#মন_আকাশে_তুই
#পর্ব_০৪
লেখনীতেঃ অলকানন্দা ঐন্দ্রি
“ ইয়েস, তুই আমায় রিজেক্ট করতে পারবিই না অহি। হয় আমি, নয় সে আমিই। তোর জন্য কেবল আমিই অপশন। নাও চ্যুজ ইউর আন্সার। ”
অহি ফ্যালফ্যাল করেই তাকিয়ে থাকে সাদিদের দিকে। বিয়েতে না বলার বিষয়টা তাকে হৃদি শিখিয়ে দিয়েছিল। এই যে এতদিন অহি কষ্ট পেল,এতবছর অপেক্ষা করল, এই এক সপ্তাহ মরার মতো পড়ে থাকল এই জন্যই কথাটা বলা।শুধু যে এইজন্যই বলা তা নয়, যেখানে তার আম্মু মাত্রই বলল তারা না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানে অহি হ্যাঁ বলত কি করে? মাথার ভেতর যে এত প্রশ্ন এসবের উত্তর না জেনেও বা হ্যাঁ বলত কি করে?অহি এমনটা বুঝায়নি সে সাদিদকে বিয়ে করবেই না। সাদিদ যেভাবে বুঝাল সে তাকে রিজেক্ট করেছে তেমনও নয়। তবে অহি দিনশেষে সাদিদকেই উত্তর হিসেবে নিয়েছে সে কতকাল আগে। সাদিদই তার জন্য একমাত্র অপশন এটা সে নিজেও জানে। ছোটশ্বাস ফেলে অহি। একটু আগের হাতের রিং দেখিয়ে মিথ্যেভাবে এংগেইজড বলাটাও হৃদির বজ্জাতপূর্ণ কাজ ছাড়া কিচ্ছু নয়। অথচ এর রাগ তো সইতে হবে অহিকে।অহি ছোটশ্বাস ফেলে আবারও তাকাতেই সাদিদ ভ্রু নাচিয়ে বলে উঠল,
“ কি তোর আন্সার?আবার জিজ্ঞেস করছি অহি। ”
অহি নিরব থাকে। উত্তর না দিয়ে নিরব দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। সাদিদ এবারে তার হাত ছেড়ে শুধাল,
“ ওকে যেহেতু চুপই আছিস আমি আন্সারটা নাই ধরলাম। তিন তিনবার না উত্তর পাওয়া মানে উত্তরটা এমনই যে তুই আমার হতে চাস না। রাইট? কিন্তু পাশাপাশি এটাও শুনে রাখ যে তুই আমারই হবি অহি। ”
অহি এবার শান্তস্বরে বলল,
“ তিন তিনবার না বলা হয়েছে আব্বু আম্মুর তরফ থেকে। কিন্তু আমি আপনাকে না বলতে চাইনি। ”
সাদিদ ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল,
“ তো কি বলতে চেয়েছিলি? ”
অহি এবারেও ঠোঁট চেপে তাকিয়ে থাকে। কিয়ৎক্ষন পর উশখুশ করে জানতে চাইল,
“ ঐদিন কি হৈমির সাথে আপনার বিয়ে হয়েছিল? ”
সাদিদ ত্যাড়া কন্ঠে শুধাল,
“ আমার কেন বিয়ে হবে? যেখানে আম্মুর কথামতো নিনীকে পর্যন্ত বিয়ে করলাম না। যদিও এবার উত্তর না হলে আমি নিনীকেই বিয়ে করব বলে এসেছিলাম। ”
অহি বুঝল সাদিদের সাথে হৈমির বিয়ে হয়নি। অথচ তার স্পষ্ট মনে আছে সে প্রথম দেখায় সবার মাঝে সাদিদকেই দেখেছিল যেন। মুখ টানটান, রাগ রাগ এমনই ছিল! ছোটস্বর প্রশ্ন ছুড়ল,
“ নিনী কে? ”
” তোদের থেকে বারবার রিজেক্ট হয়ে আমার আব্বু আম্মুর মুখ নিশ্চয় উজ্জ্বল হচ্ছে না? তাদের ছেলে কি ফেলনা যে তোর পিছনে পড়ে থাকবে? অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবে না? সে অন্য কেউ হলো নিনী। ”
অহির এবার অনিশ্চিত ভয় হয় আবারও। হৃদি আপুর ভাষ্যমতে বিয়েতে না করলে তার পেঁছনে এই লোক পাগলের মতো পড়ে থাকবে। রাজি করাবে। অথচ হচ্ছে উল্টো! এই ছেলেতো অন্য কাউকেই বিয়ে করে নিচ্ছে। বলল,
“ পারবেন। তারমানে আপনার বিয়ে প্রায় ঠিকঠাক? হয় আমি নয় ঐ নিনী এমন? ”
সাদিদ তাকাল স্পষ্ট চাহনিতে। দৃঢ় স্বরে জানাল,
“ হয় তুই নাহয়ও তুইই! আমার তোকেই লাগবে। এবার তোর উত্তরটা হ্যাঁ হওয়ার অপেক্ষায়। ”
অহি খুশি হলো যেন মনে মনে। ভেবে নিল তার উত্তরটাও বলে দেওয়া উচিত। উত্তর না বললেও তার অনুভূতির কথা বলা উচিত। বলে উঠল,
“ সাদ ভাইয়া,
সাদিদ তাকাল। অহি এবারে শুকনো ঢোক গিলে। অনেকটা সময় নিয়ে কাঁপা স্বরে বলল,
“ আমার আন্সারটা নিলেন না তো৷”
“ তুই তো বলে দিলিই না। তবে আমি জানি, হ্যাঁ হতে বেশিক্ষন সময় লাগবে না। ”
এটুকু বলে সে ধুপধাপ হেঁটে বেরিয়ে গেল ছাদ থেকে। অহি কেমন করে যেন বোকার মতো তাকিয়ে রইল।
সাদিদ এসে গম্ভীর মুখেই বাবার পাশে বসল। আবিদ নেই। সাদিদের বাবা ছেলেকে পর্যবেক্ষন করে জিজ্ঞেস করলেন,
“ কি বললে তুমি অহিকে? ”
সাদিদ উত্তর দেয় না। ভ্রু কুুঁচকে বলে,
“ কি বলব? ”
“ তাহলে ওভাবে ডেকে নিয়ে গেলে কেন?”
সাদিদ উত্তর করে না। তার ভালো লাগছে না। একটা মেয়ের পেছনে সে এভাবে পড়ে আছে,ঝামেলা করছে মা বাবার সাথে অথচ সেই মেয়ের তরফ থেকে কন্টিনিউসলি নাই উত্তর আসছে।সাদিদের বাবা এবারে ছেলের ভাবগতি বুঝে বলল,
“ও কি কিছু জানিয়েছে এই বিষয়ে?”
সাদিদ কাটকাট স্বরে জানাল,
“ জানিয়েছে, বলেছে বিয়েটা সে করছে না৷ ”
“ জানতাম, তুমি বললে এমনটাই আন্সার হবে আমার জানা ছিল। নিশ্চয় সুন্দরভাবে বলোনি? রেগে ধমক টেনে বলেছো। তোমার আম্মুর কাছে আমার মুখটা আর রইল না। ”
সাদিদ ছোটবেলাকার মতোই জেদ করল। বলল,
“ কিন্তু আমি ওকেই বিয়ে করব আব্বু। ”
সাদিদের বাবা ছোটশ্বাস ফেলে বলল,
“ তুমি বিয়ে করবে বললেই তো হলো না। ওরা মেয়ে না দিলে বিয়েটা হবে না। আমার মনে হয় বিয়েটা আসলেই হবে না। তিন তিনবার প্রস্তাব নাকোচ নিশ্চয় এমনিই করেনি ওরা। তোমাকে নিনীকেই বিয়ে করতে হবে। ”
বিপরীতে সাদিদ কিছুই বলার আগেই সেখানে এল ছুটির বাবাও। বেশ হেসেই শুধালেন,
“ কি নিয়ে কথা হচ্ছিল তোদের? ”
সাদিদের বাবাও মুখ নিরাশ করে বলে উঠল,
“ এই যে তুই তিন তিনবারই আমাদের না না বলে কান ঝালাপালা করে দিলি। অহিকে বোধহয় আমি আমার ছেলের জন্য পাব না এটাই। ”
“ যে কোনকিছু পেতে হলে ধৈর্য্য ধরতে হয়রে সাদাফ। তোর ছেলের ধৈর্য্য নেই বরাবরই। ”
“ আমার ধৈর্য্যহীন ছেলে এতদিন যে ধৈর্য্য ধরেছে এটাই আমার জন্য অনেক। যায় হোক, আমরা এবারও উত্তরটা নাই ধরলাম। কিন্তু কথা হচ্ছে দুই দুইবার না শোনার পর নিধি চায়নি আবারও অহির জন্য প্রস্তাব আনা হোক। বাসায় মোটামুটি রকমের একটা শর্ত দিয়ে চলে এসেছি। বলেছি এবারও যদি তোরা না করিস তবে সাদিদের বিয়েটা আমার বড় ভাইয়ের মেয়ে নিনীর সাথে দিয়ে দিব। সে হিসেবে বিয়েটা হলে তোদের ইনভাইট করব। আগের বার তো আবিদের আকদটা হুট করেই হওয়াতে বলা হয়নি তেমন কাউকে। ওর বিয়েতেও বলব। ”
এবারে অহির বাবার ভ্রু বাঁকা হলো। সে জানত এই ছেলে তার মেয়েকে ভালোবাসে, তার মেয়েকেই জীবনে বিয়ে করবে এমনটাই ধারণা ছিল তার। আর এই কারণেই ছেলেটাকে মুখে না বললেও মনে মনে সে মেয়ের জন্য পছন্দ করেছিল। অথচ এখন এই কথা শুনে তার কপাল কুঁচকাল। বলল,
“ অহি অপশনাল ছিল? মানে রাজি হলে অহিকে বিয়ে করত, আর না হলে নিনীকে বিয়ে করবে? ”
সাদিদ তাকায় এবারে। স্পষ্ট স্বরে বলল,
“ আপনার মেয়েকেই চেয়েছিলাম, দিচ্ছেন না তো।আপনার মেয়েও বোধহয় অন্য কাউকে পছন্দ করে আঙ্কেল। ”
“ অন্য কাউকে? কাকে? ”
সাদিদ এবারও সোজাসুজি উত্তর দিল,
” জিজ্ঞেস করুন গিয়ে। ”
.
অহি নিজের রুম থেকেই শেষের কথোপকোতনটা শুনতে পেয়েছে। নিনী নামক মেয়েটাকে বিয়ে করবে সাদ ভাইয়া? সে না বলেছে বলেই? সে অন্য কাউকে পছন্দ করে ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে? অহি হাঁসফাঁস করে পায়চারি করে। কেন যে না বলল,কেনই হৃদি আপু রিং দেখিয়ে এংগেইজড এটা বলতে গেল। অনেকটা সময় পায়চারি করার পর সে হৃদির কাছে গিয়েই বলল,
“ তুমি তখন ওভাবে রিংটা দেখিয়ে বললে কেন আমি এংগেইজড হৃদি আপু? সাদ ভাইয়া বোধহয় মত ফিরিয়ে নিয়েছেন। আর কখনো বিয়ের প্রস্তাব ও দিবেন না। ”
হৃদি পাত্তা দিল না অহির চিন্তারত স্বরকে। বলল,
“ তো? তুই কি উনাকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে আছিস? এত গুরুত্ব দিলে তোকে দেখবি গুরুত্ব দিবে না। ভাববে তুই তার জন্য পাগল। অনুভূতি লুকাতে শিখ অহি বুড়ি। ”
অহি ফের চিন্তারত মুখ নিয়ে বলল,
“ উনি অন্য কাউকে বিয়ে করে নিচ্ছেন। ওটা ভালো হবে? আমি সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাব না? ”
হৃদি ভ্রু নাচিয়ে বলল,
“ সুযোগ চলে গেছে? ”
“ চলে গেছে, আব্বুর সাথে কথা বলছিল উনারা। আমি শুনেছি, উনি কোন এক নিনীকে বিয়ে করে নিবে হৃদি আপু। ”
“ কোন এক নিনীকে বিয়ে করার হলে তোকে প্রস্তাব দিয়েছে কেন? তাকেই বিয়ে করত। ”
অহি ফ্যালফ্যাল করেই তাকায়। বলে,
“ কারণ আমি না বলে দিয়েছি তোমার শেখানো বুলি বলে। আব্বু আম্মুও না বলেছে। তো? তিন তিন বার প্রস্তাব দিয়ে না শুনে শুনে উনাদের এমন করাটা স্বাভাবিক। আত্মসম্মানবোধ আছে না? ”
হৃদি তৎক্ষনাৎ বলল,
“ভালোবাসলে আত্মসম্মানবোধ মাথায় থাকে না।দেখিস না আমার কোন আত্মসম্মানবোধ নেই। ”
“ বিষয়টা উনার পরিবারেরও হৃদি আপু। একটা পরিবারেরও তো বারবার না শুনতে ভালো লাগে না। ”
হৃদি তাকায়। ভ্রু উঠিয়ে বলে,
“ তাহলে কি করবি? ছাগলের মতো ম্যাঁ ম্যাঁ করে হ্যাঁ বলে আসবি এখন? ”
অহি কতক্ষন চুপ থাকল। তারপর কি বুঝে, কি ভেবে বলল,
” হ্যাঁ। ”
হৃদি বিস্ময় নিয়ে তাকাল। বলল,
“ সত্যিই? ”
অহি মিনমিন করে বলল,
” একবার কষ্ট পেয়েছি হৃদি আপু, দ্বিতীয়বার একই কষ্ট সামলাতে পারব না হৃদি আপু। উনি অন্য কাউকে বিয়ে করবেন এটা আবারও মানতে পারব না আমি। কষ্ট হবে। ”
হৃদি বিজ্ঞের মতো করে বলল এবারে,
“ ঠিকাছে, শুধু হ্যাঁই বলবি তাহলে। কিন্তু ঐ ব্যাটার হাত ধরে এক্ষুনিই নাচতে নাচতে বিয়েটা করে ফেলিস না। ”
হৃদি আর অহির আরো কিছুটা সময় কথা হলো। ওদিকে অহির বাবার সাথেও সাদিদ আর ওর বাবার কথা হলো অনেকটা সময়। তারপর কি বুঝেই তার বাবা তার কাছে এল। দরজায় দাঁড়িয়েই বলল,
“আম্মু? তোমার সাথে কথা ছিল আমার। ”
অহি মুহুর্তেই তাকায় বাবার দিকে। হৃদিও তাকায়। অহি উত্তর করে,
“হু? বলো আব্বু। ”
হৃদি পরিস্থিতি বুঝে বলল,
“আমি যাই আঙ্কেল। আপনারা কথা বলুন।”
এটুকু বলেই হৃদি চলে গেল। অহির বাবা এবারে ভেতরে। এল। মেয়ের দিকে চেয়ে ছোটশ্বাস ফেলে বলল,
“সাদিদ, যতদূর আমি জানি ও তোমায় পাগলের মতো চায়। আমি চেয়েছিলাম এই ছেলেটাকেই তোমার জন্য পছন্দ করতে, কিন্তু…”
“ কিন্তু? ”
তার বাবা এবারে তার দ্বিধান্বিত চাহনিতে তাকাল। কিছুক্ষন পর প্রশ্ন ছুড়ল,
“ তুমি কি অন্য কাউকে পছন্দ করো? ”
অহি চুপই থাকে। উত্তর করে না। তার বাবা আবারও বলল,
“ অন্য কাউকে পছন্দ করলে আমায় বলতে পারো। সমস্যা হবে না আম্মু।
অহি এবারে মাথা নাড়িয়ে বলল,
“ না।”
“ সাদিদ বলল তুমি নাকি বলেছো তোমার অন্য কাউকে পছন্দ? ”
অহি মিনমিন করে বলল,
“ আমি বলিনি, হৃদি আপু বলেছে আব্বু। ”
“ আমার মনে হতো তুমি ওকে পছন্দ করতে, সে অনুযায়ী সাদিদ অন্য কাউকে বিয়ে করলে তুমি কষ্ট পাবে না? ”
অহি এবারেও নিরব থাকে। তারপর কিছুটা সময় নিয়ে মাথা নেড়ে বলল,
“ পাব আব্বু। ”
তার বাবা হাসে এবারে। মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“ ওদেরকে বারবার না বলতে খারাপ লাগছে। আগের দুইবার তোমায় জানায়নি, তবে এবার জানিয়েছি কারণ এবার আমি হ্যাঁ বলতেই চাইছিলাম বোধহয়। কিন্তু ওরা বলছিল বিয়ের পরপরই সংসার, তুমি এত অল্প সময়ে তা পারবে না বলেই না সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন আবার মনে হচ্ছে হ্যাঁ বলা উচিত। তুমি কি হ্যাঁ বলাতে খুশি হবে নাকি না বলাতে? ”
অহি কিয়ৎক্ষন নিরব থেকে জানাল,
“ হ্যাঁ বললে সমস্যা নেই আব্বু। ”
“ ঠিক আছে। ”
অহি আবারও বলল,
“ সাদ ভাইয়ার সাথে কিছু কথা বলব আব্বু। বলতে পারব? ”
“ কেন পারবে না? যাও। ”
অহি উত্তর শুনে মাথা নাড়ে। পা বাড়িয়ে বাইরে গেল বাবার সঙ্গে। তারপর বাবাই বলল কিছুটা কথা বলে নিতে। সাদিদ প্রথমে ভ্রু কুুচকে নিল কথা বলতে বলাতে। পরমুহুর্তে বরাবরের মতো গম্ভীর মুখ করে এগোল অহির সাথেই। অহি ছোটশ্বাস ফেলে শুকনো ঢোক গিলল। আগ বাড়িয়েই বলল,
“ আমার উত্তরটা শোনা বাকি থাকল তো সাদ ভাইয়া। জিজ্ঞেস করুন। ”
সাদিদ ভ্রু বাঁকিয়ে বলল,
“ কয়েক মিনিটে তোর উত্তর নিশ্চয় না থেকে হ্যাঁ হয়ে যাবে না অহি? তবে হ্যাঁ হতেও বেশি সময় লাগবে না আমি শিওর। ”
অহি প্রথমেই জিজ্ঞেস করল এবারে,
“ আপনি অন্য কাউকে বিয়ে করছো সাদ ভাইয়া? ”
“কেন? তুই এংগেইজড হলে,আমিও ম্যারিড হতে পারি। সমস্যা কি? ”
“ আমি এংগেইজড না হলে কি আপনি ঐ নিনী নামের মেয়েটিকে বিয়ে করবেন না? ”
সাদিদ বাম ভ্রু উঠিয়ে বলল,
“ করলে সমস্যা হবে তোর? ”
অহি নিরব। অনেকটা সময় পর উশখুঁশ করে জানাল,
“আমি এংগেইজড না, হৃদি আপু মিথ্যে বলেছে আপনাকে।”
সাদিদের হুট করে কেমন যেন হাসি এল মনে মনে। তবুও ভ্রু নাচিয়ে অহির দিকে চেয়ে থেকে বলল,
“ তাই নাকি? ”
অহি তাকায়। অনেকটা সময় চুট করে তাকিয়ে থেকে বলল,
“ তুমি বললে না আমার অপশন কেবল তুমিই। হয় তোমাকে চ্যুজ করব, নাহয় তোমাকেই চ্যুজ করব। আমি আসলে বহুবছর হলো তোমাকেই চ্যুজ করে বসে আছি। এরপর থেকে আর কাউকে চ্যুজ করতে পারিনি। ”
উত্তরটা সাদিদের মন ফুরফুরে করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তার খুশি খুশি লাগছে। মন ফুরফুরে লাগছে। আহ! সুন্দর একটা অনুভূতি বুকে চেপে সে গম্ভীর স্বরে বলল,
“তাহলে তাসিন কে? ওর কেন এতোটা অধিকারবোধ তোর উপর? ”
“ তাসিন..”
“ হু, কে? ”
অহি উত্তর করল নরম গলায়,
“ ফ্রেন্ড! ”
ফের ভ্রু বাঁকাল সাদিদ। বলল,
“ তোর ভাই কেন দুলাভাই ডাকল ওকে? ”
“ জানি না, অহন প্রায়সই ডাকে। ”
“ ভালো। ”
অহি আবারও চুপ থাকল। কথা খুঁজে পায় না যেন। তারপর অনেক সময় পর সে সাদিদের দিকে চেয়ে বলল,
“ উত্তরটা হ্যাঁ হলেও বিয়েটা এখনই না হলে ভালো নয় সাদ ভাইয়া?”
সাদিদ ভ্রু কুুচকে বলল,
” কেন?”
অহি মিনমিন করে বলল,
“ আমি সংসারের কিচ্ছু জানি না সাদ ভাইয়া৷ তবে তোমার সাথে সংসার করার আমার অনেক শখ। তুমি নিশ্চয় সংসারের কিচ্ছু জানি না বলে নাকের ডগায় রাগ ফুঁসবে?”
সাদ শান্ত দৃষ্টিতেই তাকাল।গম্ভীর আওয়াজে উত্তর করল,
“ না, আমাকে বুঝলেই চলবে। ”
অহির বোকার মতো আবারও বলল,
“ যদি বুঝে উঠতে না পারি তোমাকে? আমি তো বোকা। ”
“ তাহলে বোকা থেকে চালাক হতে হবে। বিয়ের পর স্বামীর মন বুঝা তোর প্রধাণ কাজ। ”
“না বুঝলে তুমি সবসময়ের মতো ফোঁসফোঁস করে রাগ তুলবে? সে ছোটবেলার মতোই রাগ করবে? ”
সাদিদ উত্তর করল,
“কথার আধ্য হলে করব। ”
#চলবে….