মম হৃদয় বিহারিনী পর্ব-২২

0
1

#মম_হৃদয়_বিহারিনী
#ঐশী_রানী_রক্তিমা
২২.
গোধূলি বেলা পেরিয়ে ধরিত্রীতে সন্ধ্যার আগমন।সেই সাথে সাথে আরম্ভ হয় কৃত্রিম আলোয় অনামিশা দুর করার কার্যকলাপ।গ্রামে তখনো ইলেকট্রনিকসের দেখা মিলেনি।তার ছোঁয়া আসতে এখনো যুগ বাকি বোধহয়!
মশালের অগ্নিতে প্রজ্বলিত দোতলার বারান্দায় হাঁটছে রাই।পরনের আটপৌরে শাড়ির লম্বা আঁচল মেঝে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে।নুপুরের সুক্ষ্ম আওয়াজে মুখরিত হচ্ছে বারান্দা খানা।রাই নিজের কক্ষে না গিয়ে প্রভা-আভার কক্ষে থামলো।পূর্ণ তাদের অংক করতে দিয়েছে।দুজন হারিকেনের আলোয় পাশাপাশি বসে বই থেকে প্রশ্ন দেখে অংক করছে।রাই ওদের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে এবার তাকায় পূর্ণের দিকে।পরনে এখন মেটে রঙের একটা পাঞ্জাবি।সুঠাম লোকটার দেহের সাথে লেপ্টে সেটা।চোখের চশমায় হারিকেনের আলোর প্রতিফলন আর লোকটার গম্ভীর মুখ।ছাদে রাইকে দেখে সিগারেট লুকানো পূর্ণ আর এই পূর্ণর মাঝে বেশ তফাৎ।রাই তাদের তিনজনকে অল্পবিস্তর চমকে দিয়ে আধখোলা দরজায় মুঠো করে রাখা হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে দুবার টোকা দিলো।হাতের সোনার বালাও ঝংকার তুললো তাতে।তিনজনের দৃষ্টিই তখন তার দিকে।রাই পূর্ণের দিকে তাকিয়ে মৃদুস্বরে বলে উঠলো,

“ভেতরে আসতে পারি মাস্টার মশাই?”

পূর্ণ রাইয়ের দিকে তাকিয়ে চশমাটা একটু তুলে দিলো।তারপর বললো,

“আসুন।”

রাই পূর্ণের সামনে এসে দাঁড়ালে থতমত খায় সে।আভা প্রভা তাদের দিকে প্রশ্নাত্মক দৃষ্টিতো তাকিয়ে।ব্যাপারটা পছন্দ হয় না পূর্ণর।গম্ভীর স্বরে আদেশ ছুঁড়ে,

“অংকে মনোযোগ দাও।ভুল হলে শাস্তি আছে।”

রাই ডান হাতের মুঠো থেকে কিছু বের করতে করতে ভ্রু কুঁচকে পূর্ণর দিকে চায়।ছাত্রীদের সামনে তার কথা বলার ধরনটা একটু ভিন্ন।অথচ তার সাথে লোকটার কথার ধরনে সে ভেবেছিলো সে লোকটা অনেকটাই নরম প্রকৃতির!

রাই এসব চিন্তা দুরে ছড়িয়ে ডানহাতের মুঠোয় নিয়ে আসা টাকার নোটটা বাড়িয়ে দিলো পূর্ণর দিকে।বললো,

“আপনার সম্মানি।মামা ব্যস্ত থাকায় আমাকে দিয়ে পাঠালেন।”

পূর্ণ টাকাটা নিলে রাই প্রশ্ন করে বসলো,

“এই সম্মানির কত অংশ শেষ হয় নেশা করার পেছনে?”

আভা-প্রভা থাকায় রাই খানিক আস্তেই বলেছে কথাটা।কিন্তু পূর্ণর প্রতিক্রিয়া ছিল দেখার মত।চশমার অগোচরে থাকা তার দুই নেত্র প্রকট আকার ধারণ করেছে।রাইয়ের দৃষ্টি স্বাভাবিক।পূর্ণ গম্ভীর হয়ে তাকায় এবার।শক্ত আওয়াজে বলে,

“আপনি কিন্তু আমাকে মিথ্যে অববাদ দিচ্ছেন মহোদয়া।আমি নেশা করি?এমন মনে হয় আপনার?”

“সিগারেট খান তো।সেটাও তো একটা নেশা। সবচেয়ে বাজে নেশা।”

পূর্ণ রাইয়ের থেকে দৃষ্টি ছড়িয়ে অন্যদিকে তাকালো।এই রমনীর নিকট ধরা পরে লজ্জাবোধ হচ্ছে তার।থমথমে মুখে তবুও সে অস্বীকার করে বসে,

“আপনি মিথ্যে বলছেন!”

রাই ভ্রু উঁচিয়ে তাকায়।বলে,

” অধিকাংশ পুরুষরা বোধহয় সিগারেট খায় নিজেদের পুরুষ প্রমাণ করতে!সিগারেট খাওয়া তাদের নিকট গর্ব।কিন্তু আপনি তো এই পুরুষত্বকেই অপমান করছেন!”

রাইয়ের খোঁচাপূর্ণ কথা।পূর্ণ এবার পূর্ণদৃষ্টি মেলে তাকায়।অপরুপ মুখশ্রীতে হাসির রেখা নেই।মেয়েটাকে সে হাসতে দেখেনি।হাসে বোধহয়!তার সামনে নয়।তাদের তো হাসাহাসির সম্পর্কও নয়।কিন্তু কুমারী মেয়ের এমন নিরস চেহারা চোখে বাজে পূর্ণের।পূর্ণের মৌনতা দেখে রাই ফের মুখ খোলে।বলে,

“ছাদে আপনার ফেলে দেওয়া সিগারেট খুঁজে পেয়েছি আমি।সত্য অস্বীকার করবেন না।যত বাজেই হোক না কেন তা।”

কথাখান বলে রাই প্রস্থানের জন্য ঘুরে দাড়ায়।আভা -প্রভা তাদের দিকে গোয়েন্দার দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল।বড় দিদি চলে যাওয়ার জন্য ঘুরে দাড়াতেই পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় তার দিকে।রাই হাঁটা থামিয়ে দাড়িয়ে পরে হঠাৎ।চট করে ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,

“বড়দের কথায় কান দেওয়ার অভ্যেস বদলাও দুজন।যতটা মনোযোগ এখানে দিয়েছো অন্তত ততটাও মনোযোগ পড়াশোনায় দিলে ভালো হয়।”

.

ভোরের আলো অন্ধকার ঠেলে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পরতেই ঘুম ভাঙে আমার।চোখ খুললেই প্রতিদিনকার ন্যায় অক্ষিপটে ভেসে উঠে ধ্রুবর বক্ষদেশ।লোকটা আমায় চেপে জড়িয়ে ধরে ঘুমায়।উদরের কাছটায় থাকে তার হাতের আধিপত্য।আলতো করে ধরে রাখে ঘুমের সময়।প্রয়োজন বাঁধন শক্ত করে নিরবে শাসায় আমাকে।আজও ঘুম ভাঙতেই ধ্রুবর বাহুতে নিজের অবস্থান অনুভব করলাম।মুখটা উঁচু করে তাকালাম ওনার ঘুমন্ত মুখশ্রীর দিকে।ঘন পাপড়ি ঘেরা আঁখি বদ্ধ।মুখ তুলে তাকাতেই নিশ্বাস এসে আছড়ে পরছে চোখুমুখে।আমি মুচকি হেসে তাকালাম।হঠাৎ দুষ্টুমি করতে মন চাইলো আমার।বা হাতের তর্জনী দিয়ে ছুঁয়ে দিলাম ওনার সরু নাকের ডগা।পরপর অনেকবার।উনি এবার সোজা মুখ গুঁজলেন আমার গলায়।আমি শিউরে উঠলাম।একপ্রকার শক্তি দিয়ে ঘুমন্ত ধ্রুবর থেকে ছাড়া পেয়ে স্নানঘরে গেলাম হাত মুখ ধুতে।আজকে আমাদের গ্রামে যাওয়ার তারিখ।আমি হাত মুখ ধুয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বেরিয়ে আসলাম।ধ্রুবর ঘুম তখনো ভাঙেনি।আমি হাতের অর্ধভেজা গামছাটা বারান্দায় শুকাতে দিয়ে এসে মৃদুস্বরে ডাকতে লাগলাম ওনাকে।ক্ষনকাল পরে চোখ মেলে তাকালেন উনি।ক্ষনকাল আমার দিকে তাকিয়ে ফের বন্ধ করে নিলেন চোখজোড়া।আমি তাড়া দিলাম এবার।নিকটে এসে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলে উঠলাম,

“উঠুন।বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে কিন্তু!আজকের দিনের পরিকল্পনা মনে নেই?”

ধ্রুব আমার হাতের সরু কব্জিখানা ধরে ফেললেন চট করে।দুহাতে শাখা পলার সাথে একটা করে সোনার বালাও স্থান পেয়েছে আজকাল।ওইদিন পরীক্ষা দিয়ে আসার পর আর খুলে রাখা হয়নি।কেন যেন মনে চাইনি!
ধ্রুব সেদিন হাতখানা ধরে পর্যবেক্ষণ করে বলেছিলেন,

“একটুও বাজে লাগছে না দেখতে।তোমার চোখে বোধহয় সমস্যা তাই এই খুলে রাখতে চাইছো ফের।”

এটাই কারণ বোধহয় তার কারণ।লোকটার আবদার করার ধরন একটু আলাদা।শান্ত,নম্রস্বরে প্রশংসা করবে।তারপর তার সেই করা প্রশংসায় মিশে থাকা আবদার লুকিয়ে ফেলবে।বোধহয় কারণ হলো আমার একবার বলা কথা।আমার গয়না পছন্দ নয়।
আজও হাতটা ওনার অধিনস্ত করে ঘুম জড়ানো কন্ঠে শুধালেন,

“কি পরিকল্পনা আজকের?মিসেস ধ্রুব দেবনাথকে ভালোবাসা নিবেদন করা ছাড়া?”

আমি সরু চোখে তাকালাম।লোকটা আদোতে ভুলে যায়নি।আমার মুখ থেকে শোনার প্রত্যাশায় এই প্রশ্ন।আমি ভ্রু খানিক কুঁচকে ওনার মুখোমুখি হয়ে বলে উঠলাম,

“গ্রামে যাচ্ছি আজকে আমরা।”

“আচ্ছা?”

“অবশ্যই।আর আপনি বলেছিলেন দ্রুত বের হবেন যাতে খুব বেশি রাত না হয় পৌঁছাতে।কারণটা হলো যাতে আমি ট্রেনে যাওয়ার সময় প্রকৃতি দেখতে দেখতে যেতে পারি।একটুও বিরক্ত না হই।”

ধ্রুব মনোযোগ দিয়ে শুনলেন আমার কথা।ওনার ঘুম জড়ানো গভীর দৃষ্টি আমাতে নিবদ্ধ।গায়ের শার্টের কুঁচকে থাকা কলারটা আমি ঠিক করতে করতে বললাম,

“উঠুন।এক্ষুনি বিছানা ছাড়ুন।আমি গুছিয়ে রাখছি।”

ধ্রুব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানা ছাড়লেন।উনি স্নানঘরে ঢুকতেই আমি বিছানা গুছিয়ে রান্নাঘরে এলাম।আপাতত আমার মাথায় পড়ার চাপ নেই।খুব নিশ্চিন্ত!আর আজকে খুব খুশিও।অনেকদিন পর কাঙ্ক্ষিত একটা চেহারা অক্ষিপটে ভাসবে আমার।একটা রুপশী নারীর হাস্যজ্জ্বল মুখশ্রী!অপ্সরা সমতুল্য সৌন্দর্যময়ী সুহৃদয়া নারী।রাই!

দ্বিপ্রহর শুরু হওয়ার আগেই ট্রেনে উঠে পরলাম আমরা।এইনিয়ে তৃতীয়বারের মতো ট্রেনেভ্রমণ আমার।ধ্রুবর কয়বার জানা নেই।আমি ধ্রুবর কাঁধটা দখল করে বাইরে দৃষ্টি দিতে দিতে গ্রামে পৌঁছানোর প্রতিক্ষা করতে লাগলাম।সন্ধ্যা হওয়ার পূর্বে ট্রেন এসে থামলো স্টেশনে।একটা ভ্যান ভাড়া করে তাতে চড়ে বসলাম আমরা দুজন।আমার হাতটা আজও ধ্রুবর মুঠোয়।ওনার এই কাজে আমার যে কি প্রশান্তি অনুভব হয়।ভ্যানটা গ্রামের রাস্তায় ঢুকতেই একটা শিরশিরে অনুভূতি হলো আমার।কায়াজুড়ে অন্য এক এক শিহরণ।এই স্থানে রাস্তায় আমার কিছু সুখ স্মৃতি হয়ে আছে।দুর থেকে নজরে আসা স্রোতস্বিনীটার বুকে রয়েছে আমার প্রেমের প্রথম স্মৃতি লেপ্টে।ধ্রুবর আমাকে করা সেই প্রশংসা!আজও কানে বাজে!আমি ভাবনায় ডুবতে ডুবতে ধ্রুবর বাহু চেপে ধরি।

মিনিট কয়েক বাদেই ভ্যানটা এসে থামে জমিদার বাড়ির সামনে।রুদ্ধশ্বাস ফেলে ভ্যান থেকে নেমে দাড়াই আমি।মাথার ঘোমটা ভালোভাবে ধরে দৃষ্টি মেলে তাকায় বিশাল অট্টালিকার দিকে।যার প্রতিটি কোনায় কোনায় আভিজাত্য ও গল্প মিশে আছে।
ধ্রুব গেট ঢেলে আমাকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেন।আমি শুকনো ঢোক গিললাম।এ বাড়িতে প্রথমবার প্রবেশ করার পরে আমার সাথে তেমন ভালো কিছু হয়নি।সেদিনও একমাত্র ভরসা আমার স্বামী,অর্ধাঙ্গ ধ্রুব ছিলেন।আর আজও!উনি ব্যতিত এবাড়িতে যেন আমি বড় নিরুপায়।পেছনে কালো ছায়া লেগেই থাকে।ধ্রুব আর আমি বসার ঘরে প্রবেশ করতেই শাশুড়ী মার গলার স্বর শুনতে পেলাম।আজ আমাদের আগমনের খবর ওনাদের আগে থেকেই জানা।চিঠি পাঠানো হয়েছিল।

বসার ঘরে এই সময়ে বয়োজ্যেষ্ঠরা আলাপে ডুবে থাকেন।আমার আর ধ্রুবর আগমনে সকলে এগিয়ে এলেন।মেজো কাকি একটু দুরে দাড়িয়ে রইলেন এবার।অন্ধকারে বিষয়টা অগোচরে রয়ে গেল।আমি কাঙ্ক্ষিত রমনীর মুখখানা খুঁজছিলাম।পেলাম না!

হঠাৎ আমাকে অবাক হয়ে দিয়ে ধ্রুব মেজো কাকি মনির দিকে এগিয়ে গেলেন।হাস্যজ্জ্বল মুখশ্রী ওনার।আমি ভ্রু কুঁচকেই তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে।মশালোর আলোয় মেজো কাকি মনির সধবা রুপ দৃশ্যমান সকলের নিকট।ধ্রুব ওনার হাতে ওনার পছন্দের রসগোল্লার হাসি তুলে দিলেন।আমি ভ্রু কুঁচকে সেদিকে এগিয়ে গেলাম খানিকটা।তখনই ধ্রুবর শক্ত, কঠোর স্বর কানে বাজলো,

“কাকি মনি ছেলেকে শাস্তি থেকে বাঁচানোর জন্য দুরে পাঠিয়েছেন।আপনার কি ধারণা সময় গেলে ধ্রুব তাকে ক্ষমা করে দিবে?এমনটাই মনে হয়?ভুল ভাবছেন।আমার ঘরের সম্মান,আমার গৃহলক্ষ্মীকে অপবিত্র করার দুঃসাহস দেখিয়েছে সে।আমি ভুলে গেছি ও আমার ভাই হয়।পুজোয় ও আসছে তো নাকি?তারপর এসে কান্নাকাটি করে ক্ষমা চাইবে আমার কাছে?”

কাকি মনির মুখশ্রীর জল শুকিয়ে গেছে যেন।উনি ভীত দৃষ্টিতে তাকিয়ে ধ্রুবর দিকে।কি কঠোর ধ্রবর বলার ধরন!

“এটা একদম ভাববেন না।নাহলে ওর গর্দান যাবে।আমি ওকে ক্ষমা করবো না।ওর শাস্তি এটাই হবে সারাজীবনের জন্য এই বাড়িতে আর আসতে পারবে না ও।আপনি ওকে অন্যত্র না পাঠালে এমনটা করতাম না আমি।শাস্তি অবশ্যই পেতো তবে আপনার চক্ষের সামনে থাকতো।কিন্তু এবার শুভ দেবনাথের মৃতদেহও আসবে না এই বাড়িতে।”

কথাখানা বলে ধ্রুব সিঁড়ির দিকে গেলেন।পেছন পেছন একজন চাকর আমাদের ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছেন।আমিও সিঁড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগলাম।তবে আমার উদ্দেশ্য ভিন্ন।
দোতলায় পৌঁছে আর উপরে উঠলাম না আমি।আমার গন্তব্য এখানেই।যেহেতু চিঠি দেওয়া হয়েছিল তাই সকলের জানা আজ আমরা ফিরছি।এমনকি রাইয়েরও।তারপরও সে আমাদের স্বাগত জানাতে গেল না বসার ঘরে!আমার পদচরণে তখন সুক্ষ্ম অভিমানের ছাপ।

রাইয়ের কক্ষের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে অচেনা একজনকে চোখে পরলো।লোকটা বোধহয় শিক্ষক।আভা-প্রভাকে পড়াচ্ছে।আমি দৃষ্টি সরিয়ে রাইয়ের কক্ষের সামনে এসে দাড়ালাম।দরজাটা চাপানো।
আমি সবসময়ের মতো দরজায় কড়া নেড়ে জিজ্ঞেস করে উঠলাম,

“ভেতরে আসবো?”

ক্ষনকাল পরেই দরজা খুলে সামনে দাড়ালো রাই।মুখে একরাশ হাসি লেপ্টে রয়েছে।শুভ্র মুখশ্রীতে কি এক নুর!

“কেমন আছো?ভেতরে আসো।তোমারই প্রতিক্ষায় ছিলাম।”

আমি অভিমানী মুখশ্রী নিয়েই প্রবেশ করলাম রাইয়ের কক্ষে।প্রতিত্তোরে বলে উঠলাম,

“ঈশ্বর ভালোই রেখেছেন।তুমি কেমন আছো?”

“এইতো!”

আমি ক্ষনকাল তাকিয়ে রইলাম তার দিকে।গায়ের আভূষণের চমক মেয়েটাকে দৈব্য করে তুলে।আমি সেসব দেখতে দেখতে অভিমানী স্বরে বললাম,

“তুমি আমাদের স্বাগত জানাতে নিচে গেলে না যে?”

রাই মিষ্ট করে হাসলো।আমার থুঁতনিতে আলতো স্পর্শ করে বললো,

“আমি সেখানে থাকতে এখন তুমি আমার খোঁজ নিতে আসতে?কতদিন একজন খোঁজ নিতে আসে না আমার!দরজায় কড়া নেড়ে শুধায় না,আসার অনুমতি আছে কি না।এইগুলোর জন্য আমার হৃদয় যে পিপাসিত হয়ে ছিলো।”

চলবে…