#শত_ঘৃণার_পরেও_ভালোবাসি (এক ভালোবাসার গল্প)
#Maishara_Jahan
Part………..28
আহান সৌরভকে বলে,,,,,, আমরা এখন উত্তর জেলায় যাচ্ছি তুমিও সেখানে আসো, ঐদিকে খুজে দেখি।
,,,,ঠিক আছে, আমি এখনি আসছি।
আহান গিয়ে গাড়ি থেকে নামতেই সৌরভ ও এসে পড়ে। সৌরভ কান্না কান্না একটা ভাব নিয়ে গাড়ি থেকে নামে। নেমে আহানের সামনে এসে বলে,,,,,,, আহান রুহির কোনো খোঁজ পাওয়া গেলো।
আহান,,,,,,,, না,, (বিচারা মনে করছে রুহি কিড্যানাপ হয়ে গেছে)
মানিক,,,,,,,, এতো ক্ষন পড়ে আসলা যে,, আগে কি খবর পাওনি।
সৌরভ ,,,,,, কেও আমাকে বলে নি। জানলে কি আসতাম না আমার রুহিকে খুঁজতে। আচ্ছা রিমান ও কিডন্যাপ হয়েছে,, মানে দুজনে এক সাথে কিডন্যাপ কেনো, কিভাবে।
মানিক,,,,,,, নাকি দুজনে আবার পালিয়ে গেছে কে জানে,, এটা করলে অবশ্য আমি অভাক হবো না। (অন্য দিকে তাকিয়ে ভাবছে আর বলছে)
মানিক তার চোখ গুড়িয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে দুজনে তার দিকে তীক্ষ্ণ ভাবে তাকিয়ে আছে। সে একটা ইনোসেন্ট হাসি দেয়।
সৌরভ ,,,,,,, কিডন্যাপ তো দিয়াও হয়েছে তার মানে কি সেও তাদের সাথে পালিয়েছে।
আহান,,,,,,,, আমি চারদিকে এতো লোক লাগিয়েছি যে যদি ওরা দেশের বাহিরেও থাকে তাও পেয়ে যাবো।
সৌরভ,,,,,,,, কোথায় কোথায়।
আহান,,,,,,,সেটা বলে সময় লস্ট করতে চাই না,, চল মানিক। সৌরভ তুমি এখানে খুঁজো,, আমার অন্য জায়গায় কাজ আছে।
আহান আর মানিক চলে যায়। সৌরভ গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ডেবিল হাসি দিয়ে বলতে থাকে,,,,
সারা জীবন খুঁজেই যাবি,,আমি দিয়াকে নিয়ে এখান থেকে অনেক দূরে চলে যাবো। তার আগে আমার রুহি আর রিমানের কিছু করতে হবে। অনাচ্ছাকৃত ভাবে কিডন্যাপ হয়ে গেছে দুজন। কিন্তু সাবধানে তো থাকতে হবে আমার আহান এতোটাও কাঁচা খেলোয়াড় না, নিশ্চিত।
সৌরভ এর কাছে একটা কল আসে, সৌরভ ধরে।
,,,,,, স্যার দুজন তো পালিয়ে গেছে।
,,,,,,,,, হোয়াট,, তোমরা কি করছিলে ইউ ইডিয়ট। ওদের যেভাবে হোক ধরো, প্রয়োজন হলে গুলি করে দাও আই ডোন্ট কেয়ার।
,,,,,,,,,,
মানিক,,,,,,, ভাই তিনজনকে কিডন্যাপ করার কি লজিক হতে পারে।আর তুমি বার বার রিমান ভাইয়াকে কেনো কল দিচ্ছো কিডন্যাপাররা কি আর ওর মোবাইল রেখে দিবে নাকি।
,,,,,, রিমান কিডন্যাপ হয় নি, ও আর রুহি পালিয়ে গেছে।
,,,,,,,, আমার সন্দেহ ঠিক আছে কিন্তু দিয়া কার সাথে পালালো।
এ কথা বলার সাথে সাথে আহান মানিকের মাথায় দেয় একটা, দিয়ে বলে,,,,, ও সত্যি সত্যি কিডন্যাপ হয়েছে।
,,,,,,,,, আমার বিচারা সৌরভ এর জন্য একটু মায়া লাগছে। বিচারার বউ পালিয়ে গেছে আর ও ভাবছে,,,শুধু শুধু ওকে সন্দেহ করেছি। দিয়াকে কিডন্যাপ করার পিছনে ওর কি কারন থাকবে।
,,,,,,,, সত্যি কি কোনো কারন নাই। আমার বাসায় অতিরিক্ত কাজের লোক কে পাঠিয়েছিলো খোঁজ নিয়ে দেখতো৷
,,,,,,ঠিক আছে ভাই।
,,,,,,, আর এই রিমানকে পেলে সবার আগে ওরে মারমু,, রুহিকে নিয়ে চলে গেছে আর ফোন ও বন্ধ। এখন ওদের নিয়ে আমার টেনশন হচ্ছে।
,,,,,,,, আরে টেনশন করে লাভ, এখন ওরা মজায় আছে।
আহান মানিকের দিকে তাকায় মানিক চুপচাপ মোবাইলে কথা বলতে থাকে।
,,,,,,,
রুহি,,,,,,,,,, থামো রিমান থামো আমি আর দৌড়াতে পারছি না।
রিমান,,,,,,, ঠিক আছে চলো ঐদিকে গিয়ে বসি।
রুহি,,,,,,,হুমম।
রিমান আর রুহি একটা গাছের নিচে বসে থাপাতে থাকে, রিমান সবুজ ঘাসে শুয়ে পড়ে।
রুহি,,,,,,,, কোথায় আছি আমরা।
রিমান,,,,,,, কে জানে,কোন জায়গা এটা। আর আমু এটা বুঝলাম না তোকে কেও কেনো কিডন্যাপ করতে যাবে।
,,,,,,,, আমার আশিকের অভাব নাই, হয়তো আমার বিয়ে আটকানোর জন্য কেও আমাকে উঠিয়ে এনেছে হুহহ।
,,,,,,,, হ তোর আশিক তোকে কিডন্যাপ করে আমাদের দুজনকে এক রুমে রেখেছে আশিকি টু করার জন্য।
,,,,,,,জানি না, আমার ক্ষুধা লাগছে, মাথা কাজ করছে না।
,,,,, ওরা নিশ্চয়ই খাবার দিতো, খাবারটা খেয়ে পরে পালানোর উচিত ছিলো।
,,,, দূরর,, কিছু করো।
,,তুই কি আমাকে জঙ্গলের টার্জেন ভাবছস যে লাফিয়ে গিয়ে তোর জন্য ফল নিয়ে আসমু। ভালো করে তাকিয়ে দেখ এখানে গাছের পাতা ছাড়া কিছু নেয়। তুই চাইলে ঘাস খেতে পারিস।
,,,,,,,,,তুমি খাও ঘাস। তবে আজ আমার একটা স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেলো।
,,,,,,,,, কি স্বপ্ন।
,,,,,,, আমার ইচ্ছে ছিলো কেও আমাকে কিডন্যাপ করবে আর তুমি নিয়ে আমাকে পালাবে। আর আমরা পালাতে পালাতে এমন একটা জঙ্গলে এসে পড়বো৷
,,,,, যেমন তুই তেমন তোর স্বপ্ন। তোর স্বপ্নে কোনো কিসিং সিন ছিলো না।
,,,,,, না।
,,, ফালতু স্বপ্ন। আচ্ছা কবে থেকে তুই আমাকে ভালোবাসিস।
,,,,জানি না।
,,,, আরে বল,, মনে করে দেখ।
,,,, আগে থেকেই ভালো লাগতো তবে নাইনে উঠে ভালো লাগা ভালোবাসা হয়ে যায়।
,,, এতো ছোট থাকতে তুই আমাকে এতো খারাপ নজরে দেখতি,, তবা তবা লুচু কোথাকার। আমি তো ভেবেছিলাম ডাক্তারি পরে লুচু হয়ে গেছিস কিন্তু তুই তো সেই লেভেলের লুচু৷
,,,,, কিহহ আমি লুচু
বলে রিমানের বুকে কিল ঘুষি মারতে থাকে, রিমান শুয়া থেকে উঠতেও পারছে না। রিমান জোরে বলে উঠে,,,, আল্লাহ গো মরে গেলাম,,বুকে অনেক ব্যাথা পাইছি। (ব্যাথা পাওয়ার বান করে)
,,,,, হয়ছে,, আমি জানি এই জিম করা বডিতে আমার কিল ঘুষি কোনো কাজে আসবে না৷ যে শক্ত বডি (রিমানের বুকে টিপে টিপে দেখে)
,,,,আমার বডি ছৌয়ার অনেক শখ দেখা যায় তোর। (দুষ্টু হাসি দিয়ে)
,,,,,,, জ্বি না,, আমি তো এমনি দেখছিলাম।
,,,,,আমিও যদি তোকে এমনি টার্চ করি তাহলে কি তোর চলবে।
,,,আজব আমারটা আর তোমারটা কি এক হলো।
,,, কেনো আমার কি কোনো সম্মান নেয় , আমার শরীর কি শরীর না৷
,,আল্লাহ,, করবো না টার্চ আর হয়েছে।
,,,কোথায় আর হলো, বিয়ের পরে হবে এসব,, লুচু কোথাকার কি বলে এসব।
,,,আল্লাহ,, আমাকে উঠিয়ে নাও।
,,,,রুহিহহ এসব কথা বলে না।
,,আরে আমি তো এমনি বললাম। আচ্ছা চলো এগিয়ে দেখি এখানে থাকলে চলবে না।
,,,,হুমম চলো।
,,,,,,,, আর কোথাও যাওয়া লাগবে না, এখন সোজা আমাদের সাথে যাবে, বেশি নড়াচড়া করলে এখানে মেরে ফেলে দিবো কেও টেরও পাবে না৷
রিমান আর রুহির চারপাশে গুন্ডারা বন্ধুক নিয়ে গিড়ে ফেলে। তারপর দুজনকে বেঁধে আবার সেই জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। দুজনের হাত পা বেঁধে রুমে বন্ধী করে রাখে।
রিমান,,,,,,, শুধু শুধু নিজের এনার্জি নষ্ট করলাম, যেখানে ছিলাম সেখানেই আবার আসলাম। যে এখানে আনছে ওকে পেলে ওর হাড় গুড় ভেঙে দিবো।
,,,,,আগে নিজে তো বাঁচো।
,,,,,,,,,,
দিয়াকে ড্রেস দেওয়া হয়, দিয়া না পেরে ড্রেস চেঞ্জ বসে আছে। রুমের চারদিক ভালোকরে দেখে কিন্তু কোথাও কোনো বের হওয়ার জায়গা পায় না। রাগে চুপচাপ বসে আছে। কি করবে না করবে বুঝতে পারছে না। রাগ সামলাতে না পেরে ইচ্ছা মতো চিল্লা চিল্লি করে।
একটু পরে সৌরভ আসে। দরজা খুলতেই দিয়া চুপ হয়ে যায়।
সৌরভ,,,,,, কি হয়েছে কি এতো চিৎকার করছো কেনো।
দিয়া রাগে চিৎকার করে বলে,,,,,আমাকে এখানে কেনো এমেছেন, যেতে দিন আমাকে। দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার এখানে। আমি আহানের কাছে যাবো
এ কথা বলতেই সৌরভ দিয়ার মুখ চেপে ধরে বলে ,,, বলেছিনা ঐ নাম আমার সামনে নিবি না৷ কথা কানে যায় না। তোকে এখান থেকে নিয়ে যাবো পরে আহানকে মেরে ফেলবো৷ না না বিচার নিজের বোন বন্ধু প্রেমিকার শোঁখে এমনি মরে যাবে।
,,,,, মানেহ, কি করেছো রুহি আর রিমানের সাথে।
,,,করিনি তবে করবো।
,,,,খবরদার ওদের সাথে কিছু করার কথা ভাববাও না। ওদের কিছু হলে আহান আপনাকে জানে মেরে দিবে।
,,,, আবার ওর কথা,, আমি ওকে ভয় পায় না। আমার রাগের পরিনাম কি হতে পারে তা না দেখালে হবে না।
সৌরভ ফোন করে বলে,,,, হ্যালো ওদের খুঁজে পেয়েছিস, এবার মেরে দে। এমন ভাবে মারবি যেনো যে দেখবে তার আত্মা কেঁপে উঠে।
দিয়া সৌরভের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নিচে ছুঁড়ে মারে, সাথে সাথে ফোনের টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সৌরভ দিয়ার হাত পিছনের দিকে ঘুরিয়ে ধরে, দিয়া ব্যাথায় কিছু বলতে পারছে না। শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। সৌরভ দিয়ার কানের কাছে এসে বলে,,,,
,কে বাঁচাবে তোমাকে এখন হুম,, আজি তোমাকে বিয়ে করবো আমি, কিছু ক্ষনের মধ্যে।
,,আমি মরে যাবো তাও আপনাকে বিয়ে করবো না, বুঝলেন। আমি শুধুই আহানের।
,,তুমি ভালো কথার মানুষ না। আর তোমাকে নিজের করে পেতে হলে আমার বিয়ে করার কোনো দরকার নেয় বেবি।
,মানে
,মানে হলো আজকের পর থেকে তুমি শুধু আমাকে দেখবা, শুধুই আমাকে, তোমার শরীরের সাথে মিশে যাবো। আমাকে ছাড়া অন্য কারো কথা ভাববেও না।
সৌরভ দিয়াকে ছেড়ে দেয়। দিয়া সৌরভকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরে দাঁড়ায়।
দিয়া,,,,,, খবরদার আমার কাছে আসবেন না।
,,,,,, আজ আমি তোমার অনেক কাছে আসবো, তুমি চাইলেও আমাকে আটকাতে পারবে না। তুমি কেনো, তোমাকে বাঁচাতে কেও আসবে না এখানে।
,আপনি এটা করতে পারেন না। এতোটা নিচে কিভাবে নামতে পারেন।
,,,,,,, আনি এর থেকেও নিচে নামতে পারি, এটা কিছু ক্ষন পরেই বুঝতে পারবে। (নিজের কোর্ট খুলে)
,,,,,,, কি করছেন দেখুন আমার আছে আসবেন না পিল্জ। (কান্না করে)
, চিন্তা করো না, আমরা কালকে বিয়ে করে নিবো, শুধু পরের কাজটা আগে করে রাখছি।
সৌরভ টাই খুলতে খুলতে দিয়ার দিকে এগোতে থাকে দিয়া পিছনে যেতে থাকে, মনে মনে আল্লাহকে ডাকছে।
দিয়া খাটের উপরে লাফ দিয়ে উঠে দৌড়ে দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায়। সৌরভ হাসতে হাসতে বলে,,,,,, যতো পারো দৌড়াও। সৌরভ ও দিয়ার পিছনে পিছনে যায়।
দিয়া নিচে গিয়ে সবার কাছে সাহায্য চাইছে কিন্তু কেও কোনো কথা বলছে না। দিয়া সব দরজা জানলা খুলার ট্রায় করে কিন্তু পারে না। দিয়া এখানে অতিষ্ঠ হয়ে চিৎকার করে বলে,,, এখানে কি সবাই কানা ভয়রা নাকি, কেও দেখতে শুনতে পারছে না।
সৌরভ,,,, এরা শুধু আমার কথা শুনে, আমার হুকম মতো কাজ করে। বয়েস পিল্জ গো আউট।
বাড়ির সবাই বাহিরে চলে যায়, দিয়াও যেতে নেয় কিন্তু দরজা বন্ধ করে দেয়।দিয়া চিৎকার করছে।
,এখন বাড়িতে কেও নেয়, এখন আমরা যায় করিনা কেনো কেও দেখবে না৷ পুরো বাড়িটাকে নিজের বেড রুম মনে করতে পারো। কাম বেবি,,
দিয়া পুরো বাড়ি দৌড়াতে থাকে, সৌরভ এবার দিয়ার দিকে সিরিয়াস ভাবে আসতে থাকে, দিয়া দৌড়ে উপরে চলে যায়। তাড়াতাড়ি গিয়ে একটা রুমে লুকিয়ে পড়ে।
সৌরভ ও উপরে যায়, গিয়ে সব গুলো দরজা চেক করতে থাকে, একটার ভিতর থেকে মারা দেখে, সৌরভ জোরে জোরে আসতে থাকে, কয়েক বারের লাথিই দরজাটা ভেঙে ফেলে সৌরভ।
ভিতরে গিয়ে কাওকে দেখতে না পেরে আস্তে আস্তে হাঁটতে থাকে আর বলতে থাকে,, লুকোচুরি আর কতো ক্ষন খেলবে দিয়া। আয়নাতে দিয়াকে খাটের নিচে দেখে সৌরভ হেঁসে খাটে বসে। একটু পর হাঠাৎ করেই বিছানার নিচে মাথা ডুকিয়ে দেয়।
দিয়া ভয় পেয়ে চিৎকার করে বেরিয়ে আসে।দিয়া দৌড় দিতে নেয় আর সৌরভ দিয়ার হাত ধরে বিছানায় ফেলে দেয়।
,ঐদিকে এতো ক্ষন হয়তো রুহি আর রিমানপর লাশ পড়ে আছে। আর এদিকে তোমার বিয়ে ছাড়া বাসর ওয়াও।
দিয়া কান্না করে বলতে থাকে,,না পিল্জ ওদের কিছু করবেন না, আমাকে ছেড়ে দিন।
সৌরভ দিয়ার হাত খাটে চেপে ধরে বলে,,সুসস এখন আর কোনো কথা হবে না।
চলবে,,,,,,,