#_লাল_নীল_সংসার_
#_মারিয়া_রশিদ_
#_পর্ব_১৯_
সাঝের পরীক্ষা ভালো ভাবেই শেষ হলো। পরীক্ষা ভালোই হয়েছে। সাঝের মনে হচ্ছে মেডিকেলে চান্স হয়ে যাবে,, ইনশাআল্লাহ! কিন্তু,, তার থেকেও বড় কথা,, বিকাল থেকেই সাঝ আরও বেশি আনন্দিত। কারন,, বিকালে সে ছোয়া আর শিশিরের কথা জানতে পেরেছে।
ছোয়াকে সাঝের প্রথম দিন থেকেই ভালো লাগে। অনেক পছন্দ সাঝের ছোয়াকে। তাই,, শিশির আর ছোয়ার কথা জানতেই সাঝের আনন্দের সীমা নেই।
আদনানও বেশ খুশি। ছোয়াকে দেখেনি সে। কিন্তু,, ভাইয়ের বিয়ে হবে,, সংসার হবে,, ভাই নিজের কথা যে একটু ভেবেছে এইটাই সব চেয়ে আনন্দের লাগছে আদনানের। নিজের ভালোবাসার মানুষকে হয়তো সে পাবে নাহ কিন্তু,, তার ভাইয়া যে নিজের ভালোবাসার মানুষকে পাবে এতেই সে অনেক খুশি।
…………….আজ আহিয়া রহমান আর সাঝ ছোয়ার বাসায় যাবে। এর মাঝো শিশিরের সাথে ছোয়ার কোনো প্রকার কথা হয় নি। এখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। শিশির একটু আগেই অফিস থেকে বাসায় চলে এসেছে। আহিয়া রহমান আর সাঝকে ছোয়ার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে বলে ওঠে,
–” মা! তোমরা যাও,, আমি একটু পাশে যাচ্ছি। হয়ে গেলে আমাকে ফোন দিও আমি নিয়ে যাবো।”
আহিয়া রহমান বলে ওঠে,
–” আচ্ছা! ঠিক আছে।”
শিশির একপলক ছোয়ার বাসার দিকে তাকিয়ে চলে যায়। আহিয়া রহমানের হাতে কেজি দুইয়েক মিষ্টির প্যাকেট আর সাঝোর হাতে ফলের প্যাকেট। সাঝ কলিং বেলে চাপ দেওয়ার কিছু সময় পর একজন ভদ্রমহিলা দরজা খুলে দেন।
একটা অচেনা ভদ্র মহিলা আর একটা মেয়েকে দেখে মিসেস. কেয়া কিছুটাহ ভ্রু কুঁচকে তাকান। আহিয়া রহমান মুচকি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” আসসালামু আলাইকুম! আপা!”
মিসেস. কেয়া ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে,
–” ওয়ালাইকুম আসসালাম! কিন্তু,, আপনাদের কাউকে তো চিনলাম নাহ। আপনারা কারা?”
আহিয়া রহমান হালকা হেসে বলে ওঠে,
–” আমি আহিয়া রহমান! শিশিরের মা! আপনি আশা করি শিশিরের নাম শুনেছেন। আর নাহলে….”
কথা শেষ করতে পারে নাহ আহিয়া রহমান। তার আগেই মিসেস. কেয়া আনন্দিত কন্ঠে বলে ওঠে,
–” আপনিই শিশিরের মা? আসুন আসুন, ভেতরে আসুন আপা!”
আহিয়া রহমান আর সাঝ মুচকি হেসে ভেতরে আসে। আহিয়া রহমান আর সাঝকে সোফায় বসায় মিসেস. কেয়া। সাঝের দিকে তাকিয়ে মিসেস. কেয়া বলে ওঠে,
–” এই মেয়েটাহ কে?”
আহিয়া রহমান বলে ওঠে,
–” আমার মেয়ে!”
–” ওহ! মাশাআল্লাহ! আপনার মেয়ে তো খুব সুন্দরী।”
আহিয়া রহমান মুচকি হাসে। সাঝ কিছুটাহ লজ্জা পায় মিসেস. কেয়ার কথা শুনে। আহিয়া রহমান মিসেস. কেয়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ছোয়া কোথায়?”
মিসেস. কেয়া বলে ওঠে,
–” রুমে আছে।”
–” ওহ!”
মিসেস. কেয়া আর আহিয়া রহমান টুকটাক কিছু কথা বলতে থাকে। মিসেস. কেয়া কিছু নাস্তার ব্যবস্থাও করতে থাকেন।
……………..স্পন্দনকে পড়াচ্ছে ছোয়া। কলিং বেলের আওয়াজের পর মাকে আর আসতে নাহ দেখে কিছুটাহ চিন্তা হয় ছোয়ার। স্পন্দনকে কিছু অংক করতে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। মাঝের রুমের দিকে আসতেই থমকে দাড়িয়ে পড়ে। এ কাদের দেখছ সে? শিশিরের মা আর বোন?
ছোয়া তাড়াতাড়ি নিজের রুমে চলে আসে। শিশির সব কিছু জানার পরও এমন করলো? আচ্ছা,, শিশিরের মা কি সব জানে? আর যদি নাহ জানে,, তাহলে রাজি হতে পারে,, কিন্তু ছোয়া কিছুতেই রাজি হবে নাহ। আর যদি তারা জেনে থাকে,, তাহলেও কি আসবে এই বিয়ে ঠিক করতে?
ছোয়া বুঝে উঠতে পারছে নাহ কি করবে। ফোন হাতে নেয় ছোয়া। শিশিরের নাম্বার বের করে ডায়াল করতেই এক রিং হতেই শিশির কল রিসিভ করে বলে ওঠে,
–” আসসালামু আলাইকুম!”
–” ওয়ালাইকুম আসসালাম!”
শিশির হালকা রসিকতার সুরে বলে ওঠে,
–” আজ পৃথিবী কোনদিকে ঘুরছে,, যে মিস. ছোয়া ম্যাডাম নিজে আমাকে ফোন দিয়েছে।”
ছোয়া রাগী কন্ঠে বলে ওঠে,
–” রসিকতা বন্ধ করুন। আপনি কি জানেন আপনার মা আর বোন আমাদের বাড়িতে এসেছে?”
–” জানবো নাহ কেন? আর তাছাড়া আমি নিজেই তো আমার মা আর বোন কে তোমার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে এসেছি। কথা বার্তা শেষ হলে আবার গিয়ে নিয়ে আসবো।”
ছোয়া রাগী ভাবে বলে ওঠে,
–” মানে? কেন এসেছেন ওনারা?”
–” তুমি বুঝতে পারছো নাহ কেন গিয়েছে? বলেছিলাম নাহ,,, জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ,, তোমাকে মিস. ছোয়া এহমাদ থেকে মিসেস. ছোয়া শিশির রহমান বানাতে আসছি।”
–” আপনাকে বলেছি তো আমি,, যে আমি আপনাকে বিয়ে করবো নাহ।”
–” কিন্তু,, আমি করবো। দরকার হলে,, জোর করে বিয়ে করবো।”
ছোয়া কিছুটাহ শান্ত কন্ঠে বলে ওঠে,
–” আপনার বাড়ির সবাই আমার অতীতটা জানে?”
–” যাদের জানানো দরকার,, তারা জানে,, মানে আমার মা- বাবা জানে। বাকি দুইজন ছোট,, তাই তাদের জানাতে চাই নাহ। আর জানলেও সমস্যা নেই।”
ছোয়া চাপা কন্ঠে বলে ওঠে,
–” কিন্তু,, আমার সমস্যা আছে। আমি বিয়ে করতে চাই নাহ।”
–” কিন্তু,, আমি বিয়ে করতে চাই,, পারলে আটকিয়ে দেখাও।”
–” ধুর!”
বিরক্ত হয়ে ফোন কেটে দেয় ছোয়া। শিশিরের মা তার অতীত জানার পরও কিভাবে রাজি হতে পারে? ছোয়ার প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে। ভয় লাগছে। যদি শিশিরের কোনো ক্ষতি হয়ে যায়? নাহ! কি ভাবছে সে এইসব। শিশিরের কিছু হবে নাহ। কিচ্ছু নাহ।
……………..আহিয়া রহমান চা খেতে খেতে বলে ওঠে,
–” আপা! আপনার কাছে একটা প্রস্তাব রাখতে চাই।”
মিসেস. কেয়া বলে ওঠে,
–” জি! বলুন।”
আহিয়া রহমান কিছুটা সময় নিয়ে বলে ওঠে,
–” আমি ছোয়াকে নিজের বাড়ির বড় বউ করে নিয়ে যেতে চাই।”
মিসেস. কেয়া ছলছল চোখ নিয়ে আহিয়া রহমানের দিকে তাকায়। আহিয়া রহমান হয়তো সবটা জানে নাহ,, তাই এমন প্রস্তাব রাখছে। যখন সব টাহ জানবে,, তখন হয়তো আর এমন প্রস্তাব রাখবেন নাহ। নিজের মেয়েটার জীবন কেমন যেন ছন্নছাড়া হয়ে আছে। মিসেস. কেয়া কে চুপ করে থাকতে দেখে আহিয়া রহমান বলে ওঠে,
–” কি হলো আপা? কিছু বলছেন নাহ যে?”
মিসেস. কেয়া বিষন্ন কন্ঠে বলে ওঠে,
–” আপনি হয়তো,, ছোয়ার ব্যাপারে সব টাহ জানেন নাহ। তাই এমন প্রস্তাব রাখছেন।”
আহিয়া রহমান হালকা হেসে বলে ওঠে,
–” আমি সবই জানি। আর সত্যি কথা বলতে,, প্রথমে আমিও দ্বিমত পোষন করেছিলাম। কিন্তু,, শিশিরের বাপ আর শিশির আমার ভুল গুলো ভেঙে দিয়েছে। কুসংস্কার থেকে নিজেকে বেরিয়ে আসতে বলেছে। আমিও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। আমি মন থেকেই চাই,, ছোয়া আমার শিশিরের বউ হোক।”
মিসেস. কেয়ার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। নিজের মেয়ের জীবনে আলোর ছটা দেখতে পাচ্ছেন তিনি। এর থেকে আনন্দ আর কি হতে পারে?
………………..ছোয়া দরজার এই পাশে দাড়িয়ে সব কথা শুনছে। চোখ দিয়ে অজস্র পানি গড়িয়ে পড়ছে তার। ছোয়া জানে,, শিশিরের মতোই তার পরিবারের প্রতিটি সদস্য অনেক ভালো। কিন্তু,, এতো ভালো মানুষগুলোর সাথে কোনো খারাপ হোক এইটা ছোয়া কখনো স্বপ্নেও চায় নাহ।
কিন্তু,, এরা যে বুঝতে চাচ্ছে নাহ। ছোয়ার খুব ভয় লাগছে। যদি শিশির বা এই পরিবারের কিছু হয়,, তাহলে ছোয়া কখনোই নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে নাহ। ছোয়া নিজের রুমে এসে জানালার পাশে দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকায়।
এমম সময় মিসেস. কেয়া ছোয়ার রুমে এসে দেখে, ছোয়া জানালার পাশে দাড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। ছোয়া হয়তো বুঝে গেছে,, শিশিরের পরিবারের আসার কারন। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলোন মিসেস. কেয়া। তারপর ছোয়ার দিকে এগিয়ে এসে বলে ওঠে,
–” ছোয়া!”
মায়ের ডাকে পিছন ফিরে মায়ের দিকে তাকায় ছোয়া। মেয়ের মুখের দিকে তাকাতেই বুক টাহ ধুক করে উঠে মিসেস. কেয়ার! ছোয়া কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে,, মুখও লাল হয়ে আছে। মিসেস. কেয়া এগিয়ে আসতেই ছোয়া মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়। মিসেস. কেয়া মেয়েকে আগলে নেন। ছোয়া কান্না করতে করতে বলে ওঠে,
–” ওনারা কেন এলো আম্মা? শিশির কেন আমার কথা গুলো বুঝতে চাইছে নাহ? এই ভালো মানুষগুলোর সাথে কোনো খারাপ হলে,, আমি সহ্য করতে পারবো নাহ আম্মা!”
মিসেস. কেয়া ছোয়াকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ছোয়ার চোখ মুছিয়ে দেয়। তারপর বলে ওঠে,
–” শিশিরের মা,, সব জানে ছোয়া! আর সব কিছু জেনেই,, তাদের বাড়ির বউ বানাতে চাই। ওরা এখন তোকে দেখতে চাইছে। চল!”
–” কিন্তু,, আম্মা!”
–” কোনো কিন্তু নাহ। যাহ,, চোখে মুখে একটু পানি দিয়ে আয়। কি হলো? যা।”
মায়ের কথা অমান্য করতে পারে নাহ ছোয়া। চোখে মুখে পানি দিয়ে মুখ মুছে নেয়। তারপর মায়ের সাথে তাদের কাছে চলে যায়।
★
স্নেহা নিজের রুমে বসে বসে ফোন চালাচ্ছে। এমন সময় মিসেস. আখি স্নেহার রুমে আসে। স্নেহা একপলক মায়ের দিকে তাকিয়ে আবার ফোন চালানোতে মনোযোগ দেয়। মিসেস. আখি স্নেহার সামনে বসে বলে ওঠে,
–” স্নেহা!”
–” হুম!”
–” ইয়াশ নাকি কয়েকদিন পর কানাডয় চলে যাবে?”
–” হুম!”
মিসেস. আখি কিছু সময় চুপ করে থেকে বলে ওঠে,
–” ইয়াশকে তোর কেমন লাগে?”
স্নেহা মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” কেমন লাগে মানে?”
–” মানে,, আমাদের সবার ইচ্ছে তুই ইয়াশকে বিয়ে কর।”
মিসেস. আখির কথায় চমকে উঠে স্নেহা। কি বলছে তার মা এইসব? স্নেহা কম্পিত কণ্ঠে বলে ওঠে,
–” মামনি! কি বলছো এইসব? আমার তো এখনও স্টাডিই শেষ হয় নি। এখন বিয়ে কিভাবে সম্ভব?”
–” কেন সম্ভব নাহ? বিয়ের পর কানাডায় গিয়ে স্টাডি করবি। দেখ, অনার্স ফাইনাল ইয়ারে উঠে গেছিস,, বিয়ের বয়স তো হয়েছে,, নাকি? এখন বিয়ে করে নেওয়া উচিত। আর কানাডায় গিয়ে স্টাডি করলে,, তোর তো আরও ভালোই হবে।”
স্নেহা চুপচাপ মায়ের কথা শুনছে। মিসেস. আখি আবার বলে ওঠে,
–” দেখ,, মা! বিয়ে তো একদিন করতেই হবে। আর মেয়ে মানুষ হয়ে যখন জন্ম নিয়েছিস,, স্বামীর ঘরে যেতেই হবে। তোকে তো আর আমার কোলে বেধে রাখতে পারবো নাহ। একটা মেয়ে,, অনার্স ফাইনাল ইয়ার মানে,, সে বিয়ের উপযুক্ত। আর,, ইয়াশের মতো সুদর্শন,, এডুকেটেড,, স্টাবিলিশড,, ওদের ফ্যামিলির মতো কালচারাল ফ্যামিলি তুই কোথায় পাবি,, বল?”
স্নেহা চুপ করে আছে। কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে নাহ। শুধু আদনানের মুখ টাহ ভেসে উঠছে। কেন উঠছে সে নিজেও জানে নাহ। কিন্তু,, শুধু আদনানের মুখটাই যে ভেসে উঠছে। নিজের অনুভূতির সাথে সব সময় লড়াই করে এসেছে স্নেহা,, আজ যেন সেই অনুভুতি সব থেকে বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছে। মিসেস. আখি বলে ওঠে,
–” তোর ভাইয়ু,, বাপি সবারই ইয়াশকে খুব পছন্দ। ইয়াশের বাবা মা বাংলাদেশে আসছে। আর ইয়াশও তোকে বিয়ে করতে রাজি।”
স্নেহা অবাক হয়ে বলে ওঠে,
–” তোমরা তো সব সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছো মামনি! তাহলে,, আমাকে কেন আবার বলতে এলে? একবারে নাহ হয় বিয়ের আসরেই তুলতে আমাকে।”
–” রাগ করছিস কেন সোনা? আমরা তো যা করছি,, তোর ভালোর জন্যই। রাগ করিস নাহ।”
এমন সময় সাইফের গলার আওয়াজ ভেসে আসে। সাইফ মিসেস. আখিকে ডাকছে। মিসেস. আখি স্নেহার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” তোর ভাইয়ু ডাকছে। আমও একটু দেখে আসি।”
মিসেস. আখি চলে গেলেন। স্নেহার যেন দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। নিজের অনুভুতি গুলো যেন আজ বড্ড বেশি নাড়া দিচ্ছে। আদনানের প্রতি অনুভূতির কথা কখনো প্রকাশ করতে পারবে নাহ স্নেহা। কেননা,, আদনান বেকার,, একজন ছাত্র সে,, আর তার ফ্যামিলি কখনোই আদনান কে মেনে নিবে নাহ। এইটা স্নেহার অজানা নাহ।
তাহলে কি সারাজীবন স্নেহাকে নিজের অনুভূতি এইভাবে লুকিয়ে অন্য একজনের বউ হয়ে থাকতে হবে? ইয়াশের বার্থডে পার্টির দিন,, আদনানের দেওয়া ছোট্ট পরশ এখনও স্নেহাকে এক শান্তি দেয়। সেখানে অন্য একজনের হাজারও পরশ তাকে গ্রহন করতে হবে,, সইতে পারবে তো স্নেহা?
এইদিকে……
আদনান স্নেহাকে ফোন দিয়ে দেখে ফোন বন্ধ আসছে। আদনানের বিরক্ত লাগছে। হঠাৎ স্নেহার ফোন বন্ধ কেন? বুঝে উঠতে পারছে নাহ স্নেহার ফোন বন্ধ থাকার কারন। চার্জ শেষ নাকি? ধুর! মেজাজ খারাপ হচ্ছে আদনানের।
আদনান ফোন টাহ পাশে রেখে বারান্দায় চলে আসে। বারান্দার গিরিল ধরে আকাশের দিকে তাকায়। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে আজ চাঁদ উঠে নাই,, কিন্তু তারায় ভরে আছে সম্পুর্ন আকাশ। ভালোই লাগছে আকাশটাহ।
আদনান বুঝতে পারছে আজকাল স্নেহার প্রতি সে একটু বেশিই বিচলিত থাকে। সব সময় স্নেহার চিন্তা মাথায় জেঁকে থাকে। আদনান জানে,, সে তার বার্বিডল কে পাবে নাহ,, তাও আজকাল ভয় পাচ্ছে সে। স্নেহাকে হারানোর ভয় পাচ্ছে। সে কি সত্যিই হারিয়ে ফেলবে?
হ্যা! ফেলবেই তো। কি যোগ্যতা আছে তার,, যে বার্বিডল কে পাওয়ার আশা করে? নিজের কাছেই নিজেকে বিরক্ত লেগে উঠে আদনানের।
★
শিশিরের বেশ হালকা লাগছে আজ। ছোয়ার মা রাজি আছে। এখন ছোয়া একটু সময় চেয়ে নিয়েছে,, নিজের সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য। এইটাই এখন একটু চিন্তার শিশিরের কাছে। শিশির জানে,, ছোয়া তাকে ভালোবাসে,, কিন্তু ছোয়ার অতীত ছোয়াকে সব সময় তাড়া করে বেড়ায়। শিশির ফোন টাহ হাতে নিয়ে কল লগে যায়।
এইদিকে………..
ছোয়া নিজের রুমে বসে আছে। কি হচ্ছে এইসব ভাবছে। শিশিরের কোনো ক্ষতি হলে যে সে নিজেকে সামলাতে পারবে নাহ। যে করেই হোক এই বিয়ে বন্ধ করতে হবে তার। এমন সময় ছোয়ার ফোন বেজে উঠতেই ছোয়া ফোন হাতে নিয়ে দেখে শিশির ফোন দিয়েছে।
কিছুটা চমকে উঠে স্নেহা। শিশির কেন ফোন দিলো তাকে? তাও নিজেকে স্বাভাবিক করে কল রিসিভ করে কানে ধরতেই ওপাশ থেকে প্রিয় মানুষটির কন্ঠ ভেসে আসে। ছোয়া সব কিছু উপেক্ষা করতে পারলেও,, শিশিরের কন্ঠ কখনোই উপেক্ষা করতে পারে নাহ। শিশির বলে ওঠে,
–” আসসালামু আলাইকুম!”
ছোয়া শান্ত ভাবে বলে ওঠে,
–” ওয়ালাইকুম আসসালাম!”
–” কেমন আছো?”
–” আলহামদুলিল্লাহ! শারীরিক ভাবে সুস্থ আছি। আর এই বিয়ের কথা বন্ধ হয়ে গেলে,, মানসিক ভাবেও সুস্থ থাকবো।”
শিশির কিছুটা মন খারাপ নিয়ে বলে ওঠে,
–” এমন করছো কেন ছোয়া? কি করেছি আমি? আমি জানি ছোয়া,, তুমি আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু,, কিছু কুসংস্কারের জন্য,, আমার থেকে সরিয়ে নিচ্ছো নিজেকে।”
ছোয়া চুপ করে আছে। শিশির আবার বলে ওঠে,
–” ছোয়া! তোমাকে আমায় ভালোবাসতে হবে নাহ। শুধু আমাকে একটু ভালোবাসতে দাও প্লিজ! ছোয়া এই বিয়েটা ভেঙো নাহ। তুমি নাহ বললে, তোমার মা হয়তো রাজি হবেন নাহ,, আমারও কিছু করার ক্ষমতা থাকবে নাহ। প্লিজ! ছোয়া! বিয়ে টাহ ভেঙো নাহ। আমার স্বপ্ন গুলোকে এভাবে শেষ করে দিও নাহ।”
ছোয়ার চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে। ছোয়া কোনোরকম ভাবে নিজেকে সামলিয়ে বলে ওঠে,
–” আমি রাখছি! আল্লাহ হাফিজ!”
শিশিরকে আর কিছু বলার সুযোগ নাহ দিয়ে ফোন কেটে দেয়। শিশির ফোন সামনে এনে দেখে ছোয়া কল কেটে দিছে। শিশির একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ফোন টাহ বিছানার উপর রেখে রুমের লাইট অফ করে দিয়ে শুয়ে পড়ে।
#_চলবে…………🌹
#_লাল_নীল_সংসার_
#_মারিয়া_রশিদ_
#_পর্ব_২০_
সময় প্রবাহমান। নদী,, সমুদ্রের ঢেউ যেমন,, বাধ্য হয়ে পাড় ভিজিয়ে দিয়ে যায়,, ঠিক তেমন ভাবে সময়কেও বাধ্য হয়ে চলে যেতে হয়। সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে নাহ,, সে চলতেই আছে আর চলতেই থাকবে।
……………….ছোয়া বিয়েতে নাহ করে নি। মিসেস. কেয়াও ছোয়াকে যথাসম্ভব বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। ছোয়া মেনে নিতে পারছিলো নাহ,, তাও আর একবার নিজের জীবনকে সুযোগ দিচ্ছে। সব মানুষের কথা উপেক্ষা করে,, বিষকন্যা পদবি ভুলে,, নিজের জীবনকে আর একবার সুযোগ দিচ্ছে সে।
রোজ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে কান্না কাটি করে ছোয়া। বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে গেছে শিশিরের পরিবার। শিশির ছোয়াকে সেরকম একটা ফোন দিচ্ছে নাহ। হয়তো,, ছোয়াকে সময় দিচ্ছে,, নিজেকে সামলিয়ে নেওয়ার জন্য। সাঝের মেডিকেল এয়াডমিশনের রেজাল্টের পর ছোয়া আর শিশিরের বিয়ের দিন তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
………………..স্নেহার সাথে ইয়াশের বিয়ের কথা বললে,, স্নেহা জানায়,, আর কয়েকমাস পর তাদের অনার্স ফাইনাল এক্সাম। শেষ হবে তার অনার্সের পড়াশোনা। তাই এখন সে কিছুতেই বিয়ে করতে চায় নাহ। এতো কষ্ট করে এতো পড়াশোনা করেছে,, তাই অনার্স লেভেল টাহ শেষ হলে বিয়ে করবে। তখন কানাডায় গিয়ে বাকি পড়া শেষ করতে পারবে। নাহলে,, শুধু শুধু ইয়ার গ্যাপ হবে তার। সবাই স্নেহার কথা মেনে নিয়েছে।
কিন্তু,, ইয়াশের সাথে স্নেহার বিয়ের কথা একদম পাকাপাকি করে রাখা হয়েছে। সবাই চেয়েছিলো এইংগেজমেন্ট করে রাখতে,, কিন্তু স্নেহা রাজি হয় নি। যাহ হবে সব পরীক্ষার পরে। অনার্স শেষ হওয়ারও বেশি দেরি নেই,, তাই কেউ আপত্তিও জানায় নি।
স্নেহা এখনও আদনানকে কিছু জানায় নি। জানাতে চেয়েছিলো,, কিন্তু কি ভেবে যেন মনে মনে ঠিক করে নিলো,, এইংগেজমেন্টের আগে আগে জানাবে। বিশেষ করে অনার্স এক্সামের পর জানাবে। তাই,, আদনানের সাথে স্বাভাবিক ভাবেই চলাফেরা করে সে। কিন্তু,, ভেতরে ভেতরে কেমন যেন যন্ত্রণা অনুভব করে স্নেহা। কাউকে হারিয়ে ফেলার তীব্র ব্যাথা অনুভব করে। কিন্তু,, কিছুই যে তার করার নেই। তাই নিজেকে সামলিয়ে রাখে স্নেহা।
……………………সাঝ সকাল থেকেই খুব চিন্তিত হয়ে আছে। আজ তার মেডিকেল এ্যাডমিশনের রেজাল্ট দিবে। ভয় লাগছে স্নেহার। সোফায় চুপচাপ বসে আছে। শিশির পাশে বসে চা পান করছে,, আদনান আরেক সোফায় বসে সাঝের রেজাল্ট জানার চেষ্টা করছে।
সাঝের পুরো শরীর দরদর করে ঘামছে। সাঝের মাথায় নানান রকম দুশ্চিন্তাও কাজ করছে। যদি মেডিকেলে চান্স নাহ পায়, তাহলে কি হবে? সব স্বপ্ন তো শেষ হয়ে যাবে। সাঝ তো জানে,, তার ভাইদের তাকে প্রাইভেট মেডিকেলে পড়ানোর সামর্থ নেই। আর তাছাড়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে,, প্রাইভেট মেডিকেল স্টুডেন্টদের মূল্যায়ন করে নাহ। সেইটাও বড় কথা নাহ,, বড় কথা হলো,, সামর্থ নেই।
আদনান ল্যাপটপ ঘাটছে সাঝের রেজাল্ট জানার জন্য। মনে মনে আল্লাহকে ডাকছে,, তার বোন টাহ যেন মেডিকেলে চান্স পায়। আদনান একপলক সাঝের দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটার চোখ মুখ চিন্তায় ছোট হয়ে আছে। আবার ল্যাপটপে মন দেয় আদনান।
ছলছল চোখে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে আছে আদনান। সাঝ শিশিরকে আকড়ে ধরে আছে। তার ভাইয়া তার সব থেকে বড় শক্তি। আদনান সাঝের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দেয়। সাঝ এই হাসির কোনো অর্থ বুঝলো নাহ। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আদনানের দিকে।
শিশিরের যেন আর তর সইছে নাহ। আদনানের কাছের থেকে ল্যাপটপ টাহ নিয়ে নেয় শিশির। মনে হচ্ছে,, সাঝের নাহ,,শিশিরের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সাঝও একটু এগিয়ে আসে শিশিরের দিকে। শিশির,, সাঝ দুইজনেই ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে ল্যপটপ স্ক্রিনের দিকে। ল্যাপটপ স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে,,,,,,,,,,,
Name : Shajh Rahman.
Medical Reg. No : 15326…
Marit List : 2
Earned Marks : 98.7
Selected Medical College : DMC
শিশির নিজেই সাঝকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়। সাঝও কান্না করে দেয় শিশিরকে জড়িয়ে ধরে। আদনানের চোখও ছলছল করে উঠে। ওদের কান্নার আওয়াজ শুনে,, আহিয়া রহমান আর আজিজ রহমান দৌড়ে আসে। আহিয়া রহমান আদনানের দিকে তাকিয়ে চিন্তিত গলায় বলে ওঠে,
–” কিক কি হয়েছে?”
আদনান চোখে জল মুখে হাসি নিয়ে মায়ের কাছে এগিয়ে আসে। আহিয়া রহমান কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে,
–” সাঝ মেডিকেলে চান্স পেয়েছে মা! আমাদের বোন একদিন অনেক বড় ডাক্তার হবে। ওর স্বপ্ন পুরনের চাবি হাতে পেয়ে গেছে মা!”
আদনানের কথা শুনে আহিয়া রহমান আর আজিজ রহমানের চোখে পানি চলে আসে। মেয়েটাহ অনেক খেটেছে। স্বপ্ন পুরনের পথে এগিয়েছে। রহমান পরিবারের সব থেকে বড় সুখ উপস্থিত হয়েছে। শুধু সাঝের স্বপ্ন নাহ,, রহমান পরিবারের সবার স্বপ্ন রঙিন হতে চলেছে।
★
শিশির ছোয়ার বিয়ে ঘরোয়া ভাবে দেওয়া হবে বলেই,, দুই পরিবারের মতামত। শিশির নিজেও চায় নাহ ধুমধাম করে বিয়ে করতে,, ছোয়ারও একই মতামত। তাই বর,, কনের মতামতের উপর ভিত্তি করে ঘরোয়া অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেয় দুই পরিবারের গুরুজনেরা।
কিন্তু,, আহিয়া রহমান নিজের দুই ছেলের বউয়ের জন্যই সোনার তৈরি একটা আংটি,, গলার চেইন একটা,, আর কানের এক জোড়া দুল গড়ে রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন,, আলাদা করে আংটি বদলের অনুষ্ঠান করবেন,, আর সেখানে এই আংটি দিবেন,, বিয়ের দিন একটা নাকফুল আর কানের দুল জোড়া দিবেন আর বধু বরন করে তোলার সময় চেইন দিয়ে বউ ঘরে তুলবেন।
তাই আহিয়া রহমানের মনের আশাও পূর্ন করার জন্য বিয়ের এক সপ্তাহ আগে আংটি বদলের ছোট্ট অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। শুধু পরিবারের মানুষগুলো। আংটি বদল অনুষ্ঠানে শিশিরের পরিবার আর ছোয়ার পরিবার সহ এক খালা এবং এক খালাতো বোন।
শিশিরের বাসার সবাই ছোয়াদের বাসায় যাওয়ার জন্য রেডি হয়েছে। শিশিরের আজ অন্যরকম আনন্দ হচ্ছে। আজ ছোয়াকে আংটি পরাবে। আজ থেকে ছোয়া তার বাগদত্তা হিসাবে পরিচয় পাবে এক সপ্তাহের জন্য। আর তারপরই পরিচয় পাবে তার বউ হিসাবে। ভাবতেই এক শান্তি লাগছে শিশিরের।
এইদিকে…….
ছোয়া নিজের রুমে আয়নার সামনে বসে আছে। তার পরনে একটা গাঢ় নীল রং এর শাড়ি,, চোখে মোটা করে কাজল,, ঠোটে হালকা লিপস্টিক,, চুলগুলো খোপা করে গজরা লাগানো,, সাথে হালকা গয়না,, অসম্ভব মায়াবী লাগছে ছোয়াকে।
ছোয়াকে সাজিয়ে দিচ্ছে রিংকি ( ছোয়ার খালাতো বোন )। ছোয়ার সাজ প্রায় শেষের পথে। রিংকি আয়নার দিয়ে ছোয়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” বুবুন! তোকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।”
ছোয়া হালকা হাসে। এমন সময় স্পন্দন দৌড়ে আসে। ছোয়া স্পন্দনের দিকে তাকাতেই বুক টাহ ধুক করে উঠে। কারন,, স্পন্দনের চোখে পানি। ছোয়া ভাইকে কাছে টেনে নিয়ে চিন্তিত কন্ঠে বলে ওঠে,
–” স্পন্দন! ভাই আমার। কি হয়েছে তোর? কান্না করছিস কেন?”
স্পন্দন কান্না ভেজা কন্ঠে বলে ওঠে,
–” বুবুন! খালামনি বললো,, তোমার বিয়ে হয়ে গেলে তুমি নাকি পর হয়ে যাবে। এই বাড়িতে খুব একটা আসবে নাহ। আমাকে মায়ের দেখাশোনা করতে বলেছে। তুমি কি আমাকে ছেড়ে একদম চলে যাবে,, বুবুন? ভুলে যাবে আমাকে?”
ভাইয়ের মুখে এইসব কথা শুনে ছোয়ার বুকের ভেতর যন্ত্রণা হয়। সত্যিই তো,, তার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। সেই বাড়িকে আপন করে নিতে হবে তাকে। সব সময় ভাইয়ের সাথে,, মায়ের সাথে আর থাকা হবে নাহ তার। এ কেমন জীবন মেয়েদের? একদিকে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখে,, অন্যদিকে নিজের মানুষদের ছেড়ে যেতে কষ্টও লাগে। ছলছল করে উঠে ছোয়ার চোখ।
ছোয়ার বুকের ভেতর একটা চাপা যন্ত্রণার সৃষ্টি হচ্ছে। সত্যি বলতে,, শিশিরকে স্বামী হিসাবে পাওয়ায় ছোয়া আনন্দিত কিন্তু,, নিজের পরিবার ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট যেন বুকের মাঝে হানা দিচ্ছে তার। ছোয়া এক হাত দিয়ে ভাইকে কাছে টেনে নেয়। তারপর ভাইয়ের চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলে ওঠে,
–” কে বলেছে? আমি তোর বুবুন, তোর বুবুনই থাকবো। তোর যখন যা দরকার হবে,, শুধু আমাকে একটু কল দিয়ে বলবি। দেখবি তোর বুবুন,, সব হাজির করেছে। যখন মনে পড়বে,, ভিডিও কল দিবি। ঠিক আছে?”
–” সত্যি?”
ছোয়া স্পন্দনের কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে ওঠে,
–” একদম।”
স্পন্দন মুচকি হাসি দেয়। ভাইয়ের এমন হাসি দেখে বুক টাহ যেন ভরে যায় ছোয়ার। এমন সময় মিসেস. কেয়া ভেতরে আসে। মিসেস. কেয়া ছোয়ার দিকে তাকিয়ে একটা সন্তুষ্টির হাসি দেয়। মেয়েটা যে এমন একটা জীবন পাবে,, ভাবতেই পারেন তিনি। মিসেস. কেয়া এগিয়ে এসে স্পন্দনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে ওঠে,
–” স্পন্দন! বাবা! বাইরে যাও। মেহমানদের সাথে গিয়ে দেখা করো। যাও।”
স্পন্দন মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ওনারা চলে এসেছেন?”
–” হুম!”
স্পন্দন এক দৌড়ে বাইরে চলে যায়। ওদের আসার কথা শুনে,, ছোয়া,কিছুটাহ কেঁপে উঠে। নিজের হাতের দিকে তাকায়। কোনো আংটি পরে নি আজ ছোয়া। শিশিরের পরানো আংটি সে আজ পরবে। তার উপর শিশিরের একটা অধিকার চলে আসবে। আর কয়েকদিন পর তাদের বিয়ে হবে। সংসার হবে তাদের। কিছুটাহ শিউরে উঠে ছোয়া!!!
#_চলবে…………🌹
{{ হ্যাপি রিডিং…..!!!❣️ }}