#মায়াবতীর_ইচ্ছা
#পর্ব_৪২
#ইশরাত_জাহান
🦋
গাড়ির ফ্রন্ট সিটে বসে নিরবতা পালন করছে দুজন।রুদ্র গাড়ি চালাতে ব্যাস্ত আর হিয়া জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখতে ব্যাস্ত।গাড়ি চালানোর মাঝে রুদ্র গান চালিয়ে দিলো।হিয়া গান অফ করে দেয়।হিয়ার দিকে তাকিয়ে রুদ্র বলে,”কেনো এত রাগ দেখাচ্ছিস হিয়াপাখি?”
“আপনাকে দেখলেই আমার রাগ ওঠে।সহ্য করতে পারি না আমি আপনাকে।”
“আফসোস এই রাগ নিয়ে আমার সংসার করতে হবে।”
ভ্রু কুঁচকে হিয়া তাকালো রুদ্রের দিকে।বলে,”কে করবে আপনার সাথে সংসার?নষ্ট পুরুষ কোথাকার।এমন পুরুষের সাথে এই হিয়া থাকবে না।”
“চার চোখ কেনো রেখেছিস বলতো?যদি বাস্তবতাটা না দেখলি।”
“বাস্তবকে আমি নিখুঁতভাবে উপলব্ধি করি রুদ্র ভাই।আপনি বরং উল্টো আমাকে নিয়ে মিথ্যা সপ্ন দেখছেন।”
“সপ্ন মিথ্যা হলেও সত্যি করতে কতক্ষন?”
“এই সপ্ন কখনও সত্যি হবেনা।”
“তাহলে দেখিস কেনো আমাকে নিয়ে সপ্ন।”
মলিন চোখে তাকালো হিয়া।এই ছেলে সব বোঝে।তার ইচ্ছা চাওয়া পাওয়া বুঝেও এই ছেলে এতটা নিষ্ঠুর হয়ে চলে।জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট দুটো ভিজিয়ে হিয়া বলে,”আমি আপনাকে নিয়ে কোনো সপ্ন দেখিনা।”
“মিথ্যা বলার সময় তুই যে ঠোঁটদুটো হালকা ভিজিয়ে নিশ এটা আমি জানি।ব্যার্থ চেষ্টা করিস না।”
এবার হিয়ার কান্না পায়।কোনো মতে কান্নাগুলো আটকে রেখে রুদ্রের কাধে দুই হাত দিয়ে মারতে মারতে বলে,”একদম কথা বলবেন না।আপনি নষ্ট পুরুষ আপনি খুনি আপনি হৃদয়হীনা আপনি খুব বাজে।”
বাকি রাস্তা হিয়ার হাতে মার খেতে খেতেই বাড়ি ফিরে রুদ্র।গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির দিকে আসতে নেয় ওরা।ব্যালকনি থেকে ওদের দেখছে মায়া।রাজ ওর পাশে এসে জিজ্ঞাসা করে,”কি দেখছো মনোযোগ দিয়ে?”
“আচ্ছা মন্ত্রী মশাই,হিয়াকে নিয়ে তোমরা কি ভাবছো?”
“শুধু হিয়া না। মিলি সিয়া আর হিয়া সবাইকে নিয়েই ভাবছি।ওরা ওদের মন মতো সাবজেক্ট নিয়ে ওদের ইচ্ছা পূরণ করবে।যেমন সিয়ার ইচ্ছা ডাক্তার হওয়া।”
“সিয়ার যেহেতু ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা তাই আমি হিয়াকে নিয়েই প্রশ্ন করেছি।”
“বাবা যেটা বলবে তাই হবে।যদি হিয়ার কোনো মতামত না থাকে ওর বিষয়ে তাহলে।ও যদি পড়াশোনা করতে চায় ওকে তাই করতে দেওয়া হবে। আর বাবা যদি আমাদের হিয়ার জন্য যোগ্য পাত্র দেখে নেয় তাহলে তার সাথেই হিয়ার বিয়ে হবে।”
“আচ্ছা।”
“হ্যাঁ কিন্তু এবার আমার দিকে একটু তাকাও।খুব তো পরিবারের দিকে দেখছো।বর যে ভিটামিন-বউ এর ভালোবাসার অভাবে শুখিয়ে যাচ্ছে এটাও তো দেখো।”
“শুরু হয়ে গেছে তোমার লাগামহীন কথা।”
“বউ আমার সবকিছুতে এগিয়ে শুধু আমাকে ভালোবাসার সাগরে নিয়ে যাওয়ার দিক থেকে পিছিয়ে।তাই তো আমাকেই শুরু করতে হয়।আমি শুরু না করলে তো বংশের নেক্স জেনারেশন আসবে না।”
“লাগামহীন মন্ত্রী মশাই।”
“বউকে ভালোবাসতে বহুবার লাগামহীন হওয়া দরকার আছে।নাহলে বউ তো আমাকে বাবা ডাক শোনাবে না।”
বলেই মায়াকে কোলে করে নিয়ে যায় রাজ।মায়া বাধা দেয় না তাকে।
বাড়ির ভিতরে ঢুকে রান্নাঘরে গেলো হিয়া। রুদ্রও তার পিছু পিছু গেছে।হিয়া খাবারগুলো গরম করতে থাকে।রুদ্র তাকিয়ে দেখতে থাকে হিয়াকে।হিয়ার চুল ছেড়ে দেওয়া।রুদ্র সেদিকে তাকিয়ে বলে,”খোঁপা করে দিবো তোর?”
“কোনো দরকার নেই।টাচ করবেন না আমাকে।”
“তোকে টাচ করতে আমার অজুহাত লাগেনা।এমনিতেই টাচ করতে পারবো।কিন্তু এখন ভাবলাম তোর সুবিধা হবে তাই।কিন্তু তুই তো দুষ্টু মাইন্ডে নিয়ে গেলি।”
বলেই বাবুদের মতো করে মুখ করে রুদ্র।হিয়া খাবারগুলো নিয়ে টেবিলে আসে।রুদ্রকে খাবারগুলো সাজিয়ে দিতে দিতে বলে,”তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন।সকালে তো কাকাই কে আনতে হবে।”
“তুইও বস খেতে।”
“আমি এত রাতে কেনো খেতে যাবো?”
“কারণ তুই না খেয়ে আছিস।”
“কে বলেছে?”
“তোর মুখ।যেটা দেখলে আমি খুব ভালোভাবে বুঝে যাই সব।”
“আফসোস আপনি আমার শ্রেষ্ঠ চাওয়ার বিষয়টা বুঝেন না।”
বলেই দীর্ঘশ্বাস নিলো হিয়া।কথাটা আস্তেই বলেছিলো হিয়া।রুদ্র শুনতে পায়নি তার কথা।তাই রুদ্র জিজ্ঞাসা করে,”কিছু বললি?”
“নাহ।আপনি খেয়ে নিন।আমার খুদা নেই।”
বলেই চলে যেতে নেয় হিয়া।রুদ্র আকড়ে ধরে হিয়ার হাত।বলে,”আমার উপর করা রাগ খাবারের উপর দেখাবি না। তোর সব তেজ সহ্য করো নির্দ্বিধায়।কিন্তু তোর অযত্ন আমি সহ্য করতে পারবো না।লক্ষ্মী মেয়ের মতো খেয়ে নে।নাহলে এই নষ্ট পুরুষ তোকে তার স্টাইলে খাইয়ে দিবে।”
বলেই হিয়াকে টেবিলে বসিয়ে দিলো।অল্প খাবার দিলো হিয়ার প্লেটে।দুজনে মিলে খাবার খেতে থাকে।উপর থেকে এদের দিকে তাকিয়ে দেখছে সোনালী।মুখে বাকা হাসি ফুটিয়ে বলে,”জারা গেছে তো কি হয়েছে।আমার এই ছেলে তো আছে আমার সপ্ন পূরণ করতে।এই মহল আমার হবে।”
সকালে,
মোহন সরদারকে রিলিজ করিয়ে আনা হয়েছে।মাহমুদ সরদার ও রুদ্র মিলে নিয়ে এসেছে।সোফায় কোনো মতে বসে আছে মোহন সরদার।সবাই একেক করে নেমে এসে দেখা করছে তার সাথে।
মায়া ও রাজ মিলে একসাথে নেমে এসেছে নিচে।মোহন সরদার তাকালো তাদের দিকে।মুখে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।মালিনী বিরক্ত মায়ার উপর।কিন্তু মুখে কিছু বলেনা।সবার নীরবতার মাঝেই কলিংবেল বেজে ওঠে।হিয়া গিয়ে খুলে দেয় দরজা।সদর দরজায় দাড়িয়ে আছে স্লিভলেস হাতার সালোয়ার কামিজ পরা এক সুন্দরী।ওড়না গলায় ঝুলিয়ে রাখা।হাতে তার ল্যাগেজ।সবাই তাকিয়ে দেখছে মেয়েটিকে।রাজ নিজেও তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে।মায়া অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকালো রাজের দিকে।রাজ এটা দেখেই বলে,”আরে আমি তো নতুন অতিথি দেখছি। আর কিছু না।তুমি থাকতে আমার আর কাউকে লাগবে না। চিন্তা করো না তুমি।”
মেয়েটি সবার দিকে এগিয়ে এসে বলে,”হাই আমি আয়রা।মোহন সরদারের টেক কেয়ার করতে এসেছি।”
“বাবাকে দেখতে এসেছে ভালো কথা হট লুক দেওয়ার কি আছে?”
বিড়বিড় করে বলে রুদ্র।হিয়া ক্ষেপে যায় এমন কথা শুনে।রুদ্র সেদিকে তাকিয়ে বলে,”না মানে কয়দিন আগেই তো তোর শ্বশুরের গার্ল ফ্রেন্ড দেখলি।এখন আবার বিয়ের আগে নতুন করে একজনের এন্ট্রি তাই আর কি।”
রাজ এসে দাড়ালো মাহমুদ সরদারের পাশে।ফিসফিস করে বলে,”আমার শ্বশুরের ভাগ্য আছে বলতে হয়।হিংসে হয় না বাবা তোমার?”
“কেনো আমার কেনো হিংসা হবে?”
“এই যে আমার শশুড় এই বয়সে এসে একের পর এক ছক্কা মরছে তাই।ব্যাটা শশুর আমার পঙ্গু হয়েও হট নার্সের সার্ভিস পাবে। আর তুমি মন্ত্রীর বাবা হয়ে কিচ্ছু করতে পারলে না।”
“বেশরম ছেলের বাবা হতে পেরেছি। আর কি লাগে জীবনে?”
“বেশরম ছেলের লজ্জাবতী বাবা।সমাজ মানবে?”
“মানতে হবে সমাজকে।যাও তোমার বউয়ের কাছে।”
“বউ তো আমার বাবার মতই।নামে বলে ভালোবাসি কিন্তু ভালোবাসার আগেই লজ্জায় নেতিয়ে যায়।”
“এটাই তোমার প্রাপ্য।ওই মেয়েই পারবে তোমাকে সোজা পথে আনবে।”
জিহ্বা কামড় দিয়ে রাজ বলে,”ছিঃ দুষ্টু বাবা আমার।ছেলে আর ছেলের বউ কিভাবে সোজা বাকা পথে যায় এগুলো দেখতে নেই।”
“তোমার সাথে কথা বলা বেকার। দশ হাত দূরে থাকবে আমার থেকে।”
“তোমার কাছে এসে আমার লাভ নেই।আমার বউকে রেখে বাবার কাছে আসবো কোন দুঃখে। যাইহোক তোমার বদ নসিবের জন্য একটু কষ্ট পেয়েছিলাম।ভাবলাম তোমার জন্য কোনো নার্স আনবো কি না।কিন্তু তুমি তো পাত্তাই দিলা না।”
চোখ বড় বড় হয়ে গেলো মাহমুদ সরদারের।নার্স আসা মানে তো ভাইয়ের মত তার নিজেকেও পঙ্গু করে রাখা।রাজের দিকে তাকিয়ে বলে,”এই বয়সে এসে বাবাকে বিছানার রোগী বানাতে চাও?”
“তুমি শুধু বিছানায় রোগী হওয়াটা দেখেল বাবা!সাথে যে হট নার্সের সার্ভিস পাবে এটা দেখলে না?”
“লাগামহীন ছেলে কোথাকার।”
বলেই রাগ দেখিয়ে চলে যান মাহমুদ সরদার।মোহন সরদারের নার্স আয়রা এসে মোহন সরদারকে নিয়ে তার রুমের দিকে যেতে থাকে।ভ্রু কুচকে তাকিয়ে দেখছে রাজ ও রুদ্র।রুদ্র ওদের দিকে তাকিয়ে থেকেই রাজের কাছে এসে বলে,”আচ্ছা ভাই আমার আবার নতুন কোনো ভাই বোন আসবে না তো?”
“আসতেও পারে। তোর যে বাপ সে তো এই বয়সেই চার পাচটা গার্ল ফ্রেন্ড পুষে রাখে।এ আবার নতুন কি?”
বলেই দুই ভাই একসাথে হেসে দেয়।এদের কথাগুলো কর্ণপাত হয় মায়ার। ডাইনিং টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি এনে সোজা মেরে দেয় রাজের মুখে।রাজ পানিগুলো মাথা ঝাঁকা দিয়ে ফেলে বলে,”বউ আমার ভালোবাসার সাগরে না ভিজাতে পারলেও খাবার পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে খুব পারে।”
রাগ দেখিয়ে উপরে উঠে গেলো মায়া।রুদ্র তাকালো হিয়ার দিকে।কটমট চোখে চেয়ে আছে হিয়া।মনে হচ্ছে সামর্থ থাকলে কাচা মানুষের মাংস খেয়ে ফেলতো।অন্য কারো না সোজা রুদ্রের।রুদ্র শিস বাজাতে বাজাতে চলে যায় বাইরে।
নিজের মনোবল শক্তি বাড়িয়ে তোলে রাজ।বউ তার ক্ষেপে আছে।যেখানে প্রথম দিনেই গৃহপ্রবেশে জারার হাতে গুলি করেছিলো তাতে এটা স্পষ্ট যে আজ তার রক্ষা নেই।এক কদম দুই কদম কচ্ছপের গতিতে পা এগিয়ে ঘরে আসতে থাকে সে।সাহসের সাথে বলে,”বউ ওওও বউ কোথায় তু….”
বাকি কথা বলতে পারলো না রাজ।গুলি ছোড়া শুরু।গুলি সোজা কাঠের দরজায় এসে লেগেছে।মায়া ইচ্ছা করেই এমনটা করেছে।রাজ বড় বড় চোখে তাকালো মায়ার দিকে।রাজ কিছু বলতে যাবে তার আগে মায়া আবার রাজের পা বরাবর গুলি চালায়।রাজ জাম্প দিয়ে পা উচু করে বলে,”আরে বউ থামো।যেভাবে একের পর এক গুলি ছুড়ে মারছো মনে হচ্ছে আমাকে আয়রার সার্ভিসের জন্য রেডি করবে।এর থেকে ভালোবাসা দেও বাবা ডাক শুনবো আর তুমি মা।”
“তুমি পরনারীর দিকে তাকাবে আর আমি তোমাকে ভালোবাসা দিবো? কখনই না।”
“আর তাকাবো না।ভালোবাসবে তো এবার?”
“আর একটা কথা বললে গুলি দিয়ে সোজা তোমার খুলি উড়িয়ে দিবো।”
রাজ এবার ধির গতিতে এসে মায়ার হাত ধরে নেয়।গুলিকে রাখে পাশে।তারপর বলে,”আরে ওটা তো আমার শশু না সরি তোমার কাকা শ্বশুরের আইটেম।আমি তো শুধু তার ভাগ্য নিয়ে বলছিলাম।বিশ্বাস করো মেয়েটার যে স্লিম ফিগার আমি চেয়েও দেখিনি।”
“স্লিম ফিগার তুমি জানলে কিভাবে?তুমি নাকি দেখোনি?”
“ওই যে তোমার চোখ।বউ তো বাড়িতে কোনো হট লেডি আসলেই শকুনের দৃষ্টি দিয়ে দেখে।তাতেই আমার দেখা হয়ে যায়।নিজের চোখ দিয়ে আর দেখা লাগে না।”
“আমার মাথা গরম করে দিচ্ছ তুমি।”
“চলো বাথ টাবে যেয়ে তোমার মাথা ঠান্ডা করে দেই।”
“শাট আপ।”
আর কিছু বলতে না দিয়ে মায়াকে নিয়ে চলে যায় রাজ।মায়ার গরম মাথা ঠান্ডা করতে হবে এখন তাকে।
চলবে…?
#মায়াবতীর_ইচ্ছা
#পর্ব_৪৩
#ইশরাত_জাহান
🦋
সাদা পাঞ্জাবি পরে হাতা গোটাতে গোটাতে সিড়ি দিয়ে নামছে রাজ।উদ্দেশ্য নিজের কাজে যাওয়া।সিড়ি দিয়ে নামতেই ধাক্কা খেলো আয়রার সাথে।আয়রা রাজের দিকে তাকিয়ে বলে,”সরি দেখতে পাইনি। একচুয়ালি হট ব্যাগ নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম তো তাই।”
রাজ কিছু বলার আগেই আয়রার পায়ের উপর বড় এক মাটির ফুলদানি এসে পড়ে।পায়ের উপর পড়েই ফুলদানি ভেঙ্গে যায়।উপরের দিকে মাথা উঁচিয়ে তাকালো রাজ।দেখলো মায়া অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে আছে।রাজ স্মিত হেসে বলে,”সমস্যা নেই তোমার যেমন দুই একটা ভুল হয় আমার বউ তেমন দুই একটা ভুল করে।এই যেমন না বুঝে তোমার পায়ের উপর ফুলদানি ফেলে দিলো।একটু সাবধানে থেকো বোন।”
মাথা নাড়িয়ে উপরে চলে গেলো আয়রা।মায়া এখনও তাকিয়ে আছে রাজের দিকে।মায়ার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হেসে দেয় রাজ।তারপর দুই আঙ্গুল উচু করে ঠোঁটের দিকে দেখিয়ে মায়াকে দিলো এক ফ্লাইং কিস।চোখ টিপ দিয়ে মায়াকে বলে,”জেলাসি বিবি আমার।টেনশন নট ঘর ওয়ালি থুয়ে বাহার ওয়ালির দিকে চোখ দিবো না।”
“সেই সুযোগ তুমি পাবে না মন্ত্রী মশাই।তোমার ঐ চোখে অন্য নারী আসার আগেই তোমার চোখ উপড়ে ফেলে দিবো।”
ভীতু সাজার অভিনয় করে রাজ।বলে,”আমি তো ভয় পেয়ে গেছি।আসো একটু আদর করে ভয় কাটিয়ে দেও।নাহলে কাজে মন বসবে না তো।”
“পিছনে তাকিয়ে দেখো।”
মায়ার কথায় রাজ পিছনে তাকিয়ে দেখে পিয়াশ আর মাহমুদ সরদার দাড়িয়ে।বাবাকে দেখে বোকা বোকা হাসি দিয়ে রাজ বলে,”এভাবে ছেলে আর তার বউয়ের প্রেম দেখতে নেই বাবা।তোমার বউ আছে তো তার কাছে যাও।”
“এখন তোমার থেকে শিখতে হবে আমার বউকে নিয়ে কিভাবে চলবো?”
“রসকষহীন বাবা তুমি।মা যে কিভাবে সংসার করে তোমাকে নিয়ে কে জানে!”
“বেশি পেকে গেছো তুমি।”
“বিয়ের পর ছেলেরা কাচা থাকে না বাবা।কিছুদিন পর নাতি নাতনি আসবে।তাই আমাকে কাচা ভেবে ভুল করো না।”
পিয়াশ বেচারা মনে মনে বলছে,”নিরীহ বাবার লাগামহীন ছেলে।”
রাজ এবার পিয়াশের কাছে এসে বলে,”চলো পিয়ু বেবী।আমার বউ একমাত্র তোমার সাথেই আমাকে মিশতে দেয়।নির্দ্বিধায় তোমাকে নিয়ে একটু টুর দিতে পারবো।”
“এ?”
অবাক হয় পিয়াশ।
“কি এ এ করছো?চলতো ঘুরে আসি একটু।এই রসকষহীন জায়গাগুলো থেকে একটু দূরে যাই।”
বলেই পিয়াশকে নিয়ে চলে গেলো রাজ।গাড়িতে উঠতেই পিয়াশ বলে,”কোথায় যাবো এখন আমরা?”
“বারে।”
পিয়াশ ঘড়ি দেখে বলে,”এই সময় তো কোনো অনুষ্ঠান হয় না। বারে পার্টি তো রাতে।”
“ফ্রীতে বউয়ের হাতের ঝাড়ুর বারি খেতে চাও নাকি?বারে যাবো মিটিং আছে।ওখানে কিছু বিজনেসম্যান আসবে।এই সময়টা ওখানে কেউ থাকবে না।অফিসে শত্রু পক্ষের হিডেন ক্যামেরা লাগানো। শাহমীর রাজের অফিসে ক্যামেরা লাগিয়েছে বোকা কোথাকার।একটাবার ভাবলো না এতেই শাহমীর রাজের কাছে নির্দ্বিধায় ধরা পড়ে যাবে।এখন তাকে তার মতো চলতে দিয়ে আমরা আমাদের মতো অন্য স্থানে সিক্রেট মিটিং চালাবো।পার্টিতে গেছি শুনলে তোমার বউ আর আমার বউ আমাদের নিজেদের বাড়ি থেকেই বাইরে বের করে দিবে।”
“এটাও ঠিক।”
কোচিংয়ে এসেছে সিয়া।মেডিক্যাল কলেজের জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছে।সিয়ার একমাত্র সপ্ন ছিলো ডাক্তার হওয়া।এখন ডক্টর আদ্রকে দেখে দুইটা সপ্ন জেগেছে।এক নিজে ডক্টর হবে আর দুই আদ্রর মনের মানুষ হবে।খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে অহর্নিশ আদ্র এখনও ব্যাচেলর।বাবা মা নেই।দাদীর কাছে বড় হয়েছে।
কোচিং থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠতে নিলেই কিছু বখাটে আসে সিয়ার কাছে।উত্যক্ত করতে থাকে।সিয়া ভয় পেয়ে যায়।পিছিয়ে যেতে নিলে একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায় সেখানে।সবাই তাকিয়ে দেখছে সেদিকে।গাড়ি থেকে নেমে আসে আদ্র।আদ্রকে দেখে সিয়া হেসে দেয়।আদ্র এসেই তাকালো সিয়ার দিকে।সিয়ার আশেপাশে ছেলেরাও তাকিয়ে আছে আদ্রর দিকে।সিয়া দৌড়ে যেয়ে দাড়ালো আদ্রর পিছনে।বলে,”প্লিজ হেল্প মি।”
আদ্র একবার তাকালো সিয়ার দিকে আবার তাকালো বখাটে গুলোর দিকে।সিয়াকে শান্তনা দিয়ে বলে,”ডোন্ট ওরি আমি আছি।কিছু করবে না ওরা তোমার।”
একজন বখাটে এগিয়ে এসে বলে,”আব্বে কি করবি রে তুই?”
বলতে না বলতেই আদ্র ওর গায়ে থাকা কোর্ট একটু উচু করে দেখিয়ে দেয়।আদ্রর মুখে রহস্যের হাসি।ছেলেগুলো আদ্রর পকেটে গুলি দেখে শুকনো ঢোক গিলে।আদ্র বলে,”কিছু করতে হবে আমাকে?”
“ন ন না।”
বলেই ভো দৌড় দেয় ছেলেরা।সিয়া একটু অবাক হলো।ছেলেগুলো আদ্রর সামান্য কথাতেই পালালো কেনো?কিছুই তো করেনি আদ্র।সিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আদ্র বলে,”এত চিন্তা করলে তো ব্রেনে চাপ পরবে।ডক্টর হতে পারবে না তখন।সময়টা নিজের সপ্ন পূরণে এগিয়ে নিয়ে যাও।”
“জি।”
“আসো আমি লিফট দিয়ে দিচ্ছি।”
সুযোগটা মিস করতে চায় না সিয়া।আদ্রকে তার জানতে হবে বুঝতে হবে।তাই আদ্রর প্রস্তাবে রাজি হলো সে।তাই নিজেদের গাড়িকে যেতে বলে উঠে গেলো আদ্রের গাড়িতে।গাড়িতে উঠেও নিরবতা পালন করতে থাকে সিয়া।হঠাৎ আদ্র প্রশ্ন করে,”কোন সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে চাও?”
“আমার ইচ্ছা অর্থোপেডিক।”
“গ্রেট।আমি এই বিষয়ে ক্লাস নিয়ে থাকি।”
“এই জন্যই তো নিতে চাই এই সাবজেক্ট।নাহলে তো গাইনোলোজী নিয়ে পড়তাম।”
বিড়বিড় করে বলে সিয়া।
“কিছু বললে?”
“না তো।এমনি আর কি ভাবছিলাম যে আমি পারবো কি না।”
“অবশ্যই পারবে।মনোবল শক্তি থাকলে অবশ্যই উদ্দেশ্য সফল হবে।”
“উদ্দেশ্য সফল হবে বলছেন?”
“হুম অবশ্যই হবে।কেনো নিজের উপর কনফিডেন্ট নেই?”
“আছে তো।কিন্তু এই একটা বিষয়ে একটু চিন্তায় আছি।কোনো মতে মেডিকেলে চান্স পেলে হয়।”
“তারপর বুঝি উদ্দেশ্য সফল করবে?”
“হ্যাঁ তাই তো করবো।”
বলেই আদ্রের দিকে তাকালো সিয়া। আদ্রের মুখে দুষ্টু হাসি।সিয়া আমতা আমতা করে বলে,”না মানে অর্থোপেডিক্স নিয়ে আরো বেশি জ্ঞান অর্জন করবো।তাই আর কি।”
“হুম বুঝলাম।তোমার অর্থোপেডিক্স নিয়ে জ্ঞান অর্জন করতে যা যা সাহায্য লাগে আমি করবো।”
“তাহলে তো সুবিধা আরো বেশি।”
লাফিয়ে উঠে কথাগুলো বলে আবার থেমে যায় সিয়া।একটুতেই তার এক্সাইটেড বাড়তে থাকে।আদ্র তার মুখে মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে রেখেছে।সিয়া এবার লজ্জা পেয়ে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে দেখতে থাকে। ক্রাশের পাশে বসে একটু নার্ভাস সে।
গাড়ি এসে সরদার মহলের সামনে দাড়ালো।সিয়া নেমে গেলো গাড়ি থেকে।আদ্র নিজেও নেমে দাড়ালো। সিয়াকে বলে,”তোমার কাকাকে দেখতেই এসেছিলাম আমি।রাস্তায় ওদের দেখে গাড়ি থামালাম।একই বাড়িতে যেহেতু আসবো তাই আর কি বলেছিলাম লিফট দেওয়ার কথা।”
“ওহ,তাহলে আসুন ভিতরে।”
বলেই সিয়া হাঁটতে থাকে।বাড়িটির দিকে চোখ বোলাতে থাকে আদ্র।সিয়ার পিছনে হেঁটে ভিতরে ঢুকতে থাকে।সিয়া আদ্রকে মোহন সরদারের রুম দেখিয়ে দেয়।আদ্র উপরে উঠতে যাবে ঠিক তখন দেখতে পায় কিছু ফাইল চেক করতে করতে মায়া তার রুম থেকে বেরিয়েছে।আদ্র অন্য দিকে চোখ ঘুরিয়ে সিড়ি দিয়ে উঠতে নিলে সিড়ির মাঝ বরাবর সাক্ষাৎ হয় রুদ্রর সাথে।আদ্র ও রুদ্র একে অপরকে দেখে হ্যান্ডশেক করে।তারপর আদ্রকে নিয়ে যায় মোহন সরদারের ঘরে।মায়া এই সবকিছু দেখছিলো।আদ্রর চাহনিতে রহস্য।সিয়ার প্রতি আদ্রর আলাদা টান।এগুলো দেখতে পেলো মায়া।হসপিটালে থাকতেই সে সবকিছু দেখেছিলো।আজকে আবার সিয়া এসেছে আদ্রর সাথে।সন্দেহ তো হবেই।
নাস্তা নিয়ে সিয়া উপরে উঠতে নিলে মায়া বলে,”আমাকে দেও আমি নিয়ে যাচ্ছি।”
“কিন্তু ভাবী তুমি তো অফিসে যাবে।”
“সমস্যা নেই আমি দেখছি।তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।”
“আচ্ছা।”
সিয়ার একটু খারাপ লাগলেও চলে যায়।সিয়া নিজে চা বানিয়েছিলো আদ্রর জন্য।ভেবেছিলো নিজের হাতে দিয়ে ইমপ্রেস করবে কিন্তু এটা হলো না।
চা নিয়ে মায়া ঢুকলো মোহন সরদারের রুমে।মোহন সরদার চুপচাপ শুয়ে আছে।আদ্র ওনাকে দেখছে।সকালে আয়রা ব্যায়াম করে দিয়েছে।এখন আদ্র ওনার কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করে।
নাস্তার ট্রে হাতে মায়াকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে রুদ্র বলে,”আরে ভাবী জি আপনি!মন্ত্রীর বউ সার্ভেন্টের কাজ?”
“মন্ত্রীর বউ কিন্তু এই বাড়ির বউ।বউদের কাজ অতিথি আপ্যায়ন করা।যেটা বউ হয়ে করতে এসেছি।ননদ আসতে চেয়েছিলো আমি বাধা দিয়েছি।আজকাল আমার ননদদের উপর শকুনের দৃষ্টি বেশি পড়ছে তাই আর কি সেফ রাখছি ওদের।”
প্রথম কথাটা রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বললেও শেষ কথাটা আদ্রর দিকে তাকিয়ে বলে মায়া।আদ্র বুঝেও ঠোঁট কামড়ে হাসে।রুদ্র বলে,”শকুনটা ঠিক ভালো দৃষ্টির নাকি বাজে কোনটা ভাবী জি?”
“সময় হলে জানা যাবে।তো ডাক্তার আপনার নাস্তা।আমার ননদ সিয়া নিজের হাতে বানিয়েছে।খেতে খারাপ হবে না।টেস্ট করে জানিয়ে দিবেন।”
বলেই চলে যেতে নেয় মায়া।দরজার কাছে এসে আয়রার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,”আপনার নার্সকে এলার্ট করে দিবেন ডাক্তার আদ্র।অন্যের বরের দিকে নজর যেনো না দেয়।এই মায়া আবার রূপে এক গুনে আরেক।”
বলেই চলে যায় মায়া।আদ্র তাকালো আয়রার দিকে।একটু কঠিন দৃষ্টি দিয়েই তাকালো।আয়রা মাথা নাড়িয়ে না বুঝিয়ে দিলো।মোহন সরদার বলেন,”ছাড়ো তো ওর কথা।ওই মেয়ে এমন।আমার অবস্থা কেমন এটাই বলো।”
চায়ের কাপ হাতে নেয় আদ্র।চা দিয়ে ধোয়া উঠছে।নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নিতে থাকে।তারপর এক চুমুক দিয়ে বলে,”ভালোই আছে খারাপ না।”
মোহন সরদার তার শরীরের অবস্থাকে বুঝে নিলো।আদ্রর এমন কথা শুনে খুশি হয়ে যায় সে।আয়রা মিটিমিটি হাসতে থাকে।আদ্র ঠিক কি বিষয়ে বলেছে এটা আয়রা বুঝতে পেরেছে।আদ্র চা শেষ করে বলে,”তাহলে আজ আমি উঠি।নেক্সট উইকে দেখা হবে,বাই।”
বলেই বেড়িয়ে যায় আদ্র।রুদ্র নিজেও বেড়িয়ে পরে।রুমে থাকে আয়রা আর মোহন সরদার।মোহন সরদার তার মতো খবরের কাগজ পড়ছে আয়রা সোফায় বসে ফোন ঘাটছে।এর ভিতরে রুমে আসে সোনালী।মালিনী আর সোনালী মাজারে গিয়েছিলো।মোহন সরদারের জন্য তাবিজ এনেছে সে।রুম একা আয়রা আর মোহন সরদারকে দেখে একটু রেগে গেলো।কিন্তু কিছু না বলে মোহন সরদারকে বলে,”নেও এটা গলায় দেও।দেখবে ঠিক হয়ে যাবে।”
মোহন সরদার নিতে গেলে আয়রা বাধা দিয়ে বলে,”এই সময় তাকে এগুলো দেওয়া উচিত হবে না।তার গলা আর হাতেও ফ্র্যাকচার আছে।”
“তোমার থেকে কে জানতে চেয়েছে মেয়ে।তুমি তোমার কাজ করো।”
“আপনি হয়তো ভুলে গেছেন আমি ওনার দেখভাল করতেই এসেছি।তাই তো তাবিজ পড়তে না করছি। আর যদি এটাই আপনারা চান তাহলে আমি চলে যাচ্ছি।”
এবার মোহন সরদার মুখ খুলে।বলেন,”আহ নার্স তো ওই মেয়ে তুমি না।তাহলে তুমি কেনো তর্ক করছো।যেমন বলছে চলতে দেও না।”
তেতে উঠেছে সোনালী।চোখ রাঙিয়ে বলে,”বুড়ো বয়সে ভিমৃতী হয়?যুবতী দেখলে খুব দরদ লাগে তাই না।নষ্ট পুরুষ কোথাকার।”
আয়রা মিটিমিটি হাসতে তাহলে সোনালীর কথাতে।সোনালীর চিল্লানি শুনে মায়া সহ বাড়ির অন্যান্য মেয়েরা হাজির হয়।সবাই এই উপরের ফ্লোরে থাকে।নিচে শুধু মালিনী ও মোহন সরদার থাকে।এছাড়া হিয়ার লাইব্রেরী,ছোট মিটিং রুম,রান্নাঘর আর ডাইনিং রুম এগুলো।সবাই এসে দেখতে থাকে সোনালীর চিল্লাচিল্লি।এখন মায়া মুখে তাচ্ছিল্য ফুটিয়ে বলে,”নামাজ কালাম তো পড়েন না এক ওয়্যাক্ত।মনের মধ্যে থাকে কুটুক্তি শয়তানের বসবাস।সে আবার তাবিজে বিশ্বাসী!ধর্ম নিয়ে এরকম দুমুখো গিরি করেন কেনো বলুন তো?”
সোনালী এবার মায়ার দিকে ঘুরে বলে,”শোনো মেয়ে আমার সাথে লাগতে আসবে না।আমি কিন্তু তোমার শাশুড়ি না যে চুপ থাকবো।”
“আপনি যা করেছেন তার জন্য অনেক ছার পেয়েছেন।এখনও তো পাচ্ছেন।কিন্তু ধৈর্যের সীমা আমারও আছে।আপনার বাড়াবাড়ির শেষ কিন্তু করে দিবো।সে যাই হোক আমার কথা হলো এটা বস্তি এলাকা না।আপনি চিল্লাচিল্লি করে ছেলে মেয়েদের দেখাবেন নিজেদের স্বামী স্ত্রীর কীর্তি কলাপ এটা তো হবে না।আপনাদের দেখে কি শিখবে এরা?কিভাবে আলিশান বাড়িতে বস্তি গড়ে তুলতে হয় এসব?আমি নিজেও আজ বাসায় বসে কাজ করছি।আপনাদের চিল্লাচিল্লিতে পারছি না।”
সোনালী এবার তেড়ে এসে মায়ার দিকে আঙুল উঁচিয়ে বলে,”বেয়াদব মেয়ে হয়েছো তুমি।বাবা মা কোনো শিক্ষা দেয়নি…”
আর কিছু বলতে যাবে তার আগে সোনালীর হাত ধরে মুচড়ে ধরে মায়া।হাতে মোচড় খাওয়াতে শরীর কেপে মাথা ভনভন করতে থাকে তার।মায়া তাকে উল্টো ঘুরিয়ে বলে,”বলেছিলাম বেশি বাড়াবাড়ি না করতে।আমার শিক্ষা কি এটা আমি আপনার থেকে শিখবো না।আপনি যেটা করছেন সেটা আমার ঘর পর্যন্ত যাচ্ছে। মানে আমার কাজের ডিস্টার্ব।আপনি পরিবেশ নোংরা করবেন আর আমার দিকে আঙুল তুলবেন এটা তো হবে না কাকী শাশুমা।আপনাদের মতো ডাইনি মার্কা শাশুড়ি এই মায়া তার লিস্টে রাখে না।”
সিয়া আর হিয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।মিলি কলেজে এখন।রুদ্র বাইরে গেছে।তাই না পেরে সিয়া আর হিয়া রিকোয়েস্ট করে বলে,”প্লিজ ভাবী ছেড়ে দেও কাকিয়াকে।কাকিয়া আর তোমার বাবা মা নিয়ে কথা বলবে না।প্লিজ প্লিজ প্লিজ।”
ননদ গুলোর দিকে তাকিয়ে মায়া ছেড়ে দিলো সোনালীকে। যাদের জন্য অশান্তি কমাতে চেয়েছিলো তাদের সামনেই অশান্তি করলো নিজে।কথায় আছে যে যেটা চায় সে সেটা পায় না।যতই হোক সব সময় সবকিছু সম্ভব না।তাই তো এখন মায়ের শিক্ষা নিয়ে তাও সোনালীর মতো মহিলার মুখে কথা শুনতে পারলো না মায়া।সোজা আক্রমণ করে দিলো।এখন সিয়া আর হিয়া না থাকলে হয়তো অঘটন ঘটে যেতো।
চলবে…?