#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়েবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩০
আবিরের সাথে কথ বলে হিয়ার বেশ ভালো লাগে পিকুর মতো কথা বলে ফান করে। পিকু কার কাছ থেকে এইরকম পাকা পাকা কথা শিখেছে হিয়া এখন বুঝতে পার। তবে আবিরের পছন্দ জেনে নেয় সেই অনুযায়ী রান্না করতে হবে তাকে তবে মাএ সকালের রান্না শেষ করেছে। দুপুর হতে বেশ অনেক বেলা রয়েছে তাই পড়তে বসতে হবে তাকে।
হিয়া পড়তে বসে যায় তবে পড়াশোনা শেষ করে রান্না ঘরে যায় যেহেতু তাকে কোচিং যেতে হবে তাই তাড়াতাড়ি রান্না বসিয়ে দেয়। আজকে সব আবিরের পছন্দ অনুসারে রান্না করবে বাড়ির জামাই বলে কথা এতোদিন পর এসেছে তাই অনেক পদ রান্না করেছে হিয়া। টেবিলে সাজিয়ে রাখে সব খাবার তানিয়া ঘর থেকে নিচে আসে ওহ মনে করেছে হিয়া একা একা রান্না করবে তাই সাহায্য করতে এসেছে।
হিয়া এই বাড়িতে আসার পর থেকে সেই রান্না করে তানিয়ার ওকে সাহায্য করা উচিত তাই তানিয়া নিচে নামে। কিন্তু টেবিলে অনেক ধরণের খাবার সাজিয়ে রাখা দেখে বুঝতে পারে হিয়া রান্না শেষ করে ফেলেছে। হিয়া কাজের প্রতি ভালোবাসা দেখে তানিয়া বেশ খুশি হয় মেয়েটা সত্যি অনেক ভালো । তানিয়া রান্না ঘরে যায় হিয়া সালাট কাটতে থাকে হিয়া তানিয়াকে দেখে বলে –
“- তানিয়া আপি তুমি নিচে আসলে যে তোমার কি কিছু দরকার ছিলো। আমাকে ডাকতে পারতে আমি উপরে গিয়ে দিয়ে আসতাম “।
তানিয়া হেঁসে বলে –
“- আমার কোনো জিনিসের দরকার নাই সারাদিন তো ঘরে থাকি তুমি রান্না করে সবাইকে খাওয়াও। আজকে তাই তোমাকে সাহায্য করতে এসেছি কিন্তু সব রান্না শেষ করে ফেললে তুমি “।
“-আর কোনো সাহায্য করতে হবে না আমাকে এইটুকু করতে পারব আমি আর আবির ভাই এতোদিন পর বিদেশ থেকে এসেছে তার জন্য ভালো কিছু রান্না করা দরকার। তুমি আবির ভাইকে ডেকে নিয়ে আসো খাবার রেডি “।
“- আবির একটু পরে খাবে মাএ আযান দিলো তুমাকে টেনশন করতে হবে না “।
“- আসলে একটু তাড়াতাড়ি রান্না করে ফেলেছি আমাকে আবার কোচিং যেতে হবে। তাহলে খাবার এখানে রাখা আছে তুমি আবির ভাই আর বাবাকে বেড়ে দিও আমি বরং রুমে গিয়ে রেডি হয়ে নেয়। সময় হয়ে গেছে প্রায় “।
“- আচ্ছা যাও “।
হিয়া গিয়ে উপরে উঠে যায় নামাজ পড়ে রেডি হয়ে নিচে এসে বাহিরে যায় গাড়ি উঠে বসে। গাড়ি চলতে থাকে আর অল্প সময়ের মধ্যে কোচিং পৌঁছে যায় হিয়া গাড়ি থেকে নেমে পড়ে। হিয়া গিয়ে পিছনে বসে পড়ে যদিও সামনে যায়গা ছিলো তবুও পিছনে বসলে এখন ভালো লাগে। অনিল আজকে ও চোখ বন্ধ করে রয়েছে। হিয়া বসে আড়চোখে অনিকে দেখে কি অদ্ভুত মানুষ। একটা লোক এতো ঘুমায় কি করে।
হৃদান অফিসের কাজে একটু বিজি ছিলো কিন্তু সব কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে আসে। হিয়া ও কোচিং শেষ করে বাড়ি ফিরে আসে বিছানায় শরীর ছেড়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। হৃদান অফিস থেকে ফিরে সোজা হিয়ার রুমে যায় কোনো যোনো এখন আর নিজের রুমে একলা থাকতে ভালো লাগে না। মেয়েটা কি অদ্ভুত জাদু করেছে ওকে সবসময় ওর পাশে থাকতে ইচ্ছা করে হৃদানের। হৃদান দেখে হিয়া ঘুমিয়ে রয়েছে পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ে। হিয়া ঘুমের মধ্যে কারো বুকের কাঁপন শুনতে পাই যদিও তার ঘুম এতো গভীর হয় নাই।
হিয়া পিটপিট করে চোখ খুলে হৃদানকে জড়িয়ে ধরে থাকতে দেখে অবাক লোকটা কখন আসলো। তবে হৃদান হিয়াকে এমন করে জড়িয়ে ধরেছে মনে হচ্ছে ছেড়ে দিলেএখুনি পালিয়ে যাবে এই কথাটা ভেবে হিয়ার মুখে হাসি ফুটে উঠে
।তবে হৃদান অফিসের কাপড় না খুলে ঘুমিয়ে রয়েছে এইটা দেখে হিয়া হৃদানকে একটু ডাক দেয় –
“- এইযে শুনুন ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসেন এভাবে কেউ ঘুমিয়ে পড়ে “।
হিয়া ডাক শুনে হৃদান একটু একটু করে চোখ খুলে তাকায় হৃদান বলে –
“- কি হয়েছে এভাবে ডাকছেন কোনো ”
“- অফিস থেকে উঠে এভাবে ঘুমিয়ে পড়লেন কোনো এখনো জামা কাপড় বদলান নাই। যান আগে ফ্রেশ হয়ে আসুন পড়ে ঘুমাবেন “।
“- আমার শরীর অনেক টার্য়াড একটু ঘুমাতে দেন পরে উঠে ফ্রেশ হবে ঘুমাতে দেন “।
“- কিন্তু “।
“- কোনো কিন্তু নাই এখন ঘুমান না হলে কিন্তু আমি জেগে গেলে সমস্যা কমপক্ষে একশো বার গুণে গুণে চুমো খাবো। সেটা যদি চান তাহলে উঠে পড়তে পারি”।
“- ঠিক আছে ঘুমান আপনি “।
“- এই না হলে আমার জান পাখি তবে জেগে গেলে উপকার বেশি হতো। সমস্যা নাই পরে সব উসুল করব এখন একদম চুপটি করে বুকের মধ্যে থাকেন জান পাখি।
হিয়া ও হৃদানের বুকে ঘুমিয়ে পড়ে এইটা তার জন্য বরাদ্দ করা সবচেয়ে সুখের জায়গা। প্রায় রাত হয়ে গেছে হৃদান ঘুম থেকে উঠে দেখে হিয়া ঘুম থেকে উঠে পড়েছে তাই সেও উঠে পড়ে। হিয়া তখন ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে হৃদানকে বলে –
“- আপনি উঠে পড়েছেন তাহলে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে যান “।
হৃদান রুমে না গিয়ে হিয়ার কাছে যায় ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে হিয়া চোখ বড় বড় করে তাকায় ওর দিকে। হৃদান কোনো কথা বলে নিজের সাথে মিশিয়ে হিয়াকে কিস করতে থাকে হিয়া চোখ বন্ধ করে হৃদানের ছোঁয়া অনুভব করছে। ঠিক তখন ঘরে আবির ঢুকে পড়ে ওদের দুইজনকে দেখে বলে –
“- আরে আরে সরি ভুল সময় চলে এসেছি “।
আবিরের কণ্ঠ শুনে হৃদান হিয়া কে ছেড়ে দেয় হিয়া বেশ লজ্জা পায় আবিরকে দেখে। কিন্তু হৃদানের মুখে লজ্জার কোনো ছাপ নাই সে আরো বলে উঠে –
“- কি দুলাভাই এতো সুন্দর বউটাকে আদর করছিলাম কিন্তু তুমি এসে সব নষ্ট করে দিলে। আর কয়েকটা চুমো খেতে দিতে বউকে দরজায় নক করে আসবে তো “।
হৃদানের কথা শুনে হিয়া চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে ছি: কি অসভ্যর মতো কথা বলছে লোকটা। হিয়ার ইচ্ছে করছর হৃদানের মুখ বন্ধ করতে মুখে একদম লাগাম নাই লোকটার। আবির হৃদানের কথা শুনে হেঁসে বলে –
“- আরে শালা বাবু কি করব বলো ভুল হয়ে গেছে তবে তুমিযে আমার বউ থেকে আমাকে দূরে রাখো তখন কতো কষ্ট হয় বুঝতে পারো। তুমি তো তবুও তোমার বউকে চুমো খেতে পারলে আমিতো সেটা ও পারি না “।
“- আরে দুলাভাই টেনশন করো না এখন ফিরে এসে পড়েছে সো কোনো সমস্যা নাই। তৃমি বললে আবার তোমাদের ফুলশয্যার আয়োজন করে দিবো “।
“-আচ্ছা সেটা তোমাকে করতে হবে না আমি করব সব। শোনে শালাবাবু অনেক দিন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না তাই এখান থেকে একটু দূরে যে পাহাড় রয়েছে সেখানে ঘুরতে যাবো ভেবেছি তুমি আর হিয়াও যাবে আমার সাথে “।
“- কিন্তু আমার কোচিং রয়েছে আবির ভাই কি করে যাবো “.
“- আরে কালকে তো শুক্রবার সো সমস্যা নাই তাহলে রেডি থেকো কালকে। আর শালা বাবু সরি তোমার চুমো খাওয়ায় সমস্যা করার জন্য এখন ইচ্ছে মতো করো যা করার “।
হিয়ার দুইজনের কথা শুনে কান গরম হয়ে যায় সত্যি কি জুটি এদের এই বাড়ির সবার মাথা খারাপ। হিয়াকে চিন্তা করতে দেখে হৃদান বলে –
“-সো চলো আবার চুমো খাওয়া শুরু জান পাখি “.
“- অসভ্য পুরুষ যান ফ্রেশ হতে যান মুখে কিছু আটকায় না আপনার “।
#চলবে
#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়েবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩১
সকাল হয়ে গেছে হৃদান আর হিয়া আজকে বেড়াতে যাবে পাহাড়ে তবে কোন পাহাড়ে যাবে সেটা হৃদান যানে না। সবকিছু আবির ঠিক করছে হৃদানের এইসব বিষয় নিয়ে মাথা ব্যাথা নাই আর ও করতে ও চাই না। হিয়া রেডি হয়ে যায় তবে আজকে শাড়ি পড়ে অনেকদিন ধরে কোনো শাড়ি পড়ে বাহির হয় নাই তাই ও পড়ে। সকালের রান্নার কাজে তানিয়া ওকে সাহায্য করেছে তাই খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেছে রান্নাটা।
হৃদান রেডি হয়ে হিয়ার রুমে আসে হিয়া তখন আয়নায় নিজের চুল ঠিক করতে বিজি রয়েছে। হৃদান নিজের রুমে এসে হিয়াকে দেখে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে কি সুন্দর মায়াবী বউ তাই। একটা মেয়ে কতো সুন্দর হলে তাকে এতো সুন্দর লাগতে পারে তবে ভালোবাসলে মানুষের সবকিছু ভালো লাগে। হৃদান ফোন দিয়ে ওর ছবি তুলতে থাকে কি সুন্দর লাগছে হিয়াকে।
হিয়া হঠাৎ করে ছবি তুলার শব্দ পেয়ে পিছনে ফিরে তাকায় দেখে হৃদান দরজার সাথে হেলান দিয়ে ছবি তুলছে। হিয়া হুদানকে দেখে ওর মুখে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে দেখে হৃদানকে ও আজকে বেশ সুন্দর লাগছে। ওরা একে অপরে মেচিং কালারের কাপড় পরেছে লাল। হিয়া হৃদানকে জিজ্ঞেস করেছিলো কি পড়বে তখন হৃদান বলেছে সে তার বউকে লাল শাড়িতে দেখতে চাই। হিয়া হৃদানের কাছে গিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে –
“- এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছেন আমাকে “।
হৃদান হেঁসে ফোন পকেটে ভরে হিয়াকে নিজের কাছে নিয়ে এসে ওর কোমড় ধরে দাঁড়িয়ে থাকে।আর অন্য হাত দিয়ে চুলগুলো সুন্দর করে কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে বলে –
“- কি করব এইভাবে তাকিয়ে না থেকে আমার বউটাকে এতো সুন্দর লাগছে যে চোখ সরাতে পারছি না। জানতাম না তো আমার আমার বউকে লাল শাড়ি পড়লে এইরকম টুকটুকে বউ লাগে “।
হৃদানের মুখে বউ ডাক শুনা হিয়ার খুব পছন্দ কি সুন্দর একটা ডাক কতো মায়া আর অধিকার ম্রিশিত ডাক এইটা। হিয়া হেসে নিজের হাত দিয়ে চোখের কাজল দিয়ে হৃদানের গলার কাছে একটা ফোঁটা দিয়ে দেয় আর বলে –
“- আর আমার জামাইকে যে এতো সুন্দর লাগছে সেটার কি হবে হুম। তাই ভালো করে নজর ফোঁটা দিয়ে দিলাম যাতে আমি ছাড়া অন্য কারো নজর লাগে না। একটা কথা মনে রাখবেন আপনি শুধু আমার ঠিক আছে “।
হিয়া বাচ্চামি কাণ্ড দেখে হৃদান হাসে তার বউটা সবসময় বাচ্চা হয়ে থাকবে আর হৃদান কখনো হিয়াকে ছেড়ে অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাবে না। তবুও তার বউয়ের এই পজিসিভ নেস খারাপ লাগে না তার হৃদান আর হিয়া রুম থেকে বাহির হয়ে চলে যায়। পিকু, আবির,তানিয়া রেডি হয়ে নিচে আসে হিয়াকে দেখে তানিয়া বলে –
“- দেখছো কি সুন্দর লাগছে হিয়াকে লাল শাড়িতে কি দারুণ মানিয়েছে ওকে “।
“- এই হৃদান চৌধুরী পছন্দ সবসময় সুন্দর সো তার পছন্দের মানুষ সবসময় সুন্দর হবেই “।
হৃদানের কথা শুনে আবির বলে –
“- বাহ শালাবাবু দেখি বেশ রোমান্টিক হয়ে গেছে আগে তো কোনো মেয়ের দিকে তাকাতো না। আর এখন কবি সাহিত্যেক মতো কথা শিখে গেছে প্রেমে পড়লে কতো কিছু শিখে মানুষ “।
আবিরের কথা শুনে তানিয়া বলে –
“- খুব হেসেঁ কথাটা বলছো ভাইতো বিয়ের পর রোমান্টিক হয়েছে তুমিতো তাই হও নাই। আর রোমান্টিক কথা সেটাতো তুমি কখনো বলতে পারো না যতসব “।
“- আচ্ছা আমি রোমান্টিক না তাই না রোমান্টিক হতে হলে বউকে দরকার। তোমার এই হিটলার বাপের জন্য বউকে তো কাছে পায় না তিনমাসে একবার আসি দেশে। রোমান্টিকতা কোথা থেকে দেখাবো শুনি “।
“- তুমি আমার বাবাকে হিটলার বললে “।
আবির আর তানিয়া ঝগড়া শুরু করে দিলো হিয়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওদের ঝগড়া দেখছে কি সুন্দর খুনসুটি আর ঝগড়া করছে। আচ্ছা ভবিষ্যতে হিয়া হৃদান ও কি ঝগড়া করবো এইরকম হিয়া কি জিততে পারলে ঝগড়া করে ওর সাথে। কিন্তু হৃদানের সব গুণ হিয়ার ভালো লাগে তাহলে ঝগড়া কি নিয়ে করবে। হৃদান ওদের ঝগড়ায় বিরক্ত হয় কি শুরু করলো দুইজন এমনি সময় চলে যাচ্ছে আবার বিকেল দিকে বাড়ি ফিরতে হবে তাই তাড়াতাড়ি যেতে হবে।
পিকু গাড়িতে বসে গেম খেলছে তার বাবা মায়ের ঝগড়া দেখার কোনো ইচ্ছা নাই। হৃদান এবার বিরক্ত হয়ে বলে –
“- আচ্ছা তোরা কি এখন ঝগড়া করে সারাদিন নিবি হুম পাহাড়ে যেতে হবে। এমনি দেরি হয়ে যাচ্ছে পরে আবার ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যাবে “।
হৃদানের কথা শুনে আবির আর তানিয়া থেমে যায় সত্যি ঝগড়া করলে পরে দেরি হয়ে যাবে। তানিয়া গিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে হৃদান ড্রাইভ করবে আর হিয়া ওর সামনের সিটে বসে রয়েছে। গাড়ি ছেড়ে দিলো অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে হিয়া বাহিরের জানলা দিয়ে বাহিরে দেখছে কি সুন্দর পরিবেশ। হৃদান ড্রাইভ করার ফাঁকে ফাঁকে নিজের বউকে দেখে কিন্তু হঠাৎ হিয়াকে হাত কেউ শক্ত করে ধরে ফেলে
হিয়া খুব ভালো করে এই হাতটা কার কিন্তু মনে পড়ে তানিয়া আর আবির ও আছে গাড়িতে। তাই পিছনে ফিরে দেখে ওমা ওরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে আর পিকু খুব মনোযোগ সহকারে কি যোনো করছে। তবুও হিয়া হাত সরিয়ে নিতে হৃদানকে বলে কিন্তু হৃদান শুনে নাই। হিয়া তবুও হাত সরিয়ে নেয় কিন্তু পিকুকে কিছু মনোযোগ সহকারে করতে দেখে হৃদান জিজ্ঞেস করে –
“- আচ্ছা পিকু তুমি এতো মনোযোগ দিয়ে ফোনে কি করো
“- কোনো মামা তোমার কি শুধু একাই বউয়ের হাত ধরতো ইচ্ছা করে আমার করে নাহ। তাই আমি ও আমার গার্লফ্রেন্ড সাথে মেসেজে কথা বলছি “।
হিয়া ওদের কথা শুনে কি বলবে বাবা ঠিক বলে এরা মামা ভাগ্নে দুইজন একরকম। হিয়া আবার জানলা দিয়ে বাহিরে দেখতে থাকে কিন্তু পাহাড়ের রাস্তা যত কাছাকাছি আসছে যত হৃদানের হাত পাঁ কাঁপতে শুরু করছে এক অজানা ভয় ওকে ঘিরে ধরেছে। এই রাস্তায় সে আগে এসেছে কিন্তু সেই দিনের ঘটনা হৃদানের মনে পড়তে গা সিউরে উঠছে। তানিয়া আর আবির একটু আগে ঘুম থেকে উঠে পড়ে হিয়া তাদের সাথে কথা বলছে।
হিয়া হঠাৎ খেয়াল করে হৃদানের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে ওর হাত পাঁ কাপছে। বিষয়টা হিয়ার কাছে নরমাল মনে হলো না হিয়া জিজ্ঞেস করে –
“- কি হয়েছে আপনার এমন করছেন কোনো আপনি “।
“- হুদান কি হয়েছে তোমার তুমি ঠিক আছো “।
“- হুম আমি ঠিক আছি কিন্তু আবির ভাই তুমি বেড়াতে যাবার জন্য এই জয়ন্তী পাহাড ঠিক করেছো যেটা বলো নাই কোনো আমাকে। এই পাহাড় ছাড়া কি অন্য কোনো বেড়ানোর জায়গা ছিলো না “।
“- আসলে এই জায়গাটা বেশ সুন্দর আর বাড়ির কাছে তাই ঠিক করেছি কেনো সমস্যা কোনো “।
“- না সমস্যা না আসলে আমার শরীর ভালো লাগছে না তাই তুমি ড্রাইভ করো আমি পিছনে বসি “।
হৃদান এসে পিছনে বসে গেছে কিন্তু হিয়া এখনো সামনে রয়েছে হিয়া যদিও হৃদানের দিকে ফিরে দেখছে। কিন্তু হৃদান চোখ বন্ধ করে রয়েছে কারণ সে হিয়ার দিকে তাকাতে চাই না শুধু শুধু মনে মনে ভাবছে হিয়াকে কি হৃদান ঠকাছে। সত্যি কথাটা কি হিয়াকে বলে দেওয়া দরকার কিন্তু সত্যি শুনে হিয়া ওকে মেনে নিতে পারবে যদি ঘৃণা করে তখন। পাহাড়ের যতো কাছে আসছে মনে হচ্ছে হৃদানের হিয়ার থেকে তত দূরে চলে যাচ্ছে। সত্যি কি হিয়া আর ওর সম্পর্ক কোনো ভবিষ্যতে নাই কিন্তু হৃদান কি বাঁচতে পারবে হিয়াকে ছাড়া দেখতে পারবে হিয়ার চোখে নিজের জন্য ঘৃণা।
পাহাড়ে পৌঁছে যায় সেখানে কোনো হেটেল ভাড়া নেয় নাই তবে একটা জায়গা আছে যেখানে অনেক মানুষ বেড়াতে এসে বসে থাকে। তানিয়া একটা ঘাসের উপর পাটি বিছিয়ে সেখানে জিনিস পএ রাখছে হিয়া ওকে সাহায্যে করছে কিন্তু হৃদান এখানে নাই। হৃদান একদম পাহাড়ের রাস্তার দাঁড়ে একটা খাদেঁর উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এখান থেকে পড়ে গেলে কারো বাচাঁ সম্ভব না। এই জায়গা সেই চিৎকার সব মনে পড়ে যাচ্ছে হৃদানের মাথার পিছনে ব্যাথা করছে তার।
হিয়া হৃদানকে না দেখতে পেয়ে অনেক খোঁজার পর সে দেখে হৃদান একা দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাই সেখানে যায় আর বলে –
“- আপনি এখানে কি করেন পড়ে যাবেন তো “।
“- পড়ব না টেনশন করবেন না। কিন্তু আপনি এখানে “।
“- আপনাকে না দেখতে পেয়ে আসলাম এখানে “।
হিয়া দাঁড়িয়ে রয়েছে কিন্তু এই জায়গাটা তার কাছে অন্যরকম লাগছে কেমন যেনো আপন আপন।মনে হচ্ছে এখানের প্রতিটা বাতাসে তার অপরিচিত মানুষের ছোঁয়া রয়েছে। হিয়া বলে –
“- আচ্ছা এই জায়গায় আসার পর মনে হচ্ছে কেউ একজন আমার আপন মানুষ এখানে রয়েছে। সে আমাকে ডাকছে এতো আপন কোনো মনে হচ্ছে “।
“- কার কথা মনে পড়ছে আপনার হিয়া “।
“- আমার মায়ের কথা মনে পড়ছে কিন্তু মা তো পাহাড় পছন্দ করতো না। আর আম্মু অনেক আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে তবুও এক আলাদা অনুভূতি কাজ করছে মনে হচ্ছে আম্মু আমার আশেপাশে আছে “।
হৃদানের কানে হিয়ার সব কথা যায় নাই কিন্তু কারণ সে একটা কথায় মগ্ন রয়েছে। হিয়া বলল তার মায়ের পাহাড় পছন্দ না সেটা কি করে হতে পারে। হৃদান হিয়াকে এক টানে নিজের কাছে নিয়ে আসে আর জিজ্ঞেস করে –
‘- কি বললেন হিয়া আপনার মায়ের পাহাড় পছন্দ ছিলো না মানে “।
“- হুম ছিলো না তো আম্মু পাহাড়ে উঠলে ভয় পেতো কারণ বেশি উচ্চতা আম্মুর পছন্দ না। তাই কখনো পাহাড়ে আসতো না “।
“- আচ্ছা হিয়া আপনাদের আগে কোনো গাড়ি ছিলো অনেক দামী গাড়ি “।
“- না ছিলো না কোনো কি হয়েছে “।
হৃদান পুরো ঘটনা বুঝতে পারলো না হিয়ার মা যদি পাহাড় পছন্দ না করে তাহলে সেইদিন কোনো। আর ওদের গাড়ি যদি না থাকে তাহলে সেটা কার গাড়ি ছিলো আসল সত্যি কি সেটা যাহ হৃদান যানে। না এর আড়ালে অন্য কিছু রয়েছে হৃদান কি সত্যি দোষী
#চলবে