মন পলাশ পর্ব-০৭

0
64

#মন_পলাশ ( সপ্তম পর্ব )
#ঈপ্সিতা_মিত্র
<১৩>
সেদিন যখন সৌমী বাড়ি পৌঁছেছিল তখন ঘড়িতে রাত নটা। সৌমী গাড়ি থেকে নামার আগে আবার অর্জুনকে বলে উঠেছিল,
———” থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। আজ আপনার জন্যই আমি ঠিকভাবে বাড়ি আসতে পারলাম। এটা আমি কোনদিন ভুলবো না। ”
এই কথায় অর্জুন স্থির স্বরে বলেছিল,
——–” থ্যাঙ্কস জানানোর দরকার নেই। আর পারলে আজকের ঘটনাটা ভুলে যেও। এটা নিয়ে আর বেশি ভেবো না। ”
কথাগুলো শুনে সৌমী আলতো স্বরে বলেছিল,
——–” ঠিক আছে স্যার। আসছি। ”
কথাটা বলেই ও চলে যাচ্ছিল, কিন্তু তখনই নন্দিনী দরজা খুলে অর্জুনকে বাইরে গাড়িতে দেখেই এগিয়ে এসেছিল। তারপর বেশ অবাক হয়ে বলেছিল,
———” অর্জুন তুমি? এখানে! ”
এই প্রশ্নে সৌমী উত্তর দিয়েছিল,
———” আসলে দেরি হয়ে গেছিল বলে স্যার লিফ্ট দিয়েছেন। ”
এই কথায় নন্দিনী অর্জুনকে বলে উঠেছিল,
———-” খুব ভালো হয়েছে বাবা আজ তুমি এসেছো। আজ আমার মেয়েটার জন্মদিন। এসেছো যখন একটু খেয়ে যাও। তোমার মা ও এসেছে। ভিতরে আছে। ”
কথাটায় অর্জুন কি বলবে ঠিক ভেবে পাচ্ছিল না। আসলে প্রথম থেকেই একটু লাজুক স্বভাবের তো। তাই একটু ইতঃস্তত হচ্ছিল। তখনই সৌমী অর্জুনের হয়ে বলে উঠলো,
——–” মা স্যার আসলে সব জায়গায় খান না হয়তো। ওনাকে জোর কোরো না। ”
এই কথায় অর্জুন এবার সাথে সাথেই বলে উঠলো,
———” না না সেরকম কোন ব্যাপার না। নিশ্চয়ই আজ খেয়ে যাবো আমি কাকিমা। ”
কথাটা বলেই অর্জুন বেরিয়ে এসেছিল গাড়ি থেকে। দৃশ্যটা দেখে সৌমী কিরকম বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। স্যার ওদের বাড়িতে খাবে! ওদের মতন মধ্যবিত্ত বাড়িতে! দেখে যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না। তবে সেদিন রুক্মিণীও ছেলেকে দেখে বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিল। যে ছেলে একটা বিয়ে বাড়ি পড়লে কোনভাবেই যেতে চায় না, সে আজ সোজা সৌমীর জন্মদিনে হাজির! আবার সবার সাথে এক টেবিলে বসে ডিনার করলো! কিছুই ঠিক মেলাতে পারছে না রুক্মিণী। ছেলে কি তাহলে বদলাচ্ছে ধীরে ধীরে! এটাই মনে হচ্ছিল হঠাৎ।

সেদিনের পর কটা দিন কেটে গেছে। রুক্মিণী এই সময় হরিদ্বার গেছে ঘুরতে একটা ট্র্যাভেল গ্রুপের সাথে। বাড়িতে অর্জুন একা। আর এই ফাঁকা বাড়িতে যেন মনটা আরো বেশি করে এলোমেলো হয়ে যায়। যতই কাজ নিয়ে ঘরে ফিরুক, কিন্তু কাজের ফাঁকে আনমনে একা একা হঠাৎ হঠাৎ একটা মুখ ভেসে ওঠে চোখের সামনে। সৌমীর মুখ। মেয়েটার তাকানো, আনমনে আলতো হাসি, ক্যান্টিনে বসে মাঝে মাঝে বই পড়া, সবই খেয়াল করে অর্জুন অফিসে। আর সেই দৃশ্যগুলোই যেন চোখের সামনে চলে আসে অবচেতনে। যাইহোক, এর মাঝেই সেদিন একটা ঘটনা ঘটলো। অর্জুন একটা সাইট ভিজিট করতে গিয়েছিল কল্যাণী। সেখানে একটা চাঙ্গর খসে পড়ে কনস্ট্রাকশন সাইটে। সেটা একটু হলে একজন ওয়ার্কার এর মাথার ওপরই পড়ছিল, কিন্তু অর্জুন সেটা খেয়াল করে লোকটাকে সরিয়ে দেয় সঙ্গে সঙ্গে। তবে ওই ওয়ার্কারকে বাঁচাতে গিয়ে চাঙ্গোরটা এসে পড়েছিল ওর হাতে, আর ডান হাতটা সঙ্গে সঙ্গে ভীষণ ভাবে ইঞ্জিয়োর্ড হয়ে যায়। সে এক রক্তারক্তি ব্যাপার। এই অবস্থায় অর্জুনকে সাথে সাথে পাশের একটা নার্সিং হোমে নিয়ে গিয়ে ট্রিটমেন্ট শুরু হয়। একটুর জন্য না কি হাতটা ভাঙেনি। তবে ব্লিডিং হয়েছে খুব। ডাক্তার হাতটাকে ড্রেসিং করে কিছু পেন কিলার দিয়েছিল অর্জুনকে, আর রেস্ট নিতে বলেছিল, কারণ অতটা ব্লিডিং এর জন্য জ্বর চলে আসতে পারে ওর। কথাটা শুনেও যদিও মানতে পারেনি ও সেদিন, কারণ অফিসে আজ ইনভেস্টরসদের সাথে খুব ইম্পর্টেন্ট মিটিং আছে একটা বিকেলে। আর সেটা কোনভাবেই ক্যানসেল করা যাবে না। তাই ওই হাত নিয়েই ও এসেছিল অফিস। সেই মুহূর্তে যদিও সারা অফিসে কথাটা ছড়িয়ে গেছে যে অর্জুনের এক্সিডেন্ট হয়েছে একজন ওয়ার্কারকে বাঁচাতে গিয়ে। কথাটা সৌমীরও কানে এসেছিল, আর এই প্রথম অর্জুনের জন্য চিন্তা হয়েছিল সৌমীর। মানুষটা ঠিক আছে তো! সত্যি যত দিন যাচ্ছে, অর্জুনের ছবিটা ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে সৌমীর কাছে। আগে মনে হতো লোকটা রাগি, অহংকারী, বদমেজাজী। আর এখন মনে হয় যা ভাবতো সবটাই ভুল। যে একজন ওয়ার্কারকে বাঁচানোর জন্য নিজের এত বড় এক্সিডেন্ট করে ফেলতে পারে, সে সত্যিই খুব বেহিসেবী মানুষ। সে নিজেরটা বাদে অন্যের জন্য অনেক বেশি চিন্তা করে। সেদিন এই কথাগুলোই মনে হচ্ছিল সৌমীর বার বার, সেই সময়েই অর্জুন অফিসে ঢুকেছিল ওই ব্যান্ডেজ বাঁধা হাতটা নিয়ে। সৌমী খেয়াল করেছিল ছেলেটার কপালেও লেগেছে অল্প। কপালের কোনায় একটা ব্যান্ডেড আটকানো। এইসব দেখে সৌমীর সত্যিই বেশ খারাপ লাগছিল আজ। তবে বুঝতে পারছিল না যে এই শরীর নিয়ে অফিসে আসার কি দরকার ছিল! আজ তো বাড়ি গিয়ে রেস্ট নিতে পারতো অর্জুন স্যার। একটা দিন কাজ না করলে কি হবে! কথাগুলো মনে মনেই বলে উঠেছিল সৌমী।

<১৪>
সেদিন এই ভাবনার ভিড়েই সৌমী একটা কাজ নিয়ে অল্প সময়ের জন্য গিয়েছিল অর্জুনের কেবিনে। সেই মুহূর্তে সৌমী কাছ থেকে খেয়াল করেছিল অর্জুনের ক্লান্ত মুখটা। হাত্টাও কতটা ব্যান্ডেজ বাঁধা। সেই অবস্থায়ই ল্যাপটপে মুখ গুঁজে পড়ে আছে। দৃশ্যটা দেখে সৌমী আপন মনেই বলে উঠেছিল,
——–” স্যার, আপনি ঠিক আছেন তো? ”
এই প্রশ্নে অর্জুনের কাজের ঘোরটা কেটেছিল। তখনও হাতটা বেশ ভালোই যন্ত্রণা করছে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই নিজের মুখচোরা স্বভাবের জন্য নিজের কথাগুলো বলে উঠতে পারে না ঠিক। তাই আজও বললো শান্ত গলায়,
——–” হ্যাঁ। আমি ঠিক আছি। ”

সেদিন এরপর সৌমী যখন অফিস থেকে বেরিয়েছিল তখন ঘড়িতে সন্ধ্যে সাতটা। সেই সময়ও খেয়াল করেছিল কনফারেন্স রুমের দরজা বন্ধ। তার মানে এখনো ইনভেস্টরসদের সাথে মিটিং চলছে অর্জুন স্যারের। যাইহোক, ও এরপর বাড়ি ফিরে এসেছিল। কিন্তু বাড়িতে এসে আরেক কান্ড। ব্যাগে মোবাইল নেই। তখনই মনে পড়লো অফিসে চার্জে বসিয়েছিল ফোনটা। তারপর সেখানে ফেলেই চলে এসেছে। সত্যি! কি যে করে! কথাটা ভেবে মা কে বলে বেশ বিরক্ত হয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল আবার। অফিস গিয়ে এখন আবার ফোনটা আনতে হবে। যাইহোক, বেশ অস্থির মনেই সৌমী এসেছিল আবার অফিস। কিন্তু এই ফাঁকা অফিসে অর্জুনের কেবিনের আলো জ্বলতে দেখে ও বেশ অবাক হয়েছিল! এখন রাত প্রায় নটা। স্যার এই শরীরে এখনো কাজ করছে এইভাবে অফিসে একা একা! কথাটা ভেবে কেমন যেন চিন্তা হয়েছিল। সৌমী সেই মুহূর্তে কিছু না ভেবেই অর্জুনের কেবিনে নক করেছিল মানুষটা কেমন আছে দেখার জন্য। কিন্তু কোন সাড়া পায়নি ছেলেটার। তাই কয়েক মিনিট পর নিজেই দরজা খুলে ঢুকে এসেছিল ভিতরে, আর থমকে গিয়েছিল হঠাৎ। অর্জুন এই কেবিনের এক কোনায় রাখা সোফাটার মধ্যে জড়সড় হয়ে শুয়ে রিতিমত কাঁপছে। দৃশ্যটা দেখে সৌমী প্রায় দৌড়ে গিয়েছিল অর্জুনের কাছে। তারপর নিজের মনেই বলে উঠেছিল,
———” স্যার! কি হয়েছে? কি হয়েছে আপনার? ”
কথাটা বলতে বলতেই অর্জুনের কপালে হাত ঠেকিয়ে দেখেছিল ওর উষ্ণতাটা। গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে ছেলেটার এই মুহূর্তে। এই অবস্থায় অর্জুন একা এখানে পড়েছিল! যদি সৌমী না আসতো তাহলে হয়তো সারা রাতই এখানে এইভাবেই পড়ে থাকতো! কথাটা ভেবেই সৌমীর যেন বুকটা কেঁপে উঠলো। ও এরপর আর দেরি না করে প্রায় দৌড়ে গিয়ে সিকিউরিটি গার্ডকে ডেকে আনলো। অর্জুনকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
সেদিন এরপর ওরা দুজন আর ড্রাইভার মিলে কোন রকমে অর্জুনকে ধরে নিচে নিয়ে এসে গাড়িতে তুলেছিল। সৌমী এই অবস্থায় কিছুতেই ওকে একা ছাড়তে পারেনি। এদিকে অর্জুনও জ্বরের ঘোরে সৌমীর কোলে মাথা দিয়ে দিয়েছিল। সৌমীকে কেমন আঁকড়ে ধরেছিল ও নিজের অজান্তেই।
সেদিন সৌমী অর্জুনের বাড়ি পৌঁছে প্রথমেই নিজের চেনা একজন ডাক্তারের নম্বরে ফোন করেছিল। সৌমেন মুখার্জি। ওদের অনেকদিনের চেনা ডাক্তার। কিন্তু ডাক্তারবাবুর আসতে কিছুটা দেরি হবে শুনে সৌমী নিজেই জলপট্টি দিতে শুরু করেছিল অর্জুনকে। ছেলেটা জ্বরে কিরকম কাহিল হয়ে পড়েছে। তবে এর মধ্যেও অর্জুন নিজের মনে সৌমীকে বলে উঠেছিল আলতো স্বরে,
———” আমার জ্বর; মা কে কিছু জানিও না। চিন্তা করবে খুব। ”
কথাগুলো বলেই অর্জুন আবার জ্বরের ঘোরে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সৌমী থমকে গিয়েছিল হঠাৎ। অর্জুন এত জ্বরের মধ্যেও নিজের মায়ের কথা ভাবছে! সত্যি এই মানুষটাকে চিনতে ওর কতটা ভুল হয়েছিল! বাইরে থেকে কঠিন হলেও অর্জুনের মনটা ভীষণ নরম। এটা যত দিন যাচ্ছে, বুঝতে পারছে সৌমী।
যাইহোক, সেদিন অর্জুনকে ছেড়ে সৌমী কিছুতেই আসতে পারেনি। মা কে তাই ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিল সবটা। তারপর সারা রাত জেগে বসেছিল ওর মাথার কাছে। ডাক্তার ওষুধ দেয়ার পরও সমানে জলপট্টি দিয়ে যেতে হয়েছিল ওকে। এইভাবে ধীরে ধীরে ভোর হয়ে এসেছিল। সেই মুহূর্তে সৌমীর চোখটা লেগে গিয়েছিল হঠাৎ অবশেষে। সারাদিন বাদে খুব ক্লান্ত লাগছিল আসলে। অর্জুনের পাশে বসেই দেয়ালে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল ও। তবে এরপর অর্জুনের জ্বর নেমেছিল। আস্তে আস্তে জ্ঞান এসেছিল ওর। কিন্তু চোখ খুলেই প্রথমে সৌমীকে নিজের পাশে দেখে আজ অর্জুন কেমন থমকে গেছিল যেন। মেয়েটা কি সারা রাত ওর সঙ্গেই ছিল! বাড়ি না গিয়ে জেগে বসেছিল ওর জন্য! কথাটা ভাবতেই খেয়াল করেছিল সৌমীর নিষ্পাপ মুখটা। ঘুমের মধ্যে অদ্ভুত মায়া ছড়িয়ে আছে। কথাটা মনে হতেই কিরকম মনে পড়ে গিয়েছিল আগের ঘটনাগুলো। এই মেয়েটাকেই প্রথম প্রথম কারণে অকারণে কত কথা শুনিয়েছে অর্জুন! কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই কেমন নিস্পলক চোখে তাকিয়েছিল অর্জুন সৌমীর দিকে। এই মুহূর্তে সৌমীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলতেও মন চাইছে না। আসলে অর্জুনের মনে হচ্ছে সময়টা যেন চারিদিকে স্থির হয়ে গেছে, আর অর্জুন থমকে গেছে একজনের সামনে!

যাইহোক এইভাবে বেশ কিছুক্ষণ পার হয়ে যাওয়ার পর সৌমীর ঘুম এমনিই ভেঙে গিয়েছিল, ও অর্জুনকে সামনে দেখে বেশ চমকে উঠেছিল। সৌমী সেই মুহূর্তে অস্থির হয়েই জিজ্ঞেস করেছিল,
———” স্যার, ঠিক আছেন তো আপনি? জ্বর নেই তো আর? ”
প্রশ্নটা করতে করতে সৌমী নিজের মনেই অর্জুনের কপালে নিজের হাতটা ঠেকিয়েছিল। তারপর গা টা ঠান্ডা দেখে আপনাআপনি একটা দীর্ঘশ্বাস পড়েছিল ওর। যাক বাবা, জ্বর নেই। কথাটা ভেবেই মুখে একটা নিশ্চিন্ত হাসি ফুটেছিল। অর্জুন এই সময় আস্তে গলায় কিছুটা ইতঃস্তত হয়ে বলেছিল,
———” তোমাকে সারা রাত এখানেই থাকতে হয়েছে না কাল! এম্ সরি.. আমার জন্য এইভাবে! ”
ওর কথাটাকে শেষ হতে না দিয়েই সৌমী বলে উঠেছিল,
———” না না স্যার। প্লিজ এইভাবে বলবেন না। আসলে কাল মোবাইলটা অফিসে ফেলে গিয়েছিলাম। তারপর সেটা নিতেই আবার বাড়ি থেকে এসেছিলাম অফিস। আর তখনই আপনাকে কেবিনে দেখি, জ্বরের মধ্যে কোনো সেন্স ছিল না! কিন্তু আপনি তো কালকের দিনটা রেস্ট নিতে পারতেন। এতটা শরীর খারাপের মধ্যে কেউ কাজ করে! সেই জন্যই এতটা বাড়াবাড়ি হয়েছে। ”
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বললো সৌমী। আর অর্জুনের হঠাৎ মনে হলো কেউ যেন শাসন করছে ওকে। অর্জুন তাই আলতো স্বরে বলে উঠলো,
———-” আসলে কাল একটা ইম্পর্টেন্ট মিটিং ছিল। আমাকে যেভাবেই হোক এটেন্ড করতেই হতো। সেই জন্যই। ”
এই কথায় সৌমী নিজের মনেই বলে উঠলো,
———–” সবার আগে কিন্তু শরীর। ”
কথাটা শুনে অর্জুন এই মুহূর্তে আর কোন উত্তর দিল না। বেশ মিষ্টি লাগছিল এই শাসনটা আসলে। তবে সৌমী এরপর একটু চিন্তা করে বললো,
———” স্যার, আপনি তো কিছু খাননি রাত থেকে। আমি কাউকে বলে কিছু খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি। আপনি রেস্ট নিন। আমি আসি এখন। ”
কথাটা শুনে অর্জুন সঙ্গে সঙ্গেই বলে উঠলো,
——–” তুমিও তো কিছু খাওনি মনে হয় রাত থেকে। তুমি ব্রেকফাস্ট করে যাবে। আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি। তোমাকে ড্রপ করে দেবে বাড়ি। আর আজ আর অফিস আসার দরকার নেই। ”
কথাগুলো শুনে সৌমী ইতঃস্তত স্বরে বললো,
——-” না না স্যার। কাউকে ড্রপ করতে হবে না। আমি বাসে চলে যাবো। ”
এই কথায় অর্জুন শান্ত স্বরে বললো,
———” না। সারা রাত জেগে বাসে যাওয়ার দরকার নেই। ”
কথাটা কেমন অর্ডারের সুরে বললো অর্জুন যে সৌমী আর না বলতে পারলো না।
চলবে।