#শত_ঘৃণার_পরেও_ভালোবাসি (এক ভালোবাসার গল্প)
#Maishara_Jahan
Part………..29
দিয়া কান্না করে বলতে থাকে,,না পিল্জ ওদের কিছু করবেন না, আমাকে ছেড়ে দিন।
সৌরভ দিয়ার হাত খাটে চেপে ধরে বলে,,সুসস এখন আর কোনো কথা হবে না।
সৌরভ আস্তে আস্তে দিয়ার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যায়, দিয়া অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে জোরে চিৎকার করতে থাকে। আর তখনি দরজা ভাঙার আওয়াজ আসলে সৌরভ পিছনে তাকিয়ে দেখে আহান দাঁড়িয়ে আছে। আহানকে দেখে দিয়া জোরে জোরে কান্না করতে করতে আহানকে ডাকে।
দিয়াকে এভাবে দেখে আহান প্রচুর রেগে যায়। আহান তাড়াতাড়ি গিয়ে সৌরভকে লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। দিয়া উঠে আহানকে জরিয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। আহান দিয়ার মাথায় হাত রেখে বলে,,, ডোন্ট ওয়ারি বেবি, আই আম হিয়ার নাউ৷
সৌরভ,,,,,,, তুই এখানে কিভাবে এলি।
আহান,,,,,তার আগে বল তোর সাহস কি করে হলো আমার দিয়াকে স্পর্শ করার। যে হাত দিয়ে ছুয়েছিস সেই হাতই আমি রাখবো না।(রাগে)
আহান দিয়াকে সাইড করিয়ে সৌরভকে গিয়ে মারতে থাকে। সৌরভ ও কম না। সেও পাল্টি মার দিচ্ছে। কিন্তু আহানের রাগের আগে সৌরভকে হাড় মানতে হলো। আহান সৌরভের মুখে একের পর এক ঘুষি দিচ্ছে।
সৌরভের নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। সে তার কিছু লোককে ডাক দেয় কিন্তু কেও আসছে না। আহান সৌরভকে আধ মরা করে নিচে ফেলে দেয়। সৌরভ ব্যাথায় উঠতে পারছে না তাও হাসছে।
আহান,,,,,,, এতো মার খাওয়ার পরেও মুখে হাসি কোন খুশিতে।
দিয়া,,,,,,আহান রুহি আর রিমান।
সৌরভ,,,,,,, রাইট,, প্রেমিকাকে তো বাঁচিয়ে নিলি কিন্তু তোর বোন আর তোর প্রানের বন্ধুর খোঁজ ও নেয়। এতো ক্ষনে তো এই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে হয়তো।
রিমান একটা লাঠি কাঁধে নিয়ে দরজায় সাইডে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,,,,,, হুমম আমি মরে ভুত হয়ে এসেছি৷ এবার ভাবছি তোকে ভুত বানিয়ে উপরে পাঠিয়ে দিবো।
রুহি,,,,,, এতো বড় ধোঁকা,, সৌরভ তুমি আমাকে এতো বড় ধোঁকা দিতে পারলা।
রিমান,,,,,,, ধোঁকা,,, কেনো তোর কষ্ট লাগছে নাকি।
রুহি,,,,,,, না, অবাক হচ্ছি।
রিমান,,,,,, আমার তো মনে হলো না তুই আভাক হয়েছিস, আরেক বার তুমি করে বললে না সবার আগে তোর মুখ আমি সিলাই করে দিবো।
দিয়া,,,,,, তোমরা ঠিক আছো, আমি কতো ভয় পেয়ে গেছিলাম।
সৌরভ,,,,,,, এটা কিভাবে সম্ভব।
রিমান,,,,, হয়ছেটা কি,, তুই অনেক চালাক কিন্তু তোর চামচাদের মাথায় গিলু কম। এভাবে বুঝবা না, কিছু ক্ষন আগের ঘটনা। রিভার্স,,,,,
,,,,,,,,
রুহি,,,,,, রিমান এখন কি করবো, আবার ধরে ফেললো তো আমাদের। এখন তো হাত পা ও বেঁধে ফেলেছে, যদি ওরা আমাদের মেরে ফেলে। (ভয়ে)
রিমান,,,,,,,, ভয় পাস না, আমি আছি তো। দুজনে এক সাথে উপরে যাবো চিন্তা করিস না।
রুহি,,,,,,, আআআ আমি এখনি মরতে চাই না।
রিমান,,,,, তো মেম আপনি কবে উপরে যেতে চান।
,,,,, আরে এখনো তো আমার বিয়েও হলো না, বিয়ে হবে বাচ্চা হবে, তাদেরও বাচ্চা হবে তারপর মরবো।
,,,,, মাথায় সারা ক্ষণ বিয়ে বিয়ে ঘুরে লুচু কোথাকার।
,,,,,,, হ ভালো হয়েছে আমি লুচু,, আমার ভয় করছে আর ওনি মজায় আছে। (কান্না করে)
,তুই সত্যি সত্যি কান্না করছিস,আরে কান্না করিস না তোর কিছু হবে না, আমি আছি না৷ এখন তো দেখা যায় এখান থেকে বের হওয়ার ব্যবস্তা করতেই হবে।
,কিন্তু কিভাবে।
,আহানকে কোনো রকমে ফোন দিয়ে বলতে হবে।
,ফোন থাকলে কি আর বসে থাকতাম।
,আমাদের কাছে নেই কিন্তু যারা আামাদের এখানে এতো আদর করে নিয়ে এসেছে তাদের কাছে তো আছে।
,হুম তুমি চাইবে আর তারা দিয়ে দিবে।
,দিবে না,নিতে হবে।
,কিন্তু কিভাবে।
,শুধু দেখ।
রিমান চিৎকার করে ডাকছে,,,,পিল্জ কেও থাকলে এখানে আসুন,,ঐ কে কোথায় আছে একটু শুনে জান, জরুরি কথা আছে।
,,কি জরুরি কথা রিমান,আগে আমাকে বলো।
,,চুপ থাক না। কে কোথায় আছে,, আরে কেও কি নেয় নাকিইইইইই
একজন লোক আসে। এসে শক্ত গলায় বলে,,,,, কি হয়েছে, এতো চিৎকার করছিস কেনো কেও মরে গেলো নাকি।
রিমান,,,,,, মরি নাই তবে মরবো, দয়া করে আমার হাত পাটা একটু খুলে দিন পিল্জ।
,,,আমাকে কি পাগলে পেয়েছে,শুকর কর তোর হাত পা ভাঙিনি।
রিমান,,,,, আরে বুঝার চেষ্টা করুন,,আমার খুব চাপ পেয়েছে, পিল্জ বাঁধনটা খুলুন। (কাচুমুচু করে)
রুহি আর গুন্ডা দুজনে বলে উঠে,,,,,, মানেহহ
রিমান,,,,,,, আরে মানেটাও বলে দিতে হবে। আমার খুব এক পেয়েছে।
রুহি,,,,,এক কি।
রিমান,,,,,, আরে সুসু সুসু, নাকি আরো বলতে হবে।
রুহি,,,,,ছি না, আর বলা লাগবে না।
রিমান,,,, তুই ছিঃ বললি কেনো, তোর মনে হয় পায় না। নাকি তুই জীবনে করছস না।
রুহি,,,,, রিমান চুপ করবা। ইশশশ
রিমান,,,,,,, খুলেন না পিল্জ।
,,,, না খুলা যাবে না।
,,আরে ভাই বুঝেন না কেনো। আপনার যদি এমন হতো তাহলে কেমন লাগতো।
,,,,,চুপচাপ বসে থাক।
,,ওহ তাহলে খুলবেন না, ঠিক আছে তাহলে আমি এখানেই করে দিবো বলে দিলাম আমার অনেক জোরে পেয়েছে।
রুহি,,,,,,,ছিঃ নাআআআ।
,,,, এই না
,,,করেদিলাম করে দিলাম।
,,,না না,, খুলছি খুলছি।
লোকটা রিমান এর পায়ের বাঁধন খুলে দেয়। রিমান উঠে দাঁড়িয়ে বলে,,,,হাত কে খুলবে।
,,,,ঐটা খুলা যাবে না।
,,,,,,, তাহলে করমু কিভাবে মুখ দিয়ে।
রুহি,,,,,,,,ছিঃ কি বলছে।
রিমান,,,,,, আরেক বার তোর মুখ দিয়ে ছিঃ বের হলে তোর খবর আছে বলে দিলাম। হাত ছাড়া জিপ খুলবো কিভাবে, আর বন্ধই বা করবো কিভাবে। কি আপনি খুলে দিবেন।
রুহি আরেক বার ছি বলতে যায় রিমান রুহির দিকে তাকায়, রুহি বলতে গিয়েও বলে না।
,,,, এই না আমি কেনো খুলবো।
,,তাহলে এখানে শুধু রুহি আছে ও
রুহি,,,,,,,এই নাআআআ আমি পারবো না।
রুহির গাল দুটো লাল হয়ে যায় লজ্জায়।
রিমান,,,,,,, তোর এতো লজ্জা পেয়ে লাভ নেয়, আমি তোকে বলমু ও না। আর তুই এভাবে কেনো লজ্জা পাচ্ছিস, তোর ইচ্ছে আছে নাকি।
রুহি,,,,ছিঃ, রিমান তোমার মুখে কি কিছু আটকায় না।
,,,,,,,সত্যি কিছু আটকায় না।
রিমান,,,,,, আমার কিন্তু সত্যি কিছু আটকায় না বেশি ক্ষন। আমি কিন্তু ছাইরা দিমু বলে দিলাম।
,,,,এই না না,, দিচ্ছি দিচ্ছি।
লোকটা তাড়াতাড়ি রিমানের হাত খুলে দেয়। রিমান হাত ছাড়া পেয়ে লোকটার গাড়ে হাত সোজা করে মারে, লোকটা অজ্ঞান হয়ে যায়। রিমান দরজা বন্ধ করে লোকটার পকেট থেকে মোবাইল নাম্বার ডাইল করে।
আহান,,,,হ্যালো কে।
রিমান,,,,,, আরে আমি আমি।
আহান,,,,শালা এখন মনে পড়লো তোর আমার কথা, আমার বোনকে নিয়ে পালিয়ে এখন আহান কে ভুলে গেছিস ফোন রাখ।
বলে ফোন কেটে দেয়।
রিমান,,,,,,,, শালা এখানে মরার অবস্থা আর ও মেয়েদের মতো অভিমান করে আছে।
রিমান আবার ফোন করে।
আহান,,,,, কি হয়ছে আবার কেনো কল করলি।
,,ফোন কাটবি না বলে দিলাম, বিপদে পড়ছি।
,,ও বিপদে পড়ে মনে পড়লো আমার কথা, জানিস তোর কতো প্রয়োজন আমার এখন।
,,, নিজের বিয়েতে এতো মেতে আছিস যে আর কিছুর খেয়াল নেয় বান্দর ছেরা।
,,কিসের বিয়ে বউ তো কিডন্যাপ হয়ে গেছে কালকে, তাকে খুজতে খুঁজতে জান চলে গেলো।
,,হেহহ দিয়াও কিডন্যাপ হয়ে গেছে।
,,দিয়াও মানে আর কে কিডন্যাপ হয়ছে।
,,শালা আমরা কিডন্যাপ হয়ছি,, আমি আর তোর বোন।
,,কিহহ কিভাবে।
,,কিভাবে ছাড়, আমরা কোনো একটা জঙ্গলে আছি, তাড়াতাড়ি মোবাইল এর লোকেশন ট্রেক কর। দাঁড়া আমিই পাঠচ্ছি।
রিমান ঐ লোকটির মোবাইল থেকে নিজের লোকেশন বের করে আহানকে পাঠিয়ে দেয়।
রিমান,,,,,, কতো ক্ষন লাগবে তোর আসতে।
আহান,,,,,, ১৫/২০ মিনিট লাগবে, তোদের অনেক কাছে আমরা।
রিমান,,, এতো টাইম নেয় আমাদের, বাইকের ব্যবস্থা করে জঙ্গলে তাড়াতাড়ি আয়।
,,,রুহি কেমন আছে।
,,,কিছু হয় নাই তবে না আসলে অনেক কিছু হতে পারে।ভাই তাড়াতাড়ি আয়।
,,কিছু হবে না আমি এখনি আসছি।
বলে ফোন রেখে দেয়।
রুহি,,,এখন কি দয়া করে আমার হাতের বাঁধনটা খুলবেন।
,,,ওহহ তুই, আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে তুই এখানে আছিস, কারন কিছু ক্ষন কোনো কথা বলিসনি তো তাই। (রশি খুলতে খুলতে)
কিছু ক্ষন পরে দরজায় আওয়াজ আসতে থাকে, একটু পর দরজা ভেঙে লোক ঢুকে আমাদের মারার জন্য। আমি কি কম নাকি, আমিও শুরু করে দিয়। অবস্থা খারাপের দিকে গেলে আহান, মানিক চলে আসে, তাদের লোকদের নিয়ে। তোর লোকদের গরু পিটানো দেওয়ার পর ওরা তোমার কথা বললো, তখন আমরা জানতে পারি এসব কোন মহৎ ব্যক্তি করেছে।
বর্তমানে,,,,,,,
আহান,,,,,আমি তোর পিছনে লোক লাগিয়েছিলা৷ তারা তোর পিছা করছিলো আর বেস পৌঁছে গেলাম।
রুহি,,,,,, আপনি এতো বড় গুন্ডা যে কিনা মানুষ খুন করে। দেখে মনে হয় না।
রিমান হাত ভাজ করে বলে,,,তো কি মনে হয় আপনার ওনাকে দেখে।
রুহি,,,,, তুমি শুনে সহ্য করতে পারবা না, থাক বলা লাগবো না।
রিমান,,,,,, আচ্ছা আমি কেমন দেখতে।
রুহি রিমানের হাত জরিয়ে ধরে বড় একটা হাসি দিয়ে বলে,,, পুরোই হিরো।
দিয়া,,,,,এই মুহূর্তে এসব কথা তোরাই বলতে পারিস।
রিমান,,,, আচ্ছা দিয়াকে ধরার করন বুঝলাম,কিন্তু রুহির সাথে তো তোর বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো তবে ওকে কেনো কিডন্যাপ করতে গেলি।
সৌরভ,,,,, ওটা তো আমার লোকে দিয়া মনে করে ভুলে উঠিয়ে ফেলেছিলো৷
আহান,,,,,, এতো দিন দিয়ার আশেপাশে থেকে নিশ্চয়ই বুঝে গেছিস দিয়া তোমার খুন করতে দেখেনি, তাহলে ওকে কিডন্যাপ করার কারন।
সৌরভ,,,,,,, ভালোবাসি তোর দিয়াকে মোহে পড়ে গেছি ওর। আমার বিষয়ে যাতে কোনো খবর না নিস তাই রুহির কথা বলি যে আমি ওকে ভালোবাসি।
রুহি গিয়ে সৌরভকে থাপ্পড় মারে, মেরে আবার নিজের জায়গায় ফিরে আসে।
রিমান,,,,, থাপ্পড় মারলি দেখে ভালো লাগলো কিন্তু কেনো মারলি,,
রুহি,,,,,,, কলেজের সব ছেলেরা রুহি বলতে পাগল আর এ আমাকে রিজেক্ট করেছে আমাকে, ওকে তো আরেকটা দেওয়া উচিত। কি ভেবেছিলো বিয়ের দিন ও আমাকে বিয়ে করতে আসবে না, আর আমি ওর জন্য বসে বসে চোখের পানি ফেলবো।
সৌরভ হেঁসে বলে,,,,, না বেবি, আমি ভাবে ছিলাম তোমাকে বিয়ে করে আমার ঘরে রাখবো আর দিয়াকে অন্য বাসায়। এতো সুন্দর জিনিস দুটো এক সাথে পেলে আমার আপত্তি কিসের।
রুহি,,,,ওহহ তাহলে আমি রিজেক্ট হয়নি, তাহলে ঠিক আছে।
রিমান,,,,,, মানে কি, কি চলতাছে এসব,,ঠিক আছে মানে,, ও ভাই মারো কই মুজে মারো। আরে তুই পাগল নাকি, ও তোদের দুজনকে রাখতো আর আমরা কি আঙুল চুসতাম নাকি, শালারে না মারলে শান্তি হবে না।
দিয়া,,,,,, আরে আর মারলে তো মরে যাবে।
সৌরভ,,,,,, হাউ সুইট কতো চিন্তা আমার।
আহান,,,,তোর বড্ড চিন্তা হচ্ছে ওর জন্য (রাগে)
দিয়া,,,,, ওর জন্য না,মানে ডক্টর তো তাই বললাম আরকি।
সৌরভ,,,, মেরে ফেল আমাকে নাহলে তোদের এমন ভাবে মারবো কেও চিন্তেও পারবে না কে তোরা।
রিমান,,,,,,, এ জন্যই বলে ডক্টররা কসাই হয়, মায়া দয়া নেয়।
দিয়া আর রুহি হাত ভাজ করে কাশি দিয়ে রিমানের দিকে তাকায়, রিমান একটা ইনোসেন্ট হাসি দিয়ে বলে,,মানে যারা হার্ট সার্জান থাকে তারা সবাই না।
রুহি,,,,, আমরাও হার্ট সার্জারী বিষয়েই পড়ছি।
রিমান,,,,,, ওহহ সরি।
মানিক এসে বলে,,,ভাই পুলিশ এসে গেছে।
আহান,,,,,,, তোর এমন জায়গা যাওয়ার ব্যবস্থা করবো যে জীবনে বের হওয়ার সুযোগ পাবে না বুঝলা।
পুলিশ এসে সৌরভকে ধরে নিয়ে যেতে থাকে, সৌরভ পুলিশের থেকে বন্ধুক নিয়ে দিয়ার মাথার সোজাসোজি সুট করে।
চলবে,,,,,,,