#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়েবার_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_০৪
হৃদানের কথা শুনে রাগ হয় হিয়ার নিজেকে কি মনে করেন জোর করে বিয়ে করবে আবার এখন জোর করে রুমে থেকে বের করে দিবে।হিয়া ওর কথা আর শুনতে পারবে না যথেষ্ট হয়ে গেছে ওর নাকি হিয়া। হিয়া এবার রাগী কণ্ঠে বলে –
“- আপনার কি মনে হয় হু যা ইচ্ছা তাই করবে একবার বিয়ে করলেন আবার বলছেন ছয় মাস পড়ে ডিভোর্স দিয়ে দিবেন। এই বাড়িতে নিয়ে আসলে আর এখন নিজের রুম থেকে বের করে দিচ্ছেন “।
হৃদান ওর রাগ দেখে জীবনে কখনো কেউ হৃদানের সাথে এইভাবে কথা বলতে পারে নাই ওর মা ও না। কারণ হৃদান ছোট্টবেলা থেকে খুব শান্ত ছিলো কিন্তু ও হঠাৎ করে। হৃদান বলে –
“- এই বাড়ি আমার তাই এই বাড়িতে যা হবে সেটা আমার ইচ্ছা অনুসারে হবে। আর প্রতেক জিনিসের উপর আমার অধিকার রয়েছে “।
“- কিন্তু আমি কোনো জিনিস না আর অধিকার যদি বলেন তাহলে আমার জীবনের কোনো অধিকার আপনাকে দিবো না “।
“- আমি দায়িত্ব ছাড়া আপনার জীবনের আর কিছু চাই না আর কোনোদিন যাতে আপনার জীবনের দায়িত্ব আমাকে নিতে না হয় সেইভাবে এই রিলেশন চলবে। ভালোবাসা ছাড়া একটা রিলেশন “।
হিয়ার কি কম জেদ নাকি কিন্তু শুধু চুপ করে থেকেছে মামার জন্য কিন্তু আর পারবে না হিয়া বলে-
“- ঠিক আছে তাহলে দায়িত্ব নেন আমার “।
এই কথা বলে হিয়া হৃদানের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেয় হৃদান ওর জেদ দেখে অবাক কতো সাহস এই মেয়ের। আমার বাড়িতে আমার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেয়।
হিয়া দরজা বন্ধ করে রুমের ভিতরে যায় বেশ সুন্দর রুম পরিপাটি করা আর বিভিন্ন বই রয়েছে এখানে। যদিও সেইগুলা অনেক বড়ো ক্লাসের বই কিন্তু টেবিলে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা মনে হচ্ছে কেউ আসবে বলে রুম পরিস্কার করা হয়েছে। হিয়া ওয়াশরুমে গিয়ে ফুলের সাজ খুলে ফেলে আর নিজের বাড়ির জন্য টেনশনে করে জানি না মামি কি করছে কিন্তু চিন্তা করে কি লাভ সে ফোন করতে পারবে না কারণ হৃদান তাকে ফোন দেয় নাই। হিয়া বলে –
“- আই হেট ইউ মিস্টার হৃদান চৌধুরী “।
হৃদান দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে বিরবির করে বলতে থাকে –
“- হিয়া ঘৃণা করেন আমাকে অনেক বেশি ঘৃণা করেন। আপনার কাছে এই পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ হয়ে থাকতে চাই আমি “।
হৃদান চলে যায় তার রুমে কিছু কাজ করে ঘুমিয়ে পড়ে আর অন্যদিকে হিয়া ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল হয়ে যায় হৃদানের যে হিয়াকে বাসর ঘর থেকে বের করে দিয়েছে সেটা রায়হান চৌধুরী জানে। সকালে হৃদান বসে বসে কাজ করছে বেলকনিতে তখন রায়হান চৌধুরী আসে আর বলে –
“- হৃদান এইসব কি শুনছি কান দিয়ে “।
“- সেটা তোমার কানকে জিজ্ঞেস করো “।
“- ফাইজলামি করছো আমার সাথে “।
“- না তুমি আর বিয়াই না তাই ফাইজলামি করবো কোনো “।
রায়হান চৌধুরীর ছেলের এই জবাব একদম পছন্দ না সবসময় শুধু আজেবাজে কথা বলে। কিন্তু কালকে এমন কোনো করেছে সেটা জানা দরকার –
“- হৃদান তুমি নাকি সেই মেয়েকে বাসর ঘর থেকে বের করে দিয়েছো কি সমস্যা তোমার। বিয়ে করতে পারলে আর বাসর করতে পারবে না কি সমস্যা “।
হৃদান যদি রায়হান চৌধুরীর কথায় উত্তর দিতে যায় তাহলে অনেক বকবক করতে হবে। তাই সে জানে কি করে তার বাবার মুখ বন্ধ করা যায় হৃদান বলে –
“- ছিঃ ছিঃ আব্বু এইসব কি কথা তোমার মুখে নিজের ছেলেকে সমস্যা কথা বলতে লজ্জা করলো না। দেখো আব্বু তুমার কোনো সমস্যা থাকতে পারে কিন্তু আমার কোনো সমস্যা নাই । বাসর করতে পারি আমি “।
রায়হান চৌধুরীর ছেলের কথা শুনে কান গরম হয়ে যায় সে বলে –
“- আমার কোনো সমস্যা থাকতে পারে মানে “।
“- না মানে আম্মু মা*রা যাওয়ার পর তুমি কোনো বিয়ে করো নাই কে যানে এই দুঃখে বিয়ে করো নাই নাকি তুমি চাইলে ও বিয়ে করতে পারবে না। দেখো আব্বু তোমার মধ্যে সমস্যা থাকতে পারে বাট আমার নাই আমি বাসর করতে পারি “।
রায়হান চৌধুরীর ভাবতে পারছে না হৃদান কোন কথাকে কোথায় নিয়ে গেছে সমস্যা মানে ওনি কি বুঝতে চান। আর হৃদান কি বুঝতে পেরেছে মাঝে মধ্যে সন্দেহ হয় এইটা কি তার নিজের ছেলে নাকি অন্য মানুষের। রায়হান চৌধুরীর বলে –
“- বেয়াদব ফাযিল বাবার সাথে কি করে কথা বলতে হয় জানো না। মুখে কিছু আটকায় না আমি তোমার বাবা হই “।
হৃদান একটা কিছু করে নাই এমন একটা ভাব নিয়ে বলে –
“- আরে বাহ তুমি তোমার ছেলেকে সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করতে পারতে কিন্তু তোমার ছেলে জিজ্ঞেস করলে দোষ। যে অন্যায় করে তার শরীরে কথা লাগে এখন আমার সন্দেহ হচ্ছে সত্যি কি তোমার কোনো সমস্যা ছিলো “।
রায়হান চৌধুরী আর এই বেয়াদ ছেলের কথা শুনতে পারলো না যে যখন চলে যেতে যাবে তখন পিছনে একজান বুদ্ধিমান মানুষকে দেখতে পায়। কিন্তু পিকু এখন গভীর চিন্তার মগ্ন পিকু বলে –
“- আচ্ছা নানা তোমার এমন কি সমস্যা ছিলো যার জন্য তুমি আর বিয়ে করতে পারো নাই এখনো কি সেই সমস্যা আছে তোমার। তাহলে কি আমার মধ্যে সেই সমস্যা আছে তবে আমি বাসর করতে পারি। তোমার নাতি বলে কিন্তু আমার কোনো সমস্যা নাই তোমার থাকতে পারে “।
রায়হান চৌধুরীর কি বলবে এই দুটোকে এক তার ছেলে আরেকজন নাতিন এই দুটোকে যদি বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারতো তাহলে শান্তি হতো। শুধু সমস্যা হলো না আর জীবনে সমস্যা কথা মুখে নামবে। রায়হান চৌধুরী বলে
“- বেয়াদব “।
রায়হান চৌধুরী চলে গেলে পিকু তার মামার কোলে গিয়ে বসে হৃদান পিকুকে ধরে বলে –
“- কি পিকু তোর মন খারাপ কোনো “।
“- মন খারাপ থাকবে না কোনো কালকে তুমি বাসর করলে না আমাকে করতে দিলে না।যখন বাসর করতে যাবো তখন মা এসে ডিসটার্ব করলো আচ্ছা তুমি বলো আমি কি মায়ের বাসরে বিরক্ত করেছি “।
” হুম সত্যি তানিয়া কোনো পিকুর বাসরে বিরক্ত করলো কিন্তু তোর বাসর কার সাথে হয়েছে সেই তোর তিনটা গার্লফ্রেন্ড সাথে “।
“- আরে না নতুন মামি কালকে সাজলো না তখন আমার ইচ্ছে হয়েছিলো বাসর করার কিন্তু মম করতে দিলো না। আচ্ছা বাদ দাও মামা তুমি বাসর করলে না কোনো তোমার কি নানার মতো সমস্যা আছে “।
হৃদান একটা কাশী দেয় তার ভাগ্নে তার চেয়ে বেশি সয়তান হৃদান বলে –
“- তোর বয়স কতো হুম মাএ দশ বছর এখনি তোর বিয়ে করতে হবে বাসর করতে হবে। আর তোর তিনটা গার্লফ্রেন্ডের কি হবে “।
“- আরে ওরা তো টাইম পাস মামা। তুমি কিছু বুঝো না বোকা ছেলে “।
হৃদান বুঝতে পারে এর সাথে কথা বলবে সে নিজে বিপদে পড়বে কিন্তু এখন হিয়ার রুমে যাওয়া দরকার। ওর সাথে কিছু কথা আছে কিন্তু রাতে যেভাবে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে খুলবে কি। হৃদান বলে –
“- পিকু চলো হিয়ার রুম থেকে ঘুরে আসি “।
” তোমার বউ তুমি ঘরে যাবে আমাকে নিয়ে যাচ্ছো কোনো “।
পিকু আর হৃদান হিয়ার রুমে যায় কিন্তু দরজা নক করতে বলে পিকুকে। পিকু দরজা নক করে হিয়া তখন ঘুম থেকে উঠে টেবিলে থাকা বই পড়ছে হঠাৎ দরজার নক করার শব্দ শুনে খুলে দেয়। হিয়া বলে –
“- আরে পিকু বাবু আসো রুমের ভিতরে আসো “।
“- মামি তুমি আমাকে বাবু ডাকলে কোনো বাবুতো আমার গার্লফ্রেন্ড আমাকে ডাকে “।
হিয়া হাসে ওর কথা শুনে কিন্তু পাশে দাঁড়িয়ে থাকা হৃদানকে দেখে ওর হাসি চলে যায় মুখ থেকে। পিকু হিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে
“- আমার কিছু কথা আছে আপনার সাথে হিয়া
#চলবে