#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২৬
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমার মাথায় নতুন কিছু স্মৃতি যুক্ত হওয়ার পর থেকে আমি সব বিষয়ে কনফিজড এখন। আপাতোতো ডেভিল কিং চলে গেছে, তার সাথে থাকা ডেভিলও চলে গেছে, আশে পাশে পরে থাকা সকল ডেভিলের শরীরও চলে গেছে, শুধু মৃত এন্জেল এবং আমরা ছয়জন এখানে দাড়িয়ে আছি। আমি, প্রিন্সেস, হ্যারি, লুসি, লুসানা এবং এন্জেল রানী। এন্জেল রানী অনেকটা অবাক হলো আমার পিঠের হাত গুলো দেখে, হাতের দিকেই তাকিয়ে আছে সে। আর আমি যেহেতু আমার ক্ষমতা এখন নিয়ন্ত্রন করতেই পারছি তাই আমি দ্রুত আমার ঔ হাতগুলো দিয়ে বাকিদের ক্ষত ঠিক করে দিতে লাগলাম। আমি এখনো সব কিছু বুঝতে পারছি না। কিছু কিছু স্মৃতি শুধু মনে পরছে আমার। বাকি সব ঘোলাটে। হঠাৎ এন্জেল রানী বলতে লাগলো,
.
–কে তুমি?(আমাকে জিজ্ঞেস করলো রানী)
.
–আমি জ্যাক। সাধারন একজন মানুষ।(আমি)
.
–সাধারন কোনো মানুষের কাছে গডহ্যান্ড থাকে না।(রানী)
.
–গডহ্যান্ড?(আমি)
.
–মনে হচ্ছে তোমার এই বিষয়ে জ্ঞান নেই। তোমার পিঠে যেটা রয়েছে সেটার নাম গডহ্যান্ড। এন্জেলদের আল্টিমেট অস্ত্র। এটা নিয়ে অনেক ইতিহাস রয়েছে, তবে আজ পর্যন্ত কোনো এন্জেল এটাকে ব্যবহার করতে পারে নি।(এন্জেল রানী)
.
–ও। হয়তো ইতিহাস ভুল রয়েছে, আমি কোনো এন্জেল না। আমি মানুষ একজন।(আমি)
.
–ইতিহাস কখনো ভুল হয় না। এটা ফেইরী টেইল না যে ভুল হবে কোনো কিছু। তোমার নিশ্চয়ই এন্জেলের সাথে কোনো সম্পর্ক রয়েছে?(এন্জেল রানী)
.
–না সেরকম কিছুই নেই, আমি সাধারন একটা মানুষ। আমার ম্যাজিক পাওয়ার অনুভব করলেই বুঝবেন।(আমি)
.
–তাহলো এটা সম্ভব হয় কিভাবে। একজন মানুষের কাছে গডহ্যান্ড কিভাবে আসবে? এটা তো শুধু মাত্র একটা আল্টিমেট এন্জেলের জন্য।(এন্জেল রানী)
.
–হয়তো কোনো এন্জেলকে এই গডহ্যান্ড পছন্দ করে নি। তাই আমার মতো একটা মানুষের কাছে এসেছে। তো কি করতে পারে এই গডহ্যান্ড?(আমি)
.
–ইতিহাসের মতে যার কাছে এই গডহ্যান্ড থাকবে সে এই পুরো দুনিয়া নিয়ন্ত্রন করতে পারবে।(এন্জেল রানী)
.
–আমার দুনিয়া নিয়ন্ত্রন করার কোনো ইচ্ছা নাই।(আমি)
.
–আমি তোমাকে এখানে রেখে যেতে পারি না। কারন ডেভিল কিং এর হাতে গডহ্যান্ড চলে গেলে পুরো দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে। তোমাকে আমার সাথে এ্যারসাকে যেতে হবে।(এন্জেল রানী)
.
–দেখুন রানী কোথায় কি হলো? কি হবে? কেনো হবে? কিসের জন্য হবে, এসব কিছু সৃষ্টিকর্তা আমাদের ভাগ্যে লেখে রেখেছেন। তাই আমি চাইবো আপনি চলে যান যেখান থেকে এসেছেন। আর হ্যা চাইলে আপনি ইগড্রোলিয়া তে আসতে পারেন, রাজ্যে আপনাকে সুরক্ষিত রাখার সম্পূর্ন দায়িত্ব আমার।(আমি)
.
–তুমি বুঝতে পারছো না তোমার ক্ষমতাটা কতটা গুরুত্বপূর্ন ডেভিল কিং যখন এটা দেখেই ফেলেছে, আমি নিশ্চয় সে এটা তার করার জন্য সব কিছুই করবে।(রানী)
.
–সেটা সময় হলে দেখা যাবে। আমার বন্ধুদের এবং প্রিন্সেস এর এখন রেস্ট দরকার। তাই আমাদের ফিরে যেতে হবে।(আমি)
।।।।
।।।।
আমি প্রিন্সেসকে বললাম আমাদের টেলিপোর্ট করে সোজা প্যালেসের সামনের গেইটে নিয়ে যেতে। সে কোনো কথা বললো না। শুধু আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রাজি হয়ে গেলো। আমাদের ঠিক টেলিপোর্ট স্পেলের মাধ্যমে টেলিপোর্ট করে প্যালেসের গেইটের সামনে নিয়ে গেলো। যেখান থেকে হ্যারি, লুসি, এবং লুসানা নিজেদের মতো তাদের গোপন বাসায় চলে গেলো। আর আমি আর প্রিন্সেস যাচ্ছি প্যালেসের ভিতরে। রাতের সময় বলে কি হয়েছে সেটা রাজাকে বলার সময় না এখন। কালকে তাকে প্রিন্সেস নিজেই জানিয়ে দিবে। আমি চলে গেলাম নিজের রুমে। মাথা অনেকটা ঘুরছিলো। নতুন অনেক স্মৃতির চাপে আমি আমার রিয়েলিটি হারিয়ে ফেলছিলাম। এক ঘুমে সকাল হয়ে গেলো।
।।।
।।।
আপাতোতো আমার মাথার মধ্যে নতুন কোনো স্মৃতি আসছে না। তবে পুরাতন অনেক স্মৃতিতে আমার ব্রেইন ভরে গেছে। আমি আপাতোতো দুটো রিয়েলিটির মধ্যে হারিয়ে গিয়েছি। একটা যেখানে আমি শুধু জ্যাকসন। আর একটা যেখানে আমি জ্যাকসন ব্রিট। দুটো রিয়েলিটিই আলাদা। পরিচয় থেকে শুরু করে আশেপাশের সবাই আলাদা, তবে কিছু লোক আছে যারা এখনো আমার কাছে। আগের রিয়েলিটি যেটা আমার মনে পরছে, সেখানে রাজা জ্যাসন ব্রিটের সন্তান জ্যাকসন ব্রিট। তাছাড়া আমার পরিচয় ছিলো ডেভিল কিং হিসাবে সেখানে, যাকে অনেকেই ভয় করতো। কিন্তু এই রিয়েলিটি তার কিছুই না। যদিও আমার এই রিয়েলিটিতে বাবা জ্যাসন। তবে আগের রিয়েলিটি থেকে এটা অনেক আলাদা। আমি এখন ভাবছি কোন রিয়েলিটির জ্যাক হয়ে থাকবো আমি, আমি চাইলে এখন আগের জ্যাকও হতে পারি যেখানে ডেভিল কিং ছিলাম, তবে সেটার জন্য আমার ডেভিল পাওয়ার প্রয়োজন যেটা আমার কাছে নেই, আর যেহেতু আগের রিয়েলিটির মতো এই রিয়েলিটি না, তাই এখানে আমার সত্ত্বা গুলো যেগুলো আমার শরীরে ছিলো সেগুলো জীবন্ত নেই, শুধু আমি তাদের ক্ষমতা গুলো অর্জন করেছি। সাধারন কথায় আমি এন্জেল, ভ্যাম্পায়ার, ডিম্যান এর ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবো এখন, তবে আমার শরীরে তাদের সত্ত্বাগুলো আর নেই।
।।।।
।।।।
আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি, আমি আগের রিয়েলিটি ফেরত আনতে পারবো না। কারন যা হয়েছে, সেটা বদলানোর ক্ষমতা শুধু সৃষ্টিকর্তারই দায়িত্ব। তার সৃষ্টি নিয়ে আমাদের খেলা উচিত না। এখন যদি আমাকে আগের রিয়েলিটি আবার আনতে হয়, আগের এগারো দুনিয়া আবার বানাতে হয়, তাহলে যে কাজটা জেসি করেছে সেটা করতে হবে। তাতে করে আবার সকল প্রানী মারা যাবে। আমি সেটা চাই না। আমি বুঝতেই পেরেছি জেসির স্পেল কিভাবে কাজ করেছে। ওর স্পেলের মাধ্যমে প্রথমে সকল প্রানী মারা গিয়েছে, এবং তারপর পুরো এগারো দুনিয়া একত্র হয়ে নতুন একটা দুনিয়া বানিয়েছে, যেটা আগের রিয়েলিটি থেকে পুরো ভিন্ন। যেহেতু দুটোর রিয়েলিটি আলাদা, তাই নতুন দুনিয়ার কেউই আগের দুনিয়া সম্পর্কে কিছুই জানে না। পুরাতন দুনিয়াতে যত প্রানী জন্ম নিয়েছিলো, সবাই আবার নতুন দুনিয়ায় নতুন রিয়েলিটিতে জন্ম নেওয়া শুরু করে। তবে এবার সকল গোত্র একসাথে থাকে।
।।।
।।।
আমার মনে হচ্ছে জেসি শেষ সময়ে এই একটা কথায় বলেছিলো, ও সকল গোত্রকে একসাথে দেখতে চাই, যেখানে কোনো লড়াই থাকবে না। ও এটার জন্য অনেক বড় কোরবানী দিয়েছে। ওর সবকিছু ও ছেড়েছে শুধু ওর এই ইচ্ছাটা পূরন করার জন্য। আমি ওকে ব্লেম করছি না এখানে। ব্লেম এখানে সব আমার উপরেই। আমি ওর বড় ভাই হয়ে ওকে কিছু বলতে পারি নি। যাইহোক আপাতোতো আমি আমার চিন্তা ভাবনা করে ফেলেছি, যেহেতু এই দুনিয়ার কেউ আগের দুনিয়ার সম্পর্কে কিছু জানে না ভিন্ন রিয়েলিটির কারনে, তাই আমাকেও আগের দুনিয়া সম্পর্কে ভুলতে হবে। অবশ্য ভুলতে না, কাউকে সেটা সম্পর্কে বলা যাবে না। আমি চাইবো না কেউ সেটা সম্পর্কে জানুক। কারন বেশী লোক যদি আগের দুনিয়া সম্পর্কে জানে তাহলে রিয়েলিটি স্পেল দুর্বল হয়ে যাবে। এবং পুরো দুনিয়াতে তখন ক্রাইসিস দেখা দিবে। তাই এই জিনিসটা আমার কাছেই থাকলে ভালো হবে আপাতোতো সময়ের জন্য।
।।।
।।।
যদিও আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি জ্যাকের মতো থাকার জন্য। কিন্তু আমার পুরো শরীর এখন জ্যাকসন ব্রিটের কন্ট্রোলে। এক কথায় আমি আগের সব জেনে গেছি, আর তার ফলে জ্যাকের ভিতরে আমার যে সত্ত্বা ছিলো সেটা জ্যাকসন ব্রিটে ইভোল্ভ হয়ে গেছে। আমি জ্যাকসন ব্রিটে বিকশিত হয়ে গেছি। জিনিসটা কেউ শুনলে কনফিউজড হয়ে যাবে। তবে সংক্ষেপে বলতে গেলে, একজন লোকের মেমোরী হারিয়ে গেলে, সে মানষিক দিক দিয়ে সম্পূর্ন আলাদা একজন ব্যক্তি হয়ে যায়, কারন সে কোনো কিছুই জানে না আগের। আর তখন সে নতুন একটা পরিচয় পাই, কিন্তু কয়েকবছর পর যখন সে তার মেমোরী ফিরে পাই তখন সে দেখতে পারে তার নতুন একটা পরিচয় রয়েছে এখন। আর যদি সে মেমোরী হারানোর পরের যা হয়েছে সেগুলো তখন ভুলে যায়, তার কাছে তখন মনে হবে তার শরীর এতোদিন অন্য কারো কন্ট্রোলে ছিলো। তাই সে এই কয়টা বছর মনে করছে পারছে না। আমার সাথে এমনটা না হলেও ঠিক এইরকম মনে হচ্ছে আমার। যদিও জ্যাকের সকল কিছু আমার মনে আছে, কিন্তু আমার স্মৃতি ফিরে আসায় আমি এখন জ্যাকসন ব্রিট হয়ে গেছি, যাক আর এসব কথা ভেবে সময় নষ্ট করবো না। আমাকে আগের মতোই স্বাভাবিক থাকতে হবে। এই দুনিয়ার মেমোরী থাকার কারনে আমার সুবিধা হচ্ছে। যদও এটা ভুলে যেতাম তাহলে অনেকটা অসুবিধা হতো এখানে ফিট হতে। আমি আমার রুম থেকে নাস্তা করে রাজার সাথে দেখা করতে গেলাম। রাজা মিটিং রেখেছে। যেখানে সকল উচ্চ মিলিটারি অফিসার, রয়েল গার্ড এবং এলিট গার্ডদের থাকতে হবে। তাই আমিও চলে গেলাম সেখানে। যাওয়ার পরে যেটা শুনতে পেলাম সেটার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। রাজা নিজে বলতে লাগলো,
.
–আজকে সকালেই বিলুপ্ত দুই রাজ্য, এ্যারসাক এবং আরসাক। এন্জেল এবং ডেভিল রাজ্য দুটো তাদের রাজ্যের অস্থিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে। এবং আমাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে তারা বলেছে, আজ থেকে তাদের দুই রাজ্যকেই আবার স্বাধীন রাজ্য বলে মানা হবে। যে রাজ্য এটা অমান্য করবে তাদের সাথে তারা যুদ্ধে যাবে।(রাজা)
।।।
।।।
রাজা এটা বলেই বসে পরলো তার সিংহাসনে। এবার জেনারেল বলতে লাগলো,
.
–তাদের দুই পক্ষের ক্ষমতা কালকে আমাদের রাজ্যের সেকেন্ড প্রিন্সেস এলিনা এবং তার সাথে থাকা থার্ড প্রিন্সেস এলিহার রয়েল গার্ জ্যাক নিজের চোখেই দেখেছে। এ্যারসাকের এন্জেল রানী এবং আরসাকের ডেভিল রাজার ভয়াবহ যুদ্ধ হয়েছে, যেটা আমাদের একটা শহরের একপাশের বিশাল একটা বন অনেকটাই ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা এখনো জানি না তাদের সৈন্য সংখ্যা কত, কিন্তু তারা আমাদের থেকে অনেক শক্তিশালী, তাই আমাদের রাজা চাচ্ছে তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক রাখতে। যদি তারা নিজ থেকে যুদ্ধ করতে চাই আমাদের সাথে, তাহলে আমরা পিছিয়ে থাকবো না। আমরাও আমাদের আধুনিক অস্ত্র দিয়ে তাদের জবাব দিবো।(জেনারেল)
।।।।
।।।।
আরো অনেক লেকচার দিলো জেনারেল এবং রাজা। কিন্তু সেদিকে আমার কোনো নজর নেই। নজর হচ্ছে, মাত্র এন্জেল রানীর কাছ থেকে একটা চিঠি এসেছে, যেখানে সে বলেছে, সে সরাসরি রাজার সাথে দেখা করতে আসবে এখানে। আর আমি সেটার জন্যই অপেক্ষা করছি এন্জেল রানী কি বলবে সেটা দেখার জন্য। অনেকক্ষন অপেক্ষা করার পর রানী প্যালেসের দেওয়ালের বাইরে থেকে উড়ে চলে আসলো। দেওয়ালের ভিতর দিয়ে কিভাবে আসলো বুঝলাম না। এরকম ম্যাজিক আমি আগে দেখেনি। আগের দুনিয়াতে ছিলো নাকি সেটাও মনে করতে পারছি না। যাইহোক রানীকে দেখে সবাই অবাক। আজ এখানের সবাই প্রথম একটা এন্জেলকে দেখছে, তার উপরে সে একজন রানী। অবাক হওয়ারই কথা সবার। রাজা কথা বলতে লাগলেন এন্জেলের সাথে। যেহেতু এটা রাজা রানীর কথা তাই আমরা কেউই শুনতে পারবো না। রাজা নিজে একটা ব্যারিয়ার বানালেন যেটার মধ্যে থেকে কোনো কথায় বের হবে না। কিছুক্ষন কথা বলার পরে, রাজা উঠলেন এবং আমাদের সকলকে বলতে লাগলেন।
.
–আজ থেকে এ্যারসাককে আমি ইগড্রোলিয়ার রাজা এলের্ড স্বাধীন একটা রাজ্য বলে স্বিকার করছি। এবং আজ থেকে ইগড্রোলিয়া এ্যারসাকের কাছের বন্ধু।(রাজা)
।।।
।।।
রাজা যেটা করতে চাইলো সেটাই হলো। রানীর সাথে বন্ধুত্ব করে নিলো। তবে এটাই সব কিছু না। রানী এবার বলতে শুরু করলো।
.
–আমি এ্যারসাকের রানী আফরিয়েল ইগড্রোলিয়াকে আজ থেকে আমার বন্ধু স্বিকার করছি, তবে একটা শর্তে। শর্ত হলো আমার সাথে এ্যারসাকে প্রিন্সেসের গার্ড জ্যাককে যেতে হবে। তার এখানে থাকা একদম বিপদ্দজনক। শুধু তার জন্য এই পুরো রাজ্যকে ডেভিল কিং ধ্বংস করে দিতে পারে।(এন্জেল রানী)
।।।।
।।।।
সবাই রানীর কথা শুনে চমকে গেলো। আমার দিকে সবাই অবাক হয়ে তাকালো। হয়তে ভাবছে, একজন সাধারন মানুষের জন্য ডেভিল কিং এই রাজ্য ধ্বংস করতে যাবে কেনো।
।।।।
।।।।
একটু আগে রাজা ডেভিল কিং এর বিরুদ্ধেও লড়তে চাইছিলো। কিন্তু রানীর সাথে কথার পর সে ডেভিল কিং এর নাম শুনেই ভয় পাচ্ছে। আমি জানি না ভয়ের কি আছে। একটা সময় ছিলো যখন আমিও ছিলাম ডেভিল কিং। এতোটা ভয়ংকর তো ছিলাম না আমি।
।।।
।।।
আমাকে আফরিয়েল এন্জেল রানীর সাথে যেতে হলো। মূলত আমি যেতে চাই নি। কিন্তু রানী শুধু আমাকে না, বরং যারা লড়াই এর সময় ছিলো সবাইকে নিয়ে যাচ্ছে, প্রিন্সেস এলিনা, লুসি, লুসানা, হ্যারি এবং আমি। আপাতোতো আখিল থাকবে প্রিন্সেস এলিহার গার্ড হিসাবে।
।।।
।।।
অনেক কিছুই পারি এখন, ম্যাজিক ব্যবহার করে দেখি নি, কিন্তু আমার ধারনা সেটা পারবো। অনেক ক্ষমতা রয়েছে আমার কাছে। কিন্তু একটা জিনিসি পারি না সেটা হলো উড়তে। আমাকে এন্জেল রানী বুকের উপর হাত দিয়ে পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে এবং আকাশে উড়ছে। হ্যারি, লুসি, লুসানা এবং প্রিন্সেস এলিনা উড়তে পারে, তাদের ডানা দিয়ে তারা উড়ে আসছে এন্জেল রানীর পিছনে। আমি অনেকটা ভয় পাচ্ছি। প্রথমবার এতো উচুতে এভাবে একজনের মাধ্যমে ঝুলে আছি, অবশ্য আগের দুনিয়াতে তো উড়েছি তবে এখানে আমার ডানা নেই, এজন্য ভয় করছে।
।।।
।।।
আমি প্রিন্সেস এলিনার দিকে তাকালাম। আমাকে জরিয়ে ধরেছে রানী এটার জন্য রেগে লাল হয়ে গেলো। একদম আমার পুরাতন মেমোরীর মতই আছে ও। একটু ও বদলাই নি। আর এই এন্জেল রানী যে আফরিয়েল এটাও আমি চিন্তে পেরেছি। আগের রিয়েলিটির আমার মামার মেয়ে ছিলো আফরিয়েল, অবশ্য সে একজন এন্জেল প্রিন্সেস ছিলো সেখানে, আর এখানে সে একজন রানী। যাইহোক রানীর কথা মতে আরসাকের সাথে যুদ্ধ বন্ধ করতে এ্যারসাকের শক্তিশালী এক এন্জেল রাজা যার নাম ছিলো মাইকেল, সে একটা স্পেল ব্যবহার করে, যেটা এ্যারসাককে আকাশের উপরে এবং আরসাককে মাটির নিচে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
।।।
।।।
আমার এই কাহিনী শুনে আগের দুনিয়ার কথা মনে পরে গেলো। একটা সময় ছিলো সেখানেও এগারো দুনিয়া একসাথে ছিলো। কিন্তু যুদ্ধের কারনে সেটা এগারো ভাগে ভাগ হয়ে যায়, অবশ্য আমার জানার ভিতরে এইটুকুই জানি। বেশী ডিটেইলস আমার কাছে নাই। এই রিয়েলিটিতে আমি কোনো ক্ষমতা অর্জন না করলেও একটা জিনিস আমার ভালো লাগছে, সেটা হলো কোনো কিছু একবার পরলে আমি সেটা কখনো ভুলি না। যাইহোক রানীর মতে এ্যারসাকে কেউই প্রবেশ করতে পারে না রানীর আদেশ ছাড়া, কারন কেউ জানেই না এটা কোথায়। শুধু রানীর কাছেই শক্তি আছে এ্যারসাকের গেইট খোলার। আর সে আকাশের যে কোনো জায়গায় সেটা খুলতে পারবে। আবার আরসাকের জন্যও একই রকম। ডেভিল কিং ই পারে শুধু আরসাকের গেইট খুলতে। আমার অনেকটা আন্ডারওয়ার্ল্ড এর কথা মনে যাচ্ছে এটা ভেবে। সব ডেভিল কিং এর রাজ্য আন্ডারওয়ার্ল্ড হয় কেনো সেটা বুঝতে পারছি না।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২৭
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমরা পাঁচজন রানী আফরিয়েল এর সাথে এ্যারসাকে যাচ্ছি। অবশ্য আমি যাচ্ছি না আমাকে রানী নিজেই জরিয়ে ধরে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ব্যাপরাটা অনেক লজ্জাজনক যে এক সময় আমি ডেভিল কিং ছিলাম কিন্তু এখন উড়তে পারি না। অবশ্য ডেভিল কিং আমি আগের জন্মে ছিলাম, যেটার রিয়েলিটি এটা থেকে সম্পূর্ন ভিন্ন। আর আমাকে সেটা ভিন্নই রাখতে হবে। আপাতোতো আমার কাছে ইগড্রাসিল এবং ভ্যালিরা রয়েছে। অবশ্য তাদের শক্তির তলোয়ার রয়েছে আমার কাছে। ইগড্রাসিলও বোধ হয় আগের রিয়েলিটি সম্পর্কে কিছুই জানে না। তাই তার সাথে সেটা নিয়ে কথা বলে লাভ হবে না। আপাতোতো আমি এই দুনিয়াতে কি করবো সেটা বুঝতে পারছি না। সাধারন ভাবে বলতে গেলে এতোদিন আমি জ্যাক ছিলাম এবং এখন জ্যাকসন ব্রিট, যার মাঝে আগের এবং এই দুই রিয়েলিটির স্মৃতি আছে, যদিও এই রিয়েলিটির অনেক স্মৃতি আমার কাছে নেই, তারপরও আমি অনেক কিছু জানি। এতোদিন আমি যেটা ভেবেছি সেটার এখন আমার কাছে কোনো দাম নেই বললেই চলে, যেমন রয়েল গার্ড হওয়া, রাজাকে হত্যা করা। সবার থাকার মতো একটা সুন্দর রাজ্য বানানো, এসবের কোনো কিছুতেই আর আমার ইচ্ছা নাই। আপাতোতো আমাকে নতুন কোনো কিছু করতে হবে। নতুন কোনো কিছু খুজতে হবে করার জন্য। এ্যারসাকে যাওয়াটা খারাপ হচ্ছে না। নতুন কিছুর উদ্দেশ্য পাবো হয়তো। আপাতোতো আমি আমার সাথে হ্যারি, লুসি, লুসানা এবং এনাকে দেখতে পেয়ে অনেক খুশি হলাম। আফরিয়েলও এখানে আছে। জেসির সাথেও সেদিন দেখা হয়েছিলো। সেদিন আমার স্মৃতি ফিরে আসলে ওর সাথে কথা বলতাম। ওর কথা শুনে আমি বুঝতে পারছি এখন ও আগের দুনিয়ার সম্পর্কে সব কিছুই জানে। শুধু আমরা দুজনই না হয়তো অনেকেই আগের দুনিয়া সম্পর্কে জানে। আমাকে সেটারও ব্যালেন্স রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কারন আমার মধ্যে আগে যে ডেভিল ক্ষমতা ছিলো, তার মধ্যে একটা ছিলো রিয়েলিটি কন্ট্রোল করা। অবশ্য তখন একটা রাজ্যের রিয়েলিটি বদলানোর ক্ষমতা ছিলো আমার কাছে, তবে সেটাই সমস্যা হতো, যদি বেশীর ভাগ লোকজন আগের রিয়েলিটি সম্পর্কে জানতে পারতো। অর্ধেকের মতো লোকজন যদি আগের রিয়েলিটি সম্পর্কে জানতে পারতো তাহলে তখন সেই নতুন রিয়েলিটি ভেঙে যাবে। আর এই নতুন দুনিয়াতে যে রিয়েলিটি স্পেল কাজ করছে আমার ধারনা ঔটার মতোই কাজ করে। তারজন্য বেশীরভাগ লোকজন আগের জীবন সম্পর্কে না জানলেই ভালো। কারন এটা সম্পূর্ন নতুন একটা দুনিয়া। যদি এটার রিয়েলিটি ভেঙে যায় তাহলে এই দুনিয়া পুরো ক্রাইসিসে পরে যাবে। সব জায়গায় তখন যুদ্ধ এবং যুদ্ধ হবে। এবং আবারো এই একটা দুনিয়া আলাদা হয়ে এগারোটা কিংবা আরো বেশী দুনিয়ায় পরিবর্তন হতে পারে। জেসির স্বপ্নটা আমি বুঝতে পারছি। ওর কাজের প্রতি আমি রাগ করছি না। কারন এটা পুরো স্বপ্নের দুনিয়া যেটা ও তৈরী করেছে। এভাবে সকল গোত্রের প্রানীদের একসাথে বাস করা হয়তো আগের রিয়েলিটিতে কখনো সম্ভব হচ্ছে না। আমি জানি না তবে, অনেক ভালো লাগছে আগের টা থেকে। এখানে এক দুনিয়া থেকে অন্য দুনিয়া ট্রাভেল করতে হবে না আমাদের অন্য গোত্রের সাথে দেখা করতে। বরং সবাই একসাথেই থাকে এখানে। তবে এই দুনিয়াও আলাদা হচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারছি। এ্যারসাক এবং আরসাক দুটো আস্তে আস্তে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। আর এটা একজন এন্জেলের মাধ্যমেই হয়েছে। লড়াই বন্ধ করার জন্য হয়তো এই একটা রাস্তাই মাইকেলের কাছে ছিলো। অবশ্য মাইকেল বেচারা বেঁচে গেছে। তার থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া আমার বাকি ছিলো। কিন্তু বেঁচে থাকলেও হয়তো সেটা পেতাম না। কারন তখন আগের সব ভুলে যেতো।
।।।
।।।
যাইহোক কিছুটা উপরে উঠার পর রানী আফরিয়েল একটা স্পেল পড়লো। আর সাথে সাথে আকাশে একটা সাদা দরজা দেখা দিলো। রানীর স্পর্শ পাওয়ার সাথে সাথে দরজাটা খুলে গেলো। এবং আমরা চলে পা রাখলাম এ্যারসাকে। অবশ্য এ্যারসাক বলা যাবে না এটাকে। আগের হ্যাভেন এটা। ঠিক হ্যাভেন যেরকম ছিলো সেরকমই এ্যারসাক। সাদা পাথর এবং কাঠ দিয়ে সকল বাসা তৈরী করা হয়েছে। অনেক বড় বড় এট্টোলিকা বানানো রয়েছে। এ্যারসাকের সকল এন্জেল উড়েই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া আসা করে। আর সেটাই দেখতে পাচ্ছি। ইগড্রোলিয়ার ক্যাপিটাল সিটির দশটার সমান হয়তো এই পুরো এ্যারসাক। হয়তো আমার গননা ভুলও হতে পারে। যাইহোক অনেকগুলো গার্ড আমাদের কাছে চলে আসলো। সবাই অবাক হয়ে গেছে, কারন রানী নিজে আমাকে জরিয়ে ধরে উড়িয়ে নিয়ে এসেছে। তাদের রাগ হচ্ছে সেটা তে বুঝতে পারছি। এটা হয়তো তাদের কাছে অসম্মানের ব্যাপার। আর এদিকে যে প্রিন্সেস এলিনা রাগে ঢোল হয়ে গেছে সেটাও বুঝতে পেরেছি আমি। এনার সাথে এখনো ভালো করে কথা বলি নি আমি। আমি এখনো সিওর না যে ওর আগের কিছু মনে আছে কিনা। কিন্তু কিছু কিছু সময় স্বপ্নে আমাকে দেখার কথা উল্লেখ করেছে ও। আর তাতে বোঝা যাচ্ছে ওর কাছে হয়তো আমার ছোটখাটো কিছু স্মৃতি থাকতে পারে। এখনো আমি সিওর না। বের করতে হবে আদৌও কি ও সব কিছু জানে, নাকি জানে না। সেটা জানার জন্য ওর সামনে একটু আগের মতো অভিনয় করতে হবে। আমরা প্যালেসের মধ্যে চলে গেলাম। ঠিক আগের দুনিয়ায় পৃথিবীর তাজ মহল যে ভাবে বানানো হয়েছে এ্যারসাকের প্যালেসটাও এরকম। তবে অনেক বড় সাইজে। তাজমহলের থেকে হয়তো তিনগুন সাইজের হবে প্যালেস।
।।।
।।।
আমার সত্ত্বাগুলো এখন আগের দুনিয়ার মতো কাজ করে না। কারন এই দুনিয়ার রিয়েলিটি ভিন্ন। এটা আমি লক্ষ করেছি, কারন আমার মাঝে আমার ভ্যাম্পায়ার সত্ত্বা থাকার পরও আমার দাঁত একটা আগের মতো বড় হচ্ছে না। তাছাড়া কালকে আমি ব্লাডও দেখেছি, তাতে আমার সেটা খেতেও মন চাই না। এর একটা মানেই বুঝতে পারছি আমি যে আমার মাঝে সত্ত্বাগুলো নেই আগের মতো। তাদের ক্ষমতা গুলো শুধু এসেছে আমার কাছে, যেহেতু আমি মানুষ তাই আমার ভ্যাম্পায়ার এর ক্ষমতা থাকার পরও আমার দাঁত একটা বড় হয় নি, কিংবা ভ্যাম্পায়ারদের মতো আমার স্বভাব হয় নি। আবার এন্জেলদের ক্ষমতাও আমার কাছে আছে, তবে আমার পিঠে ডানা হয় নি, কারন তাতে আমার স্বভাব অনেকটা এন্জেলদের মতো হয়ে যাবে। এই দুনিয়া আগের মতো চলে না। তাই কেউ মানুষ হয়ে এন্জেল হতে পারবে না। আবার এন্জেল হয়ে ডেভিল হতে পারবে না। এক গোত্রের কেউ অন্য গোত্রের ক্ষমতাও অর্জন করতে পারবে না। তবে আমার ক্ষেত্রে একটু ভিন্ন। আমি মানুষ হয়ে অন্য কোনো গোত্র হতে পারবো না ঠিকই। তবে অন্য গোত্রের ক্ষমতা আছে আমার কাছে। বিষয়টা সম্পূর্ন রূপে আমাকে জানতে হবে।
।।।।
।।।।
আমরা প্যালেসের মধ্যে ঢুকলাম। অন্য কথায় তাজমহল 2.0 তে ঢুকলাম। পুরো এ্যারসাকই অনেক পবিত্র। বাসা বাড়ি সব একটা থেকে অন্যটা কিছুটা দূরত্বে থাকায় এই রাজ্যটাকে অনেক সুন্দর লাগে। আর সব কিছুর রং শুধু সাদায়। অন্য রং ব্যবহার হলেও সেটা বাসার ভিতরে। বাইরে থেকে সব কিছুই সাদা রঙের ব্যবহার করা হয়। প্যালেসের ভিতরে সব রকম রঙেরই বিভিন্ন জিনিস দেখতে পাচ্ছি। আমাদের থাকার জন্য নির্দিষ্ট্য রুম দিয়ে দিলো। রুমে এসে বসলাম আমি। কাঠের ব্যাগ থেকে ভিরুদা এবং ভ্যালিকে বের করে বিছানার উপরে রাখলাম। আমি জানি না আফরিয়েল আমাকে এখানে কেনো এনেছে। আমার সেই স্পেশাল ক্ষমতা যেটাই অনেক হাত বের হয় পিঠ থেকে, সেটাকে গডহ্যান্ড বলছিলো রানী। হয়তো সেটার জন্য আমাকে নিয়ে এসেছে। হয়তো সে আমাকে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। ডেভিল কিং এর কাছে খুব সহজেই সে হেরে যাচ্ছিলো। হয়তো সে আমাকে ডেভিল কিং এর বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে।
।।।
।।।
আমার আপাতোতো কোনো ইচ্ছাই নাই কিছু করার। ডেভিল কিং কে? সে কি চাই? হ্যানত্যান বিষয় অনেক বোরিং। ডেভিল কিংদের কাজ সে করবে। এন্জেলদের কাজ ডেভিল কিং দের বিরুদ্ধে কাজ করা। দুনিয়ার সবারই কিছু না কিছু কাজ আছে। কিন্তু এই নতুন দুনিয়াতে আমার কাজ কি সেটাই আমি বুঝতে পারছি না।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২৮
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
আমরা এ্যারসাকের প্যালেসে অবস্থান করেছি আপাতোতো সময়ের জন্য। এ্যারসাক আমার অনেক ভালো লেগেছে। কারন এখানের পরিবেশটা অনেক সুন্দর। কিছুক্ষন বিশ্রাম করার পরে আমি বের হলাম আমাকে যে রুমে থাকতে দেওয়া হয়েছে সেটা থেকে। পুরো প্যালেসে অনেক গার্ড রয়েছে, যারা অনেক ভালো ভাবে গার্ড দিচ্ছে। আমি হেটে হেটে পুরো প্যালেস দেখতে চাইছিলাম, কিন্তু প্যালেসে হাটাহাটি করা নিষেধ। তাই আমাকে আবার নিজের রুমের মধ্যে চলে আসতে হলো। অবশ্য গার্ডগুলো আমাকে দেখে আমাকে নিজের রুমেই চলে যেতে বলেছে। অনেক বোরিং লাগছে। ভেবেছিলাম হয়তো এ্যারসাক অনেক ইন্টারেস্টিং জায়গা হবে। কিন্তু আমাকে যদি বেরই না হতে দেই।
।।।
।।।
পুরো চারঘন্টা বোরিং অবস্থায় ঘুমানোর পর একজন এন্জেল আসলো আমার কাছে। এসে সে বলতে লাগলো,
.
–আমার নাম এন্জিলা। আমি আপনার গাইড হবো আজকের জন্য। চলুন আপনাকে পুরো প্যালেস ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।(এন্জিলা)
।।।
।।।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। এন্জেলটা বয়সে আমার থেকে ছয়, সাত বছরের বড় হবে। একদম সেই চেহারা, সেই লুক যেটা আমি মাত্র কয়েকবার দেখেছি। যদিও বয়স কম এই জন্মে তার, কিন্তু আমি চিন্তে ভুল করি নি। এটা আমার জন্ম দেওয়া মাতা ছিলো আগের জন্মে। যে কিনা তার নিজের জীবন দিয়েছে আমাকে রক্ষা করার জন্য। তাকে আমি জীবন্ত আমার চোখের সামনে দেখে চোখের পানি আটকে রাখতে পারছি না। অনেক বড় একটা কানেকশন আছে তার সাথে আমার। রক্তের সম্পর্কের সাথে অন্য কিছুর তুলনা হয় না। যদিও এই রিয়েলিটিতে সেটার কোনো মূল্য নেই। আমাকে জন্ম দিয়েছে অন্য একজন মহিলা। আমার আগের জন্মের আম্মা যে কিনা তার আগের জন্মের ছেলের সামনে দাড়িয়ে আছে, কিন্তু চিন্তে পারছে না। আমার চোখের পানি পরা দেখে এন্জিলা বলতে লাগলো,
.
–কি হলো আপনি কাদছেন কেনো? খারাপ কিছু মনে পরে গেছে আপনার?(এন্জিলা)
.
–না, একটা প্যালেসের রুমে আমাকে আটক করে রাখা হয়েছিলো, আপনি আমাকে নিতে এসেছেন, এজন্য চোখ দিয়ে পানি পরছে।(আমি মনের কথা ঘুরিয়ে বলে দিলাম)
.
–ওওও। আচ্ছা চলুন তাহলে এক এক করে প্যালেস ঘুরিয়ে দেখানো যাক আপনাকে।(এন্জিলা)
.
–আমার সাথে আসা অন্যরা কোথায়?(আমি)
.
–প্রিন্সেস এলিনা আমাদের রানী আফরিয়েল এর সাথে কথা বলছেন। এবং অন্য তিনজন ফাইটিং এরিনায় ট্রেনিং করছে।(এন্জিলা)
.
–তাহলে আমাকেই এই রুম থেকে বের হতে দিলো না কেনো।(আমি)
.
–এটা রানীর আদেশ ছিলো তাই। রানী বলেছেন আপনি নাকি গডহ্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন?(এন্জিলা)
.
–হ্যা। চলুন তাহলে ফাইটিং এরিনার দিকেই যাওয়া যাক।(আমি)
।।।
।।।
আমি হাটতে লাগলাম এন্জিলার পিছনে। আপাতোতো আমি আগের রিয়েলিটি এখানে আনতে চাই না। তারপরও আগের স্মৃতি আমাকে তারিয়ে বেরাচ্ছে শুধু। আমার মাঝে এন্জেলদের ক্ষমতা থাকলেও তাদের শারিরীক রূপ কিংবা তাদের স্বভাব আমার হবে না। অন্য দিকে ভ্যাম্পায়ার এবং ডিম্যানের ক্ষমতা থাকলেও তাদের শারিরীক রূপ কিংবা তাদের স্বভাব আমার হবে না। এক দিক দিয়ে এটা অনেক ভালো। আনার শরীরের মধ্যে আর আগের মতো সত্ত্বাদের লড়াই হবে না। বিষয়টা মোটেও ভালো ছিলো না। আমি সেটার জন্য আমার পুরো ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারি নি আগের দুনিয়ায়। সেরকম না হওয়ায় এখন ভালো লাগছে। আমার পিঠে ইগড্রাসিল এবং ভ্যালিরা দুজনই আছে। তাদের এই তলোয়ার ফর্মটা আমার মোটেও ভালো লাগছে না। আমার আগের দুনিয়ার তলোয়ারটা সেরকম ছিলো। কি নাম ছিলো তা মনে করতে পারছি না। সম্ভবত এক্সোনিয়া হবে। ঔটা সব সময় অদৃশ্য থাকতো। এক্সোনিয়া বলেই হাত মুঠো করার সাথে সাথে আমার হাতে সেটা চলে আসতো।
।।।
।।।
সবচেয়ে আজব করার বিষয় হলো আমি এখনো এক্সোনিয়া বলে আমার হাত মুঠ করেছি। আর আগের দুনিয়ার মতো সেই এক্সোনিয়া আমার হাতে চলে এসেছে। তবে একটু সমস্যা। আমি এক্সোনিয়ার হাতল দেখেই চিন্তে পারছি এটা এক্সোনিয়া। তবে সমস্যা হচ্ছে এক্সোনিয়ার হাতলই শুধু এসেছে আমার কাছে। বাকি তলোয়ারের ব্লেড নেই। ব্লেড হাতলের ঔখান থেকে ভেঙে রয়েছে। হয়তো এগারো দুনিয়া এক হওয়ার সময় এই এইটা হয়েছে। আর হাতলে অনেক মাটি লেগে থাকার কারনে বুঝতে পারলাম এটা মাটির নিচে ছিলো এতোদিন। বিষয়টা খারাপ না। আমি এই এক্সোনিয়াও মেরামত করতে পারবো। অবশ্য আমি পারবো না। তবে কিছু ডয়ারফস রয়েছে যারা পুরাতন অস্ত্র আবার আগের মতো করে দিতে পারে। সেই ডয়ারফসদের লেজেন্ডারী ব্লাক স্মিথ নামে জানে সবাই। অবশ্য তাদের খুজতে আমাকে এ্যলকোর্ট যেতে হবে। এই দুনিয়াতে দশজন লেজেন্ডারী ব্লাক স্মিথ ছিলো। যাদের ৯ জনই মারা গিয়েছে। আর আরেকজনের কোনো খোজই নাই। বলা হয়ে থাকে আজ থেকে দশ বছর আগে সেই একজন নিখোজ হয়েছে। তবে কিছু ধারনা করা হয়ে থাকে সে এ্যালকোর্টে রয়েছে। আমাকেও এই এক্সোনিয়া ঠিক করাতে হলে সেই একজনকেই খুজতে হবে। নাহলে একজন শক্তিশালী সময়ের স্পেল ব্যবহার কারীকে খুজতে হবে। তবে আমার মনে হয় না কারো সময়ের স্পেল এতো পুরানো তলোয়ারকে ঠিক করতে পারবে। তাই একটা রাস্তাই দেখতে পাচ্ছি যেটা হলো সেই ব্লাক স্মিথকে খোজা। আমি আমার ব্যাগের চেইন খুলে সেটার মধ্যে হাতলটা রেখে দিলাম। কারন এক্সোনিয়ার মাঝে আর কোনো ম্যাজিক পাওয়ার নেই। সেটা মৃত হয়ে গেছে। হয়তো শেষ ম্যাজিকটুকু ব্যবহার করেছে আমার কাছে আসতেই। আর এখন সে ম্যাজিক শূন্য। যায়হোক ইগড্রাসিল এবং ভ্যালিরার তলোয়ার দুটো ভালো হলেও একটা আরেক হাত দিয়ে ব্যবহার করা যায় না। আগুনে পানি দিলে যেমন আগুন এবং পানির মধ্যে ঝগড়া লাগে, ঠিক তেমনি এর তলোয়ার আরেক হাত দিয়ে ব্যবহার করলে আমার হাত জ্বালা করে। বিষয়টার জন্য তাদের ফেলে দিতে মন চাচ্ছে। তারপরও শক্তিশালী অস্ত্র তারা। তাদের ফেলে দিলে অনেকটা দুর্বল হয়ে যাবো আমি।
।।।
।।।
আমি এন্জিলার পিছন পিছন হাটতে হাটতে চলে আসলাম ফাইটিং এরিনার দিকে। ওর পিছনে ছিলাম বলে হয়তো আমার এক্সোনিয়া হাতে আসা দেখে নি। আর ভাঙা পুরাতন তলোয়ার দেখেই বা কি করবে। অবশ্য এটা একসময় এন্জেলদেরই ছিলো। তবে মাইকেল সেটাকে আনার হাতে তুলে দিয়েছিলো। অনেক কাজের একটা তলোয়ার, যেটা ডেভিলদের বিরুদ্ধে ভালো কাজে দেই। আমি আগের জন্মে কোনো ডেভিলের উপরে ব্যবহার করতে পারি নি, তবে এবার সেটা ব্যবহার করতে মন চাচ্ছে। যদিও সেটাকে ঠিক করতে পারবো কিনা জানি না। তবে চেষ্টা করতে কতোক্ষন। এন্জিলা আমাকে নিয়ে ফাইটিং জোনে চলে আসলো। সেখানে হ্যারি, লুসি এবং লুসানা তিনজন এন্জেলের সাথে লড়াই করছে। লড়াই অনেক ভালোই যাচ্ছে। আমি অবাক হলাম লুসি এবং লুসানার আক্রমনাত্নক স্পেল দেখে। মূলত তারা দুজন সাপোর্ট ম্যাজিকই ব্যবহার করে। কিন্তু সেটা দিয়ে আক্রমন করা আমি কাউকে দেখি নি। লুসি এবং লুসানার মূল স্পেল যেটা আমাদের কাজে দেই সেটা হলো ঢাল বা ব্যারিয়ার। এই ব্যারিয়ার বা ঢাল দিয়েই দুজনে আক্রমন করছে। অনেকগুলো ঢাল বানাচ্ছে, এবং সেগুলোকে হাওয়ার মধ্যে কন্ট্রোল করছে। এরকম অনেক কম লোকই আছে যারা করতে পারে। যাইহোক ওদের লড়াই দেখে আমি অনেক উৎসাহিত হলাম। লড়াই দেখলে আমার ও লড়তে মন চায়। অনেকক্ষন লড়াই এর পরে হ্যারির লাইটিং স্পেলের ফলে এন্জেল তিনজন হেরে গেলো। লুসি এবং লুসানা তাদের চারপাশে একটা ব্যারিয়ার বানিয়ে রাখছিলো যেটার মধ্যেই হ্যারির স্পেল পরে। আর স্পেলের পুরো আঘাত তাদের লাগার কারনে তারা হেরে যায়। লড়াইটা বেশ ভালোই লাগলো। ওদের লড়াই দেখে বুঝতে পারলাম অনেক শক্তিশালী হয়ে গেছে ওরা। তিনজন এন্জেলকে যদি হারাতে পারে এভাবে, তাহলে অনেক কিছুই করতে পারবে। অবশ্য এন্জেল তিনজন তাদের পুরো ক্ষমতা ব্যবহার করছিলো না। তারা সাধাধন এট্রিবিউট এর স্পেল, যেমন পানি, বরফ এবং মাটির সাহায্য নিচ্ছিলো। হঠাৎ একটা এন্জেল আমার সামনে আসলো, যে কিনা সাইজে বিশাল। একটা ভাইকিংস কিংবা বিস্টম্যানের আকার হবে তার।
.
–শুনলাম আপনি নাকি গডহ্যান্ডের মালিক, আমার নাম লুক।(লুক)
.
–আমি জ্যাক।(আমি)
.
–উনি হলেন আমাদের এন্জেল সেনার জেনারেল।(এন্জিলা)
.
–ওওও।(আমি)
.
–চলুন জ্যাক, আমার সাথে একটা ম্যাচ হয়ে যাক আপনার।(লুক)
.
–হ্যা অবশ্যই।(আমি)
।।।
।।।
আমিও একটা সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম। আমি এখনো পুরোপুরি সিওর না যে আমি ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারবো। তবে লড়াই এর মাঝেই সেটা বোঝা যাবে। যেহেতু সে এন্জেলদের জেনারেল, তাই আমার মতে এখানের সবচেয়ে শক্তিশালী রানীর পরে সেই হবে। অবশ্য অন্যান্য রাজ্যে তো সেটাই হয় অফিসিয়াল ভাবে। আমি এরিনার মধ্যে ঢুকে পরলাম। অনেকটা বড় স্টুডিয়ামের মতো। চারপাশে বসার জন্য চেয়ার রয়েছে, যেখানে সবাই মজা করে বসে লড়াই দেখে। এবং মাঝখানে অনেকটা জায়গা যেখানে লড়াই হয়। আমার একটা লড়াই এর প্রয়োজন ছিলো। কারন আমি এখন পর্যন্ত ভালো করে জানি না কিরকম স্পেল আমি ব্যবহার করতে পারবো। এটাও সিওর না যে ম্যাজিক ব্যবহার করতে পারবো কিনা, তবে মনে হচ্ছে পারবো। কারন আমি ডেভিল কিং এর সাথে লড়াই এর সময়ে একটা টাইম স্পেল ব্যবহার করেছিলাম। তারপরও আমার এট্রিবিউট সম্পর্কে আমি সিওর না। আগের দুনিয়ায় আমার এট্রিবিউট সব ধরনের ম্যাজিকের ছিলো। আশা করা যায় এখানেও সব কিছুর থাকবে। তাহলে আরো বেশী ভালো হবে। আমি হেটে হেটে মাঝ বরাবর যেতে লাগলাম। এবং লড়াই আগেই আমার এট্রিবিউট চেক করে নিচ্ছি। ম্যাজিক কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটা আমার জানা আছে, তাই কোনো জিনিসের সমস্যা হবে না। ম্যাজিকের বিষয়টায় হলো কল্পনা। কল্পনা সঠিকভাবেই করলে শরীরের ম্যাজিক পাওয়ার একত্র হয়ে সেটাকে একটা রূপ দেই, যেটাকে ম্যাজিক স্পেল বলে। অবশ্য এটা বইয়ের লেখা। সংক্ষেপে বলতে গেলে ম্যাজিক হলো সকলের চিন্তা। চিন্তাকে বাস্তব করাই ম্যাজিক। আমি বরফের কথা চিন্তা করতে লাগলাম, কিন্তু কোনো বরফ বের হলো না। আমি বাকি চারটা এলিমেন্ট এর কথাও ভাবতে লাগলাম। কিন্তু কোনো কিছুই কাজ হচ্ছে না। শেষমেষ আমি আগুনের দৃশ্য কল্পনা করলাম। আর সাথে সাথে আমার ডান এবং বাম হাতের তালু দিয়ে আগুন বের হতে শুরু করলো। যেহেতু তালুতে বের হচ্ছে তাই বাম হাতের ভ্যালির কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমার ডান হাতের আগুন পেয়ে ইগড্রাসিলের আগুনও বেরে গেলো। ইগড্রাসিল এবং ভ্যালি দুজনেই ঘুমিয়ে ছিলো এতোক্ষন। দুজনের সাথে বেশী কথা হয় না বলে বেশীর ভাগ সময় তারা ঘুমেই থাকে। ঘুমালে তাদের ম্যাজিক পাওয়ারও নিয়ন্ত্রনে থাকে। কিন্তু আমার হাতে আগুন তৈরী করায় ইগড্রাসিলের আগুনও জ্বলতে থাকে, যেটা আমার ডান হাতের ফুল হাতা জামার ডান জাতা পুরিয়ে ফেলে। এবং কিছু ব্যান্ডেজ কাপড় ছিলো যেটাও পুরে যায়। আগে এরকম হয় নি। ওর আগুনে কখনো আমার জামাকাপড় পুরে যায় নি। আমি এক হিসাবে বুঝতে পারলাম আমার এট্রিবিউট এই দুনিয়ার জন্য শুধু ফায়ার। আমি আগুনের সমস্ত স্পেল ব্যবহার করতে পারবে। এক হিসাবে দেখা যায় আগুনের স্পেলই সবথেকে শক্তিশালী হয় এট্রিবিউট স্পেলের মধ্যে। আর আমার কাছে আছে ফায়ার ড্রাগন ইগড্রাসিল। ওর আগুনে আমার ডান হাত পুরো আগুনে জ্বলে উঠেছে। ওর ছবি বলা যায় না, বরং ওর ট্যাটু আমার ডান হাতে এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এতোক্ষনে আমি লুকের সামনে এসে দাড়িয়েছি। লুক আমার ডান হাতে ইগড্রাসিলকে দেখে অবাক হয়ে গেছে। অনেকেই আছে যারা ছয় ড্রাগনের সম্পর্কে জানে। কিন্তু কারো ধারনা ছিলো না যে ইগড্রাসিলকে কেউ মুক্ত করেছে।
.
–দেখে মনে হচ্ছে না আপনি শুধু গডহ্যান্ডের মালিক। আপনার কাছে ফায়ার ড্রাগন ইগড্রাসিলও আছে। এখন বুঝেছি আমাদের রানী কেনো আপনাকে সিলেক্ট করেছেন।(লুক)
.
–আমাকে সিলেক্ট করেছে মানে?(আমি)
.
–এসব কথা পরে হবে। আমি চাইবো আপনি পুরো শক্ততে লড়ুন আমার সাথে।(লুক)
.
–হ্যা ঠিক আছে।(আমি)
।।।
।।।
আমারও ইচ্ছা পুরো শক্তিতে কারো সাথে লড়ার। হোক না সেটা এন্জেল জেনারেল। অবশ্য তার কাছে হেরে যাবো এটা আমার মনে হচ্ছে। কারন তার ম্যাজিক পাওয়ারটা আমার থেকে অনেক উচ্চ লেভেলের। আমি আমার ডান হাতের আগুনটা আরো বড় করলাম। সাথে সাথে ইগড্রাসিলের আগুনও আমার ডান হাতে বড় হয়ে গেলো। সেটা বড় হয়ে উপরের দিলে উড়তে লাগলো আরো। সেদিকে আমার নজর নেই। এদিকে লুক তার ডানা দিয়ে একদম আল্ট্রা বেগে আমার কাছে চলে আসলো। যদিও আগে এটা আমি দেখতে পারতাম না। তবে এখন এন্জেলদের ক্ষমতা থাকার কারনে, আমিও আল্ট্রা স্পিড ব্যবহার করতে পারি। অবশ্য একটা সময় ছিলো যখন আমি এটা ব্যবহারও করেছি। তবে এখন আবার সব কিছু আমার কাছে নতুন লাগছে।
।।।
।।।
লুক আমাকে তার ডান হাত দিয়ে ঘুষি মারতে আসছিলো। আর আমিও সেইসময় আমার আগুনে ভরা ডান হাত দিয়ে ঘুষি মারলাম। দুজনে দশ পনেরো সেকেন্ডের জন্য স্থির ছিলাম। আমাদের দুজনের ঘুষিতে পুরো ফ্লোরে ভূমিকম্প দেখা দিলো। অনেক মারাত্মক শক ওয়েব তৈরী হয়েছে, যেটা আমাদের দুজনের চারপাশের ফ্লোরকে ভেঙে অনেকটা দাবিয়ে দিলো। যদিও কিছুক্ষনের জন্য আমি তার ঘুষিটাকে আটকিয়ে রাখতে পারছি। কিন্তু হঠাৎ ডান হাত পিছিয়ে নিয়ে আরেকটা ঘুষি দিলো যেটার আঘাতে আমি উড়তে উড়তে এরিনার দেওয়াল ভেঙে ভিতরে চলে গেলাম। ঘুষিটা ঠিক আমার ডান পাশের মুখে লাগে, যেটার কারনে ডান পাশের একটা দাঁত ভেঙে গেলো। আমি দাড়ালাম। ঘুষিটা অনেক মারাত্মক ছিলো। আমি ভাঙা দাঁতটা থুথু দিয়ে বের করে ফেললাম। দাঁতের ক্ষত একা একা হিল হয়ে যাচ্ছে। হয়তো কিছুদিন লাগবে নতুন দাঁত উঠতে। তারপরও দাঁত উঠার ব্যথা ভালো লাগছে না। ক্ষত হিল হলে ব্যথাও চলে যায়। কিন্তু ক্ষত হওয়ার সময় যে ব্যথা পাওয়া যায় সেটা বেদনাদায়ক। এরকম ঘুষি মনে হয় আমি আজ পর্যন্ত খাইনি। আরেকটু জোরে হলে তো আমার মাথায় ঘুরে যেতে। যাইহোক আমি একটু রেগে গেলাম। আমি আমার পুরো পাওয়ার ব্যবহার না করলে হবে না এখানে। মূলত কোনো প্রকার অস্ত্রে ব্যবহার করা যাবে না বলে আমি আমার ব্যাগটা হ্যারির হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলাম আসার সময়। নিজের শরীরে দিয়েই লড়তে হবে আমাকে। আমি আমার হাতের আগুন ফুল পাওয়ারের বানিয়ে ফেললাম। হাতের তালু থেকে অনেক বড় একটা আগুনের বল বের হলো। আমি কোনো স্পেল ব্যবহার করি নি। এটা শুধু আগুন তৈরী করেছি। বেশী আগুন একত্র হওয়ার ফলে একটা বিশাল বলের আকার ধারন করেছে সেটা। আমি বলের মধ্যে আমার হাত ঢুকিয়ে দিলাম। সাথে সাথে ইগড্রাসিলের ক্ষমতাও বেড়ে গেলো। আমি জানি কিভাবে ইগড্রাসিলকে ব্যবহার করতে হয়। নিজের শরীরের তাপমাত্রা যত বেশী হবে, ইগড্রাসিলের ক্ষমতাও তত বেশী হবে। এবার আমার পুরো ডান পাশ আগুনে জ্বলতে লাগলো। আমি বুঝতে পারছি না বাম পাশে একটু আগুনও যাচ্ছে না। হয়তে আমার শরীর সত্ত্বা ভাগ না করলেও দুটো ড্রাগন ঠিকই ভাগ করে নিয়েছে। শরীরে দুটো ড্রাগন নিয়ে ঘোড়ার কোনো মানে হয় না। আমি ডান পা থেকে শুরু করে মাথার ডান পাশের সব কিছু আগুনে জ্বলছে। আমি আস্তে আস্তে করে এগিয়ে যাচ্ছি লুকের কাছে। যেখানে পা দিচ্ছি সেখানের ফ্লোর একদম পুরে যাচ্ছে। আমি আল্ট্রা স্পিডে এগিয়ে আসলাম লুকের দিকে। এবং একসাথে আল্ট্রা স্পিডে ওর শরীরে একসাথে বিশ ত্রিশটার মতে ঘুষি দিলাম। সে আমার মতো উড়ে না গেলেও, অনেকটা দূরে গিয়ে পরে যায়। মুখের অনেকটা জায়গায় কেটে গেছে।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
#ভ্যাম্পায়ার_কুইন#
#সিজন_2#
পর্বঃ২৯
.
.
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
যদিও আমি আগের রিয়েলিটিতে আল্ট্রা স্পিডকে মাস্টার করেছিলাম। কিন্তু এখন সেটা আমার ব্যবহার করা একটু সমস্যা হচ্ছে। আমি আল্ট্রা স্পিড ব্যবহার করে লুকের শরীরে অনেকগুলো ঘুষি দিয়েছি ঠিকই। কিন্তু সেই আল্ট্রা স্পিড আগের দুনিয়ার তুলনায় সামান্য। আমি বুঝতে পারলাম ডানা না থাকার কারনে আমার স্পিড অনেক কমে গেছে, আর সেটা আমাকে অনেক খারাপ একটা জায়গায় ফেলে দিবে। আমার এতোগুলো ঘুষিতে লুকের মুখের কিছু জায়গায় হালকা কেটে গেছে শুধু, যদিও কিছুটা পিছে গিয়ে পরেছিলো। কিন্তু এটা ওর ঘুষির তুলনায় কিছুই না। আমি বুঝতে পারলাম ওর শারিরীক ক্ষমতার কাছে আমার ক্ষমতা কিছুই না। আমি দাড়িয়ে আছি। লুক হাসলো কিছুটা। এরপর এক পলকের মধ্যেই আমার পিছে চলে আসলো। এতো তারাতারি আসলো যে আমি খেয়ালই করি নি। আমি আল্ট্রা স্পিড ব্যবহার করছিলাম। তারপরও আমার স্পিডের থেকেও অনেক বেশী স্পিডে সে আমার পিছনে এসেছে। এবার তার ডান হাত দিয়ে আমার পিঠে অনেক জোরে একটা ঘুষি দিলো। সে ঘুষি দেওয়ার আগে তার ম্যাজিক পাওয়ার দিয়ে তার হাত শক্তিশালী করে না যেটা আমি করেছি। তারপরও তার ঘুষি অনেক শক্তিশালী। আমার কাছে মনে হলো আমার পিঠের হাড় ভেঙে গেলো। আমি ঘুষির কারনে আবারো এরিনার দেওয়াল ভেঙে ভিতর ঢুকে পরলাম। এবার পিঠ নারাতে কষ্ট হচ্ছে। আমার পিঠ সোজা করে দাড়াতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আমার হিলিং এর ক্ষমতা কাজ করছে সেটা বুঝতে পারছি। আমার আগের স্মৃতি গুলো ফিরে আসার ফলে আমি আমার পিঠ থেকে বেরিয়ে আসা হাত গুলো এবং আমার যে হিলিং ক্ষমতা রয়েছে এটা ঠিকমতোই নিয়ন্ত্রন করতে পারি। আমার ডানা গুলো এই রিয়েলিটিতে না থাকার ফলে সেটার বদলে আমার কাছে আরেকটা ক্ষমতা এসেছে, যেটাকে এই দুনিয়াতে গডহ্যান্ড নামে চিহ্নিত করা হয়েছে, আমার ছয়টা সাদা ডানার বদলে এই ক্ষমতা পেয়েছি আমি। এখন ভাবতেছি কালো ছয়টার বদলে কি ক্ষমতা পাবো আমি?
।।।
।।।
আমি দাড়ালাম ভালো করে। আস্তে আস্তে হিল হচ্ছে পিঠের হাড়। ব্যথা হচ্ছে অনেক। হাড় ভাঙার অনেক ব্যথা সেটা আমি আগের দুনিয়াতে অনেকবার অনুভব করেছি। আমি বুঝতে পারলাম ইগড্রাসিলের পুরো ক্ষমতা দিয়েও আমি লুককে হারাতে পারবো না। কারন ইগড্রাসিলের ক্ষমতা এভাবে অনেক কম ব্যবহার করতে পারবো আমি। আমাকে মূলত ভিরুদার ব্যবহার করতে হবে। তলোয়ার আমার হাতে থাকলেই আমি ইগড্রাসিলের পুরো ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবো। তাছাড়া সেটা ছাড়া ওর ক্ষমতার মাত্র দশ শতাংশ ক্ষমতাই আমি ব্যবহার করতে পারবো, সেটাও সম্ভব হতো না যদি আমার কাছে আগুনের এট্রিবিউট না থাকতো। এখন পানির এট্রিবিউট থাকলে আমি ভ্যালিরার ক্ষমতাও ব্যবহার করতে পারতাম। কিন্তু আপাতোতো ওর তলোয়ার ছাড়া আমি ওর ক্ষমতা ব্যবহারই করতে পারবো না কারন এট্রিবিউট নেই আমার পানির।
।।।
।।।
আমি একটা জিনিস ভাবছি অনেকক্ষন যাবৎ। আমার পিঠের হাতগুলে, যেটাকে গডহ্যান্ড নামে উল্লেখিত করলো এন্জেলরা, সেটা সব ধরনের ম্যাজিকাল এট্যাককে আটকিয়ে সেটাকে দ্বিগুন করে তাদের দিকে পাঠিয়ে দেই। আমি এটা এখানে ব্যবহার করতে পারতাম, কিন্তু সেটা কোনো কাজে দিবে না। কারন লুক কোনো ম্যাজিকের সাহায্য নিচ্ছে না। ওর আল্ট্রা স্পিড যেটা অনেক ট্রেনিং এর ফলে শিখে সবাই। এবং ওর ঘুষিগুলো সবই ওর শারিরীক ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। তাই আমি গডহ্যান্ড আমার সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করতে পারবো না। তবে আরেকটা জিনিসে আমি ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু আমি সেটা এখনো সিওর না। তাই প্রথমে আমাকে সেটা বের করতে হবে খুজে।
।।।
।।।
আমি ভাবতে লাগলাম কি করবো। আর লুক অপেক্ষা না করেই সোজা আমার দিকে আক্রমন করতে আসলো। এক ঘুষি মারলো ওর বাম হাত দিয়ে, যেটা আমি পিঠ থেকে দুটো হাত বের করে ধরে ফেললাম। হাত গুলো বের হলে নিজের কাছে মনে হয় আমার হাত গুলো বেরে গেছে। অবশ্য আপাতোতো আমি দুইশ হাতের মতো বের করতে পারবো, তবে নিয়ন্ত্রন আমি মাত্র ত্রিশটাই করতে পারবো। আর বাকিগুলো নিয়ন্ত্রন করা হাতগুলোকেই ফলো করে। আমি দুটো হাত বের করে ধরে ফেললাম লুকের হাত। তবে লুকের বাম হাত ধরলেও ডান হাত দিয়ে যে সাথে সাথে আমার মুখে ঘুষি দিবে সেটা বুঝতে পারি নি। ডান হাতের একটা ঘুষি খেয়ে সোজা আমি আবার ভাঙা দেওয়াল ভেঙে আরো অনেকটা ভিতরে চলে গেলাম। এবার নরার শক্তি পাচ্ছি না। আর লুক আমার কলারটা ধরলো। এবং ভাঙা দেওয়াল থেকে টেনে বের করলো। এবং এবার তার মাথা দিয়ে আমার মাথায় জোরে গুতা দিলো। আর এরফলে আমি আবার প্রচন্ড স্পিডে এরিনার মাঝখানে চলে আসলাম। মাথা দিয়ে এবার রক্ত বের হচ্ছে। পিঠের ভাঙা হাড় ঠিকমতো হিল হয় নি আর এখন ফ্লোরে জোরে পরার ফলে আমার বাম হাত ভেঙে গেছে, মাথাতেও অনেক গুরুতর ইনজুরি হয়েছে। যার ফলে রক্ত বের হচ্ছে শুধু। আমার হিলিং পাওয়ার বুঝতে পারছে না কোথায় প্রথমে হিল করবে। আমার হিলিং পাওয়ার তেমন শক্তিশালী না হওয়ার কারনে সহজে হিল হচ্ছে না। আমি নরার মতো শক্তি পাচ্ছি না। অনেকটা ইনজুরি হয়েছে আমার শরীরে। তারপরও আমি উঠে দাড়ালাম কোনো মতে। হঠাৎ লুক বলতে লাগলো এবং আমার দিকে আগাতে লাগলো,
.
–ইতিহাসে গডহ্যান্ড সম্পর্কে যা শুনেছি তাহলে সব এরকম হবে সেটা আশা করি নি। এটা হয়তো একটা সাধারন মানুষের কাছে রয়েছে বলে শক্তিহীন। আমি তো আপনার উপরে এখনো কোনো ম্যাজিকই ব্যবহার করি নি, আর তাতেই আপনার এ হাল। ম্যাজিক ব্যবহার করলে কি হবে সেটাই বুঝতে পারছি নি।(লুক)
।।।
।।।
লুক আর লড়াই টা চালালো না। কারন আমাকে অনেক ছোট নজরে দেখছে এখন। জানে আমি একজন মানুষ। তারজন্য আর লড়াই চালিয়ে রাখলো না। যে হাল যাচ্ছিলো তাতে বলায় যায় আমি কিছু করতে পারবো না সামনে। হ্যারি এগিয়ে আসলো আমার কাছে। আমার ডান হাত ওর কাধের উপরে নিয়ে আমাকে হাটতে সাহায্য করছে। লজ্জাজনক হার এটা ঠিকই, কিন্তু অনেক কিছু শিখতে পেরেছি আমি এটার থেকে। আমি জানি লুক তার পুরো ক্ষমতায় লড়ে নি। আর আমিও আমার পুরো ক্ষমতায় লড়ি নি। আমি শুধু আমার ফায়ার এট্রিবিউট এর স্পেল ব্যবহার করেছি। আমি এখানে কোনো এন্জেল, ভ্যাম্পায়ার কিংবা ডিম্যানের ক্ষমতা কাউকে দেখাতে চাই নি। কারন সেটা দেখালে আমাকে অন্য কিছু ভাববে। আমি চাই না এরকম কিছু হোক। তাই আপাতোতো যা হচ্ছে সেটাতেই খুশি থাকতে হবে। তাছাড়া আমার শারিরীক ক্ষমতার থেকে লুকের ক্ষমতা অনেক বেশী। আমি চাইছিলাম নিজের শারিরীক শক্তি দিয়ে লড়তে। কিন্তু সেটা মোটেও সুবিধার হলো না আমার জন্য। আমি হাটতে হাটতে এরিনার বাইরে চলে আসলাম। আর সেখানে প্রিন্সেস এলিনা এবং রানী আফরিয়েল দাড়িয়ে আছে। এলিনা আমাকে টেনে হিল করতে যাবে তার আগেই রানী আফরিয়েল আমাকে জড়িয়ে ধরলো। তার ডানা দিয়ে আমার শরীর ঘিরে ধরলো। তাতে তার ডানার মধ্যে একটা হিলিং পাওয়ার তৈরী হলো। যেটা আমার সকল ক্ষত ঠিক করে দিলো। আমি অবাক হয়ে গেলাম এতো তারাতারি হিল হয়ে। যদিও এন্জেল এবং ডেভিল কিং দের হিলিং ক্ষমতা বেশী। তারপরও গোত্র হিসাবে ভ্যাম্পায়ারদের হিলিং ক্ষমতা বেশী হয়ে থাকে। যদিও আমি এতো তারাতারি হিল হয়ে অবাক হলাম, এদিকে প্রিন্সেস এলিনা আমার দিকে তাকিয়ে রেগে আছে। তার মুখ পুরো লাল হয়ে গেছে। আমি রানীর সাথে কথা বলতে লাগলাম।
.
–রানী আফরিয়েল। আমাদের এ্যারসাকে এনেছেন কেনো? এখন বলবেন? এখানে আমরা কি করবো?(আমি)
.
–তোমাদের সবার জীবনের ঝুকি ছিলো। ডেভিল কিং যেহেতু তোমাদের দেখেছিলো সেদিন। তাই আমি নিশ্চিত সে তোমাদের হত্যা করতে আসবে। এবং গডহ্যান্ডকে নিজের করতে চাইবে।(রানী)
.
–একজনের ক্ষমতা আরেকজন কিভাবে ব্যবহার করবে?(আমি)
.
–সেটা আমি জানি না। তবে আমাদের সবার থেকে ডেভিল কিং এর জ্ঞান সবচেয়ে বেশী। সে কয়েক হাজার বছর যাবৎ জীবিত আছে। কিভাবে সেটা কেউ জানে না। কিন্তু আমাদের ধারনা তার অমর হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তাই হাজার হাজার বছরের জ্ঞান রয়েছে তার কাছে।(রানী)
.
–তাহলে সে অমর। এবং এখন সে আমার পিঠের হাত নেওয়ার চেষ্টা করবে।(আমি)
.
–আপাতোতো এইটাই ধারনা করা যায়। কারন সেদিন ডেভিল কিং তোমার গডহ্যান্ড দেখেই পালিয়ে যায়।(রানী)
.
–আচ্ছা আমাদের সিকিউরিটির ব্যাপারটা তো আমাদের নিজের। এর আগে কোথাও আমি শুনি নি এ্যারসাক থেকে কোনো এন্জেল এসে আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিচ্ছে।(প্রিন্সেস এলিনা)
.
–আমরা চাই না গডহ্যান্ডের মতো শক্তিশালী অস্ত্র ডেভিল কিং এর হাতে পরে যাক। তাই আমরা জ্যাককে এখানে এনেছি।(রানী)
.
–বুঝলাম। জ্যাক এবং আমাকে এখানে এনেছেন, আমাদের নিরাপত্তার জন্য। তবে লুসি এবং লুসানার কথাও বাদ দিলাম। তবে এখানে আপনি হ্যারিকে এনেছেন, যে নিজে একজন ডেভিল।(এলিনা)
.
–আরসাকের ডেভিল বাদে আমাদের কোনো ডেভিল নিয়ে সমস্যা নাই। আমাদের শত্রু আরসাকের ডেভিলরা, যারা ডেভিল কিং এর অনুগত্য। আর তাছাড়া হ্যারি জ্যাকের বন্ধু তাই তাকে এখানে আনা ভুল কিছু হয় নি।(রানী)
।।।
।।।
রানীর উত্তরে প্রিন্সেস আরো রেগে গেলো।
.
–আপনি তো জ্যাককে এখানে নিরাপদ রাখার জন্য আনেন নি। এনেছেন ওর গডহ্যান্ড না কি? ঔটার ব্যবহার নিজে করতে। আপনি চাচ্ছেন গডহ্যান্ডের হাত ডেভিল কিং এর কাছে না গিয়ে আপনাদের কাছেই থাকুক। তাই জ্যাককে এখানে রাখছেন। আর সেটা সিওর করতে আপনি রাজার হুকুম সহ একটা প্রিন্সেসকে এখানে এনেছেন, এবং তার গার্ড স্বরূপ জ্যাককে এখানে আসতে হয়েছে, আর আরো সিওর করতে আপনি জ্যাকের বন্ধুদের এখানে নিয়ে এসেছেন। আরো কিছু সিওর করতে হলে তো আপনি জ্যাকের পরিবারকে ও এখানে নিয়ে আসতেন।(প্রিন্সেস এলিনা)
.
–এরকম কিছুই না। আমি শুধু জ্যাককে এখানে এনেছি তার গডহ্যান্ডকে নিয়ন্ত্রন শিখাতে। যেহেতু গডহ্যান্ড এন্জেলদেরই একটা ক্ষমতা, যেটা আজ পর্যন্ত কোনো এন্জেলই ব্যবহার করতে পারে নি। তাই এন্জেলদের সাথে কিছুদিন থাকলে গডহ্যান্ডের ব্যবহার পুরোপুরি করতে পারবে জ্যাক। এজন্যই তাকে এখানে আনা হয়েছে।(রানী)
।।।
।।।
রানী আর প্রিন্সেস এলিনার মাঝে কিছুটা তর্ক হলো। তবে আমার মোটেও ভালো লাগছে না। এভাবে একটা মেয়ের বুকে থাকাটা মোটেও সুবিধার না। যদিও আমি কিছুদিন আগেই এসব ফিলিংস ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারি নি। কিন্তু আগের রিয়েলিটির স্মৃতি আমার মাঝে থাকায় এখন অনেক লজ্জা লাগছে। তারপরও আমি স্বাভাবিক আছি। একটা সুন্দরী পরীর বাহুর মধ্যে থাকাটা অনেক ভাগ্যের ব্যাপার যেটা আগে পৃথিবীতে সবাই মনে করতো। তবে সেটা কাল্পনিক ভাবনা ছিলো। তবে আমার ক্ষেত্রে সেটা সত্য হলো। আমি কিছুক্ষন চুপ রইলাম এখন বল্লাম।
.
–আমাকে এ্যালকোর্টে যেতে হবে। জরুরী একটা কাজে। এ্যালকোর্ট থেকে ফিরে আপনি যেটা চাইবেন সেটাই করবো। এখানে যতদিন রাখার রাখবেন। তবে আমাকে এ্যালকোর্টে যেতে হবে।(আমি)
.
–যা চাইবো?(রানী)
.
–হ্যা। তবে আমি কালকেই এ্যালকোর্টে যেতে চাই। আমার সাথে আমার তিন বন্ধুরা যাবে। প্রিন্সেস এলিনাকে এখানেই রেখে দিয়েন।(আমি)
.
–কখনো না। আমিও তোমার সাথে যাবো আমি এন্জেলদের সাথে একা থাকতে চাই না। এরা ডেভিলদের থেকেও ভয়ঙ্কর।(এলিনা)
.
–ঠিক আছে। তাহলে জেনারেল লুক তোমাদের সাথে যাবে আর হ্যা জরুরী কাজ শেষ লরে এখানেই থাকতে হবে বেশ কিছুদিন তোমাদের।(রানী)
.
–হ্যা নিশ্চয়।(আমি)
।।।
।।।
আমি আপাতোতো আমার এক্সোনিয়া ঠিক করতে চাই। কারন এক্সোনিয়ার একটা ক্ষমতা হলো সেটা ডাইমেনশন স্লাইস করতে পারে। মানে এক ডাইমেনশন থেকে অন্যটায় কাট দিতে পারে। আমাদের রিয়েলিটি চেন্জ হলেও, আশা করবো ডাইমেনশন আগের মতোই আছে। এখন আমার লিম্বো ডাইমেনশনে যাওয়ার অনেক ইচ্ছা। আর সেটা এক্সোনিয়া দিয়েই সম্ভব। লিম্বো ছাড়াও আরো বেশ কিছু ডাইমেনশন রয়েছে। সেগুলোতেও এক্সোনিয়ে দিয়ে কাট দেওয়া যায় তবে আগের দুনিয়াতে কিছু স্থান ছিলো লিম্বো বাদে আলাদা ডাইমেনশনে যাওয়ার জন্য। আপাতোতো আমি লিম্বো ডাইমেনশনে গিয়ে ট্রেনিং করতে চাই। আর সেটার জন্য আমাকে ব্লাক স্মিথকে খুজতে হবে। অনেক ডয়ারফস আছে এই দুনিয়ায়, তবে ব্লাক স্মিথ ছাড়া কোনো পুরাতন তলোয়ারকে নতুন কেউ করতে পারে না। জেনারেল লুকের মতো শক্তিশালী কেউ সাথে থাকলে এ্যালকোর্টে কোনো সমস্যা হবে বলে আমার মনে হয় না। যদিও আমার রাগ রয়েছে তার প্রতি কিছুটা। মানুষ হওয়ায় অপমান করেছে শেষের দিকে। এক্সোনিয়া একবার ঠিক হোক, তারপর দেখাবো লুককে।
।।।।।
।।।।
।।।
।।
।
(((চলবে)))
।
।।
।।।
।।।।
।।।।।