❝মোহ মেঘের আলাপন ❞
লেখিকা: “নূরজাহান আক্তার আলো”
[২০]
-”এবার বল,বেধড়ক মার খেয়ে আধমরা হয়ে বাইক চালিয়ে বাসায় আসলি কীভাবে?’
-”না মানে ভাই ভাইয়া।”
-”হুম বল আমি শুনতে চাচ্ছি আর শুনবো বলেই ডেকেছি।”
-”মনের জোরে।”
-”তো মনের জোরে তখন আমাকে কল করিস নি কেন? বল কেন?”
-”ফোনে চা চা চার্জ ছিলো না।”
একথা বলে আমান পিছু সরতে লাগলো। রাগে আদিত্যের মুখ থমথম করছে।সমস্ত রাগ যেনো তার মুখে ফুটে উঠেছে।
একের পর এক মিথ্যে বলেই যাচ্ছে। এর মনে ভয় ডর কিচ্ছু নেই? একবারও ভাবছে না এখন ওর কী হবে? কী জবাব’ই বা দিবে সে? তার যে সব জারুজুরি শেষ। তবে আমান এটা বুঝে গেছে সে ধরা পড়ে গেছে। আদিত্য সবটা জেনে গেছে।
নয়তো আদিত্য তাকে ডেকে এভাবে কথা বলতো না। এসব ভেবে আমান দুই পা পেছনে পিছিয়ে যেতেই একটা ফুলদানি পড়ে গেল। ফুলদানির কাঁচ ছড়িয়ে গেল চারদিকে। আদিত্য
তখনো হকিস্টিক হাতে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। সে মূলত দেখছে তার ভাইয়ের মিথ্যার দৌড় কতদূর।সে কতভাবে মন
গড়া মিথ্যা বানাতে পারো। আর মিথ্যে দিয়ে সত্যেকে চাপা দিতে পারে। তখন আমান পেছনে কাঁচ দেখে দাঁড়িয়ে গিয়ে আমতা আমতা করে বলল,
-”না, না, মানে ভাইয়া আমি সত্যিই নির্দোষ। কেউ তোমাকে ভুল বুঝিয়েছে হয়তো।”
আদিত্য এবার আর নিজের রাগ সামলাতে পারলো না। ওর হাতে থাকা হকিস্টিক দিয়ে মারতে থাকলো আমানকে। যার গায়ে কখনো হাত তুলে নি সে। বহুবার অন্যায় করার পরেও ছোট ভাই বলে ছেড়ে দিয়েছে, মাফ করেছে। কিন্তু আজকে সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ছোট ভাই বলে আদরে আদরে বাদর তৈরি করেছে। সে বাদর লাই পেয়ে ঘাড়ে উঠে এখন কলিজায় থাবা বসাচ্ছে। আদিত্যের রাগ চূড়ান্ত সীমানায়।
ওদিকে মার খেয়ে আমান চিৎকার শুরু করেছে। তার দেহে আঘাত করা হকিস্টিকের বারি যেনো মাংস থেতলে দিচ্ছে।
মারের জায়গাগুলো জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে। অসহ্য ব্যথা অনুভব হচ্ছে। মার থেকে বাঁচতে বার দু’য়ের হকিস্টিক আঁটকে ধরে আমান। আদিত্য তাতে আরো রেগে যায়। ওর হাত থেকে তা ছুটিয়ে আবার মারতে থাকে। ওদিকে সীমা বেগম ঝাড়ু হাতে
রান্নাঘরের দিকেই যাচ্ছিলেন। রান্নাঘরের তাক গুছাতে গিয়ে চিনির বয়াম পড়ে চিনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে একাকার অবস্থা। এ বয়াম খুলে রেখেছে মেধা। কারণ এই বাসাতে একমাত্র সেই
কোনো কিছু ছাড়া চিনি খায়। মুখভর্তি চিনি নিয়ে টিভি দেখা
, ঘর গুছানো, চুল বাঁধা, বই পড়া, তার অভ্যাস। মেধার কথা মনে হতেই উনার মনটা খারাপ হয়ে গেল। দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। তারপর উনি রান্নাঘরের দিকে চলে গেলেন। যতটুকু সম্ভব চিনি তুলে ঝাড়ু দেওয়ার জন্য উদ্যত হতেই শুনতে পেলেন আমানের চিৎকার। প্রথমে খেয়াল করেন নি। কারণ আমান মাঝে মাঝে গলা ফাটিয়ে গান গায়। উনি প্রথমে তাই ভেবেছিলেন। কিন্তু যখন শুনতে পেলেন, আম্মু গো বাঁচাও! আম্মু! আম্মু বাঁচাও! মরে গেলাম আম্মু! ভাইয়া ,আমি কিছু করি নি ভাইয়া! বলে প্রাণপণে চিৎকার করছে। সীমা বেগম ছেলের চিৎকার শুনে ঝাড়ু ছেলে ছুটলেন আদিত্যের রুমে।
কারণ উনিই তো পাঠালেন আমানকে আদিত্যের রুমে। আর আদিত্যই তো বললো জরুরি কথা আছে।আমানের চিৎকার শুনে উনি ব্যতিব্যস্ত হয়ে আদিত্যের রুমের দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলতে লাগলেন,
-”আদিত্য বাবা আমার ভাইকে এভাবে মেরো না বাবা। কি করেছে সে বলো আমাকে। আদিত্য! আদিত্য!”
মায়ের কথা শুনে আমানের দেহে পানি ফিরে এলো। অর্থাৎ মা এসেছে তাকে নিশ্চয়ই বাঁচাবে।একবার এখান থেকে বের
হতে পারলে আর বাসাতেই আসবে না।মনে মনে এসব ভেবে উঠে দাঁড়াতেই আদিত্য স্বজোরে একটা বারি দিলো হাঁটুতে।
সে পুনরায় কুঁকিয়ে উঠে বসে পড়লো মেঝেতে। বাম হাতের তালুতে বিঁধলো ভাঙা কাঁচ। গলগল করে রক্ত ঝরতে থাকল তালু বেয়ে। তখনো সীমা বেগম দরজা ধাক্কিয়ে যাচ্ছে। তখন আমান কেঁদে চিৎকার করে বলতে বলতে লাগলো,
-“ভাইয়া আমাকে মেরে ফেললো আম্মু, বাঁচাও আমাকে। আমি কিচ্ছু করি নি। আমি এই ব্যাপারে কিছু জানি না। তুমি বোঝাও ভাইয়াকে। ভাইয়া শুধু শুধু আমাকে ভুল বুঝছে।”
আমানের এই কথা শুনে সীমা বেগম আদিত্যকে বললেন,
-”বাপ আমার, সোনা আমার, দরজাটা খুল বাবা। আমান কি করেছে বল আমাকে। সব শুনে আমি নিজে শাস্তি দিবো ওকে। তাও এভাবে মারিস না বাবা, ও মরে যাবে।”
আদিত্য উনার কথা শুনেও শুনলো না। মায়ের কান্না কানে
পৌঁছালোও অটল হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। ওর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিবদ্ধ আমানের দিকেই। এদিকে সীমা বেগম কিছুই বুঝতে পারছে না। কিছুক্ষণ আগেও তো সব ঠিক ছিলো। হঠাৎ কি হলো? আর আমানের চিৎকার শুনে মনে হচ্ছে আদিত্য খুব মারছে । তাও দরজা বন্ধ করে।তারমানে সে আবার কিছু ঘটিয়েছে।
নয়তো আদিত্য হঠাৎ রেগে যাওয়ার ছেলে না। তাহলে কী
মেধার নিখোঁজের পেছনে আমানের হাত আছে? সে কোনো কারণে মেধাকে কিডন্যাপ করিয়েছে। একথা ভাবতেই উনার বুক কেঁপে উঠলো। উনি হতবাক হয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে রইলেন। যদি এমন হয় তাহলে উনার সংসারটা আর জোড়া লাগানো সম্ভব হবে না।উনি জানেন আদিত্যের রাগ সম্পর্কে, ধৈর্য্য সম্পর্কে।তখন আবার আমানের চিৎকার ভেসে এলো।
আদিত্য ওর পায়ের গিরা বরাবর দু’ঘা বসিয়ে দিয়েছে। সঙ্গে
সঙ্গে আমান চিৎকার করে উঠে আদিত্যের দুই পা জড়িয়ে বলতে লাগলো,
-”আর মেরো না ভাইয়া, প্লিজ মেরো না, মরে যাবো আমি, আর করবো না। এবারের মতো মাফ করে দাও। এমন ভুল আর জীবনেও করবো না।”
-”কি করবি না করবি ওটা পরের সাবজেক্ট। এখন বল, মেধা কোথায়? কোথায় রেখে এসেছিস তাকে? যেখানে উদয়ের কাহিনিই ফেইক। সেখানে উদয়ের কাছে থাকার প্রশ্নই আসে না।সময় আছে মার খেয়ে মরতে না চায়লে সত্যিটা বলে দে।
তবে এবারো যদি মিথ্যে বলিস তাহলে ওয়াদা করছি তোকে মেরে আমি জেলে যাবো।”
দরজার বাইরে দাঁড়িয়েই সীমা বেগম একথা শুনতে পেলেন। আর শুনেই ধপ করে ওখানেই বসে পড়লেন। অবশেষে এই দিনও দেখতে হলো? ছোট ভাই হয়ে বড় ভাইয়ের সঙ্গে এমন করতে তার বিবেকে বাঁধল না? এত অধঃপতন? মেধা তার বোন। কীভাবে পারলো এহেন নিকৃষ্ট কাজ করতে। একবার
কী স্মরণ হয় নি নিজের মায়ের মুখটা? একটুও মনেও হয় নি মা জানলে কষ্ট হবে। এ কেমন সন্তান পেটে ধরেছে উনি? ছোট থেকে এই অবধি কত জ্বালায় নি। প্রতিনিয়ত আমান উনাদের কষ্ট দেয়, আঘাত করে, কাঁদায়। উনি ভেবেছিলেন, আমার বদলে গেছে। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। কিন্তু না এই ছেলে শুধরানোর নয়। এই কথা ভেবে উনি উঠে দাঁড়িয়ে আঁচলে মুখ মুছতে মুছতে প্রস্থান করলেন। ওদিকে এত মার খেয়েও আমান মুখ খুলছে না। সে মার খাচ্ছে গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়ে থেমে যাচ্ছে। ওর জেদ সত্যিটা সে বলবে না। কারণ বললেও বিপদ না আর না বললেও। আদিত্যের আর ধৈর্য্যে কুলালো না।সত্যি বলতে, এতক্ষণ ওর বুক কাঁপছিলো ছোট ভাইয়ের চিৎকার শুনে, ব্যথা পেতে দেখে। হাতটাও থরথর করে কাঁপছিলো যে, হাতে ভাইকে আদর যত্নে বড় করেছে সেই হাতে আঘাত করতে। কিন্তু আমান এসবের যোগ্যই না।
সে এসবের মূল্য কখনো দেয় নি, দিবেও না। সে সারাজীবন স্বার্থপর ছিলো, আছে, আর তাই থাকবে। কিন্তু সত্যি ওকে জানতেই হবে নাহলে মেধাতে উদ্ধার করতে পারবে না। ওর প্রাণপাখিটা কোথায় আছে, কেমন আছে, কে জানে। হঠাৎ ওর মনে হলো মেধাকে কোনো রকম কষ্ট দেয় নি তো পাষাণ আমান? খারাপ কিছু ঘটে নি মেধার সঙ্গে? ওকে না দেখতে পেয়ে কষ্ট পাচ্ছে নিশ্চয়ই। বার বার হয়তো ডাকছে ওর নাম ধরে। একথা ভেবে আদিত্যের রাগ পুনরায় চড়াও হলো। সে আর না ভেবে মারতে থাকলো আমানকে। একের পর এক মার খেয়ে লুটিয়ে পড়লো মেঝেতে। হকিস্টিক ধরতে গেলে আদিত্য লাথি দিয়ে সরিয়ে দিলো আমানের হাত। শুনলো না আমানের আঁকুতি মিঁনুতি। তার হৃদয় স্পর্শ করলো না ছোট ভাইয়ের ছটফটানি। এইপর্যায়ে আমান যখন দেখলো আর আদিত্যেকে থামানো সম্ভব নয়। তখন সে বলতে লাগলো,
-”বলছি ভাইয়া, সব বলছি, সব সত্যি বলবো, প্রমিস।”
তখন আদিত্য মার থামিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,
”তোকে মেরে আমার সাধ মিটে নি। তুই বলা থামালেই মার শুরু। নে এবার স্টার্ট কর।”
গরু পেটা করতে গিয়ে ঘামে ভিজে গেছে তার পুরো শরীর। নেত্রজোড়া হালকা লালবর্ণ।কানের পাশ বেয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে চিকন ঘাম। মেরুন রঙা টি শার্টের, বুক, পিঠ, ঘামে ভেজা।আমান ভাইয়ের এহেন রুপ দেখে মুষড়ে পড়েছে। ওর এখন মনে হচ্ছে সে ভুল করেছে। এমন করাটা তার উচিত হয় নি।
আদিত্যের শান্ত রুপ দেখে সে ভুলেই বসেছিলো তার ভাইটা ভালোর সঙ্গে ভালো আবার মন্দের কাল। সত্যি বলবে বলে
বলছে না দেখে আদিত্য আরেকটা বারি বসানোর আগেই আমান ব্যথায় কুকাতে কুঁকাতে বলল,
-”মেধার বিয়ে টিয়ে কিছু হয় নি। তাকে কিডন্যাপও করা হয় নি। তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে আমার এক বন্ধুর বাসায় আঁটকে রেখে এসেছিলাম। ঘন্টা দু’য়ের পরে থাকতেই চাচ্ছিলো না।
তাই অজ্ঞান করে ফেলে রেখেছিলাম।প্রায় চার ঘন্টা অজ্ঞান থাকার পর জ্ঞান ফিরে তোমার নাম ধরে কাঁদছিলো, বাসায় আসতে চাচ্ছিলো। জেদ করে কিছু খাচ্ছিলোও না। এমনকি পানিটুকুও গিলাতে পারে নি। যখন সম্ভবই হচ্ছিল না তখন
আমার বন্ধু বলেছে সে আর দেশে নেই। তাকে সে কিডন্যাপ করে আমেরিকা নিয়ে এসেছে। আর তাকে কিডন্যাপ করার
দশ দিন পেরিয়ে গেছে। ষোলো তলা ফ্ল্যাটে থাকায় জানালা দিয়ে সে আকাশ দেখেছে। অচেনা জায়গা, সবকিছু অচেনা,
দেখে সে তাই’ই বিশ্বাস করেছে। সে এতটাই শকে ছিলো ভুল করেও একটাবার নিচে তাকিয়ে আশপাশ দেখে নি, ভাবেও নি। তখন থেকে মেধা নিশ্চুপ হয়ে গেছে। এখন অবধি মুখও খুলে নি, খায়ও নি, অঝরে কেঁদেই যাচ্ছে। আর উদয় টুদয় আসলে কেউ নেই। এসব মিথ্যা, সব মিথ্যা সব।”
-”কেন করলি এমন? জানতি না ওই মেয়েটার মাঝে আমার ভালো থাকা? ও আমার হাসি কারণ,সুখের সম্ভাষণ। কী বল জানতি না? ওর জন্যই আমার স্বপ্নের ডিফেন্সের জব ছেড়ে এসেছি। শুধুমাত্র একটু ভালো রাখতে প্রতিনিয়ত কত কিছু করে যাচ্ছি। পাড়ার মোড়ের বখাটেরা ওকে দেখে শিষ দিয়ে
হেসেছিলো বলে ওদেরকে মেরে চার ঘন্টা জেলেও থেকেছি।
কোটি কোটি টাকা লস গেলেও বাইরের দেশে যায় না। শুধু মনে হয় আমি না থাকলে ওর ক্ষতি হয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে আমার থেকে। ওর মুখে হাসি ফুটাতে কারণে অকারণে সব সময় আবদারগুলো পূরণ করার চেষ্টা করি। যত ব্যস্ততার মাঝেও যখন বলে ‘এখন আমার সঙ্গে কথা বলুন আপনি। আমার মন চাচ্ছে আপনার সঙ্গে কথা বলতে।’ তখন জরুরি মিটিং ক্যান্সেল করে হলেও তার আবদার পূরণ করি। মাঝ রাতে যখন বলে ‘আপনাকে আমার বর বেশে দেখতে ভীষণ ইচ্ছে করছে। বর সেজে দেখান আমাকে। উহুম, না শুনবো না। যদি মরে টরে যায় তখন কিন্তু আফসোস থেকে যাবে।’
ওর মরার কথা শুনে আমার অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠে। ওকে ধমকে থামিয়ে মাঝরাতে দু’জন গিয়ে শপিং করে আনি। সে আমাকে বর বেশ দু’চোখ ভরে দেখে তারপর ঘুমাতে যায়।
এমন আরো অনেক আবদার রাখি আল্লাহর প্রত্যেকটাদিন। আর তুই আমার সেই প্রাণভোমরাকে আমার থেকেই দূরে সরানোর চেষ্টা করেছিস।”
এতটুকু বলে আদিত্য হাতে থাকা হকিস্টিকটা ছুঁড়ে ফেলে।
সেটা গিয়ে লাগে ড্রেসিংটেবিলের কাঁচে। ঝনঝন শব্দ করে ভেঙে পড়ে কাঁচের আয়না। ড্রেসিংটেবিলে সাজানো সমস্ত কিছু লন্ডভন্ড হয়ে যায়। দু’একটা কাঁচ ছিঁটকে এসে বিঁধে আদিত্যের ডান হাতে, পায়ে। সে তবুও নড়ে না। ‘আহ্’ করে ব্যথাতুর শব্দটুকুও করে না। ভাইয়ের কাজে সে খুব ব্যথিত, সন্তপ্ত। আদিত্য আর কিছু না বলে চোখভর্তি অশ্রু মুছে নেয় বাহুতে। তারপর কান্নাভেজা কন্ঠে বলে,
-”পৃথিবীতে কোনো ভাই এই অভিশাপ হয়তো কোনো ভাইকে দেয় নি। তবে আজ আমি তোকে দিচ্ছি। তোর জীবনে প্রেম আসুক। কাউকে যেনো ভীষণ ভালোবাসতে পারিস। বুঝতে পারিস প্রেমের মর্ম, গভীরতা। নিগূঢ়ভাবে উপলব্ধি করতেও সক্ষম হোস প্রিয়ের স্থানটা বুকের ঠিক কোন পাশটায়। সেই সঙ্গে বিশুদ্ধ ভালোবাসা মিশে যাক তোর রন্ধে রন্ধে। বুকের পা পাশটায় গেঁথে যাক অতি প্রিয় একটি নাম। যার সামান্য ব্যথাতে তুই কাঁতরাতে পারিস, ছটফট করতে পারিস। যার চোখের পানি দেখে তোর নিজেকে পাগল পাগল মনে হয়। মনে হয়, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে তার আবদারটা পূরণ করি। তবুও সে হাসুক, ভালো থাকুক। তার হাসিতেই তোর সর্বসুখ। ঠিক সেদিনই বুঝবি আমার ঠিক কোথাও আঘাত করেছিস তুই। কতটা কষ্ট, যন্ত্রণায়, মুহূর্ত গুলো কাটিয়েছি আমি। আজকে যেমন এই কষ্টে আমি তরপাচ্ছি, একদিন তুই’ই তরপাবি। আর আমি আদিত্য একথা এই জায়গাতে বলে যাচ্ছি, ঠিক সেদিনই আমি তোর সঙ্গে কথা বলবো।এর আগে আর নয়। মেধাকে কিডন্যাপ কেন করেছিস? কোন স্বার্থে করেছিস? আর জানতে চাই না। ইচ্ছে হলে মেরে লা’শ ভাসিয়ে দিস নয়তো মেরে গুম করে দিস। আর খোঁজ নিবো না, জানতেও চাইব না। সেই সঙ্গে এটাও ভুলে যাস আদিত্য তোর কাছে মৃত। আর তুই নিজের হাতে তোর ভাইকে মে’রে ফেলেছিস।”
To be continue…..!!