#ম্যারেজ_প্রোপজাল
#অরিত্রা_অর্নি
#৩৯
“সায়রাকে ঘুমের ঔষধ দেওয়া হয়েছে৷ মাথায় বেশি আঘাত লাগেনি। তবে কিছু কিছু জায়গায় হালকা ফেটে গেছে। ডক্টর আপাতত যেসব ঔষধ সায়রাকে দেওয়া যাবে না তা দিচ্ছে না। মাথায় বেন্ডেজ করা। হাতে বেশি ব্যথা পেয়েছে। হাতটা ফুলে উঠেছে। কয়েক জায়গায় কেটে কেমন ক্ষত হয়ে আছে। সেখানে ও বেন্ডেজ করে দিয়েছে। সায়রা ঘুমাচ্ছে। এতোটা সময় ডক্টর কাউকেই কেবিনে ঢুকতে দেয়নি৷ কিন্তু তূর্য দেখতে চাইছে। তাই ডক্টর কেবিন থেকে বের হওয়ার পর তূর্যকে যেতে বলেছে।
নাফিস বাইরে দাড়িয়ে। তূর্য ঢোকার আগে বললো ”
_এখন বাসায় যাও নাফিস। অনেক কষ্ট করলে।
_এসব কি বলছেন আপনি। আপনি ছাড়া আমার আছেই বা কে। দাদী বারবার কল করছে কি বলবো ?
_তুমি জেরিনকে দাদীর কাছে পাঠাও। আমি ওর ঘুম না ভাঙা না পর্যন্ত এখানেই থাকবো। আর বেবির বিষয়টা এখনি বলো না দাদীকে।
_আচ্ছা। আমি তাহলে বাসায় গিয়ে আবার আসছি।
“নাফিস বেরিয়ে গেলো। তূর্য ঢুকলো কেবিনে। দরজাটা চাপিয়ে দিলো। সায়রা বেডে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। হাতে সেলাইন চলছে। মুখটা কেমন শুখিয়ে গেছে। তূর্য গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বেডের কাছে বসলো। সায়রা দিকে চেয়ে রইলো। এক হাত বেন্ডেজ। যেই হাতটাতে তূর্য পরম যত্নে চুমু খেয়েছে রোজ। তূর্য খেয়াল করে দেখলো সায়রার হাতের রিংটা কেমন থেতলে আছে। কয়েকটা ডায়মন্ড ও নেই। হাতে কি দিয়ে মেরেছে যে এমন হলো। ইস, তূর্যর বুকটা বোধহয় কেউ ছুড়ি দিয়ে আঘাত করছে। না জানি কতো কি সয়েছে সায়রা ওই বারো ঘন্টায় । এসব ভেবেই তূর্যর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। চোখ গেলো সায়রার পেটের দিকে৷ ওখানেই তো তূর্যর অংশ বড় হচ্ছে। তূর্যর সন্তান। এই মেয়েটার গর্ভে। এটা তো খুশির মুহুর্ত হওয়ার কথা ছিলো। তূর্য বহু বছর পড় জীবন উপভোগ করছিলো। সেটা ও সইলো না মানুষের। তূর্য সায়রার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো ”
“সামর্থ্য বেগম সকাল থেকে পাগল হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে চুমকি মুখ ফসকে বলে দিয়েছে সায়রাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তূর্য ও আসেনি বাড়িতে। সেই থেকে নাফিসকে লাগাতার কল দিয়ে যাচ্ছে। নাফিস বাসায় যাওয়ার আগে জেরিনকে সবটা খুলে বললো। শুধু বেবির বিষয়টা ছাড়া। বললো সামর্থ্য বেগম এর কাছে যেতে। জেরিন তাই করলো। এতো কিছু ঘটে গেলো সায়রার সাথে। মেয়েটা সুস্থ থাকলেই হয় ”
” তূর্য সায়রার হাত চেপে ধরে সেখানে মাথা ঠেকিয়ে রইলো। প্রায় অনেকটা সময় পর সায়রার ঘুম ভাঙলো। এখনো শরীরটা কেঁপে কেঁপে উঠছে। সায়রা শরীর নড়ে উঠছে বুঝতে পেরে তূর্য সঙ্গে সঙ্গে তাকালো। দেখলো সায়রা তাকানোর চেষ্টা করছে। তূর্য সঙ্গে সঙ্গে উঠে সিটে গিয়ে বসলো। সায়রার হাতটা চেপে ধরে বললো ”
_জানপাখি। কষ্ট হচ্ছে ? তাকাতে পারছো না।
“পরপর চিৎকার করে নার্সকে ডাকলো। সায়রা ভালো করে চেয়ে যখন দেখলো তূর্য ওর সামনে। সায়রা যেনো মুহুর্তে জান ফিরে পেলো। সঙ্গে সঙ্গে উঠে হামলে পড়লো তূর্যর বুকে। তূর্যকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ”
_তূর্য,,,, তূর্য,,,আপনি এসেছেন। তূর্য আমাকে,,,। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।
“তূর্য বুঝলো সায়রা ট্রমায় পড়ে গেছে। তূর্য সায়রাকে একেবারে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো ”
_এই যে আমি৷ কে মারবে তোমায়। আমি আছি তো। তুমি আমার বুকে। কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। শান্ত হও। দেখো এই যে আমি। তোমার তূর্য। দেখো।
“সায়রা হুহু করে কেদে ফেললো। সব যন্ত্রনা ভুলে গেলো মুহুর্তে। আর কেউ তাকে তার সন্তানের ক্ষতি করতে পারবে না। তূর্য সায়রা মাথায় অনবরত হাত বুলাতে লাগলো। সায়রা কাঁদছে দেখে তূর্য সামনে এনে গালে হাত রেখে বললো ”
_কাদে না বউ। ব্রেন এ চাপ পড়বে। চুপ। কাঁদে না। আমি আছি তো।
_রুহানি,,, আমাকে,,আমাকে মেরে ফেলবে। তূর্য আমি আপনাকে কল করেছি। আমার একটা কথা,,কথা বলার ছিলো। আমার মধ্যে,,, তূর্য,,, ।
“সায়রা ঠিক মতো কথা ও বলতে পারছে না। তূর্য সায়রার গালে চুমু খেয়ে বসলো এমন সময়। সায়রার চোখে চোখ রেখে বললো ”
_তোমার মধ্যে আমার অংশ বড় হচ্ছে। এটা বলতেই কল করেছিলে তাই না পাখি। আমি সরি। আমি ধরতে পারিনি তোমার কল। আমি পারিনি তোমাকে আমার সন্তানকে ঠিক ভাবে নিরাপওা দিতে। আমি সরি পাখি।
_আপনি খুশি হননি ?
“তূর্য চোখ দিয়ে সেই মুহুর্তে ফের টপটপ করে পানি পড়লো সায়রার হাতের হাতের উপর। তূর্য সায়রার দিকে চেয়ে বললো ”
_এ অনুভূতি আমি তোমায় কিভাবে বুঝাই বলো তো। বাপ হচ্ছি আমি। আমি তূর্য । এ অনুভূতি আমি তোমায় বলে বুঝাতে পারবো না তো বউ।
“কথাটা বলেই তূর্য সায়রার সারা মুখ জুড়ে চুমু খেলো। সায়রার বেন্ডেজ করা হাতটা ধরে বললো ”
_এই হাতে কে মেরেছে ?
_রুহানি। এই রিংটা নেওয়ার জন্য। এটা তো আমার বাসর রাতের উপহার। আমি কি করে নিতে দিতাম বলুন।
“তূর্য হতবাক হয়ে চেয়ে রইলো। এই রিং বাঁচাতে এভাবে হাতে মার খেয়েছে। তূর্য সায়রাকে ফের জড়িয়ে ধরলো ”
_কসম। মেরে ফেলবো আমি রুহানিকে। ও যা যা করেছে সব গুনে গুনে ফেরত দেবো।
_নাহ্। ও খারাপ। ও আপনার ও ক্ষতি করে ফেলবে তূর্য।
_চুপ। শান্ত। বুকে থাকো।
“সায়রা চুপটি করে তূর্যর বুকে পড়ে রইলো। তূর্য বোধহয় শান্তি পাচ্ছে। ভীষণ শান্তি। সায়রার ঔষধ এর রেশ তখনো কাটেনি। তূর্য অনেকটা সময় বুকের মাঝে সায়রাকে চেপে ধরে রাখায় সায়রা ফের ঘুমিয়ে পড়লো। এর মাঝে নার্স এলো। তূর্য সায়রাকে শুইয়ে দিলো। নার্স বললো ”
_উনার রেস্ট দরকার। এখনি মাথায় চাপ দেবেন না।
_ও কয় ঘন্টা ঘুমাবে এভাবে ?
_আরো দুই থেকে তিন ঘন্টা ।
_তাহলে আপনি পাহারা দিন।
_পাহারা দিবো মানে ?
_এখানে বসে থাকবেন৷ আমার একটু কাজ আছে। আমার লোক নেই একটু পড়ে আসবে। ততক্ষণ বসে থাকুন।
“কথাটা বলেই তূর্য ওর মানিব্যাগ বের করে কয়েকটা হাজার টাকার নোট নার্সকে ধরিয়ে দিলো। পরপর সায়রার দিকে এগিয়ে গিয়ে ঠোঁটে একটা শুকনো চুমু খেলো। নার্সটা চেয়ে রইলো। তূর্য বিরবির করে বললো ”
_তোমার গায়ে লাগা প্রতিটা আচরের শোধ তুলবো জানপাখি। তোমার ঘুম ভাঙার আগেই।
“কথাটা বলেই তূর্য বেরিয়ে গেলো। গাড়ি নিয়ে চললো। মাথায় আগুন ধরে আছে৷ কেন সব কিছু তূর্যর বেলায়। কেন তূর্যর সুখ কারো সয্য হয় না৷ কিছু সময়ের মধ্যে ই তূর্য পৌঁছে গেলো সেই ডেরায়। গাড়ও থেকে নেমে সোজা চলে গেলো ভেতরে। অনিক পুলিশের কাছে আছে। তূর্য ডেরার ভেতরে ঢুকতেই চারজন ছেলে সরে গেলো। যারা এতটা সময়ে এখানে রুহানিকে আটকে রেখেছিলো। তূর্য ঢুকতেই রুহানি চোখ তুলে চাইলো একবার। তূর্য এসে রুহানির ঠিক সামনে রাখা চেয়ারটায় বসলো। রুহানির হাত দুটো বাধা। পা ও বাঁধা। মুখে টেপ লাগানো। ঠিক সায়রাকে যেভাবে বেধে রাখা হয়েছিলো সেভাবে। তূর্য এদিক ওদিকে তাকাচ্ছে। রুহানির চোখ স্থির। তূর্যর দিকে চেয়ে আছে। তূর্য হুট করে উঠে দাঁড়ালো। রুমের এক কোনায় এখনো রক্ত লেগে থাকা কাঠের টুকরোটা পড়ে আছে। তূর্য সেটা হাতে তুললো। সায়রার রক্ত। রাগ যেনো বাড়ছে শুধু। কাঠের টুকরোটা হাতে নিয়ে এসে আবার চেয়ারে বসলো। রুহানি অসহায় দৃষ্টিতেতে চেয়ে আছে। তূর্য একটা ছেলেকে ইশারা করলো রুহানির মুখের টেপ টা খুলে দিতে। খুলে দেওয়া হলো। রুহানি বড় বড় কয়েকটা নিঃশ্বাস ফেললো। পরপর তূর্যর দিকে চাইলো। তূর্য রাগ সামলাতে পাড়লো না। কাঠের টুকরোটা দিয়ে পরপর দুইটা বারি দিলো রুহানির হাতে। যেভাবে সায়রাকে দেওয়া হয়েছে। রুহানি চিৎকার করে উঠলো। তবে সেই চিৎকার তূর্যর আজ শুনতে ভালো লাগছে। তূর্য আরো একটা বারি নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে। রুহানির হাতটা বোধহয় ভেঙেই গেলো এবার। তূর্য পরপর বলে উঠলো ”
_কেন করলি এটা ? বল। কেন করলি ? তুই জানতি না আমার কেউ নাই। জানতি না তূর্য বহু বছর একাকিত্বে জীবন কাটায়। জানতি তো তুই।। তবুও কেন আমার সুখের দিকে নজর দিলি। বল কেন ?
“রুহানি কথা বলতে পাড়ছে না। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। তূর্য এবার রুহানির গাল চেপে ধরলো। তূর্য যেনো মুহুর্তে ই হিংস্র হয়ে উঠলো ”
_বল৷ কেন করলি। কেন তুই আমার সুখরে কষ্ট দিলি। ওর গর্ভে আমার সন্তান আছে৷ আমি বাপ হওয়ার মতো খুশির খবর পেয়েছি হাসপাতালে বসে। তোর জন্য। যদি কিছু হয়ে যেতো। তুই কেমনে পারলি ওরে কষ্ট দিতে। ওর এই হাতটা এভাবে থেতলে দিতে।
“কথাটা বলে তূর্য আবার একটা বারি দিলো রুহানির হাতে। রুহানি এবার চিৎকার করে বলে উঠলো ”
_ওরে আমি মেরে ফেলতাম। ওর গর্ভে তোর সন্তান এসেছে না। আমি জানলে আগে ওই বাচ্চা,,,,,,
“তূর্য রুহানি কথা শেষ করার আগেই রুহানির গাল এতো জোড়ে চেপে ধরলো যে রুহানি চিৎকার ও করতে পারলো না ”
_তার আগে আমি তোকে মেরে দিতাম। ওটা আমার সন্তান । আমার৷ কলিজা টেনে বের করে ফেলবো তোর আমি৷
“তূর্য রুহানির গাল ছাড়তেই রুহানি হুহু করে কেদে ফেললো। তূর্যর চোখে এতো ঘৃণা ওর জন্য। রুহানি বললো ”
_তোকে আমি ভালোবেসেছি৷ তুই বুঝিসনি৷ সায়রার জায়গায় আমার থাকার কথা ছিলো।
_না। সায়রার জায়গায় কারো থাকার কথা ছিলো না। তোর তো না ই৷ তুই ছোট থেকে কখনো আমার সুখ সয্য করতে পারিসনি। আমার পড়াশোনা। আমার বিজনেস। এমনকি আমার পারসোনাল জীবন নিয়ে ও তুই ঝামেলা করেছিস। আমি তবুও কিছু বলিনি তাকে। এবার তুই আমার কলিজায় হাত দিলি৷ কি করে। বল এতো সাহস তোর হলো কি করে।
_ওই মেয়ে তোর মাথা খারাপ করে দিয়েছে। তূর্য আমার কথা শোন। আমি তোর ভালো চাই। আমার সঙ্গে থাক। তোকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। তুই আমার কেন হলি না বল। তুই আমার তূর্য ।
“পরপর রুহানি উন্মাদের মতো হেসে বললো ”
_এখান থেকে বের হতে পারলে আমি আবার ওই মেয়েকে ধরবো।
_সেই সুযোগ ই তুই পাবি না৷
“কথাটা বলেই তূর্য সেই কাঠের টুকরোটা দিয়ে রুহানির মাথায় বেশ কয়েকটা বারি দিলো। পা,দিয়ে লাথি দিতেই চেয়ার উল্টে পড়লো রুহানি। এমন সময় কোথায় থেকে যেনো নাফিস এসে তূর্যকে জাপটে ধরলো। থামানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু তূর্য বাঁধা মানছে না। চিৎকার বলতে লাগলো”
_ও আমার কলিজায় হাত দেওয়ার সাহস করেছে। ওর কলিজা টেনে বের করে ফেলবো আমি।
“নাফিস দেখলো রুহানির নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। মরে টরে গেলে হত্যা মামলা হয়ে যাবে৷ নাফিস তূর্যকে টেনে ডেরা থেকে বের করলো। পুলিশ জানতো এই বিষয়ে। তাই নাফিস চাইলো রুহানি যেনো পুলিশ হেফাজতে থাকে।
তূর্যকে টেনে এনে গাড়িতে বসালো। তূর্য কাঠের টুকরোটা ফেলে দিয়ে শার্ট এর হাতায় কপালের ঘাম মুছলো। নাফিসের দিকে চেয়ে বললো ”
_আমার বউয়ের ঘুম ভেঙেছে ?
“নাফিস হতবাক হয়ে চেয়ে রইলো। এই লোক এমন বউ পাগলা কবে হলো কে জানে৷ একজনকে আধমরা করে রেখে এলো। আরেকজনকে পুলিশে দিলো। নিজের অবস্থা নাজেহাল। সেই কাল সকাল থেকে একই শার্ট পড়ে আছে। রক্ত ঘাম দুটোই শার্ট এ লেগে আছে। তূর্য এক শার্ট এক দিনের বেশি না ধুয়ে পড়তো না। অথচ আজ দেখো এমন অবস্থায় বলছে তার বউয়ের ঘুম ভেঙেছে কিনা।
নাফিস বললো ”
_নাহ্। যখন গিয়েছিলাম তখন ভাঙেনি। জেরিন আছে ওখানে।
“তূর্য গাড়িতে উঠে বসলো। নাফিস জানতো যাওয়ার সময় তাকে এই গাড়ি চালাতে হবে তাই বাইক রেখেই চলে এসেছিলো। তূর্য পাশে বসে৷ কপালে আঙুল ঠেকিয়ে। নাপিস বললো ”
_বিয়ের মিষ্টি খাওয়ালেন না৷ দুইবার বিয়ে করলেন। এখন বাপ হচ্ছেন তবুও মিষ্টির নাম মুখে নিচ্ছেন না। এটা কি ঠিক হচ্ছে।
“নাফিস পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বললো বিষয়টা। তূর্য নাফিসের দিকে চেয়ে বললো ”
_হসপিটাল থেকে যাই। তোমাকে মিষ্টির দোকান কিনে দিবো যাও৷
_কেন? আমাকে কি চাকরি থেকে বহিষ্কার করে মিষ্টির দোকানদারি করাবেন ?
_তা ই ভাবছি।
“নাফিস একটু সময় নিয়ে বললো ”
_বাপ হওয়ার ফিলিংস কেমন স্যার ?
_এখনো তো হইনি।
_হবেন তো।
_যখন থেকে শুনেছি শুধু মনে হচ্ছে আমার কেউ আসছে৷ আমার নিজের অংশ সে। এই অনুভূতি বোঝানো যায় না বোধহয়। তাহলে বুঝাতাম।
“নাফিস মুচকি হাসলো। ইস কবে যে তার বিয়েটা হবে। বাচ্চার বাপ হবে এক মাসের মধ্যে। কোনো কথা চলবে না। সব কিছুতে তূর্য এগিয়ে গেলো ”
“হসপিটালে পৌঁছালো ওরা৷ তূর্য কেমন অধৈর্য হয়ে আছে। কেবিনে এসে ঢুকতেই দেখলো সায়রার ঘুম ভেঙেছে। জেরিন পাশের চেয়ারে বসা। তূর্যকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো। তূর্য সায়রাকে চেয়ে থাকতে দেখে তাড়াহুড়ো করে গিয়ে সায়রার পাশে বসলো। সায়রা তূর্যকে দেখে উঠে বসতে চাইলো। তূর্য সাহায্য করলো উঠতে। সায়রা উঠে বসতেই তূর্য সায়রাকে নিজের বুকের সঙ্গে মিশিয়ে নিলো। জেরিন আর নাফিস হা করে চেয়ে আছে। তূর্য সায়রাকে বললো ”
_কষ্ট হচ্ছে কোথাও পাখি ?
“” সায়রা তূর্যকে ঠেলে একটু দূরে সরিয়ে দিলো। তূর্যর দিকে চেয়ে দেখলো তূর্য কেমন বিধস্ত হয়ে আছে। শার্ট এ রক্ত। সায়রা তূর্যর দিকে ভালো করে চেয়ে বললো ”
_আপনি কোথায় গিয়েছিলেন ? শার্ট এ রক্ত কেন?
_নিচে গিয়েছিলাম। আর এটা তো তোমার রক্ত।
“সায়রা তূর্যর গালে হাত রাখলো। আস্তে করে বললো ”
_আপনার মুখটা কেমন ছোট হয়ে গেছে। কিছু খাননি তাই না।
_তোমাকে খুজে পাচ্ছিলাম না। কি করে খেতাম। জান হাতে চলে এসেছিলো আমার।
“সায়রার চোখে পানি চলে এলো। ইস, লোকটা তাকে এতো ভালোবাসে।
ওদের দুজনের পরিস্থিতি বুঝতে পেরে নাফিস বললো ”
_স্যার বিকেল হয়ে আসছে। গিয়ে খাবার নিয়ে আসি। কেবিনে ওয়াসরুম ও আছে। আমি আপনার জামা কাপড় ও এনেছি। ফ্রেশ হয়ে নিন।
“নাফিস চলে গেলো। জেরিন ভেবেছিলো ও থাকবে। এই জামাই বউয়ের মহব্বত দেখতে ভালোই লাগছিলো। কিন্তু নাফিস হাত ধরে টেনে নিয়ে এলো। জেরিন বললো ”
_আমাকে টেনে আনলেন কেনো ?
_তাহলে কি ওদের প্রেম দেখার ইচ্ছে ছিলো ?
_ইস,ভালোই তো লাগছিলো দেখতে।
“নাফিস জেরিন মাথায় আস্তে করে একটা থাপ্পড় দিলো বললো ”
_মসিবতের বেটি। ওদের উপর দিয়ে কি গেছে ওরা ি জানে। জামাই বউ এখন একজন আরেকজনের সাথে একটু লুতুপুতু করবে। তুমি থাকলে ডিসটার্ব হবে না।
_এই আপনি আমাকো মসিবতের বেটি বলবেন না।
_হাজার বার বলবো। মসিবতের বেটি৷
“নাফিস আর জেরিন মারামারি করতে করতে নামলো নিচে। ওদের মধ্যে প্রেম কম মারামারি বেশি। যখনই দেখা হয়। এক সঙ্গে থাকে৷ মারামারি লেগে যায়। না হলে ঝগড়া। তবুও দিন শেষে একজন আরেকজনকে ছাড়া থাকতে পারে না। নাফিস আরো এক ধাপ এগিয়ে। পারে না এখনু বিয়ে করে ফেলতে ”
“ওরা বেরিয়ে যেতেই তূর্য সায়রাকে ফের জড়িয়ে ধরলো। সায়রা এক হাত নাড়াতে পাড়ছে না। তবুও তূর্যর বুকে মাথা ঠেকিয়ে রইলো। তূর্য বললো ”
_আম,সরি বউপাখি৷ আমার জন্য তোমায় এতো কষ্ট সয্য করতে হলো।
_আপনি কি রুহানিকে শাস্তি দওতে গিয়েছিলেন তূর্য ?
“তূর্য কিছু বললো না। চুপ রইলো। রুহানি নামটা ও তূর্য শুনতে চায় না আর। তূর্য চুপ করে আছে দেখে সায়রা বললো ”
_কি করেছেন রুহানির সাথে। মারেননি তো আবার?
_কোন ? মারলেই কি।
_ইস, পড়ে আপনাকে পুলিশে ধরে নিয়ে যাবে না।
_নিয়ে গেলেই বা কি ?
_ওমাহ্। তখন আপনাকে ছাড়া আমি থাকবো কি করে।
“তূর্য এবার সায়রাকে বুক থেকে সরিয়ে দিয়ে সায়রার দিকে চেয়ে বললো ”
_ইশ রে। যখন মাঝে বালিশ দিয়ে রাখতে৷ কাছে আসলে কান্না করতে৷ তখন কি করে ছিলে ?
“এই কথা শুনে সায়রা গাল ফুলালো। বললো ”
_তখন তো বিষয়টা অন্যরকম ছিলো৷
“তূর্য হুট করে সায়রার আরো একটু কাছে চলে এলো। সায়রা চমকে গেলো। তূর্য বললো ”
_এখন তো আর বিষয়টা অন্যরকম নেই জান।
“কথাটা বলেই তূর্য চোখ মারলো। এই থমথমে মেজাজের তূর্য হুট করেই ভিন্ন রুপ ধারন করলো। চোখে মুখে কেমন আবেশ ছড়িয়ে গেলো। সায়রা এই তূর্যকে বিয়ের পর থেকে রোজ দেখে। রোজ৷ মাসে একবার সায়রা অসুস্থ হওয়ার পড়ে তূর্য পাগল হয়ে উঠেছিলো। এই রুপ তো সায়রার ভীষণ চেনা। সায়রা তূর্যর বুকে হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বললো ”
_আপনার মতলব কি হু ?
“তূর্য আরো একটু কাছে এসে বললো ”
_চব্বিশ ঘন্টা হয়ে গেলো তোমায় একটু আদর করি না বউ। তোমাকে এভাবে দেখে লোভ লাগছে।প্লিজ একটা চুমু খাই বউপাখি। প্রমিজ, একটু ও ব্যথা দেবো না।
“সায়রা চেয়ে রইলো। তূর্য করলো কি টুপ করে সায়রার ঠোঁটে চুমু খেলো। সঙ্গে সঙ্গে আবার সরে ও গেলো। সায়রা চেয়ে রইলো। তূর্য এমন করে চুমু খাওয়ার লোক নয়। খেলে এমনভাবে খাবে যেনো আসলেই খাচ্ছে। সায়রাকে দম ও নিতে দিবে না। আজ এইটুকু চুমু কেন। সায়রার নিজের ই সয্য হলো এই চুমু। তূর্যর শার্টর কলার চেপে ধরে বললো ”
_মিঃ সাদমান শাহারিয়ার তূর্য। চুমু খেলে ভালো করে খাবেন। এটা কেমন চুমু ?
“তূর্য ঠোঁট কামড়ে হেসে সায়রার দিকে চেয়ে গভীর স্বরে বললো ”
_চু*ষে খেতে উস্কানি দিচ্ছো বউ। চলো খেয়ে দেখাই আবার। সাদমান শাহারিয়ার তূর্য তোমায় খেতে কতোটা এক্সপার্ট।
“কথাটা বলেই তূর্য সায়রাকে বেডে শুইয়ে দিলো। নিজেও সায়রার দিকে ঝুকলো। নেশা লেগে আছে তূর্যর চোখে। পুরো রুমটা দেয়াল। আরেক সাইডে একটা জানালা। সেটা চাপানো। দরজা ও অটো লক। তূর্য সায়রার উপরে ঝুকলে ও ভার দেয়নি সায়রার উপর। এখন থেকে আর ভার দেওয়া যাবে না। তূর্য তা বুঝে গেছে। এদিকে সায়রার বুকটা অনবরত কাঁপছে। তূর্য ধিরে ধিরে সায়রার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে গেলো। তৃষ্ণা মেটানো খুব দরকার৷ তূর্য দেরি করলো না ঠোঁট জোড়া আঁকড়ে ধরলো। সায়রার হাতে বেন্ডেজ সেই হাত আরেক সাইডে দিয়ে রাখলো। ইস তূর্যর ছোয়া এতো মাতাল করে কেন তাকে। লোকটা একটু দূরে থাকলে সায়রার আজকাল দম বন্ধ লাগে। এই যে রোজ সায়রার সঙ্গে মিশে থাকার আবদার। সায়রা একদিন ও দূরে রাখতে পারেনি এই লোককে। সায়রার শরীরটা এই লোকের ছোঁয়া পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে থাকে। তূর্য আজ ডেস্পারেট হলো না। ধিরে ধিরে চুমু খেতে লাগলো।
অনেকটা সময় যাওয়ার পর তূর্য হুট করে থেমে গেলো। ঠোঁট জোড়া ছেড়ে দিয়ে সায়রার দিকে তাকালো। সায়রা চোখ বন্ধ করে ছিলো। সায়রার হাতে সেলাইন চলছে। তাতে রক্ত উঠে গেছে। তূর্য ছেড়ে দেওয়ায় সায়রা অসহায় দৃষ্টিতে তাকাতেই তূর্য সায়রার কন্ঠনালী বরাবর একটা চুমু খেলো। বললো ”
_তুমি সিক জান। এখন না থামলে বেশি কিছু করে ফেলবো। সইবে না তোমার শরীরে।
“কথাটা বলে মুচকি হেসে সায়রার গাল টেনে দিলো। সায়রার উপর থেকে উঠে দাঁড়ালো। বললো ”
_সাওয়ারটা নিয়ে আসছি পাখি। ওয়েট।
“সায়রা বললো ”
_দাদী,,,,।
“তূর্য পেছন ফিরে চেয়ে বললো ”
_ফোন তোমার কাছেই রাখা। দাদীকে কল করো।
“তূর্য ওয়াসরুমে ঢুকলো। বিশাল সাইজের কেবিন। ভিআইপি। যা যা থাকা দরকার সবই আছে। সায়রা এবার ওইভাবেই শুয়ে থেকে সামর্থ্য বেগমকে কল করলো। মনে মনে ভাবলো খশির খবরটা কি এখনি দিবে। নাকি বারি গিয়ে। সামর্থ্য বেগম কল ধরতেই সায়রার কন্ঠ শুনে বললো ”
_তুই ঠিক আছিস ? মনটা কি আনচান করছিলো আমার।
_ঠিক আছি দাদী। তুমি চিন্তা করো না এতো।
_তুই নেই। কবে আসবি। হাসপাতাল থেকে ছাড়বে কবে ?
_আমি তো জানিনা দাদী। তোমার নাতী জানে। আমি তো এখন সুস্থ ই আছি।
“সামর্থ্য বেগম এর সাথে আরো টুকটাক কথা বললো সায়রা। এর মধ্যে তূর্য বের হলো। সায়রা চেয়ে দেখলো একবার। তূর্য এসেই সায়রার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে বললো ”
_এই বুড়ি। আমার খবর কে নিবে হু ?
_তুই বাড়ি ফিরবি কবে। তোরা আয় নাহলে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যা৷
_এতো অধৈর্য হয় না বুড়ি। কাল ই ফিরবো।
“কথা বলেই সায়রার দিকে চেয়ে থেকে বললো ”
_তোমার জন্য একটা খুশির খবর আছে বুড়ি। অপেক্ষা করো।
_কি এমন খুশির খবর রে ?
_এসে বলবো। এখান থেকে বললে তুমি আরো অধৈর্য হয়ে যাবে। সাবধানে থেকো। রাখছি৷
“তূর্য কলটা কেটে দিলো। সায়রা চেয়ে রইলো তূর্যর দিকে। ইশ, লোকটা এই খবর যখন সামর্থ্য বেগমকে বলবে সামর্থ্য বেগম তো সায়রাকে চেতাবে খুব। স্বামীর সোহাগী বলে বলে।
তূর্য চুল মুচছে এমন সময় দরজায় শব্দ হলো। দেখলো নাফিস আর জেরিন দাড়িয়ে আছে। হাতে খাবারের প্যাকেট। তূর্য সরে দাড়ালো। ওরা ভেতরে এলো। জেরিন গিয়ে চেয়ার টেনে বসলো। সায়রার ও ভীষণ খিদে পেয়েছে। নাফিস যা পেরেছে নিয়ে এসেছে অনেকটা পথ হেটে গিয়ে। ওয়ান টাইম প্লেট ও নিয়ে এসেছে। সায়রা তূর্যর দিকে চেয়ে বললো ”
_আমার খিদে পেয়েছে।
“তূর্য তাকালো সায়রার দিকে। হাতে এখনো সেলাইন চলছে। যদিও শেষ এর দিকে। তূর্য বললো ”
_ওয়েট নার্সকে জিজ্ঞেস করছি।
“তূর্য নিজে গিয়ে নার্সকে জিজ্ঞেস করে এলো। বললো সেলাইন খুলে দিয়ে নরম কিছু খাওয়াতে। এ দিকে নাফিস এনেছে ভাত,তরকারি, কয়েক পদের ভর্তা, তূর্যর জন্য আলাদা করে খাবার। কেবিনে এসে এবার পড়লো বিপাকে। সায়রা তো গরুর মাংস পছন্দ করে। তূর্য নিজের হাতে প্লেট তুলে নিলো। নাফিস আর জেরিন ও খেতে বসলো এক সঙ্গে। সায়রার সামনে তূর্য গরুর মাংস দিয়ে ভাত মাখিয়ে লোকমা তুলে ধরতেই বললো ”
_ছি। গন্ধ। এটা সরান। এটা আমি খাবো না।
“নাফিস বললো ”
_আরেহ্ সায়রা খাতুন গরুর মাংস না তোমার পছন্দ।
_এটাতে গন্ধ নাফিস ভাই।
“তূর্য বললো ”
_আচ্ছা। এটা খেতে হবে না। চিকেন দিয়ে খাও।
_ভর্তা দিয়ে খাবো।
“তূর্য আবার ভর্তা দিয়ে ভাত আনলো। যেই তূর্য চামচ দিয়ে খাবার খায় সে সুন্দর করে ভর্তা ভাত মাখিয়ে সায়রাকে খাইয়ে দিলো। এরপর নিজের খাবার খেলো। সায়রা এখন হালকা সুস্থ। তবে হাতের ব্যথাটা কমেনি।
সন্ধার আগে আগে জেরিন চলে যাবে। সায়রার কাছে এসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো। সায়রা জেরিনের হাতটা চেপে ধরে বললো ”
_তোকে একটা খুশির সংবাদ দেবো ?
_কি সংবাদ ?
“সায়রা হালকা হেসে বললো ”
_তুই খালা হবি৷ সেদিন বলা কথাটা বোধহয় সত্যি হয়েছে।
“জেরিন হা করে চেয়ে আছে। পর মুহুর্তে ই লাফিয়ে উঠলো। তূর্য আর নাফিস তখন কেবিনের বাইরে ছিলো। জেরিন কুশি হয়ে বললো ”
_ইচ্ছে করছে তোকে তূর্য স্যার এর মতো জড়িয়ে ধরি। খালা হবো আমি। তোর বাচ্চা আমি কোলে নিয়ে ঘুরবো রে সায়রা ।
“সায়রা হেসে ফেললো। তার বোন কখনো তার হয়নি। সৎ বোন আর নিজের কতোটুকু ই বা আপন হবে। তবে জেরিন আজ আপন। বোনের মতো। সায়রা থেকে বিদায় নিয়ে জেরিন বের হলো। কেবিনের থেকে কিছুটা দূরে দেখলো দুটো লোক আর নাফিস আর তূর্য দাড়িয়ে। জেরিনকে দেখে ওরা লোক দুটোকে বিদায় দিলো। এগিয়ে এলো জেরিনের দিকে। জেরিন বললো ”
_আসছি স্যার।
“তূর্য হেসে বললো ”
_ধন্যবাদ বোন। এতোটা পাশে থাকার জন্য। দাদীর সঙ্গ দেওয়ার জন্য ।
_ছি ছি স্যার ধন্যবাদ দিয়ে লজ্জা দেবেন না৷
_তাহলে তুমি ও আমায় অফিসের বাইরে স্যার স্যার বলে লজ্জা দিও না। ভাইয়া বললেই হবে।
“জেরিন হেসে ফেললো। বললো ”
_আচ্ছা ভাইয়া আজ আসি। ওর খেয়াল রাখবেন। আর একটা কথা।
_কি ?
_অভিনন্দন নতুন বাবুর জন্য।
“তূর্য হাসলো উওরে। নাফিস আর জেরিন বিদায় নিলো। তূর্য ফের কেবিনে চলে গেলো।
নাফিস আর তূর্য হাসপাতালের সিড়ি দিয়ে নামছে। প্রায় ফাকা সিড়ি । জেরিন বকবক করছে। বলছে ”
_সায়রা কি সুন্দর সংসার করছে। ওর নাকি বেবি ও হবে। পুরো পূর্নতা ওদের বলুন। সবার কপালে এমন যদি হতো।
“কথাটা নাফিসের কানে যেতেই নাফিস জেরিনের হাত টেনে ধরলো। জেরিন তাকালো নাফিসের দিকে। নাফিস জেরিনকে টেনে এক সাইডের দেয়ালের সঙ্গে চেপে ধরে চোখে চোখ রেখে বললো ”
_চলো বিয়ে করে ফেলি। আমি তো রেডি। বিয়ের জন্য ও, বাচ্চার জন্য ও৷ শুধু রাজি হয়ে যাও একবার।
“জেরিন অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো। আমতাআমতা করে বললো ”
_বাবাকে জানাতে হবে তো।
_তো জানাও। আমি আর থাকতে পারবো না তোমাকে ছাড়া। তুমি কাছে থাকলে,,,।
“নাফিস থেমে গেলো। জেরিন বললো ”
_আমি কাছে থাকলে কি ?
“নাফিস জেরিনের চোখে চোখ রেখে বললো ”
_তুমি কাছে থাকলে নেশা লেগে যায়। কসম জেরিন, বিয়ের রাতেই বাচ্চা নিয়ে নিবো। আমার একটা পরিবার, একটা সংসারের বড্ড লোভ।
“নাফিসের এমন খোলামেলা কথায় জেরিন লজ্জা পেলো। ধাক্কা দিয়ে নাফিসকে সরিয়ে দিলো। আগে আগে যাচ্ছে। নাফিস পেছন পেছন যেতে যেতে বললো ”
_বিয়ের রাতেই নেবো কিন্তু।
_চুপ থাকুন।
_তোমার বাপকে জানাও। রাজি হলে ভালো। না হলে উঠিয়ে আনবো।
“জেরিন নাফিসকে পাগলের মতো ভালোবাসে। নাফিস জেরিনের খুশি থাকার কারন। জেরিনের রাগ বেশি। অথচ নাফিস কখনো অভিযোগ করে না। রাগ করলে রাগ ভাঙাবে। তবুও অভিযোগ করবে না। জেরিন ও তো চায় একটা সংসার। সায়রার মতো ছোট একটা সংসার। জেরিন ও ওমন সুখী হবে। নাফিসের সঙ্গে। নাফিস ও যে তাই চায়। প্রেম তার ভালোলাগে না। বিয়ে করবে। সংসার করবে।
নাফিস বাইকে উঠলো। পপছনে জেরিন উঠে বসলো। সব সময় জেরিন নাফিসের কাধে হাত রাখলে ও আজ পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো। নাফিস চোখ বড় বড় করে বললো ”
_ঝাটকা কেন দিচ্ছো জানেমান। সইতে পারবো না তো।
“জেরিন অবাক হয়ে বললো ”
_কি ঝাটকা দিলাম আবার ?
_বুঝতে হবে না কিসের ঝাটকা। পারলপ আরো একটু শক্ত করে ধরো।
“জেরিন ধরলো না। উল্টো পেছন থেকে নাফিসের চুলগুলো টেনে ধরলো।
জেরিনের বাসার গলির সামনে এসে নাফিস জেরিনকে নামিয়ে দিলো। জেরিন নামলো। রোজ হেটে চলে যায়। আজ নাফিসের সামনে গিয়ে দাড়ালো। নাফিস ভ্রু কুচকে চেয়ে বললো ”
_কি জানেমান। আজ কি আমাকে ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করছে না৷
“জেরিন চেয়ে রইলো। নাফিস ও চেয়ে রইলো। হুট করে জেরিন করলো কি নাফিসের গালে চুমু দিয়ে দিলো দৌড় নাফিস কিছু বুঝে উঠার আগেই। জেরিন দৌড়ে চলে গেলো। কিন্তু হা করে বসে রইলো নাফিস। সম্পর্কের পর প্রথমবার মেয়েটা ছুয়েছে তাকে। নাফিস গালে হাত দিয়ে মনে মনে গেয়ে উঠলো ”
“””আহা এ কি ছোঁয়া নিশি দিন”””
“”‘শিহরণে কাটে বেলা”””
চলবে,,,
(কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত)
#ম্যারেজ_প্রোপজাল
#অরিত্রা_অর্নি
#৪০
“হসপিটালে শুধু সায়রা আর তূর্য। সায়রা একটু পরপর ঘুমাচ্ছে। ব্যথার কারনে। তূর্য একবার পায়চারি করছে। আবার বসছে। কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। ডক্টর বলেছে। আপাতত সায়রাকে বাড়ি নিয়ে যেতে পাড়বে তবে রেগুলার চেকআপে রাখতে হবে।
তূর্য বসে আছে চেয়ারে । সায়রা ঘুমিয়ে আছে। রাত প্রায় বারোটার কাছাকাছি। তূর্য চেয়ে চেয়ে সায়রাকে দেখছে। এই মেয়েটা কবে যে তার এতো আপন হয়ে গেলো। এই মেয়েটার পেটে নাকি তূর্যর অংশ আছে। সে ছয় সপ্তাহের। সে ধিরে ধিরে বড় হচ্ছে। তূর্য ওখানে বসেই কেন যেনো মনে মনে দোয়া করলো। ওই বেড়ে ওঠা বাচ্চাটা যেনো মেয়ে হয়। তূর্য একটা মেয়ে চায়। মা হবে তার। তূর্য তো তার মা কে ডাকার সুযোগ এতো পায়নি। এবার যদি একটা মা তার হয়।
তূর্য আস্তে করে উঠে গিয়ে ঘুমন্ত সায়রার কপালে আলতো করে একখানা চুমু খেলো। এরপর বেডের এক সাইডে বসে রইলো ”
“সকালে সায়রার ঘুম ভাঙলো। ঘুম থেকে উঠেই দেখলো কেবিন কেমন হালকা অন্ধকার হয়ে আছে।
সায়রা দেখলো তূর্য তার বুকের মধ্যে এসে শুয়ে আছে। এইটুকু বেড। তূর্য সায়রার পেটের উপর হাত রেখে সায়রার বুকের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। সায়রা চেয়ে রইলো। কেমন ঘুমে বিভোর হয়ে আছে।
সায়রা চেয়ে রইলো ঘুমন্ত মুখের দিকে। সায়রার ইচ্ছে করলো তূর্যর মাথায় হাত বুলাতে। না জানি লোকটা তাকে পাওয়ার জন্য কতো জায়গায় দৌড়েছে। সায়রা আস্তে করে তূর্যর মাথায় হাত রাখলো। তূর্য নড়ে উঠলো। চোখ মুখ খিঁচে ধরলো। পরপর তাকালো। দেখলো সায়রা চেয়ে আছে। তূর্য লাফ দিয়ে উঠে গেলো। সে এখানে তার অসুস্থ বউয়ের বুকে ঘুমাচ্ছে। সায়রা চেয়ে আছে। তূর্য উঠেই সায়রার গালে হাত রেখে বললো ”
_উঠে গেছো কেনো বউ ? ব্যথা হচ্ছে হাতে ? নার্স ডাকবো ?
_এই পাগল লোক। সব কিছুতে এতো অস্থির হয়ে যান কেনো ? আমি ঠিক আছি।
“তূর্য এবার সায়রার দিকে এগিয়ে গিয়ে বসলো। গালে চুমু খেয়ে বললো ”
_সব কিছুতে অস্থির হইনা জান৷ শুধু তোমার জন্য অস্থির হই।
“সায়রা তূর্য দিকে চেয়ে রইলো। সবে ঘুম থেকে উঠেছে। চোখ মুখ ফুলে আছে। এমনিতেই সুন্দর দেখতে। এখন তো আরো কিউট লাগছে।
সায়রাকে চেয়ে থাকতে দেখে তূর্য ভ্রু নাচালো। বললো ”
_কি বউ। চোখ দিয়ে ই ভস্ম করে দেওয়ার মতলব করছো নাকি ?
“সায়রা চোখ ফিরিয়ে নিলো। তূর্য হেসে নেমে গেলো বেড থেকে। রাতে একবার নার্স এসে কিছু ঔষধ দিয়ে গেছে। তূর্য ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেশ হলো। এরপর বেরিয়ে এসে দেখলো সায়রা দাঁড়িয়ে আছে। তূর্য বললো ”
_বেড থেকে কেনো নেমেছো পাখি৷ মাথা ঘুরবে তো।
“সায়রা আমতাআমতা করে বললো ”
_আমার শরীর চিটমিট করছে। ফ্রেশ হবো।
“তূর্য এ কথা শুনে এগিয়ে এলো। সায়রাকে হাত ধরে নিয়ে ওয়াসরুমে দিয়ে এলো। সায়রার ইচ্ছে করছে সাওয়ার নিতে। কিন্তু মাথায় বেন্ডেজ। সায়রা কোনো রকমে হাত মুখ ধুয়ে বের হলো। দেখলে তূর্য ততক্ষণে নিচে থেকে গিয়ে খাবার নিয়ে এসেছে। সায়রা এসব দেখে অসহায় কন্ঠে বললো ”
_বাড়ি যাবো তূর্য। এখানে থেকে আরো অসুস্থ লাগছে।
_আর এক ঘন্টা পাখি। ডক্টর এসে দেখবে এরপর ই চলে যাবো।
“তূর্য এতো নরম করে কথা বলে। সায়রার সঙ্গে তূর্য কখনোই রেগে কথা বলেনি৷ সব সময় আহ্লাদ করে কথা বলবে। সায়রার মনে হয় ছোট বেলায় খোদা যা,সায়রাকে দেয়নি বড় বেকায় বোধহয় তা পুষিয়ে দিচ্ছে। এতো যত্ন করে এই লোকটা তার৷
তূর্য সায়রাকে এনে নিজের সামনে বসালো। খাবারে হাত দিতে দিলো নাচ।নিজেই খাইয়ে দিয়ে ঔষধ খাইয়ে দিলো। সায়রা শুধু চেয়ে থাকে। অবাক হয় ”
“জেরিন আর নাফিস ফোনে কথা বলছে। নাফিস বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। তূর্যর মতো বিশাল এক বিছানা তার। কিন্তু থাকতে হয় একা। এই দুঃখে নাফিসের জীবন শেষ। নাফিস ভারি অসহায় কন্ঠে বললো ”
_ওও জানেমান। জানেমানননন।
“জেরিন কথা বলছে না৷ কানের মধ্যে ফোন নিয়ে শুয়ে আছে চুপ করে। নাফিস আবার ডাকলো ”
_কটকটি। ওওওও কটকটি৷ কথা বলো না কেন ?
“জেরিন এবার ও চুপ। নাফিস ততক্ষণ ই ডাকবে যতক্ষন জেরিন চুপ করে থাকবে৷ এবার নাফিস বললো ”
_ওই মুসিবতের বেটি। কথা কও না কেন ?
“জেরিন এবার বললো ”
_খবরদার আরেকবার আমাকে মুসিবতের বেটি বললে বাড়ি গিয়ে খুন করে আসবে।
_কেন গো। খুন কেন করবা। তখনকার মতো একটা চুমু খাইলে কি মহা ভাতর অশুদ্ধ হবে৷
_ছিহ্ ইতর। আমার ভুল হয়েছে আপনাকে চুমু খাওয়া।
_ভুল তো হইছে ই। গালে কেউ চুমু দেয়,।দিবা ঠোঁটে।
“জেরিন এবার লজ্জায় পড়ে বললো ”
_এই রাখলাম আমি।
_এই নাহ্। শোনো আমার কথা।
_বলেন।
_বাসায় কবে বলবা ? প্লিজ বলে দাও। এতো বড় বিছানায় আমার আর ঘুমাতে ইচ্ছে করে না।
_ঘুমাতে ইচ্ছে না করলে বসে থাকুন।
_বসে ও থাকতে ও ইচ্ছে করে না।
“জেরিন এবার বললো ”
_তাহলে কি করতে ইচ্ছে করে?
_অন্য কিছু।
_অন্যকিছু আবার কি ?
“নাফিস একটু সময় নিলো। ঠোঁট কামড়ে হেসে বললো ”
_ওইযে, তুমি নিচে,,, আমি তোমার উপরে,,,,,, ।
“নাফিস কথাটা শেষ ও করতে পারলো না৷ জেরিন বলে উঠলো ”
_ছিহ্, অসভ্য ইতর লোক। এসব ঘুরে আপনার মাথায়। এ জন্য ই বিয়ে করতে চান।
_আরেহ্ মুসিবতের বেটি। বিয়া মানুষ করে কেন ? এরজন্য ই তো। বিয়া কইরা কি তোমাকে সাজায় রাখবো।
_আপনি দূরে জান। আপনাকে আমি বিয়ে করবো না।
_এমন করে বলে না জানেমান। আমার এতো স্টেমিনা আমি কোথায় খরচ করবো বলো।
“জেরিনের কান দিয়ে ধোঁয়া বপর হচ্ছে। এই লোক দেখি ঠোঁট কাটা। কিসব বলছে নিজে ও জানেনা। জেরিন বললো ”
_আপনার শক্তি সব বাসার কাজ আর অফিসের কাজ করেই ফুরিয়ে যাবে। অন্য কোথাও আর খরচ কতে হবে না।
“নাফিস হাসলো। মেয়েটার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এবার একটু বলতেই হবে ”
_আমার বয়স সাতাশ জানেমান। তাগড়া যুবক এখনো। সারাদিন অফিস আর ঘরের কাজ করার পর ও। রাতে তোমায় চিৎকার করানোর মতো শক্তি আমার আছে। শো নো টেনশন ওকে। আদরে কোনো কারচুপি করবো না আমি।
“জেরিন থমকে গেলো। বুকটা কাপছে তার। নাফিস সচারাচর এতো খোলামেলা কথা কখনোই বলে না। সব সময় দুষ্টি করে। আজ এমন বলায় জরিন অবাক হয়েছে। সাথে ভয় ও হচ্ছে। এই লোক না জানি বিয়ের পর তাকে মেরেই ফেলে।
জেরিন চুপ রইলো। নাফিস আর ওসব বললো না। আগেই ভয় দেখালে পরে কাছে যেতপ না ও দিতে পারে। নাফিস সেটা চায় না। তাই কথা ঘুরিয়ে আবার গল্প করতে লাগলো ”
“সায়রাকে ডক্টরর দেখে হসপিটাল থেকে রিলিজ দিলো। কিন্তু তূর্যর তাতে শান্তি হলো না। সে তার বেবির খবর নিবে। গাইনী ডক্টর দেখাবে। সায়রা বললো ”
_আমি ডক্টর দেখিয়ে ছিলাম তূর্য।
“তূর্য থেমে গেলো। বললো ”
_তখন আমি ছিলাম না। এখন চলো৷
“তূর্য সায়রাকে টেনেই নিয়ে গেলো। ডক্টর এর কাছে।
ডক্টর সায়রাকে দেখলো। সব ঠিকঠাক আছে৷ কিছু ঔষধ লিখে দিলো। এরপর তূর্যর শান্তি হলো। সায়রার দিকে চেয়ে বললো ”
_বেবি কবে বড় হবে বউ ?
_মাএ দেড় মাস। আরো অনেক সময় বাকি।
“তূর্য সায়রাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলো। দুইদিন পর। সায়রার মাথার বেন্ডেজ ডক্টর দিয়ে খুলেনি। এখনো বেন্ডেজ। সায়রা বাড়িতে ঢুকতেই দেখলো সামর্থ্য বেগম বসে আছে। সায়রাকে দেখেই তিনি হাত বাড়িয়ে দিলেন। সায়রা হেটে এসে সামর্থ্য বেগম এর পাশে বসলো। সামর্থ্য বেগম সায়রার দিকে চেয়ে বললো ”
_ঠিক আছিস তো ? কি হয়ে গেলো। আর একা কোথাও যাবি না। এখন থেকে বাসায় ই থাকবি। এই আমি বলে দিলাম।
“তূর্য পেছনে দাড়িয়ে বললো ”
_না চাইলে ও এখন থেকে তোমার নাত বউকে বাসায় ই থাকতে হবে বুড়ি।
“পরপর তূর্য সামর্থ্য বেগম এর আরেক পাশে এসে বসলো। সামর্থ্য বেগম তূর্যর দিকে তাকালো। তূর্য বললো ”
_তোমার নাত বউ তো বিরাট কান্ড ঘটিয়ে বসেছে দাদী।
“সামর্থ্য বেগম বললো ”
_কি ঘটিয়েছে ?
_তোমাকে বড়মা বানানোর পদক্ষেপ নিয়ে ফেলেছে।
কয়দিন পর তোমার চুল ছেড়ার জন্য ছোট্ট একটা পুতুল আসছে।
“কথাটা বলেই তূর্য হাসলো। মুখে তার খুশির ঝলক। সামর্থ্য বেগম হা করে চেয়ে রইলো। যেনো এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। মনে মনে খুব চেয়েছে। সামর্থ্য বেগম সায়রার দিকে চেয়ে সায়রার দু গালে হাত রেখে বললো ”
_কিরে। সত্যি বলছে ?
“সায়রা হ্যা সূচক মাথা নাড়লো। সামর্থ্য বেগমের খুশি দেখে কে। হাতে তার এক জোড়া সোনার বালা ছিলো। যেটা তিনি সব সময় পড়েন। আজ খুচি হয়ে সেই সোনার বালা জোড়া খুলে সায়রার এক হাতেই দুটো পড়িয়ে দিলো। আরেক হাতে বেন্ডেজ। ওই হাতে সামর্থ্য বেগম চুমু খেলেন।চোখে তার পানি টলটল করছে। সায়রাকে বললো ”
_এ এভাবেই থাকিস সারাজীবন। তূর্যর সুখ হয়ে।
“সায়রা সামর্থ্য বেগমকে জড়িয়ে ধরলেন। তূর্য চেয়ে রইলো। তূর্যর চোখে বোধহয় এর থেকে সুন্দর দৃশ্য আর দুটো নেই। সব থেকে প্রিয় দুইজন মানুষ যখন একসাথে এভাবে থাকে তখন বোধহয় পুরুষ নিজেকে সব থেকে বেশি সুখী মনে করে।
সামর্থ্য বেগম এর সাথে আরো কিছু সময় বসে থেকে ওরা উপরে এলো।
সায়রা রুমে ঢুকেই যেনো শান্তি পেলো। এই রুমটা তার আপন হয়ে উঠেছে। বিছানায় গিয়ে বসলো সায়রা। তূর্য সব কিছু ঠিকঠাক করে রেখে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালো। সায়রা বিছানায় বসেই চেয়ে আছে। তূর্য নিজের গায়ের শার্ট টা খুলে ফেললো।
সায়রা বুঝলো তূর্য এখন সাওয়ারে যাবে। তাই বললো ”
_আমি কবে সাওয়ার নিবো। আমার এভাবে ভালো লাগছে না তূর্য ।
“তূর্য শার্ট টা রেখে ঘুরে তাকালো সায়রার দিকে। ধিরে ধিরে এগিয়ে এলো বিছানার দিকে। সায়রা কিছু বুঝে উঠার আগেই সায়রাকে পাজা কোলে তুলে নিলো। সায়রার দিকে চেয়ে বললো ”
_এখনি সাওয়ার নিবে জান। আর খারাপ লাগবে না৷
“তূর্য সায়রাকে নিয়ে ওয়াসরুমের দিকে এগিয়ে গেলো । সায়রা ছটফট করতে লাগলো। এই লোক করতে চায়ছে কি ”
_এই না নামিয়ে দিন। আপনি আগে সাওয়ার নিয়ে আসুন প্লিজ ।
_নো। এক সাথে ই সাওয়ার নিবো।
_নাহ্।
_চুপ। নিজের হাতে আজ গোসল করাবো তোমায় জান।
“সায়রা ছটফট করলো। নেমে যেতে চাইলো। কিন্তু তূর্য যেতে দিলো না। ওয়াসরুমে নিয়ে সায়রাকে নামিয়ে দিলো। সায়রা এই সুযোগে চলে আসতে নিলে তূর্য বাহু চেপে ধরে দাড় করিয়ে দিলো। বললো ”
_কোথাও যাবে না।
“সায়রা অসহায় কন্ঠে বললো ”
_এভাবে সাওয়ার নিবো না আমি। লজ্জা লাগে।
“তূর্য সায়রার থুতনিতে হাত রেখে সায়রা মুখখানা তুলে ধরে চোখের দিকে চেয়ে বললো ”
_তোমার শরীরে এমন কোন জায়গায় অবশিষ্ট রয়ে গেছে যা আমার দেখা হয়নি। যেখানে আমার ছোঁয়া লাগেনি। চলো আজ দেখবো।
“সায়রা কিছু বলার আগেই তূর্য সায়রাকে টুলের উপর বসিয়ে দিলো। সায়রা চুপ করে বসে রইলো। এই পাগলের থেকে এখন আর রক্ষে নেই। তূর্য ধিরে ধিরে সায়রার মাথায়র বেন্ডেজ টা খুলতে লাগল। এমনভাবে খুললো যেনো সায়রা একটু ও ব্যথা না পায়। বেন্ডেজ টা খুলেই সায়রার গায়ে থেকে ওরনাটা ফেলে দিলো। সায়রা সঙ্গে সঙ্গে চোখ জোড়া বন্ধ করে নিলো। পরপর তূর্য হাত দিলো সায়রার জামার চেইন এ। সায়রার এবার কাঁপা-কাঁপি অবস্থা। কিন্তু তূর্য তা উপেক্ষা করলো। বউ তার। সব হক তার আছে। সায়রা চোখ বন্ধ করে বসে রইলো। তাকানোর সাহস হচ্ছে না। তূর্য সায়রার জামাটা খুলে রাখলো। সায়রা কাঁপছে। তূর্য ঝর্না ছাড়লো না। একটা মগ নিয়ে ধিরে ধিরে পানি ঢালতে লাগো। মাথায় পানি ঢালা যাবে না। তাই শুধু শরীরে পানি ঢাললো। বাম হাতের কব্জি ও ভেজালো না।
সায়রা চোখ খুললো না। তূর্য যা যা করছে তাতে সায়রার লজ্জায় মাটতি মিশে যাচ্ছে। গোসল শেষে সায়রাকে দাড় করালো তূর্য। সায়রার দিকে চেয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসলো। মেয়েটা এতো লজ্জা কই পায় কে জানে।
সায়রা এবার পিটপিট করে তাকালো। দেখলো তূর্য তোয়ালে নিয়ে এসে সায়রার পেছনে দাড়ালো। চুগুলো মুছে উচু করে বেঁধে দিলো তোয়ালে দিয়ে পেচিয়ে। এরপর সায়রার সামনে এসে দাড়িয়ে আরেকটা তোয়ালে নিয়ে সায়রার শরীরে পেচিয়ে দিলো। সায়রা শুধু দেখলো তূর্যকে। সায়রা তূর্যর সামনে এসে দাড়িয়ে বললো ”
_রুমে গিয়ে ওয়েট করো জান। আমি সাওয়ার নিয়ে এসে শাড়ি পড়িয়ে দিবো হু।
“সায়রা উওরে বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নাড়লো। এরপর বের হলো। বিছানায় গিয়ে চুপ করে বসে রইলো। লজ্জার আর সীমা রইলো না।
তূর্য একটু পড়েই বেরিয়ে এলো। সে ও সাওয়ার নিয়ে বের হয়েছে। দেখলো সায়রা পুতুলের মতো বসে আছে। তূর্য আগে গিয়ে ওয়ারড্রপ থেকে সায়রার জন্য শাড়ি বের করলো। সায়রার এক হাত নাড়াতে পারছে না। তূর্য সায়রাকে সবটা ই পড়িয়ে দিলো। যদি সে শাড়ি পড়ানো তে কাচা তবুও ইউটিউব দেখে কিছুটা শিখে পড়ালো। শেষে কুচি দিতে গিয়ে এলোমেলো হয়ে গেলো। সায়রা হাসছে। তূর্য পেটের কাছে কুঁচি টা গুজতে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসলো। কুচি গুজে দিয়ে পেটের দিকে চেয়ে হাত বাড়ালো। সায়রা চেয়ে রইলো। তূর্য বললো ”
_এখানে ই আছে আমাদের বেবি তাই না।
“সায়রা আস্তে করে বললো ”
_হু।
“তূর্য করলো কি সায়রার পেটে গভীর ভাবে এক চুমু খেলো। সায়রা অনুভব করলো। তূর্য হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো পেটের মাঝে। তার সন্তান। তূর্য আরো একবার চুমু খেয়ে বললো ”
_প্রিন্সেস, ক্যান ইউ হিয়ার মি। পাপা ওয়েটিং ফর ইউ। প্লিজ তাড়াতাড়ি বড় হয়ে পাপার কোলে চলে আসো।
“সায়রা কথাগুলো শুনলো। তূর্য কেমন কনফিডেন্স নিয়ে বলছে প্রিন্সেস। তূর্য কি মেয়ে চায় তাহলে। সায়রা বললো ”
_প্রিন্সেস বলছেন যে। ছেলে ও তো হতে পারে।
“তূর্য এবার উঠে দাঁড়ালো। সায়রার দিকে চেয়ে বললো ”
_উহু। প্রিন্সেস ই হবে। দেখে নিও।
_আপনার মেয়ে চাই বুঝি ?
_আমার একটা মা চাই। মেয়েরা মায়ের মতো হয়৷ তাই আমার মেয়েই চাই।
_যদি ছেলে হয় ?
_তাহলে আবার বেবি নিবো৷ তখন মেয়ে হবে৷ তখন ও না হলে আবার,,,।
_ইস, বছর বছর শুধু বেবি ই নিবো নাকি ?
“তূর্য সামান্য হেসে বললো ”
_যতোগুলো তুমি নিতে পারো। ততোগুলো ও ই নিবো। কোনো থামা থামি নেই।
“সায়রা কিছু বললো না। তবে মনে মনে দোয়া করলো যেনো একটা মেয়েই তার হয়,।এই লোকের সখ যেনো পূরন হয় ।
এরপর তূর্য সায়রাকে পুনরায় মাথায় বেন্ডেজ করে দিলো। চুমকিকে ডেকে খাবার দিয়ে যেতে বললো ”
_আরেহ্।আমি নিচে যেয়ে খেতে পারবো তো।
_কোনো দরকার নেই বেইবি। এই অবস্থায় বারবার নিচে নামবে না।
_কেন ? আমি কি পুঙ্গ ?
“তূর্য গায়ে টি শার্ট জড়াতে জড়াতে বললো ”
_নাহ্। তবে এখন তুমি বারবার সিড়ি দিয়ে উঠানামা করলে। যদি কিছু হয়। দরকার নেই।
“সায়রা চুপ করে বসে রইলো। চুমকি এসে দুজনেরই খাবার দিয়ে গেলো। তূর্য নিজে ও খেলো সায়রাকে ও খাইয়ে দিলো। এরপর সব কিছু গুছিয়ে রেখে দরজা জানালা এমনকি বারান্দার থাই গ্লাসটা ও বন্ধ করে দিয়ে পর্দা টেনে দিলো। ঘর এখন প্রায় অন্ধকার। সায়রা বিছানায় চুপ করে বসে আছে৷ তূর্য এসে সায়রার পাশে বসে সায়রাকে বুকে টেনে নিলো। পরপর সায়রাকে বুকে নিয়ে ই শুয়ে পড়লো। সায়রা কিছু বুঝতে পারছে না। তূর্য সায়রাকে জড়িয়ে ধরলো। গলায় মুখ গুজলো। সায়রা বুঝলো না তূর্যর কি হয়েছে। সায়রা বললো ”
_কি হয়েছে আপনার ? এমন করছেন কেনো ?
“তূর্য কিছু বলছে না। সায়রার ঘারে আরো গভীরভাবে স্পর্শ করে কেমন মাতানো কন্ঠে বলে উঠলো ”
_কিছু হয়নি জান। ঘুমাও তুমি একটু। শরীর দূর্বল তো তোমার।
_এতো যত্ন করছেন। শরীর কিভাবে দূর্বল হয় হু৷ শুধু হাতে একটু ব্যথা।
“তূর্য এবার সায়রার গলায় থেকে মুখ তুলে বললো ”
_হাতে কয়টা বারি দিয়েছিলো ?
_তিনটা।
_আমি পাঁচটা দিয়েছি। দরকার হলে আরো দেবো।
“সায়রা হা করে চেয়ে রইলো। বললো ”
_আপনি রুহানির হাতে মেরেছেন ? ও কোথায় এখন?
_শ্বশুর বাড়ি। সাথে ওই অনিক ও।
“সায়রা চেয়ে রইলো। অনিকের বিষয় নিয়ে তূর্য সায়রাকে ভুল বুঝবে না তো। সায়রা বললো ”
_তূর্য,, আমি ,, ।
“সায়রা কথা শেষ করার আগেই তূর্য সায়রার ঠোঁটে চুমু খেয়ে বসলো। পরপর সায়রার গলায় মুখ গুজলো আবার। বললো ”
_চুপ, ঘুমাও এখন। রেস্ট দরকার তোমার।
“তূর্য সায়রাকে নিয়ে শুয়ে আছে। তবে তূর্য স্থির নেই৷ একটু পরপর গলায় চুমু দিচ্ছে। ঠোঁট দিয়ে গভীরভাবে স্পর্শ করছে। সায়রা এতোটা সময় চুপ ছিলো। লোকটা এমন করছে কেন? ভালোভাবে একটু আদর ও করছে না। নিজোও জ্বলছে সায়রাকে ও জ্বালাচ্ছে। সায়রা বললো ”
_কি হয়েছে আপনার ?
“তূর্য কেমন নেশাদায়ক কন্ঠে বলে উঠলো ”
_তোমাকে যে অবস্থায় দেখেছি বউ। আমার না আদর করতে ইচ্ছে করছে। কনট্রোল করতে পারছি না নিজেকে। কসম, তুমি যদি অসুস্থ না থাকতে। আজ এই বিছানায় পিষে ফেলতাম আমি তোমাকে।
“সায়রার বুক কেঁপে উঠলো তূর্যর কথায়। ঠিকই তো আছে। তূর্য এমনিই সায়রাকে একদিন কাছে না পেয়ে থাকতে পারেনা। একবার অসুস্থ হয়েছিলো ওই পাঁচদিন তূর্য পাগল পাগল হয়ে উঠেছিলো। এখন তো এমন হওয়ার ই কথা। তবুও লোকটা সায়রার অসুস্থতার কথা ভেবে নিজেকে কনট্রোল করার চেষ্টা করছে। সায়রা তো এতোটাও অসুস্থ নয় যে স্বামীকে কষ্ট পেতে দিবে। সায়রা তূর্যকে এক হাজে জড়িয়ে ধরে তূর্যর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো ”
_আদর চাই তূর্য ।
“তূর্য ওইভাবেই শুয়ে থেকে বললো ”
_উহু, তুমি সিক জান। ঘুমাও একটু।
“কিন্তু সায়রা নাছোড়বান্দা। তূর্যর না সে শুনবে কেন। তূর্য তো কখনো তার না শুনে না। সায়রা বললো ”
_আমার আদর চাই।
“তূর্য কোনো কথা বললো না। নড়লো ও না। সায়রা তূর্যকে উইক করার জন্য একটু কৌশল খাটালো। ইচ্ছে করে তূর্যর বুকের উপর হাত দিয়ে ধিরে ধিরে নিচে নামতে লাগলো আর বলতে লাগলো ”
_আদর করুন। আদর চাই। তূর্য। আপনার বউয়ের আদর চাই। গভীর স্পর্শ চাই।
“তূর্য গলায় মুখ গুজেই আছে। কিন্তু সায়রার হাত নিচে নামছে। টি শার্ট এর ভেতর দিয়ে। হাতটা যখন বিপদ সীমার কাছাকাছি তখন তূর্য খপ করে সায়রার হাতটা চেপে ধরলো। গলা থেকে মুখ তুলে বললো ”
_আর নিচে নামলে আমি খুন হয়ে যাবো বউ। অলরেডি হয়ে গেছি।
_তাহলে আদর দিন ।
“তূর্য গভীরভাবে সায়রার চোখের দিকে চেয়ে বললো ”
_সইতে পারবে না জাপাখি। একটু সুস্থ হও আগে। অনেক আদর করবো।
_আমি সুস্থ ই ।
“কথাটা বলে সায়রা তূর্যর গালে চুমু খেলো। তূর্য সয্য করে যাচ্ছে শুধু। সায়রা আবার চুমু খেলো। এবার তূর্য সায়রাকে চেপে ধরলো। সায়রার উপর ভার না দিয়ে ঝুকে গেলো সায়রার উপর। সায়রা তূর্যর চোখের দিকে চেয়ে আছে। তূর্য ধিরে ধিরে সায়রার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে গেলো। ঠোঁটে ঠোঁট জোড়া আঁকড়ে ধরার আগে বললো ”
_কনট্রোল হারিয়ে বসেছি। বেশি ব্যথা লাগলে চিৎকার করো না বউ। এখন কিন্তু দিনের বেলা।
“কথাটা বলেই সায়রার ঠোঁট জোড়া আঁকড়ে ধরলো। তূর্য কতোটা অধৈর্য হয়ে ছিলো তা তূর্যর চুমুর গভীরতা ই বলে দিচ্ছে। তূর্য চাইছে সায়রা ব্যথা না পাক। তাই একটু ডিস্টেন্স রেখে চুমু খাচ্ছে। সায়রা নিজেই সইতে না পেরে আঁকড়ে ধরলো তূর্যকে। তূর্য যেনো ইশারা পেয়ে বসলো আরো একটু পাগলামি করার। তূর্য পাগল করে দেয়,সায়রাকে। তূর্য ঠোঁট ছেড়ে সায়রার গলায় নেমে এলো। হাত চলে গেলো শাড়ির আচলে। সেটা টান দিয়ে সরিয়ে ফেললো। পরপর হাত চলে গেলো সায়রার নমনীয় বক্ষে । তূর্য প্রেস করতে লাগলো। সায়রা মৃদু শব্দ করে উঠলো। সেই শব্দ যেনো তূর্যকে আরো পাগল করে দিচ্ছে। সে সায়রার মুখে এমন শব্দ আরো শুনতে চায়। তূর্য হিসহিসিয়ে বলে উঠে ”
_মেক সাম নয়েজ বেইবি। তোমার এই মৃদু চিৎকার আমায় উন্মাদ করে দেয়। প্লিজ বেইবি।
“তূর্য পাগল হয়ে উঠে সায়রাকে কাছে পেলে। দুনিয়া ভুলে বসে। তূর্য এতোটাই অধৈর্য হয়ে গেল। এবার মুখখানা নামিয়ে আনলো বুকের মাঝে। সায়রা জানে বোধহয় এরপর কি হবে। তাই আর্তনাদ করে বলে উঠে ”
_প্লিজ এটা করবেন না। মরে যাই আমি। তূর্য । প্লিজ ।
“কিন্তু তূর্য কেন সায়রার কথা শুনবে। তার তো চাই সায়রাকে। সায়রাকে সব সইতে হবে। সব। তূর্য জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বললো”
_ইফ আই ডোন্ট হ্যাভ দিস, আই’ল ডাই। লেট মি টেস্ট ইট, বেবি।
_নাহ্ তূর্য । প্লিজ এভাবে না।
“তূর্য শুনলো না৷ উল্টো বললো ”
_ইফ ইউ রেজিস্ট, আই’ল বাইট ইউ।
“তূর্যকে বাঁধা দেওয়া গেলো না। সায়রা ই সয়ে নিলো। তূর্যর এই ব্যথাতূর আদর। তূর্য নিজের মতো করে ছুয়ে দিতে লাগলো তার মায়াবতীকে। সায়রা সত্যি ই সইতে পারে না তূর্যকে। তূর্য এমন সময় বারবার বলে কোনো কষ্ট দেবে না। ব্যথা দেবে না। কিন্তু তূর্য তা কখনোই করে না। আজ ও করলো না। তবে যতোটুকু সতর্ক থাকা যায় তূর্য তার মায়াবতীর কথা আর বেবির কথা ভেবে থেকেছে। কিন্তু একেবারে ছাড় দেওয়া কি আদৌও সম্ভব ”
” তূর্য সায়রাকে নিজের বুকে নিয়ে শুয়ে আছে। সায়রা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। তূর্য কিছু বলছে না। ঘড়িতে সময় দেখলো সন্ধা সাড়ে ছয়টা। সায়রা তূর্যর বুকের ুপর শুয়ে থেকেও শান্তি পাচ্ছে না। হুট করে তূর্যর বুকে কামড় বসিয়ে দিলো। তূর্য দাঁতে দাঁত চেপে সয্য করলো। কিছু বললো না। সায়রার তাতে ও শান্তি হলো না। কিল ঘুষি মারতে লাগলো। তূর্য এবার সায়রার হাতটা চেপে ধরলো। আদরের কন্ঠে বললো ”
_কি হয়েছে আমার বউয়ের। এমন কেন করছো জান ?
“সায়রা আরো রেগে গেলো। সায়রার অবস্থা খারাপ করে দিয়ে এখন ঢং দেখাচ্ছে ”
_সরুন আপনি। ধরবেন না আমাকে। কি করেছেন কি আপনি ।
_আমি কি করেছি বউ। আমি তো তোমায় আদর করলাম।
_এটা আদর ? আহত করে দিয়েছেন আপনি আমায়। কি বলেছিলেন আপনি তখন।
_কি বলেছিলাম ?
_একটু ও ব্যথা দিবেন না। একটু ও কষ্ট দেবেন না। এখন কি করেছেন। কামড়ে,,,, ।
“তূর্য অসহায় দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো। সে মানে সে একটু ডেস্পারেট। কিন্তু বউয়ের মুখে এতো অভিযোগ। তূর্য সায়রাকে জড়িয়ে ধরতে গেলে সায়রা কিছুটা দূরে সরে গেলো। তূর্য বললো ”
_এমন করে না জান। আমি তো বলেছিলাম তুমি অসুস্থ। সইতে পারবে না। শুনোনি আমার কথা।
“সায়রা এবার রেগে গেলো। তূর্যর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে অন্য পাশে ফিরে শুয়ে পড়লো
বললো ”
_চুপ, অসভ্য লোক। আরেকটা কথা বললে একেবারে মুখ ভেঙে দেবো।
“তূর্য পড়েছে মগা বিপদে। আদর করলে ও বউ রাগ করে। আদর না করলে নিজে টিকতে পারে না৷ তূর্য সায়রার দিকে এগিয়ে গিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে। গানের কাছে মুখ নিয়ে গুনগুন করে গাইতে লাগলো ”
“” ওওও বউ কেনো আমার কাছে আসো না”””
“”ওও বউ তুমি আমায় কি ভালোবাসো না ওও বউ””
“সায়রা আরেকপাশ ফিরে শুয়ে থেকেই উওর দিলো ”
_না বাসি না। আপনার মতো এমন জল্লাদ লোককে একটু ও বাসি না ”
“তূর্য ঠোঁট উল্টে ফের গুনগুন করলো ”
“”””” তুমি কেনো এতো বোকা সাজো””
“”” আমায় একটু বুঝো। শুনো না “”
“”””” i love you””””
“”” ওওও বউ “””””
চলবে,,,