাটু গেড়ে দিয়ে রাজাকে সম্মান জানালাম। রাজার পাশে রয়েছে তার জেনারেল। জেনারেল বলতে লাগলেন।
.
–ক্যাপিটালে আপাতোতো কিছু সন্ত্রাসী দেখা দিয়েছে, যারা নিজেদের ব্লাক ড্রাগন দাবী করছে। আজকে ক্যাপিটালের পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রাজা পুরো রাজ্যের ব্যবসাকে নিয়ন্ত্রন করতো তাদেকে তাদেরই একজনের বাসায় নিষ্ঠুর ভাবে মৃত পাওয়া গেছে। আর সেখানেই সন্ত্রাসীরা তাদের মেসেজ দিয়েছে।(জেনারেল)
.
–তাহলে আমরা রয়েল গার্ডদের কি তাদের খুজে গ্রেফ্তার করতে হবে?(আখিল)
.
–না রয়েল গার্ড হিসাবে যেটা তোমাদের দায়িত্ব সেটা পালন করবে। তোমাদের একটাই কাজ সেটা হলো নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও তোমাদের যাদের গার্ড বানানো হয়েছে, তাদেরকে সুরক্ষা রাখা।(রাজা)
.
–জ্বী মাই কিং।(আমরা সকলে)
.
–এই নতুন সন্ত্রাসীদের আসল উদ্দেশ্য কি সেটা আমরা এখনো বুঝতে পারি নি। কিন্তু তাদের একশন দেখে মনে হচ্ছে তারা রাজ বংশের লোকদেরকেই প্রথমে টার্গেট করেছে, এতে তাদের কাছে প্রচুর শক্তি আছে সেটা বোঝায় যাচ্ছে। তাই আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। এরপরের এট্যাক প্যালেসেও হতে পারে।(জেনারেল)
.
–জেনারেল স্যার, আমার মনে হয় এটা পাশের দুই রাজ্যের কাজও হতে পারে। তারা হয়তো গোপন ভাবে আমাদের উপরে হামলা করছে।(আখিল)
.
–হ্যা সেটাও হতে পারে। সেটার জন্য আমরা সেই রাজ্যে বার্তা পাঠাবো। যদি তারা আমাদের রাজ্যে গুপ্ত আক্রমন করেই থাকে, তাহলে যুদ্ধে আমরাও নামবো।(জেনারেল)
.
–আমি ঠিক করেছি ফার্ষ্ট প্রিন্সেস এলিসা তার রয়েল গার্ড এবং কিছু মিলিটারী সেনা নিয়ে যাবে এ্যালকোর্টে এবং দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রিন্সেস এবং শুধু তাদের রয়েল গার্ড যাবে হিমরারে।(রাজা)
.
–জ্বী মাই কিং।(আমরা তিন রয়েল গার্ড এক সাথে বলে উঠলাম)
।।।
।।।
আমাদের কিছু করার নাই এখন। ভালো মতো তাদের আদেশ শুনে নিলাম। মূলত আমাদের এই পুরো দুনিয়াতে তিনটা রাজ্য আছে। প্রথমত ইগড্রোলিয়া যেটা আমাদের রাজ্যের নাম। ফায়ার ড্রাগন ইগড্রাসিলের নামেই নাম করা হয়েছিলো আমাদের রাজ্যের৷ এরপরে রয়েছে হিমরার এবং সবশেষে এ্যালকোর্ট। তবে অনেক লেজেন্ড রয়েছে আরো দুটো রাজ্যের। তবে ধারনা করা হয় সেটা অনেক আগেই একে অপরের সাথে যুদ্ধ করে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেটা সম্পর্কে বিস্তারিত আমার কোনো জ্ঞান নেই। তবে এটা জানার অনেক আগ্রহ আমার। লোককথা হিসাবে বলা হয়, সেই বিলুপ্ত দুটো রাজ্যের মধ্যে একটার নাম হলো ছিলো এ্যাসাক অন্যটা আরসাক। লোককথা হিসাবে এ্যাসাকে রাজ করতো এন্জেলরা আর আরসাকে রাজ করতো ডেভিলরা। তাদের যুদ্ধ ইতিহাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ছিলো, আর তাদের যুদ্ধের ফলে দুই রাজ্য একসাথেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। যাক আপাতোতো এসব কথা বাদ দিলাম। পরে এটা সম্পর্কে আমি সম্পূর্ন জ্ঞান অর্জন করবো।
।।।
।।।
আপাতোতো আমি প্যালেস থেকে বের হয়েছি শহরে বের হতে। কিছুটা কেনার উদ্দেশ্য করেই বের হয়েছি। প্রিন্সেস এলিহা আস্তে চেয়েছিলো আমার সাথে। তবে গেট থেকে তার বের হওয়া নিশেধ ছিলো। যেহেতু আমার প্রয়োজনীয় কিছু কিনতে হবে তাই, আমাকে বের হতে দিলো তারা। আমার আপাতোতো দুটো কাজ করতে হবে। এক হলো হ্যারিদের সতর্ক করে দিতে হবে একটু। কিছুদিন থাকতে পারবো না শহরে এটাও ওদেরকে জানাতে হবে। আর দ্বিতীয়ত হলো শহরের মধ্যে ব্লাক ড্রাগনের নাম কেমন ছড়িয়েছে সেটাও আমাকে লক্ষ করতে হবে।
।।।
।।।
আমি হাটতে হাটতে হ্যারিদের গলিতে চলে আসলাম। কোনো সাবধানতা না দেখিয়ে আমি সোজা আমার হাতে লেখা একটা চিঠি ওদের রাস্তার সামনে ফেলে দিলাম। একটা ছোট পাথর উপরে ভার হিসাবে রেখে দিলাম। হয়তো এটাই ওদের লক্ষ পরবে। আশা করি পরবে। আমি এখানে না থাকা সময়টুকু যদি ওরা কিছু করে তাহলে অনেক খারাপ হবে। তাই ওদের একটু সাবধান করা দরকার। বিশেষ করে আমাকেও সাবধান হতে হবে। আমি প্যালেস থেকে এভাবেই বের হয়ে ওদের সাথে দেখা করতে পারি না। চিঠিতে কিছু গোপন কোড দিয়ে আমি আমার লেখা লেখেছি, যেটা লুসি খুব সঠিকভাবে বুঝতে পারবে। আশা করছি অন্য কারো হাতে গেলে এটা হাবিযাবি একটা লেখায় হবে। আমি আমার কেনাকাটা করে আবার প্যালেসের দিকে রওনা দিলাম। কেনার মধ্যে দুটো বড় রুমাল কিনলাম মুখে মাস্ক বানানোর জন্য। এবং একটা টাইট ফুল হাতা জামা। এতে করে হাতের ড্রাগনের ছবি ঢাকা ব্যান্ডেজ কাপড় অনেকটা আটকা থাকবে। ব্যান্ডেজ কাপড় দেখতে একটু খারাপই লাগে। সহজেই ময়লা হয়ে যায়।
।।।
।।।
অবশ্য শহরে ব্লাক ড্রাগনের নামও ছড়িয়ে গেছে। জেনারেল বলেছিলো এই বিষয়টা একদম গোপন রাখা হয়েছে। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি আমরা যে মেয়ে কয়টাকে বাচিয়েছি, তারাই আমাদের নাম ছড়িয়ে দিয়েছে। হয়তো হ্যারি ওদেরকে আমাদের টিমের কথা বলেছে। বিষয়টা খারাপ না। আমি এটাই চাচ্ছিলাম। মূলত আমার ইচ্ছা হলো সাধারন জনগনের সাপোর্ট নেওয়া। আমি জানি প্রজাদের সাপোর্ট ফেলে আমি রাজাকে খুব সহজে সিংহাসন থেকে নামাতে পারবো। কিন্তু সেটা করতে গেলে অনেক প্রজাদের জীবন দিতে হবে। আর আমি সেটা চাই না। অনেক লাশের থেকে একটা লাশই আমার কাছে বেশী পছন্দের রাস্তা। প্রজাদের জীবন ঝুকিতে না রেখে সোজা রাজাকে মেরে ফেললেই সব সমস্যা শেষ হয়ে যায়। আমি প্যালেসের মধ্যে হাটতে হাটতে চলে আসলাম। অবশ্য প্যালেসের যানের ব্যবহার আমি করতে পারবো এখন থেকে যেহেতু আমি প্রিন্সেসের গার্ড হয়েছি। কিন্তু হাটাই আমার সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে। তবে আমার ইচ্ছা হচ্ছে উড়ার। মানুষ হয়ে উড়ার ইচ্ছা করাটা বোকামি। কারন ডানা ছাড়া কেউই উড়তে পারে না। যেসব গোত্রের ডানা আছে তারা অনেক ভাগ্যমান। মূলত হ্যারি, লুসি লুসানা সবারই ডানা আছে। আবার প্রিন্সেস এলিহারও ডানা রয়েছে। তবে আমি মানুষ বলে আমার ডানা নেই।
।।।
।।।
আমাদের সময় হয়ে গেলো হিমরারে যাওয়ার জন্য। আমাদের একটা ভালো যানের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। মূলত যানটা সেরকমই যেটাই করে প্রথম আমি প্যালেসে এসেছিলাম। তবে সেটার থেকে অনেক উন্নত। ভিতরে অনেকটা জায়গা রয়েছে। খাওয়ার টেবিল রয়েছে ছোট একটা এবং বসার জন্য চারটা সোফার মতো রয়েছে, যেগুলোতে আমরা শুতেও পারবো। সবচেয়ে ভালো বিষয় এই যানের হলো বাইরের সব কিছু একদম প্রতিটা দিক দিয়েই পরিস্কার দেখা যায়। ভিতর থেকে মনে হবে যানের কোনো দেওয়ালই নেই। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম এটা হয়তো কাচের মতো কোনো বস্তু দিয়ো তৈরী হবে, কিন্তু সেটা হলে সামনের দিকে আমরা চালকের জায়গা দেখতে পেতাম, কিন্তু সেটা দেখা যায় না। মূলত এই যানটা ম্যাজিকের মাধ্যমে চলে, আর এটার মধ্যে ম্যাজিকাল আয়না ব্যবহার করা হয়েছে, যেটা চোখের মতো বাইরের সকল দৃশ্য কপি করে ভিতরে আমাদের দেখাবে। বলতে গেলে এই যানেরই চোখ রয়েছে চারিদিক দিয়ে। এবং সেটা আমরা ভিতরে দেখতে পারি। এই যান প্রথম হিমরারের ডয়ারফসদের মাধ্যমেই তৈরী হয়েছিলো। পরে হিমরারের সাথে একটা চুক্তিতে এই পদ্ধতি আমাদের রাজ্যেও আনা হয়। যানের স্পিড অনেক হলেও আমাদের সময় লাগবে অনেক হিমরার পৌছাতে। হয়তো দুইদিনের মতো সময় লাগবে। কারন অনেকগুলো শহর আমাদের পারি দিতে হবে। একবার হিমরারের বর্ডারে যেতে পারলে আমরা সেখান থেকে তাদের লোকদের সাহায্যে হিমরারের ক্যাপিটালে টেলিপোর্ট হয়ে যেতে পারবো। পুরো রাস্তা প্রিন্সেস এলিনার রয়েল গার্ড আখিল ঘুমিয়ে ছিলো। সে নাকি যানে উঠলে ঘুম আটকাতে পারে না। আর প্রিন্সেস এলিহা পুরো রাস্তা বমি করতে করতে শেষ হয়ে গেছে। সেও যানে বেশীক্ষন থাকতে পারে না। তার বমি আছে। আর আমি আমার পড়া সকল বইগুলো মনে করতে করতে রাস্তা পার করেছি। আর এদিকে প্রিন্সেস এলিনা পুরো রাস্তা শুধু আমার দিকে তাকিয়েই ছিলো। অনেকটা অস্বস্তি লেগেছে। আমিও ঘুমাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা করতে পারি নি, কারন দুজন গার্ড একসাথে ঘুমালে কিছুটা খারাপ হতেও পারে। তাই পুরে রাস্তা আমাক অস্বস্তির সাথে যেতে হলো। পুরো একদিনের ক্লান্তমাখা যাত্রার পরে আমরা পৌছে গেলাম হিমরারের বর্ডার। তারা আমাদের আসার বার্তা আগেই পেয়েছিলো। তাই আমাদের যানকে সোজা ক্যাপিটালে টেলিপোর্ট করে দিলো। এখান থেকে আমাদের হিমরারের প্যালেসে যেতে হবে।
।।।।
।।।
।।

(((চলব)))

।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২১
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমরা যানে করে চলে এসেছি হিমরারে। গন্তব্য হচ্ছে ক্যাপিটাল সিটির রয়েল প্যালেসে। সেখানে আমাদের রাজ্যের দুই প্রিন্সেস হিমরারের রাজার সাথে কথা বলবেন। হিমরারের রাজা আমাদের রাজ্যে কোনো গুপ্ত আক্রমন করছে কিনা সেটাই আমাদের এখানে বের করতে হবে, তবে হিমরারের সাথে আমাদের রাজ্যের বন্ধুত্ব অনেক বেশী ভালো, রাজা নিজেও জানেন যে হিমরার রাজ্য থেকে তার কোনো ক্ষতি হবে না। কিন্তু রাজার প্রধান চিন্তা আরেকটা রাজ্য নিয়ে। এ্যালকোর্টের সাথে তেমন বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক নেই আমাদের। তাই রাজা সেখানে প্রথম প্রিন্সেস এলিসার সাথে অনেক সেনাও পাঠিয়েছেন সেখানে। আমাদের এখানে ভাবার কোনো কিছু নেই সেটা আমি বুঝতে পারলাম। তারপরও, কিছু বলা যায় না। আমরা এখন অন্য একটা রাজ্যে আছি, এখানে কোনো কিছুই হতে পারে। সঠিক করে আমি সব কিছু বলা যাবে না। যেহেতু আমি প্রিন্সেস এলিহার রয়েল গার্ড, তাই তার সাথেই থাকতে হবে আমাকে। যদিও বিষয়টা আমার একদম ভালো লাগে না। কোনো মেয়ের সাথে একা থাকা জিনিসটা অনেক বিরক্তকর। তারপরও এটাই আমার কাজ, তাই করতে হবেই। আমাদের যান প্যালেসের গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলো। বিশাল প্যালেসটা। আমাদের রাজ্যের থেকে কিছুটা ছোট হলেও, এটা আমাদের থেকে অনেক সুন্দর করে বানানো হয়েছে, বাইরের দিকের দেওয়ালগুলোতে সূর্যের আলো পরাতে সেগুলো রিফ্লেক্ট হয়ে চারপাশে থাকা পুকুরে গিয়ে পরছে। প্যালেসের চারিদিক দিয়েই পুকুর কাটা। আর সেই পুকুরের উপর দিয়ে রাস্তা বানানো। আমরা পানির উপরের রাস্তা দিয়েই প্যালেসের ভিতরে চলে গেলাম। প্যালেসের নিচের ভবনকে বানানো হয়েছে শুধু যান রাখার জন্য। সেখানে অনেক উন্নত ধরনের ম্যাজিকাল যান রয়েছে যেগুলো আমি আগে কখনো দেখি নি। বোঝা যাচ্ছে এ রাজ্যের ম্যাজিকাল টেকনোলজি আমাদের থেকে উন্নত। আমাদের রাজ্যে শুধু মিলিটারি পাওয়ারটাই বেশী উন্নত। ক্যাপিটাল শহরটাও অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। মূলত ক্যাপিটালে সবাই খুব উন্নত। তাছাড়া এই রাজ্যের সব ছোট বড় শহর গুলোও অনেক উন্নত। এক কথায় তিন রাজ্যের মধ্যে এটাই সবচেয়ে পারফেক্ট শহর। আমি এখনো এ্যালকোর্টে যায় নি, সেখানেও একদিন গিয়ে আমাকে দেখতে হবে সেটা কিরকম। তারপর নাহয় সঠিক তুলনা করতে পারবো। যায়হোক আমাদের কয়েকজন গার্ড পাশে থাকা একটা ছোট দরজার ভিতরে ঢুকতে বললো। আমরা ভিতরে ঢোকার পর দেখতে পেলাম ছোট একটা রুম যেটাই দশজন দাড়িয়ে থাকাও হয়তো কষ্ট হয়ে যাবে। আর দরজা তখন বন্ধ হয়ে গেলো। পাঁচ সেকেন্ড পরে আবার দরজা খুলে গেলো। আর আমরা দেখতে পেলাম সামনেই হিমলারের সিংহাসন। আর সেখানে বসে আছেন হিমলারের রাজা কর্ডিজ। দরজা থেকে বের হয়ে আমরা রাজার সামনে গিয়ে পা গেড়ে দিয়ে সম্মান জানালাম। রাজা বাদে সবাইকে আরেক রাজার সামনে এভাবেই সম্মান জানাতে হয়। প্রিন্সেসদেরও সম্মান জানাতে হয় এভাবে, নাহলে সেটা বেয়াদবী ধরা হয়। প্রিন্সেস এলিনা এবং এলিহা দুজনেই রাজার সাথে মত বিনিময় করলেন। আমরা দুই রয়েল গার্ড দাড়িয়ে দেখছিলাম। শেষে রাজা বলে উঠলেন।
.
–আপনারা আমাদের মেহমান, তাই সবাই এই রাজ্যকে নিজের রাজ্যই মনে করবেন। যা ইচ্ছা হয় আমার কাছে আর্জি করতে পারেন।(রাজা)
.
–মাই কিং আমরা এখানে কিছুদিন থাকার চিন্তা করছিলাম, যদি কিছু মনে না করেন আপনি। হিমলার আমাদের অনেক ভালো লেগেছে, আমরা ক্যাপিটালটা একটু ঘুরে দেখতে চাই।(প্রিন্সেস এলিনা)
.
–সেটা তো আমাদের ভাগ্য। ইগড্রোলিয়ার দুই প্রিন্সেস আমাদের রাজ্যকে পছন্দ করেছে, সেটা আমাদের জন্য আনন্দের ব্যাপার। আমি আপনাদের থাকার সকল ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।(রাজা)
.
–মাই কিং আপনার অনুমতি থাকলে আমি কিছু বলতাম।(আমি)
.
–হ্যা, রয়েল গার্ড বলো।(রাজা)
.
–মাই কিং। আমাদের শহরটা অনেক ভালো লেগেছে। যদি আমাদর থাকার ব্যবস্থা প্যালেস বাদে শহরে কোথাও করে দিতেন, তাহলে ভালো হতো।(আমি)
.
–সেটা তো কোনো ব্যাপারই না। তোমরা কোনো চিন্তা করো না। আমার ছেলে প্রিন্স কর্লিজ তোমাদের সবার থাকার ব্যবস্থা করে দিবে।(রাজা)
.
–ধন্যবাদ, মাই কিং।(এলিহা)
।।।
।।।
আমি মূলত প্যালেস থেকে দূরে থাকতে চাচ্ছিলাম তাই রাজার কাছে বললাম আমাদের প্যালেস বাদে একটা জায়গায় থাকতে দিতে। প্রথমে ভেবেছিলাম রাজা এটা শুনে ধমক দিবে আমাকে। কিন্তু রাজা কিছু না বলায় ভালো লাগলো। রাজার ছেলে আমাদেরকে প্যালেস থেকে বাইরে নিয়ে আসলো। এখনো কোনো বলে নি আমাদের সাথে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক এটিটিউড ওয়ালা প্রিন্স। প্রিন্স কর্লিজ আমাদেরকে একটা বাসায় নিয়ে আসলো, যেটার সাইজ বিশাল। ভিতরে অসংখ্যা রুম হবে সেটা আমি বুঝতেই পারছি। এবার প্রিন্স বলতে লাগলো,
.
–এটা আমাদের গেস্টদের জন্য বানানো হয়েছে, যারা বাইরের রাজ্য থেকে আসে আমাদের রাজ্যে, তাদেরকে এখানেই আশ্রয় দেওয়া হয়।(প্রিন্স ভিতরে নিয়ে গেলেন)
.
–ওয়াও। অনেক সুন্দর তো বাসাটা।(প্রিন্সেস এলিনা)
.
–এই বাসার মধ্যে রয়েছে একজন বাটলার, দুজন কুক এবং চারজন সিকিউরিটি গার্ড। মনে হয় না কোনো সমস্যা হবে আপনাদের। কোনো সমস্যা হলে বাটলারকে বলতে পারেন।(প্রিন্স)
।।।
।।।
প্রিন্স এটুকু বলে চলে গেলেন। আমরা বাড়ি ঘুরে দেখতে লাগলাম। অনেক বড় বাড়ি। জানি না প্রিন্সেস এলিনা এখানে কয়দিন থাকার সিদ্ধান্ত নেই, কিন্তু আমি প্যালেস থেকে বাইরে আসলাম, কারন প্যালেসে কেউ খুব সহজেই আমাদের উপরে আক্রমন করতে পারে। আর আলাদা একটা বাসায় থাকলে সেটার সম্ভবনা একটু কমই। যায়হোক বাসায় অনেকগুলো রয়েছে। দুজন প্রিন্সেস এর থাকার জন্য আদর্শ বাড়ি বলা যায়। আমার শহর ঘোরার অনেক ইচ্ছা জাগলো।
.
–প্রিন্সেস এলিহা আপনি তো অনেক ক্লান্ত। আপনি একটু রেস্ট করুন। আমি শহরটা একটু ঘুরে আসি।(আমি)
.
–আমিও যাবো। আমাকে নিয়ে যাও।(প্রিন্সেস এলিহা)
.
–না প্রিন্সেস। আপনি এমনিতেই পুরো রাস্তা অসুস্থ ছিলেন। এখন বাইরে গেলে আরো অসুস্থ হয়ে পরবেন। আমি বরং শহরটা একটু চিনে আসি। তারপর আপনাকে ঘোরাতে নিয়ে যাবো।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে।(প্রিন্সেস এলিহা)
।।।
।।।
প্রিন্সেস এলিহাকে বলে আমি বাসার বাইরে চলে আসলাম। কিন্তু আমার পিছনে আসলো প্রিন্সেস এলিনা।
.
–প্রিন্সেস এলিনা আপনি বাইরে যাচ্ছেন?(আমি)
.
–হ্যা। আখিল বাসায় থাকছে, কারন তুমি গেলে এলিহাকে সুরক্ষা রাখতে হবে, আর এই সুযোগে আমিও ঘুরতে পারবো।(প্রিন্সেস এলিনা)
.
–আচ্ছা প্রিন্সেস আমার সাথে সাথে থাকবেন।(আমি)
.
–ঠিক আছে।(প্রিন্সেস)
।।।
।।।
আমি বুঝতে পারলাম না, এতো সহজে আখিল রাজি হয়ে গেলো কিভাবে। হয়তো জোরালে ভাবে আবেদন করেছিলো ঘুরতে যাওয়ার জন্য। যায়হোক আমি প্রিন্সেস এলিনাকে নিয়ে হাটতে লাগলাম। প্রিন্সেসকে হাটিয়ে নেওয়াটা বড়ই বেমানান। তবুও কিছু করার নাই। আমাদের যান প্যালেসে রয়েছে। আর হাটা স্বাস্থের জন্য অনেক ভালো৷ আমি আর প্রিন্সেস এলিনা অনেকক্ষন যাবৎ হেটেছি। এর মাঝে প্রিন্সেস এলিনা কোনো কথা বলে নি। আমার নজর আসে পাশের দিকে ছিলো, তাই আমি সামনে কি হচ্ছে সেদিকে একদমই নজর দিচ্ছিলাম না। সামনে থেকে হঠাৎ হুড পরা একটা মেয়ে আমাকে ধাক্কা দিলো। ধাক্কার ফলে তার বা হাতে ফলের ব্যাগ নিচে পরে গেলো। দেখে মনে হচ্ছে ফল কিনে হাটতে হাটতে সেগুলো মনের সুখে খাচ্ছিলো। তবে আমার সাথে ধাক্কা লেগে সব সুখ গেলো। আমি চেহারা দেখতে পেলাম না হুডের কারনে। তবে কাপড় দেখে এটুকু বুঝতে পারলাম যে সে একজন মেয়ে। মেয়েটা আমার দিকে তাকালো। অনেক ভালো করে আমার চেহারা লক্ষ করলো, তারপর বলতে লাগলো।
.
–সরি আমি দেখতে পাই নি আপনাকে।(মেয়েটা)
।।।
।।।
শুধু এটুকু বলেই মেয়েটা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগলো। কিন্তু আবার প্রিন্সেস এলিনাকে দেখে থামলো। ওর দিকেও কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো এরপর সোজা চলে গেলো আমাদের পিছন দিকে। আমি জানি না মেয়েটার সমস্যা কি। এভাবে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইলো কেনো? মনে হচ্ছে আমাকে এবং প্রিন্সেসকে চিনে সে। কিন্তু কোনো কথা বললো না। তাছাড়া একটা মেয়ের হুড নামিয়ে চেহারা দেখা অন্যায়, তাই চেষ্টা করি নি সেটা করার। আমি মেয়েটার চিন্তা বাদ দিলাম। প্রিন্সেস এলিনার সাথে শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখলাম। কিন্তু সমস্যা হলো বেশী হাটার কারনে প্রিন্সেস এলিনা আর হাটতে পারছে না। অবশ্য তাকে হাটানোর জন্য অন্যায় আমারই হয়েছে। প্রিন্সেসরা কখনো পায়ে হাটে না। তাদের জন্য যানের ব্যবস্থা করা হয়।
.
–জ্যাক আমি আর হাটতে পারছি না।(প্রিন্সেস)
.
–তাহলে চলুন ফেরা যাক।(আমি)
.
–আমি হেটে আবার ফেরত যেতে পারবো না।(প্রিন্সেস)
.
–আমি ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারি না। আপনি তো নিশ্চয় টেলিপোর্ট ম্যাজিক পাওয়ার করতে জানেন। তাহলে আপনি সোজা প্রিন্সেস এলিহার কাছে টেলিপোর্ট হয়ে চলে যান।(আমি)
.
–আসলে আমি টেলিপোর্ট স্পেল ব্যবহার করতে পারি না।(প্রিন্সেস)
.
–তাহলে আমাদের একটা যানের ব্যবস্থা করতে হবে এখানে। কিন্তু এখানে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। আপনি না হয় এখানে বসুন আমি একটা যান নিয়ে আসছি।(আমি)
.
–আচ্ছা।(প্রিন্সেস)
।।।
।।।
আমি প্রিন্সেসকে একটা দোকানে বসিয়ে দিলাম। মূলত সেটা ফুলের দোকান অনেক ধরনের ফুল পাওয়া যায় সেখানে। আর আমি বের হলাম একটা যান খুজতে। অবশ্য এই রাজ্যে রাস্তাতেও যান পাওয়া যায়, যেটা সাধারন লোকদেরকে বহন করে। আমাকে এখন সেটা খুজতে হবে। কিছুক্ষন খোজার পর একটা পেয়েও গেলাম। সেটা নিয়ে প্রিন্সেস কে নিতে আসলাম। তবে ফুলের দোকানে প্রিন্সেসকে আবারো সেই হুড পরা আগের মেয়েটার সাথে কথা বলতে দেখলাম। জানি না প্রিন্সেসকে কি বললো, তবে আমাকে দেখার সাথে সাথে সে দোকান থেকে বের হয়ে চলে গেলো। আমি ভাবার ফলে তাকে আটকাতে ভুলেই গেছি। তবে আমার এতোকিছু ভাবার নেই, আমার দায়িত্ব শুধু প্রিন্সেস এলিহাকে নিরাপদ রাখা। তার কাছে এই মেয়ে আসলে আমি তখন তাকে ঠিকই ধরবো। যাইহোক আমাকে দেখে প্রিন্সেস আমার সাথে যানে উঠলো। মূলত আমার প্লান ছিলো প্রিন্সেসকে আমি সোজা পাঠিয়ে দিবো আমাদের যেখানে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে। কিন্তু এখন প্রিন্সেস এর জন্য চিন্তা হচ্ছে, কারন আপাতোতো তাকে নিরাপদ রাখাও আমার দায়িত্ব। তাই তার সাথে করে আমাকেও যেতে হবে। আমি প্রিন্সেসকে সোজা দিয়ে আসলাম আমাদের যেখানে থাকতে দেওয়া হয়েছে সেখানে৷ প্রিন্সেসকে বাসার ভিতরে ঢুকতে দিয়ে আমি বাসার বাইরে চলে আসলাম। আমি যানের মধ্য থেকেই লক্ষ করেছি, কেউ আমাদের ফলো করেছে, আমি সিওর না কে। কিন্তু আমার মনে হয়েছিলো। তাই আমি বাসার বাইরে চলে আসলাম। যানের ভাড়া মিটিয়ে দেওয়ায় লোকটা যান নিয়ে চলে গেলো। আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম। কাউকে দেখতে পারলাম না। তবে দূরে সেই হুড পরা মেয়েটাকে দেখতে পারলাম। এবার আমার সন্দেহ বেরে গেলো যে এতোক্ষন এই মেয়েটাই আমাদের ফলো করেছে। আমি এগিয়ে যেতে লাগলাম। মেয়েটাও পালিয়ে যেতে লাগলো। দৌড়ে একটা গলির মধ্যে গেলো, আর আমিও ওর হাত ধরে টান মুখ দেওয়ালের দিকে করে ওকে জিজ্ঞেস করতে লাগলাম
.
–কে তুমি? আমাদের ফলো করছো কেনো? আর প্রিন্সেস এলিনার সাথে কি কথা বললে তখন?(আমি)
.
–আস্তে ধরো ব্যথা করছে তো।(মেয়েটার দুই হাত শক্ত করে ধরার ব্যথা পেয়ে বললো)
.
–আমার প্রশ্নের উত্তর দাও আগে।(আমি)
.
–তাহলে এলিনা আবারো প্রিন্সেস।(মেয়েটা)
.
–কি বলছেন যাতা। আপনি কে?(আমি)
.
–আমার নাম জেসি।(মেয়েটা)
.
–আমাদের ফলো করছেন কেনো?(আমি)
.
–মন চাইলো তাই।(জেসি)
.
–ফাজলামো করছেন? কে অর্ডার দিয়েছে আপনাকে?(আমি)
.
–আমি কারো অর্ডার শুনি না। নিজের ইচ্ছা মতো কাজ করি আমি।(জেসি)
.
–দেখো সরাসরি বলো নাহলে ব্যাপারটা ভালো হবে না।(আমি ভিরুদাকে হাতে নিয়ে বললাম)
.
–ও তাহলে ইগড্রাসিল আবারো আছে তোমার কাছে। অবশ্য এবার তলোয়ারের রূপে।(জেসি)
।।।
।।।
মেয়েটার কথাবার্তা শুনে আমার সুবিধার মনে হচ্ছে না। আমার তলোয়ার দেখেই বলে দিলো এটা ইগড্রাসিল। কোনো সাধারন মেয়ে না এটা। আমাকে সাবধান থাকতে হবে। আমি তলোয়ার শক্ত করে ধরলাম। ইগড্রাসিলের আগুন আমার ডান হাতে জ্বলতে লাগলো৷ আমি ওকে আঘাত করে বেহুস করতে চেয়েছিলাম। কারন তাতে ওকে আমি বেধে রেখে অনেক জিনিস জিজ্ঞাসা করতে পারবো। কিন্তু হঠাৎ মেয়েটা আমার হাত মোচড় দিয়ে ওর হাত মুক্ত করে নিলো। আমার বাম হাতে মোচড় লাগায় ব্যথা পেয়েছি আমি। সাথে সাথে আমার ডান হাতে ওর ডান হাত দিয়ে ধরার ফলেই ইগড্রাসিলের সকল আগুন আমার ডান হাত থেকে নিভে গেলো। তলোয়ারের মধ্যে যত ম্যাজিক পাওয়ার ছিলো, সেটাও একদম কমে গেলো। আর বাম হাত দিয়ে আমার কপালে একটা হাত দিলো। যার ফলে আমার চোখ দুটো একদম বন্ধ হয়েগেলো। আমি ঘুমের দেশে তলিয়ে পরছি। বুঝতে পারলাম আমাকে ম্যাজিক দিয়ে ঘুম পারিয়ে দিয়েছে। শুধু আমাকে নই বরং ইগড্রাসিলকেও ঘুম পারিয়ে দিয়েছে সে। মেয়েটার ক্ষমতা একদম অন্য লেভেলের। কোনো দিক দিয়েই আমার সুযোগ নেই।
কিন্তু প্রশ্ন হলো কে এই জেসি?
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
।।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২২
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমার দেখা হয়েছিলো একটা মিস্ট্রিয়াস মেয়ের সাথে, যার পাওয়ার আমার ধরার অনেক বাইরে। তার এক ছোয়াতেই আমি সেন্সলেশ হয়ে গেছি। অনেকক্ষন হয়েছে আমি সেই গলিতে পরে রয়েছি, রোডের উপরে শুয়ে থাকা আমার ভালো লাগছে না, তবে কিছু তো করার মতো দেখছি না। আমি আমার শরীরকে নারাতে পারছি। পনেরো মিনিটের মতো আমি প্যারালাইস হয়ে রোডের উপরে পরে আছি। জায়গাটা একটা নিরব গলি হওয়ায় লোকজনের আশা জাওয়া নেই এখানে, নাহলে হয়তো আমাকে কেউ দেখলে এতোক্ষনে সাহায্য করতো। যায়হোক আমি শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। দূরে কিছু লোকদের দেখতে পেলাম যারা ডানার মাধ্যমে আকাশে উড়ছে। ইচ্ছা আমারও করে, তবে মানুষ হয়ে জন্মেছি, তাই উড়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। এমন কোনো স্পেলও নেই যেটা আমাকে উড়তে সাহায্য করবে। আমার ইচ্ছা জাগছে যে আমার পিঠে ঔ আজব হাত না হয়ে ডানা হলে ভালো হতো। পুরো বিশ মিনিট পরে আমার শরীরের বোধ ফিরে পেলাম আমি। এতোক্ষন শরীরবিহীন মনে হচ্ছিলো নিজেছে। তবে এখন আস্তে আস্তে ফিল করছি আমি সব কিছু। আমি ভিরুদাকে হাতে নিয়ে ইগড্রাসিলকে ডাকতে শুরু করলাম। কিন্তু কোনো কাজ হলো না। ওর বদলে আমার বাম হাত থেকে ভ্যালি উত্তর দিলো আমাকে,
.
–ওকে ডেকে লাভ হবে না। ও গভীর ঘুমে আছে।(ভ্যালি)
.
–ওওও।(আমি)
.
–আমি এরকম স্পেল খুব কমই দেখেছি যেটা কিনা ইগড্রাসিলকেও ঘুম পারিয়ে দিতে পারে।(ভ্যালি)
.
–আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, ও যখন আমার ডান হাতে ওর হাত রাখলো, তখনি ওর মধ্যে থেকে আমি আজব ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পাই।(আমি)
.
–তুমি এতোদিন যাদের ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পেয়েছো সেগুলো সাধারন ম্যাজিক, যেটা এট্রিবিউটের হয়ে থাকে, এটা তোমার অনেক বড় অস্ত্রও বটে। কারন ছয় এট্রিবিউটের ম্যাজিকের ছয়টা রং রয়েছে। ফায়ারের টা লাল, ওয়াটারের টা নীল, আর্থ এর টা খয়েরী, ওয়ার এরটা হালকা সাদাটে, ডার্কের টা কালো, লাইটের টা উজ্জল সাদা। তুমি হয়তো খেয়াল করেছো একজনের স্পেলের উপরে ডিপেন্ড করে তার ম্যাজিক পাওয়ার কিরকম রঙের দেখাবে।(ভ্যালি)
.
–হ্যা এটা তো আমাকে আমার মাস্টার লুসেফারই বলেছে, অবশ্য আমি এখনো এটা পুরোপুরি বুঝি না। আর এমনিতেও আমি এর আগে কারো ডার্ক ম্যাজিক পাওয়ার দেখি নি। যেমনটা ঔ মেয়ের ছিলো, যখন আমাকে ধরলো ও।(আমি)
.
–হ্যা সেটা আমিও জানি। তবে শেষ করতে দাও আগে আমার কথা। মেয়েটার ম্যাজিক পাওয়ার ডার্ক এট্রিবিউটের ছিলো না এটা আমিও জানি। সাধারনত একজন লোকের শরীর থেকে ম্যাজিক পাওয়ার বের যখন সে কেনো স্পেল ব্যবহার করে, তবে সেই ম্যাজিক পাওয়ার দেখার ক্ষমতা শুধু আমাদের ড্রাগনদের গোত্রের মধ্যে ছিলো। যেহেতু আমরা একটা এট্রিবিউটের প্রানী ছিলাম তাই বাকি এট্রিবিউট আমরা দেখতে পারলেও সেগুলো ব্যবহার করতে পারতাম না। কিন্তু তোমার ক্ষেত্রে সেটা আলাদা। যেহেতু তুমি কোনো ধরনের ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারো না, তারজন্য তোমার মধ্যে আমাদের ড্রাগন গোত্রের এই ক্ষমতা রয়েছে। এর ফলে তুমি অন্যের ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পারো।(ভ্যালি)
.
–আমার মতো ও আরো অনেক হবে যদি খোজা তাই তাহলে।(আমি)
.
–হ্যা সেটা ঠিক, ম্যাজিক পাওয়ারে আবার আশা যাক। ম্যাজিক পাওয়ার দুই রকমের হয়, একটা হয় এট্রিবিউটের, আরেকটা হলো নিজ গোত্রের। মূলত ছোট কথায় বলতে গেলে প্রতিটা গোত্রকে আমরা ড্রাগন খুব সহজেই চিন্তে পারি। কারন তাদের মধ্য থেকে তাদের গোত্রের ম্যাজিক পাওয়ার আমরা পরিস্কার দেখতে পারি।(ভ্যালি)
.
–গোত্রে ম্যাজিক পাওয়ার সেটা আবার কি?(আমি)
.
–তুমি এখনো এই ম্যাজিক পাওয়ার দেখার ক্ষমতা পুরোপুরি মাস্টার করতে পারো নি। যখন করবে তখন নিজেই দেখতে পারবে। প্রতিটা গোত্রের প্রানীদের শরীর থেকে তাদের নিজ গোত্রের একটা আলাদা ম্যাজিক পাওয়ার বের হয় যেটা শুধু আমরাই দেখতে পারি। অবশ্য তোমার কাছেও সেটা আছে, কিভাবে আমি জানি কিন্তু আমাদের এই ক্ষমতা তুমি অর্জন করেছো। ধরো তুমি মানুষ তোমার মধ্য থেকে এখন উনুজ্জল হালকা সাদা একধরনের ম্যাজিক পাওয়ার আমি দেখতে পারছি, সব মানুষের শরীর থেকে এই একই রঙের ম্যাজিক পাওয়ার বের হয়।(ভ্যালি)
.
–তাহলে ঔ মেয়েটা কোন গোত্রের ছিলো?(আমি)
.
–তার শরীর থেকে কালো ম্যাজিক পাওয়ার বের হচ্ছিলো, সেটা একদম গাড়ো কালো ছিলো, তাই বলা যায় সে একজন ডেভিল।(ভ্যালি)
.
–তার মানে হ্যারির মতো সেও একটা ডেভিল?(আমি)
.
–গোত্র ডেভিল কিন্তু তোমার বন্ধ হ্যারির মতো না। আমি এর আগেও অনেক ডেভিল দের দেখেছি, তবে মেয়েটার পাওয়ার পুরো অন্য লেভেলে। পুরো শরীর লমটে উঠেছিলো ওর পাওয়ার দেখতে পেয়ে।(ভ্যালি)
.
–তাহলে বুঝতে পারলাম আমরা একটা সিরিয়াস ঝামেলায় পরে গেছি। আমি মূলত কোনো শত্রু বানাতে চাই না। কিন্তু মনে হচ্ছে এই মেয়ের আশেপাশে আবার গেলে সেটা হতে সময় লাগবে না।(আমি)
.
–হ্যা তোমাকে সাবধান থাকতে হবে। ইগড্রাসিল এবং আমি ওর কাছে কোনো কিছুই না। আমাদের তলোয়ার কিংবার তোমার দুই হাতে টাচ করলেই আমরা ঘুমিয়ে যাবো।(ভ্যালি)
.
–হ্যা সেটা অনেক ভয়ানক স্পেল। যাইহোক আমাদের সাবধান হতে হবে বেশী করে। মূলত তোমাদের দুজন ছাড়া আমি কোনো কিছুই না।(আমি)
.
–এরজন্য তোমাকে বলেছি আমাদের সাথে লড়তে শিখো। যদি না ব্যবহার করো বেশী, তাহলে তো আমাদের পুরো পাওয়ার পর্যন্ত যেতে পারবে না তুমি।(ভ্যালি)
.
–হ্যা এটা বলা সহজ। কিন্তু যে পরিস্থিতিতে আছি এখন, তাতে তো সম্ভব হচ্ছে না।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। তবে সাবধান থাকো।(ভ্যালি)
।।।
।।।
ভ্যালিও ঘুমিয়ে গেলো। কারন আমার শরীরের ম্যাজিক পাওয়ার শেষ। মেয়েটা শুধু আমার শরীরে টাচ করে আমাকে ঘুম পারিয়ে দেই নি। বরং আমার শরীরের পুরো ম্যাজিক পাওয়ারও ড্রেইন করেছে। মূলত ইগড্রাসিল এবং ভ্যালির মধ্যে এখন সামান্য ম্যাজিক পাওয়ার থালে, সেটা শেষ হলে তারা আমার শরীর থেকে ম্যাজিক পাওয়ার হাওলাট করে থাকে, তবে সেটাও শেষ হলে দুজনেই ঘুমের মধ্যে থাকে। আমি আপাতোতো দুই তলোয়ারের একশো ভাগের মধ্যে পাঁচ ভাগ পাওয়ারই ব্যবহার করতে পারি। বাকিটুকু তাদের সাথে ট্রেইন, লড়াই করে আস্তে আস্তে ব্যবহার করতে পারবো। তবে ভ্যালির থেকে আমার এই ম্যাজিক পাওয়ার দেখার ক্ষমতার কথা শুনে ভালো লাগলো। আমার কাছে এটা কিভাবে আসলো সেটা আমি নিজেও জানি না। কিন্তু অস্থির একটা ক্ষমতা এটা। যদিও কিছু ক্ষমতা রয়েছে আমার কাছে, তারপরও আমি স্পেল ব্যবহার করতে পারি না এজন্য আমার দুঃখ হচ্ছে। এই দুনিয়াতে ঔ মেয়ের মতো অনেক শক্তিশালী লোক আছে। তাদের কাছে আমি কিছুই না। আর আমার এই অবস্থা নিয়ে আমি প্লান করছি রাজাকে হত্যা করতে। আমি বুঝতে পারলাম, আমার চিন্তাভাবনায় আমার বন্ধুরা সবাই মারা যাবে। তাই সবকিছু আমাকে আরেকবার ভালো করে ভেবে দেখতে হবে।।।।
।।।।
।।।।
হিমরারের ট্রিপ দুই প্রিন্সেসের ভালো কাটলেও, আমার জন্য সেটা ভালো না। আমি বুঝতে পারলাম রয়েল গার্ড হয়ে আমার অনেক ভুল হয়েছে। এই কাজে পাহাড়া দেওয়া ছাড়া আর কিছু করা যায় না। আর আমি কোনো বেবীসিটার হয়ে থাকতে চাই না। পুরো একসপ্তাহ পরে আমরা হিমরার থেকে ইগড্রোলিয়াতে ফিরে আসলাম। এর মাঝে প্রিসেস এলিহা এবং এলিনা এর সম্পর্কেও অনেক কিছু জানতে পারলাম। মূলত দুজন সৎ বোন। দুজনের আম্মা আলাদা। দুজন প্রায় সমবয়সী। অবশ্য দুজন দুজনকেই ভালোবাসে আপন বোনের মতো, তবে কেউ কাউকে বলে বা দেখায় না। সামনা সামনি তাদের দুজনের মধ্যে সবসময়ই ঝগড়া লাগবে। সব মিলিয়ে বলা যায় প্রিন্সেস এলিহা ভাবে প্রিন্সেস এলিনা তাকে দেখতে পারে না, এবং প্রিন্সেস এলিনাও ভাবে প্রিন্সেস এলিহা তাকে দেখতে পারে না। আমি এখানে সাইড নিবো প্রিন্সেস এলিসার সাথে। তিন প্রিন্সেসের মধ্যে রাজা মারা গেলে সেই রানী হওয়ার অধিকার রাখে। কারন সব দিক দিয়েই সে পারফেক্ট। শুধু তাই নয় বরং তার রয়েল গার্ড যে কিনা এক সময় রাজার এলিট গার্ডের একজন ছিলো, তার সাথে তার বিবাহ হয়েছে। ঔদিক দিয়ে দেখা যায়। পরের মুকুট তাদের মাথায় যাবে। সেটা বাদ দিলাম। পুরো এক সপ্তাহ পরে আমরা রাজ্যে ফিরে আসলাম।
।।।
।।।
আমার এই কয়টা দিন শুধু ঔ জেসি নামক মেয়েটার কথা ভেবেই কেটেছে। আমি প্রতিটা মুহুর্ত সজাগ ছিলাম এবং ভয়ে ছিলাম যে আমাকে আক্রমন করতে পারে। এক হিসাবে বলা যায় এক সপ্তাহ সময় আমার ভয়েই কেটেছে। এক সপ্তাহ সময় হয়ে গেলো এখনো ইগড্রাসিল জাগে নি ওর ঘুম থেকে। এদিকে ভ্যালি তার পরের দিনই জেগেছিলে। লড়াই এ আমার ভ্যালির থেকে বড় অস্ত্র হলো ভিরুদা। কারন ইগড্রাসিলের আগুন ভ্যালির পানিকেও নাকি গলিয়ে দিতে পারতো, অবশ্য এটা ভ্যালি নিজেই আমাকে বলেছে। সেই মেয়েটা আমাকে এই অবস্থায় আক্রমন করলে সে ভ্যালিরও এই একই হাল করবে, তাই আমাকে সাবধান থাকতে হবে। কারন দুজন ঘুমালে আমার তলোয়ারের টেকনিক আমাকে বাচাবে না।
।।।।
।।।।
রাজ্যে এসে আমার প্রতিদিনের কাজ আবার শুরু হলো। অবশ্য দিনের সময় প্রিসেস এর গার্ড হয়ে থাকা। এবং রাতের সময় গুপ্ত রাস্তা দিয়ে বের হয়ে শহরের কালো লুটকারীদের হামলা করা। জিনিসটা ভালোই যাচ্ছিলো। রাজ্যে ব্লাক ড্রাগনের নাম ছরিয়ে গেছে। এদিকে হ্যারি, লুসি এবং লুসানাও অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তবে এটা আমাদের জন্য স্বাভাবিক না। হিমরার থেকে আমাদের প্যালেসে ফেরা প্রায় দেড়মাসের মতো হয়ে গেছে। একদিন সকালে রাজার দূত আমাকে রাজার সিংহাসনে যেতে বললেন। আমি মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে, তাই ভালো করে রেডি হয়ে গেলাম। এর মধ্যে ইগড্রাসিলও ঘুম থেকে উঠেছে। ওর প্রায় পনেরো দিনের মতো লেগেছে ঘুম ভাঙতে। যাইহোক আমি রাজার সামনে গিয়ে পা ঝুকিয়ে সম্মান জানালাম,
.
–মাই কিং। ডেকেছেন আমাকে?(আমি)
.
–হ্যা প্রিন্সেস এলিহার রয়েল গার্ড জ্যাক। তোমার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ন কাজ রয়েছে।(রাজা)
.
–বলুন মাই কিং।(আমি)
.
–শহর সাতশো আটানব্বই, সেখানে খুব আশ্চর্যজনক জিনিস হচ্ছে। লোকজনের মতে সেখানে রাতের সময় ভয়ানক যুদ্ধের আওয়াজ শোনা যায়, কেউ রাতের সময় বের হয় না সেখানে, যদিও রাতে ভয়ানক যুদ্ধের আওয়াজ শোনা যায়, কিন্তু দিনের সময় তার কোনো চিহ্নই দেখা যায় না।(রাজা)
.
–জ্বী মাই কিং, বুঝতে পেরেছি। আপনি চাচ্ছেন, আমি সেখানে গিয়ে ব্যাপারটা পরীক্ষা করবো।(আমি)
.
–হ্যা। তোমার কাছ শুধু সেখানে যা হচ্ছে সেটার সঠিক তথ্য বের করা। এবং যদি কোনো সমস্যায় পরো তার জন্য তোমার সাথে মিলিটারি থেকে যে কোনো সেনা নিয়ে যেতে পারো তুমি?(রাজা)
.
–মাই কিং, যদি আমি মিলিটারী সেনা নিয়ে কয়েকজন আর্কাইব সদস্য নিতে চাই?(আমি)
.
–সেটা কেনো?(রাজা)
.
–আসলে, আমি তলোয়ার ব্যবহার করি, আমার মনে হয় একজন ডিসট্রাকসন ম্যাজিক ব্যবহারকারী এবং দুইজন সাপোর্ট ম্যাজিক ব্যবহারকারী আমার জন্য পারফেক্ট হবে, আর তাছাড়া আর্কাইবে নতুন একটা টিম অনেক নাম করছে। আমার মনে হয় তারা আমার এই মিশনের জন্য ঠিক হবে।(আমি)
.
–আচ্ছা ঠিক আছে। আর্কাইবের আমার দূত চলে যাবে, তুমি যাদের নিতে চাও সেখান থেকে নিতে পারো। তবে আমি মনে করে কিছু সেনা প্রয়োজন হবে তোমার।(রাজা)
.
–তেমন কিছু হলে আমি বার্তা প্রেরন করবো। আপনি কেনো চিন্তা করবেন না।(আমি)
.
–আমি এই মিশনের জন্য প্রিন্সেস এলিনাকে ও পাঠাতে চাই। যদিও তার রয়েল গার্ড তোমার ভাই আখিল অসুস্থ।(রাজা)
.
–মাই কিং, তাহলে আমাদের যাত্রায় প্রিন্সেস এলিনার গার্ড আমাকেই হতে হবে।(আমি)
.
–হ্যা। এলিনা টেলিপোর্ট স্পেল ব্যবহার করতে পারে তাই কোনো সমস্যা হলে, সে নিজে টেলিপোর্ট হয়ে চলে আসতে পারবে।(রাজা)
।।।
।।।
রাজা আরো কিছু কথা বললেন। পরে আমি বের হয়ে আসলাম। মূলত আমি হিমরার যাওয়ার পরে হ্যারি, লুসি এবং লুসানা আর্কাইবে যোগ দিয়েছে। তাদের মুখ ঢাকা থাকে মাস্কে তাই কেউ তাদের চিনে না। আসল পরিচয় গোপন রেখেছে তারা। আর যেহেতু লুসানা চেহারা বদল করার স্পেল জানে, তাই তাদের শহরে থাকতে সমস্যা হয় না এখন। আর আমি রাজাকে তাদের কথায় বলেছি। অবশ্য আমি প্রথমে ভাবি নি রাজা রাজি হবেন। কিন্তু ঔ তিনজনের কাজের নাম পুরো রাজ্যে ছরিয়ে গেছে। আর্কাইবের সবচেয়ে কঠিন কঠিন মিশন গুলো ওরা তিনজন পূরন করছে, তাই হয়তো রাজা রাজি হলেন। যাইহোক প্রিন্সেস এলিনাকে আমার সাথে পাঠানেন এটা আমার সঠিক লাগলো না। এদিকে আবার তার গার্ড আমাকেই হতে হবে। এমনিতেও সে একজন প্রিন্সেস, তার উপরে অনেক সুন্দরী। আর যেভাবে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। সব দিক দিয়েই আমার বিরক্ত লাগে। মেয়েরা আমার দিকে তাকালে নিজেকে অনেকটা নার্ভাস মনে হয়। কারন আমি জানি না। হয়তো ঔটা মেয়েদের স্পেশাল একটা পাওয়ার, যেটা ছেলেদের নার্ভাস করে দিতে পারে। যাইহোক আমার প্রিন্সেস এলিনার সাথে থাকা একটুও ভালো লাগে না। এর থেকে প্রিন্সেস এলিহাকে পাঠালে ভালো হতো। অবশ্য রাজারও মাথা আছে। সে জানে প্রিন্সেস এলিহা টেলিপোর্ট ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারে না। ব্যাপার আরেকটা ও হতে পারে। কারন প্রিন্সেস এর কথা আগে রাজা মেনসন করে নি। বরং আমি আর্কাইবের সদস্যদের কথা বলার পরেই মেনশন করেছে। মূলত রাজা হয়তে সন্দেহ করছে যে ওরা তিনজনই হয়তো ব্লাক ড্রাগনের সদস্য হবে। মূলত শহরে এই খবর ছড়িয়েছে যে ব্লাক ড্রাগনে একজন ছেকে এবং দুজন মেয়ে রয়েছে, আর তারা অসম্ভব শক্তিশালী। আর ওদের তিনজনের কথা বলায় হয়তো রাজার একটু সন্দেহ হয়েছে। এমনিতেও আমার উপরে রাজা সন্দেহ করবে না। কারন আর্কাইবের সদস্য হওয়াতে ঔ তিনজনের ফেইক নেম চারিদিকে ছরিয়েছে। আর আমি সেটা শুনেই রাজাকে বলেছি। তারপরেও রাজার ব্যাপারে কিছু বলা যায় না। আমি প্রথমে ভাবতাম রাজা কোনো কাজেরই না, সব কিছু জেনারেল চালায়। তবে কতটা ভুল ছিলাম সেটা এখন আমি জানি। এমনিতেও চাইলে জেনারেলরা তাদের রাজার বিরুদ্ধে যেতে পারে যদি রাজা কোনো ভুল করে। কিন্তু আমাদের জেনারেল সেটা পারবে না। কারন সে রাজার একদম হাতের পুতুল। সে যতই চেষ্টা করুক না কেনো, রাজার আদেশ বিহীন সে কোনো কাজই করতে পারে না। যেহেতু রাজার সৎ ভাই সে তাই রাজা তাকে তেমন দেখতেও পারে না।
।।।।
।।।।
আমাদের এসব আলোচনা না করাই ভালো। আমি আপাতোতো একটা যানের মধ্যে বসে আর্কাইবে চলে এসেছি হ্যারি, লুসি এবং লুসানার সাথে দেখা করতে। ওদেরকে পরিস্থিতিটা একটু বুঝিয়ে দিলাম। আমাকে না চেনার ভান ধরতে বললাম। এবং আস্তে আস্তে ভালো বন্ধু হওয়ার বুদ্ধি দিলাম ওদের আমি। কারন আমার পরবর্তী প্লান ওদেরকে আমার প্যালেসের সকল মিশনের জন্য আমার সাথে নেওয়া। এরজন্য আমাদের এই মিশনটা কম্পলিট করতে হবে। মিশনের বিবরণ শুনেই কিছুটা ভুতুরে ভাব অনুভব করতে পারছি আমি। জানি না কেনো তবে নতুন কিছু আবিষ্কার করবো হয়তো। আমরা চারজন যানে করে প্যালেসে আসলাম এবং সেখান থেকে প্রিন্সেস এলিনাকে নিয়ে সোজা রওনা দিলাম সাতশো আটানব্বই নম্বর শহরে। জানি না সেখানে কিসের যুদ্ধ হয়, কিন্তু আপাতোতো আমার যানের মধ্যে ভালো লাগছে না। ওরা তিনজন বসেছে একপাশে, আর আমি আর প্রিন্সেস এক পাশে। প্রিন্সেস এলিনা একদম আমার সাথে ঘেসে বসেছে। আমার এতো কাছে আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ে বসে নি। যদিও আমার বিরক্ত লাগছিলো আগে, কিন্তু কেনো জানি প্রিন্সেস এর তাকানো মুখ আমার এখন ভালো লাগছে, সঠিক করে বলতে পারবো না, তবে নিজেকে সম্মোহিত মনে হচ্ছিলো। এই প্রথমবারের মতো আমার হার্টবিট বেড়ে গেছে কোনো মেয়ের হাতের স্পর্শ আমার হাতে পরাই। একটা ঝাকি লাগে সামান্য যার ফলে প্রিন্সেস আমার দিকে আরো সরে আসলো। আর এদিকে তার হাত আমার হাতে লাগে, যার ফলে আমার হার্ট বিট বেড়েই চলেছে, আমিও সরে বসলাম তার কাছ থেকে। কিন্তু আমি এই ফিলিংসটা বুঝতে পারছি না। আমার মেমোরী লস হয়ে গেছে, তাই এটা কিসের ফিলিংস সেটা আমি সঠিক বুঝতে পারছি না। হয়তো এটা স্বাভাবিক। কিন্তু প্রিন্সেস এলিহার হাতের স্পর্শও আমার অনেক লেগেছে, আমার হার্ট তখন বেশী বিট করেনি। আমি জানি না কি হচ্ছে, তবে এটা বেশীক্ষন না হলেই ভালো হবে। হঠাৎ লুসি বলে উঠলো,
.
–আমি এই যানের মধ্যে কিছু আজব ম্যাজিক অনুভব করছি।(লুসি)
.
–কিসের ম্যাজিক এটা?(আমি)
.
–অনেকটা বলতে গেলে লাভ ম্যাজিক বলে এটাকে। যেটা সাকুবিচ্ রা ব্যবহার করে। এটার ফলে ছেলেরা তাদের পাশের মেয়েদের উপরে আকর্ষিত হয়।(লুসি)
.
–সমস্যা নেই আমি ক্যান্সেল করে দিচ্ছি আমার ঢাল দিয়ে।(লুসানা)
।।।
।।।
লুসানা ওর ম্যাজিক স্পেল দিয়ে একটা ঢাল বানিয়ে দিলো আমাদের পুরো যানের মধ্যে। ওর এই ঢালের মধ্যে কোনো সাধারন স্পেল কাজে দিবে না। অবশ্য ভিতরের লাভ ম্যাজিকও শেষ হয়ে গেলো। অবশ্য আমিও কিছুক্ষন যাবৎ একটা আশ্চর্যজনক রঙের ম্যাজিক পাওয়ার দেখতে পাচ্ছিলাম যেটা কিনা আমাদের যানের উপর থেকে আসছিলো, কিন্তু আমি সেটা ইগনোর করেছি। অনেকটা পিংক কালারের ম্যাজিক পাওয়ার ছিলো সেটা। কিন্তু লুসানার ঢালের কারনে সেটা গায়েব হয়ে গেছে। আমি জানি না এটা কার কাজ, কিন্তু হ্যারির অবস্যা বেশী ভালো না। ও একপাশে মুখ গুজে বসে আছে। হয়তো ওর হার্টবিট বেশী বেরে গিয়েছিলো কারন ওর পাশে দুজন মেয়ে ছিলো। যায়হোক ম্যাজিক পাওয়ার চলে যাওয়ার পর আমার হার্টবিট স্বাভাবিক হলো। কিন্তু যখনি প্রিন্সেস বাকা হয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছে আবারো আমার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। আমি আর এটা বেশী ক্ষন নিতে পারলাম না। তাই আমি অনেকটা দূরে এসে সরে বসে, বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলাম। প্রিন্সেস ও রাগ করে ঔদিকে তাকিয়ে রইলো। আমার মনে হচ্ছে সে কিছু বলতে চাচ্ছে, কিন্তু বলতে পারছে না। যাইহোক সে সাথে থাকা আমার বিরক্ত লাগতো, এখন তার চাওয়াও আমার বেশী বেশী বিরক্ত লাগছে, কারন তাতে আমার হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে। কি করবো সেটাই বুঝতে পারছি না।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২৩
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমরা সকলে সাতশো আটানব্বই নম্বর শহরে পৌছে গেলাম। এর মধ্যে যানের ভিতরে কিছু আজব হলেও বের করতে পারছি না সেটা কার কাজ ছিলো। অবশ্য প্রিন্সেস এলিনা এরকম কোনো কাজ করবে না এটা আমি বুঝতে পেরেছি, আর লুসি এবং লুসানাও এরকম কোনো কিছু করবে না। আমার মনে হচ্ছে আমাদের সাথে থার্ড পার্টি ছিলো কেউ। সাতশো আটানব্বই নম্বর শহরটার তিন সাইট বিশাল ঘন বন দিয়ে ঢাকা এবং পিছনের সাইটে বিশাল একটা পর্বত। দক্ষিন দিকের বনের মাঝ দিয়ে একটা রাস্তা রয়েছে, যেটাই এখানে আসা যাওয়া করার একটা রাস্তা, আর বাকি কোনো দিক দিয়ে ফেরত কিংবা আসা যাবে না। হয়তো রাজা এটা জেনেই তার কোনো মিলিটারি সেনা আগে পাঠায় নি। মিলিটারিতে রয়েল গার্ডদের থেকে বেশী পাওয়ারফুল সেনা রয়েছে, অবশ্য এই জায়গাটা রাজা তেমন ভয়ানক মনে করেন নি। আবার এটাও হতে পারে, আমাকে দিয়ে টেস্ট করছে এখানে কি, সঠিক তথ্য জানতে পারলে পরে আক্রমন করবে। শহরে আসার পরই শহরের মিনিস্টার আমাদের বেশ আনন্দের সাথে একটা বাড়িতে আশ্রয়ের জন্য নিয়ে গেলেন।
।।।
।।।
শহরটা আমার একদম ভালোই লেগেছে। কারন অনেকটা উন্নত বলা যায়। সকল বাড়ি কাঠের এবং মাটির তৈরী ইট দিয়ে বানানো। নরমাল জিনিস দিয়ে বানালেও বাড়িগুলোর সাজানোর স্টাইল অন্যান্যদের থেকে অনেক সুন্দর। তাছাড়া প্রতিটা বাড়িতেই আমি ফল এবং বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির গাছ দেখতে পাচ্ছি, সব বাড়িতেই সেগুলো উৎপাদন করে। তাদের ফসলও অনেক ভালো জন্মে, সূর্যের আলো কম পেলেও তারা ম্যাজিক কে দৈনন্দিন কৃষি কাজে ব্যবহার করে, যার কারনে তাদের ফসল অনেক বেশী উৎপাদন হয়। আর সেগুলো বিক্রী করে তারা অর্থ উপার্জন করে, মূলত তাদের অর্থের প্রতি কারো নজর নেই, তারা শুধু রাজ্যে থাকার জন্য ভ্যাট দেওয়ার জন্য কষ্ট করে। প্রতিটা রাজ্যের এক একটা শহরের মিনিস্টারের দায়িত্ব তাদের শহরের প্রতিটা ঘর থেকে মাসিক ভ্যাট সংগ্রহ করে সেটা রাজার কাছে পৌছে দেওয়া। যাইহোক আমি বাদ দিলাম সেসব কথা বার্তা। আমাদের থাকার ব্যবহার করে দিলো এই শহরের মিনিস্টার। অনেকটা ভালো লোক মনে হলো তাকে, তার কথা বার্তা অনেক সুন্দর।
.
–মিনিস্টার স্যার আপনি কি বলতে পারবেন এখানে কি হচ্ছে?(আমি)
.
–হ্যা অবশ্যই স্যার।(যেহেতু আমি রয়েল গার্ড তাই তিনি আমাকে স্যার বলে সম্মোধন করলো)
.
–তাহলে সব খুলে বলুন, কিছু লুকাবেন না।(আমি)
.
–প্রায় তিন মাস যাবৎ আমাদের শহরে খুব আজব হচ্ছে। লোকজন রাতের সময় ঘরের বাইরে যেতে পারে না, কিছু আজব আলো দেখা যায় আকাশে, যেগুলো শহরের যে দেখে সেই তাদের জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, কেউ কিছু দেখলেও সেটা মনে করতে পারেনা। সবার একটাই কথা তারা একটা আলো দেখেছিলো শুধু। তাছাড়া রাতের সময় পাহাড়ের পাশে উত্তরে বনের ভিতরে ভয়ানক যুদ্ধের আওয়াজ শোনা যায়। পুরো শহরে এরজন্য ভূমিকম্প দেখা যায় মাঝে মাঝে। কিন্তু সকালে আমরা কেউ বের হলে বনে গিয়ে কিছুই দেখতে পাই না।(মিনিস্টার)
.
–তিনমাস আগে থেকে এই ঘটনা ঘঠছে তাহলে আগে প্যালেসে এটা জানান নি কেনো?(আমি)
.
–আমরা চেষ্টা করেছি, তবে আমাদের শহরের চারপাশের বনের বাইরে যাওয়ার পর আমরা যাকে পাঠাইতাম সে এই সম্পর্কে সব রকম স্মৃতি হারিয়ে ফেলতো। সে কি করবে ভেবে না পেয়ে আবার ফেরত আসতো।(মিনিস্টার)
.
–তাহলে শেষমেষে প্যালেসে কিভাবে পাঠিয়েছেন খবরটা?(আমি)
.
–আমরা একটা চিঠি লিখেছি, এবং দুইজনকে আবার পাঠিয়েছি কিছুদিন আগে। অবশ্য এটা আমাদের মাথায় আগে আশে নি। চিঠির সাথে আরেকটা কাগজে লিখে দিয়েছিলাম যে তাকে ক্যাপিটালে গিয়ে প্যালেসে এই চিঠিটা জমা দিতে হবে।(মিনিস্টার)
.
–ও বুঝতে পারছি। তাহলে তাদের মেমোরী নষ্ট হওয়ার পরও তারা ঔ লেখা দেখে ক্যাপিটালে জমা দিয়েছে চিঠিটা?(আমি)
.
–হ্যা স্যার।(মিনিস্টার)
.
–আচ্ছা তাদের কি সকল মেমোরীই নষ্ট হয়ে গেছে, যারা বের হওয়ার চেষ্টা করেছে?(আমি)
.
–না স্যার, শুধু এই শহরের যা হচ্ছে এই নিয়ে তারা ভুলে যাচ্ছে, তাছাড়া তারা আগের দিন কি খেয়েছে এটাও মনে করতে পারছে।(মিনিস্টার)
.
–ওকে বুঝতে পারছি ব্যাপারটা অনেক জোটালে। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে সাহায্যের জন্য।(আমি)
.
–এটা তো আমাদের দায়িত্বই।(মিনিস্টার)
।।।।
।।।।
মিনিস্টারের কথা শুনে মনে হচ্ছে এখানে যা হচ্ছে কিছু লোক আছে যারা চাচ্ছে না এগুলো বাইরের কারো কানে যা, কিন্তু কি হচ্ছে এখানে এটাই আমার প্রশ্ন। যাইহোক এটা তো আসল জায়গায় গেলেই বোঝা যাবে। আমি শহরের কাউকে আনতে চাচ্ছি না। তাই হ্যারি, লুসি এবং লুসানাকে সাথে নিয়ে চলে গেলাম উত্তরের বনের দিকে। প্রিন্সেস এর শরীর ভালো লাগছে না, তাই সে একটু বিশ্রাম নিবে। আমরা হাটতে হাটতে জঙ্গলের কাছে চলে আসলাম,
.
–জ্যাক তোমার কি মনে হচ্ছে কি হতে পারে এটা?(হ্যারি)
.
–যাইহোক না কেনো তোমাদের তিনজনের জন্য তো কিছুই না। যতটা শক্তিশালী হয়েছো।(আমি)
.
–কি বলো, আমরা আবার শক্তিশালী। তুমি এক সুযোগে রয়েল গার্ড হয়ে গেলে। তাহলে বলো কে আসল শক্তিশালী।(লুসি)
.
–টপিক বাদ দি, তোমাদের সাবধান করছি প্রিন্সেস এলিনার থেকে, নিজেদের আসল পরিচয় কোনো ভাবেই দিবে না। আমার মনে হয়, রাজা সন্দেহ করেছে তোমাদের উপরে, তাই প্রিন্সেস এলিনাকে পাঠিয়েছে আমাদের সাথে।(আমি)
.
–হ্যা সেটা তো বুঝতে পেরেছি, তবে মিনিস্টারের থেকে শুনলাম এখানে ভয়ানক যুদ্ধের আওয়াজ শোনা যায় কিন্তু দিনের সময় কোনো চিহ্নও পাওয়া যায় না। এটা কিসের লক্ষন মনে করো?(হ্যারি)
.
–আমার তো ভূতের লক্ষন মনে হচ্ছে। ভূতের ভয় প্যালেস থেকে ঔ গুপ্ত জায়গা দিয়ে বের হওয়ার পর থেকেই ভুলে গেছি আমি। যে ভূতুরে জায়গা দিয়ে বের হতে হয় আমাকে।(আমি)
.
–হ্যা সেটা তো বটেই। আমরা উত্তরের পুরো বন খুজেও কোনো কিছু পেলাম না। অবশ্য লুসির এবং লুসানার সার্চ ম্যাজিক আমাদের কাজে দিয়েছে অনেক, এটার কারনে আমাদের হাটতে হয় নি। কিন্তু দুঃখের জিনিস কোনো কিছু আমরা পেলাম না। একটা লক্ষন পাওয়ার আশা করছিলাম। কিন্তু সেটা হলো না। এখন তো রাতেই আমাদেরকে দেখতে হবে। লোকদের মতে আকাশে এমন এক আলো থাকে যেটা দেখার পর তারা অজ্ঞান হয়ে যায়। আমাদের রাতের সময় আকাশের দিকে না তাকিয়েই চলাচল করতে হবে। এতে করে জ্ঞান হারানোর ভয় থাকবে না। আবার আমরা শহরের মধ্যে ফিরে গেলাম বন থেকে। মিনিস্টারের দেওয়া বাসার মধ্যে আমরা চারজন ঢুকে গেলাম। কিন্তু ভিতরে প্রিন্সেসকে না পেয়ে অনেকটা শিহরীত হলাম। যেটা আমাকে ভালোই ভাবিয়ে তুললো। হয়তো আমাদের বের হওয়ার পর কেউ প্রিন্সেসকে আক্রমন করেছে, কিডন্যাপ করেছে, প্রিন্সেস নিজের ইচ্ছায় এই শহর ঘুরতে বের হয়েছে কিংবা সে ক্যাপিটালে চলে গেছে। কি হয়েছে আমি সঠিক বলতে পারছি না। তাই সোজা আমি মিনিস্টারের সাথে কথা বলতে লাগলাম। সে জানালো প্রিন্সেস শহরেই ঘুরছে। তাই আমিও বের হলাম প্রিন্সেসকে খুজতে। যদিও বিরক্ত লাগে এসব কাজ। তারপরও তার গার্ড আমি আপাতোতো এই জার্নির জন্য। আমি বাইরে বের হয়ে খুজতে খুজতে পুরো সন্ধ্যা করে ফেললাম। শেষমেষ একটা দোকানের বাইরে বসে তাকে একটা কেক খেতে দেখে অনেকটা খুশি হলাম। কেনো জানি না তার চেহারা এখন দেখলেই আমার হার্টবিট বেড়ে যায়। হয়তো এটা আগের স্পেলের কারন, কিন্তু স্পেল তো সেটা চলে যাওয়ার কথা। হ্যারিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। ও জানিয়েছে ও স্বাভাবিক আছে এখন। কিন্তু আমার মনের খবর আমি বলতে পারছি না এখন। আমি কিছু না বলে সোজা প্রিন্সেস এর কাছে চলে গেলাম। অবশ্য তাকে খুজে বিরক্ত ছিলাম এতোক্ষন, কিন্তু সেটা তো আর প্রিন্সেস কে বলা যায় না। যত হোক এটা আমার কাজ।
।।।
।।।
প্রিন্সেস কেক খাওয়া শেষ করে হাটা শুরু করলো আমার দিকে। অনেকটা দূরে আমরা বাসা থেকে, আর কিছুক্ষনের মধ্যে রাত হবে। আমাদেরকেও বের হতে হবে, তাই আমি তারাতারি করছি। কিন্তু প্রিন্সেস এলিনা আস্তে আস্তেই হাটছে। আমি নিরব না থেকে প্রশ্ন করলাম।
.
–প্রিন্সেস এলিনা,(আমি)
.
–হ্যা জ্যাক বলো?(প্রিন্সেস)
.
–আপনি এর আগে আমাকে বলেছিলেন আপনি টেলিপোর্টেশন স্পেল ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু রাজা বললো আপনি পারেন। সেদিন মিথ্যা বলেছিলেন কেনো?(আমি)
.
–কিছু কিছু মিথ্যা বললে সমস্যা হয় না।(প্রিন্সেস)
.
–একজন প্রিন্সেস হয়ে মিথ্যা আপনার মুখে মানায় না।(আমি)
.
–একজন রয়েল গার্ড হিসাবেও মিথ্যা তোমার মুখেও মানায় না।(প্রিন্সেস)
.
–আমি কি মিথ্যা বললাম আপনাকে?(আমি)
.
–আমাকে নয়, পুরো রয়েল প্যালেস কে মিথ্যা বলে আসছো তুমি।(প্রিন্সেস)
.
–আমি বুঝতে পারছি না।(আমি)
.
–গুপ্ত রাস্তা, ব্লাক ড্রাগন, ওদের পরিচয় আমার কাছে লুকানো ইত্যাদি ইত্যাদি কথা।(প্রিন্সেস)
.
–ও তাহলে আপনি আমাদের কথা শুনেছেন।(আমি)
.
–হ্যা বাবা শুধু ঔ তিনজনের উপরে সন্দেহ করেছিলো, তাই আমাকে সেটা নিশ্চিত করার জন্য পাঠায়। তবে আমি আশা করি নি তুমিও তাদের অংশ।(প্রিন্সেস)
.
–তাহলে কি বলে দিবেন?(আমি)
.
–সেটা বলতে চাইলে তো বলেই দিতাম। কিন্তু আমি কারন জানতে চাই, কেনো একজন রয়েল গার্ড হয়ে রাজ্যের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছো?(প্রিন্সেস)
।।।
।।।
আমার মাথা কাজ করছে না। আমি সব দিক দিয়েই সিরিয়াস ছিলাম। কিন্তু প্রিন্সেস এলিনা এতো চালাক হবে সেটা আমি বুঝতে পারি নি। প্রশ্ন হলো সে কিভাবে শুনলো, আমি শিওর ছিলাম সে ঔখানে ছিলো না, আর টেলিপোর্ট হয়েও আমাদের আশেপাশে আসে নি। তাহলে এসব শুনলো কিভাবে? সব মিস্ট্রি রয়ে গেলো। কিন্তু আমি বিষয়টা ছোট ভাবে নিতে পারবো না। আমাকে এটার সম্পর্কে কিছু করতে হবে। হোক সে প্রিন্সেস, যদি তাকে হত্যা করে আমার বন্ধুদের নিরাপদ রাখা যায় আমি সেটা করতেও দেরী করবো না।
.
–তাহলে আমাকে হত্যা করার চিন্তা করছো?(প্রিন্সেস)
.
–কি বলছেন, প্রিন্সেস?(আমি)
.
–হাত কাপছে বার বার তোমার, আর জোরালো করে মুঠো করে রেখেছো, মানে রাগ হচ্ছে তোমার, আর এর মানে মনে আমাকে হত্যার চিন্তাও হচ্ছে।(প্রিন্সেস)
.
–প্রিন্সেস কি সব আজব বলছেন।(আমি)
.
–জ্যাক আমি কোনো কিছু আজব বলছি না।(প্রিন্সেস)
।।।
।।।
প্রিন্সেস সোজা আমার হাত ধরলো, আর আমাকে সহ টেলিপোর্ট করে পাশে বাসার ছাদের উপরে আনলো। প্রিন্সেস আমার হাত ধরায় আমার হার্ট বিট অনেকটা বেরে গেলো। একটা দেওয়াল রয়েছে ছাদের উপরে, যেটার পিঠে আমি পিঠ মিশিয়ে দাড়ালাম হার্ট বিট বারার কারনে। আর প্রিন্সেস এলিনা আমার মাথার পাশ দিয়ে তার দুই হাত দেওয়ালে দিয়ে আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে।
.
–এখন আমার প্রশ্নের উত্তর দাও তুমি।(প্রিন্সেস)
.
–আগে বলো রাতে কোনো আজব স্বপ্ন দেখো কিনা?(প্রিন্সেস)
.
–না প্রিন্সেস।(আমি)
.
–এখন বলো ব্লাক ড্রাগনে যোগ দিয়েছো কেনো?(প্রিন্সেস)
.
–রাজ্যের আবর্জনা যেটা কিছু পাওয়ারফুল লোক তাদের রাজ্য থেকে পরিস্কার করতে।(আমি)
.
–এটা রাজার দায়িত্ব, তুমি কেনো এটা করতে যাবে?(প্রিন্সেস)
.
–কারন রাজা নিজেই আর্বজনা। এবং তাকেও পরিস্কার হওয়া দরকার।(আমি)
.
–কি আমার বাবা আবর্জনা?(প্রিন্সেস)
.
–হ্যা এখন বলো আমাকে নিয়ে কি ভাবনা তোমার?(প্রিন্সেস)
.
–আপনি একজন প্রিন্সেস। আর সেটার জন্য আমি বিরক্ত বোধ করি, প্রিন্সেস রা তাদের সুন্দর জীবন কাটায় আর যেখানে সাধারন লোকজনের ছেলে মেয়েরা দুঃখের সাথে থাকে, অনেকে খাবার পাচ্ছে আবার অনেকে পাচ্ছে না। তাই আমি বিরক্ত বোধ করি আপনার প্রতি। তবে ইদানিং জানি না আপনাকে দেখতে আমার হার্ট বিট বেড়ে যাচ্ছে। কারন বলতে পারবো না।(আমি)
।।।
।।।
আমি বুঝতে পারছি না আমি কি করছি। তবে যা আমাকে প্রশ্ন করছে আমি কোনো কিছু লুকাতে পারছি না। মনে হচ্ছে আমার উপরে কোনো স্পেল ব্যবহার করা হচ্ছে, যেটা আমার মুখ থেকে সব সত্য কথা বলছে। হঠাৎ প্রিন্সেস আমার ডান হাত তার নরম ডান হাত দিয়ে শক্ত করে ধরলো এবং বলতে লাগলো,
.
–আমার হাতের স্পর্শ পেয়ে কেমন লাগছে তোমার?(প্রিন্সেস)
.
–আমার হার্ট বিট আরো বেড়ে যাচ্ছে।(আমি)
.
–একটা শেষ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবো? আমাকে প্রিন্সেস না একটা মেয়ে হিসাবে তোমার কেমন লাগে?(প্রিন্সেস)
.
–আমি সেরকম ভাবে আপনাকে দেখি নি কখনো, তবে যতদূর বলতে পারি আপনি আমার দেখা সবথেকে সুন্দরী মেয়ে, তবে আমার দেখা সবচেয়ে বিরক্তকর মেয়েও।(আমি)
।।।
।।।
আমার এই কথা শুনে প্রিন্সেস অনেক রেগে গেলো। রাগে সোজা আমার ঠোটে তার ঠোট লাগিয়ে একটা চুমু দিয়ে দিলো, এবং আমার হাত ধরে আবার টেলিপোর্ট হয়ে গেলো। এবার সোজা মিনিস্টার এর দেওয়া বাসাতেই এসে গেছি আমি। প্রিন্সেস কি করলো আমি কিছুই বুঝতে পারি নি। হঠাৎ কিছুক্ষনে জন্য আমার মাথা অনেক হ্যাং করলো।
.
–আমি এইটা করতে চাই নি, কিন্তু তোমার মনের কথা গুলো বের করার জন্য করতে হয়েছে আমাকে, এটাকে মাইন্ড রিডিং বলে। অবশ্য এই স্পেল দিয়ে আমি পড়ি না বরং যার উপরে ব্যবহার করি সেই আমাকে সব কিছু বলে দেই।(প্রিন্সেস)
.
–তাহলে আপনি সব কিছু এখন রাজাকে বলে দিবেন?(আমি)
.
–তুমি আসলেই বেশী বুঝো না, তোমার হার্ট আমাকে দেখলে কেপে যায় এর মানে এখনো তুমি বুঝো নাই, এরমানে আমাকে তুমি ভালোবাসো, আর আমি চাই না যে আমাকে ভালোবাসে তার বিরুদ্ধে কিছু বাবাকে বলতে। কিন্তু আমি এটা ঠিকই বলছি যে রাস্তা তুমি অবলম্বন করছো সেটা একদম ছেড়ে দিবে, দরকার পরলে তোমার কাজের জন্য আমি নতুন একটা রাস্তা খুজে দিবো।(প্রিন্সেস)
.
–সেটা কেনো করবেন?(আমি)
.
–আমার মন চাইছে তাই। এখন থেকে আমি তোমাকে যা বলতে বলবো তাই করতে হবে তোমাকে, নাহলে সব কথা আমার বাবার কানে যাবে।(প্রিন্সেস)
.
–হ্যা ঠিক আছে। একটা প্রশ্ন? আমাদের কথা বার্তা কিভাবে শুনেছেন?(আমি)
.
–তোমার শার্টের কলারে একটা ছোট ম্যাজিকাল ডিভাইস রয়েছে, যেটা তার আশেপাশের সকল শব্দ সোজা আমার কানে পৌছে দেই। অবশ্য সেটা আমার তৈরী।(এলিনা)
।।।
।।।
আমি ভাবিও নি এতো ভ্য়ানক হবে প্রিন্সেস এলিনা। মূলত যে পরিস্থিতিতে আমি আছি আমার কাছে দুটো রাস্তা আছে, এক হলো তার কথা শোনা নাহলে আমাদের চারজনের জীবনই ঝুকিতে। আর দুই হলো তাকে হত্যা করা, যেটা আমার হাত করতে পারবে না। আমি বুঝতে পারছি না, হঠাৎ আমার মনের মধ্যে তার জন্য অজানা মনোভাব আস্তে শুরু করেছে, এটা সে ভালেবাসা বললো। অবশ্য এই বিষয়ে কোনো জ্ঞান না থাকার কারনে আমি সঠিক বলতে পারছি না। এটা অন্য কারো সাথে শেয়ার করার দরকার আমার। যাইহোক আপাতোতো বেশ জোড়ালো একটা অবস্থায় আমি পরেছি, যেটা থেকে বের হওয়ার সমাধান আমি খুজে পাচ্ছি না। তার স্পেলের বিরু্দ্ধে আমি কোনো কিছুই করতে পারি নি। আমার শরীর নারাতে পারি নি, এবং মুখের কথাও আটকাতে পারি নি। এখন যা হওয়ার হয়ে গেছে। আমাকে শুধু সামনের জিনিসের উপরে খেয়াল দিতে হবে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।

(((চলবে)))

।।
।।।
।।।।
।।।।।