#মন_একে_একে_দুই
#পর্বঃ১৬(স্টুপিড!)
#লেখনীতেঃ-#ফেরদৌসী_নবনী
– ‘আ…আমি তো সাঁতার পারিনা!
কোমড় সমান পানি এখন ওর পুরো শরীরটাকে টেনে নিয়েছে যেন! অতল পানির গভীরতায় এখন সকল কিছু প্রাহীর কাছে অস্পষ্ট! মস্তিষ্কে এতক্ষণ একটা কথাই নাড়া দিয়ে যাচ্ছিলো, ‘আল্লাহ্ একটু সাহায্য করো!’ কিন্তু এখন আর কোনোরকম কোনো বোধ,চিন্তা বা ভাবনা ওর মাঝে কাজ করছে না! ইতিমধ্যে নাকে মুখে কতখানি পানি ঢুকেছে তার কোনো হিসেব নেই! মুখটা কোনোরকম উঁচিয়ে শ্বাস নিতে পারলেও এখন আর তা সম্ভব না! পুরো শরীর এখন পানিতে নিমজ্জিত। শেষবারের মতো চোখের সামনে মা, বাবা আর ভাইয়ের মুখটা ফুঁটে উঠলো! আর হয়তো বুঝি দেখা হবেনা তাদের সাথে! তীরে উঠার জন্য দাপাদাপি করা হাতদুটো নিস্তেজ অবস্থায় পানির নিচে ডুবতেই এক জোড়া শক্ত হাত সেই হাতজোড়া চেঁপে ধরলো। কব্জি ধরে জোরসমেত টান দিয়ে মাথাসহ পুরো শরীর পানির নিচ হতে টেনে আনলো। পুরোপুরি জ্ঞান হারানোর আগে প্রাহী শুধু অনুভব করলো ওর মাথাটা শক্ত কিছু একটার সাথে বাড়ি খেলো। নিভু নিভু চোখে সামনে গাছপালা আর বিলের ধারের রাস্তা দেখে কোনোরকম নিশ্চিত হলো যে অস্বচ্ছ জলের গভীরতায় হয়তো ও তলিয়ে যায়নি! কিন্তু কে ওকে ওভাবে টেনে আনলো! শুন্য মস্তিষ্কে আর কিছু আসছে না! ক্ষীণ অবস্থাতেই মাথাটা হালকা উপরে তুলার চেষ্টা করতেই ওর মাথাটা যেন কেউ চেঁপে ধরলো! প্রাহীও চোখ দুটো বন্ধ করে মাথা এলিয়ে দিলো।
দীর্ঘ সময় পর ধীরে ধীরে চোখদুটো খুললো প্রাহী। এতক্ষণ যাবত চোখদুটো বন্ধ করে ছিলো ও। পানিতে থাকার দরূন ওর চোখদুটো বড্ড জ্বলছিলো বিধায় ও চোখজোড়া বন্ধ করে রেখেছিলো। মাথাটা এখনও কিছু একটার সাথে এঁটে রয়েছে। চোখজোড়া সম্পূর্ণ খুলে কয়েকবার চোখের পলক ফেললো প্রাহী৷ খেয়াল করে দেখলো ও মাটিতেই বসে! আস্তে আস্তে মাথাটা উপরে তুলতেই চোখজোড়া বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো! একজোড়া চোখ ওর দিকে অস্থির দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে! আকসাদ! তার মানে আকসাদই ওকে! চোখভরা জল নিয়ে প্রাহী আকসাদের দিক তাকাতেই আকুল কন্ঠে আকসাদ বলে উঠলো,
– ‘প্রাহী! ঠিক লাগছে এখন শরীরটা!’
প্রাহী আকসাদের দিক তাকিয়ে শুধু ওর ঠোঁট নাড়ানোটাই দেখছে। চোখের জলে ঝাপসা দৃষ্টিতে শুধু আকসাদের দিক তাকিয়ে রয়েছে ও! এদিকে আকসাদ আবারও নিজের বুকে থাকা প্রাহীর নরম এক হাতের উপর আলতোভাবে হাত রেখে বলে উঠলো,
– ‘খুব বেশি খারাপ লাগছে প্রাহী!’
প্রাহী মুখ খুলে দুটো শব্দ বলার আগেই মাটিতে থাকা একহাতের উপর ভর করে বসা অবস্থাতেই কিছুটা দূরে যেয়ে বুকে এক হাত চেপে কাঁশতে লাগলো। নাক মুখ দিয়ে সমানে পানি বের হচ্ছে ওর। আকসাদ দ্রুত ওর কাছ ঘেষে বসে ওর মাথাটা দুহাত দিয়ে চেপে ধরলো। কাশি থেমে গেলে প্রাহী বুকে হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে লাগলো। আকসাদ প্রাহীর পিঠে আলতো ভাবে হাত বুলিয়ে যাচ্ছে!
– ‘খুব বেশি খারাপ লাগছে প্রাহী!’
প্রাহী দূর্বল চোখে আকসাদের দিক তাকিয়ে কোনোরকম মাথা নাড়ালো। আকসাদের বুকটা ধক করে উঠলো। কাশতে কাশতে ছোট্ট মুখখানা একদম লাল হয়ে গেছে মেয়েটার! আকসাদ প্রাহীকে সোজা ভাবে বসিয়ে একটু সিরিয়াস কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
– ‘প্রাহী বলুন তো! আপনি এখানে কিভাবে এলেন! কেউ কি আপনাকে ফেলে দিয়েছে!’
প্রাহী মাথা তুলে আকসাদের দিক তাকিয়ে আস্তে করে বলে উঠলো,
– ‘না।’
– ‘তাহলে!’
আকসাদের দিক হালকা তাকিয়ে ও বলে উঠলো,
– ‘আমি…আমিই এসেছি এখানে নিজ থেকে।’
তারপর দূরে পড়ে থাকা শাপলাগুলোর দিকে ইশারা করে বললো,
– ‘শাপলা তুলতে এসেছিলাম!’
আকসাদ হালকা চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
– ‘হোয়াট!’
প্রাহী মাথা নিচু করে মাথা নেড়ে বললো,
– ‘হ্যাঁ। মা শাপলার তরকারি করবে বলে আমি এসেছিলাম তুলতে। তুলা শেষও হয়ে গিয়েছিলো কিন্তু…।’
আকসাদ ভ্রু উঁচিয়ে বললো,
– ‘কিন্তু কি!’
চোখ নিচে রেখেই ও বলে উঠলো,
– ‘উঠার সময় সাপ সামনে দেখে পিছলে পড়ে গেছি। পরে আর ব্যালেন্স ধরে রাখতে পারিনি। তাই…।’
আকসাদ বিস্মিত দৃষ্টিতে প্রাহীর দিক তাকিয়ে বলে উঠলো,
– ‘সিরিয়াসলি প্রাহী! কমনসেন্সে নেই আপনার! একা একটা মেয়ে আপনি ভরদুপুরে চলে এসেছেন এইসব তুলতে! আমি যদি না আসতাম ঠিক সময় মতো তাহলে কি হতো আপনার কোনো আইডিয়া আছে!’
শেষের কথাটা কিছুটা চেঁচিয়ে বলে উঠলো আকসাদ। প্রাহী মাথা নিচু করে ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে। আকসাদ চোখ বন্ধ করে ভিজে চুলগুলো পিছনে নিয়ে প্রাহীর দিক তাকালো। চোখের জল সমেত প্রাহীর মাথার একপাশ আলতো করে নিজের বুকের সাথে মিশালো। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
– ‘প্রাহী আপনি মেয়ে হিসেবে কিন্ত ম্যাচিউর! এভাবে ঝোঁকের বশে এইকাজ টা করা কিন্তু মোটেও উচিত হয়নি। আমি যদি…।’
বলেই আকসাদ থেমে জোড়ে একটা শ্বাস নিলো। কিছুক্ষণ আগের কথা মনে হতেই ওর বুকটা প্রচন্ড লাফাচ্ছে! প্রাহী ওর মাথার একপাশ আকসাদের বুকে রেখেই ফুঁপিয়ে যাচ্ছে। আসলেই ওর উচিত হয়নি এভাবে আসাটা! ওর গা এখনও কেঁপে উঠছে। এভাবে কিছুসময় দুজন নিরবে পার করলো। আকসাদ প্রাহীর মাথার একপাশ নিজ বুকে ধরেই ওকে নিয়ে দাঁড়ালো,
– ‘হাঁটতে পারবেন!’
প্রাহী দূর্বল কন্ঠে ‘হু’ বলে এক পা এগোতেই মনে হলো ওর শরীরটা ভাসছে! ভালোভাবে লক্ষ্য করতেই দেখলো আকসাদ ওকে কোলে করে নিয়েই সামনে এগোচ্ছে। কাঁপা ঠোঁটে বলে উঠলো,
– ‘আ…আমি পারব! নামি…।’
– ‘ প্রাহী! কিপ কোয়াইট!’
প্রাহী আর কোনো কিছু বললো না। মাথাটা ওর আকসাদের কাঁধে হেলানো। হাতজোডা বুকের সাথে গুটিয়ে চুপ করে রইলো। আকসাদের গাড়ির কাছে আসতেই আকসাদ এক হাত দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে ওকে গাড়িতে বসিয়ে দিতেই প্রাহী বলে উঠলো,
– ‘আপনার সিটটা তো ভিজে যাবে! আমি পুরো…।’
আকসাদ প্রাহীর দিক তীর্যক দৃষ্টি ফেলে বললো,
– ‘আপনাকে এতকিছুর খেয়াল এখন কে করতে বলেছে প্রাহী! যাস্ট চুপ করে বসুন!’
বলেই ওকে বসিয়ে দিয়ে আকসাদ আবার বিলের দিকে চললো। গাড়িতে বসে থেকে প্রাহী আধো চোখে আকসাদের দিক তাকালো। ছেলেটা পুরো ভিজে গেছে! পিছনের সিটের দরজা খোলার আওয়াজে প্রাহী পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখলো আকসাদ গাড়িতে বসছে। পিছনে তাকিয়ে দেখলো আকসাদ ওর ব্যাগ, জুতো সব নিয়ে এসেছে। আকসাদ ওর দিকে একবার দৃষ্টি ফেলে গাড়ি চালাতে শুরু করলো। হালকা কেশে আকসাদ বললো,
– ‘ওড়নাটা ঠিক করে নিজের গায়ে জড়ান!’
প্রাহী থতমত খেয়ে নিজের দিক তাকিয়ে বেশ লজ্জা পেল! ওড়না তখন ওভাবে এঁটেসেঁটে বেঁধে পানিতে নেমেছিলো এখন ওভাবেই আছে! তাড়াতাড়ি ওড়নাটা ঠিক করে গায়ে জড়িয়ে নিচে তাকিয়ে রইলো। খানিক নিরবতার পর প্রাহী আলতো কন্ঠে আকসাদকে জিজ্ঞেস করলো,
– ‘শাপলাগুলো…।’
আকসাদ হুট করে গাড়ি টা ব্রেক করে থামিয়ে প্রাহীর দিক স্তম্ভিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
– ‘প্রাহী মানে সিরিয়াসলি! আপনি এখনও ওই শাপলার কথা তুলছেন!’
প্রাহী মাথা নিচু করে তাকিয়ে রইলো। নিজের গায়ের শার্টটা খুলে প্রাহীর গায়ে জড়িয়ে দিলো। প্রাহী আকসাদের দিক তাকাতেই আকসাদ বললো,
– ‘শুধু ওড়না দিয়ে হচ্ছেনা।’
প্রাহী জিজ্ঞাসুদৃষ্টিতে তাকাতেই আকসাদ ওর দিক তাকিয়ে শান্ত স্বরে বললো,
– ‘জামা ভিজে গেছে পুরো! শরীরের সবকিছু…।’
আকসাদ গাড়ির স্টিয়ারিং এ হাত রেখে গাড়ি স্টার্ট দিলো। প্রাহী লজ্জায় আর আকসাদের দিক তাকালো না। আকসাদ এবার প্রাহীদের বাসার সামনেই গাড়ি থামালো। প্রাহী ধীরে সুস্থে গাড়ি থেকে নামলো। আকসাদ নেমে প্রাহীর সামনে দাঁড়িয়ে প্রাহীর মাথায় হাত রেখে বললো,
– ‘বাড়ি যেয়ে ফ্রেশ হোন কেমন!’
প্রাহী আলতোভাবে মাথা নাড়িয়ে সামনে হাঁটা ধরলো। আকসাদ প্রাহীর যাওয়ার দিক তাকিয়ে গাড়ির দরজায় হাত রাখতেই কি মনে করে পিছে ফিরলো। দেখলো প্রাহী কাচুমাচু করে ওর দিক তাকিয়ে! আকসাদ প্রাহীর দিক এগিয়ে নরম কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
– ‘কি হয়েছে প্রাহী! কিছু বলবেন!’
প্রাহী আকসাদের দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে নিজের দিক ইশারা করে বললো,
– ‘আপনার শার্টটা!’
আকসাদ ক্লান্ত হেসে বললো,
– ‘রেখে দিন! তাড়ার কি আছে!’
প্রাহী আকসাদের দিক তাকালো। শার্টের নিচে সাদা টি-শার্ট ছিলো যা এখন ওর পরোনে। ভিজে শার্ট গায়ের সাথে লেপ্টে পেশিগুলো স্পষ্ট ভেসে উঠছে। প্রাহী আকসাদের দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘আচ্ছা পরে দিব না হয়!’
হাঁটতে যেয়ে আবার পিছন ফিরে বললো,
– ‘আজকের জন্য ধন্যবাদ! আমি…।’
আকসাদ ফোস করে একটা শ্বাস ফেলে বললো,
– ‘নিজের জীবনের অর্ধাংশকে বাঁচিয়েছি। এজন্য ধন্যবাদ আমার কাম্য নয় প্রাহী! বাসায় যান যেয়ে ভিজে জামাকাপড় চেঞ্জ করে একটু উষ্ণ জামাকাপড় পড়ুন। অনেকক্ষণ পানিতে ভিজেছেন সাবধানে থাকবেন যাতে ঠান্ডা না লাগে! ওকে!’
প্রাহী আকসাদের প্রথম কথাতে থমকে গেলেও পরবর্তী কথাগুলো শুনে মিনমিন করে বলে উঠলো,
– ‘আপনিও! বাসায় যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নিবেন। কারণ আপনিও ভিজে গেছেন!’
আকসাদ আলতো হেসে বললো,
– ‘হুম হবো! আপাতত বাসায় যান প্রাহী! এ অবস্থায় আমার সামনে আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন!’
প্রাহী নিজের দিক তাকাতেই গাল গরম হয়ে গেলো। জামাকাপড় ভিজে সব শরীরের সাথে মিশে আছে একদম! আকসাদের শার্টও তেমন কাজ দিচ্ছেনা! চোখ মাটিতে রেখে দ্রুত পায়ে বাড়ির ভিতর চলে গেলো প্রাহী। প্রাহী যেতেই আকসাদ গাড়ির দরজা খুলে বসলো। বাসায় যেয়ে ফ্রেশ হতে হবে ওর। যথেষ্ট বিরক্ত লাগছে এই ভেজা জামা কাপড়ে।
মেয়েকে ভরদুপুরে এমন করুণ অবস্থায় ফিরতে দেখে প্রাহীর মা টি টেবিলের ক্লথটা মাটিতে ফেলেই মেয়ের কাছে ছুটে গেলেন।
– ‘কিরে! এই অবস্থা কেন! শরীর টরীর সব ভেজা যে! বাইরে তো বৃষ্টিও হয়নি! তাহলে!’
নক্ষত্র সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে প্রাহীর দিক হুট করে চোখ গেলো ওর। কৌতুহলী হয়ে ওর সামনে যেয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– ‘পুকুরে ডুব দিয়ে এসেছিস নাকি!’
প্রাহী ছোট কন্ঠে উত্তর দিলো,
– ‘ডুব দেইনি। পড়ে গিয়েছিলাম।’
প্রাহীর মা অবাক হয়ে বললেন,
– ‘কিভাবে!’
বিরস কন্ঠে প্রাহী উত্তর দিলো,
– ‘শাপলা তুলতে যেয়ে।’
নক্ষত্র ভ্রু কুঁচকে বললো,
– ‘কি! শাপলা!’
প্রাহী মাথা নেড়ে সবটা বললো। প্রাহীর মা ভীত চাহনীতে মেয়েকে কাছে এনে গালে আর কপালে হাত দিয়ে মুছতে মুছতে বললেন,
– ‘তোকে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে তো আমি আনতে বলিনি! বলেছি একদম কিনারে পেলে ক’টা নিয়ে আসিস! তুই কি বাচ্চা! এভাবে একলা গিয়েছিস!’
নক্ষত্র গম্ভীর কন্ঠে বললো,
– ‘আর তুই সাঁতারও পারিস না! এই পন্ডিতি টা করা খুব বেশিই কি দরকার ছিলো! ভাগ্য ভালো যে কিছু হয়নি!’
প্রাহীর মা আঁতকে উঁঠে চোখের কোণে জল নিয়ে মেয়ের মাথাটা নিজের গালের সাথে চেপে রইলেন। নক্ষত্র এর নিজেরও বেশ ভয় লাগছে কি হতো এই ভেবে! বাড়ির একমাত্র মেয়ে সবার আদরের। তার মধ্যে এখানকার বিলগুলো মাঝের দিক দিয়ে বেশ গভীর! আল্লাহ্ বাঁচিয়েছে যে তেমন কিছু হয়নি!
– ‘গা একদম ঠান্ডা হয়ে আছে। তাড়াতাড়ি গোসল করে নে। আমি এখনই ভাত তরকারি গরম করছি। খেয়ে একটু শুবি।’
মায়ের কথায় প্রাহী মাথা নেড়ে গা দুলিয়ে উপরে উঠতেই পিছন হতে নক্ষত্রের কথায় ও থেমে গেলো,
– ‘তোর গায়ে এই শার্ট কার!’
প্রাহী গায়ে আকসাদের কালো শার্টটা একটু টেনে ধীরস্বরে বললো,
– ‘যে আমাকে পানি থেকে তুলেছিল তার।’
নক্ষত্র ভ্রু উঁচিয়ে বললো,
– ‘কার!’
প্রাহী সহজ কন্ঠে বললো,
– ‘শিমলার কাজিন এর। আকসাদ ভাই এর।’
– ‘তার মানে…’।
– ‘আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া ছেলেটা তখন ওকে দেখেছে। নইলে কি হতো! শিমলাকে ফোন দিয়ে একদিন ওই ছেলেকে নিয়ে বাসায় আসতে বলবো। একটা ধন্যবাদ তো ওই ছেলের প্রাপ্য!’
মায়ের কথায় নক্ষত্র সেদিকে তাকিয়ে রইলো। প্রাহী মিনমিন করে বলে উঠলো,
– ‘উনি ধন্যবাদ নিবে না মা!’
প্রাহীর মা মেয়ের দিক তাকিয়ে বললেন,
– ‘শিমলাকে অবশ্যই আজকে কালকের মধ্যে ফোন দিব আমি! তুই এখন যা যেয়ে ফ্রেশ হো! আমি খাবার উপরেই নিয়ে আসছি!’
প্রাহী গা দুলিয়ে নিজ রুমে চললো। নক্ষত্র কিছুক্ষণ নিচে দাঁড়িয়ে থেকে হেলমেট টা হাতে নিয়ে বের হয়ে গেলো।
রাত প্রায় একটা বাজে। বারান্দায় বসে ফাইলগুলো চেক করতে করতে বারবার দুপুরের চিত্র মাথায় আসতেই ল্যাপটপ টা ঠাস করে বন্ধ করে দিলো আকসাদ। বসা থেকে উঠে রেলিং এ যেয়ে দাঁড়ালো। রাতের আঁধারে রাস্তার হেডলাইটের আবছা আলোর দিক তাকিয়ে ভাবতে লাগলো ভার্সিটিতে যেয়ে যখন প্রাহীকে পায়নি তখন কি মনে করে প্রাহীদের বাড়ির রাস্তা ধরে ধীরে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছিলো আকসাদ। হুট করে ফোন আসায় গাড়ি থেকে বেড়িয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে সামনে এগিয়ে রাস্তার একটু নিচের দিক এক পাশে পরিচিত ব্যাগ আর জুতো দেখে ও দাঁড়িয়ে পড়েছিলো। ফোন পকেটে রেখে সামনে এগোতেই পানির অস্বাভাবিক দাপড়াদাপড়ির আওয়াজ পেয়ে সেদিক তাকাতেই পরিচিত এক অবয়ব দেখেই যেন ওর পুরো দুনিয়া ওখানেই থমকে গিয়েছিলো। অদূরে থাকা হাতদুটো দেখে আর কাল বিলম্ব না করে ও ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো পানিতে। কোনোরকম মেয়েটাকে তীরে এনে নিজের বুকের সাথে একদম মিশিয়ে রেখেছিলো। কেন যেন ওর বিশ্বাস হচ্ছিলো না এটা প্রাহী! বারবার ঝুঁকে দেখে যাচ্ছিলো মেয়েটার মুখটা! আসলেই সেটা প্রাহী কি না! এভাবে ও প্রাহীকে দেখবে সেটা ওর কল্পনাতেও ছিলো না! আজকে যদি ও ঠিকমতো না পৌঁছাতো তাহলে মেয়েটার কি হতো! ভাবতেই সামনের চুলগুলো শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ করে পিছনে নিয়ে পকেট থেকে ফোনটা বের করে কাউকে ফোন দিলো। বেশকিছুক্ষণ ফোনের ওপর পাশের ব্যাক্তির সাথে আর্গুমেন্ট এর পর ফোনটা পকেটে রেখে দিলো। মাথার রগগুলো যেন ক্ষণে ক্ষণে ফুলে উঠছে! কোনো রকম রুমে যেয়ে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে শুতেই ‘আধো মুখটা’ ভেসে উঠতেই উঠে বসলো ও। কিছুতেই পানিতে ডুবতে থাকা ওই করুণ মুখটা ভুলতে পারছে না ও। হৃদপিণ্ডটা ক্রমশ যেন সীমা ছাড়িয়ে লাফিয়ে যাচ্ছে! সাইড টেবিল হতে পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে পুরোটা পানি এক নিশ্বাষে শেষ করে জানালার সামনে দাঁড়িয়ে কপালের চুলগুলো ব্যাকব্রাশ করতে করতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
– ‘প্রব্লেমেটিক সিচুয়েশন! তার মধ্যে এই মেয়ের নেই কোনো হুশ। শাপলা তুলতে যেয়ে নিজে শাপলার জায়গায় গেড়ে যায়। স্টুপিড একটা!’
চলবে,,,
#মন_একে_একে_দুই
#পর্বঃ১৭(অদ্ভুত!)
#লেখনীতেঃ-#ফেরদৌসী_নবনী
– ‘আরেকটা দেই!’
আকসাদ শিমলার মায়ের দিক তাকিয়ে মাথা নেড়ে বলল,
– ‘না কাকীমা! পেটে জায়গা নেই আপাতত!
শিমলার মা রুটিগুলো হটপটে রেখে দিলেন। আকসাদ চেয়ার ছেড়ে উঠতেই আকসাদের মা এসে ওর পাশের চেয়ারটায় বসলো। আকসাদ সেদিকে এক পলক তাকিয়ে বললো,
– ‘বাবা এসেছে!’
আকসাদের মা মাথা নেড়ে বললেন,
– ‘না এখনও আসেনি। আজ আসবে।’
– ‘আর শুন!’
আকসাদ পিছন ফিরে ওর মা দিক তাকাতেই উনি বললেন,
– ‘পারলে বিকালের দিকে বাসায় থাকিস৷ কথা আছে!’
আকসাদ মাথা নেড়ে নিজের রুমের দিক চললো। পিছন ফিরে মায়ের দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘এক কাপ কফি আমার রুমে একটু পাঠিয়ে দিও!’
– ‘ঠিক আছে!’
আকসাদের মা রান্নাঘরের দিক চললেন। আকসাদের ফোনে কল আসতেই ফোনটা রিসিভ করে নিজের ঘরে চলে গেলো।
ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরছিলো শিমলা,তুলি ওরা। প্রাহী আজ আসেনি। কিছুদূর যেতে তুলিরা আলাদা হয়ে গেলে শিমলা নিজ বাড়ির দিক চললো। খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটছে ও। সিড়ি দিয়ে উঠতে যেয়ে পায়ের আঙুলে ব্যাথা পেয়েছে ভালোই! হাঁটতে গেলেই কেমন যেন চিনচিন ব্যাথা লাগছে। তার মধ্যে প্রচন্ড গরমে অস্থির হয়ে যাবার যোগাড়। সামনে তাকাতে দেখলো নক্ষত্র বাইক নিয়ে এদিকেই আসছে! ওকে দেখেই বাইকটা থামালো।
– ‘কি রে ভার্সিটি শেষ!’
শিমলা মাথা দুলিয়ে বললো,
– ‘হু! আপনি এপথে!’
– ‘কাজ ছিলো! ল্যাঙরা হলি কবে থেকে!
শিমলা ভ্রু কুঁচকে বললো,
– ‘ল্যাঙরা হলাম মানে! আপনি ল্যাঙরা!’
নক্ষত্র শরীর দুলিয়ে বললো,
– ‘আমি তো আর হেঁচড়িয়ে হাঁটছিনা তাইনা!’
শিমলা মুখটা ভোঁতা করে তাকিয়ে রইলো।
– ‘বাইকে ওঠ। বাসায় পৌঁছে দেই!’
শিমলা মাথা নেড়ে বললো,
– ‘লাগবে না। আমি যেতে পারবো। আপনি আপনার কাজে যান!’
– ‘এমনিতেই গরম! তার মধ্যে এমনে লেঙরিয়ে হাঁটছিস! পিছনে ওঠ বাসায় দিয়ে আসছি।’
– ‘আমি…।’
নক্ষত্র বাইক স্টার্ট দিতে দিতে বললো,
– ‘উঠতে বলেছি।’
শিমলা অগত্যা আর না পেরে আস্তে ধীরে বাইকে উঠলো।
– ‘আস্তে চালাবেন।’
মেইন রোড দিয়ে না যেয়ে ভিতরের পথ দিয়ে যাচ্ছে নক্ষত্র। যার দরূন গাছপালার ছায়ায় বেশ ভালো লাগছে! নক্ষত্র মিডিয়াক স্পিডে রেখে বাইক চালাতে চালাতে বললো,
– ‘ব্যাথা পেলি কিভাবে!’
শিমলা ধীর কন্ঠে বললো,
– ‘সিড়ি দিয়ে উঠতে যেয়ে।’
নক্ষত্র ‘ও’ মুখ করে বললো,
– ‘তোর বিদেশের ওই ভাই! উম! নাম কি যেন!’
শিমলা হালকা কন্ঠে বললো,
– ‘আকসাদ ভাই!’
– ‘ওহ্! তা উনারা এখনও তোদের বাসায়!’
– ‘হ্যাঁ!’
– ‘যাবে কবে!’
শিমলা হালকা ভ্রু কুঁচকে বললো,
– ‘যাবে কবে মানে! যেদিন যাওয়ার সেদিন যাবে আসলোই তো সেদিন!’
নক্ষত্র মাথা দুলিয়ে বললো,
– ‘তোর বড় বোনের তো বিয়ে হয়েই গেছে! নাকি এখন তোর বিয়েটা খেয়েও যাবে কোনটা!’
শিমলা বিরক্তি নিয়ে বললো,
– ‘হ্যাঁ যাবে! কোনো অসুবিধে!’
নক্ষত্র হুট করে বাইক থামিয়ে বললো,
– ‘নাম!’
শিমলা অবাক হয়ে বললো,
– ‘কি!’
– ‘নামতে বলেছি!’
শিমলা কোনো রকম নামতেই নক্ষত্র ওর দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘তোর মতো ল্যাঙরিকে কে বিয়ে করবে! যাহ্ ফুট!’
বলেই বাইক নিয়ে চলে গেলো।
শিমলা বেক্কলের মতো সেদিকে তাকিয়ে রইলো! নিজে যেচে বাইকে নিয়ে কিভাবে নামিয়ে দিয়ে গেলো!
– ‘খবিশ একটা!’
পাশে তাকাতেই দেখলো ও ওর বাড়ির সামনেই। মুখটা ফুলিয়ে নক্ষত্রের যাওয়ার দিক তাকিয়ে বাড়ির ভিতর ঢুকলো।
প্রাহী বিছানায় শুয়ে আছে। শরীরটা তেমন ভালো লাগছেনা। আজকে ভার্সিটি যায়নি ও। মাথা ব্যথা করছিলো প্রচুর। কালকে বাসায় আসার পর দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর একটু শুয়েছিলো ও। ঘুম থেকে উঠার পর পরই সারারাত ধরে মাথাটা ভার লাগছিলো অনেক। সকাল একটু কমলেও এখন আবার মাথাটা ব্যাথা করছে। নক্ষত্রকে মাথা ব্যথার ঔষুধ আনতে বলবে বলবে করে আর বলা হয়নি। শোয়া থেকে উঠে ড্রয়িং রুমে গেলো প্রাহী। মা রান্নাঘরে। বাবা বাসায় আছে কি না বুঝতে পারছেনা। খুচরো কটা টাকা হাতে নিয়ে বের হলো প্রাহী। সামনের ফার্মেসী থেকে ঔষধ নিবে ও। দুপুরের কড়া রোদে যেন মাথাটা আরও বেশি ভার লাগছে। ফার্মেসী থেকে ঔষুধ নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা ধরলো প্রাহী। হাঁটা অবস্থায় সামনের দিক একটা গাড়ি হুট করেই ব্রেক কষলো। প্রাহী শব্দ পেয়ে মাথা উঁচু করলো। আকসাদ গাড়ি থেকে বের হচ্ছে! এই লোক এই দুপুরে এই দিকে!
– ‘হাই মিস প্রাহী! কি অবস্থা?’
প্রাহী হালকা মাথা নেড়ে বললো,
– ‘এইতো! আপনার!’
– ‘ভালো!’
কিছুক্ষণ প্রাহীর দিক তাকিয়ে আকসাদ বলে উঠলো,
– ‘শরীর খারাপ আপনার!’
প্রাহী আকসাদের দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘হু! হালকা মাথা ব্যথা!’
আকসাদ প্রাহীর দিক হালকা এগিয়ে এসে বললো,
– ‘বেশি ব্যাথা করছে! ঔষুধ খেয়েছেন! ঘর থেকে বের হয়েছেন এই অবস্থায়!’
প্রাহী হালকা হেসে বললো,
– ‘ঔষুধ কিনেছি। বাড়ি যেয়ে ভাত খেয়ে ঔষুধ টা খাবো। ঠিক হয়ে যাবে!’
আকসাদ প্রাহীর হাতের দিক তাকিয়ে দেখলো ওর হাতের মুঠোয় ঔষুধের প্যাকেট। আকসাদ প্রাহীর দিক হাত বাড়িয়ে বললো,
– ‘দেখি! কি ঔষুধ কিনেছেন!’
প্রাহী আকসাদের দিক তাকিয়ে ঔষুধের প্যাকেটটা এগিয়ে দিতেই আকসাদ সেটা নিয়ে খুলে দেখলো। কিছুক্ষণ দেখার পর আকসাদ প্রাহীর দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘গাড়িতে উঠুন!’
প্রাহী মাথা নেড়ে বললো,
– ‘আর পাঁচ মিনিট হাঁটলেই আমার বাসা। গাড়িতে উঠবো না! আমার ঔষুধটা দিন!’
আকসাদ গাড়ির দরজা খুলে প্রাহীর দিক তাকিয়ে বললো,
– ‘দুপুরে কড়া রোদে এভাবে হাঁটা লাগবেনা! গাড়িতে উঠুন!’
প্রাহী আলতো চোখে আকসাদের দিক তাকাতেই আকসাদ গাড়ির খোলা দরজার দিক ইশারা করে বললো,
– ‘উঠুন! দেরী করবেন না! আমার কাজ আছে আজকে একটু।’
প্রাহী মিনমিন করে বললো,
– ‘তো কাজেই যান! আমাকে গাড়িতে উঠতে বলছেন কেন!’
আকসাদ প্রাহীর দিক তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে বললো,
– ‘আগে নিজের কাজ! তারপর অন্যান্য কাজ!’
প্রাহীকে কোনোরকম গাড়িতে বসিয়ে নিজেও বসে গাড়ি চালানো শুরু করলো।
আকসাদ প্রাহীকে নিয়ে ফার্মেসী তেই এসেছে আবার। নিজে দেখে কিছু ঔষুধ কিনেছে প্রাহীর হাতে দিয়ে বললো,
– ‘যেই ঔষুধগুলো আপনি কিনেছেন সেগুলো একটু বেশি হাই পাওয়ার এর।’
দুটো ঔষুধ নিয়ে হাতে ইশারা করে বললো,
– ‘আগে এটা খাবেন! যদি দেখেন যে ব্যথা কমছে না তাহলে এটা খেয়ে নিবেন কেমন! ব্যথা আর থাকবে না!’
– ‘কি দরকার ছিল! আমি তো কিনেছ…।’
আকসাদ হালকা শ্বাস ফেলে বললো,
– ‘দরকার ছিল!’
অতঃপর গাড়ি চালিয়ে আকসাদ প্রাহীর বাড়ির কিছুদূর আগে থামলে প্রাহী নেমে আকসাদকে বললো,
– ‘ধন্যবাদ! আচ্ছা আপনি এই দুপুরে কোথায় যাচ্ছেন!’
আকসাদ গাড়ি থেকে নেমে বললো,
– ‘একটু কাজ আছে।’
প্রাহী ‘ওহ্’ বলে নরম কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
– ‘খেয়ে বের হয়েছেন!’
আকসাদ প্রাহীর দিক তাকিয়ে এক গাল গেসে বললো,
– ‘হ্যাঁ প্রাহী! খেয়ে বের হয়েছি! আপনি বাসায় যেয়ে খেয়ে ঔষধ টা মনে করে খাবেন কেমন!’
প্রাহী মাথা নেড়ে হাঁটা সামনে এগোলো। কিছুদূর যেতেই আকসাদ প্রাহীকে ডেকে উঠলো,
– ‘মিস প্রাহী!’
প্রাহী পিছন ফিরে তাকাতেই আকসাদ বললো,
– ‘ঔষধ টা মনে করে নিবেন কিন্তু!’
প্রাহী মুচকি হেস মাথা নাড়িয়ে বাড়ির দিক চললো। আকসাদ প্রাহীর যাওয়ার দিক তাকিয়ে হাতঘড়ি চেক করে গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।
রাতে প্রাহী ওর কাপড়গুলো ভাজ করছিলো। সবগুলো কাপড় ভাজ শেষে আলমারিতে রাখতেই প্রাহী কিছু একটার দিকে তাকিয়ে কাপড়গুলো রেখে জিনিসটা বের করে আনলো। আকসাদের শার্ট! সেদিন বাসায় এসে ধুঁয়ে দিয়েছিলো। পরে আর আয়রণ করা হয়নি। প্রাহী শার্টটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। শার্টটা হাতে নিয়েই বিছানায় যেয়ে বসলো। প্রাহী জানালার দিকে তাকালো। ও যে কিছু বোঝেনা তা কিন্তু নয়! হাজার হোক ও মেয়ে মানুষ! কারো তাকানো, কথা বলার ধরণ, ব্যবহার এসব কিছুর মানে একটু হলেও ও বোঝে! কিন্ত এই ‘আকসাদ’ নামক মানুষটা ওর জন্য আপাতত রহস্যের মতোই। এইযে ওকে কিভাবে চিনে, জানে এসব কিছুই আকসাদ ভালো করে এখনও বলেনি! প্রাহীও জিজ্ঞেস করবে বলে আর করেনি। কিভাবে করবে! যখনই চাইতো জিজ্ঞেস করার জন্য তখনই এই লোকের কোনো না কোনো ব্যবহার, কথাবার্তা, আচার-আচরণ এ থতমত বা অপ্রস্তুত হয়ে যেত! পরে আর কিছু জানা হতো না! ভাবতে ভাবতে একটা আকসাদের প্রতি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, ‘অদ্ভুত!’
মার রুমে যাচ্ছে প্রাহী আয়রন এর জন্য। আকসাদের শার্টটা আয়রন করবে বলে। হুট করে নিচ থেকে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ শুনে ও থমকে গেলো। নিচে যেতেই দেখলো,,,
চলবে,,,