#যে_থাকে_আঁখি_পল্লবে
#পর্ব-২৩
দরজা বন্ধ দেখে ভ্রু কুঁচকে গেলো রুজাইফের। সদর দরজা আঁটকে ভেতরে কি করছে সেঁজুতি? ও কি একা আছে নাকি ওর বাড়ির সকলকে ডেকে এনেছে? দরজায় কান পাতলো রুজাইফ। কোন সাড়াশব্দ পেলো না। সে ছটফটিয়ে দরজায় শব্দ করলো। কাজের সহকারী মহিলাটি দরজা খুলে দিলো। রুজাইফ উদ্বিগ্ন চোখে চারপাশে তাকিয়ে সেঁজুতিকে খুঁজে পেলো না। অথচ সেঁজুতি বসে আছে তারই চোখের সামনে। ডাইনিং টেবিলের উপর মাথা দিয়ে বসে আছে। মাঝে মাঝেই কেঁপে কেঁপে উঠছে তার শরীর। কিন্তু এসব রুজাইফের চোখে পড়ে না। সে ছুটে গেলো। সেঁজুতিকে টেনে দাঁড় করালো, দু বাহু ধরে ঝাঁকি দিয়ে বললো-“আমরা কেউ বাসায় নেই আর এই সুযোগে তোমার বাড়ির লোকদের ঘরে ঢুকিয়েছ, তাই না? ওরা এসে কাগজ খুঁজে নিয়ে গেছে। জানতাম এমন কিছুই হবে। তুমি তো ওই পরিবারের অংশ, ওদের মতোই বিট্রেয়ার হবে। আমাদের সাথে এসে থাকছো তো এই কাগজের লোভেই। আলাপ জমিয়ে আমাদের ক্ষতি করার প্ল্যান। তবে যত যাই করো মেয়ে, এবার আর তোমাদের মনোবাসনা পূর্ণ হবে না। আমাদের সামান্য ক্ষতি করবে তো তোমাদের কে এবার রিক্ত নিঃস্ব করেই দম নেব আমি।”
সেঁজুতি হতবুদ্ধি হয়ে তাকিয়ে আছে। খানিকক্ষণ আগেই তার উপর দিয়ে বিশাল ঝড় গেলো। রুজাইফরা নেই এই সুযোগে জাহাঙ্গীর আর সাজেদ ছুটে এসেছিল। পেছনে তার দাদী। উদ্দেশ্য কাগজ খুঁজে নেবে। সেঁজুতি তাদের ঘরে ঢুকতে দেয়নি কিছুতেই। সেই নিয়ে শামসুননাহারের কি রাগ। সেঁজুতি কয়েকটা ওজনদার চড় কষিয়েছে তবুও মেয়েটা অনড়ভাবে দাঁড়িয়ে থেকেছে। মানুষ গুলো তাকে বিশ্বাস করে ঘর সপে দিয়ে গেছে। তাদের বিশ্বাসের অমর্যাদা করে কি করে? না পেরে সেঁজুতিকে শাপশাপান্ত করেছে শামসুন্নাহার। সেই আঘাতের ঘা না শুকাতেই এখন আবার রুজাইফ এসে জেরা করছে। অবিশ্বাস করে যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে। সেঁজুতির কোমল হৃদয় এতো ভার নিতে পারে না। সে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো। রুজাইফ ধমক দিয়ে আঙুল উঁচিয়ে শাসায়-“খবরদার ঢং করবে না সেঁজুতি। আমি ফুমা কিংবা দিদা না যে তোমার এই ডং দেখে আমি গলে যাব।”
রুজাইফের নিষ্ঠুর বাক্যবানে সেঁজুতির নরম মন ঝাঁঝড়া হলো। সে ফোপাঁতে ফোপাঁতে বললো-“আমি ঢং করতেছি না। আপনার বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দেই নাই। ওরা চাইছিল ঢুকতে কিন্তু আমি মানা করছি। এই যে দেখেন কি মাইর দিছে আমাকে। তাও বিশ্বাস না হইলে খালাকে জিজ্ঞেস করেন।”
রুজাইফ থমকে গেলো। খেয়াল করে দেখলো আসলেও সেঁজুতির গাল দু’টো লাল হয়ে আছে। পাঁচ আঙুলের দাগ জ্বলজ্বল করছে। সেঁজুতি দু’হাতে চোখ মুছে নিলো-“আমি নিমকহারাম না। আপনার বাড়ির খাওন খাইছি, কোন ক্ষতি আমি স্বজ্ঞ্যানে করুম না। আপনে সবসময় আমারে সন্দেহ করেন এইটা ঠিক না। আমি চোর না। এইবার দাদি হাসপাতাল থিকা আসলে আমি চইলা যাব এইখান থিকা।”
বলেই ছুটে দোতালায় চলে গেলো। রুজাইফ বোকা বনে দাঁড়িয়ে রইলো। কাজের মহিলা এসে দাঁড়ায়-“বাজান, সেঁজুতি সত্য বলতেছে। ও কাউরে ঘরে ঢুকতে দেয় নাই৷ অনেক চিল্লাপাল্লা হইছে এইখানে। আপনে তারে ভুল বুইঝেন না।”
রুজাইফ চুপ করে রইলো। ধীর পায়ে দোতলায় উঠে এলো৷ সেঁজুতির ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে রইলো। ভেতরে যাবে কিনা দ্বিধান্তিত দেখায় তাকে। ফিরে আসতে গিয়ে কি ভেবে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো। সেঁজুতি বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। থেকে থেকে তার শরীর কেঁপে উঠছে। রুজাইফ দ্বিধা ভরে বসলো ওর কাছে। মোলায়েম গলায় ডাকলো-“সেঁজুতি।”
সেঁজুতি চোখ তুলে চাইলো তখনই। কাঁদার ফলে ওর চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। সে ভেজা কন্ঠে বললো-“আপনিও মারবেন? মারলে মারেন। আমি আছি সবার মাইর খাওয়ার জন্য।”
রুজাইফ নিজের অধর দু’টো চেপে ধরলো। মনটা অপরাধী লাগছে। সে মৃদুস্বরে বললো-“সরি। আমি ভেবেছি তুমি স…”
সেঁজুতি উঠে বসলো-“চুরি করতাম তবে কারো অসুস্থতায় সুযোগ নেওয়ার মতন খারাপ কাজ আব্বা মা শিখায় নাই। আপনে কেন আমাকে এতো খারাপ ভাবেন জানি না। আমি কিন্তু কোনদিন কোন খারাপ কাজ করি নাই।”
রুজাইফ মাথা নিচু করে বসে রইলো। সেঁজুতি ওকে দেখলো একনজর। কেন যেন মাথা নত রুজাইফকে দেখে ভালো লাগে না ওর।
“আমাদের উপর এতে রাগ কেন আপনের? কে কি করছিল আপনারে?”
প্রশ্নটা করে মনে হলো ভুল করে ফেলেছে। রুজাইফ নিশ্চয়ই রেগে যাবে আবার। সেঁজুতি ভয়ে ভয়ে তাকায় রুজাইফের দিকে। রুজাইফ আবারও গম্ভীর হলো-“তোমাকে ধন্যবাদ সেঁজুতি। তোমার ভাই এসেছিল দিদার কাছে। সেই দিদার জন্য সব করে দিয়েছে। তাকে রেখেই বাসায় এলাম।”
ভাইয়ের কথায় সেঁজুতির মুখচোখ উজ্জ্বল হলো-“উপল ভাই ভালো মানুষ। বিপদে তাকে ডাকলে সে আসবেই। আপনে শুধু শুধু…”
রুজাইফ ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই সেঁজুতি চুপ করে গেলো। রুজাইফ ডাকলো তাকে-“এদিকে এসো।”
সেঁজুতি চুপসে গেলো-“কককেন?”
“ডাকছি আসবে। এতো প্রশ্ন করো কেন?”
সেঁজুতি খানিকটা এগিয়ে রুজাইফের মুখোমুখি হলো। রুজাইফ আলতো হাতে ওর মুখে আঙুল বুলিয়ে দিয়ে অস্ফুটে উচ্চারণ করলো-অনেক মেরেছে? খুব ব্যাথা করছে তাই না?”
সেঁজুতি মাথা দুলায়-“হুমমম।”
“কিভাবে কমবে? ওষুধ লাগিয়ে দেব?”
সেঁজুতি মাতা নাড়ে। ওর বুক ধড়ফড় করছে। ইদানীং এক সমস্যা হয়েছে, রুজাইফকে কাছাকাছি দেখলেই বিনা কারণে বুকটা ধুকপুক করে, হাত পা কাঁপে। বড্ড অসস্তি হয় তার। সে তীব্র বেগে মাথা নাড়ে-“ঠিক হয়ে যাবে। দাদী কেমন আছে তাই বলেন।”
রুজাইফ বরং গভীর মায়া নিয়ে সেঁজুতির মুখপানে চেয়ে রইলো। সেঁজুতি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে। এই লোকের হঠাৎ হঠাৎ কি যে হয়। সেঁজুতিকে দৃষ্টি দিয়ে নাস্তানাবুদ করে দেয়। রুজাইফ ওর গালে আঙুলের আলতো স্পর্শ দিয়ে ফিসফিস করলো-“আমার জন্য মার খেয়েছ তুমি। কেন?”
সেঁজুতি উত্তর দিলো না। রুজাইফ উত্তরের আশাও করলো না। সে খানিকটা ঝুঁকে এসে সেঁজুতির দু’গালে চুমু দিলো তারপর ধীর পায়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো। সেঁজুতি হতবিহ্বল হয়ে দুই গালে হাত দিয়ে বসে রইলো।
★★★
পরে দুটো দিন রুজাইফকে অফিস কামাই দিতে হলো। এক্সরে করে দেখা গেছে ফজিলাতুন্নেছার মেরুদণ্ডের হাড় ফ্র্যাকচার হয়েছে। নড়াচড়া করা বারন একদমই৷ দিন সাতেক হাসপাতালে থাকতেই হবে। রুজাইফ নুমাকে সে কথা জানাতেই ওরা রত্নপুর ফিরে এলো। হাশেম আর নুমা পালা করে ফজিলাতুন্নেছাতে দেখে। তাছাড়া হাসপাতালে প্রতিদিন উপল একবার করে আসে ওদের খোঁজ নিয়ে যায়। রুজাইফ নিশ্চিতে অফিস করে।
একদিন অফিস শেষে দিদাকে দেখতে এসে রুজাইফের পা থমকে যায় ভেতরের হাসাহাসির শব্দে। আড়ালে দাঁড়িয়ে দেখার চেষ্টা করে ভেতরে কে এসেছে। সেঁজুতি আর নাদিরা নাহিয়ান এসেছে দিদাকে দেখতে। সেখানে আবার উপল উপস্থিত। সেঁজুতির পরনে তারই দেওয়া সালোয়ার কামিজ। কি দারুণ লাগছে দেখতে। রুজাইফ খানিকটা সময় সেঁজুতিকে দেখলো মনভরে তারপর ভেতরে এলো। ওরা সবাই মিলে বেশ হাসিঠাট্টা করছিল, রুজাইফকে দেখে গম্ভীর হলো।ফজিলাতুন্নেছা হাসিমুখে ডাকলো-“রুজাইফ দাদাভাই, এদিকে আয়। কাছে বস।”
রুজাইফ বাধ্য ছেলের মতো দিদার কাছে বসলো-“তোমার শরীর কেমন দিদা?”
“এই ভালোবাসার মানুষগুলো পাশে থাকলে খারাপ থাকি কি করে? আমার তো মনেহচ্ছে আমি সুস্থ হয়ে গেছি। আজই বাসায় ফিরে যাই।”
রুজাইফ উপলের দিকে তাকাতেই উপল উসখুস করে উঠলো-“আর কয়েকটা দিন থাকতে হবে দাদী। না হলে আপনারই কষ্ট হবে।”
রুজাইফ জানতে চাইলো-“কয়দিন?”
“আরও সাতটা দিন থাক। তাহলে আর বাড়িতে অতো প্রটেকশনে চলতে হবে না।”
ফজিলাতুন্নেছা মন খারাপ করে বললো-“আরও সাতদিন? আমার তো দমবন্ধ হয়ে আসে।”
রুজাইফ গম্ভীর হলো-“শরীর ভালো রাখার জন্য প্রয়োজন হলে একমাস থাকবে। এসব নিয়ে এতো কথা বলার কি আছে।”
ফজিলাতুন্নেছা ঠোঁট ফোলায়। রুজাইফ তা দেখে মুখ টিপে হাসলো। উপল উঠে দাঁড়িয়ে অনুমতি চাইলো-“আমি তাহলে আসি। কাল আবার এসে দেখে যাব।”
“ভাইয়া, তোমার মেডিকেলটা আমাদের ঘুরিয়ে দেখাও না। ওরা প্রথমবার এলো, একটা ব্যাপার আছে না। এভাবে চলে যাবে?”
সেঁজুতি উপলের কাছে আবদার জুড়ে দিলো। উপল অনুমতির আশায় ফজিলাতুন্নেছা আর নুমার দিকে তাকালো।
নুমা হাসলো-“তোমার সমস্যা না থাকলে নিয়ে যাও।”
ফজিলাতুন্নেছা উৎফুল্ল হলো-“আরে, সেঁজুতি ঠিকই বলেছে। নাদিরাদের এই ফাঁকে একটু বেড়ানো হবে। নিয়ে যাও ভাই। আমার অসুস্থতার কারণে বেচারীরা এবার ঘুড়তে পারেনি।”
নাদিরার চোখ চিকচিক করে উঠলো আনন্দে। এখানে আসার পর থেকে সেভাবে বেড়ানো হয়নি কোথাও। রুজাইফ নিয়ে যাবে বললেও নিয়ে যায়নি আর৷ নানুর কথায় সে লাফিয়ে উঠলো-“কি মজা। সেঁজুতিপু, থ্যংকস টু ইউ। তোমার জন্য আজ একটু বেড়াতে পারলাম। না হলে কেউ কেউ মুখে মুখে বেড়াতে নিয়ে যাব বললেও আমাদের বেড়াতে নিয়ে যায় না।”
বলেই রুজাইফের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট ওল্টায়। রুজাইফ হেসে দিলো-“বাসায় চল তারপর ঘুরাচ্ছি তোদের।”
নাদিরা নানুর কাছে বিচার দিলো-“দেখলে নানু, ভাইয়া কেমন হুমকি দিচ্ছে।”
“দিক। ও কিছু বলবে না। তোরা নিশ্চিতে যা।”
নাদিরা মুখ ভেঙালো রুজাইফকে, তা দেখে রুজাইফ হেসে দিলো। উপলের বেশ মজা লাগছে এই খুনসুটি দেখতে। তার বোনদের সাথে এরকম খুনসুটি হয় না খুব একটা। শামসুননাহারের এসব পছন্দ না একেবারেই। ভাই বোনের মধ্যে এরকম খুনসুটি হতে পারে সেটাই আজ প্রথম দেখলো। ভালো লাগলো তার। সে হাসি মুখে হাঁটা ধরলে ওরা পিছু নিলো।
সুন্দর ক্যাম্পাসটা ঘুরিয়ে দেখানোর শেষে ওদের নিয়ে মেডিকেলের ক্যাফেটেরিয়ায় গেলো উপল। নাদিরার দিকে তাকিয়ে জানতে চাইলো-“কি খাবে তোমরা?”
উপলকে ভালো লাগে নাদিরার। শান্ত শিষ্ট ছেলেটার চোখের দৃষ্টি ভারী স্বচ্ছ। তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। নাদিরা লাজুক হাসলো-“কিছু খাবো না।”
উপল মৃদুস্বরে বললো-“খাবে না কেন? অন্তত এককাপ চা খাও। আফটারঅল আমার ক্যাম্পাসে প্রথমবার এসেছ না খেলে খারাপ লাগবে আমার।”
“তাহলে শুধু এককাপ চা খাব।”
নাহিয়ান অতো ভদ্রতার ধার ধারলো না। সে বললো-“এখানে সবচেয়ে ভালো কি বানায় সেটাই খাবো।”
“বার্গার চলবে?”
নাহিয়ান হাসলো-“দৌড়াবে। অনেকদিন ধরে ভালো মানের বার্গার খাওয়া হচ্ছে না।”
সেঁজুতি বললো-“ভাইয়া, আমি চা আর পুরি খাবো। এখানকার পুরিটা অনেক মজা হয়। আগে একবার খেয়েছিলাম।”
“আচ্ছা নিয়ে আসছি এখনই।”
বলেই উপল উঠে গেলো। নাদিরা নাহিয়ানের হাতে চিমটি কাটে-“ভাইয়া, তুমি এরকম খাইখাই করছো কেন? দা ভাই শুনলে কিন্তু রাগ করবে।”
সেঁজুতি শুনে রাগ দেখালো-“এ কি কথা নাদিরা? তোমার দাদা ভাই রাগ করবে কেন? আমি তোমাদের বাড়িতে থাকছি খাচ্ছি, এই যে তোমার দাদা ভাই এর দেওয়া কাপড় পরেছি তাতে আমার ভাইয়া তো কিছু বলছে না। তাহলে তোমার এঙরি ব্রো রাগ করবে কেন? আমার ভাইয়াও কি একদিন খাওয়াতে পারে না তোমাদের?”
নাদিরা বলার মতো কিছু খুঁজে পাচ্ছে না। উপল এল দু’হাত ভরে খাবার নিয়ে। টেবিলে রেখে বললো-“নাও, যার যেটা ভালো লাগে খাও।”
নাদিরা চায়ের কাপ টেনে নিলো। উপলও চা খাচ্ছে কেবল। আড়চোখে নাদিরাকে দেখলো। মেয়েটা একদম বার্বিডলের মতো দেখতে। উপলের তাকিয়ে থাকতে মন চায় শুধু। সেঁজুতি জোরাজোরি করছে পুরি খাওয়ার জন্য নাদিরা খাবে না। নাহিয়ান বার্গার খেতে খেতে বোনকে খেপালো-“আরে এতো ভাব নিচ্ছিস কেন ছোট? উপল ভাইয়াও আমাদের আরেকটা ভাইয়া। তুই নিশ্চিতে চায়ে পুরি ডুবিয়ে খা, ভাইয়া কিছু মনে করবে না৷ তাই না ভাইয়া?”
উপল মাথা দুলালো। নাদিরা ভাইয়ের দিকে অগ্নি দৃষ্টি দিলেও লাভ হলো না। নাহিয়ান পাত্তা দিলো না মোটেও। নাদিরা উপলকে দেখলো একপলক। চায়ে পুরি ডুবিয়ে মুখে পুড়লো। উপল বললো-“তুমি কোন ক্লাসে পড়ো পিচ্চি?”
প্রশ্ন শুনে নাদিরা খুকখুক করে কাশতে লাগলো। সেঁজুতি বললো-“নাদিরা, কি হলো তোমার? নাও পানি খাও।”
নাদিরা নিজেকে সামলে নিলো-“আমি ঠিক আছি সেঁজুতিপু।”
উপলের হাসি পেলো। মেয়েটার এমন আচরণের কারণটা বেশ বুঝতে পারছে সে। মেয়েটা আসলেই পিচ্চি। সেঁজুতি নাদিরার হয়ে জবাব দিলো-“ও ক্লাস নাইনে পড়ে আর নাহিয়ান আমার সাথে।”
উপল হেসে বললো-“তাহলে তো পিচ্চি বলা জায়েজ, তাই না পিচ্চি?”
নাদিরার মুখে অমানিশা নামে। উপলের পিচ্চি বলা একদমই ভালো লাগছে না তার। সে এতোটাও ছোট না। উপল কেন বারবার তাকে পিচ্চি ডাকছে? এই প্রথম ছোট হওয়াটা পছন্দ হলো না তার। আরেকটু বড় হলো সে হয়তো উপলের চোখে পড়তো।
★(বইমেলায় আমার একমাত্র নতুন উপন্যাস দীপালি পাওয়া যাচ্ছে নবকথন প্রকাশনি স্টল নং ৭৭৩, ৭৭৪ এ। এছাড়া রকমারিসহ যে কোন বুকশপ থেকে দীপালিসহ আমার বইগুলো অর্ডার করতে পারবেন। রকমারি লিংক কমেন্টে দিয়ে দিচ্ছি। দীপালির সাথে একটা অনিন্দ্য সুন্দর জার্নি হবে কথা দিচ্ছি। আজই অর্ডার করে ফেলুন দীপালি।)★
চলবে—
© Farhana_Yesmin