#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়্যেবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩৪
হিয়া খাবার টেবিলে সাজিয়ে রাখে এরপর রায়হান চৌধুরী নিচে নেমে আসে তাকে খাবার দেয়। তানিয়া পিকুকে নিয়ে স্কুলে চলে যায় হিয়া নিজের রুমে চলে আসে। হৃদান আজকে অনেক আগে অফিসে চলে গেছে হিয়া খেয়ে যেতে বলে কিন্তু হৃদান মানা করে দেয়। হিয়া তাই ঘরে এসে ফোন নিয়ে হৃদানকে ফোন করে –
“- হ্যলো কোথায় আপনি কিছু কি খেয়েছেন “।
হৃদান গাড়িতে বসে রয়েছে কিন্তু হঠাৎ ফোন দেখে হিয়া কল করেছে তাই রিসিভ করে নিশ্চয়ই খাবার কথা জিজ্ঞেস করবে সেটা ও জানতো। হৃদান বলে –
“- না এখনো খায় নাই রাস্তায় অনেক জ্যাম পরে খেয়ে নিবো আপনি ও খেয়ে নেন হিয়া “।
“- ওহ আচ্ছা এইজন্য বলেছিলাম বাসা থেকে খেয়ে যেতে এখন অফিসে পৌঁছাতে যদি দেরি হয় তাহলে এতোখন না খেয়ে থাকতে হবে। আপনি কোনো কথা শুনতে চান না আমার “।
“- ওকে সরি এতো টেনশন করতে হবে অফিসে পৌঁছে খাবার খেয়ে নিবো। প্রমিজ আর হৃদান চৌধুরী সবসময় তার বউয়ের কথা শুনে চলে “।
“- হুম খুব ভালো করে জানি কতটা শুনে চলেন এখন তাড়াতাড়ি খাবার খেয়ে নিবেন। আর খেয়ে আমাকে কল করবেন মনে থাকে যোনো “।
“- হুম মেডাম মনে থাকবে “।
হৃদান ফোন কেটে দেয় পরে সত্যি হিয়া হৃদানের জন্য অনেক টেনশন করে কিন্তু আজকে একটা জরুরি কাজ আছে। হৃদান অফিসে পৌঁছে যায় দারোয়ানকে দিয়ে খাবার আনিয়ে নেয় যখন খাবার খেতে যাবে তখন জাহিদ রুমে আসে আর বলে –
“- কি অবস্থা তোমার হৃদান। বিয়ে করার পর ও যদি সকালের খাবার বাহির থেকে নিয়ে এসে খেতে হয় তাহলে বিয়ে করে কি লাভ। ভাবী কি খাবার দেয় নাই খেতে?
হৃদান খাবার খাওয়া রেখে জাহিদের মুখের দিকে তাকায় সে যানে জাহিদ ইচ্ছে করে কথাটা বলছে। নিজের তো বিয়ে হয় নাই এইজন্য হৃদানকে খোঁচাতে এসেছে তাই। হৃদান বলে –
“- যদি এইসব অদ্ভুত কথা বলা বন্ধ হয় তাহলে অফিসের কাজের উপর মনোযোগ দেও। কালকে যে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন বিল পাশ হয়েছে এলাকার রাস্তার উন্নয়নের জন্য সেই ফাইল দাও। আর কাকে কাজ করার জন্য নিধারিত করবে সেটা ঠিক করো “।
“- তুমি না হৃদান কেমন যোনো। কোথায় একটু ভাবীর কথা বলবে তাহলে বুঝতে পারব বিয়ে করার পর জীবন কেমন চলে তা না কাজের বিষয়ে কথা বলছ। তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না সারাদিন কাজ কাজ করা ছাড়া “।
“- আমাকে দিয়ে কি হবে কি হবে না সেটা আমি বুঝে নিবো এখন তাড়াতাড়ি ফাইল নিয়ে আসো। আর আজকে এমপির সাথে মিটিং রয়েছে রাস্তার কাজের বিষয়ে টাকার বিষয়ে সো ভালো করে কাজ করো “।
জাহিদ চলে যায় এই হৃদানের সাথে কথা বলে সে পারবে না জনাবের যা রাগ দেখা যাবে ধমক দিয়ে জাহিদের কলিজা শুকিয়ে ফেলবে। হৃদান নিজের খাবার খাওয়া বিষয়ে মনোযোগ দেয় তবে হিয়ার কথা মনে পড়ে যায়। তাই ফোন বের করে একটা পিক নিয়ে হিয়ার মোবাইলে পাঠিয়ে দেয়। না হলে মেয়েটা আবার টেনশন করবে হৃদান নিজের খাওয়া শেষ করে।
হিয়া নিজের রুমে গিয়ে পড়তে বসে মোবাইলে একটা নোটিফিকেশন শব্দ শুনে চেক করে দেখে হৃদান পিক দিয়েছে। হিয়া ছবিটা দেখে হেঁসে উঠে তারপর আবার পড়াশোনা করতে থাকে হৃদান খাবার শেষ করে এমপির সাথে মিটিং করতে তার কার্যালয়ে যায় প্রায় দুই ঘণ্টা মিটিং হয়। একটা রাস্তা করা সহজ কথা না সেটা টাকা সহ সব বিষয় নিযে কথা বলা।এই শহরের এমপি যথেষ্ট ভালো মানুষ আর হৃদানকে বেশ পছন্দ করে। হৃদান বলে –
“- ওকে স্যার তাহলে সেটা ঠিক হলো এইবার কাজ পাবে শফিক গ্রুপ “।
“- ওকে তাহলে তুমি ওদের সাথে কথা বলে নাও “।
“- ওকো কোনো সমস্যা নাই। তাহলে আজকে আমি আসি এমপি সাহেব “।
“- ওকে আবার দেখা হবে “।
“-ইনশাআল্লাহ “।
হৃদান এমপির সাথে মিটিং শেষ করে গাড়িতে উঠে পড়ে অফিসে আবার যেতে হবে। এই কাজের দায়িত্ব শফিক গ্রুপকে দেওয়া হয়েছে ওদের সাথে কথা বলতে হবে আর বিভিন্ন বিষয় রয়েছে। হৃদান যখন এইসব চিন্তা করছিলো তখন ওর ফোনে কারো কল আসে। ফোনে নাম্বার দেখে হৃদানের মাথা থেকে সব কাজের কথা চলে যায় এখন অন্য টেনশন মাথায় আসে। হৃদান ফোন ধরে বলে –
“- হ্যালো কি অবস্থা কি খবর পেয়েছো?
আগন্তুক ফোন ধরে বলে –
“- হৃদান স্যার আপনার কাজ অনেকটা হয়ে গেছে সেই মহিলার বিষয়ে অল্প খবর পেয়েছি “।
হৃদান কথাটা শুনে খুশি হলো অনেকদিন পর একটা তৃপ্তির আনন্দ উপলব্ধি করতে পারছে সে। নিজেকে একটা অন্যায়ের জেলখানা থেকে মুক্তি পাওয়ার আভাস সে পাচ্ছে হৃদান বলে –
“- কি খবর আসল ঘটনা তাড়াতাড়ি খুলে বলো “।
“- স্যার সেই মহিলার নাম দিয়া তার স্বামীর নাম ছিলো হাবীব। অনেকদিন আগে মহিলা প্রেম করে বিয়ে করেছিলো হাবিব বেশ বড়োলোক ছিলো কিন্তু মহিলা গরিব ছিলো। হাবিরের পরিবার বিয়ে মেনে নেয় নাই কিন্তু তারা একে অপরের সাথে সংসার করতে থাকে। দুইবছর পর তাদের একটা মেয়ে হয় তার নাম হিয়া যার কথা আগে জিজ্ঞেস করেছিলেন আপনি। পরে মহিলা একটা দুর্ঘটনায় মারা যায় “।
“- আচ্ছা সেই মহিলার বিষয়ে যে জানতে বলেছিলাম সে পাহাড়ে ভয় পেতো নাকি। বা মহিলা যেখানে মারা গিয়েছে সেই জায়গায় পুলিশ কেস তদন্ত করেছে নাকি “।
“- স্যার পুলিশ কেসটা তদন্ত করেছে তবে ওরা মহিলার পরিবারের সাথে কথা বলেছে। মহিলার ভাই বলেছে ওনার স্বামী সাথে তার ডিভোর্স হয়ে ছিলো তাই হয়তো আত্মাহত্যা করেছে। তাই পুলিস কেস বন্ধ করে দিয়েছে আত্নহত্যা ভেবে “।
“- হুম বুঝতে পেরেছি একটা কাজ করো তুমি সেই থানার ঠিকানা আমাকে দাও। আর সেই লোক মানে হিয়ার বাবা হাবিরের খোঁজ দাও আমাকে “।
“- স্যার হাবিবের খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সে এখন পঙ্গু কিন্তু কোথায় আছে সেটা জানতে পারি নাই “।
“- ওহ ওর কোনো ছবি রয়েছে তোমার কাছে “।
“- জি স্যার আছে আমি আপনাকে পাঠিয়ে দিবো কিন্তু এখন আমার ফোনে চার্জ নাই বিকালে দিবো “।
“- হুম তাড়াতাড়ি দেও আর মনে রাখবে যদি কাজটা ভালো করে করতে পারো তাহলে এতো টাকা দিবো। যাতে তোমার চৌদ্দ পুরুষ বসে বসে খেতে পারবে “।
“- বিশ্বাস রাখেন সব খবর আপনি পেয়ে যাবেন “।
“- ওকে বাই “।
“- বাই “।
হুদানের মাথা শুধু এই কথাটা আসছে আসল সত্যি কে আর কে এই হাবিব। হিয়া আজকে কোচিং যায় সেটা শেষ করে বিকালে বাড়ি ফিরে আসে বেশ টার্য়াড সে তাই একটু ঘুমিয়ে নেয়। পরে বিকালে ঘুম থেকে উঠে হৃদানের রুমে দিকে যায় হৃদান খেয়েছে নাকি সেটা জানতে।
হৃদান অফিস শেষ করে আসে ওয়াশরুমে যায় গোসল করতে তখন হিয়া রুমে ঢুকে। হিয়া দেখে হৃদান ঘরে নাই তাই বুঝতে পারে ওয়াশরুমে গেছে সো একটু রুমের এইদিক ওইদিক দেখতে থাকে হঠাৎ ফোনে একটা শব্দ হয়। হিয়া গিয়ে দেখে ফোনটা অন করে মেসেনজকরে যেতেই একটা ছবি এসেছে দেখতে যাবে তখন পিছন থেকে কেউ ডাক দেয় –
“- হিয়া “।
হিয়া ডাকটা শুনে পিছনে ফিরে দেখে হৃদান দাঁড়িয়ে রয়েছে হৃদান হিয়ার হাতে ফোন দেখে অবাক হয়। কোথায় কিছু দেখে ফেলে নাই তো হৃদান বলে –
“- হিয়া আপনি এই রুমে কি করেন “।
“- ওহ এমনি আপনার সাথে দেখা করতে এসেছি কিন্তু আপনি গোসল করতে গিয়েছেন “।
“- ওহ ফোনে কি করছিলেন আপনি “।
“- না কে যানি একটা ছবি পাঠিয়েছে সেটা “।
“- দেখেছেন আপনি “।
“- হুম “।
#চলবে
#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়্যেবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩৫
হিয়া মুখে হুম কথাটা শুনে হৃদানের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে হিয়া কি সত্যি ছবিটা দেখে ফেলেছে তাহলে এখন কি হবে। হিয়া কি হৃদানকে ভুল বুঝবে। হৃদানকে ছেড়ে কি চলে যাবে কথাটা মাথায় আসতে হৃদানের মনে তাণ্ডব শুরু হয়ে গেলো। হৃদান জিজ্ঞেস করলো –
“- কি দেখেছেন সেই ছবিতে আপনি “।
“- মানে কিছু দেখি নাই ফোন হাতে নিয়েছে ছবি দেখার আগে আপনি ডাক দিলেন “।
হৃদানের মাথা থেকে চিন্তার ভুত নেমে গেছো হিয়া কিছু দেখতে পারে নাই কিন্তু কতোদিন ওর থেকে এইসব কিছু লুকিয়ে রাখবে। একদিন না একদিন সত্যি হিয়া জানতে পারবে তখন কি হবে কথাটা মনে পড়তেই হৃদান ভয় পায়। হিয়া বুঝতে পারছে না হৃদানের কি হয়েছে মাএ গোসল শেষ করে এসেছে তবুও ঘুমে ঘাম লেগে আছে এর কারণ কি। হিয়া বলে –
“- কি হয়েছে আপনাকে এমন চিন্তিত দেখাচ্ছে কোনো “।
“- না তেমন কিছু হয় নাই। কিন্তু আপনি এখানে কি করেন হিয়া ”
“- ওহ আসলে দুপুরে খাবার খেয়েছেন নাকি সেটা জিজ্ঞেস করতে এসেছি। আর কফি কি খাবেন আমি বানিয়ে নিয়ে আসো এতোখন অফিস করলেন তাই জিজ্ঞেস করলাম “।
“- না দরকার নাই আমি একটু রেস্ট নিবো। আর দুপুরে খাবার খেয়ে নিয়েছি একটা টেন্ডার ছিলো সেটা নিয়ে সব স্টাফদের সাথে মিটিং ছিলো। সেখানে খাবার খেয়েছি টেনশন করবেন না “।
হৃদান এসে সামনে থাকা একটা চেয়ারে বসে পড়ে অফিসে কাজে আর এই কেস নিয়ে টেনশনে ওর মাথাটা বেশ ব্যাথা করছে। হিয়া দেখে হৃদান মাথায় হাত দিয়ে বসে রয়েছে তাই হিয়া চেয়ারের কাছে যায় আর হৃদানের মাথায় হাত দেয় আর বলে –
“- মাথা ব্যাথা করছে আমি টিপে দিবো “।
হৃদান অস্পষ্ট সুরে বলে –
“- হুম “।
হিয়া মাথা টিপে দেয় হৃদানের বেশ শান্তি লাগছে তবে চোখ বন্ধ হতেই সেইদিনের ঘটনা মনে পড়ে যায়। হৃদান বলে –
“- আচ্ছা হিয়া আপনার মা কীভাবে মারা গিয়েছিলো “।
হৃদানের মুখে কথাটা শুনে হিয়া মাথা টিপা বন্ধ করে দেয় হাত সরিয়ে নিয়ে বলে –
“- হঠাৎ এইসব কথা কোনো জিজ্ঞেস করছেন আপনি “।
“- কোনো জিজ্ঞেস করতে পারি নাহ আর আপনার বিষয়ে সব জানার অধিকার আছে আমার “।
“- আমার মা এক্সিডেন্ট করে মারা যায় পাহড়ে গিয়েছিলো একটা কাজে সেখানে একটা গাড়ি সাথে এক্সিডেন্ট হয় “।
“- কিন্তু পুলিশের রিপোর্ট অনুসারে আপনার মা আত্মহত্যা করেছে আর আপনার মামা ও তা বলেছে। তাহলে কি সত্যি আপনার মা সুইসাইট করেছিলো “।
হিয়া হৃদানের কথা শুনে বেশ অবাক হয় ওর মা যে এইভাবে মারা গিয়েছে সেটা হৃদান কি করে যানলো। আর মামা কি বলেছে পুলিশকে সেটাতো হৃদানের জানার কথা না তাহলে কি করে জানলো হিয়া বলে –
“- আপনি এইসব কথা কি করে জানলেন হৃদান আমিতো মায়ের বিষয়ে কাউকে কিছু বলি নাই “।
“- হৃম আপনি বলেন নাই কিন্তু আমি যখন আপনার মামার বাড়ি গিয়েছিলাম তখন একবার দোকানে যায়। সেখানে গ্রামের কিছু লোক বলেছে তাই জিজ্ঞেস করেছি “।
হৃদানের কথাটা হিয়া বেশি একটা বিশ্বাস হলো না মনে হলো হৃদান মিথ্যা কথা বলছে। তবুও নিজেকে শান্ত করলো এখন এই বিষয় নিয়ে সে ভাবতে চাই না অতীতকে অতীতের মতো থাকতে দেওয়া উচিত। আর ওর মায়ের মৃত্যুর কথা মনে করলে ওর বাবার মতো নিকৃষ্ট মানুষের কথা মনে করতে হবে তাই বাদ দেওয়া উচিত। হিয়া আবার নিজের হাত তুলে হৃদানের মাথা টিপে দিচ্ছে আর বলে –
“- বাদ দেন এইসব বিষয় নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না “।
হৃদান আর কথা বাড়ালো না তবে মাথা থেকে হিয়া হাত সরিয়ে নিয়ে এসে নিজের গালের উপর রাখে। তারপর হাতদুটোতো চুমো খায় আর বলে –
“- হিয়া যানেন আমি খুব ছোট ছিলাম যখন আমার মা মারা গিয়েছিলো এরপর থেকে এই জীবনে কখনো কোনো মেয়ে আসে নাই। কিন্তু হঠাৎ করে আপনি কি করে আমার জীবনে এসে এতোটা জায়গা করে নিলেন বুঝতে পারি নাই। তবে হিয়া মা মারা যাওয়ার পর নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম কিন্তু যদি আপনি ছেড়ে চলে যান বিশ্বাস করুস এই হৃদান চৌধুরী বাঁচবে না “।
হৃদানেন কথা শেষ হওয়ার আগে হিয়া ওর মুখ চেপে ধরে আর পিছন দিক থেকে সামনে চলে আসে। হিয়া বলে –
“- কখনো হিয়া আপনাকে ছেড়ে যাবে না সবসময় পাশে থাকবে “।
হৃদান হিয়াকে নিজের কোলে বসিয়ে দেয় আর কপালে চুমো দিয়ে গালে হাত রেখে বলে –
“- আই লাভ ইউ হিয়া “।
“- আই লাভ ইউ টু “।
হৃদান বিছানায় ঘুমিয়ে রয়েছে হিয়া ওর রুম থেকে চলে আসে নিজের রুমে এসে ঘুমিয়ে নেয়। বিকেল গড়িয়ে রাত নেমে আসছে প্রায় শহরের এক মসজিদ থেকে আযানের ধ্বনি শুনা যাচ্ছে হৃদানের ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলে উঠে বসে এরপর সেই ছবি কথা মনে পড়ে চেক করতে ভুলে গেছো ছবিটা দেখার জন্য মেসেনজারে যায়। সেখানে একটা আইডি থেকে ছবি এসেছে ছবিটা ভালো করে দেখে হাত থেকে ফোন পড়ে যায়। ভাগ্য ভালো ফোন বিছানায় ছিলো না হলে পড়ে যেতো হৃদান বলে –
“- হোয়াট এইটাতো হাবিব চাচা মানে অনিলের চাচা কিন্তু ওনার ছবি পাঠিয়েছে মানে। হিয়া হাবিব চাচার মেয়ে “।
নিজের কথার মানে নিজে মিলাতে পারছে না হৃদান এইটা কি করে সম্ভব হাবিব চাচা অনেক বড়োলোক। আর হিয়ার পরিবার অনেক গরীব তাহলে কি করে সম্ভব এইজন্য কি হিয়ার মাকে মেনে নেয় নাই। আর কোথাও কি হিয়ার মায়ের মৃত্যুর পিছনে হাবিব চাচা হাত রয়েছে কিন্তু হাবিব চাচা এখন কোথায় আছে।
রায়হান চৌধুরী নিজের ঘরে বসে অফিসের কাজ করছিলো হঠাৎ দরজায় কারো টোকা দেওয়ার শব্দ পেয়ে সেইদিকে তাকিয়ে দেখে। হৃদান দাড়িয়ে রয়েছে দরজায় রায়হান চৌধুরী নিজের কাজ রেখে বলে –
“- হৃদান তুমি কিছু বলবে “।
“- হুম আব্বু বলব “।
আসলে হাবিব চাচা এখন কোথায় সেটা একমাত্র রায়হান চৌধুরী বলতে পারবে কারণ ব্যবসার বিষয়ে এখনো শাফআন চৌধুরীর সাথে রায়হান চৌধুরীর যোগাযোগ রয়েছে। হৃদান ঘরে ঢুকে জিজ্ঞেস করে –
“- আচ্ছা আব্বু শাফআন চাচা আর অনিল, হাবিব চাচা ওরা কেমন আছে।অনেকদিন ধরে ওরা আমাদের বাড়িতে আসে না তাই কেমন আছে জিজ্ঞেস করার জন্য এসেছি “।
রায়হান চৌধুরী একটু অবাক হয় হৃদানকে হঠাৎ করে শাফআন চৌধুরী বিষয়ে জানতে চাওয়া নিয়ে। তবুও তার ছেলে ভালো কথা বলছে সেটা জেনে ওনি খুশি হয়েছেন তাই বলে –
“- শাফআনরা অনেকদিন ধরে আমাদের বাড়িতে আসে না অনিলের মা মারা যাওয়ার পর সে আরেকটা বিয়ে করেছে। এখন বউ বিদেশে থাকে সেই ঘরে দুটো বাচ্চা আছে আর অনিল মনে হয় বাংলাদেশে থাকে। আর হাবিব একটা দুর্ঘটনায় কোমায় চলে গেছে “।
হৃদান সব কথা শুনলো কিন্তু হাবিব কোমায় চলে গেছে কথাটা শুনে বেশ অবাক হলো। তারমানে হিয়ার বাবা বেচেঁ আছে কিন্তু কোমায় এইটা কি করে সম্ভব। হৃদান আরো অনেক কথা জিজ্ঞেস করেছে তবে রায়হান চৌধুরীর বেশি কিছু যানে না এই বিষয়ে। হৃদান মনে মনে বলে –
“- যদি হাবিব চাচা কোমায় থাকে তাহলে হিয়ার মাকে কে মেরে ফেলেছে এখানে কি অন্য কোনো কাহিনি আছে। হৃম হৃদান চৌধুরী তোকে জানতে হবে সত্যি ঘটনা “।
#চলবে