মৌমোহিনী পর্ব-০৯

0
9

#মৌমোহিনী
পর্ব-৯

“আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা…
আর কতকাল আমি রব দিশেহারা…
রব দিশেহারা…”

গানটা বন্ধ করে দিলেন আরিফ। আজ আকাশে কোনো নীল ধ্রুবতারা দেখা যাচ্ছে না৷ কিন্তু তিনি ঠিকই দিশেহারা হয়েই আছেন৷ প্রচন্ড ঝড় শুরু হয়েছে। সেই সাথে বৃষ্টি তো আছেই। ঢাকার রাস্তাঘাট ডুবে গেছে পানিতে। তার মধ্যেই তিনি তার প্রিয় গাড়িটা নিয়ে বেরিয়ে গেছেন। পরোয়া করেননি খারাপ হবার। এদিকে বিশাল জ্যাম লেগে আছে। মনিকার মেসেজটা পাবার পর থেকেই অস্থির লাগছে। কিন্তু যা জ্যাম লেগেছে তাতে মনে হচ্ছে না অঘটন ঘটার আগে তিনি স্পটে পৌঁছুতে পারবেন। নাম্বারটায় অজস্রবার কল করেছেন তিনি। বন্ধ!

অস্থিরতা কাটাতে গান চালু করেছিলেন আরিফ৷ কিন্তু সেটাও এখন গায়ে কাটা হয়ে বিঁধছে যেন৷ ওয়াইপারটা প্রাণপণে উইন্ডশিল্ডে পড়া বৃষ্টির ফোঁটাগুলোকে মুছে দেবার চেষ্টা করছে। পরক্ষণেই আবার বৃষ্টিকণার দল ভিজিয়ে দিচ্ছে কাচটা। চলছে তাদের লড়াই। কেউ জিতছে না, বা কেউ হেরে যাচ্ছে না। জোরে নিঃশ্বাস ফেললেন আরিফ। তার খুব হতাশ লাগছে। যদি মাস্টারমাইন্ডটাকে ধরতে না পারেন, তাহলে নিজেকে তিনি ক্ষমা করতে পারবেন না।

জ্যাম ছুটতে ছুটতে ঘড়ির কাটা রাত তিনটা ছুঁয়ে ফেলল। এই বৃষ্টির মধ্যে চাইলেও গাড়ি জোরে ছোটানো যাচ্ছে না৷ তবুও যথাসম্ভব দ্রুত চলার চেষ্টা করলেন তিনি।

ওই এলাকার পুলিশে খবর দেবে কি না একবার ভেবেছিলেন আরিফ। কিন্তু এটাও হতে পারে যে পুরো ব্যাপারটা একটা স্ক্যাম। তার ওপর সরকারি একটা গোপনীয় প্রোজেক্টের ব্যাপার জড়িয়ে আছে ঘটনাটার সাথে। তাই তিনি ঠিক করেছেন আগে নিজে গিয়ে দেখবেন কী হয়েছে৷

অনেক চেষ্টা করেও ভোরের আগে পৌঁছুতে পারলেন না আরিফ। ঠিকানা খুঁজে ফার্ম হাউজটাতে পৌঁছুতে পৌঁছুতে ভোর হয়ে গেল। সূর্য উঠে চারদিক ফর্সা হয়ে গেছে তখন৷

মস্ত লোহার গেটটা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। গাড়ি দাঁড় করিয়ে ক্রমাগত হর্ণ দেবার পর দরজা খুলে দিল এক বুড়ো। পরিচয় জানতে চাইলে বুড়ো জানালো সে এই বাড়ির কেয়ার টেকার৷ বাড়ি পাহাড়া দেয়, বাগান সাফ করে আর সব দেখাশুনা করে। আর কেউ থাকে না এখানে। যার বাড়ি তিনি মাঝেমধ্যে আসেন, আবার এক দুই রাত থেকে চলে যান৷

আরিফ জিজ্ঞেস করলেন, “এই বাড়ির মালিকের নাম কী?”

“আশরাফ ভুঁইয়া।” উত্তর দিল বুড়ো৷

“তিনি শেষ কবে এসেছিলেন?”

“গতকালকেই আসছিলেন৷ আবার চলে গেছেন শেষ রাতে।”

হাত কামড়াতে ইচ্ছে হলো আরিফের৷ নিজেকে সংবরণ করে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “কোনো মেয়ে এসেছিল এখানে?”

বুড়ো একটু ইতস্তত করতে লাগল। আরিফ তখন নিজের পরিচয় দিলেন। আইডি কার্ড বের করে দেখিয়ে বললেন, “আমি সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ থেকে এসেছি৷ বাড়ি তল্লাশি হবে।”

আরিফের কোনো সার্চ ওয়ারেন্ট নেই, লিগ্যালি সে তল্লাশি চালাতে পারে না। কিন্তু বুড়ো মনে হয় না সেসব জানবে। তাছাড়া বাঁধা দেবার চেষ্টা করলেও আরিফের সাথে পারবে না।

বুড়ো ঢোক গিলে বলল, “আসছিল।”

আরিফ মোবাইলে মনিকার একটা ছবি বের করে দেখিয়ে বললেন, “এই মেয়ে?”

“জি।”

“সে কোথায় এখন?”

“স্যারের সাথে চলে গেছে।”

“আপনি যেতে দেখেছেন?”

“না, অত রাতে গাড়ির ভেতর তো দেখতে পাইনি। স্যারই বললেন যে ম্যাডামকে নিয়ে চলে যাইতেছেন।”

“এই মেয়ে কবে এসেছিল এখানে?”

“ম্যালাদিন হইছে। এক মাসের উপরে।”

আরিফ বুঝলেন ঢাকা থেকে সোজা এখানেই এসে উঠেছিল মেয়েটা। তিনি বললেন, “আমি ভেতরে যাব।”

বুড়ো সরে জায়গা করে দিল।

আরিফ ভেতরে ঢুকে পুরো বাড়ি একবার ঘুরে ফেললেন৷ কেউ নেই। ঘর অনেকগুলো। কোন ঘরে মনিকা থাকত বোঝা যাচ্ছে না। তিনি কেয়ারটেকারকে ডাকলেন৷ বুড়ো এলে জিজ্ঞেস করলেন মনিকার ঘর কোনটা। বুড়ো দেখিয়ে দিলেন।

ঘরটাতে ঢুকলেন আরিফ। পুরো ঘর তল্লাশি চালালেন৷ ঘরের কোথাও অপরাধের চিহ্ন চোখে পড়ল না৷ মনিকার মেসেজটা বের করে দেখলেন তিনি। “বইয়ের তাকগুলোর ফাঁকে মোবাইল রাখা আছে”।

বইয়ের তাক চোখে পড়ল। সেদিকে গিয়ে বইগুলো নামিয়ে ফেললেন সব একে একে। সত্যিই একটা মোবাইল পাওয়া গেল বইগুলোর পেছনে। এমনভাবে সেটা রাখা ছিল যেন শুধু ক্যামেরাটা বেরিয়ে থাকে, বাকি আস্ত মোবাইল চোখে না পড়ে৷

কিন্তু মোবাইলে চার্জ নেই। বোধহয় ভিডিও হতে হতে চার্জ শেষ হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। পুরো বাড়ি খুঁজে কোথাও এই মোবাইলের চার্জার পাওয়া গেল না। ভিডিও যে চলছিল সেটা সেভ হয়েছে নাকি হয়নি সেটা একটা প্রশ্ন!

ড্রইংরুমে আসতেই সেই জারবেরা ফুলের বড় ফুলদানিটা চোখে পড়ল যেটার কথা মেসেজে লিখেছিল মনিকা। ফুলগুলো বের করে ফুলদানিটা উল্টে দিলেন আরিফ। ভেতর থেকে অনেকগুলো পাথর বের হলো আর সাথে বের হলো একটা ছোট্ট পকেট নোটবুক। নোটবুকে গুটিগুটি অক্ষরে অনেক কিছু লেখা।

তিনি মেঝেতেই বসে পড়লেন লেখা পড়তে।

“নিজেকে যতই চালাক ভাবি না কেন, আসলে আমি একটা বোকা। আর বোকা বলেই সহজে মানুষের চাল ধরতে পারি না। নইলে অনেক আগেই বুঝতে পারতাম আমাকে এখানে কেন আনা হয়েছে। চিলেকোঠার ঘরে মেয়েটার লেখা না পেলে হয়তো আমি শেষদিন পর্যন্ত জানতেই পারতাম না যে আমাকে খু ন করা হবে। ঠিক যেমন ওকে করা হয়েছিল।

এই বাড়িতে থাকতে এত বোরিং লাগে! কেউ নেই এখানে। বুড়ো কেয়ারটেকার আর কয়েক ঘন্টার জন্য কাজ করতে আসা বোবা কাজের বুয়া ছাড়া একটা সত্যিকারের মানুষ নেই কথা বলার জন্য।

আমি তাই শুধু ঘুরে বেড়াই সারা বাড়ি। ছাদের ওই ছোট্ট চিলেকোঠাটা তালা দেয়া ছিল। আমি ভাবলাম এখানে এক বৃষ্টির দিনে ঘুমাব। তাই জন্য তালা ভেঙে ফেললাম।

ঘরটা জিনিসপত্রে ঠাসা৷ পুরানো জিনিস ঘাটতে ভালো লাগে আমার। কিন্তু বড্ড ধুলো। তবুও এটা সেটা দেখতে লাগলাম৷ বাতিল জিনিসপত্রের মাঝে একটা আজব জিনিস দেখলাম। একটা খেলনা পুতুল। বাজার থেকে কেনা পুতুল নয়, কাপড় দিয়ে বানানো পুতুল। ওইযে ছোটোবেলায় কাপড় পেঁচিয়ে সুতো দিয়ে বেঁধে পুতুলের মাথা, আর কাঠি দিয়ে হাত পা বানাতাম, তেমন পুতুল। এটা কে বানালো?

তারপর ঘুরে ঘুরে পেয়ে গেলাম এক গোছা মেয়েদের চুল! কার চুল এগুলো? ভাঙা বিছানার পায়ার সাথে জড়িয়ে থাকা চুলের গোছা হাতে নিয়ে দেখলাম৷ আর সেখানেই দেয়ালের একদম নিচের দিকে লেখা, “ও আমায় মেরে ফেলবে। আমার বাচ্চাটাকেও মেরে ফেলবে। এটা তো ওরও বাচ্চা। ওর কি কষ্ট হবে না?”

সেদিন বুকটা ছ্যাৎ করে উঠেছিল। লেখাটা পুরানো হলেও কালচে রঙটা দেখে আমার মনে হলো ওটা রক্ত দিয়ে লেখা! সেই মেয়ে সম্পর্কিত আর কিছু পেলাম না। কিন্তু সেদিন যে মনে ভয় ঢুকল, সেই ভয় দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। যদিও আমি ভয়টা দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। হাসছি, গাইছি, প্রেমের মেসেজ পাঠাচ্ছি তাকে। কেন এমন করছি আমি? তবে সাথে ডায়েরিটাও লিখতে শুরু করেছি। যদি আমি সত্যিই ম রি, তবে এটা যার হাতে পড়বে সে অন্তত সেই মেয়েটার আর আমার সাথে কী হয়েছিল তা জানতে পারবে।

টাকাপয়সার অভাব ছিল না আমার৷ আমি এই জটিল খেলাটায় পা-ই দিতাম না। আমার জীবন তো সরল সোজা। ক্লায়েন্টের সাথে ডিল করো, সেজেগুজে যাও, তারপর শুয়ে পড়ো, কাজ শেষে টাকা নিয়ে বিদায় দিয়ে বেরিয়ে পড়ো। এত জটিল কাজে আমি জড়াব কেন?

ভালোবাসার মোহ কি মানুষকে এতটাই জড়িয়ে ফেলতে পারে? যে কোনো মানুষের বিবেকবুদ্ধি কি লোপ পেতে পারে এই ভালোবাসা পাবার লোভে? সেই জীবনের প্রথম প্রেমে ধোঁকা খাবার পর থেকে আমি পাথরের মতো হয়ে গিয়েছিলাম৷ আমার ভেতর যে ভালোবাসার হাহাকর ছিল তা সবসময় শরীরী প্রেম দিয়ে মেটাতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু তা হবার ছিল না৷ ভালোবাসার জন্য ভেতরটা উষর মরুভূমি হয়ে ছিল। যেটা আমি প্রথম বুঝতে পারি তাকে দেখার পর। আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই, লজ্জা নেই। চিৎকার করে আমি পুরো পৃথিবীকে জানিয়ে দিতে পারি, আমি ভালোবাসি তাকে। আমি ফারহান রুশদিকে ভালোবাসি।”

এটুকু পড়ে নোটবুকটা ধপ করে বন্ধ করে দিলেন আরিফ। মাথা কাজ করছে না। রাজনীতিবিদ ফারহান রুশদির কথা লিখেছে এই মেয়ে? তার মানে কি এসবের মূলে সে? গোয়েন্দা হবার সুবাদে এসব মুখোশধারী পলিটিশিয়ান, সেলিব্রিটিদের সে অনেক দেখেছে। কিন্তু এই লোকটা এত অমায়িক! একবারই তার সাথে আলাপ হয়েছিল আরিফের। মনে হয়েছিল আস্ত মানুষটা মধু দিয়ে গড়া। আর কী পার্সোনালিটি! শুধু ওর জন্য ওদের দলে অনেক ভোট আসবে। আর এসব দেখে এখন আরেকবার বাস্তবতার ধাক্কা খেয়ে সোজা হয়ে গেলেন আরিফ। পৃথিবীর সব মানুষই বুঝি কোনো না কোনো মুখোশ ধারণ করে আছে। হয়তো তিনি নিজেও। কিন্তু মনিকা গেল কোথায়?

তিনি আবার নোটবুক খুললেন৷

“আমি ওকে ভালোবাসলেও ও আমাকে ভালোবাসে না। অবশ্য আমি সেটা বুঝতে পারি অনেক দেরিতে। আমাকে এই বিপজ্জনক খেলায় ঢোকানোর সময় সে কথা দিয়েছিল আমার সাথে একটা নতুন সংসার শুরু করবে। একটা ফ্ল্যাট কিনে দেবে আমার নামে। সেখানে আমাদের একটা গোপন সংসার থাকবে। তখন আমি এই লাইন ছেড়ে দেব৷ আমাকে সে খুব ভালোবাসবে। স্বীকৃতি দিতে না পারলেও আদর যত্নের কমতি রাখবে না৷ সে এমনই মানুষ যার কথা বিশ্বাস না করে পারা যায় না৷ যার কথায় বড় বড় মানুষও গলে যাবে, আর আমি তো সামান্য একজন।

কিন্তু বাস্তবে কী হয়েছে? সে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে৷ আর এখন আমায় খু নের পরিকল্পনা করছে৷ চিলেকোঠার মেয়েটার লেখাটা দেখার পর থেকে আমার সিক্সথ সেন্স প্রবল হয়ে উঠেছে। অবশ্য সে আমাকে কেন নিজের করে রাখবে? আমি তো বেশ্যা। বেশ্যারা দিনশেষে কারো হয় না। নিজেরও হয় না।

আমি চাইলে পালাতে পারি। সে নিশ্চিন্তে আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে এটা ভেবে যে আমি পালাব না। আমি সত্যিই পালাচ্ছি না৷ ভালো করেই জানি, এই দেশে থেকে তার কাছ থেকে পালিয়ে আমি কোথাও গিয়ে লুকিয়ে থাকতে পারব না। সে ঠিক খুঁজে বের করবে। তারচেয়ে বরং ভালোবাসার মানুষের হাতে ম রে যাওয়া ঢের ভালো।

তবে আমার প্রথম ভালোবাসার মানুষের ধোঁকা যেমন আমি মুখ বুজে মেনে নেইনি, প্রতিশোধ নিয়েছি, এবারও নেব। পরে হয়তো এই সুযোগ পাব না। এবারই সুযোগ।নিজেও শেষ হব, তাকেও শেষ করে দিয়ে যাব।

আমার শেষ ক্লায়েন্ট, কবি মুশফিকুর রহমানের ছবি দেখিয়েছিলাম তাকে। সে খোঁজ নিয়ে জেনেছে লোকটা গোয়েন্দা। শুনে মজা পেয়েছি খুব! গোয়েন্দারা আবার কবিতা পড়ে নাকি! তবে ভালোই হলো কথাটা জেনে। সে আমার কাজে লাগবে। আমাকে সে ধরতে পারেনি ঠিকই, তবে আমার জাস্টিস হয়তো তার হাতেই হবে।

আচ্ছা, আমি কি ন্যায়বিচার পাবার যোগ্য? আমি যাবার আগে একটা ভালো কাজও করে রেখে যাব৷ একটা অবলা নারীকে বাঁচিয়ে দিয়ে যাব৷ তার জন্য হলেও আমার ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত, তাই না?”

লেখা এখানেই শেষ।

আরিফ তার গ্লাভস পরা হাতে নোটবুকটা একটা জিপলক ব্যাগে ঢুকিয়ে পকেটে রেখে দিলেন। তারপর আরেকবার পুরো বাড়ি, বাগান তন্ন তন্ন করে খুঁজলেন। কিন্তু কিছুই পেলেন না৷ এখন বৃষ্টি নেই, তবে শেষরাত পর্যন্ত অঝোর ধারায় ঝরেছে। তাই কোনো এভিডেন্স থাকলেও সেটা ধুয়ে মুছে গেছে।

এখন মোবাইলটা চেক করা খুবই জরুরি। তিনি বেরিয়ে এলেন বাড়ি থেকে। কেয়ারটেকার বুড়োকে ধরলেন আবার।

“আপনি বলেছিলেন এই বাড়ির মালিক আশরাফ ভুঁইয়া। মিথ্যে কথা বললেন কেন আপনি? আমি তো জানি বাড়িটা কার।”

লোকটা ভয়ে ভয়ে বলল, “না, মানে, আমি তো জানি…”

“নিষেধ আছে আসল নাম বলতে?”

“না না, আসলে…”

আরিফ এবার চিৎকার করে বললেন, “সত্যি করে না বললে সোজা হাজতে পুরে দেব, তারপর যেই ক’দিন আয়ু আছে গরাদের ওপাশে কাটাতে হবে।”

“স্যার বইলে গেছে কেউ জিগাইলে এই নাম যেন কই..”

“আসল নাম কী স্যারের?”

বুড়ো ঢোক গিলল। কথা বেরুল না।

“ফারহান রুশদি?”

বুড়ো উত্তর দিল না৷ তবে তার চোখমুখ দেখে যা বোঝার বুঝে নিলেন আরিফ।

“শোনেন, আমি যে এখানে আসছি এই খবর আপনার স্যারের কাছে যেন ঘূর্ণাক্ষরেও না যায়। গেলে…” নিজের গলার এপাশ থেকে ওপাশে হাত চালিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন কী হতে পারে।

গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে দোকান খুঁজে মোবাইলের চার্জার কিনে আবার ফিরে এলেন ফার্ম হাউজে। মোবাইল চার্জ করলেন৷

কিছুক্ষণ পর মোবাইলটা অন হলো। আরিফ বিস্ময়ের সাথে দেখলেন ভিডিও হয়েছে! মনিকা মোবাইলের সেটিংস এমন করে রেখেছিল যেন মোবাইল হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলেও যতটুকু ভিডিও হয়েছে ততটুকু যেন সেভ হয়ে থাকে। বিশাল ভিডিও।

ধৈর্য ধরে বসে দেখতে লাগলেন আরিফ। দেখতে দেখতে তার চোখ কপালে উঠতে থাকল।

(চলবে)

সুমাইয়া আমান নিতু