#যেখানে_মন_হারায়
#হামিদা_আক্তার_ইভা_Hayat
২.
রাতের বেলা ডাইনিং টেবিলে বসে আছেন সবাই।নাসরিন বেগম ও ইলমা বেগম খাবার সার্ভ করছেন।নরুল শেখ খাওয়া শুরু করার আগে ইলমা বেগমকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
“ভাবি ভাই তো পরশু’ই বাংলাদেশে ফিরে আসছেন।আপনারা কী এই সপ্তায়’ই গ্রামে যাচ্ছেন?”
ইলমা বেগম মাথা নাড়িয়ে বলেন,
“না ভাই,এই সপ্তায় গিয়ে কী করব বলো?ভেবেছি একেবারে সামনে মাসেই যাব নাহারের বিয়েতে।”
“তাহলে তো ভালোই।”
মুরসালীন নিজের মতো খাবার খাচ্ছে।আর ঠিক সামনেই রুহা ইলিশ মাছ ভাতের প্লেটে নিয়ে নাক কুঁচকে কাটা বাছতে ব্যস্ত।নরুল শেখের ১২ বছরের ছোটো ছেলে আফনান।সে আড়চোখে রুহার মাছ বাছার স্টাইল দেখে শুধায়,
“মাছ যখন খাও না তাহলে নিয়েছ কেন?একটু পরেই তো ঘরে গিয়ে বমি করে সব বের করে দিবে।”
বলতে বলতেই রুহা মুখ চেপে ধরে দৌঁড় লাগালো নিচ তলার কমন ওয়াশরুমে।নরুল শেখ চোখ পাকিয়ে ছোটো ছেলের দিকে তাকিয়ে ধমকে উঠলেন,
“বলেছি না খাওয়ার সময় এসব নিয়ে কথা বলবি না?”
আফনান ভয়ে শিটিয়ে গেল।মুরসালীন খাওয়া রেখে ঘাড় ঘুরিয়ে ওয়াশরুমের দিকে তাকিয়ে রইলো।ইলমা বেগম সব রেখে ছুটলেন মেয়ের পেছনে।মেয়েটা চিংড়ি মাছ ছাড়া কোনো মাছ’ই খায় না।মাছ খেলে নাকি তার বমি বমি লাগে।নাবিল খাওয়া রেখে মায়ের পিছু গেল।নরুল শেখ উঠতে গেলেই নাসরিন বেগম চোখ রাঙিয়ে বলেন,
“সবাই কী নাটক শুরু করেছ?ওরা দুজন গেছে তো নাকি?”
নরুল শেখ আর উঠলেন না।মুরসালীন শুকনো চোখে তাকিয়ে রইল সেদিকে।ইলমা বেগম রান্না ঘরে লেবু পানি বানাতে গেছেন।নাবিল বোনের কাঁধ ধরে রেখেছে।রুহা হাত মুখ ধুয়ে বের হলো ভাইয়ের সাথে।সোফায় বসতেই ইলমা বেগম গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বললেন,
“কত করে বললাম মাছ খাস না তবুও কেন নিলি?”
“আহ মা থামো তুমি।রুহা পানি টুকু খেয়ে নে।আর মা তুমি সবজি যা রান্না করেছ ওগুলো দিয়েই অল্প ভাত নিয়ে এসো।”
নাবিলের কথামতো ইলমা বেগম অন্য এক প্লেটে খাবার নিয়ে এলেন।রুহা ভাইকে মানা করলো সে খাবার খাবে না তবুও নাবিল জোর করে ভাত মুখের সামনে ধরলো।রুহাকে খাবার খাইয়ে দিল নাবিল।আজ প্রথম নয়,মাঝে মধ্যেই দুই ভাইবোন একই প্লেটে খাবার খায়।ইলমা বেগম শাশুড়ির ঘর থেকে নারকেল তেল এনে একটু রুহার মাথায় দিয়ে দিলেন।বললেন,
“তোর জ্বালায় একটু শান্তিতে থাকতেও পারি না।এটা খাবি না ওটা খাবি তাহলে খাবি কী?”
নাবিল মাকে থামিয়ে দিয়ে শুধোয়,
“তুমি বেশি ঘ্যানঘ্যান করো না।ও যা খায় তাই রান্না করবে।”
নাবিল রুহাকে নিয়ে উপরে চলে গেল।ইলমা বেগম আড়চোখে ডাইনিং টেবিলের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।রাত কেটে গেলো কোনোরকম।
পরের দিন সকাল ১০টা নাগাদ ঘুম ভাঙল রুহার।আজ আর কলেজ যাওয়া হলো না।সে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে এলো।ভাই,চাচা,মুরসালীন ভাই কিংবা আফনান কেও নেই।মুরসালীন গেছে কলেজে,আফনান স্কুলে,ভাই আর চাচা গেছেন অফিসে।রুহা মায়ের ঘরে গেলো।ইলমা বেগম বিছানায় বসে আছেন পা মেলে।রুহা মায়ের পায়ের কাছে বসে বলে,
“পায়ে ব্যথা বেড়েছে মা?”
“একটু বেশি না।রুহা রান্না ঘরে কিছু থালাবাসন আছে,ওগুলো একটু ধুয়ে রাখবি মা?”
রুহা উঠে দাঁড়াল।মুচকি হেসে বলল,
“এখনই যাচ্ছি,তার আগে বলো তুমি খেয়েছ?”
“খেয়েছি,তুই খেয়ে বাসন গুলো ধুয়ে আমার ঘরে আয়।”
রুহা মায়ের কথা মতো খাবার খেয়ে থালাবাসন সব ধুয়ে রাখলো।চাচি কী দেখেননি মায়ের এই অবস্থা?তবুও কেন এসব এভাবে রেখে গেছে?রুহা রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে চাচার ঘরের দিকে তাকাল।দীর্ঘশ্বাস ফেলে মায়ের ঘরের দিকে হাঁটা ধরলো।ইলমা বেগমের সাথে গত পরশু নাসরিন বেগমের কথা কাটাকাটি হয়েছিল একটু।সেখান থেকেই নাসরিন বেগম ফুলে আছেন।হয়তো ইলমা বেগম যতক্ষন না ক্ষমা চাইছেন ততক্ষণে তার রাগ ভাঙবে না।
…
রোদ পড়ে এসেছে একটু একটু করে। মুরসালীন কলেজ থেকে ফিরেছে—ঘামে ভেজা শার্ট, কাঁধে ব্যাগ ঝোলানো।গোসল সেরে সোজা বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। আর ওখানেই কানে হেডফোন গুঁজে, বইয়ের উপর চায়ের কাপ রেখে চেয়ারে পা তুলে বসে রুহা আইসক্রিম খাচ্ছে আর হালকা গুনগুন করছে। হঠাৎ মুরসালীন থেমে গেল।
মুরসালীন গম্ভীর স্বরে বলে,
“এই তো! আমার চেয়ারে বসে আমার রোদ খাওয়া বারান্দায় আইসক্রিম খাওয়া হচ্ছে? তুই কি মনে করিস এটা তোর বাপের বাড়ি?
রুহা হেডফোন খুলে, ঠোঁটে দুষ্টু হাসি টেনে বলে,
“উহু জানু, তুই তো জানিস’ই, আমি দুই বাড়িরই মালিক। মায়ের দিকেও এই বাড়ি, বাবার দিকেও এই বাড়ি। তুই বরং আগে ফ্রেশ হয়ে আয়,গন্ধে তো দাঁড়ানো যাচ্ছে না!
মুরসালীন চোখ ছোট করে, ঠান্ডা গলায় বলে,
“তুই আমার সাথে তুই তুই করিস কেন?আর জানু কাকে বলছিস?আদব কই তোর?”
রুহা ভুরু তুলে, অবাক মুখে বলে,
“আপনিই তো তুই তুই করেন! আমিও ভাবলাম, প্রেম সমান প্রেম—তুই সমান তুই!আর রইল জানু?সে তো আজীবন জানু বলেই ডাকতে হবে।”
একটা বড়ো চামচ আইসক্রিম মুখে তুলে বলল সে।মুরসালীন দাঁত চেপে বলল,
“তুই কি সারাদিন পড়াশোনা না করে এইসব নাটক করিস? কলেজে কি তোকে এসব শেখানো হয়?”
রুহা নাক চেপে বিরক্ত হয়ে বলল,
“আপনার মুখ দেখে মনে হচ্ছে, কলেজে আপনি শুধু শাসন পড়ান। একটু হাসতে শেখেন, আপনি তো গাছের মতো কাঠ!”
মুরসালীন ঠান্ডা গলায়, চোখ সরিয়ে বলে,
“আমি যদি কাঠ হই, তুই বিশুদ্ধ পোকা। সবসময় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কেটেকুটে খাস।”
রুহা ঠোঁট ফোলায়,
“আপনি আমারে পোকা বললেন? আমি আম্মুকে বলে দিব!”
মুরসালীন মুচকি হাসে, পেছন ফিরে হাঁটে তারপর বলে,
“বল আম্মুকে। আর বলিস, আর বলিস তুই একদিন আমার মাথা খেয়ে ফেলবি।”
রুহা চুপচাপ বসে, তারপর ফিসফিস করে বলে,
“আপনার মাথা খাওয়ার প্ল্যান তো অনেক আগেই করেছি, আপনি বুঝেননি শুধু।”
…
দেলোয়ার শেখের ছোটো একটা পরিবার।দুই ছেলের ছোটো ছোটো সংসার নিয়েই জোড়া লাগিয়েছিলেন এই শেখ বাড়ি।কামরুল শেখ হচ্ছেন তার বড়ো ছেলে এবং ছোটো ছেলে নরুল শেখ।কিন্তু দুই ছেলের আগেও তার একজন মেয়ে আছেন যার নাম দোয়েল।আগের ঘরের সন্তান সে,তবুও দুই ভাইকে ভীষণ ভালোবাসেন।কামরুল শেখের দুই মেয়ে আর একটা ছেলে নিয়ে ছোটো সংসার আর অন্যদিকে নরুল শেখের দুজন ছেলে সন্তান।মুরসালীনের ছোটো ভাই আফনান।রুহানির বড়ো বোনের নাম রিফা শেখ।তার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৬বছর হয়েছে।বর্তমানে শেখ বাড়িতে রিফা,দোয়েল,কামরুল শেখ এবং দেলোয়ার শেখ বাদে সবাই থাকেন।কামরুল শেখ বিদেশে জব করছেন ভালো কোম্পানিতে,রিফা বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি ঠিক দোয়েলের মতোই আর অন্যদিকে দেলোয়ার শেখ মৃত্যু বরণ করেছেন আজ প্রায় ১২বছর হতে চলল।
আগামী কাল কামরুল শেখ নিজের দেশে ফিরবেন।৫বছর পর নিজের পরিবারের কাছে ফিরে আসছেন।আর কতই বা বিদেশ খাটবেন?কষ্টের টাকা দিয়ে ছোটো ভাইয়ের সাথে দেশেই একটা ব্যবসা দিয়েছিলেন যেটা নাবিল হ্যান্ডেল করে।বাবার আদেশ,সে ব্যবসায় হাত লাগাবে।নাবিলও আর মানা করতে পারেনি বাবার মুখের উপর কিন্তু মুরসালীন?বাবার গড়া ব্যবসায় কিছুতেই ঢুকতে চায় না।তার যোগ্যতা যতটুকু ততটুকু দিয়েই জীবনে কিছু করবে।এইযে একটা বেসরকারি কলেজের সিনিয়র লেকচারার হয়েছে এটা কী কম?তবুও এই পেশা কামরুল শেখের কাছে তুচ্ছ।একমাত্র চাচার জন্যই জেদ ধরে সে এখনো এই চাকরি করে যাচ্ছে।
সন্ধ্যার একটু আগ দিয়ে রুহা বাড়ি থেকে বের হলো।বাড়ির পাশের বাড়ি’ই দোয়েলের শ্বশুর বাড়ি,অর্থাৎ রুহার ফুপির শ্বশুর বাড়ি।রুহা বাড়ি থেকে বের হয়ে হেলে দুলে ফুপির বাড়িতে ঢুকল।ফুপির দুইটা ছেলে আছেন আর একটা মেয়ে।দুই ছেলে পিঠাপিঠি!একজন প্রীতম আরেকজন পিয়াস।আর একমাত্র মেয়ে দোলা।দোলা বয়সে রুহার থেকে ২বছরের বড়ো তবে বন্ধুর মতোই।আজ প্রীতম বাইরে না গিয়ে বাড়িতেই বসে আছে সকাল থেকে।তার শরীর ভালো নয়।ভাইয়ের বিছানায় গুটি মেরে বসে আছে দোলা।পা টানটান করে মেলে দিয়ে ভাইয়ের দিকে সরু চোখে তাকিয়ে আছে।তৎক্ষণাৎ ঘরে প্রবেশ করল রুহা।ভ্রু কুঁচকে প্রীতমের দিকে তাকিয়ে এগিয়ে এলো।
“ভাইয়া তোমার প্রাণের বউ আমাকে মেসেজ করেছিল।”
প্রীতম হুড়মুড়িয়ে উঠে বসল।
“কখন?কী বলেছে তোকে?”
“তুমি নাকি বিষ খেয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়েছ এটা বলেছে ওকে?”
দোলা হতভম্ব হয়ে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,
“বিষ?তুই বিষ কবে গিললি ভাই?”
প্রীতম নাক টানল।হায়হুতাশ করে বলল,
“এমনি বলেছিলাম।দেখলি ও আমাকে ভালোইবাসে না।একবারও কল করে বলল না -জান তুমি কী ঠিক আছো?”
“তুই ছেলে না হয়ে মেয়ে হলেই পারতি।এসব মেয়েদের নাটক করতে তোর শরম করে না?”
“প্রেম করে দেখ একটা কেমন লাগে।পরে বুঝবি নাটক কাকে বলে।”
দোলা মুখ বাঁকাল।রুহা হাতের বক্স খাটের উপর রেখে বলল,
“মা পাঠিয়েছে,খেয়ে নিয়ো।”
দোলা নারুর বক্স হাতে নিয়ে বলল,
“চলে যাবি এখনই?”
“হ্যা সন্ধ্যার আজান দিয়ে দিবে এখন।”
“যা তাহলে।”
রুহা বাড়ি ফিরে এসে দেখল ড্রয়িংরুমে দাদি আর আফনান বসে আছে।আফনান টিভি দেখছে তো অন্যদিকে দাদি একা একা বকবক করছে।রুহা সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেলে দাদি বলেন,
“কই গেছিলি রুহা?”
“ফুপির বাসায়।”
“কার বাসায়?”
রুহানি চিৎকার করে বলল,
“ফুপির বাসায় গিয়েছিলাম।”
দাদি মাথা দুলিয়ে বললেন,
“আস্তে কথা বলতে পারিস না?চিল্লাস কেন?”
রুহা বিরক্ত হয়ে উপরে উঠে এলো।দাদি কানে শোনেন না।একটা কথা বললে বুঝেন আরেকটা।রুহা মুরসালীনের ঘরের দিকে তাকিয়ে দেখে নিলো সে বাড়িতে আছে নাকি।ঘরে গিয়ে একটা বই হাতে বের হলো সে।মুরসালীনের ঘরের সামনে এসে উকি মেরে দেখে নিলো মুরসালীন কী করছে।
মুরসালীন তার রুমে বই খুলে বসেছে। হঠাৎ দরজা ঠেলে রুহা ঢুকে পড়ে। হাতে চকলেট, মুখে দুষ্টু হাসি।
রুহা একগাল হেসে বলে,
“মুরসালীন ভাই, একটু পড়াবেন? কালকের টপিক কিছুই বুঝিনি।”
মুরসালীন কপালে ভাঁজ ফেলে রুহার দিকে তাকায়।ফের দরজার দিকে তাকিয়ে বলে,
“ঘরে নক করে ঢুকতে হয় জানিস না?বেয়াদব হচ্ছিস দিনদিন!তুই কি সিরিয়াসলি পড়তে আসছিস, না আবার নাটক শুরু করবি?”
রুহা চকলেট মুখে পুরে নাক ডলে বলে,
“আহা! নাটক তো আপনি নিজেই, আপনার মুখটাই পুরা মেগা সিরিয়াল!”
“এই যে মেয়ে, আমার ধৈর্যের পরীক্ষা নিস না। এই যে বই খুলে বসছি, এই মুহূর্তে কেউ বিরক্ত করলে আমি…”
“কি করবেন? আবার কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখবেন? একাজটা এখন আর চলে না ভাইসাব! এখনকার ছাত্রীরা একটু চালাক।”
মুরসালীন দাঁত চাপে।
“রুহা! তুই একদমই মাথা খাচ্ছিস আজকে। একবার বলছি, পড়তে হলে পড়, না হলে..”
“না হলে? আপনি কি আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিবেন?”
“বের করব না। যখন তখন আমার ঘরে আসবি না রুহা।”
রুহা মাথা নিচু করে, কৃত্রিম কান্নার ভান করে বলে,
“আপনি বদলে গেছেন মুরসালীন ভাই। আগে এমন ছিলেন না… আপনি তো আমাকে ‘ছোট্ট রুহা’ বলে মাথায় তুলে রাখতেন…”
মুরসালীন একটু থেমে, বিরক্ত গলায় বলে,
“ছোট্ট রুহা এখন পুরো একটা উল্টো রাহু হয়েছে। বই পড়বি তো পড়, না হলে বের হো ঘর থেকে।”
রুহানি চোখ টিপ মেরে বলে,
“আপনি আরেকটু রাগেন তো, আমি একটা রিল বানিয়ে ফেলি। “যখন পড়াতে গিয়ে শিক্ষক নিজের হুঁশ হারায়!”
মুরসালীন চেয়ার ফাঁকা করে রুহাকে বসতে দিল।আড়চোখে মেয়েটার বদন দেখে বলল,
“সব সময় নিজের আবেগ প্রকাশ করতে হয় না মেয়ে।একদিন বুঝবি আমি কেন দুরুত্ব রাখতে বলি।”
রুহা বই টেবিলের উপর রেখে মুরসালীনের দিকে তাকায়।গলায় কী যেন বিঁধে আছে শক্ত হয়ে।
“মুরসালীন ভাই,ভালোবাসতে বুঝি সম্পর্ক দেখতে হয়?”
“হয় কিছু ক্ষেত্রে দেখতে হয়।তুই জানিস তোর এই চাওয়া কোনোদিন পূরণ হবে না তবুও কেন মরীচিকার পেছনে ছুটছিস?”
রুহা হঠাৎ মুরসালীনের হাত আঁকরে ধরল।চোখে পানি চিকচিক করছে মেয়েটার।সে শুকনো কণ্ঠে বলল,
“আপনি একবার আমার হাত ধরে দেখুন,আমি কোনোদিন আপনার হাত ছাড়ব না।শুধু একবার…”
“চুপ!বের হো ঘর থেকে।বলেছি না এসব আমার সামনে বলবি না?তোর বয়স কত?ভালোবাসা আদৌ কী বুঝিস তুই?জানিস তোর থেকে বয়সে কত বড়ো আমি?”
“ভালোবাসলে বুঝি বয়স দেখতে হয়?”
মুরসালীন উঠে দাঁড়াল।দরজার দিকে এগিয়ে গিয়ে পিছু ঘুরে বলল,
“বয়স দেখে কখনো ভালোবাসা হয় না।তবে আমার জীবনের সাথে জড়ালে মৃত্যুর আগ অব্দি শুধু যন্ত্রণা পাবি তুই।যেখানে হৃদয় জখম হয় সেখানে নজর না দেয়াই ভালো রুহা।”
#চলবে…?