#শর্তসাপেক্ষে
পর্ব ৪
Sidratul Muntaz
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই রোজার ঘরে আসে ঈশান। মেয়ের ঘুমন্ত সুন্দর মুখ দেখে কপালে চুমু দিয়ে সকাল শুরু করা তার নিয়মিত কাজ। আজকেও সেই রুটিন অনুসরণ করে রোজার ঘরে ঢুকেছিল। কিন্তু ভেতরে দিবাকে দেখে অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে সে। দ্রুত আবার বের হয়ে যায় রুম থেকে।
ভয়ংকর অবস্থায় রোজাকে নিয়ে ঘুমিয়ে আছে দিবা। তার গায়ের শাড়ি এলোমেলো হয়ে গড়িয়ে পড়ে গেছে মেঝেতে। সেদিকে কোনো হুশ নেই। শোয়ার ভঙ্গি সাংঘাতিক। এক পা উত্তরে তো অন্য পা দক্ষিণে। নিজের গায়ের কমফোর্টার ফেলে রোজার ছোট্ট কমফোর্টারটা অর্ধেক টেনে রেখেছে। কিছুক্ষণ দরজার কাছে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে নিজেকে ধিক্কার দেয় ঈশান। এটা সে কাকে বিয়ে করল? যে নিজেকেই সামলাতে পারে না সে কিভাবে রোজার মতো বাচ্চাকে সামলাবে? ঈশানের মনে হচ্ছে সে নিজের বাচ্চা দেখা-শোনা করার জন্য আরেকটা বাচ্চাকে ধরে এনেছে।
আয়েশা ঈশানকে দরজার কাছে দাঁড়ানো দেখে বলেন,” রোজাকে ডাকতে এসেছিস? আজ তো ও স্কুলে যাবে না। থাকুক ঘুমিয়ে। নতুন মায়ের সাথে একটু সময় কাটাক।”
ঈশান ইতস্তত মুখে বলে,” আমি আর ওই ঘরে ঢুকবো না ফুপু। মিস দিবা উঠলে তাকে একটু আমার ঘরে আসতে বলো। উনার সাথে আমার জরুরী কথা আছে। অফিসে যাওয়ার আগেই বলতে হবে।”
” এখনও মিস দিবা বলছিস? সে এখন আর মিস নেই, মিসেস হয়ে গেছে।” কথাটা বলে আয়েশা হাসতে থাকেন।
” হ্যাঁ ওই হলো একটা।” গম্ভীর মুখে রুমে চলে যায় ঈশান। তার ঠিক অনেকক্ষণ পরে দিবা তার ঘরে আসে। খুব মার্জিতভাবে শাড়ির আঁচল দিয়ে কাঁধ ঢেকে, মাথা নিচু করে বলে,” ডাকছিলেন?”
ঈশান ল্যাপটপ থেকে মুখ তুলে তাকায়। সকালের ঘটনাটা মনে পড়তেই ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে। ঠোঁটে শিশিরকণার মতো আলতো হাসি জমে ওঠে। ঈশানের মুখের ওই হাসিটা অনুমান করে দিবা একটু থমকায়। নিজের দিকে ভালো করে দেখে, তার মুখে কি কিছু লেগে আছে? লোকটা তাকে দেখে হাসছে মনে হলো!
” রোজার কিছু ব্যাপার আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ডেকেছি। আমি তো সারাদিন বাসায় থাকবো না, তাই ওকে গাইড করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব এখন আপনার। ও খুব ফোন এডিক্টেড। ভুলেও ওর হাতে ফোন দেওয়া যাবে না৷ বুক শেলফে রঙিন ছবির অনেক গল্পের বই আছে। ওসব ওকে দেখতে দিবেন। আর… রাতে কি রোজা একবারও ওর মায়ের সাথে কথা বলতে চেয়েছিল?” একটু সাবধানে প্রশ্নটা করে ঈশান।
দিবা মাথা নেড়ে বলে,” হুম চেয়েছিল। কিন্তু আমি অন্য প্রসঙ্গ এনে ওকে ব্যাপারটা ভুলিয়ে দিয়েছি।”
” গুড, ভেরি গুড! এমনটাই করবেন সবসময়। খাওয়া নিয়ে ও খুব বিরক্ত করে। সেজন্য ফুপু মাঝে মাঝে ওর হাতে মোবাইল দিয়ে দেয়। এটা আপনি করবেন না। প্রয়োজনে নোটস আর পেন দিবেন। ও আঁকিবুকি করবে। মাঝে মাঝে কিন্তু মায়ের সাথে কথা বলার জেদ করবে। ওসব আপনাকেই হ্যান্ডেল করতে হবে নিজের বুদ্ধি দিয়ে। আর আমাকে সব আপডেটস জানাবেন। আমি প্রতি দুইঘণ্টা পর পর ফোন করে খোঁজ নিবো। ”
দিবার মনে হচ্ছে সে কোনো বেবি কেয়ার সেন্টারে চাকরি নিয়েছে। একটু হেসে বলে,” ঠিকাছে ঈশান সাহেব। মনে থাকবে। আর কিছু?”
” না, আপাতত এইটুকুই। কিছু জানার থাকলে আমাকে ফোন করবেন। এখন যান।”
দিবা যেতে নিয়ে থামে একটু। রোজার মলিন মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠতেই বুক পাজরে একটা টান অনুভব করে। সে নিজেও তো অল্পবয়সে মা হারিয়েছে৷ তাই মায়ের অভাব খুব ভালো করেই বোঝে। দিবা একটু আড়ষ্ট ভঙ্গিতে বলে,” ঈশান সাহেব একটা কথা বলবো?”
” হ্যাঁ বলুন?”
” রোজা এখনও অনেক ছোটো। এতটুকু বাচ্চাকে মায়ের থেকে আলাদা করাটা ঠিক হচ্ছে না। মানছি আপনাদের ছাড়াছাড়ি হয়েছে। কিন্তু উনি রোজার মা! অন্তত মাঝে মাঝে ওকে ওর মায়ের সাথে..”
ঈশানের রুক্ষদৃষ্টি দেখে দিবা থেমে যায়। মাথা নিচু করে বিব্রত স্বরে বলে,” আমার যেটা মনে হলো সেটাই বললাম। বাকিটা আপনার ইচ্ছা।”
” নিজের মনের কথা মনের মধ্যেই রাখবেন। ডন্ট ডেয়ার টু শেয়ার উইদ মি। এন্ড ডন্ট ক্রস ইউর বাউন্ডারিজ। আপনাকে যতটুকু বলা হয়েছে শুধু ততটুকু করুন। আমাকে জ্ঞান দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।”
দিবা একটু ভ্রু কুঁচকায়। অপমানে ঠোঁট দু’টো কাঁপতে থাকে। এতো ভাব দেখানোর কি আছে? ভালো করে বললেই তো হতো। দিবা তো খারাপ কিছু বলেনি। সে আর এক মুহূর্ত দাঁড়ায় না। হনহন করে বেরিয়ে যায় ঈশানের রুম থেকে।
_________
রাফিনের গায়ে ভীষণ জ্বর। তিনদিন ধরে সে বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছে না। বাড়ির অবস্থা ভালো নেই। মা হসপিটালে ভর্তি। অনেক টাকার দরকার। গতমাসে ইন্ডিয়া গিয়েছিল সে। ডেনমার্কের ভিসা পাওয়ার আশায়। ইচ্ছে ছিল ভিসাটা হলে ডেনমার্ক চলে যাবে। কিন্তু ইচ্ছে পূরণ হয়নি। অগত্যা দেড়লাখ টাকা নষ্ট হয়েছে। পাওনাদার পেছনে লেগে আছে। টাকা শোধ করতে না পারলে কঠিন বিপদ। রাফিনের বড়বোনের বিয়ে ভেঙে গেছে। ঝামেলার উপর মহা ঝামেলা। সংসার নিয়ে এতো দুশ্চিন্তায় রাফিন জ্বর বাঁধিয়ে বসে আছে।
সপ্তাহ দুয়েক হলো, দিবার সাথেও তার কোনো যোগাযোগ নেই। এই মুহূর্তে রাফিনের মনে হচ্ছে দিবার সঙ্গে কথা বলতে পারলে তার মন ভালো হতো। কিন্তু সেই সুযোগ নেই। দিবা তার ফোন ধরছে না। এটাও ঠিক যে এতোগুলো দিনে রাফিন দিবাকে ফোন করেছে মাত্র দু’বার। দিবা ধরেনি বলে সে আর ফোনও করেনি। আজ কি একবার করে দেখবে?
দিবার সাথে যেদিন শেষ কথা হয়েছিল সেদিন দিবা বলেছিল, তার নাকি বিশাল বড় ঘর থেকে বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। তাই শুনে রাফিন বলল,” ভালোই তো। বিয়ে করে নাও।”
দিবা অবাক হয়ে বলল,” কি বলছো? আমি তোমাকে ছেড়ে অন্য একজনকে বিয়ে করে নেবো?”
রাফিন সামান্য হাসল,” তোমার দায়িত্ব নেওয়ার মতো যোগ্যতা আমার কোনোদিনও হবে না। শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যি যে তুমি আমার কাছে এখন বোঝা। তোমাকে আমি মিথ্যা স্বপ্ন দেখাতে চাই না।”
” মিথ্যা স্বপ্ন! এতোদিন তুমি আমাকে মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়েছো?”
রাফিন হতাশা ভরা গলায় বলল,” হ্যাঁ। শুধু তোমাকে না। সবাইকেই মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়েছি। এমনকি নিজেও দেখেছি। কিন্তু কোনো স্বপ্নই সত্যি হওয়ার নয়৷ মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য স্বপ্ন দেখা নিষিদ্ধ। বেকার ছেলের আবার প্রেম কিসের? এইসব হলো বড়লোকি জিনিস। আমার দ্বারা প্রেম-ভালোবাসা হবে না। তোমার উচিৎ আমাকে ভুলে যাওয়া।”
দিবা খুব ঠান্ডা স্বরে জিজ্ঞেস করল,” রাফিন, তুমি কি ব্রেকাপের কথা বলছো?”
” হয়তো সেটাই ভালো। আমার অবস্থা তুমি জানো। এই মুহূর্তে তোমার সাথে ফোনে কথা বলার জন্যেও আমাকে ধার করতে হবে। মাথায় পাহাড় সমান ধারের বোঝা। তার উপর তুমি দিচ্ছো বিয়ে নিয়ে এক্সট্রা প্রেশার।”
” তার মানে আমি তোমার কাছে বোঝা?”
রাফিন কিছু বলল না। দিবা ফোন রেখে দিল। এরপর থেকে সে আর রাফিনের ফোন ধরেনি। অবশ্য যা হয় ভালোর জন্যই হয়। এখন আর মোবাইলের পেছনে বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে না। দিবার সাথে দেখা করতে যাওয়ার জন্য দুইদিন পর পর একশো টাকা রিকশা ভাড়া যোগাড় করতে হচ্ছে না৷
দরজায় খট খট শব্দ হচ্ছে। রাফিনের ছোটবোন রায়া এসে জানায়,” ভাইয়া, সলিমুল্লাহ আঙ্কেল এসেছেন।”
রাফিন দূর্বল কণ্ঠে বলে,” আসতে বলো।”
লোকটি ভেতরে প্রবেশ করেই চশমার আড়াল থেকে রাফিনকে ভালো করে দেখেন। অবজ্ঞাসূচক কণ্ঠে প্রশ্ন করেন,” অসুস্থ নাকি?”
রাফিন উঠে বসতে বসতে বলে,” জ্বী চাচা। একটু শরীর খারাপ হয়েছে।”
সলিমুল্লাহ চেয়ার টেনে বসতে বসতে ব্যস্ত সুরে বলেন,” টাকার কোনো ব্যবস্থা হয়েছে?”
” না। আপনি হয়তো আমার পরিবারের অবস্থা জানেন না। আমার মা হসপিটালে ভর্তি। অবস্থা ভালো না। কোমরের হাড্ডি নড়ে গেছে। অপারেশন করাতে হবে। আপা মায়ের সাথে হসপিটালে আছে।”
” তোমার ছোটবোন না এবার ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার কথা?”
” হয়নি। ও আসলে কোথাও চান্স পায়নি। প্রাইভেটে পড়ার মতো অবস্থাও আমাদের নেই। তাই দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
” খুবই ভালো। মেয়েটা মেধাবী। ভালো জায়গায় পড়লে ভালো কিছু করতে পারবে। তোমার কাছে কিন্তু আমি টাকা চাইতে আসি নাই। আসছিলাম একটা প্রস্তাব রাখতে।”
” বলেন চাচা।”
” তোমার বড়বোনের তো শুনলাম বিয়ে ভাঙছে। তাকে কি আর বিয়ে-শাদি দিবা না?”
” বিয়ে নিয়ে রিতু আপা এখনও কিছু চিন্তা করেনি। আমরাও ভাবছি না।”
” তোমার কাছে একটা ভালো প্রস্তাব রাখতে চাই। রিতুর তো বয়স বাড়ছে৷ এই বয়সে মেয়েদের বিয়ে হওয়া সহজ ব্যাপার না। তোমাদের আপত্তি না থাকলে আমি রিতুকে বিয়ে করবো। আগেই কিছু বইল না। আমার পুরো কথা শোনো। বিয়ের পর সব দেনা মাফ। শুধু তাই না, রায়ার লেখাপড়ার খরচও আমি দিবো।”
রাফিন প্রচন্ড অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। রাগে মুখে র’ক্ত জমে যায়। সলিমুলাহ সাহেব যখন প্রস্তাবের কথা বলছিলেন তখন সে ভেবেছে নিজের ছেলের জন্য প্রস্তাব দিবেন। তার ছেলে রিতুর চেয়ে কয়েক বছরের বড় হবে। সেই ছেলের এখনও বিয়ে হয়নি। অথচ উনি নিজের বিয়ের কথা ভাবছেন! তাও মেয়ের বয়সী একটা মেয়ের সাথে? একে তো থাপড়াতে থাপড়াতে ঘর থেকে বের করা দরকার। রাফিনকে নিশ্চুপ দেখে সলিমুল্লাহ আরও বলেন,
” আমার কথা ভেবে দেখো। তোমরা এখন বিপদে আছো। আমি শুধু সাহায্য করতে চাইছি।”
রাফিন শান্ত স্বরে বলে,” ভাবার কিছু নেই চাচা। আপনি আমার বাবার বয়সী। এই সম্পর্ক কিভাবে হয়?”
সলিমুল্লাহ ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন। রাফিনের উত্তরে তিনি যারপরনাই বিরক্ত। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলেন,” কেন হয় না? সেদিন হালিম দোকানদারের কাছে শুনলাম তোমার আপা নানা জায়গা থেকে কুপ্রস্তাব পায়। কুপ্রস্তাব মানে বুঝছো তো? একরাতের প্রস্তাব। আমি তো সেরকম কিছু বলিনি। ভালো কথা বলেছি। চরিত্রে একবার কালি লেগে গেলে তোমার বোনের আর কোথাও বিয়ে হবে না। এখন তো তাও আমি বলছি। তখন আমিও বলবো না।”
অন্য কোনো সময় হলে রাফিন ঘুষি মেরে এই বদমায়েশের থোবড়া ভেঙে ফেলতো। কিন্তু এই মুহূর্তে সেটা ইচ্ছে করছে না। তার মন ভালো নেই, সাথে শরীরটাও। সে নিশ্চুপ থেকে সবকিছু শুনল। সলিমুল্লাহ আরও কিছুক্ষণ বকবক করে উঠে চলে গেলেন।
রাফিনের এবার মাথায় যন্ত্রণা হচ্ছে। নতুন আরও একটা দুশ্চিন্তা যোগ হয়েছে। সলিমুল্লাহ সাহেবকে আর বাড়ি আসার সুযোগ দেওয়া যাবে না। তিনি নিশ্চয়ই টাকা চাওয়ার বাহানায় এখন থেকে রোজ বাড়ি আসবেন। রিতু আপার দিকে খারাপ নজরে তাকাবেন। সেটা হতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু ওই বদ লোককে থামানোর জন্যও তো টাকার দরকার। এতো টাকা রাফিন কি করে যোগাড় করবে? ভাবতে ভাবতে তার ঘুম এসে যায়। সম্পূর্ণ ঘুম নয়। অর্ধ জাগ্রত এবং অর্ধ ঘুমন্ত অবস্থা। এমন অবস্থায় মানুষ অনেক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে। রাফিনও আজ একটি অদ্ভুত স্বপ্ন দেখল।
সে বিরাট একটি পাহাড়ে হাঁটছে। ঘুটঘুটে অন্ধকার চারদিকে। তবুও সে পরিষ্কার সবকিছু দেখছে। পথিমধ্যে একটি বস্তা পাওয়া গেল। রাফিন জানে এই বস্তার ভেতরে কি! সে প্রায়ই এমন স্বপ্ন দেখে। বস্তা খুলে দেখা যাবে অনেক টাকা। সবগুলো কচকচে নোট। রাফিন গাঢ় আনন্দ নিয়ে টাকাগুলো ছুঁয়ে দেখবে এবং তার ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে সব টাকা উধাও হয়ে যাবে। তখন খুব আফসোস লাগবে। তাই আজ রাফিন টাকার বস্তা হাত দিয়ে স্পর্শ করে না। সে জানে এটা নিছক স্বপ্ন। বাস্তবে এই টাকার কোনো মূল্য নেই। সে বস্তা ফেলে এগিয়ে চলে এবং আজ একটি অদ্ভুত জিনিস দেখে।
বেনারসি গায়ে একটি মেয়ে করুণ শব্দে কাঁদতে কাঁদতে হেঁটে যাচ্ছে। তার পায়ের চিহ্নগুলো টাকা হয়ে যাচ্ছে। মেয়েটি যত পথ এগোচ্ছে টাকার পরিমাণ ততই বাড়ছে। রাফিন আকাশ সম বিস্ময় নিয়ে মেয়েটির পেছনে যেতে থাকে। একসময় মেয়েটিকে ডেকে বলে,” এইযে শুনুন, আপনার টাকা তো সব পড়ে যাচ্ছে।”
মেয়েটি চোখের জল মুছতে মুছতে ঘুরে তাকায়। তখন রাফিন প্রচন্ড ধাক্কা খায়। মেয়েটি আর কেউ নয়, দিবা। দিবার চোখে জল। সেই জলগুলো ভূমি স্পর্শ করা মাত্র টাকা হয়ে যাচ্ছে। কি আশ্চর্য! রাফিন ধড়মড় করে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। তার শরীর ঘামে ভিজে গিয়েছে। জ্বরটা নিশ্চয়ই ছেড়েছে! রাফিন গা থেকে কাঁথা ফেলে উঠে বসে। দিবাকে নিয়ে এমন উদ্ভট স্বপ্ন দেখার মানে কি? স্বপ্নে দিবার গায়ে বিয়ের শাড়ি কেন? সে কাঁদছিলই বা কেন? রাফিন ঠিক করে, সে এক্ষুণি দিবার কাছে যাবে। দিবাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
চলবে