শত ঘৃণার পরেও ভালোবাসি পর্ব-১৮

0
880

#শত_ঘৃণার_পরেও_ভালোবাসি (এক ভালোবাসার গল্প)
#Maishara_Jahan
Part………..18

মা,,,,,,,,, খাবার লাগিয়েছি সবাই খেয়ে আয়।সবাই মানে সবাই, এখানে আর কোনো কথা হবে না।রিমান তোমার বন্ধুকে নিয়ে এক মিনিটের মধ্যে আসো।

আহান,,,,,,,,,, আমার খিদে নেই, রিমান আমি খাবো না।

আহানের মা আহানের দিকে বাঘিনীর মতো তাকায়। আহান তার মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে, রিমানের দিকে ফিরে,,ফিরে রিমানের কাঁধে হাত রেখে বলে,,,,, আমার খিদে ছিলো না, কিন্তু এখন অনেক ক্ষুধা লেগেছে চল খেয়ে আসি।

বলে রিমানের কাঁধে ধরে নিয়ে যায়। নিয়ে টেবিলে বসে।

রিমান,,,,,,,, আমি খাবো না।

আহান,,,,,,রাগ পরে করিস আগে খেয়ে নেয়।

দিয়া রুহিকে নিয়ে নিচে আসে৷

মা,,,,,,,, তোরা দুজন ও বসে পর।

রিমান রুহির দিকে তাকায় কিন্তু রুহি তার নিজের মতো থাকে, রিমানের দিকে ভুলেও তাকায় না। আহানের মা সবাইকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে। ওর আহানের চাচা চাচারা শুধু বসে বসে এটা সেটা অর্ডার করছে।

আহান খাচ্ছে তার মা এভাবে কাজে দৌড়া দৌড়ি করছে বলে,, একবার তার মার দিকে তাকাচ্ছে, একবার তার চাচা চাচাদের দিকে। আহান চামচটা একটু জোরে প্লেটে রাখে। সবাই আহানের দিকে তাকিয়েই বুঝে যায়, আহান রেগে আছে। তখন সবাই একটু শান্ত হয়ে যায়।

আহান,,,,,,,, বাহহ আমি যাওয়ার পরে কি তোমরা এতোই গরীব হয়ে গেছো যে খাবার সার্ভ করার জন্য কোনো সার্ভেন্ট রাখো নি।

চাচা,,,,,,,,,, বাড়িতে এমনি অনেক কাজের লোক আছে, আজি নেয়।

রুহি,,,,,,,,,, ভাইয়া রান্না করার আর খাবারের সার্ভেন্টকে চাচি বিদায় করে দিয়েছে, এটা বলে যে, কাজের লোকের হাতের রান্না নাকি ভালো লাগে না৷ আর এতো লোক রাখার দরকার নেয়।এইসব ছোট খাটো কাজ বাড়ির সবাই মিলে করে নিবে। কিন্তু মাকে সব একাই করতে দেখি।

মা,,,,,,,,,,চুপ কর,, তাছাড়া বাড়িতে অনেক কাজের লোক আছে, রান্না করা কোনো কাজ হলো নাকি,, রান্না করতে তো আমার ভালোই লাগে।

রুহি,,,,,,,,,, সারা দিন তোমাকে রান্না ঘরেই দেখি,, সবাই একটু পর পর এটা খাবে ঐটা খাবে বলে অর্ডার দেয়, যেনো এটা কোনো রেস্টুরেন্ট। (খাবার খেতে খেতে)

বাবা,,,,,,,,এসব কি সত্যি। (সবার দিকে তাকিয়ে)

চাচি,,,,,,,,, আরে ভাইসাব রুহি তো যা ইচ্ছে তাই বলে, আমরা কি আহানের মাকে জোর করি নাকি।

মা,,,,,,,,আহহ চুপচাপ খাও তো সবাই,, আমার কোনো সমস্যা নেয়, তাহলে আর কার কি সমস্যা। সবাই চুপচাপ খাবার খেতে থাকে।

একটু পর আহানের চাচাতো এক ভাই আসে।

মা,,,,,,,, আরে মানিক আয় বাবা খেয়ে নে।

মানিক,,,,,,,,, বড় মা, আমি তোমাকে কতোদিন বলেছি, আমার খাবারটা আমার রুমে দিয়ে আসবে, আর হ্যাঁ ঐ বেশি তেল ওয়ালা ভাত মাছ মাংস আমাকে দিয়ো নাতো, আমার জন্য কিছু হেলদি খাবার নিয়ে আসো।

বলে সোজা উপরে চলে যায়, সবাই ভয়ে আহানের দিকে তাকায়, আহান চুপচাপ খাবার খাচ্ছিলো, কিন্তু চেহেরায় রাগটা দেখা যাচ্ছিলো।

সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে একটু সোফায় বসে। কিছু ক্ষন পর দিয়া রুহিকে রুমে রেখে আসছিলো তখন চাচি দিয়াকে আটকায়।

দিয়া,,,,,,,জ্বি চাচা কিছু লাগবে।

১ম চাচি,,,,,কিছু লাগলে আমরা নিয়ে নিবো তোকে বলতে যাবো না, কারন আমরা তোর বাড়িতে না তুই আমাদের বাড়িতে থাকস।

দিয়া,,,,,,,, তাহলে আমাকে কেনো আটকালে।

২য় চাচি,,,,,,,,, এটা বলার জন্য, তুই কি আহানের সাথে থাকিস।

দিয়া,,,,,,,,তোমাদের কে বলেছে।

১ম,চাচি,,,,,,, আমাদের সব খবর পৌঁছে যায়,কে কি করছে না করছে।

দিয়া,,,,,,, তাহলে জিজ্ঞেস কেনো করছো, জানোই তো।

২য়,,,,,,,,আবার মুখে মুখে তর্ক করছে,,, আমি আগেই বলেছিলাম এক হাতে তালি বাঝে না। নিশ্চয়ই এর চরিত্রে কোনো খুট আছে তাই তো আমাদের ছেলের মাথা খারাপ করে দিয়েছে।

দিয়া,,,,,,,,, চাচি (চোখে পানি নিয়ে)

১চাচি,,,,,,,, ধমক দিস কাকে,, লজ্জা করে না, যে ধর্ষণ করতে চেষ্টা করেছে তার সাথে থাকিস, কতো টাকা দিয়েছে তোকে।

আহান,,,,,,,আমি বলছি কতো টাকা দিয়েছি।

সবাই আহানের দিকে তাকিয়ে ভয়ে চুপ হয়ে যায়।আহান দিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,, দিয়া তুই যা আমি চাচিদের বলছি তোকে কতো টাকা দিয়েছি।

দিয়া,,,,,,,,, বলছি কি এসবের দরকার নেয়।

আহান,,,,,,তোকে যেতে বলছি (শক্ত গলায়)

দিয়া ভয় পেয়ে চলে যায়।

চাচি,,,,,,,,আমরা তো এমনি বলছিলাম।

আহান,,,,,, সেটা তো আমি শুনতেই পেলাম। দিয়াকে নিয়ে কিছু বলার আগে আমার কথাটা মাথায় রেখো। আমি কিন্তু ঠিক আগের মতোই আছি। আর আমার রাগটাও কিন্তু আগের মতোই আছে আর দিয়ার প্রতি ভালোবাসাটাও।

চাচি,,,,,,,,,তুই কি আমাকে হুমকি দিচ্ছিস,, মনে রাখিস এখন কেও তোকে আগের মতো এই বাড়ির ছেলে মানে না।

আহান,,,,,,,,, আমি এখান থেকে চলে গেছি মারা যায়নি। আর চাইলে আবার ফিরেও আসতে পারি।আর এবাড়িতে না থেকে ও এই বাড়ির লোকদের ও কন্ট্রোল করতে পারি। সো মনোযোগ দিয়ে একটা কথা শুনো, কাল সকালেই সার্ভেন্ট যেনো এসে পড়ে। আর মাকে দিয়ে যদি কোনো কাজ করাতে দেখি তাহলে বুঝতেই পারছো। এই বাড়িটা কিন্তু আমার মা বাবার মনে থাকে যেনো।

এটা বলে যেতে নেয়, আবার পিছনে ফিরে বলে,,,,,,আর হ্যাঁ তোমার ছেলেকে বলে দিয়ো ভালো কিছু খেতে ইচ্ছে করলে তোমাকে বলতে আনার মাকে না অর্ডার দিতে। আর একবার দেখলে সহ্য করবো না।মনে থাকে যেনো।

বলে আহান চলে যায়। চাচিরা রাগে কটমট করে চলে যায়।

রিমান রুহির রুমে যায়। রুহি রিমানকে এক নজর দেখে আবার আয়নার নিজের দিকে তাকিয়ে চুল আঁচড়াতে থাকে।

রিমান,,,,,,,,, তাকিয়ে দেখবি না কে এসেছে।

রুহি,,,,,,,, এক সময় যার পায়ের শব্দ শুনে বুঝে যেতাম কে,, এখন তাকে আর দেখতে ইচ্ছে করে না। কেনো এসেছেন আমার রুমে।(নিজের দিকে তাকিয়ে)

রিমান রুহিকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে,,,,,,,আমার দিকে দেখে কথা বল।

রুহি,,,,,,,,, কেনো, আপনার দিকে দেখে কেনো কথা বলতে হবে আমাকে।

,,,,,,,,, এখানে তো কেও নেয় তাহলে আপনি আপনি করছিস কেনো।

,,,,,,,,,, আমি কোনো পর পুরুষকে তুমি বলে ডাকি না।

,,,,,,,তাহলে কাকে ডাকবি ঐ সৌরভকে।

,,,,,,হুমম তাকেই ডাকবো কারন কিছু দিন পরে ও আমার হাসবেন্ড হবে। আর আমার সব ভালোবাসা আমি তাকেই দিবো।

রিমান রাগে রুহির বাহু দুটো চাপ দিয়ে ধরে। রুহি ব্যাথা অনুভব করে বলে,,,,,, হাতের চাপটা হঠাৎ বাড়িয়ে দিলেন যে, আপনার হিংসে হওয়ার তো কোনো কারন নেয়। আর আপনার হাতটা সরান পিল্জ আমারকে অন্য কেও টাচ করোক আমি তা চাই না।

চলবে,,,,,,,