#মায়াতলীর_মোড়ে – [১৮]
লাবিবা ওয়াহিদ
[কপি সম্পূর্ণ নিষেধ]
জোনিরা কানে বালিশ চেপে শুয়ে আছে। পাশের ঘর থেকে উচ্চ মিউজিকের শব্দ আসছে, যা জোনিরার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে রেখেছে। জোনিরা রাগে-দুঃখে শোয়া ছেড়ে উঠে বসে। এভাবে আর কত চলবে? জোনিরা দ্রুত হাতে ফোন নেয়। সেখানে একের পর এক তানভীর কল, মেসেজ করেই চলেছে। আবার কল আসতেই জোনিরা তা রিসিভ করে চেঁচাল।
–“কী সমস্যা? তুমি কী পাগল? এভাবে মাঝরাতে উদ্ভ্রান্তের মত গান ছেড়ে রেখেছ কেন? জিন-ভূতে ধরেছে?”
গানটা আচমকা বন্ধ হয়ে যায়। ওপাশ থেকে তানভীর বলল,
–“রুমের বাইরে আসুন।”
অতীষ্ঠ হয়ে জোনিরা তাই করল। তানভীর তার দরজার সামনে মুখে এক গাল হাসি টেনে বসা।
–“গুড ইভিনিং!”
–“তোমার কোনো কাজ-কর্ম নেই? রাত-দুপুরে ভিমরতিতে ধরে?”
–“ভিমরতির আরেক নাম ত আপনি, তাই ধরাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।”
জোনিরা বিরক্তির ‘চ’ উচ্চারণ করে বলল,
–“কী চাইছ?”
–“প্রেম করতে চাচ্ছি। এম আই?”
জোনিরা এমন লুক দিল যেন চোখ দিয়েই তানভীরকে ভষ্ম করে দিবে।
–“কাল আমার চেকআপ আছে। আপনার সাথে চেকআপে যাব আমি।”
–“উচ্ছন্নে যাও তুমি, আমাকে বলছ কেন?”
–“আমি তো আপনার সাথেই যাব।”
–“ঠ্যাকা পড়েনি আমার।”
–“পড়েছে।”
জোনিরা তানভীরের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে সে হুইলচেয়ারের হাতল ধরল। তা দেখে তানভীর বলল,
–“ওমা, কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
–“সুইজারল্যান্ড।”
বলেই তানভীরকে তার ঘরে পাঠিয়ে দেয়। দরজার মুখে দাঁড়িয়েই ধমকের সুরে বলল,
–“খবরদার তুমি যদি আমাকে আবার বিরক্ত করেছ। নয়তো একটা থাপ্পড়ও মাটিতে পড়বে না।”
জোনিরা শব্দের সাথে দরজা বন্ধ করে দিয়ে চলে গেল। তা দেখে হাসল তানভীর। জোনিরাকে জ্বালাতে, বিরক্ত করতে তার ভীষণ ভালো লাগে। গত দুইদিন যাবৎ জোনিরা তাদের বাড়িতে আছে। মেয়েটাকে রাগলে এতটা আদুরে লাগে। অনেকদিন পর মেয়েটার এত সান্নিধ্যে থাকতে পারছে সে। নয়তো ট্যুর সেরে প্রতিবারই সে হাসপাতাল গিয়ে জোনিরার অপেক্ষায় বসে থাকত। জোনিরাকে এক পলক দেখলেই তার বুকের সমস্ত ঝড় থেমে যায়, সেখানে নাড়া দেয় অবিরাম প্রশান্তি।
তানভীর বিছানা অবধি পৌঁছে কোনো রকমে হুইলচেয়ার ছেড়ে বিছানায় বসল। খাওয়া-দাওয়া, ওষুধ সবই হয়ে গেছে তার।
তানভীর শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগল তাদের প্রথম সাক্ষাতের কথা। তানভীর তখন সবে তার ট্রাভেল এজেন্সি ওপেন করেছে। নতুন হওয়ায় তেমন একটা মানুষের ভীড় নেই। তবুও সেবার ভালোই মানুষ হলো। প্রথম জার্নিতে তানভীর নিজে গাইড হিসেবে গেল। সে বাসে সবাইকে এটা সেটা ভাষণ দিয়ে সবে বসেছে। তার পাশের সিটে একটা মেয়ে ছিল। মেয়েটার ওড়নার আংশিক তার সিটে পড়ে যাওয়ায় সে উঠে মেয়েটার ওড়না দিতে যেতেই প্রথমবারের মতো জোনিরাকে দেখতে পায়। সুন্দরী, লম্বাটে মুখের নকশা, খোলা রিবন্ডিং করা চুল। চোখ জোড়া দেখা যায়নি বাদামী সানগ্লাসের জন্য। জোনিরার চোয়াল ছিল শক্ত, স্বাভাবিক। তানভীরের দিক থেকে চোখ সরিয়ে বাইরের দিকে নজর স্থির করে তখন।
পুরো জার্নিতে তাদের মধ্যে কোনো কথা হয়নি। এদিকে তানভীর কথা না বলে থাকতেই পারে না, তবুও সে সেদিন ভদ্রতা বজায় রেখেছিল। কেন যেন প্রথম দেখায় মেয়েটাকে ভীষণ ভালো লাগল তার। একটু গম্ভীর, তাতে কী? ব্রেকের সময়ও মেয়েটা একপাশে চুপ করে বসে খাওয়া-দাওয়া করেছিল। এই ধরণের ট্যুরে মূলত স্টুডেন্ট, বেকার এবং অবিবাহিতরাই বেশি জয়েন করে। পরিবার খুব কম। বেশিরভাগ পরিবাররা মূলত একা একাই ট্যুর দিতে পছন্দ করে।
তারা হোটেল থেকে শুরু করে এদিক সেদিক সব টুরিস্ট স্পটে গেল একসাথেই। নিজের অজান্তেই তানভীর জোনিরাকে লক্ষ্য রাখছিল। পাহাড়ে ওঠার সময়ে জোনিরার সাথে আচমকাই দুর্ঘটনা ঘটে। বাঁধানো সিঁড়ি থেকে তার পা কিছুটা সরে গেলে জোনিরা পড়ে যায় একপাশে। ভাগ্যিস খাদের কাছে পড়েনি৷ তানভীর তা দেখে ছুটে আসতে নিতেই জোনিরা চট করে উঠে দাঁড়ায়, কারো সাহায্য সে নেয়নি। তানভীর তা দেখে বলল,
–“আপনার ভালোই হিম্মত আছে দেখছি।”
জোনিরা কী ভেবে যেন প্রথমবারের মতো মুখ খুলল। বলল,
–“যে মানুষ একা চলতে শিখে যায় তার জন্য সাহস নিত্যদিনের ঘটনা।”
তানভীর মুগ্ধ হয় তার চটপটে উত্তরে। তাই সে বাকিদের দায়িত্ব অন্যদের হাতে দিয়ে জোনিরার পাশে পাশেই হাঁটতে লাগল। জোনিরা ব্যাপারটা বিশেষ পছন্দ না করলেও কিছু বলেনি। তানভীর বলল,
–“আপনার মতো সাহসী মেয়ের নামটা খুব জানতে ইচ্ছে করছে। এবারের ট্যুরের বেশ ইন্টারেস্টিং মানুষ আপনি।”
জোনিরা নাম না বলে বলল,
–“ফ্লার্ট করা ছেলে আমার পছন্দ নয়, এক্সকিউজ মি।”
তানভীর শুরুতে এ কথা শুনে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে বাকি দুইদিনের ট্যুরে সে জোনিরাকে মনে-প্রাণে খেয়াল করে গেছে। কিংবা বলা যায়, সে এই অদ্ভুত, একা মেয়েটাকে মুখস্থ করে নিয়েছে। মেয়েটাকে ঠিক ভাবে না চেনা সত্ত্বেও। এটা প্রথম অভিজ্ঞরা কিনা, এসবে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে মন্দ লাগছিল না।
তানভীর তার এজেন্সি থেকেই কোনো এক ভাবে জোনিরার নাম, নাম্বার টুকে নেয়। নামটা কেন যেন তার ভীষণ চেনা চেনা লাগছিল। কিন্তু পরে সে ব্যাপারটা উড়িয়ে দিয়ে মেয়েটাকে নিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখতে বসে যায় সে। ট্যুর থেকে এসে তাহমিদকে সে বলেই বসল,
–“আমি মনে হচ্ছে প্রেমে পড়েছি!”
তাহমিদ তখন ইন্টার্ন ছেড়ে মাস কয়েক হয়েছে চাকরিতে জয়েন করেছে। সে ল্যাপটপে কাজ করতে করতে বলল,
–“সেই দুর্ভাগাটা কে?”
–“বান্দরবানের ট্যুরে প্রথম দেখেছি, সেখানেই কট খেলাম। নাম আর নাম্বার জানি শুধু। তবে এখনো কল করার সাহস হয়নি।”
তাহমিদ হো হো করে হেসে উঠে বলল,
–“আমার বাবা বলে, আমাদের ঘরে একমাত্র কুমির হচ্ছিস তুই! সেখানে কুমির নাকি মানুষের মেয়ে বাচ্চাকে ভয় পাস।”
তানভীর মুখ বাঁকিয়ে জোনিরার স্বভাব সম্পর্কে ধারণা দেয়, এতে তাহমিদ অবাক হয়ও বেশ।
তানভীর এক তরফা প্রেমিক হিসেবে ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াল কিছুদিন। সে মেয়ের ঠিকানা, পরিচয় কিছুই জানে না। অথচ তাকে তার অনেক অনেক জানতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু মেয়েটাকে খুঁজবে কোথায়? চট্টগ্রাম শহরটা এত ছোটোও নয়। তানভীরের এত ধৈর্যও নেই যে চট্টগ্রামের প্রতিটা অলিগলিতে ঘুরে মেয়েটাকে খুঁজে বের করবে। মোটেই তার সতেজ অনুভূতি, খুঁজতে গিয়ে মনে বিষাদ জমলে তার এই সতেজ অনুভূতির শ্রাদ্ধ হয়ে যাবে। তবুও তানভীর রাস্তা-ঘাটে বের হলেই ঈগল নজরে চারপাশে লক্ষ্য রাখে। ভুলক্রমেও যদি দেখা পেয়ে যায়? কে জানে?
পৃথিবী গোল, এটা তানভীর সেবার প্রমাণ পেল তাহমিদের হসপিটালে গিয়ে। মূলত পারভীনের চেকআপের দিন ছিল সেদিন। তাহমিদ ডিউটির জন্যে আগে থেকে হসপিটালে থাকলেও তানভীর মাকে নিয়ে আসে। সেই থেকে তাহমিদই মাকে নিয়ে দৌড়-ঝাপ করছে। তানভীর তখন ওয়েটিং রুমে শিষ বাজিয়ে বাজিয়ে আশেপাশে চোখ বুলাচ্ছিল। আচমকা তার চোখে আটকে যায় ফকফকা সাদা এপ্রোনে ছোটা এক পরিচিত মুখ। তানভীর চোখ কচলে, নিজেকে চিমটি কেটে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করল। নাহ, সে তো ভুল দেখেনি। তানভীর তৎক্ষনাৎ উঠে জোনিরার কাছে চলে যায়।
জোনিরা তখন একটা বেবি ডেলিভারির কেস নিয়ে বিজি। কিছুক্ষণের মধ্যেই অপারেশনের প্রস্তুতি নিতে হবে তার। এমন সময়েই হাতে হেঁচকা টানে পিছে ফিরে তাকায়। তানভীরকে দেখে চমকে যায় সে। অস্ফুট স্বরে বলে,
–“তুমি?”
তানভীর কোনো দিকে না চেয়ে সোজা হাঁটু গেড়ে বসল। টু এক্স স্পিডে বলতে লাগল,
–“আমি তানভীর, এন্ড আই লাভ ইউ। উইল ইউ ম্যারি মি জানিয়া?”
জোনিরা বেকুব বনে দাঁড়িয়ে ছিল তার দিকে চেয়ে। জোনিরার পাশে থাকা একজন নার্স বলে ওঠে,
–“ওনার নাম জানি নয়, জোনিরা।”
–“ওহ হ্যাঁ, জোনিরা। তো জোনিরা, উইল ইউ ম্যারি মি?”
জোনিরার এবার ধ্যান ভাঙে। সে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
–“ইডিয়েট। তোমার থেকে বড়ো আমি, আপু না ডেকে বিয়ের কথা বলছ? কত বড়ো নির্লজ্জ!”
তানভীরও তখন অবাক। এই ছোটো মুখের মেয়ে তার থেকে বড়ো, বিশ্বাসই হয় না। এক সেকেন্ড! তানভীর তার ছোটো তা সে জানল কী করে? জোনিরা ততক্ষণে অপারেশনের জন্য চলে গিয়েছে। তানভীর তখন হসপিটাল জুড়ে পায়চারী করছে। সেই নার্সের আক থিয়েটারে কোনো কাজ নেই, এজন্য সে তানভীরকে যখনই দেখছে মুচকি মুচকি হাসছে। তা দেখে তানভীর বিরক্ত হয়ে নার্সকে ধরল,
–“আপনিই বলুন, ভালোবাসা পাপ?”
–“একদমই না।”
–“তাহলে সে আমাকে ছোটো বলে চলে গেল কেন? আমাকে কোন দিক থেকে ছোটো লাগে? সে কী জানে না ভালোবাসায় বয়স ম্যাটার করে না।”
তানভীর আবার থেমে বলল,
–“এই, ওয়েট। আপনাদের জানিয়া ম্যাডাম আবার এক দুই বাচ্চার মা নয়তো?”
নার্স হো হো করে হেসে দিয়ে বলল, “ম্যাম অবিবাহিত।”
তানভীরের বুক থেকে যেন তখনই এক বড়ো পাথর নেমে গেল। সে জোনিরার অপারেশনের থিয়েটারের কাছে দিয়েই ঘুরঘুর করতে লাগল। সে জোনিরার সাথে দেখা না করে যাবে না। এমন সময়ই ভেতর থেকে বাচ্চার কান্নার শব্দ এলো। পেশেন্টের পরিবারের মানুষরা এতে ভীষণ স্বস্তি পায়। কিছুক্ষণের মধ্যে নার্স এবং জোনিরা বেরিয়ে আসে। নার্সের কোলে সাদা তোয়ালে জড়ানো এক ফুটফুটে বাচ্চা। নবজাতককে দেখে তার বাবা বোধ হয় আনন্দে কেঁদে ফেলল৷ জোনিরা তখন মিষ্টি হেসে বলেছিল,
–“অভিনন্দন, আপনার মেয়ে বাবু হয়েছে। আপনার ওয়াইফ এবং বাচ্চা দুজনেই সুস্থ।”
তানভীর দূর থেকে এই সুন্দর দৃশ্য দেখল। কী মোহময়, আদুরে মুহূর্ত। সেই সুন্দর মুহূর্তে জোনিরার গম্ভীর মুখে মিষ্টি হাসিটা যেন বোনাস ছিল।
জোনিরা এদিকে আসতেই আবারও তানভীর তার পথ আগলে দাঁড়ায়। এতে বিরক্ত হয়ে জোনিরা কিছু বলতে নিতেই আচমকা তার সাথে তাহমিদ এবং পারভীনের দেখা হয়ে যায়। পারভীন তো জোনিরাকে দেখে তার অপারেশনের আপ্রোনের রক্ত, জীবাণু পরোয়া না করেই তাকে জড়িয়ে ধরলেন। তা দেখে সবচেয়ে বেশি অবাক হয় তানভীর। জোনিরা একপলক তানভীরের দিকে চেয়ে বলল,
–“ছাড়ো মামনি, আমি এখনো ফ্রেশই হইনি।”
সেদিন তানভীর জানতে পারে জোনিরাই তার খালামনির একমাত্র মেয়ে। এমনকি জোনিরা আর তাহমিদ একসাথেই ইন্টার্ন করে এই প্রাইভেট হসপিটালে জয়েন করেছে এটাও তানভীর এতদিন জানত না। তার বুক ব্যথা হচ্ছিল এই ভেবে, পরিবার থেকে সে কতটা বিচ্ছিন্ন ছিল যার জন্য জোনিরাকে চিনতে পারেনি। তবে জোনিরা যে তাকে চিনতে পেরেছে শুরুতেই তা তানভীর বেশ বুঝল। এ নিয়ে সেদিন ভয়-ডর উচ্ছন্নে ছুঁড়ে জোনিরাকে কল করে সে। কিন্তু জোনিরা তার কল রিসিভ করে না। এজন্য তানভীর পরদিন হসপিটাল গিয়ে জোনিরাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করে,
–“এই, তুমি জানতে যে আমি তাহমিদের ভাই তাই না? শুরুতেই কেন বলোনি?”
–“তুমি কী এক্সপেক্ট করেছ? তোমাকে দেখে আমি প্রোপার এক্সাইটমেন্ট নিয়ে বলব, ‘এই তুমি তাহমিদের জমজ ভাই না? ও মাই গড!’ গর্দভ।”
তানভীর এতে আহত হয়। তবুও মুখজুড়ে সুখের হাসি ফুটিয়ে বলে,
–“এবার থেকে তো আমার সুবিধেই হলো। তোমার সাথে প্রেম করে যাব।”
–“প্রেমের কথা তো ছাড়ো, তুমি আমাকে তুমি সম্বোধন করছ কোন সাহসে?”
–“আচ্ছা ঠিক আছে, ডাকলাম না তুমি। ‘আপনিরাও’ তো বউ হয়। আমি নাহয় সেই মিশনেই নামলাম।”
–“এই! দূর হও চোখের সামনে থেকে। ভালো দেখে সাইকোলজিস্ট দেখাও, তোমার মাথায় সমস্যা আছে।”
–“তা তো একটু ছিলই। তবে স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছি, আপনাকে দেখে আমার মাথা পুরোটাই খারাপ হয়ে গেছে। আর পাগলরা কখনো ভালোবাসতে কিপ্টেমি করে না। বউ ত আপনাকে আমি বানাবই, ওপেন চ্যালেঞ্জ।”
ব্যাস! সেদিন থেকেই তানভীরের জোনিরাকে ঘিরে পাগলামো শুরু। সেই থেকে আজ দুই বছর হয়ে গিয়েছে, তানভীরের মন থেকে জোনিরার প্রতি অনুভূতি এক বিন্দু কমেনি। বরঞ্চ দিনকে দিন এই অনুভূতি আরও গাঢ় হয়েছে।
——————–
মাহারিনরা বাড়ি ফিরতেই বেডের ওপর একটা সাদা খাম পায়। তাহমিদ সেটা খুলতেই দেখল তার হানিমুন প্যাকেজ। গন্তব্য সেন্টমার্টিন। এটা মূলত তানভীরের পক্ষ থেকে তাদের বিয়ের গিফট। ভেতরে একটা চিরকুটও পেল তাহমিদ। সেখানে লেখা,
–“তোর হাতের প্লাস্টার খোলার পরেরদিনই বের হয়ে যাবি। অনেক হাড় গড়েছিস, এবার নিজের মেরুদণ্ড শক্ত কর আমার ভাই। জোনিরার সাথে আমার বিয়ে হলে তুইও আমাকে হানিমুন প্যাকেজ দিবি। খবরদার হানিমুন যেন দেশের বাইরে হয়। আমার দেশের সব স্পট মুখস্থ হয়ে গিয়েছে।”
চলবে~~
বিঃদ্রঃ ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন❤️