শত ঘৃণার পরেও ভালোবাসি পর্ব-৩০

0
1115

#শত_ঘৃণার_পরেও_ভালোবাসি (এক ভালোবাসার গল্প)
#Maishara_Jahan
Part……….30

আহান,,,,,,, তোর এমন জায়গা যাওয়ার ব্যবস্থা করবো যে জীবনে বের হওয়ার সুযোগ পাবে না বুঝলা।

পুলিশ এসে সৌরভকে ধরে নিয়ে যেতে থাকে, সৌরভ পুলিশের থেকে বন্ধুক নিয়ে দিয়ার মাথার সোজাসোজি সুট করে।

আহান দিয়াকে টান দিয়ে সরিয়ে নেয়, বুলেট সোজা দেওয়ালে লাগে, আর রিমান সৌরভ এর হাত থেকে বন্ধুক নিয়ে ওকে সুট করে দেয়। একদম হার্টের সোজাসোজি লাগার কারনে সৌরভ সেখানেই অক্কা পায়।

আহান,,,,, দিয়া তুই ঠিক আছিস।

দিয়া,,,,, হুমম আমার কিছু হয়নি (ভয়ে)

রুহি,,,,,,, রিমান তুমি ঠিক আছো তো।

রিমান সোজা হয়ে বরফের মতো দাঁড়িয়ে আছে। রুহি রিমানের কাঁধে ছুঁতেই রিমান আমি কিছু করিনি বলে বন্ধুক নিচে ফেলে দেয়।

আহান,,,,,,,,ভয় পাস না, আমি সব সামলে নিবো।

রিমান,,,,,, ভয় কে পা পা পায়। আ আমি ঠিক আছি, আম ফাইন।

রুহি,,,,,,মনে তো হচ্ছে না।

আহান,,,,,, আরে ভয় পাস না, বললাম তো পুলিশকে আমি সামলে নিবো।

রিমান,,,,,, পুলিকে কে ভয় পায়।

পাশে একটা পুলিশ কাশি দেয়, রিমান তার দিকে তাকিয়ে বলে,,, না মানে ভয় পায়, কিন্তু কথা এটা না, কথা হলো আমার হাত দিয়ে খুন হয়েছে একটা, আমি জীবনে মশাও মারি নাই আর খুন করে ফেলেছি।

আহান,,,,আচ্ছা,, কলেজে যে মার পিট করতা, মানুষের হাত পা ভেঙে ফেলতি মেরে কতো কষ্ট করে সামলাতাম ভুলে গেলি নাকি।

রিমান,,,,,, আরে দূরর, হাত পা ভাঙা আর একে বারে জানে মেরে ফেলা এক হলো নাকি।

আহান,,,,,, সৌরভ অনেক মানুষের জান নিয়েছে, তুই একে মেরে আরো সোয়াভ পাবি,, আর পরিস্থিতিতে হয়ে গেছে এটা। চল তো এখান থেকে কচু কই এখন বিয়ে করে বসে থাকলাম হলে আর কই কি।

রিমান,,,,,, বিয়ের স্বপ্ন পরে দেখিস। আগে চল ইয়ার ক্ষুধা লাগছে।

রুহি,,,,,,, তুমি এখনি খুন করার জন্য আফসোস করছিলা,আর এখনি খাওয়ার কথা বলছো।

রিমান,,,,, আজব, খাওয়ার সাথে বিয়ের কি সম্পর্ক।

দিয়া,,,,,চলো তো আগে,, ভালো লাগছে না।

সবাই গাড়ি থেকে নামে, দিয়া দাঁড়িয়ে আছে। রুহি দিয়ার হাত ধরে বলে,,, কিরে এখানেই দাঁড়িয়ে থাকার প্যান আছে নাকি।

দিয়া,,,,,,, আমি খালামনি, খালুর সামনে যাবো কিভাবে। (মন খারাপ করে)

আহান,,,,,,আসল কথা তো রয়েই গেলো,, তোকে কে বলেছে সব কিছু বলতে হুমম (ধমক দিয়ে)

রুহি,,,,,, মানে কি তুই সব বলে দিয়েছিস।

মানিক,,,,,,, হুমম,,, এ টু জেট সব।

দিয়া,,,,,,, সবাই আপনার অপমান করছিলো তাই।

আহান,,,,,,,তো,,,, এতো বছর এতো অপমান সহ্য করেছি এই দিন দেখার জন্য। আমি নিজেকে সবার সামনে ছোট করতে রাজি কিন্তু কেও তোকে খারাপ চোখে দেখোক সেটা আমি চাই না।

দিয়া,,,,,,,,, আপনাকে কেও খারাপ বলোক সেটাও আমি চাই না। আর ঐ লিজা তো কতো উল্টো পাল্টা কথা বলছিলো তোমার নামে।

রুহি শার্টের হাতা উপরে উঠানোর মতো বান করতে করতে বলে,,,,, ঐ চুন্নি কি বলেছে আমার ভাইকে, চল আজ ওর চুল একটাও রাখবো না, সব গুলো গুনে গুনে উঠাবো।

মানিক,,,,,,আহান ভাইয়া যেভাবে রাগী চোখে লিজাকে বলেছে চলে যেতে না হলে জান নিয়ে নিবে মনে হয় না এখনো আছে।

রুহি,,,,,থাকলে ওর বারোটা না তেরোটা বাঝাবো আমি।

রিমান,,,,, ওরে আমার গুন্ডিরে একটু শান্ত হ।

আহান,,,,,,দিয়া আমার সাথে চলো, আমি থাকতে কেও তোমার সম্মান হানী হওয়ার মতো কথা বলবে না। বাবা মা না বুঝলে আমরা আমাদের বাড়িতে চলে যাবো, ওকে।

দিয়া,,,,,,,, একবার তো আমার কারনে তুমি তোমার ফেমেলি থেকে দূরে গিয়েছো, আর আমি চাই না আমার কারনে খালামনি আবার তার ছেলেকে হারিয়ে ফেলুক।

আহান,,,,,,,,,আমি ওদের থেকে দূরে যাবো না, শুধু আমাদের একটা আলাদা সংসার হবে বুঝলি। আর কোনো কথা না চল সবাই চিন্তা করছে।

দিয়া,,,, হুমম।

সবাই ভিতরে যায়, সবাই ভিতরে যেতেই আহানের মা বাবা সবাই দৌড়ে আসে। সবাই তাদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছে, সবাই খুব চিন্তিতো ছিলো তাই তাদের দেখতে পেয়ে কান্না করতে থাকে।

আহান,,,,,,হয়েছে তো, আমরা সবাই ঠিক আছি তোমরা একটু শান্ত হয়ে বসো।

খালু,,,,,,তোরা একটু সবটা খুলে বল তো, কি হয়েছে।

সবাই সবটা সবাইকে বুঝিয়ে বলে।

খালামনি,,,,,, সৌরভকে দেখে মনে তো হয় না, যে ও এমন কাজ করতে পারে।

রিমান আস্তে করে বলে,,,,,,, সবার মুখে এক কথা তাহলে কি মনে হয় দেখে ও হিরো আমরা ভিলেন অদ্ভুত।

আহান,,,,,,মা চেহেরা দেখে ধোকা খেয়ো না। ও মানুষের জান নিতে একবার ভাবে না।

মা,,,,,,,, এখন আমার মেয়েটার কি হবে। সবাই জেনে গেছে ওর বিয়ে, এখন ওর নাম খারাপ হবে। (মন খারাপ করে)

রিমান,,,,,,, এক কাজ করলেই হয়, খুব তাড়াতাড়ি রুহির বিয়ে আরেকজনের সাথে দিয়ে দাও।

মা,,,,,,,, এই মূহুর্তে ভালো ছেলে কোথায় পাবো।

রিমান,,,,,,, চোখ ঘুরিয়ে দেখো এখানে কোথাও আছে হয়তো।

মা,,,,,,, কিন্তু কে করবে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে রুহিকে।

রুহির কয়কজন কাজিন বলে যে ওরা রুহিকে বিয়ে করতে চাই যদি কোনো আপত্তি না থাকে।

রিমান আস্তে বলে,,, হালার পো,,,বোনের বিয়েতে এসে ওকে এই নজরে দেখতি, সব গুলোর চোখ উঠিয়ে নেওয়া উচিত। মানুষের জিনিসের দিকে নজর দেওয়া ভালো না। শালা এই আয়ান কিছু বলে না কেন।

রিমান আয়ানকে গুতাতে থাকে, আয়ান কয়েকটা কাশি দিয়ে বলে,,,, মা আমার নজরে একটা ছেলে আছে, দেখতে ভালো, টাকাও আছে আর সভাবেও অনেক ভালো, রুহিকে খুশি রাখবে।

বাবা,,,,,,কে সে।

আয়ান,,,,,,, বাবা রিমান,, ও তো সব দিক দিয়েই পার্ফেট।

মা,,,,,,কিন্তু ওর ও তো একটা মত আছে, জোর করে তো আর চাপিয়ে দিতে পারি না।

রুহি,,,,,,,, জোর করে মানে। রিমান তুমি কিছু বলছো না যে।

রিমান একটু লজ্জার ভাব নিয়ে বলে,,,,,,আমি কি বলবো।

রুহি,,,,, কিছু বলবে না, তাহলে ঠিক আছে,, এই কারা কারা বলেছিলে আমাকে বিয়ো করবে সামনে আসো, আমি আজি তাদের মধ্যে একজনকে বিয়ে করবো।

রিমান,,,,,,,,, কিহহহ,, খবরদার না।

রুহি,,,,,,তাহলে বলো কিছু।

রিমান,,,,,,আন্টি আমি রুহিকে ভালোবাসি, আর তাকেই বিয়ে করতে চাই।

বাবা,,,,,,,, তুই যে ওকে ভালোবাসিস আগে তো বলিস নি, ওর বিয়েতে আবার সাহায্য করতে এসেছিলি।

রিমান একটু মাছুম চেহেরা করে বলে,,,,,,,আংকেল আন্টি, আমি চাইনি যে, তোমাদের সম্মান আমার কারনে যাক,আমি চেয়েছিলাম রুহি যেখানেই থাকোক হেপি থাকুক। তাই সব কষ্ট নিজের ভিতরে জমিয়ে রেখেছি।

আহান, রুহি, দিয়া, মানিক তারা চোখ ছোট ছোট করে রিমানের দিকে তাকায়। রিমান তাদের দেখে একটা কাশি দেয়।

আহান রিমানের কানে কানে বলে,,,,চাপাটা বেশি হয়ে গেলো না।

রিমান,,,,,, আমার কেনো কাজ কম ভালো লাগে না।

বাবা,,,,,, ঠিক আছে তোমাদের কারো আপত্তি না থাকলে আমার কি থাকবে, কালকে ওদের বিয়ে দিয়ে দিবো।

রুহি,,,,,,, আর আহাম ভাই আর দিয়ার কি হবে।

সবাই দিয়ার দিকে তাকায়, দিয়া মাথা নিচু করে থাকে। আহানের মা দিয়ার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,,,,,, দিয়া যেটা হয়েছে সেটা ভুলতে একটু সময় লাগবে কিন্তু আমাদের ও তোর পরিস্থিতিটা বুঝার উচিত ছিলো। ছোটরা ভুল করবে এটা স্বাভাবিক কিন্তু বড়দের উচিত তাদের মাফ করে দেওয়া। কালকে রুহির সাথে সাথে তোর আর আহানের ও বিয়ে হবে।

রিমান,,,,,, সাথে আমারো।

আহান,,,,,,হ ভাই হ তোর ও।

মানিক মন খারাপ করে বলে,,,,,, আমার কবে হবে।

রিমান,,,,, চুপ এখন তোর প্রেম করার বয়স, বিয়ের জন্য দেড়ি আছে।

আহান,,,,, ও জ্ঞানী এখন পর পড়ালেখা করার বয়স।

রিমান,,,,,,,, ছোট থেকেই তো পড়ালেখা করছে আর কতো। আর ওর গার্লফ্রেন্ড নাই এটা আমার বিশ্বাস করতে হবে হেহহ।

মানিক,,,,,,,, থাক রিমান ভাই, আমার বিষয়ে আর আলোচনা করার দরকার নেয়, আমি না হয় পরেই বিয়ে করে নিবো।

রিমান,,, চল আহান।

আহান,,,,,কোথায়।

রিমান,,,,,,, আমার বাড়িতে।

আহান,,৷৷৷ কোন খুশিতে।

,আমার বিয়ের খুশিতে। দেখ দুই বউ এখানে থাকবে, তো আমরা আমার বাসা থেকে গাড়ি দিয়ে আসবো ওদের নিতে। আর আমার ওখানে একা একা ভালো লাগবে না।

,, হুমম ঠিক আছে চল,, এমনিও আমার অনেক ঘুম ধরছে।

সবাইকে বাই বলে আহান রিমানের বাড়িতে যায়। আহান রিমানের বাড়িতে গিয়ে অভাক হয়ে বলে,,,,,,, বিয়ের বাড়ির মতো সাজিয়েছিস কেনো,কখন।

রিমান,,,,,,, আগে থেকেই সাজিয়ে রেখেছিলাম, ভেবেছিলাম তোর বোনকে কিডন্যাপ করে এখানেই নিয়ে আসবো। আর বিয়ে করবো তাই আর।

আহান,,,,,এতো কিছু আগে থেকে ভেবে রেখেছিস। যাক ভালোই হয়েছে এখন কাজে আসবে। আমার অনেক ঘুম পেয়েছে, আগে ঘুমিয়ে নিয়।

রিমান,,,,,, আমারো,রাত তো হয়েই গেছে।

আহান,,,,,, এখনো হয়নি।

,তো আমি চোখে সব অন্ধকার কেনো দেখছি।

,কারন তোর ঘুমে ধরেছে, আর ক্ষুধাও মেবি লেগেছে।

,ওহহ হ্যাঁ আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম, তাই তো বলি পেট ব্যাথা কেনো করছে।

,,আল্লাহ তুই আর তোর কথা। আমি খাবার অর্ডার করছি।

,হুমম সাওয়ার নিয়ে আসছি।

,আমিও।

দুজনে গোসল করে খেয়ে দেয়ে সোজা ঘুমাতে যায়।

চলবে,,,,,,,