মায়াতলীর মোড়ে পর্ব-০৭

0
31

#মায়াতলীর_মোড়ে – [০৭]
লাবিবা ওয়াহিদ
[কপি সম্পূর্ণ নিষেধ]

মাহারিন প্রথমে ঘুরবে না বললেও তাহমিদ মাহারিনের কাঁধের ব্যাগ টেনে ঘুরতে নিয়ে যায়। মাহারিন শুরুতে রাগ দেখালেও এখন তার ঘুরতে মন্দ লাগছে না। শপিংমলটা ভীষণ বড়ো। সারিবদ্ধ একেকটা শো-রুমে নজর বুলাচ্ছে সে। মাহারিন যখন বিভিন্ন জিনিসে মগ্ন, তখন এক জোড়া চোখ সব ছেড়ে তাকেই দেখতে ব্যস্ত। তাহমিদ হঠাৎ বলল,
–“আইসক্রিম খাবেন?”

মাহারিন বারণ করলো না, কেউ আইসক্রিম সাধলে বারণ করতে নেই। তাহমিদ তাকে আইসক্রিম খাওয়াতে নিয়ে গেল এক তুর্কিশ আইসক্রিম জোনে। ওখানে আইসক্রিম বিক্রেতা নানান ছল করে আইসক্রিম নিয়ে। মাহারিনের ফুরফুরে মেজাজ মুহূর্তেই গোমড়া হয়ে যায়। সে তো ভুলেই গিয়েছিল, তাহমিদ সোজা কথার মানুষ না। এজন্য আইসক্রিমও খাওয়াতে নিয়ে এলো ত্যাড়াব্যাঁকা ছলে। যখনই মাহারিন আইসক্রিম ধরতে যাচ্ছে তখনই বিক্রেতা ফট করে সরিয়ে ফেলছে আইসক্রিমটা, আবার হাতে দিলেও সেটা আবার নিয়ে নিচ্ছে। মাহারিন নাক ফুলিয়ে কোনো ছলেই আর হাত বাড়ালো না। উলটো গরম চোখে তাহমিদের দিকে তাকালো। তাহমিদ কোনোরকমে হাসি থামিয়ে বিক্রেতার উদ্দেশে বলল,
–“বেগম রেগে যাচ্ছে ভাই, দিয়ে দেন।”

বিক্রেতা ছেলেটা প্রাণবন্ত। সেও মুচকি হেসে কোণটা টিস্যুতে জড়িয়ে মাহারিনের সম্মুখে ধরলো। মাহারিন সেটা নিতেই তাহমিদ পেমেন্ট করে দিলো। পরপর নিজেও প্যাকেটজাত এক কোণ নিয়ে নিলো। মাহারিন তখনো চুপ করে ফুঁসছে। তাহমিদ নিজের আইসক্রিমটা মাহারিনের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
–“আমার আইসক্রিমের প্যাকেটটা খুলে দিন তো!”

তাহমিদের এমন সরল গলা শুনে মাহারিনের রাগ কোথায় যেন উবে গেল। মাহারিন ঘাড় বাঁকিয়ে তাকালো মানুষটার দিকে। নেভি ব্লু শার্ট পরেছে, কী দারুণ মানিয়েছে লোকটাকে। পরপর মাহারিনের মনে পড়ল তাহমিদ তখন তাকে বেগম ডেকেছে। “বেগম” ডাকটা কানে ধাক্কা খেতেই মাহারিন থ বনে যায়। তাহমিদের হাত থেকে কোণটা নিয়ে উপরের কাগজ ছিঁড়ে দিলো। তাহমিদ সেটা নিয়ে থ্যাঙ্ক ইউ জানাতেই মাহারিন অন্যদিকে তাকিয়ে আইসক্রিম খেতে লাগলো। এখন তার কেন যেন তাহমিদের সঙ্গ ভালো লাগছে। তাহমিদ হঠাৎ বলল,
–“তোমার এত রাগ কেন?”

মাহারিন অন্যমনস্ক হয়ে জবাব দিলো,
–“আপনি ত্যাড়া বলে, তাই।”

তাহমিদ ঠোঁট টিপে হেসে বলল,
–“এর মানে বিয়েতে তুমি রাজি?”

মাহারিন চট করে তাহমিদের দিকে চেয়ে অপ্রস্তুত গলায় বলল, “একদম না।”

এমন সময়ই তাদের পথ আগলে দাঁড়ালো সেই ছেলেটা, যে মাহারিনকে কিছুদিন আগেই প্রপোজ করেছিল। ছেলেটার প্রতি মাহারিনের চাপা রাগ মাথায় নাড়াচাড়া দিয়ে উঠলো সহসা। ছেলেটা হেসে মাহারিনকে বলল,
–“হাই মাহারিন।”

মাহারিন চট করে তাহমিদের বাহু আগলে মুখে চওড়া হাসি টেনে বলল,
–“হাই, কেমন আছ?”

ছেলেটা মাহারিনের এমন কাণ্ডে থতমত খেলো। সে একবার মাহারিনের দিকে তো আরেকবার তাহমিদের দিকে তাকাচ্ছে। নজর বুঝতে পেতে মাহারিন হাসি-মুখেই বলল,
–“উনি আমার উড বি হাসবেন্ড। কিছুদিন পরেই আমাদের বিয়ে।”

ছেলেটা অপ্রস্তুত হয়ে তাহমিদের প্লাস্টার করা হাতের দিকে তাকালো। মুখ কিছুটা বিকৃত করে বলল,
–“এরকম অবস্থায় বিয়ে?”

ছেলেটার নাক সিটকানো মাহারিনের বিশেষ পছন্দ হলো না। ভীতুর ডিম, প্রেম করে বেড়ানো ছাগলকে দিয়ে এমনিতেও কিছু আসা করা যায় না। সঠিক পুরুষ হলে মাহারিনকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার আগে বাসায় বিয়ের প্রস্তাব দিত। মাহারিনেরও বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোর জন্য ঘ্যানঘ্যান করা লাগত না। তাই বলা যায় সব রাগ একসাথেই হানা দেয় মাহারিনের মধ্যে। মাহারিন চওড়া হাসি বজায় রেখেই বলল,
–“কেন নয়? যে আমার বাড়ি বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে, যে আমার আব্বুকে দেখে মিউমিউ করে না, যে আমার সমস্ত রাগ দেখেও আমাকে মেনে নেয় তাকে আমি যেকোনো অবস্থাতেই বিয়ে করব। আর আমার উড বি তোমার থেকেও হাজারগুণে ভালো.. সেটা হোক রূপ, গুণ কিংবা সাহসের দিক থেকে।”

অপমানে ছেলেটার মুখটা থমথমে হয়ে যায়। মাহারিন এবার তাহমিদের দিকে তাকাতেই দেখলো তাহমিদ অদ্ভুত নজরে তার দিকেই চেয়ে। মাহারিন মিনমিন করে বলল,
–“আপনার ভিজিটিং কার্ড কোথায়?”

তাহমিদ অস্ফুট স্বরে শুধালো, “হ্যাঁ?”
–“আরে কার্ড লাগবে।”

তাহমিদ মন্ত্রমুগ্ধের মতো মানিব্যাগ বের করে মাহারিনের হাতে দিলো। মাহারিন মানিব্যাগ থেকে কার্ড বের করে ছেলেটার দিকে সেই কার্ড বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
–“আমার উড বি একজন নামকরা অর্থোপিডিক্স। তোমার হাত-পা ভাঙলে চলে এসো। বেস্ট ট্রিটমেন্ট পাবা।”

কার্ডটা নিয়ে চোখ বুলালো ছেলেটা। পরপর বলল,
–“এমন ভাবে বললে যেন তুমি চাও আমার হাত-পা ভাঙুক?”

মাহারিন হেসে বলল, “আমি কখনো শত্রুর খারাপ চাই না। আসেন তাহমিদ সাহেব, আপনার আম্মা হয়তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।”

বলেই তাহমিদের বাহু আগলেই চলে গেল। কিছুদূর আসতেই তাহমিদ বলল, “স্ক্রিপ্ট ছাড়াই এত সুন্দর অভিনয়?”

মাহারিন মুখ বাঁকিয়ে বলল,
–“এই ছেলেটাকে আমার দেখতে ইচ্ছা করে না।”

–“এজন্যই আমার প্রশংসা?”

মাহারিন আনমনে বলল, “হুঁ।”

–“তাহলে স্বীকার করছ তো, আমিই তোমার জন্য পার্ফেক্ট চয়েজ?”

মাহারিন থতমত খেয়ে তাহমিদের দিকে চেয়ে বলল, “একদম না।”

–“তাহলে এখনো আমার হাত ধরে আছেন কেন?”

মাহারিন এতক্ষণে উপলব্ধি করলো সে এখনো তাহমিদের বাহু আগলে হাঁটছে। ছিটকে সরে গেল সে। তাহমিদের দিকে তাকাতেই দেখলো মিটিমিটি হাসছে সে। মাহারিন অনুভব করলো তার কান জোড়া কেমন গরম হয়ে আছে। সে তাহমিদকে রেখেই আগে আগে চলে গেল। তাহমিদ মাহারিনের পিছু যেতে যেতেই আপনমনে হাসলো। বলল,
–“তোমাকে চিনতে শুরু করেছি তবে। তোমার রাগের ওষুধ আমি হবো নাহয়।”

মাহারিন বাড়ি পৌঁছে সর্বপ্রথম ফ্রেশ হয়ে নেয়। গরমে অস্থির অবস্থা তার। এসির নিচে বসতেই ফোনে মেসেজ আসার রিংটোন বাজল। মাহারিন মেসেজ না দেখে আগে ফ্রিজ থেকে জুস নিয়ে আসলো, গলা ভেজাতে হবে। গলা ভিজিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আজকের দিনটা ভাবতে লাগলো। তাহমিদের সাথে সময়টা মন্দ কাটেনি। মাহারিন ভেবেছিল তাহমিদ হয়তো তাকে ঘুমের ওষুধ নিয়ে খোঁচা দিবে, মজা নিবে। কিন্তু এরকম কিছুই সে করেনি, উলটো ভাব ধরেছে এমন যেন কিছুই হয়নি। মাহারিনের চোখে ঘুম জড়ো হতেই আয়েশা তাকে ডাকলো রাতের খাবারের জন্য। খাবার শেষ করে এসে ফোন ধরতেই মেসেজ চোখে পড়ল। মেসেজের কথা মাহারিনের মনেই ছিল না। তাহমিদ মেসেজ করেছে। তাতে লেখা,

–“আপনার রুচি বেশ খারাপ মাহারিন। আমার মতো হ্যান্ডসাম ছেলেকে রেখে আপনি ওমন একটা ছেলেকে পছন্দ করেছেন বিয়ের জন্য? এবার বুঝেছি আঙ্কেল কেন আপনার পছন্দকে এত গুরুত্ব দিত না।”

মাহারিনের নরম মেজাজ গরম হতে সময় নিলো না। তাহমিদের প্রতি তার যতটুকু ভালো লাগা জন্মেছিল তা নিমিষেই চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। রাগের মাথায় কী থেকে কী করবে সেটাও ভেবে পেল না। বেশ কিছুক্ষণ বসে, নিজেকে সামলালো। মাহারিন লম্বা এক নিঃশ্বাস ফেলে মেসেজ লিখল,
–“আমার ব্লকলিষ্টে দুইদিনের জন্য আপনাকে স্বাগতম।”

মাহারিন সত্যি সত্যি তাহমিদকে সমস্ত জায়গা থেকে ব্লক করলো। মাহারিন শান্তি পেল। মিনমিন করে বলল, “একে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”

মাহারিন বিয়ে করতে না চাইলেও বিয়ের সমস্ত আয়োজন পরেরদিন থেকেই শুরু হয়ে গেলো। বাড়ি জুড়ে ডেকোরেশন, বাড়ির সামনের বড়ো বাগানেও টুকটাক বাঁশ টানানো হয়েছে। বিয়ের প্রোগ্রান চাইলে যেকোনো রিসোর্ট কিংবা কমিউনিটি সেন্টারে সম্ভব ছিল। কিন্তু মোরশেদ সাহেব একমাত্র মেয়ের বিয়ে নিজের বাড়িতেই সম্পন্ন করতে চান। এটা তাঁর অন্যতম ইচ্ছে। একমাত্র বিয়েতে কোনো প্রকার ত্রুটি রাখবেন না।

বিয়ের আয়োজনের পাশাপাশি মাহারিনের বাড়িতে আত্নীয়-স্বজনরাও একে একে আসতে শুরু করেছে। মোরশেদ সাহেব আত্নীয়দের রাখার জন্যেও তার এপার্টমেন্টের দুটো ফ্ল্যাট খালি রেখেছেন। আয়োজন বলতে গেলে ভালোই করতে যাচ্ছেন।

এতকিছুর মধ্যে মাহারিনের মন ভালো নেই। বিয়ের তারিখ যত এগিয়ে আসছে, ততই মাহারিনের মধ্যকার অস্থিরতা, কনফিউশন হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে। সে এখনো বিয়ে করবে নাকি করবে না সেই দুশ্চিন্তায় আছে। যতই হোক, বিয়েটা সারাজীবনের ব্যাপার। বিয়ে পর্যন্ত ভাবনার জন্য একেকটা মিনিটও অধিক গুরুত্বপূর্ণ। গতকালও বাবার সাথে বিয়ের বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছে। মোরশেদ সাহেব তখন গম্ভীর গলায় বলেছিলেন,

–“আমি আমার মতো আয়োজনের দিক থেকে এগোব। আর তুমি ততদিনে ভাবো, চিন্তা করো। বিয়ের এক মিনিট আগেও যদি তোমার বিয়েতে অমত থাকে তাহলে বিয়ে করা লাগবে না।”

মাহারিন কিছু বলতে পারেনি। গতকাল মুখের উপরও বলতে পারেনি যে, সে বিয়ে করবে না। আয়েশা তো মেয়েকে সমস্ত কাজের মাঝেও চোখে চোখে রাখার চেষ্টা করছেন। সেঁ নিজে না পারলেও তুলি, বর্ষাকে সিসি ক্যামেরা হিসেবে লাগিয়ে দিচ্ছেন। মাহারিন এসবে বেশ বিরক্ত। সে বোকা নাকি যে সুই-সাইড করতে যাবে? আগেরবারও সুই-সাইড করতে যায়নি। শুধু বোঝায় ভুল হয়েছিল তার।

মাহারিন নিজের ঘরে আনমনে কাপড় ভাজ করছিল। এমন সময়ে বর্ষা কলেজ ড্রেস পরা অবস্থাতেই মাহারিনের কাছে ছুটে এলো। কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল, “আমার আর তুলির ড্রেস এখনো ট্রেইলারে আপু। আমি টাকা নিতে ভুলে গিয়েছিলাম বলে আসার সময় আনতে পারিনি। তুমি চলো না আমার সাথে! একা কেউ বের হতে দিচ্ছে না।”

মাহারিন ভ্রু কুচকে বলল,
–“লোকের কী অভাব পড়েছে এনে দেওয়ার জন্য?”

–“হ্যাঁ! সবাই তোমার বিয়ের কাজে ব্যস্ত, কেউ পাত্তাই দিচ্ছে না আমাকে। আজকে ড্রেস না আনলে আমি পরব কী আকদে?”

–“ঢং করিস না। আকদ পরশু দিন। আজই আনতে হবে এমন কোনো কথা নেই। চুপচাপ বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেতে বস।”

বর্ষা চট করে মাহারিনের হাত ধরে বলল,
–“আগামীকাল রবিবার, মার্কেট বন্ধ থাকবে। আজকে সবাই যেভাবে ব্যস্ততা দেখাচ্ছে আকদের দিন কাউকে খুঁজে পাব বলে তোমার মনে হয়? প্লিজ আপু চলো না! তুমি তো বিয়ে একবারই করবে, এই একবারেই আমাদের কষ্ট দিও না।”

বর্ষার মাত্রাতিরিক্ত জোরাজুরিতে মাহারিন রাজি না হয়ে পারলো না। অগত্যা, বর্ষাকে কলেজ ড্রেস পালটে দ্রুত আসতে বলল। বর্ষাও তৎক্ষণাৎ চলে গেল। তুলি নেই, শেষ বিকালে স্কুল থেকে ফিরবে। মাহারিন কোনোরকমে বোরকা আর হিজাব পরে নেয়। বর্ষা আসতেই দুজনে মিলে বেরিয়ে গেলো মার্কেটের উদ্দেশে। মার্কেটের কাছাকাছি ফুটপাত ধরে কিছি দোকান আছে। সেসব দোকানগুলো ছোটো, বাহারী। ফুল, জামা, কসমেটিকস, ঘর সাজানোর সামগ্রী ইত্যাদি দিয়ে বিভিন্ন দোকান। হোম ডেকোরেশনের প্রতি মাহারিন কিছুটা সৌখিন। অনেকদিন যাবৎ এই দোকানগুলি ঘুরে দেখবে দেখবে করেও আসা হয় না। আজ সুযোগ কোনো মতেই হাতছাড়া করলো না। বর্ষাকে জামা আনতে মার্কেটে পাঠিয়ে দিয়ে সে দোকানগুলো ঘুরতে চলে যায়। ঘর সাজানোর দোকানগুলোর দিকেই চলে যায় সে। এক দোকানে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ল্যাম্প, শো-পিছ ঘাটাঘাটি করতে থাকে। এমন সময়ই এক কণ্ঠ তাকে ডাকল,
–“আপনি মাহারিন না?”

মাহারিন চমকে পিছে ফিরে তাকালো। প্রতিবেশি সেই জুনিয়র ছেলেটা। নাম বোধ হয় সায়ন। ইব্রাহিম যে তুলিকে কাগজ পাঠাত সেই ছেলের বড়ো ভাই। মাহারিন ভ্রু কুচকে সায়নের দিকে তাকাতেই ছেলেটি হেসে বলল,
–“আপনার কী আদৌ বিয়ে হচ্ছে? বিয়ে ছেড়ে এখানে কী করছেন?”

মাহারিন হাতের ল্যাম্পটা দেখিয়ে বলল,
–“দাঁড়িয়ে কী করব? দেখছি, কিনছি! এতে আমার বিয়েকে টানা কেন হচ্ছে?”

সায়ন মাথা চুলকে হেসে বলল,
–“সরি, গতবার আপনাকে ছোটো ভেবে উলটো পালটা বলে ফেলেছিলাম।”

মাহারিন মনে করার চেষ্টা করলো, সায়ন তো তাকে কিছুই বলেনি। মাহারিন বলল,
–“কিছুই বলোনি। খামাখা প্যারা নেওয়ার কিছু নেই।”

বলেই মাহারিন আবারও নিজের মতো করে শো-পিছ দেখতে লাগলো। একটা দেয়াল ঘড়ি তার পছন্দও হলো। সায়ন সেখানে স্থির দাঁড়িয়ে মাহারিনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলো, কিন্তু কী বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না। যখনই ভাবলো কিছু বলবে ওমনি সায়নের সামনে এসে দাঁড়ায় তাহমিদ। প্লাটার হাত গলায় ঝুলানো এক ছেলেকে এভাবে দেখে সায়ন কিছুটা অপ্রস্তুত হলো। ঘড়ি কিনে পেছনে ফিরতেই মাহারিন তাহমিদকে দেখতে পেল। তাহমিদকে দেখে সে চমকে গেল। এই অসময়ে তাহমিদ এখানে কী করছে?

তাহমিদ সায়নের দিকে চেয়ে বলল,
–“শি’জ মাই গার্ল। দূরে থাকো তার থেকে। নজর শো-পিছে স্থির রাখলেই আমি বরং খুশি হবো।”

চলবে—