ম্যারেজ প্রোপজাল পর্ব-২২+২৩

0
4

#ম্যারেজ_প্রোপজাল
#অরিত্রা_অর্নি
#২২

“সামর্থ্য বেগম আবার ও কল করেছে তূর্যকে। তূর্য তখন ও মিটিং এ। এমনিতে তূর্য খুব কম সময় দুপুরে বাড়ি যায়। যায় ই না বলতে গেলে। আজ বিশেষ কি আছে কে জানে। তূর্যর মিটিং আজ অফিসেই ছিলো। মিটিং শেষ করে তূর্য ভাবলো যাবে বাড়িতে৷ কিন্তু দাদি রুহানিকে ও নিয়ে যেতে বললো। তূর্য পাগলে ধরেছে যে সে এই পাগলকে নিয়ে যাবে। তূর্য বের হয়ে দেখলো নাফিস জেরিনের ডেস্কের সামনে। তূর্যকে দেখেই দৌড়ে এলো তূর্যর কাছে। তূর্য যেতে লাগলো। নাফিস ও যাচ্ছে ”

_এখন কি বাইরে কোথাও মিটিং স্যার ?

_নাহ্।

_তাহলে আমরা কোথায় যাচ্ছি ?

_বাড়িতে যাচ্ছি।

“নাফিস একটু অবাক হলো। এখন আবার কার বাড়িতে যাচ্ছে ”

_কার বাড়িতে স্যার ?

_তোমার শশুর বাড়িতে ইডিয়েট।

“তূর্যর কথা শুনে লাজুক হয় বললো”

_আমার তো শশুর বাড়ি নেই স্যার

“কথা বলতে বলতে ওরা গাড়ির কাছে চলে এসেছে। তূর্য নাফিসের দিকে গাড়ির চাবিটা ছুড়ে মারলো। নাফিস সেটা ক্যাচ ধরে ফেললো। এরপর দুজনেই গাড়িতে উঠে বসলো ”

“সায়রা রান্না শেষ করে চুমকিকে সাথে নিয়ে ই ডাইনিং টেবিলে সাজালো খাবার। সব একেবারে পরিপাটি। সায়রার মনটা ও খুশি। সব সাজানো শেষে সময় দেখলো দুপুর দেড়টা বেজে গেছে। তাই ভাবলো আগে সামর্থ্য বেগমকে ডেকে এনে খেতে বসাবে। প্রথমবার সে এ বাড়িতে রান্না করেছে। সায়রা ডাকতে যাবে তখনই সদর দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো। চুমকি ও অনেক কাজ করেছে। সায়রা তাই সায়রা নিজেই গেলো দরজা দিতে। দরজা খুলতেই দেখলো তূর্য আর ওর পাশে নাফিস দাড়িয়ে আছে। সায়রাকে দেখে নাফিস একগাল হাসি দিয়ে বললো ”

_কি খবর সায়রা খাতুন ?

_ভালো। আপনার কি খবর ?

“তূর্য ওদের মাঝে দিয়ে বলে উঠলো ”

_ভেতরে গিয়ে ও কথা বলা যাবে।

“কথাটা বলে গটগট করে নিজে চলে গেলো ভেতরে। সায়রা আর নাফিস এলো পিছু পিছু। তূর্য ডাইনিং টেবিলের সামনে এসে দাড়িয়ে গেলো। ততক্ষণে হাসিনা সামর্থ্য বেগমকে নিয়ে এসেছে। সামর্থ্য বেগম তূর্য আর নাফিসকে দেখে বললো ”

_এসেছিস তাহলে।

“নাফিস হেঁসে হেঁসে বললো ”

_হে চলে এলাম তো।

“তূর্য সামর্থ্য বেগমের কাছে এগিয়ে গেলো। গিয়ে বললো ”

_এতো জরুরি তকব। কি হয়েছে বলো এখন ?

_কিছু না। আগে খেতে বোস। নাতবউ,,,, ।

“সামর্থ্য বেগম সায়রাকে ডাকলো। সায়রা চুপ করে দাড়িয়ে ছিলো। সামর্থ্য বেগমের ডাকে এগিয়ে এসে বললো ”

_জি দাদি।

_ওদের খেতে দাও। সঙ্গে আমাকে ও। ভীষণ খিদে পেয়েছে।

“পরপর আবার বললো ”

_বুঝলি নাফিস আজ আমার নাতবউ তার শশুর বাড়িতে প্রপ্রথম রান্না করেছে। খেয়ে বলবি কিন্তু কেমন হয়েছে ? জলদি খেতে বোস।

“নাফিস অধিক উৎসাহী হয়ে বললো ”

_তা আর বলতে। আমি রিভিউ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

“ওদের কান্ড দেখে তূর্য হতবাক। তাকে এখানে খাবার খাওয়ানোর জন্য এমন তাড়াহুড়ো করে আনা হলো। এদিকে নাফিস আর সামর্থ্য বেগম বসে পড়েছে খেতে। তূর্যকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সামর্থ্য বেগম বললো ”

_জলদি বোস। কোনো কথা হবে না।

“তূর্য বসলো। সায়রা ও খুব উৎসাহি। সে আগে এগিয়ে এসে সামর্থ্য বেগম এর প্লেট এ খাবার তুলে দিলো। সাথে বড় এক পিস পাবদা মাছ। নাফিসকে ও দিলো। কিন্তু তূর্যর প্লেটে দেওয়ার আগেই তূর্য বললো ”

_আমি খাবো না৷ এতো তেল মসলা আমি খেতে পারি না৷

“সায়রা ভুলেই গিয়েছিলো বিষয়টা। পর মুহুর্তে ই বলে উঠলো ”

_সমস্যা নেই। আমি আপনার জন্য ও আলাদা রান্না করে রেখেছি। নিয়ে আসছি।

“সায়রা ছুটে গেলো রান্না ঘরের দিকে। এদিকে এ কথা শুনে সামর্থ্য বেগম, নাফিস অবাক৷ স্বামীর জন্য আলাদা ও রান্না করেছে এই মেয়ে। তূর্য নিজেও আশা করেনি এমন কিছু। সায়রা তূর্যর খাবার একেবারে প্লেট এ সাজিয়ে আনলো। এনে তূর্যর সামনে দিলো। তূর্য খাবারের দিকে চেয়ে দেখলো। ভিন্ন লাগছে। তবে তূর্য যা যা খায় তা ই আছে। সায়রার দিকে বুক কাপছে। এসব বিদেশি রান্না সে জীবনে করেনি খায়ওনি৷ আজ করেছে৷ কেমন হয় কে জানে। সামর্থ্য বেগম সায়রার দিকে চেয়ে বললো ”

_তুই এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেনো ? আয় খেতে বোস।

“সায়রা চুপ করে বসলো। সকলে খাচ্ছে। নাফিস চারটা পাবদা মাছ খেয়ে নিয়েছে। ওটা নাকি অনেক বেশি মজা হয়েছে। তূর্য চুপচাপ শুধু খেয়েছে কিছু ই বলেনি।
কিন্তু নাফিস প্রশংসা করে উদ্ধার করে ফেলছে৷ খাওয়া শেষ হতেই তূর্য উঠে গেলো৷ এখনি আবার,অফিসে ব্যাক করতে হবে। নাফিস ও পেট ফুল করে খেয়ে উঠেছে। সামর্থ্য বেগম ওদের বললো ”

_এখনি চলে যাবি ?

_কাজ আছে দাদী।

_তোকে বলেছিলাম না রুহানিকে ও নিয়ে আসতে। আনলি না কেন সঙ্গে ?

“সামর্থ্য বেগমের কথা শুনে নাফিস ফিক করে হেসে ফেললো। তূর্য নাফিসের দিকে চেয়ে আবার সামর্থ্য বেগম এর দিকে তাকালো ”

_অন্য একসময় নিয়ে আসবো৷ এখন আসছি,, ।

“তূর্য বেরিয়ে যাচ্ছে। নাফিস ও গেলো সঙ্গে। সামর্থ্য বেগম সায়রাকে বললো দরজা পর্যন্ত গিয়ে দাড়াতে।
সায়রা অসহায়। সে তাই করলো। নাফিস দীজার সামনে এসে সায়রার দিকে চেয়ে বললো ”

_রান্নাটা খুব মজা হয়েছে সায়রা খাতুন। সাথে তোমাকে এই শাড়িতে আজ সত্যি ই সায়রা খাতুন লাগছে।

“সায়রা হাসলো শুধু। কিন্তু নাফিসের এ কথা তূর্যর কানে ও গেলো। তূর্য সঙ্গে সঙ্গে চেচিয়ে ডেকে উঠলো ”

_নাফিস,,,,, আসবে নাকি রেখেই চলে যাবো।

_না,না আসছি স্যার।

“পরপর সায়রাকে উদ্দেশ্য করে বললো ”

_তোমার বর আমার জীনটা শেষ করে দিলো বুঝলে। এর বিচার আল্লাহ করবে। হু।

“নাফিস দৌড় দিলো। সায়রা দরজার সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাসলো। নাফিস গাড়িতে উঠলো। তূর্য উঠতে গিয়ে একবার দরজার দিকে ফিরে তাকালো। সায়রা তখনো দাড়িয়ে। তূর্য চোখ নামিয়ে নিয়ে চলে গেলো। সায়রা ও দরজা বন্ধ করে ফিরে এলো। নিজেকে কেমন স্বামী ভক্ত বউদের মতো লাগছে। সায়রা নিজে নিজেই হাসলো। এরপর চুমকি হার হাসিনাকে খেতে বলে সায়রা সামর্থ্য বেগম এর ঘরে গেলো। সামর্থ্য বেগম ওকে দেখে বললো ”

_কাছে আয়।

“সায়রা সামর্থ্য বেগম এর কাছে গিয়ে তার পায়ের কাছে বসলো। সামর্থ্য বেগম সায়রার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো ”

_রান্নাটা খুব মজা হয়েছে রে। এবার একটু নিজের ঘরে গিয়ে রেস্ট কর। তূর্য আবার চলে আসবে তো। যা।

“সায়রা অবাক হয়ে বললো ”

_কেনো? তোমার নাতী ফিরে এলে কি আর রেস্ট নিতে পারবে না কেউ ?

“সায়রার কথা শুনে সামর্থ্য বেগম হেসে বললো ”

_সবাই পারবে। কিন্তু তুই পারবি না।

_কেনো পারবো না ?

_কারন তুই বউ। আর বউদের স্বামীর প্রতি অনেক দায়িত্ব থাকে।

_ইস, কি এমন দায়িত্ব যে রেস্ট করতে পারবো না।

“সামর্থ্য বেগম মুখ চেপে হেসে বললো ”

_আমার নাতী ক্লান্ত হয়ে আসবে। তুই একটু পাশে পাশে থাকবি। তোকে একটু আদর সোহাগ করবে। রাত জাগতে হবে না। তখন রেস্ট করবি কি করে হু।

“সামর্থ্য বেগমের মুখে এমন কথা শুনে সায়রা লজ্জায় শেষ। এদের মুখে কিছু ই আটকায় না। সায়রাকে এমন লজ্জা পেতে দেখে সামর্থ্য বেগম সায়রার থুঁতনি ধরে মুখখানি উঁচু করে বললো ”

_লজ্জা পাচ্ছিস বুঝি। এ লজ্জা কিন্তু আমার নাতীর সামনে পাস না। মন খুলে আদর করবি। যা করতে চায় করতে দিবি। বাঁধা দিস না যেনো। স্বামীর আদর ভারী ভাগ্যের জিনিস,,, ।

“সায়রা আর বসে থাকতে পারছে না। কিসব বলে যাচ্ছে। শত হলেও সে মেয়ে। তূর্য আর তার মধ্যে যা ই থাক। যেমন সম্পর্ক ই থাক। এসব শুনে তার আসলেই কেমন যেনো লাগছে। সায়রা উঠে দাড়িয়ে গেলো। সামর্থ্য বেগম কে যেতে বললো ”

_আমি যাই দাদী।

“সামর্থ্য বেগম শব্দ করে হেসে বললো ”

_লজ্জা পেলি ?

“সায়রা আর দাড়ালোই না। তূর্যর রুমে চলে এলো।
এসে দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে বিছানার দিকে যেতেই মনে পরলো সে একজন খুঁতখুতে লোকের রুমে থাকে। এই অবস্থায় বিছানায় শোয়া যাবে না। সায়রা সকালো গাড়িগুলো গুছিয়ে রাখেনি। সেগুলো টেবিলের উপর ই আছে। সায়রা এগুলো রাখবে কোথায় তা ও জানে না। তূর্য এলে এরপর জিজ্ঞেস করে রাখবে। সায়রা সেখাম থেকে আরো একটা শাড়ি নিলো নীল রঙের। এরপর ওয়াসরুমে চলে গেলো। সামর্থ্য বেগম প্রায় সব ই দিয়েছেন শাড়ির সাথে যা যা লাগে।
সায়রা ঝর্ণার নিচে দাড়িয়ে আছে। ঝর্ণা থেকে পানি পড়ছে। সায়রা সামনের দিকে চেয়ে আছে। একটা কাচের বক্স এর মতো। সেখানে কতো রকমের জিনিস রাখা। তাও সব গুছানো। সায়রা মনে মনে ভাবলো ছেলে মানুষ এতো কিছু ব্যবহার করে। সায়রা মেয়ে হয়ে ও জীবনে মুখে ভালো করে সাবান ও দেয়নি।
সায়রা বের হলো সময় নিয়ে। পড়নের শাড়িটা ধুয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো ছাদের দিকে ”

“ছাদে উঠতেই সায়রার মনটা আরো ফুরফুরে হয়ে গেলো। কি সুন্দর ফুলের গাছ লাগানো। সায়রা দেখলো ওরই পড়নের ড্রেস টা ঝুলছে দড়িতে যেটা পড়ে সে এসেছিলো সেদিন। সায়রা সেটা নিয়ে শাড়িটা মেলে দিলো। এখনো অনেকটা রোদ ছাদে। তাই সায়রা বেশিক্ষন দাড়ালো না। নেমে এলো।
আবার রুমে এসে সায়রা এবার বিছানায় বসলো। কাল তো বেশ আড়াম করে ঘুমিয়েছে। এসব ভেবে সায়রার চোখ গেলো আয়নার দিকে। সে আবার তূর্যর তোয়ালে চুলে পেচিয়েছে। সায়রা জলদি সেটা খুলে ফেললো।
সুন্দর করে চেয়ারের উপর রেখে দিলো। তখনই সায়রার ফোনরা বেজে উঠলো। যেটা সায়রা গত দুইদিনে আর ধরেনি। সায়রা গিয়ে ওর ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করলো। কোকিলা বেগমের নাম্বার থেকে কল। সায়রার বুকটা কাঁপলো হালকা। এরপর কলটা রিসিভ করলো”

_হ্যালো।

“সায়রা হ্যালো বলতেই অপর পাশ থেকে কর্কশ গলায় ভেসে এলো ”

_এই মুখপুরী, কোথায় গিয়ে মরেছিস ? আবার কোন ভা**রের সাথে কোথায় গিয়েছিস। বাড়ি আসার নাম নেই।

“সায়রা কথাগুলো শুনলো। ওর চোখ দুটো জ্বলে উঠলো। ইচ্ছে করলো কোকিলা বেগমের মুখের ভাষায় তাক কায়কেটা কথা বলতে। কিন্তু সায়রার,রুচিতে বাঁধে। জীবন তাকে এখানে এনে দাড় করিয়েছে তাতে সায়রার কোনো আফসোস নেই। কারন তার আর হারানোর কিছু ই নেই। সায়রাকে চুপ থাকতে দেখে কোকিলা বেগম বললো ”

_এই হারামজাদি কথা বল। চুপ করে আছিস কেন ?

_বিশ্বাস করুন আপনার ভাগ্য ভালো আপনি এখন আমার সামনে নেই। থাকলে চুল ছিড়ে হাতে ধরিয়ে দিতাম। আর আমাকে আপনার কি দরকার। আমি নেই আপনার চাল বেঁচে যাচ্ছে। আর টাকার চিন্তা করছেন বুঝি। সমস্যা নেই মাস,শেষে বিকাশে টাকা চলে যাবে।

_তুই কই আছিস বল আমারে ?

_কখনোই না৷ আমাকে আবার কল করলে আমি আপনাকে পুলিশে দেবো মনে রাখবেন৷ বাবার খেয়াল রাখবেন৷আর বাবার ওই খরচটা আমিই বহন করবো। রাখছি।

“সায়রা কলটা কেটে দিলো। অস্থির লাগছে তার। আবার,শান্তি ও লাগছে। কিছুদিন ও বাড়িতে আর ফিরতে হবে না।মাঝে মাঝে গিয়ে বাবাকে দেখে আসবে। এখানকার এই বিয়ে নামক খেলাটা শেষ হলে ও সায়রা আর ওই বাড়ি ফিরবে না। সা আলাদা থাকবে একেবারে একা ”

“সায়রা কিছু সময় ওইভাবে ই বসে রইলো। এরপর বিছানার এক কোনায় শুয়ে পড়লো। কিছু ই করার নেই এখন আর। সায়রা একটু ফেসবুকে ঢুকলো৷ দুদিন ফেসবুকে না ঢুকায়। ঢুকতেই অনেকগুলো মেসেজ এলো সাথে কয়েকটা নোটিফিকেশন। সায়রা আগে মেসেজ দেখতে গেলো।
দেখলো অনিকের আইডি থেকে প্রায় শ’খানেক মেসেজ এসেছে। সাথে জেরিনের মেসেজ।
সায়রা অনিকের মেসেজগুলো দেখতে লাগলো। এমন ভাবে মেসেজ পাঠিয়েছে যেনো সায়রার জন্য চিন্তায় মরে গেছে। সায়রা ভাবলো একটা রিপ্লাই করবে তার আগেই তখনি অনিকের আইডি থেকে মেসেজ এলো ”

“তুমি অনলাইনে ? এই দুদিন কোথায় ছিলে? বাস স্টপে ও তোমায় আর পেলাম না। সায়রা,,,, ”

“সায়রা চেয়ে রইলো মেসেজটার দিকে। শুধু মাএ এক সাথে যাতায়াত ই তো করতো। এই ছেলে এতো উতলা হচ্ছে কেনো কে জানে। সায়রা রিপ্লাই ”

“আসলে আমি অন্য জায়গায় বাসা নিয়েছি। আর এক সাথে যাতায়াত করা হবে না আমাদের ”

“সায়রার মেসেজ দেখে অনিক একটু সময় নিয়ে রিপ্লাই দিলো ”

“” কোথায় বাসা নিয়েছো ? আচ্ছা আমরা কি আলাদাভাবে দেখা করতে পারি “”

” অনিকের মেসেজ দেখে সায়রা আর রিপ্লাই করলো না। অনিক এরপর ও অনেকগুলো মেসেজ দিলো। কিন্তু সায়রা সেসব দেখলো না। সে জেরিনকে কল করলো। মেয়েটা অনেক মেসেজ দিয়েছে। রিং হতেই জেরিন কল রিসিভ করলো ”

_হ্যালো।

_এই কোথায় রে তুই ? অসুস্থ তুই ?

_নাহ্ রে।

_তাহলে অফিসে আসলি না কেনো ? চাকরিটা কি করবি না আর? তূর্য স্যারকে চিনিস না তুই।

_ছাড় তো। আমি একটু ছুটি নিয়েছি।

_ওহ্। কিন্তু কবে থেকে আসবি ? আমি বড্ড একা হয়ে গেছি।

_এক সপ্তাহ পর ই আসবো। এখন রাখছি।

_আচ্ছা। সাবধানে থাকিস।

“সায়রা কল কেটে দিয়ে এরপর ফোনটা সাইডে রেখে দিলো। এরপর চোখ বুজে শুয়ে রইলো। কিন্তু নাহ্ শান্তি লাগছে না কিছুতেই। সায়রা উঠে গিয়ে রুমের পর্দাগুলো টেনে দিয়ে শুয়ে পড়লো বিছানায়। আহা৷ শান্তি। ওই খুঁতখুঁতে লোকটার বিছানায় এ ভাবে শুয়ে থাকা ও যেনো এক আলাদা শান্তি ”

“তূর্যর সারাদিন মিটিং ছিলো৷ আর বিষয়টা আরো পেরাদায়ক হয়েছে কারন সঙ্গে রুহানি ছিলো। তূর্যর দিকে শুধু ডেবডেবে করে তাকিয়ে থাকে। বিষয়টা তূর্যর জন্য বেশ অস্তিকর।
অফিস ছুটির পর রুহানি তূর্যর সঙ্গে ই বের হলো। রুহানি একটু সংকোচ নিয়ে ই বললো ”

_আমাকে একটু ড্রপ করে দিবি প্লিজ। আমার ড্রাইভার অসুস্থ আসেনি আজ।

“তূর্য শুধু ছোট করে বললো ”

_ওকে।

“তূর্য গাড়িতে উঠলো। এদিকে রুহানি মহা আনন্দে গাড়িতে উঠলো। ওর ড্রাইভারকে ও নিজেি আসতে নিষেধ করেছে যাতে তূর্যর সাথে যেতে পারে ”

“জেরিন অফিস থেকে বের হয়ে গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে। ওর বাসা উল্টো পথে। রোজ তো সায়রা থাকে সঙ্গে। আজ একা। দাড়িয়ে ও রিকশার জন্য ওয়েট করছে এমন সময় পেছন থেকে বাইকের শব্দ আসতেই সাইড হয়ে পেছন ফিরে দেখলো নাফিস। হেলমেট পড়ার কারনে শুধু চোখ দেখা যাচ্ছে ওর। নাফিস বাইক টান দিয়ে জেরিনের পাশে এসে বাইক থামালো। জেরিনের দিকে চেয়ে বললো ”

_কি ব্যাপার কটকটি। দাড়িয়ে আছো কেনো ?

“জেরিন আস্তে করে বললো ”

_রিকশার জন্য দাড়িয়ে আছি।

“নাফিস একটু সময় নিয়ে বললো ”

_আমি ড্রপ করে দেই ?

“জেরিন সামনের দিকে চেয়ে থেকে বললো ”

_দরকার নেই।

“নাফিস আর কিছু বললো না। বাইক টান দিয়ে চলে গেলো। জেরিন এখন সম্পূর্ণ একা দাড়িয়ে আছে। একদিকে সন্ধা ও হয়ে যাচ্ছে। জেরিন এদিক ওদিক তাকাচ্ছে বারবার। সময় মতো কেনো যে কখনো রিকশা পাওয়া যায় না। আবার মনে মনে একটু আফসোস ও করতে লাগলো। নাফিসকে কেনো যে না করতে গেলো। চলে গেলেই পাড়তো। ঠিক তখনই
নাফিস কোথায় থেকে যেনো ঘুরে আবার এলো। এসে জেরিনের সামনে বাইক থামালো। তবে কিছু বললো না। বাইকেই বসে রইলো। জেরিন ও কিছু বলছে না। এরপর নাফিস একা একাই বললো ”

_এখনো সময় আছে। কেউ চাইলে আমি তাকে বাসায় ড্রপ করে দিতে পারি। অফারের সময় কিন্তু সীমিত।

“জেরিন এবার একটু ভাবলো। কথাটা তাকেই বলা হয়েছে। জেরিন এগিয়ে এলো। এসে বললো ”

_ভাড়া কতো নিবেন ? আমার বাসা কিন্তু দূরে।

“নাফিস চোখ বড় বড় করে জেরিনের দিকে চেয়ে বললো ”

_এই ছেড়ি, আমি কি রাইড শেয়ার করতে আসছি নাকি।

_তাহলে কি বিনামূল্যে সাহায্য করবেন ?

“নাফিসের এবার রাগ হলো। এই মেয়ে বেশি কথা বলে ”

_নাহ্। আমি গেলাম। নিবো ই না তোমারে।

_এই না না। আমি যাবো।

“কথাটূ বলে জেরিন বাইকে উঠে বসলো। নাফিস হালকা হাসলো। জেরিন শুরুতে কাঁধে হাত রেখে বসতে গিয়ে অন্যরকম ফিল করলেও পড়ে রাখলো। নাফিস বাইক স্টার্ট দিয়ে জেরিনকে উদ্দেশ্য করে বললো ”

_তোমারে আজকে কিডন্যাপ করুম মসিবতের বেটি। মুক্তিপন দশ লাখ।

“বলেই হাসলো। জেরিন এর কানেই সেই কথা গেলো না। কারন নাফিস এক তো হেলমেট পড়া আবার বাতাসের শুশু শব্দ ”

“তূর্য বাড়ি ফিরলো সন্ধা সাড়ে সাতটায়। দরজা খুলে দিলো চুমকি। তূর্য ভীষণ ক্লান্ত আজ। এসেই তূর্য সামর্থ্য বেগম এর ঘরের দিকে গেলো। দরজার কাছে গিয়ে থেমে গেলো তূর্য। ভেতরে খাটের উপর সামর্থ্য বেগম আধশোয়া হয়ে আছেন। পাশে বসে সায়রা সুন্দর করে হাদিসের বউ পড়ছে। নবি রাসূল এর জীবনি। তূর্য দৃশ্যটা খেয়াল করলো। তখন আরেকটা দৃশ্য ওর মনে পড়লো। এভাবে তূর্যর মাকে দেখেছে সামর্থ্য বেগমকে কুরআন শরীফ এর বাংলা অনুবাদ পড়ে শুনাতে। কখনো বই পড়ে শুনাতে।
তূর্য আর দাঁড়ালো না চলে এলো। ওকে সায়রা সামর্থ্য বেগম কেউই খেয়াল করেনি।
তখন চুমকি এলো। সায়রাকে উদ্দেশ্য করে বললো ”

_ভাবী, ভাইজান আইছে।

“সামর্থ্য বেগম সায়রার দিকে তাকালো। সায়রা বই চেপে বসে আছে। ভাইজান আসছে তো সে কি করবে। ওই লোক ই কানা নাকি লুলা যে সায়রা সঙ্গে সঙ্গে থাকবে। এমনি ও ওই লোক মানুষ পছন্দ করে না। কিছু হলেই খ্যাকখ্যাক করে উঠে। সামর্থ্য বেগম সয়রার ভাবনার মাঝে বলে উঠলো ”

_আজ আর পড়তে হবে না। যা এবার ঘরে যা।

_আরো পড়ে যাই দাদী।

_নাহ্। তূর্য এসে গেছে। যা গিয়ে দেখ কিছু লাগবে কিনা।

_কি লাগবে উনার। সব তো রুমেই আছে।

“সামর্থ্য বেগম হেঁসে বললো ”

_তবুও যা। তুই আশেপাশে থাকলে ওর ভালোলাগবে।

“সামর্থ্য বেগম সায়রাকে জোড় করে পাঠালো। সায়রা সিড়ি দিয়ে উঠছে তার তূর্যকে বকছে। সায়রা থাকলে নাকি তূর্যর ভালো লাগবে। উল্টো সায়রা থাকলে ওই বজ্জাত লোক সায়রার হাজারটা ভুল ধরবে। এটা কেনো ? ওটা কেনো ? । আতংক লাগে সায়রার ”

“সায়রা যখন রুমে ঢুকলো তখন তূর্য শার্ট খুলছিলো। সব একপাশের হাতে নামিয়েছে সায়রা এই দৃশ্য দেখে সঙ্গে সঙ্গে উল্টো দিকে ঘুরে বলতে লাগলো ”

_আমি কিছু দেখিনি। আমি কিছু দেখিনি।

“তূর্য দ্রুত শার্ট জড়িয়ে ফেললো। এরপর বললো ”

_দিকে ঘুরো। ঘুরো বলছি।

“সায়রা তূর্যর দিকে ঘুরে পিটপিট করপ তাকালো। তূর্য তখন শার্ট পড়েছে ঠিকই তবে বোতাম দুটো লাগিয়ছে। তূর্যর লোমবীহিন বুকটা দেখা যাচ্ছে। সায়রার চোখ সেদিকে গেলে সায়রা চোখ সরিয়ে নিলো। কোথায় কোথায় যে চোখ যাচ্ছে তার।
তূর্য এদিকে কড়া চোখে চেয়ে আছে। তা দেখে সায়রা বললো ”

_দরজা খুলা ছিলো তাই,,,,,,।

_নক করে ঢোকা যায় না ইডিয়েট।

“সায়রা ভারী অপমান বোধ করলো। সে সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো ”

_ইস, ঢং। কি এমন আছে আপনার যে আমি দেখে ফেলবো। আর আপনার ইজ্জত চলে যাবে।

“তূর্য এবার দু কদম এগিয়ে এলো সায়রার দিকে।।সায়রা একটু পিছিয়ে গেলো। তূর্য বললো ”

_আমার অনেক কিছু আছে। সেগুলো তোমাকে দেখাতে যাবো কেনো হু।

“কথাটা বলে তূর্য ওয়াসরুমের দিকে যেতে যেতে বললো ”

_আরেকবার যদি দরজায় নক না করে ঢুকছো৷ তোমাকে আমি ফ্যানের সঙ্গে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবো বলে দিলাম।

“সায়রা ভেঙচি কাটলো। ইস, সায়রা মনে হয় ইচ্ছে করে ওনার বডি দেখতে গিয়েছে। সায়রা গিয়ে নিজের গাড়িগুলো ভাজ করতে লাগলো। যাতে তুলে রাখতে পারে। এর কয়েক সেকেন্ড পর ই তূর্য বেড়িয়ে এলো তাড়াহুড়ো করে ওয়াসরুমে থেকে। তূর্যকে এভাবে বের হতে দেখে সায়রা বললো ”

_কি হলো ? ওয়াসরুমে কি সাপ ঢুকেছে ?

“কথাটা হেসেই বললো সায়রা। তূর্য এখন কিছুটা ভেজা। ওর শার্টটা ও ভিজে শরীরের সাথে লেপ্টে আছে। তূর্য সায়রা কাছে এসে দাঁড়িয়ে বললো ”

_তুমি সাওয়ার নিয়েছো কখন ?

_কেনো ? দুপুরে। কেনো কি হয়েছে ?

_গিয়ে দেখো কি হয়েছে। একটা মেয়ে হয়ে এতোটা কেয়ারলেস কি করে হতে পারো তুমি।

“সায়রা আবুলের মতো চেয়ে আছে। সে আবার কি করলো কেয়ারলেস এর মতো। সায়রা তূর্যকে পাশ কাটিয়ে ওয়াসরুমে গিয়ে দেখলো কিছু ই নেই। সায়রা বললো ”

_কোথায় কিছুই তো নেই।

_বালটিতে দেখো ।

“সায়রা বালটিতে তাকাতেই ওর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। ইস, কি করে ফেলছে। ইনার রেখেই চলে গিয়েছে মনেই নেই। ছিহ্। তূর্য এটা দেখে নিয়েছে। লজ্জায় সায়রার ইচ্ছে করলো ফ্লোরের সাথে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদতে। তার সাথেই কেনো এসব হয়।
সায়রাকে আসতে না দেখে তূর্য রুম থেকে চেচিয়ে বলে উঠলো ”

_তোমার সম্পদ নেওয়া হয়ে গেলো বের হও। আমি সাওয়ার নেবো।

“সায়রা রাগে দুঃখে ইনারটা হাতের মুঠোয় নিয়ে মাথা নিচু করে বের হলো ওয়াসরুমে থেকে। তূর্য সায়রার দিকে না চেয়েই ওয়াসরুমে যেতে যেতে বললো ”

_কেয়ারলেস,,,,, ।

“সায়রার রাগ দুঃখ সব এখন এই ছোট্ট জিনিটার উপর হচ্ছে। সায়রা এই জিনিসের কথা সব সময় ভুলে যায়। আগে তো বাড়িতে ছিলো। এখন সে একজন খারুজ লোকের সঙ্গে থাকে। কি লজ্জায় পড়তে হলো সায়রাকে ছিহ্ ছিহ্। সায়রা রাগে দুঃখে রুম থেকেই চলে গেলো ”

চলবে,,,

#ম্যারেজ_প্রোপজাল
#অরিত্রা_অর্নি
#২৩

“সারাদিন সায়রার কাজবাজ করেই কাটে। তূর্যকে আজ দুপুরে ও সামর্থ্য বেগম কল করেছিলো। যাতে বাড়িতে খেতে আসে। কিন্তু তূর্য জরুরি মিটিং থাকায় আসেনি। সামর্থ্য বেগম আর সায়রার সময় খুব ভালো কাটে এক সাথে। যদিও সামর্থ্য বেগম হুটহাট এমন কথা বলে সায়রা লজ্জায় পড়ে যায়। এদিকে সায়রার পরিক্ষা একদিন বাদে।
সন্ধায় সায়রা ওদের ভার্সিটির গ্রুপ থেকে একজনের থেকে নোট নিয়ে নিলো। তূর্য বই আনলেই পড়তে বসবে ”

“এদিকে তূর্য মিটিং শেষ করে আবার অফিসে ফিরছে। নাফিস সঙ্গে। তূর্য বসে আছে নাফিস গাড়ি চালাচ্ছে। তখনই তূর্যর ফোনে মেসেজ এলো। তূর্য ফোন দেখে। নাফিসকে বললো” ”

_একটা বুকশপ দেখে গাড়ি থামাও।

“নাফিস একটু অবাক হলেও কিছু বললো না। একটা বুকশপের সামনে এসে গাড়ি থামালো। তূর্য নামলো সঙ্গে নাফিস ও নামলো। তূর্য কুকশপে গিয়ে ফোন বের করে দোকানদারকে বইগুলো দিতে বললো। দোকানদার এর কাছে সবগুলো বই ই ছিলো। তিনি বের করে দিলো। নাফিস একটা বই হাতে নিয়ে দেখে বললো ”

_স্যার এগুলো তো অন্য ডিপার্টমেন্ট এর বই। এগুলো নিচ্ছেন কেনো ?

_পড়বো তাই।

“নাফিস বইটা নেড়েচেড়ে রেখে দিলো। বই মানেই ভেজাল। বই দেখলে নাফিসে ঘুম পায়। তূর্য বইয়ের দাম দিয়ে বইগুলো নিয়ে আবার গাড়িতে উঠলো। নাফিস একটু কি যেনো ভেবে বললো ”

_স্যার।

_হু।

_আমার মনে পড়লো সায়রা খাতুন ও মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট এর ছাএী।

“কথাটা শুনে তূর্য নাফিসের দিকে এমনভাবে তাকালো। নাফিস ভরকে গিয়ে বললো ”

_নাহ্। মানে এমনিই বললাম আরকি৷

“অফিসে এসে তূর্য আবার কাজে লেগেছে। কিছুদিন পর দেশের বাইরে যাবে। সেসব নিয়ে কাজ চলছে। তূর্যর কেবিনে সময়ে রুহানি ঢুকলো। তূর্য রুহানির দিকে একবার তাকালো। রুহানির হাতে বেন্ডেজ করা। রুহানি এমনভাবে হাতটা রেখেছে যাতে তূর্যর চোখে পড়ে। তূর্য জিজ্ঞেস করলো ”

_হাতে কি হলো তোর ?

_কেটে গেছে।

“তূর্য শুধু ছোট করে বললো ”

_ওহ্।

“তূর্য আবার কাজে মন দিলো। রুহানি চেয়ে আছে তূর্যর দিকে। কতো কসরত করে সে হাতে বেন্ডেজ করেছে একা একা। তূর্য একটু দেখছে ও না চেয়ে। রুহানির রাগ হলো। সে চেচিয়ে বলে উঠলো ”

_ওহ্ মানে। আমার হাত কেটে গেছে তুই বলছিস ওহ্।

“তূর্য এবার কাজ রেখে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে বললো ”

_তো কি করার ছিলো। এম্বুলেন্স ডাকবো। ইস হাত কেটে গেছে। প্লিজ এসব বন্ধ কর রুহানি।

_কি বলতে চাইছিস তুই তূর্য। কি বন্ধ করবো আমি।

_বের হয়ে যা কেবিন থেকে। কাজ করতে দে আমায়।

“রুহানির রাগ হচ্ছে। তূর্য ওর দিকে ফিরে ও তাকায় না। রুহানি বের হলো কেবিন থেকে। তখনই সামনে পড়লো নাফিস। নাফিস রুহানির হাতে বেন্ডেজ দেখে বললো ”

_আল্লাহ ম্যাডাম আপনার হাত কি হয়েছে ?

“রুহানি নাফিসকে দেখে ওকে কোনো কথা বলে সোজা জিজ্ঞেস করলো ”

_আচ্ছা ওই সায়রা মেয়েটা কোথায় ? অফিসে আসে না কেনো ? জানো কিছু ?

“নাফিস এবার একটু ভাবলো৷ এরপর একদম ভোলাভালা একটা ভাব নিয়ে বললো ”

_আমি কি করে বলবো। আমি তো কিছু ই জানিনা৷

“রুহানি নাফিসের দিকে কেমন করে যেনো চেয়ে বললো ”

_তুমি জানো না। এটা আমি বিশ্বাস করি না। সত্যি করে বলো নাফিস৷

_হায় আল্লাহ। আমি কেমনে জানবো। সায়রা কি আমার ভাবী লাগে যে সব সময় খবর রাখবো৷

“রুহানি কিছু বললো না। হাই হিল পড়েছে৷ হেঁটে গেলে গটগট শব্দ হয়। যা নাফিসের কাছে মহা বিরক্ত লাগে। রুহানি চলে গেলে নাফিস বিরবির করে বললো ”

_আজাইত্তা কচু একটা।

“সন্ধায় তূর্য অফিস থেকে বের হলো। গাড়ি নিয়ে বসলো। রুহানি আর ধারেকাছেও আসেনি। তূর্য গাড়ি চালাতে চালাতে মনে মনে কিছু ভাবলো। বারবার চোখের সামনে সকালে দৃশ্য ভাসছে। তূর্য বাড়ির দিকে না গিয়ে সোজা শপিং মলের দিকে গেলো। তূর্য এ জীবনে নিজের জিনিস ছাড়া অন্য কারো জিনিস কেনেনি কখনো। প্রথমবার সে মেয়েদের ড্রেস এর সেকশনে ঢুকলো। জাস্ট পাঁচ মিনিটের মধ্যে কয়েকটা ড্রেস নিয়ে কাউন্টারে গিয়ে বিল পে করে আবার গাড়িতে চলে এলো। তূর্যর মনে হচ্ছিলো দম আঁটকে যাবে ”

“তূর্য বাড়ি ফিরলো আটটায়। দরজা খুলে দিলো চুমকি। তূর্য ভেতরে ঢুকে সায়রা বা সামর্থ্য বেগম কাউকেই দেখতে পেলো না। তূর্যর দুই হাতে দুইটা ব্যাগ। তূর্য সোজা রুমে চলে গেলো।
তূর্য এসেছে দেখে চুমকি সায়রাকে ডাকতে সামর্থ্য বেগম এর ঘরে গেলে দেখলো সায়রা ওখানেই ঘুমিয়ে আছে। সামর্থ্য বেগম বসে তজবি পড়ছে। চুমকি দেখে সামর্থ্য বেগম জিজ্ঞেস করলো ”

_কিছু বলবি ?

_ভাইজান আইছে৷

_কখন এলো ?

_মাএ ই। হাতে আবার দুইটা ব্যাগ৷ মনে হয় ভাবির জন্য কিছু আনছে৷

“কথাটা বলার সময় চুমকির মুখে এক লজ্জা লজ্জা হাসি দেখা গেলো। সামর্থ্য বেগম সায়রার দিকে তাকালো। গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে। সামর্থ্য বেগম সায়রার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেই সায়রা নড়েচড়ে চোখ পিটপিট করে তাকালো। সে এসেছিলো গল্প শুনতে। এসে শুয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে। সায়রা শুয়ে থেকেই বললো ”

_কি হয়েছে ?

“সামর্থ্য বেগম হেসে বললো ”

_আমার নাতী বুঝি তোরে এই দুই রাইত একটু ও ঘুমাইতে দেয় নাই তাই না রে ?

“সায়রা হুট করে এমন কথা শুনে একটু ভরকে গেলো। তবুও নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো ”

_নাহ্। এমন কিছু না।

_বুঝি বুঝি৷ নতুন নতুন কয়েকমাস অনেক জ্বালাইবো৷ তুই কিন্তু বাঁধা দিস না। তাইলে কিন্তু মন ঘুইরা যাইবো।

“সায়রা এসব কথা একেবারে নিতে পারছে না। সামর্থ্য বেগম যখন তখন এসব বলে বসে৷ লজ্জা লাগে সায়রার। সায়রাকে লজ্জা পেতে দেখে সামর্থ্য বেগম বললো ”

_এখন রুমে যা। তূর্য ফিরছে মাএ।

“সায়রা এ কথা শুনে কেমন খুশি হয়ে গেলো। তার বই গুলো ও নিশ্চয়ই এনেছে। এখন গিয়ে পড়তে না বসলে এ বছর ফেইল কেউ ঠেকাতে পারবে না৷ সায়রা সামর্থ্য বেগম এর কাছে থেকে বিদায় নিয়ে দিলো দৌড়। রুমে ঢুকেই দেখলো তূর্য নেই। কিন্তু টেবিলের উপর ব্যাগ রাখা। সায়রা টেবিলের কাছে গিয়ে ব্যাগ দেখতে লাগলো। ভেতর বই। সায়রা বইগুলো বের করে দেখতে লাগলো ঠিকঠাক আছে কিনা।
এমন সময় ওয়াসরুমে থেকে বের গলো তূর্য।
সায়রা বই নেড়েচেড়ে দেখতে দেখে বললো ”

_সব ঠিকঠাক আছে ?

“সায়রা তূর্যর দিকে ফিরে হাসি মুখে বললো ”

_হুম। কিন্তু দাম কতো হয়েছে ?

“সায়রার কথা শুনে তূর্য ট্রাউজার এর দুই পকেটে হাত রেখে দাড়িয়ে বললো ”

_দাম শুনে হবে ?

_এমা, আপনাকে টাকাটা ফেরত দিতে হবে না। কতো টাকা হয়েছে ?

_ফেরত দিতে চাও তুমি ?

_হে।

“তূর্য আরো দু কদম সায়রার দিকে এগিয়ে এসে একটু ধির কন্ঠে বললো ”

_তাহলে টাকা দিতে হবে। লবনবিহীন এক কাপ কফি করে দিলেই হবে৷

“লবনবিহীন কফি শুনে সায়রা হেসে ফেললো। তূর্য চেয়ে রইলো সায়রার দিকে। সামান্য কয়টা বই এনে দিয়েছে বলে কি খুশি। সায়রা বললো ”

_এখনি কফি করে আনছি৷

“সায়রা চলে গেলো। তূর্য চেয়ে রইলো সেই যাওয়ার দিকে। অন্য সবার মতো সায়রাকে তার বিরক্ত লাগে না।উল্টো মনে হয়,সায়রার সাথে এক দন্ড কথা কাটাকাটি হলে তূর্যর মন ভালো হয়। সায়রার এই ঝলমলে স্বভাব ও তূর্যর কাছে দারুন লাগে। কিন্তু অন্য কোনো মেয়ের বেলায় এসব হয় না৷ রুহানি ও তো মেয়ে৷ কই ওর বেলায় তো তূর্য এতো মুগ্ধ হয়ে তাকায় না। রুহানি স্মার্ট। পরিপাটি, তাও সায়রার মতো বিশেষ লাগে না কখনো।
তূর্য কেমন যেনো এক ভাবনায় ডুব দিলো। তার কি সংসার হয়েছে ? এই যে দৌড়ে বেড়ানো মেয়েটা তার নাম মাএ বউ। যাকে তূর্য বউয়ের চোখে দেখে না। তবে কিভাবে দেখে সে। এই উওর তূর্যর জানা নেই।
তূর্য ভাবনায় থেকে বের হলো। জোড়ে জোরে নিঃশ্বাস নিলো৷
এগিয়ে গেলো টেবিলের দিকে৷ সায়রার জন্য সে বইয়ের সাথে যে জামাগুলো কিনে আনলো। সেটা কি করে দেবে৷ সেটাই ভাবছে৷ বইগুলো নেড়েচেড়ে দেখতে দেখতে সায়রা কফি হাতে চলে এলো। তূর্যর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো ”

_বিশ্বাস করুন, লবন তো দূরে থাক চিনি ও দেইনি আজ।

“কথাটা শুনে তূর্য হেসে ফেললো। সায়রা খুব কম দেখেছে তূর্যকে হাসতে। লোকটা হাসলে কিন্তু মন্দ লাগে না। কিন্তু ওমন গোমরামুখো হয়ে কেন থাকে কে জানে।
তূর্য সায়রাকে এভাবে চেয়ে থাকতে দেখে। ভ্র নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো”

_কি ?

“সায়রা চোখ ফিরিয়ে নিলো ”

_নাহ্। কিছু নাহ্।

“তূর্য হেসে বললো ”

_ওয়েট। তোমার জন্য একটা গিফট আছে।

“কথাটা বলে তূর্য আরেকটা ব্যাগ বের করে আনলো। সায়রা বুঝলো না কি উপলক্ষে সে গিফট পাচ্ছে। তূর্য ব্যাগটা সায়রার দিকে এগিয়ে দিলো। সায়রা ব্যাগটা নিয়ে খুলে দেখলো ভেতরে ছয়টার মতো ড্রেস। সায়রা তূর্যর দিকে চেয়ে বললো ”

_এগুলো তো ড্রেস।

“তূর্য কফিতে একটা চুমুক দিয়ে ফের বললো ”

_হ্যা। এখন থেকে শাড়ি পড়ার দরকার নেই।

_কেনো ?

_এমনই। ড্রেস কমফোর্টেবল বেশি হবে৷ এক্সাম দিতে গেলেও তো আর শাড়ি পরে যাবে না।

“সায়রা তো এ কথা ভাবেইনি। সে তো তার কোনো ড্রেস আনেনি। এক্সাম দিতে তো তাহলে শাড়ি পরে যেতে পারতো না। সায়রা খুশি হলো। আস্তে করে বললো ”

_ধন্যবাদ।

_এখন যাও গিয়ে পড়তে বসো।

“কথাট বলে তূর্য নিজের কাজের জিনিসপত্র নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো। সায়রা ড্রেস গুলো রেখে বিছানার উপর বই নিয়ে বসলো। কতোদিন ঠিক মতো পড়তে পারে না। সায়রা খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। আরেক দিকে কেউ যে তার দিকে চেয়ে আছে সায়রা তা দেখলো না। তূর্য এমন জায়গায় বসেছে যেখান থেকে সায়রাকে দেখা যায়। সায়রা বইয়ের দিকে চেয়ে আছে। একটু পর পর বারান্দা দিয়ে হাওয়া আসছে তাতে সায়রার চুলগুলো উড়ছে৷ দেখতে অনেকটা সিনেমার মতো মনে হলেও। তূর্যর কাছে বেশ সুন্দর লাগছে মুহুর্তটা৷ তূর্য কফি খাচ্ছে। সায়রাকে দেখছে আবার কাজ করছে ”

“রাত দশটা বাজে। চুমকি একটু আগে এসে সায়রা আর তূর্যর খাবার রুমেই দিয়ে গেছে। সায়রা পড়া শেষ করে উঠে বই গুছিয়ে রেখে খাবার খেতে গেলো।
তূর্যর খাবার ও আছে দেখে তূর্যকে ও ডাকতে এলো। তূর্য ইশারায় চুপ থাকতে বললো।
সায়রা চলে এলো। নিজেই একা খেয়ে নিলো। এখন ঘুমাতে যাওয়ার পালা। কিন্তু সমস্যা হলো আজ সায়রার বিছানায় থাকার কথা হিসেবে৷ কিন্তু তূর্য গত দুই রাত ধরে বসে কাটাচ্ছে। আজ ও তাই করবে। সায়রার বিষয়টা একটু খারাপ লাগলো। তূর্যর দিকে তাকালো। ওর বোধহয় কাজ শেষ। রুমেই আসছে। সায়রা এগিয়ে বললো ”

_একটা কথা ছিলো ।

“তূর্য ওর কাজের জিনিসপত্র বেড সাইড টেনিলের উপর রাখতে গিয়ে বললো ”

_শুনছি৷

_বলছিলাম কি। এভাবে তো ঘুমানো যায় না৷ আমি বলি কি বিছানাটা তো অনেক বড়৷ মাঝে কিছু বালিশ দিয়ে থাকা যেতো না।

“সায়রার কথা শুনে তূর্য ভ্রু কুঁচকে তাকালো। সায়রা মনে মনে ভাবলো সে হয়তো ভুল কিছু বলে ফেলেছে।
তূর্য তখন বললো ”

_আচ্ছা।

“কথাটা বলে তূর্য রুম থেকে বের হয়ে গেলো। খাবার এর প্লেটটা ও নিয়ে গেলো। সায়রা ভাবেনি তূর্য রাজি হয়ে যাবে। সত্যি ই তো। এভাবে ঘুমানো যায় নাকি। তূর্যর বেডটা বিশাল বড়। সায়রা বালিশ আনলো। একেবারে মেপে মাঝ বরাবর বালিশগুলো লম্বা করে রাখলো। তূর্য তখন রুমের দরজার সামনে এসে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে সায়রাকে। বেশ মেহনতী কাজ করছে মেয়েটা । সায়রা কাজ শেষে পেছন ফিরে তাকাতেই দেখলো তূর্য দাঁড়িয়ে আছে ওর দিকেই চেয়ে। সায়রা বিছানার দিকে দেখিয়ে বললো ”

_দেখুন, এবার আর সমস্যা হবে না ঘুমাতে।

“তূর্য রুমের ভেতরে এলো। দরজা বন্ধ করে দিলো। সায়রা তূর্যর দিকে আছে। লম্বা ফর্সা গড়নের লোকটা। হেঁটে আসছে ধিরে ধিরে সায়রার দিকে। সায়রার কেমন যেনো লাগছে। পা নাড়াতে পারছে না জায়গায় থেকে। তূর্য আরো এগিয়ে এলো। সায়রা তূর্যর দিকে চেয়ে বারবার ঢোক গিলছে। তূর্যর বডি ওই হাফ হাটা টি শার্ট এর মধ্যে দিয়ে ও ফুলে ফেঁপে আছে। চোখ জোড়া কি গভীর। সায়রার ভ্রম কাটলো যখন তূর্য সায়রার পাশ দিয়ে চলে গেলো। কি ভাবছিলো সে এসব।
তূর্য বারান্দায় চলে গেছে। সায়রা রুমের লাইট বন্ধ করে দিয়ে শুয়ে পরলো। তূর্য এলো না শুতে। সায়রা কতো কি ভাবলো। এরপর ঘুমিয়ে পড়লো ”

“তূর্য অনেকটা সময় বারান্দায় কাটালো। সায়রা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর রুমে এলো। সায়রা জেগে থাকা অবস্থায় একই বিছানায় শুতে পারতো না তূর্য। তূর্য নিজের জায়গায় যাওয়ার আগে একবার ঘুমন্ত সায়রাকে দেখলো। এরপর গিয়ে শুয়ে পড়লো। সায়রা আর তূর্যর মাঝে এখন শুধু চারটা বালিশ রাখা। এক পাশে ঘুমন্ত সায়রা। আরেক পাশে সেই ঘুমন্ত মুখখানার দিকে অতৃপ্ত ভাবে চেয়ে থাকা নির্ঘুম দুটি চোখ। যে নিরলসভাবে দেখে যাচ্ছে একখানা সিন্ধ মুখ। যার এই মুহুর্তে ঘুমে হুস নেই। তূর্য মুচকি হাসলো। এসব অনুভূতি তার কাছে নিতান্তই অহেতুক। তবে সেই অনুভুতি ই কড়া নাড়ছে মনের আঙিনায় ”

“নাফিস আর জেরিনের মধ্যে ঝগড়া বেঁধেছে। নাফিস ইচ্ছে করে করে জেরিনকে বিরক্ত করছে। জেরিন আর মেসেজ করে পারছিলো না। নিজেই কল করলো এই রাতে নাফিসকে। নাফিস সঙ্গে সঙ্গে রিসিভ করলো। জেরিন আগেই বলে উঠলো ”

_এই বজ্জাত বেটা। আমাকে এতোগুলো মেসেজ দিয়েছেন কেনো ? আমি জরিনা। আমি কামের বেটি রহিমা হে।

“জেরিনের কথা শুনে নাফিস মুখ চেপে হাসলো। সে ইচ্ছে করেই রাগিয়েছে। কিন্তু জেরিন যে কল দিয়ে বসবে তা ভাবেনি। তবে নাফিস মনে মনে বেশ খুশি হয়েছে। পাকি ধিরে ধিরে উড়ে তার দিকেই আসছে।
নাপিস বললো ”

_চুপ থাকো মসিবতের বেটি।

_আপনি চুপ থাকুন। আপনি যদি আর আমাকে এসব উল্টা পাল্টা কথা বলেছেন আপনার খবর আছে।

_আচ্ছা। কি করবে শুনি ?

_আপনার বাড়ি গিয়ে পিটিয়ে আসবো।

_বাড়ি এসে পেটাতে হবে না। একটু রান্না করে দিয়ে যেও রহিমা। আমার বুয়া আসছে না।

_অসভ্য ।

“কথাটা বলে জেরিন কল কেটে দিলো। আর ব্লক করে দিলো নাফিসকে। নাফিস যেই দেখলো জেরিন ওকে ব্লক করেছে। ওর মাথা গরম হয়ে গেলো। সাহস কতো বড়। নাফিসকে ব্লক করে। এই মেয়ের খবর আছে। অফিসে পাই একবার সামনে ”

“সায়রার ঘুম ভেঙেছে সবে। এখনো রুমে অন্ধকার প্রায়। সায়রা চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে শুয়ে ছিলো। এবার মুখ থেকে চাদর একটু সরাতেই সায়রা দেখলো তূর্য ওয়ারড্রপ এর মধ্যে কিছু খুজছে। সায়রা সেটা দেখছে না। দেখছে তূর্য খালি গায়ে। শুধু পড়নে ট্রাউজার। তাও আবার কোমরের একটু নিচে নামানো। সায়রা স্পষ্ট দেখতে পারছে তূর্যর বডি। সায়রা চোখ সরালো না। বেহায়া নজর তার সরতে ও চায়লো না। ওি ভাবেই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে লগলো তূর্যকে। সায়রা মানতে বাধ্য এই লোক সব কিছুতে পারফেক্ট। এতো সুন্দর বডি মেইনটেইন করা তো আর মুখের কথা নয়৷ সায়রার মনে এই মুহুর্তে একটা প্রশ্ন জাগলো। তূর্যর বয়স কতো? দেখে তো বোঝার উপায় নেই।
তূর্য একটা স্লিভলেস টি শার্ট পড়লো। সায়রা তখনো দেখছে তূর্যকে। ইস। গোমরামুখো হলেও কিউট আছে। ওই বলে না পকি। সাদমান শাহারিয়ার তুর্য বোধহয় তার আসল বউয়ের জন্য ঠিক তেমনই হবে।
তূর্য বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। বাইরে থেকে দরজা টা ও বন্ধ করে দিয়ে গেলো৷
সায়রা এবার সম্পুর্ন মুখ বের করলো। আহা। সে কি করছে। লুকিয়ে লুকিয়ে একটা ছেলেকে ড্রেসলেস অবস্থায় দেখলো। নাহ্। এতো অধপতন মানা যাচ্ছে না”

চলবে,,,