শত ঘৃণার পরেও ভালোবাসি পর্ব-২০

0
946

#শত_ঘৃণার_পরেও_ভালোবাসি (এক ভালোবাসার গল্প)
#Maishara_Jahan
Part………..20

রিমান,,,,,,,,(আমি জানি তুই কেনো এসেছিস,আর তোর চোখের পানি বলে দিচ্ছে তুই কতোটা কষ্ট পেয়েছিস, মেরিন আমাকে কিস করার সময় আবার দেখে ফেলেনি তো, হয়তো বা)

সকালে রুহি ঘুম থেকে উঠে, কয়েকটা টানা দেয়। মিটি মিটি করে তাকিয়ে আস্তে আস্তে করে বের হয়। রুহি নিচে যেতেই ওর মা ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে। রুহি সেদিকে খেয়াল না করে এগোতে থাকে তখন দেখে তার বাবাও রাগী চোখে রুহির দিকে তাকিয়ে আছে।

রুহি,,,,,,,,,কি হয়েছে তোমরা আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।

মা,,,,,,,,,,,রাতে তোকে রিমান কোলে করে নিয়ে এসেছিলো বাসায়।

রুহির কালকের কথা মনে পড়ে, রুহি একটু চুপ থেকে আবার বলে,,,,,,,,,হুমম তাতে কি হয়েছে, রিমান ভাইয়াকে কি তুমি চিনো না, আমার একটু খারাপ লাগছিলো তাই গাড়িতেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। তাই রিমান ভাইয়া দিয়ে গেছে এতে সন্দেহের কি আছে।

বাবা,,,,,,,রিমানের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে, কিন্তু তুমি কেনো এতো রাতে ক্লাবে গেলে, এই শিক্ষা দিয়েছি তোমাকে হুমম (একটু রেগে)

রুহি,,,,,,,,,, ক্লাবে আমি,,, আরে দূররর কথা বলেছে আমি কেনো ক্লাবে যাবো।

রুহি মা রুহিকে খুন্তি দিয়ে মারতে আসে, রুহি কিছুটা পিছিয়ে যায়, কিন্তু পায়ে ব্যাথা তাকার কারনে দৌড় ও দিতে পারছে না।

খুন্তি দিয়ে রুহিকে ভয় দেখিয়ে বলে,,,,,,,, রাতে ক্লাবে যাওয়া তাই না, তেল দিয়ে দিয়ে মাথায় উঠিয়েছে ওর বাবা তোকে।

বাবা,,,,,,,এতে আমার দোষ কোথায়।

মা,,,,,,, সব দোষ তোমার, আরো লাই দাও মেয়েকে, কিছু দিন পরে ওর বিয়ে আর ও ক্লাবে গিয়ে নেচে গেয়ে বেড়াচ্ছে, তাও আবার ভাঙা পা নিয়ে। আজ থেকে তোর গুড়া গুড়ি বন্ধ বলে দিলাম।

রুহি,,,,,,,, মা তুমি বাবাকে তুই করে বলছো।

মা,,,,,,,একটা থাপ্পড় মেরে তোর দাঁত ফেলে দিবো বলে দিলাম,, এই কথাটা তোকে না তোর বাবাকে বলেছি।

রুহি,,,,,,,,,, আল্লাহ কি বলো তুমি বাবাকে মারবে।

এটা বলে দৌড় নিতে নেয় কিন্তু সে ভুলে গেছে তার পায়ে ব্যাথা তাই আর পারে না, আর মায়ের খুন্তি রুহির পিঠে পড়ে।

বাবা,,,,,,,,,,, সত্যি সত্যি আমার মেয়েকে মেরে দিলে।

রুহি,,,,,,,,,, বাবাআআ ( কান্নার ভাব করে)

মা,,,,,,,,,দুজনের মধ্যে কেও নাটক করলে দুজনের খবর আছে। আর তুই রুহি আর কোনো দিন যদি দেখে ক্লাবে যেতে তাহলে খবর আছে।

রুহি,,,,,,,,,, কে বলেছে যে আমি ক্লাবে গেছি।

মা,,,,,,রিমান বলেছে যে তোকে ক্লাব থেকো জোর করে নিয়ে এসেছে, ইচ্ছে তো করছে তোকে আরেকটা দিয়।(খুন্তি উঠিয়ে)

রুহি,,,,,,,,,,,(ছাড়বো না তোমাকে শয়তান) আচ্ছা আমাকে নাস্তা দাও আমি রেডি হয়ে হসপিটালে যাবো, অনেক দিন হলো যায় না।

মা,,,,,,,,,, হুমম,, আবার অন্য কোথাও যাস না,,, দাঁড়া আমি সৌরভকে ফোন করে আসতে বলছি। ও এসে তোকে নিয়ে যাবে।
,,,,,,,,,
আহান আস্তে আস্তে চোখ খুলে তার একদম সামনে দিয়াকে দেখে চমকে উঠে বসে পড়ে।

আহান,,,,,,,,, এভাবে কেও ঘুম থেকে জাগায়।

দিয়া,,,,,,,,, আরে দূরর আমার লেইট হয়ে যাচ্ছে আর আপনার উঠার নামি নেয়। উঠেননন (বসে আহানের হাত ধরে ঝাকিয়ে।)

আহান হাতটা টান দিয়ে সরিয়ে নেয়, আর দিয়া ঝাটকায় বিছানায় শুয়ে পড়ে। আহান দিয়ার পাশে মাথা তার হাতে রেখে দিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,, আমার বিছানায় শুয়ার এতো তাড়া তোর জানতাম না তো।

দিয়া,,,,,,,, জ্বি না,,, আমি তো পড়ে গেলাম।

,,,,,,,,,, প্রথমে জ্বি বলে পড়ে না করছিস, কোনটা আগে ধরবো।

,,,,,,,,,, না আগে ধরবেন।

,,,,,,,,, কেনো,, তুই না পরে বলেছিস তাই সেটার কোনো মূল্য নেয়।

,,,,,,,,, এতো বেশি বুঝেন কেনো।

,,,,,,,,,, তুই তো আমার থেকে বেশি বুঝিস ডক্টর বলে কথা।

,,,,,,,,,, মানেহহ,,কি বলতে চান আপনি।

,,,,,,,,,, আমি যেটাই বলি তুই আমাকে আপনি বলা বন্ধ কর।
,,,,,,,, তো কি বলবো।

,,,,,,,,,,, তুমি করে বলবি।

,,,,,,,,, কেনো, আপনি তো ভালোই লাগে।

,,,,,,,,,কোনো গার্লফ্রেন্ডকে দেখেছিস তার বয়ফ্রেন্ডকে আপনি বলে ডাকতে।

,,,,,,,,, হেহহ আমি আমার বয়ফ্রেন্ড হলেন কবে।

,,,,,,,,,, কেনো আমি বয়ফ্রেন্ড হিসাবে খারাপ।

,,,,,, না।

,,,,,,,তার মানে ভালো,, সো তুই আমাকে তুমি বলে ডাকবি, কি বলে (দিয়ার কাছে গিয়ে)

দিয়া ধীর গতিতে নিশ্বাস নিয়ে বলে,,,,,,,,,,, তুমি বলে।

,,,,,,,, আর হ্যাঁ সবার সামনেও তুমি বলেই ডাকতে হবে, যদি এর উল্টো হয়, তাহলে এর শাস্তি কিন্তু তোর জানা আছে।

,,,,,,,,,,, আপনি, না মানে তুমি একটু দূরে সরে কথা বলবা।
,,,,,,,,,,,,, কেনো,, কোনো কিছু ফিল হচ্ছে তোর (আরেকটু কাছে গিয়ে)

,,,,,,,,, না,, কি ফিল হবে।

,,,,,,,,,, তাহলে হার্ট বির্ডের আওয়াজ এতো বেশি আসছে কেনো, আর নিশ্বাস এতো ঘন হয়ে গেছে কেনো। আর তুই এতো ঘামছিস কেনো।

,,,,,,,,,,,,,,,, এমনি গ গরমে ঘামছি।

,,,,,,,,,,, আচ্ছা, এসি রুমে গরম লাগছে তোর।

আহান তার মুখ দিয়ার কানের কাছে নিয়ে বলে,,,,,,,, আমার তো শীতে তোকে জরিয়ে ধরে ঘুমাতে ইচ্ছে করছে। (বলে আহান তার ঠোঁট দিয়ার কানে হালকা ভাবে ছুঁয়ে দেয়, দিয়া কেঁপে উঠে, বিছানার চাদর মুঠ করে ধরেছে)

আহান তার মাথাটা হালকা উঠিয়ে বলে,,,,,,,, এখনো শুয়ে আছিস মানে আমার আরো কিছু করার আশায় শুয়ে আছিস, আমি কিন্তু বিয়ের আগে এসব কিছু করতে চাই না কিন্তু তুই চাইলে,,,

দিয়া আহানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দৌড় দেয়। আহান বিছানায় শুয়ে শুয়ে হাসতে থাকে। একটু পর আহান রেডি হয়ে নিচে আসে, এসে দেখে দিয়া কটমট করে তাকিয়ে আছে। আহান কিছু বুঝে উঠার আগেই পেটি গিয়ে আহানে জরিয়ে ধরে।

দিয়া রাগে কটমট করছে, মনে হচ্ছে দুজনকে এখনি গিলে খাবে।

পেটি,,,,,,,,,,আহান তুমি আমার সাথে দেখা কেনো করো না, আমার কল, মেসেজ এর রিপ্লাই দাও না কেনো,, ঐ দিনের জন্য আম সরি,,আমি নেশা করা ছিলাম তাই নিজের হুশে ছিলাম না। তাছাড়া কিছু দিন পরে তো আমাদের বিয়ে হবে তাই না।

আহান পেটিকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে বলে,,,,, আমার হবু বউ এর সামনে তুমি আমাকে এভাবে জরিয়ে ধরলে তার খারাপ লাগবে আর আমি সেটা চাই না।

পেটি,,,,,,,,,, হবু বউ মানে,, কে তোমার হবু বউ।

আহান,,,,,,,,,, এই যে দাঁড়িয়ে আছে। (দিয়ার দিকে ইশারা করে)

দিয়া আর পেটি দুজনেই অভাক।

পেটি,,,,,,,,, এ,, কিভাবে,, ও তো একটা কাজের লোক।

দিয়া,,,,,,,,, এক্সকিউজ মি,, আমি কাজের লোক না, আমি কিছু দিন পরে ডক্টর হবো বুঝলে।

পেটি,,,,,,,, আহান ও তোমার যোগ্য না।

আহান,,,,,,,সেটা আমি বুঝে নিবো। বেবি আমার খাবারটা লাগিয়ে দাও।

আহান টেবিলে বসে, দিয়া দাঁড়িয়ে আছে, বেবি কাকে বললো বুঝার চেষ্টা করছে। আহান দিয়ার দিকো তাকিয়ে ইশারা দিয়ে বলে,,,,,,, বেবি দাঁড়িয়ে আছো কেনো।

পেটি রাগ দেখিয়ে চলে যায়, দিয়া দাঁড়িয়ে পেটির যাওয়া দেখছে, আহান একটু শব্দ করে, দিয়া আহানের দিকে তাকায়, আহান ইশারা করে খাবার আনতে বলে, দিয়া খাবার নিয়ে আসে। খাওয়া দাওয়া শেষে দুজনে বেরিয়ে পড়ে।

সৌরভ রুহিকে নিয়ে হসপিটালে আসে, সাথে আহান আর দিয়াও আসে।

আহান,,,,,,,এখন কেমন আছিস।

রুহি,,,,,,,, ভালো।

আহান,,,,,,,, কালকের কথা বেশি ভাবিস নি তো আবার,, আর অপরাধ বোধ করিস নি তো।

রুহি,,,,,,,, যে কাজ আমি করিনি তার জন্য অপরাধ বোধ কেনো করবো।

আহান,,,,,,,মানে।

রুহি সব বলে, আহান খুশি হয়ে বলে,,,,,,,তাহলে তো একথা এখনি জানানো লাগে রিমানকে।

রুহি,,,,,,, কোনো দরকার নেয় ভাইয়া, তুমি রিমানকে দয়া করে কিছু বলবা না।

দিয়া,,,,,,,কিন্তু কেনো।

রুহি,,,,,,,,, আমি কারো মনে ঘৃনার মাঝে ভালোবাসা ফুটাতে চাই না। ও নিজের মতো ভালো আছে, আমি নিজের মতো করে আছি, আমি চাই না সব কিছু উল্টা পাল্টা হয়ে যতো। পিল্জ দয়া করে বলবা না।

আহান,,,,,,,যেমন তোর ইচ্ছা। আচ্ছা আমি আসি, দিয়া তুই রুহির খেয়াল রাখিস, সৌরভ তুমি দুজনের খেয়াল রেখো।

সৌরভ,,,,,,,,, হুমম।

সবাই হসপিটালে যায়, রুহি চুপচাপ বসে থাকে, মুখে কোনো হাসি নেয়, কারো সাথে কোনো কথা বলছে না।

সৌরভ,,,,,,,,, রুহি তোমার কি মন খারাপ।

রুহি,,,,,,,, না।

সৌরভ,,,,,,,, তাহলে ঠিক আছে, আজ ছুটির পরে আমরা দুজন একটু এমনি ঘুরে আসবো। তুমি কি যাবে আমার সাথে।

দিয়া,,,,,,,, হ্যাঁ ও যাবে, আমি পার্মিশন দিয়ে দিয়েছি, ও অবশ্যই যাবে।

রুহি,,,,,,, কিন্তু।

দিয়া,,,,,,,কোনো কিন্তু নেয়।

ক্লাস ছুটি হয়ে যায়, আহান দিয়াকে নিতে আসে।

সৌরভ,,,,,,, চলো রুহি, ঘুরে আসি। বায় দিয়া, আহান।

ওরা দুজন গাড়ি করে চলে যায়।

আহান,,,,,,,, ওরা ঘুরতে যাচ্ছে, চল তোকেও ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

দিয়া,,,,,,,,, সত্যি,, কোথায়।

আহান,,,,,,,,, আমার মনের শহরে।

,,,,,,,,,, সেখানে তো আমি রোজ গুড়ি, এটা আবার নতুন কিভাবে হলো।

,,,,,,,,, ঠিক চল তোকে এই শহরেই ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।

,,,,,,,,,হুমম চলো। (আহানের হাত ধরে)

,,,,,,, অলে বাবারে এতো সুইট করে।

,,,,,,,,,, হুমম।
,,,,,,,

সৌরভ রুহিকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে যায়, সেখানে গিয়ে দুজনে বসে। শুধু সৌরভ কথা বলছে রুহি শুধু হুমম,,হ্যাঁ তে জবাব দিচ্ছে। একটু পরে সৌরভ কতো গুলো ফুল নিয়ে নিচে হাঁটু গেড়ে বসে রুহিকে প্রপোজ করছে।

সৌরভ,,,,,,,,, আমি তোমাকে অনেক বছর ধরে ভালোবাসি কিন্তু বলতে পারিনা। কিছু পরে আমাদের বিয়ে তাও এটা আমার ইচ্ছে ছিলো, পিল্জ এক্সেপ্ট করো।

রুহি না চাইতেও ফুল গুলো নিতে হাত বাড়ায়, তখন তার চোখ যায় সামনের টেবিলে পায়ের উপর পা উঠিয়ে বসে রুহির দিকে তাকিয়ে থাকা রিমানের উপর।

রুহি রিমানের দিকে তাকিয়ে ফুল গুলো নিয়ে নেয়, আর সাথে সাথে সবাই হাত তালি দেয়। সাথে রিমান ও হাতে তালি দেয়,রুহির দিকে তীক্ষ্ণ ভাবে তাকিয়ে।

রুহি,,,,,,,, ধন্যবাদ সৌরভ,, আমার খুব ভালো লেগেছে এভাবে প্রপোজ করায়। যদি আমি জানতাম তুমি আমাকে এতো ভালোবাসো তাহলে আমি আগেই রাজি হয়ে যেতাম নিজের সময় বরবাদ না করে। (রিমানের দিকে তাকিয়ে বলে)

কিছু ক্ষন পরে মেরিন আসে, মেরিনকে দেখে রিমান দাঁড়ায়, মেরিন রিমানকে হাগ করে। রিমান রুহিকে দেখিয়ে জরিয়ে ধরে। রুহি ওদের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়।

রিমান,,,,,,,,,, আজ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে মেরিন।

রুহির চোখে হালকা পানি এসে যায়।

সৌরভ,,,,,,, রুহি কি হয়েছে তোমার, এমন লাগছে কেনো।

রুহি,,,,,,,,,, না, মনে হয় আমার চোখে কিছু গেছে, আমি একটু ওয়াশ রুম থেকে আসছি।

সৌরভ,,,,,, চলো আমি তোমাকে দিয়ে আসছি।

রুহি,,,,,,,, ইটস ওকে, আমি একা যেতে পারবো, এতোটাও ব্যাথা নেয় পায়ে।

রুহি তাড়াতাড়ি উঠে যেতে নেয়, আর একটা ওয়েটার এর সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়, কাঁচের গ্লাস ভেঙে এক টুকরো রুহির হাতে গেলে কেটে যায়। সৌরভ আসে রুহিকে ধরার জন্য, রিমান রুহিকে পড়ে যেতে দেখে দৌড়ে যায় রুহির কাছে। রিমান রুহিকে ধরে,,,,,

রিমান,,,,,,,,,, দেখে চলতে পারিস না, কতোটা হাত কেটে গেছে, রক্ত বের হচ্ছে।

রুহি,,,,,,,,, আমি ঠিক আছি, এটা তেমন কিছু না।

সৌরভ,,,,,,,, এতোটা কেটে গেছে আর তেমন কিছু না। এখনি ব্যান্ডেজ করা লাগবে।

সৌরভ একটা রুমাল বের করে হাতে বেঁধে দিয়ে বলে,,,,,পাশেই একটা হসপিটাল আছে চলো, সেখানে নিয়ে যায়।

মেরিন,,,,,,,, তুমি রুহিকে নিয়ে যাও আমি আর রিমান থাকছি।

রিমান,,,,,,, কি বলছো রুহির এই অবস্থা আর আমি এখানে থাকবো।

রুহি,,,,,,,,,, আপনার যাওয়া লাগবে না, সৌরভ আছে তো, ও আমার খেয়াল রাখবে, আপনি বরং এনজয় করুন।

বলে রুহি রিমানের হাত ছেড়ে দিয়ে সৌরভের ধরে, সৌরভ রুহিকে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, রুহি হাঁটতে পারছে না, ব্যাথায় চোখ দিয়ে পানি চলে এসেছে। কোনো রকম হাটছে।

রিমান এটা দেখতে না পেয়ে রুহির কাছে গিয়ে রুহিকে কোলে নিয়ে হাটতে থাকে।

সৌরভ আর মেরিন তাকিয়ে আছে। কিন্তু রিমান রুহিকে নিয়ে অনেক তাড়াতাড়ি হেঁটে লিফটের দিকে যাচ্ছে।

রুহি,,,,,,,, ছাড়ুন আমাকে।

রিমান,,,,,,, চুপ থাক, বেশি কথা বললে এখানেই ফেলে দিবো বলে দিলাম। যেভাবে তোর সৌরভ তোকে নিয়ে যাচ্ছিলো সেভাবে হসপিটালে যেতে যেতে তোর শরীরের সব রক্ত ঝড়ে যেতো।

বলে লিফটে উঠে নিচে নেমে রুহিকে কোলে নিয়ে যাচ্ছে সবাই তাকিয়ে আছে। রুহি রিমানের দিকে তাকিয়ে আছে।

রুহি,,,,,,,,,(মাঝে মাঝে মনে হয় শত ঘৃণার মাঝেও তুমি আমাকে ভালোবাসো, না হলে এতো চিন্তা কে করে। কিন্তু আমার অভিমানটা যে বড্ড বেশি, আমি তোমার ভালোবাসাটা এখন বুঝছি না, চোখ যেটা দেখে সেটা বিশ্বাস করবো নাকি মন যেটা বলে সেটা)

রিমান রুহিকে নিয়ে এসে গাড়িতে বসিয়ে চলে যায়,মেরিন চর সৌরভ নিচে এসে দুজনের কাওকেই দেখতে পায় না।

রিমান রুহিকে হসপিটালে কোলে করে নিয়ে যায়। সেখানে বেডে বসিয়ে ডক্টরকে ডাক দেয়। রিমান রুহির হাত থেকে রুমালটা খুলে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।ডক্টর রুহির হাত ব্যান্ডেজ করে দেয়।পা চেক করে।

ডক্টর,,,,,,,,, তোমার পায়ের হাড়টা একটু জায়গা থেকে সরে গেছে, সেটা হাত দিয়ে চাপ দিলেই ঠিক হয়ে যাবে।

রুহি,,,,,,,,জানি ডক্টর।

রিমান,,,,,,, তাহলে ঠিক করিসনি কেনো।

রুহি,,,,,,,অনেক ব্যাথা পাবো তাই।

ডক্টর,,,,,,, একটু ব্যাথা তো লাগবেই,, ভয় পাওয়ার কিছু নেয়, দাও আমি ঠিক করে দিচ্ছি।

রুহি,,,,,,,, না ডক্টর,, এমনি থাক।

রিমান রুহির হাত ভালো করে ধরে বলে,,,,,, ডক্টর আমি ধরেছি আপনি ওর পা ধরে মোচর দিন।

রুহি,,,,,,,, নাআআআ

ডক্টর রুহির পা ধরে মোচর দেয়, রুহি রিমানের বুকের সাথে মিশে আআআ করে চিৎকার করে। আর কান্না করতে থাকে।

ডক্টর,,,,,,, কান্না থামাও এখন তো আর ব্যাথা নেয়, পা নাড়িয়ে দেখো। (বলে চলে যায়)

রিমান রুহির হাত ছেড়ে দেয়, হাত ছাড়া পাওয়ার সাথে সাথে রুহি রিমানকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। রিমান রুহির দুই হাত ধরে ফেলে

রিমান,,,,,,,, আরে এটা তো আমি তোর ভালোর জন্য করেছি।

রুহি,,,,,,,, আপনাকে কে বলেছে আমার ভালো করতে।

,,,,,,, এমন না করলে তুই আরো বেশি ব্যাথা পেতি।

,,,,,,,,,পেলে পেতাম তাতে আপনার কি হুম,, আপনি তো আমাকে ঘৃণা করেন। আপনার মা বাবার মৃত্যুর অপরাধী মনে করেন।

কথাটা শুনে রিমানের প্রচুর রাগ হয়।

,,,,,,,,, হ্যাঁ করি ঘৃণা,,, অনেক ঘৃণা করি। আর আমি মনে করি না তুই আমার মা বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী।

,,,,,,,,,, আপনার জেনে অনেক দুঃখ হবে যে আমি আপনার মা বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী না।

,,,,,,,, মানে, আমি নিজের চোখে দেখেছি।

,,,,,, সবসময় যে দেখা জিনিস সত্যি হবে এমনটা না।

রুহি রিমানকে সবটা বলে, রিমান দুম মেরে দাঁড়িয়ে আছে।

রুহি,,,,,,,,,,, বেশি ভালোবাসতাম তো তাই এতো কষ্ট দিলেন, এখন যদি আপনি নিজেও আসেন না আমাকে ভালোবাসতে আমিও ঠিক একি ভাবে আপনাকে দূরে ঠেলে দিবো, যেভাবে আপনি আমাকে দিয়েছেন, এখন থেকে আমিও আপনাকে ঘৃণা করি, আর অনেক অনেক বেশি করি। আর হ্যাঁ আমার কথা বিশ্বাস না হলে বাবাকে জিজ্ঞেস করে আসবেন।

বলে কান্না করতে করতে চলে যায়। রিমান এখনেই দাঁড়িয়ে আছে, কিছু বলার শক্তি যেনো নেয়। রিমান খুশি হবে না দুঃখ পাবে কিছু বুঝছে না। একটু পরে রিমান বেডে বসে হাসতে থাকে।

চলবে,,,,,,,