মন একে একে দুই পর্ব-১২+১৩

0
9

#মন_একে_একে_দুই
#পর্বঃ১২(চিঠি কিংবা চিরকুট)
#লেখনীতেঃ-#ফেরদৌসী_নবনী

– ‘তুই রাঁধবি! মুখে দেওয়া যাবে!’

প্রাহী একপলক সোফায় বসে থাকা নক্ষত্রের দিক তাকিয়ে রান্নাঘরে গেলো। পুরির জন্য ময়দার ডোভটা কিছুক্ষণ আগে বানিয়ে ঢেকে রেখেছিল। এখন শুধু ডালটা একটু রাঁধতে হবে। পরিমাণমতো ডাল নিয়ে ধুঁয়ে চুলায় বসিয়ে সিদ্ধ করে পানিগুলোকে শুকিয়ে তার মধ্যে জিরের গুড়ো, মরিচ, ধনেপাতা যাবতীয় মশলা দিয়ে বেশ ঝরঝরে করে ডালটা বানিয়ে নিলো। রুম থেকে বের হয়ে কিছুক্ষণ ফ্যান এর নিচে বসলো প্রাহী৷ একটু কাজ করে ঘেমে ন্যায়ে একাকার হবার যোগাড়! মানুষ এই গরমে কিভাবে কাজ করে খেঁটে খায় এটা মাঝেমধ্যে ওর মাথায় ঢোকে না! নক্ষত্রের দিক এক পলক তাকিয়ে কিছু একটা মনে করতেই ওর দিক এগিয়ে গেলো প্রাহী।

– ‘চা পাতা নেই। একটু নিয়ে আয়।’

নক্ষত্র ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে মাথার চুলগুলো হাত দিয়ে গুছিয়ে বললো,
– ‘এখনই লাগবে!’

প্রাহী মাথা নেড়ে বললো,
– ‘হ্যাঁ। কিছুক্ষণ এর মধ্যেই এনে দিলে ভালো হয়! চা বসাবো একটু পরেই!’

– ‘আচ্ছা যাচ্ছি!’
প্রাহী রান্নাঘরের দিকে যেতে যেতে নক্ষত্র সিড়ি দিয়ে উঠার সময় হালকা চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
– ‘এখনই চায়ের দুধটা বসিয়ে দিস না! পনেরো বিশ মিনিট পড়ে বসিয়ে দিস আমি আগে বাইরে থেকে এসে নেই!’

প্রাহী ছোটো ছোটো করে গোল করে রুটি বানিয়ে তার মধ্যে রান্না করা শুকনো ঝরঝরে ডাল নিয়ে আবারও গোল করে বেলছে। সন্ধ্যার নাস্তার মধ্যে এই একটা জিনিস প্রাহী খুব ভালো পারে। সেটা হচ্ছে ‘ডালপুরি’। এছাড়াও অন্যান্য জিনিস বানাতে পারলেও ডালপুরিটা বানাতে বেশ পটু। কারণ ওর নিজেরও ডালপুড়ি খুবই মজা লাগে। গরম তেলে ডালপুরিগুলো ছাড়তেই তেলগুলো হালকা ছিঁটকে উঠছে।

– ‘হাত পা পুড়াস না!’
বলে নক্ষত্র প্রাহীর পাশে এসে দাঁড়ালো।

– ‘কিছু হবে না!’
বলেই প্রাহী ডালপুরিগুলো উঠাতে লাগলো।

নক্ষত্র প্রাহীর দিকে একপলক তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘তোর কপাল,চুল সব ভিজে গেছে। সর আমাকে দে আমি বেলছি!’

প্রাহী রুটি বেলতে বেলতে নক্ষত্রের দিক তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘লাগবে না। তুই এখানে কি করছিস! যা রুমে যা!’

নক্ষত্র জোড় করে প্রাহীর হাতের পাশ থেকে খুন্তি নিতে নিতে বললো,
– ‘আমি পুরিগুলো ভেঁজে দিচ্ছি। তুই শুধু বেলে তেলে ছাড় তাহলেই হবে। কাজ আগাবে এতে!’

প্রাহী আর কিছু না বলে ডালপুরিগুলো বেলে তেলে ছাড়তেই নক্ষত্র সেগুলো ভেজে প্লেটে তুলতে লাগলো। নক্ষত্র এই ফাঁকে অন্য চুলায় চায়ের পাতিলে পরিমাণমতো পানি নিয়ে বসিয়ে দিলো। ডালপুরিগুলো বেলা শেষ হয়ে গেলে প্রাহী চায়ের পানিতে দুধ মিশিয়ে দিলো। দুইভাইবোন এভাবেই সন্ধ্যার নাস্তা বানিয়ে নিলো। প্রাহী যখনই রান্নাঘরে আসবে তখন নক্ষত্র এসে এসে চেক করে যাবে ওর কিছু লাগবে কি না বা একটু হাতে হাতে করে দিবে কি না! সারাদিন বাঁদরামি করলেও বোন চুলার আশেপাশে গেলে বা বিপদ আপদের মধ্যে আছে টের পেলেই নক্ষত্র ওর চারপাশ ঘেষে ঘেষে থাকবেই! একটা মাত্র বোন কি না!

কাজ করার ফাঁকে প্রাহী নক্ষত্রের দিক এক পলক তাকিয়ে দেখলো ছেলেটার টি-শার্ট ভিজে গেছে প্রায়।
– ‘তুই এখন যা কাজ তো শেষই। এখন শুধু চা টা নামাবো।’

নক্ষত্র ডালপুরি ভাজার চুলোটা ওফ করে ওর দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘চা আমি নিচ্ছি তুই পুড়িগুলো নিয়ে যা!’

প্রাহী নক্ষত্রকে ঠেলতে ঠেলতে রান্নাঘর থেকে বের করে বললো,
– ‘কিছুক্ষণ পর এসে পুরিগুলো নিয়ে যাস। বাবা মাকে ডাক এখন! নিচে আসতে বল। গরম গরম খেতে ভালো লাগবে।’
নক্ষত্র প্রাহীর দিক এক পলক তাকিয়ে বাবা-মাকে ডাকতে চললো।

– ‘আম্মা পুরিগুলো বেশ মজা হয়েছে! কার থেকে শিখেছো! মা শিখিয়েছে!’

প্রাহী মুচকি হেসে পুরি চা দিয়ে ভিজিয়ে খেতে খেতে বললো,
– ‘শিমলার কাছ থেকে শিখেছি। ও বেশ ভালো বানায় এই ডালপুড়ি!’

নক্ষত্র ভ্রু উঁচিয়ে বললো,
– ‘তাই নাকি! যাক ভ্যাঁ ভ্যাঁ করা ছাড়া কিছু তো হলেও পারে!’

প্রাহী কোণাচোখে নক্ষত্রের দিক তাকিয়ে চায়ে চুমুক দিতে থাকলো। প্রাহীর মা চায়ের কাপ নিয়ে চেয়ার থেকে উঠতে উঠতে প্রাহীর দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘ডালপুরিগুলো মজা হয়েছে প্রাহী। শোন রাতে আমি কিছু খাবোনা তোদের বাবা আর দু’ভাইবোনের জন্য খাবার টেবিলে রাখব গরম করার দরকার হলে গরম করে খেয়ে নিস!’
বলে থেমে আবার প্রাহীর বাবার দিক তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘আর শোনো তুমি আর তেলের জিনিস খেয়ো না! পরে আবার বুক জ্বালাপোড়া করবে।’

নক্ষত্র উৎফুল্ল হয়ে বাবার প্লেটের থেকে দু’টো ডালপুরি নিতে নিতে বললো,
– ‘হ্যাঁ হ্যাঁ বাবা। তোমার তো তেলের জিনিস খাওয়া নিষেধ এগুলো বরং আমি…’

প্রাহীর মা নক্ষত্রের হাতে দুটো বাড়ি মেরে বললো,
– ‘হাত সরা৷ একটু পর তোর মামাতো ভাইবোন দুটো আসবে। ওদেরকে দিব এগুলো।’
নক্ষত্র ‘হুহ্’ বলে চায়ে চুমুক দিলো।

প্রাহীর মা প্লেটগুলো গুছিয়ে প্রাহীর বাবাকে আবারও বলে উঠলেন,
– ‘একটা গ্যাস্ট্রিক এর টেবলেট খেয়ে নিও মনে করে!’

নক্ষত্র চেয়ার ছেড়ে উঠে প্রাহীকে ফিসফিস করে বলে উঠলো,
– ‘তুইও একটা গ্যাস্ট্রিক এর টেবলেট খেয়ে নিস! এতে আর বায়ু দূষণ হবেনা! তা না হলে ঘরে টিকা যাবেনা তো!’
বলেই নক্ষত্র ফুরুৎ!

প্রাহী দুঃখে কষ্টে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
– ‘ওকে ঢাকায় পাঠাও না কেন তোমরা! কবে যাবে ও! মাঝে ওর যত বদমাইশি সহ্য করতে হয়!’

রাতের ডিনার শেষে আকসাদ নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে হোয়াইট টি-শার্ট আর কালো ট্রাউজার পরে এসে বারান্দায় এসে বসলো। হালকা ঠান্ডা বাতাস গায়ে এসে লাগতেই ও চোখদুটো বন্ধ করে নিলো। আকাশের দিক বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে গভীর কন্ঠে বলে উঠলো,
– ‘ আধারেও আপনি আকাশের ছোট্ট তারার ন্যায় মনের কোণে অল্পক্ষণের জন্য উঁকি দিয়ে যান ! পাকাপোক্ত ভাবে কবে রয়ে যাবেন!’
বারান্দায় কিছুসময় বসে থেকে চুলগুলো ব্যাক ব্রাশ করে আরেকটু হেলে বসতেই কি একটা মনে করে দ্রুত উঠে রুমে চলে গেলো।

সকালে প্রাহী না খেয়েই বের হয়ে গেছে। আজকে কিছু জিনিস প্রিন্ট করতে হবে। বাড়ি থেকে কিছুটা সামনে এগোতেই একটা দোকানে প্রিন্টার আছে। এছাড়া আশেপাশে আর কোথাও কোনো প্রিন্টার নেই। খুব বেশি প্রয়োজন হলে মানুষ এই দোকানের প্রিন্টারেই কাজ সেরে নেয়। আর না হলে অনেকে বাজারের দিক চলে যায়। কারণ ওখানে সব কিছুই এভেইলেভল! বাসার সামনের প্রিন্টার টাতে মানুষ না পারতেই আসে। একটাই সমস্যা! প্রিন্ট করতে অনেক সময় লাগে! একপ্রকার লাইনে দাঁড়িয়ে ওয়েট কর‍তে হয়। এজন্যই প্রাহী আজ আগে আগে বেড়িয়েছে। না হয় পরে আবার ক্লাসের জন্য দেরী হয়ে যাবে!

কাজ শেষে রিকশা নিয়ে ভার্সিটি পৌঁছালো প্রাহী। ভাড়া পরিশোধ করে সামনে এগোতেই ওর ওড়নায় টান খেলো। কাঁধের ওড়নায় হাত চেপে পিছন ফিরে তাকাতেই ও দেখলো একটা পিচ্চি ছেলে ওর ওড়নার কোনা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রাহী একটু এগিয়ে বাচ্চাটার দিক তাকাতেই মনে পড়লো, আরে এটাতো সেদিনের সেই ‘শুভ্র গোলাপ’ দেয়া ছেলেটা! প্রাহী হালকা মাথা নিচু করে পিচ্চি ছেলেটার দিক তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ভালো আছো!’
বাচ্চা ছেলেটা কিছু বললো না শুধু মাথা নাড়ালো। প্রাহী পিচ্চিটার দিক তাকিয়ে রইলো। বড় বড় চোখ, ছোট নাক বেশ আধো আধো চেহারা ছেলেটার। প্রাহী ছেলেটার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে মজার ছলে বলে উঠলো,
– ‘আজও কি কিছু দিতে এসেছ!’
বাচ্চা ছেলেটা দ্রুত মাথা নাড়ালো। প্রাহী হালকা হেসে বললো,
– ‘আচ্ছা! তো কি…।’
বাচ্চা ছেলেটা প্রাহীর হাতে কিছু একটা গুঁজে একটা দৌড় দিলো। প্রাহী বিস্মিত হয়ে কিছুক্ষণ ছেলেটার যাওয়ার দিক তাকিয়ে রইলো। তারপর নিজ হাতে গুঁজে দেওয়া জিনিসটার দিকে তাকালো। একটা শুভ্র কাগজ! খামে মোড়ানো নেই! তারপরও বেশ গুছিয়ে ভাজ করে দেওয়া। প্রাহী কাগজটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো। আশেপাশের ছেলে মেয়েদের শব্দ হালকা কানে যেতেই ওর ধ্যান ভাঙলো। ক্লাস শুরু হতে এখনও প্রায় ত্রিশ মিনিটের মতো বাকি! প্রাহী ভার্সিটির একটু সামনে একটা নিরিবিলি জায়গায় যেয়ে কাগজটা দেখতে দেখতে একটা গাছের পাশে দাঁড়ালো। ধীরে ধীরে কাগজের ভাজ খুলতে লাগলো প্রাহী। শুভ্র কাগজের মাঝামাঝি বরাবর কিছু শব্দ গুচ্ছ খানিকটা এলোমেলো আকারে লিখা। প্রাহী কাগজটা হালকা সামনে আনলো।

প্রিয় বলে সম্বোধন করলাম না প্রথমেই! কারণ যাদের আমরা ‘প্রিয়’ বলে সম্বোধন করি তারা আমাদের কাছে ঠিক কতটা প্রিয় তা শুধু একটা ছোট্ট শব্দ ‘প্রিয়’ এর মাধ্যমে বলে বোঝানো টা আমার কাছে কেমন যেন লাগে! মাঝেমধ্যে নিজেদের গভীর অনুভূতি গুলো কিছু শব্দের মাধ্যমে বোঝানো বেশ দুষ্কর লাগে প্রাহী! জানো আজ যে চিঠি দিবস! আমি কিন্তু জানতাম না!
সৌভাগ্যবশত জেনে গিয়েছি। প্রাহী তোমাকে নিয়ে লিখতে আমার চিঠি কিন্ত ফুরোবে না। পরে দেখা যাবে সেটা চিঠি নয় মাঝারি আকারের একটা বই হয়ে গেছে! প্রাহী শুনুন আজকাল আমি বড্ড অবাধ্য হয়ে যাচ্ছি! আপনার ওই খোলা চুল, আধো আধো চাহনী, ঘামের আদলে ভেজা ওই মুখশ্রী দেখলে নিজেকে সামলানো বড্ড দায় হয়ে পড়ে প্রাহী! এইযে আমি একটু একটু করে নিজেকে হারাচ্ছি তোমাকেই কিন্তু আমার নিকট আমাকে ফিরে দিতে হবে! আদেশ করছি না এটা তোমার একান্ত নিজস্ব কর্তব্য আমার প্রতি! শুধু আমার প্রতি! বেশি কিছু লিখছি না এখন আর। কারণ শব্দগুলো কেমন যেন অগোছালো হয়ে যাচ্ছে! বাকি কথাগুলো একদিন না হয় ঠোঁটের ভাজে বলবো! প্রাহী দেখেছেন আমি একবার তুমি করে বলছি তো আরেকবার আপনি করে সম্বোধন করছি! তুমি করে
ডাকলে কেমন লাগবে প্রাহী! খুব কি বেশি লজ্জা পাবেন! তাহলে তুমি করেই ডাকবো না হয় কি বলুন! অগোছালো লেখাগুলোর সমাপ্তি না হয় এখানেই টানলাম! আর হ্যাঁ, খামে মুড়ে এই কাগজটি দেয়নি বিধায় কিছু মনে করোনা! আমি দেখতে চাই এই পরিপাটিহীন লেখার কাগজের টুকরোটি তুমি ঠিক কতোটা যত্নে রাখো! আর শুনো, ওই নরম কানের ভাঁজে ফুল গুজে কারোর সামনে যেয়োনা যেন! কোমল ওই শ্রী দেখার অধিকারটুকু না হয় শুধু আমার থাকুক!

ইতি
আপনার নিকট আমার হতে চিঠি কিংবা চিরকুট!

‘চিঠি কিংবা চিরকুট!’ কথাটা বিড়বিড় করে কাঁপানো ঠোঁটে উচ্চারণ করে প্রাহী স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। ওর ছোট্ট হৃদয় টা মনে হয় থেমে গেছে! গুটিকয়েক শব্দ ওকে নাড়িয়ে দিলো! অসার মনে একটা প্রশ্নই ঘুরেফিরে উঁকি দিচ্ছে, ‘কে এই প্রেরক!’ গাছের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ কর‍তেই একজনের অবয়ব ভেসে উঠছে! প্রাহী সাথে সাথে চোখ খুলে ফেললো। চিঠিটা আলতো হাতে ভাজ করে কিছুক্ষণ নরম হাতের মাঝেই চেপে রইলো! মাথাটা কোনোরকম সামনে তুলে তাকাতেই দেখলো দূর হতে বুকের মাঝে হাত গুজে আকসাদ দাঁড়িয়ে! প্রাহী একনজরে সেদিকে তাকিয়ে রইলো। পায়ের গতি ধীর রেখে আকসাদ ওর দিকে এগোচ্ছে। প্রাহী স্থির হয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইলো।

– ‘মিস প্রাহী!’
প্রাহী চুপ করে আছে! একনাগাড়ে এভাবে প্রাহীকে নিজের দিক তাকিয়ে থাকতে দেখে আকসাদ আলতো হাতে প্রাহীর হাতে হালকা ছুঁয়ে বললো,
– ‘মিস প্রাহী!’

প্রাহী হালকা নড়ে শুষ্ক ঠোঁটজোড়া জিভ দিয়ে ভিজিয়ে বলে উঠলো,
– ‘হ..হ্যাঁ!’

আকসাদ কিছুটা চিন্তিত হয়ে বললো,
– ‘শরীর ঠিক আছে আপনার!’

প্রাহী কোনোরকম মাথাটা নাড়লো। আকসাদ প্রাহীর হাতের ভাজে কিছু একটা দেখে আঙুল দিয়ে ইশারা করে প্রাহীর দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘হাতে ওটা কি প্রাহী!’

প্রাহী হাতের মুঠোর কাগজটা শক্ত করে চেপে বলে উঠলো,
– ‘কিছুনা!’

আকসাদ বেশ কিছুক্ষণ প্রাহীর হাতের দিক তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠলো,
– ‘চিঠি বুঝি!’

প্রাহী শান্ত কন্ঠে আকসাদের দিক তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘হ্যাঁ!’
আকসাদ আলতো হেসে প্রাহীর দিক তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘তাই নাকি! তা কে দিলো শুনি!’
প্রাহী শান্ত চোখে কিছুক্ষণ আকসাদের দিক তাকিয়ে নজর নামিয়ে ফেললো। কিছু বলতে ইচ্ছা করছে ওর আকসাদকে। বেশি না দুটো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করছে! কিন্তু ওর গলা দিয়ে কেন জানি আজ কথা বের হচ্ছেনা! এমনটা হচ্ছে কেন!
– ‘চিঠিটা দেখি!’
আকসাদের কথায় প্রাহী হাতের কাগজটা দ্রুত ব্যাগে ভরে ওর দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘এটা আমার চিঠি!’
আকসাদ বাঁকা হেসে বললো,
– ‘হু! আপনারই তো প্রাহী!’
প্রাহী আকসাদের দিক হালকা তাকিয়ে মাথা নুয়ে ফেললো।
– ‘ক্লাস আছে!’
আকসাদের প্রশ্নে প্রাহী মাথা নাড়ালো।
– ‘তাহলে ক্লাসে যান! দেরী হয়ে যাচ্ছে তো!’
প্রাহী ধীর পায়ে এগোতেই আকসাদ পিছন হতে বলে উঠলো,
– ‘চিঠি দিবসের শুভেচ্ছা প্রাহী!’
প্রাহী মাথা ঘুড়িয়ে বললো,
– ‘আপনাকেও!’
আকসাদ মুচকি হেসে বললো,
– ‘আমাকে কেউ চিঠি দেয়নি প্রাহী!’
প্রাহী নরম কন্ঠে বললো,
– ‘পেয়ে যাবেন!’
আকসাদ শান্ত কন্ঠে বললো,
– ‘হু পাবো একদিন!’
প্রাহী কিছুক্ষণ তাকিয়ে সামনে হাঁটতেই পিছন হতে আকসাদ আবার বলে উঠলো,
– ‘চিঠিটা আপনায় কে দিলো বললেন না যে!’
প্রাহী আকসাদের দিক একপাশ ফিরে বললো,
– ‘দিয়েছে একজন। অপরিচিত।’

প্রাহী হাঁটা ধরলো৷ অজান্তেই ওর স্তব্ধ মুখের এক কোণে কিছুটা হাসি ফুটে উঠলো! এই হাসির কারণ ও জানেনা! জানতেও চায়না! এক পলক সামনে ফেলে পদযুগলের গতি বাড়ানীর চেষ্টা করলো। আকসাদ গাঢ় নজরে প্রাহীর যাওয়ার দিক তাকিয়ে ভারকন্ঠে রেখে বললো,
– ‘অপরিচিত নয় ‘প রি চি ত!’

চলবে,,,

#মন_একে_একে_দুই
#পর্বঃ১৩ (নিয়ন্ত্রণ!)
#লেখনীতেঃ-#ফেরদৌসী_নবনী

– ‘সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকতে পারবি!’

তুলির কথায় প্রাহী বাদামের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে বললো,
– ‘না। বাবা টেনশন করে। সন্ধ্যার আগেই আসলে ভালো হয়!’

– ‘আচ্ছা তাহলে তাড়াতাড়ি পা চালা। শিমলাটাকে নিয়েই বের হয়ে যাব।’

শিমলাদের বাড়ির সামনে আসতেই তুলি শিমলাদের ঘরে গেছে ওকে আনতে। প্রাহী বাইরে দাঁড়িয়ে। বাদাম এর প্যাকেট টা বাড়ির পাশের ডাস্টবিনটায় ফেলে বুকে হাত গুজে দাঁড়িয়ে রইলো। আকাশের দিকটায় একবার তাকালো ও। নীল শুভ্রসুলভ আকাশটায় রঙ বেরঙের ঘুড়ি উড়ে বেড়াচ্ছে। আশেপাশের দালানের ছাদ থেকে ছেলেমেয়েরা ঘুড়ি উড়াচ্ছে। নক্ষত্রটা যাওয়ার আগে ওর সাথে একবার ঘুড়ি উড়াতে হবে। ছেলেটা ভালোই ঘুড়ি উড়াতে পারেন। ধারালো সুতো দিয়ে কিভাবে কিভাবে যেন ফটফট করে আশেপাশের ঘুড়িগুলোকে ও কেঁটে দেয়। পিছন হতে প্রাহী শুধু লাটাইটা ওর কথা মতো চালিয়ে যায়। ভাবনাখেলার মাঝে ওর চোখ গেলো শিমলাদের ছাদের দিক। আকসাদ রেলিং এ হাত রেখে ওর দিকেই তাকিয়ে! এক পাশে কফির মগ রাখা! অনেকক্ষণ ধরে ছিলো নাকি এখানে! প্রাহী কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো।

– ‘বাড়ির ভিতর গেলি না কেন!’

শিমলার প্রশ্নে প্রাহী আলতো হেসে বললো,
– ‘এমনি! গেলে কথাবার্তায় পড়ে আবার দেরী হতো।’

– ‘কোথাও যাওয়া হচ্ছে নাকি!’
প্রাহীরা পিছন ফিরে দেখলো আকসাদ দুহাত প্যান্টের পকেটে রেখে দাঁড়িয়ে আছে। তুলি আকসাদকে দেখে হেসে বললো,
– ‘জ্বি ভাইয়া। এক ফ্রেন্ডের বাসায় যাচ্ছি।’

আকসাদ এক ভ্রু উঁচিয়ে বললো,
– ‘তাই নাকি! দাওয়াত পেয়েছ বুঝি!’

শিমলা হালকা হেসে বললো,
– ‘না দাওয়াত পাইনি। কিন্ত খুব শিগগিরই পাব!’

আকসাদ হালকা ভ্রু কুঁচকে বললো,
– ‘মানে!’

– ‘মানে আমাদের স্কুলের বান্ধবী আনিকা। ওকে আজ দেখতে আসার কথা ছিলো। যদি পছন্দ হয়ে যায় তাহলে তো বিয়ে পাকা! তখন তো দাওয়াত পাবোই তাইনা!’

আকসাদ মুখটা ‘ও’ করে বললো,
– ‘আচ্ছা আচ্ছা! তা ফ্রেন্ডের বাসা এখান থেকে কতদূর! দিয়ে আসব আমি!’

তুলি গা ঝাঁকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘হ্যাঁ হ্যাঁ ভাইয়া! কোনো অসুবিধা নেই!’

ফট করে প্রাহী বলে উঠলো,
– ‘লাগবে না। আমরা হেঁটেই যেতে পারব!’

প্রাহীর কথায় শিমলা স্বায় জানিয়ে বললো,
– ‘হ্যাঁ! আনিকাদের বাসার দূরত্ব প্রায় দশ মিনিটের মতো। এটুকু পথের জন্য এগিয়ে দিয়ে আসা লাগবে না আকসাদ ভাই!’

আকসাদ ফোস করে করে শ্বাস ফেলে বললো,
– ‘আচ্ছা বেশ! সন্ধ্যা হয়ে গেলে বলিস! আমি নিয়ে আসব! একলা আসার দরকার নেই।’

প্রাহী আকসাদের কথায় এক পলক তাকিয়ে শিমলা ওদের নিয়ে হাঁটা ধরলো। ওরা যেতেই আকসাদ গেইট খুলে বাড়ির ভিতর চলে গেলো।

– ‘তোর যাওয়ার খবর কি!’
নক্ষত্র ভাত খেতে খেতে বললো,

– ‘দু একদিনের মধ্যে নোটিশ দিবে।’

নক্ষত্রের বাবা মাথা নেড়ে সামনে তাকিয়ে বলে উঠলেন,
– ‘প্রাহী কোথায়!’

প্রাহীর মা পানির জগ টেবিলে রেখে বললেন,
– ‘ডেকেছি। আসবে!’

প্রাহীর মা প্লেটে ভাত নিতে নিতে বললেন,
– ‘প্রাহীর মামী আজ ওর বিয়ের ব্যাপারে কথা বলছিলো!’

নক্ষত্র সেদিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘কার! প্রাহীর!’

প্রাহীর মা মাথা নেড়ে বলে উঠলেন,
– ‘হ্যাঁ। ছেলে নাকি ম্যারিন ইঞ্জিনিয়ার! ছেলের পরিবার ঢাকাতেই থাকে। আর ছেলে কাজের চাপে দেশ বিদেশেই থাকে বেশির ভাগ সময়।’

নক্ষত্র ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলো,
– ‘ছেলে ম্যারিন ইঞ্জিনিয়ার! দেশ বিদেশে ঘুরবে। আর এদিকে প্রাহী থাকবে ঘরের এক কোণে! ছয় মাসে একবার, বারো মাসে একবার হবে দেখা! এমনও তো না যে ছেলে বিয়ে করে একবারে বউ নিয়ে যাবে সাথে। এখানে বিয়ে দেবার কোনো মানেই হয়না।’

প্রাহীর মা কোনো কথা না বলে চুপচাপ ভাত মেখে খেতে থাকলেন।নক্ষত্রের বাবা পুরোটা সময় চুপ ছিলেন। খাওয়া শেষে প্রাহীর খাবারটা আলাদা করে রেখে সব কিছু গুছিয়ে রান্নাঘরে নিয়ে গুছিয়ে আসলেন। চেয়ারে বসে পানি খেয়ে উঠতে যাবে তখনই নক্ষত্রের বাবা বলে উঠলেন,
– ‘শুনো কিছু কথা বলি! মেয়ের মা যেহেতু হয়েছো একটা পর্যায়ে অবশ্যই সম্বন্ধ বা প্রস্তাব আমার চেয়ে তোমার কাছে আসবে বেশি কারণ তুমি সারাটা দিন বাসায় থাকো। আমি থাকি বাইরে। নক্ষত্র থাকে ঢাকায়। ছুটিতে মাঝেমধ্যে এখানে আসে আবার চলে যায়। চেনা পরিচিত মানুষগুলো তোমাকেই পাবে বেশি। বিয়ের প্রস্তাব আসতেই পারে। যে ঘরে মেয়ে আছে সে ঘরে আসবেই। এটা অস্বাভাবিক কিছু না বিয়ের প্রস্তাব আসলেই মেয়েকে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে হবে এমন কোনো কথাও তো নেই তাইনা! মেয়েকে তো এখনই আমি কারো হাতে দিব না! ও আগে অনার্স শেষ করবে। তারপর না হয় ভাবা যাবে এসব নিয়ে। তাছাড়া আমি তো বেঁচে আছিই, তুমি আছো, নক্ষত্র আছে। তাহলে চিন্তা কিসের! পড়াশোনা অবশ্যই আগে। মেয়ে মানুষ! জীবনের কখন কোথায় এই বিদ্যা কাজে লাগে তা কেউই আগে ভাগে কেউ বলতে পারেনা। কাজেই পড়াশোনার দরকার আছে। পরবর্তী সময় থেকে এরূপ কোনো কিছু ঘটলে সহজসাধ্য ভাবে সামলে নিও। না পারলে আমি তো আছিই!’

প্রাহীর মা মাথা নাড়িয়ে কিছু বলার আগে নক্ষত্র পানির বোতল নিয়ে উপরে যেতে যেতে বললো,
– ‘সেটাই! আর ছেলে নিয়ে সম্বন্ধ আসলে তো কথাই নেই। সরাসরি কাজী ডেকে এনো। আমার মতামত নেবার দরকার নেই!’

প্রাহীর বাবা ভ্রু কুঁচকে সেদিক তাকিয়ে বলে উঠলেন,
– ‘আগে মাস্টার্স শেষ করো তুমি! আদু ভাইয়ের যমজ ভাই।’

সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে বাবার নিকট তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘হ্যাঁ! গন্ডগোলে পিছিয়ে গেছি! এখানে আমার কি দোষ! হাহ্!’
বলেই ছাদের দিকে চললো।

প্রাহীর বাবা বাড়ির সব লাইট ওফ করে রুমে যাওয়ার আগে মেয়ের ঘরের দিকে একবার গেলেন। প্রাহী পড়তে পড়তে বই হাতে নিয়েই টেবিলে ঘুমিয়ে পড়েছে! মেয়েটা রাতের খাবার না খেয়েই শুয়ে পড়লো! মাথার পাশে রাখা বইটা রেখে দিলো। তারপর গায়ে চাদরটা টেনে দিয়ে মেয়ের মাথায় কিছুক্ষণ হাত বুলালেন। অতঃপর উঠে গিয়ে রুমের বাতি নিভিয়ে চলে গেলেন। বাবা যেতেই প্রাহী ঠাস করে চোখ খুলে ফেললো। কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে উঠে বসলো। বিছানা থেকে নেমে পড়ার টেবিলটায় বসে এসাইনমেন্ট এর খাতাটা বের করে তারিখ আর নাম লিখে ব্যাগে রেখে দিলো। হাত ভাজ করে টেবিলে বসে প্রাহী কলম দিয়ে খাতায় খোঁচাতে লাগলো। নিচে যা যা হয়েছে তার সবই ও শুনেছে! আনিকদের বাসায় বিকেলে অনেক ভারী খাবার খেয়ে এসেছে বিধায় খিদে পাচ্ছিল না রাতের দিক। তাও হালকা কিছু মুখে দেবার জন্য নিচে যেতেই ওর মা আর বাবার পুরো কথাই ও শুনেছে। বিয়ে নামক জিনিসটার জন্য প্রাহী প্রস্তুতই নয়৷ এই সম্পর্কে ও কখনও সেভাবে ভাবেনি! ভাবতেও চায়নি ও আসলে! তখন বাবার কথায় একটু স্বস্তি পেলেও এখন ভাবছে যখন আসলেই বিয়ের সময়টা আসবে তখন কি হবে! ভাবতেই কেমন যেন বুকটা ভার হয়ে যায়। কলমের ক্যাপটা লাগিয়ে ব্যাগে রেখে দিলো। এতক্ষণ টানা এসাইনমেন্ট করার দরুণ একটু খিদে পেয়েছে ওর। মা নিশ্চয়ই ওর খাবারটা রেখে দিয়েছে! ভেবেই টেবিল থেকে উঠে রুম থেকে বেরোলো।

ভোরের দিক বৃষ্টি হলেও এখন ভ্যাপসা গরম লাগছে প্রচুর! ক্লাস শেষে ও চাইছিলো চলে যেতে। শিমলা আটকে রেখেছে ওকে! আকসাদ নাকি নিতে আসবে! পনেরো মিনিট হাটলেই হচ্ছে বাড়ি! এখানে আবার নিতে আসা লাগে! প্রাহী ওড়না দিয়ে কপালের ঘাম মুছে শিমলার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো,
– ‘তোর ভাই যে রোজ রোজ নিতে আসে তোকে!’

শিমলা অবাক হয়ে বললো,
– ‘কই রোজ রোজ নিতে আসে! কতদিন পর আসলো আজ নিতে!’

প্রাহী ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। ইশ্! রোজ রোজ নাকি আসেনা!

– ‘অনেক আগেই ছুটি হয়েছে নাকি!’

আকসাদকে দেখে শিমলা হালকা হেসে বললো,
– ‘না মাত্রই ছুটি হলো আকসাদ ভাই!’

আকসাদ মাথা নেড়ে প্রাহীর দিক এক পলক তাকালো! গরমে মেয়েটার মুখ একদম লাল হয়ে গেছে। শিমলার দিক তাকিয়ে আকসাদ বললো
– ‘আইসক্রিম খাবি!’

শিমলা উৎফুল্ল হয়ে বললো,
– ‘অবশ্যই!’

আকসাদ প্রাহীর দিক এক পলক তাকিয়ে বললো,
– ‘আর আপনি!’

প্রাহী ঠোঁট ভিজিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগে শিমলা বলে উঠলো,
– ‘জিজ্ঞেস করার কি আছে! খাবে খাবে তুমি নিয়ে এসো!’

আকসাদ এক পলক প্রাহীর দিক তাকিয়ে আইসক্রিম নিয়ে আসলো। শিমলা গপাগপ আইসক্রিম খেয়ে ফেললেও প্রাহী এত তাড়াতাড়ি খেতে পারছে না! কারণ ওর ধীরে ধীরে খাওয়ার স্বভাব। তার মধ্যে আকসাদের সামনে ওর কেমন যেন লজ্জা লাগছে। আকসাদ এক দৃষ্টিতে প্রাহীর দিক তাকিয়ে রয়েছে। মেয়েটার ঠোঁটের আশেপাশে আইসক্রিম লেগে আছে!

আকসাদ চোখ বন্ধ করে একটা শ্বাস ফেলে প্রাহীর পাশে দাঁড়িয়ে বললো,
– ‘আজ আমি রুমাল আনতে ভুলে গেছি প্রাহী! আপাতত ওড়না দিয়ে মুখটা মুছে নিন!’

প্রাহী একহাত মুখে দিয়ে দেখলো ঠোঁটের পাশে আইসক্রিম লেগেছে! প্রাহী দ্রুত ওড়নার কোণা দিয়ে মুখটা মুছে ফেললো। আড়চোখে আকসাদের দিক তাকাতেই আকসাদ ওর দিক ঝুঁকে কানের কাছে ফিসফিস করে বলে উঠলো,
– ‘এভাবে আর বাইরে আইসক্রিম খাওয়া যাবে না দেখছি! নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ বেগ পেতে হয় দেখছি!’

প্রাহী কিছুটা অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে রইলো। নিয়ন্ত্রণ! কিসের নিয়ন্ত্রণ এর কথা বলছে এই লোক! প্রাহী আকসাদের দিক তাকাতেই দেখলো…

চলবে,,,