শিশির ভেজা রোদ্দুর পর্ব-৪৮+৪৯

0
669

#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_48
#Writer_NOVA

রাতে……

ছাদের ওপর পাটি বিছিয়ে সবাই মিলে জমপেশ আড্ডা বসিয়েছি। আকাশে বিশাল থালার মতো চাঁদ না থাকলেও অর্ধেক আছে। তাতে পুরো ভুবন বেশ আলোকিত দেখাচ্ছে। আবহাওয়া হাড় কাঁপানো ঠান্ডা না হলেও বেশ ঠান্ডাই বলা যায়। তবে আমেজটা ভালোই লাগছে। আমাদের আড্ডার বিষয় এখন ভুতুড়ে গল্প। জোছনা বিলাসের সাথে ভুতুড়ে গল্পগুলোও মন্দ লাগছে না। বরং মাঝে মাঝে শরীরের পশমগুলো ঠান্ডা, ভয় দুটো মিলে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে।হঠাৎ তায়াং ভাইয়া গলা খাকরি দিয়ে বললো,

— আমাবস্যার রাত হলে ভুতুড়ে গল্পগুলো বেশ জমতো। কি বলিস তোরা?

ভাইয়ার কথায় তন্বী চোখ পাকিয়ে ওর দিকে তাকালো। ভয়ে ওরা একে অপরের হাত ধরে বসে আছি। যদিও কেউ কাউকে ভয়টা বুঝতে দিচ্ছে না। তার মধ্যে ভাইয়ার এসব কথায় রেগে যাওয়ারি কথা।তন্বী বেশ বিরক্তি সহকারে বললো,

— তোকে পশ্চিমের বাঁশঝারে ফেলে রেখে আসি।তাহলে বুঝবি আমাবস্যার রাত হলে তোর কি অবস্থা হবে। কত করে বললাম এখন এসব গল্প শুরু করিস না। তা তো তোর কানে ঢুকলো না। এখন যদি ঐ বাঁশঝারের থেকে কিছু একটা এসে আমাদের ঘাড় মটকায় তাহলে তার দায়ভার কে নিবে?

তায়াং ভাইয়া ব্যঙ্গের সুরে বললো,
— হু এই তোদের সাহস! আমার আগেই বোঝা উচিত ছিলো এই ভীতুদের সাথে এসব গল্প চলে না। বুঝলি এনাজ, মুখেই তাদের সাহসের তোড়জোড়। এখন একেবারে ভয়ে মিইয়ে যাওয়ার অবস্থা।

অনন্যা বললো,
— তুমি কাকে ভিতু বলছো মামা? তুমি জানো আমাদের বাড়ির পেছন দিকটা ভালো নয়। তবুও আমরা ভয় না পেয়ে সন্ধ্যার দিকে ঘোরাঘুরি করি। আর তুমি আমাদের ভীতু বলছো।

তন্বী মুখ ভেংচে তায়াং ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে অনন্যাকে বললো,
— নিজে ভয় পাচ্ছে সেটা আমাদের দিয়ে বোঝাচ্ছে।পরে দেখবা খালামণি রাতে ওয়াসরুমে যাওয়ার সময় এনাজ ভাইয়াকে দরজার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখবে।

তায়াং ভাইয়া হাত বাড়িয়ে তন্বীর কান টেনে বললো,
— আজ একটু বেশি ফরফর করছিস। একজন চুপ করে আছে বলে কি তার দায়িত্ব তুই নিয়েছিস?

তন্বী চেচিয়ে বললো,
— ভাইয়া কান ছাড় ব্যাথা পাচ্ছি। এমনি শীতের দিন চলে এসেছে। একটু ব্যাথা পেলে মনে হবে জান বেরিয়ে যাচ্ছে। ও নূর আপি, ও নোভাপু কিছু বলো?

নূর আপি কিছুটা চোখ পাকিয়ে ভাইয়াকে বললো,
— তানভীর ভাইয়া ওর কান ছেড়ে দেন। কান ছিঁড়ে গেলে পরবর্তীতে বিয়ে দিতে সমস্যা হবে।

তন্বী, তায়াং ভাইয়ার থেকে নিজের কান ছাড়িয়ে দুম করে ভাইয়ার পিঠে এক কিল বসিয়ে আমার পেছনে এসে বসলো। ভাইয়া উঠে এসতে নিলে নূর আপি ওর এক হাত ধরে আবার বসিয়ে দিলো। এনাজ এক গালে হেসে ভ্রু নাচিয়ে বললো,

— আমি না রহস্যময় ভালোবাসার গন্ধ পাচ্ছি। কোথায় জানি চুপিসারে কিছু একটা হচ্ছে।

নূর আপি এনাজের কথার সারমর্ম বুঝতে পেরে সাথে সাথে ভাইয়ার হাত ছেড়ে দিলো। লজ্জায় মাথা নিচু করে রেখেছে আপি। এনাজ আবারো টিপ্পনী কেটে বললো,

— হয়েছে, হয়েছে আপু। এতো লজ্জা পেতে হবে না। আমরা আমরাই তো।

তায়াং ভাইয়া এনাজের পিঠে জোরে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো,
— চুপ কর শালা।

— ভাই, আমি তোর বোন জামাই। তুই আমার সমোন্ধি। শালা বলে অপমান করিস না।

তায়াং ভাইয়া কপাল কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
— কিরে শাঁকচুন্নি তুই আজ এতো চুপচাপ। এখন অব্দি কোন কথাই বললি না। হয়েছে কি তোর? এনাজ তোর সাথে কোন ঝামেলা হয়েছে?

এনাজ বললো,
— না তো তায়াং। আমার সাথে ওর কোন ঝামেলা হয়নি।

ইভা শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,
— বোইনেরে তোমরা আরেকটা আইসক্রিম খাওয়াও নাই বলে বোইনে রাগ করছে।

ইভার কথা শুনে সবগুলো হো হো করে হেসে উঠলো। আমি চোখ পাকিয়ে ওর দিকে একবার তাকালেও কোন উত্তর দিলাম না। এনাজ বললো,
— কি হয়েছে তোমার? শরীর খারাপ লাগছে? চুপচাপ আছো যে?

— না তেমন কিছু নয়। এমনি কথা বলতে ভালো লাগছে না।

তন্বী ভাব দেখিয়ে বললো,
— চলো আবার ভুতুড়ে গল্প শুরু করি।

অর্থি চেচিয়ে বলে উঠলো,
— না আর শুরু করার দরকার নেই। আমার ভয় করছে। পরে আবার জ্বর এসে পরবে।

অনন্যা বললো,
— তোর যখন জ্বর আসবো তাহলে তুই নিচে যা। তোর এই জায়গায় থাকার দরকার নেই। এমনি ভয়ে তুই রাতের বেলা ওয়াসরুমের ছিটকিনি লাগাস না। এগুলো শুনলে তো তোর সাথে ওয়াসরুমের ভেতরে যেতে হবে আমাকে। তার চেয়ে ভালো তুই এখান থেকে ফট।

অর্থি নিচের থেকে একটা ছোট কাঠি অনন্যার দিকে ছুঁড়ে মারলো।ইভা মুখ টিপে হেসে বললো,
— যদি অর্থি তুই মাঝরাতে আমাদের কাউকে ডাক দিস তাহলে আমরা একটাও তোর সাথে যাবো না। মনে রাখিস কথাটা।

তায়াং ভাইয়া আমাকে বললো,
— নোভা তুই একটা হরর গল্প বল।

— আমি পারি না।

— মিথ্যে বলিস না।

এনাজ মুখটাকে শুকনো করে আমাকে জিজ্ঞেস করলো,
— কি হয়েছে তোমার?

— কিছু না।

— কিছু তো একটা হইছে।

— হইলে তো কান্নাই করতো।

— ধ্যাত, আমি তা বলিনি। প্লিজ একটা গল্প বলো।সবাই শুনতে চাইছে।

এনাজের সাথে সাথে সবাই শুরু করলো গল্প বলার জন্য। শেষে জোড়াজুড়িতে বলতে বাধ্য হলাম। কিছুটা থেমে দম নিয়ে বলা শুরু করলাম,

— ক্লাশ ফাইভে থাকতে আমার খুব বিশ্বস্ত একটা বান্ধবী ছিলো। অনেক সহজ-সরল ও মিশুক। ওর নাম ছিলো তুলি। ঘটনাটা ওর মামার। ওর মামার সাথে এক মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। মেয়েটাকে তিনি এক তরফাভাবে অনেক বছর ধরে ভালোবাসতো। অবশেষে পরিবারের মত নিয়ে তাদের বিয়েও ঠিক হয়েছিলো।কিন্তু মেয়েটার আরেকটা ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিলো। যার কারণে বিয়ের কয়েক দিন আগে ঐ ছেলের সাথে পালিয়ে যায়।

আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এই অব্দি থামলাম। এনাজ আমাকে থামতে দেখে বললো,
— এটা তো লাভ স্টোরি মনে হচ্ছে। হরর কি হলো?

আমি শান্ত চোখে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
— আমার গল্প এখনো শেষ হয়নি। পুরোটা বলে নেই।

💖💖💖

এনাজ মাথা হেলিয়ে সম্মতি প্রকাশ করলো। অর্থি ভয়ে দুই হাত দিয়ে শক্ত করে নূর আপির বাহু ধরে রেখেছে।ওকে চলে যেতে বলা হয়েছিল কিন্তু ও আমাদের ছেড়ে যাবে না। আমি ওর দিকে একবার দৃষ্টি দিয়ে আবার শুরু করলাম।

— তুলির মামা এই বিষয়টা মানতে পারেনি। সে মেয়েটাকে অনেক ভালোবাসতো। তাই সেদিন রাতেই উঠোনে থাকা মোটা বড়ই গাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। ২০০৮ কি ০৯ সালের কথা। তখনকার সময় গ্রামের টয়লেটগুলো একটু দূরেই থাকতো। টিউবওয়েলের থেকে টয়লেটের দূরত্বটাও ভালো ছিলো। তার বাবা ভোরে নামাজ পরার জন্য উঠেছিলো। তখনও চারিদিকে অন্ধকার। দূর মসজিদ থেকে আজানের সুর ভেসে আসছে। এখনকার মতো এতটা বিদ্যুৎও ছিলো না। থাকলেও প্রচুর লোডশেডিং হতো। উনি টিউবওয়েল থেকে পানি নিয়ে টয়লেটে যাওয়ার সময় বড়ই গাছের কাছে যখন এলেন তখন তার মাথায় কিছুর সাথে বারি খেলো। ভুল ভেবে আবারো পথ ধরলেন।কিন্তু যাওয়ার সময় একিভাবে আরেকবার তার মাথায় বারি খেলো। উনি দ্রুত ঘর থেকে কুপি এনে বরই গাছের সামনে আসতেই জোরে চিৎকার করে কান্না শুরু করলেন। কারণ তার মাথায় এতক্ষণ তার ছেলের পা বারি খাচ্ছিলো। যে কিনা রাতে আত্মহত্যা করেছে। পুরো গ্রাম রটে গেলো তার মৃত্যুর কথা।যথা নিয়মে তাকে জানাযা দিয়ে কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হলো। যেই কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে সেটা ছিলো এলাকার মসজিদের সাথে। কবরস্থানটা মসজিদের সাথে বানানো হয়েছে। যাতে কবরবাসীদের আজাব কম হয়। সেই মসজিদে মাত্র দুই দিন ধরে নতুন এক ইমাম এসেছে।উনি ইমামতি তে একেবারেই নতুন। এটাই তার ইমামের প্রথম চাকরী। তুলির মামাকে যেদিন কবর দেয়া হয়েছে সেদিন রাতে উনি তাহাজ্জুদ নামাজ পরার জন্য মসজিদের বাইরে এসেছেন ওজু করতে। হঠাৎ… দেখো তোমাদের পেছনে কি!

আমার কথা শুনে সবাই চমকে পেছনে তাকালো।তারপর কটমট চোখে আরেকবার আমার দিকে তাকালো।আমি দাঁতগুলো বের করে একটা মেকি হাসি দিলাম।হঠাৎ বলেই সবার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। দেখি সবাই উৎসুক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর কি হয়েছে তা শোনার জন্য।আমি তাই একটু ভয় দেখানোর জন্য পেছনে তাকাতে বলেছিলাম। কিন্তু আমি এভাবে রহস্য রেখে থেমে যাওয়ায় সবাই আমার ওপর বিরক্ত। আমি সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে বললাম,

— কেউ বিরক্ত হয়ো না আমি বলছি।

তন্বী বললো,
—কেউ এমন জায়গায় থামে? আর তুমি তো ভয় দেখিয়ে ফেলছিলা।

নূর আপি রেগে বললো,
— বান্দরনী তুই রুহ কাঁপায় ফেলছিলি৷ আর বলিস তোর ওপর যেন কেউ বিরক্ত না হয়। তোরে পিটাবো এখন।

অর্থি বললো,
— আমার ভয় করছে।

ইভা বিরক্তি নিয়ে বললো,
— তারপর কি হয়েছে বলো না।থামলা কেন?

অনন্যা বললো,
— ও খালামণি বলো না তারপর কি হলো?

তায়াং ভাইয়া রেগে বললো,
— ঢঙ্গি ঢং না করে পুরোটা বল।

এনাজ মুখটাকে থমথমে করে বললো,
— এমন জায়গায় কেউ থামে? আমরা সবাই পুরো গল্পে ঢুকে গিয়েছিলাম। আর তুমি মজাটাই নষ্ট করে দিলে।

আমি অপরাধীর সুরে বললাম,
— সব আমাকে বকা শুরু করছে। এবার থামো সবাই আমাকে বলতে দাও।

অনন্যা তাড়া দিয়ে বললো,
— জলদী বলো।

আমি সবার দিকে তাকিয়ে আবার বলতে আরম্ভ করলাম,
—হঠাৎ ইমাম সাহেবের চোখ কবরস্থানের দিকে পরলো। মসজিদের সামনে কবরস্থান। তাই সামনের দিকে চোখ পরাটা স্বাভাবিক। তিনি দেখলেন আজকের নতুন কবরটা যেটা তুলির মামার কবর। সেটা দাউদাউ করে আগুন জ্বালছে।এটা ছিলো কবরের আজাব। তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখান থেকে কবরটা স্পষ্ট দেখা যায়। উনি অনেক ভয় পেয়ে গেলেন। যেহেতু উনি নতুন তাই এসব ভয় পাওয়াই স্বাভাবিক। সে এতটা ভয় পেয়েছিলেন যে সপ্তাহখানিক তার জ্বর ছিলো।এই ঘটনার পর উনি ইমামের চাকরীটা ছেড়ে দিয়েছিলেন। এই ঘটনার পর থেকে অনেকে কবরস্থানের পাশ দিয়ে রাতের বেলা যেতে চাইতো না। ঐ মসজিদে ইমাম এখনো বেশি দিন থাকে না। হাতে গুণা কয়েকজন রয়েছে অনেকদিন। যারাই রয়েছে তারাই মাঝরাতে তাহাজ্জুদ কিংবা টয়লেটে যাওয়ার জন্য বের হলে ছাগলের ডাক শুনতে পেতো। এগুলো দুষ্ট জ্বীনেদের কাজ। এরা কবরস্থানের ভেতরে তো ঢুকতে পারে না তাই বাইরে থেকে মানুষকে ভয় দেখায়। এর মধ্যে আরেকটা কাহিনি আছে। তুলির মামা যে বড়ই গাছে আত্মহত্যা করেছিলো সেই ডালে নাকি দুই রাতে লাশ ঝুলে থাকতে দেখেছিলো বাড়ির মানুষ। তাই সে বড়ই গাছটা তারা কেটে ফেলে। ভূত-প্রেত বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। যা আছে সেগুলো দুষ্ট জ্বীন। এরা মৃত মানুষের রূপ নিয়ে মানুষকে ভয় দেখায়।

আমি থামতেই তন্বী বললো,
— জ্বীনের দেখা কোথায় পাবো?

আমি বিস্মিত কন্ঠে বললাম,
— কেন তোর লাগবে নাকি?

— না একটা পুষতাম।

তায়াং ভাইয়া শব্দ করে মুখ ভেংচে বললো,
— ভয়ে আজ দফারফা হয়ে যাবে। সে নাকি আবার জ্বীন পুষবে। একটু আগে ভুতুড়ে গল্প শুরু করেছি বলে ভয়ে নাকের জল চোখের জল একসাথে করছিলো সে এখন সাহস দেখাচ্ছে 😏।

তন্বী রেগে বললো,
— তোর কিরে? যা ভাগ তুই। তোর মতো নাকি?

আমি তন্বীকে বললাম,
— চুলে সুগন্ধি তেল দিয়ে, চুল ছেড়ে আমাদের পশ্চিমের বাঁশঝার দিয়ে একটা চক্কর মেরে আয়। ইন শা আল্লাহ ওদের দেখা তো পাবি। খুশিতে ওরা তোর সাথেও চলে আসবে।

— না বাবা, দরকার নেই।

আশেপাশের পরিবেশটা পুরো ভুতুড়ে হয়ে আছে। দূরে কুয়াশার চাদরে মোড়ানো সবকিছু। আগের থেকে শীতটাও বেশি করছে। সবাই নিশ্চুপ। হঠাৎ করে পাশের আমগাছ থেকে কিছু অদ্ভুত শব্দ হতেই সবাই চমকে সেদিকে তাকালো। আমি ভয় দেখানোর জন্য চোখ দুটো বড় করে ভীত কন্ঠে বললাম,

— আল্লাহ গো দেখো ঐটা কি!

এতটুকুই যথেষ্ট ছিলো। সবগুলো হুড়মুড় করে উঠে জুতা রেখেই দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেলো। আমি সিঁড়িতে বসে পেট ধরে হাসতে লাগলাম।এরা এতক্ষণ সাহসের কথা বলছিলো।এখন সব দৌড়। এমনকি তায়াং ভাইয়া ও এনাজও। এবার ভাবুন কি সাহসী মানুষ তারা।একটা হুতুম পেঁচা আমগাছের ডালে বসে পাখা ঝাপটাতেই পিনপিনে নীরবতায় অদ্ভুত শব্দ মনে হয়েছে। সেই ভয়ে সব ছুট। আমি একবার আমগাছের ডালে তাকিয়ে ছাদের থেকে পাটি,সবার জুতো নিয়ে হাসতে হাসতে নিচে নেমে গেলাম।

(বিঃদ্রঃ আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়। আত্মহত্যাকারী কে পরকালে কঠিন আজাব ভোগ করতে হয়। উপরে আত্মহত্যার যে ঘটনা উল্লেখ করলাম তা পুরোটাই সত্যি ঘটনা।আত্মহত্যা করার কথা কখনো ভাবা তো দূরে থাক, মাথায়ও আনবেন না। জীবন অনেক সুন্দর।নিশ্চয়ই দুঃখের পর সুখ আসবেই।)

❣️❣️

পাঠকের প্রশ্নঃ মঠ কি?
উত্তরঃ মঠ বলতে এমন একটি অবকাঠামোকে বুঝানো হয় যেখানে কোন এক বিশেষ সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গ ধর্মীয় কারণে অবস্থান করেন এবং সেখানে উক্ত ধর্মীয় বিভিন্ন গুরুগণ উপদেশ প্রদান ও শিক্ষাদান করেন।

এরপরেও যারা না বুঝবেন দয়া করে একটু গুগলে সার্চ করে দেখে নিবেন🥰।

#চলবে

#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_49
#Writer_NOVA

সকালের ধোঁয়া ওঠা চায়ের সাথে কমবেশি সবাই পরিচিত।অনেকে কুয়াশায় মোড়ানো সকালটাকে উপভোগ করে এক কাপ চা কিংবা কফির সাথে। কিন্তু সকালটা যদি হয় গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার সাথে তাহলে তো তার তুলনাই নেই।

আম্মু মাটির চুলের পাশে বসে ভাপা পিঠা বানাচ্ছে। সাথে খালামণি ও বড় মামী সাহায্য করছে। আমি, নূর আপি, অনন্যা চাদর মুড়ি দিয়ে চুলোর কাছেই বসে আছি। ইভা,তন্বী, অর্থি এখনো উঠেনি। আজকে বেশ শীত লাগছে। মনে হচ্ছে কয়েকদিনে পুরো দমে শীত বুড়ি তার কার্যক্রম শুরু করবে। গরম ভাপা পিঠা মুখে দিতেই শীতে আসার আনন্দ উপভোগ করা যায়। যদিও শীত সবার জন্য সমান আনন্দের নয়। তবুও এর শাক-সবজি ও পিঠাপুলির কারণে একে একটু বেশি পছন্দ করি আমি। গরম ভাপা পিঠার থেকে একপাশ ভেঙে মুখে দিতেই তায়াং ভাইয়া ও এনাজের আগমন। তারা সকাল সকাল দোকানে গিয়েছিলো। কেন গিয়েছিল তা আমি আন্দাজ করে ফেলেছি। দুই বন্ধু গরুর জাবরকাটার মতো করে চুইংগাম চাবাচ্ছে। এনাজের হাতে মুঠ ভর্তি তাজা, সতেজ লাল শাক।তার মধ্যে থাকা শিশির বিন্দুগুলো প্রমাণ করে দিচ্ছে সদ্য তুলে আনা হয়েছে। আমাদের কাছে এসে এনাজ আম্মুকে বললো,

— আন্টি, শাকগুলো কিরকম হয়েছে?

আম্মু, খালামণি, মামী তিনজনেই শাকগুলো দেখে খুশি হয়ে গেলো। আসলেই শাকগুলো দেখতে টাটকা,তরতাজা দেখাচ্ছে। যে কাউকে আকর্ষণ করতে সক্ষম। আম্মু খুশি মনে বললো,
— মা শা আল্লাহ। শাকগুলো তো টাটকা মনে হচ্ছে। কোথা থেকে আনলে?

— ঐ তো দোকান থেকে আসার সময় জমি থেকে তুলতে দেখলাম। আমার এতো পছন্দ হয়েছে যে কিনেই নিয়ে আসলাম। জমির মালিক বললো কোন ধরনের ঔষধ ব্যাবহার করেনি। একদম নির্ভেজাল।

— পাতাগুলোও টাটকা লাল। আমার কাছে শাক দিয়ে তোমরা হাত-পা ধুয়ে এসো। আমি গরম গরম পিঠা দিচ্ছি খেয়ে নিবে।

— ভাপা পিঠা 😋!

— তুমি পছন্দ করো না?

— অনেক বেশি। আম্মু বেঁচে থাকতে প্রতি শীতে আমার জন্য কয়েকদিন পরপর বানাতো। এখন আম্মুও নেই কোন পিঠাও নেই।

শেষের কথাগুলো বলতে বলতে এনাজের মুখটা কালো হয়ে আসছিলো। তার দিকে তাকিয়ে বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো। আম্মু হাড়ির ওপর ভাপে পিঠার ছাঁচটা টোকা দিয়ে পিঠা ফেলে দিয়ে বললো,

— আম্মু নেই তো কি হয়েছে আমরা আছি তো। মন খারাপ না করে জলদী জলদী পিঠা খেতে এসো।

খালামণি এনাজের হাত থেকে শাকের আঁটিগুলো নিয়ে বড় খাঁচিতে রেখে আম্মুর সাথে গলা মিলিয়ে বললো,

—পুরনো কথা মনে করে মন খারাপ করিস না তো বাবা। যা ফ্রেশ হয়ে আয়। তায়াং তুইও যা।

এনাজ মুখটাকে গম্ভীর করে বললো,
— পুরনো কথা তো মনে করতে চাই না আন্টি। তবুও মনে পরে যায়।

আব্বু সবেমাত্রই দালান থেকে বের হয়ে রান্নাঘরের সামনে এসেছিলো। এনাজের কথা শুনে মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
— জীবন অনেক বড় বাবা। থেমে না থেকে চলতে থাকো। মনে রাখবে গতিতে জীবন, স্থিরতায় মৃত্যু। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) ও কিন্তু এতিম ছিলেন।

এনাজ মুখের চুইংগামটা দূরে ফেলে দিয়ে আব্বুকে বললো,
— দোয়া করবেন আঙ্কেল। শেষ পর্যন্ত যেন সঠিক পথে চলতে পারি।

— ইন শা আল্লাহ পারবে। এখন কথা না বলে পিঠা খেয়ে নাও। নোভার আম্মু, ওদেরকে পিঠা দাও। ওরা দাঁড়িয়ে আছে তুমি ওদের দিচ্ছো না।এটা কি ঠিক?

বড় মামী বললো,
— ওরা ফ্রেশ হয়ে আসুক। দোকান থেকে এলো। এখন হাত-পা ধুয়ে খেতে বসলে ভালো হবে। নোভার মা তুমি নোভার আব্বুকে পিঠা দাও।

আব্বু মামীকে বললো,
— আমার জন্য না ভাবী। ওদেরকে আগে দিন। মেহমান রেখে কি আমরা আগে খাবো? ওরা আগে খেয়ে নিক। যাও তোমরা দুইজন টিউবওয়েল থেকে হাত,মুখ ধুয়ে নাও।

এনাজ আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে একটা হাসি উপহার দিয়ে তায়াংকে বললো,
— চল হাত-পা ধুয়ে নেই।

তায়াং ভাইয়া মোবাইল চালাচ্ছিলো।এনাজের কথা শুনে মোবাইল থেকে চোখ উঠিয়ে চুইংগাম চাবাতে চাবাতে এনাজের দিকে তাকিয়ে বললো,

— হুম চল।

তায়াং ভাইয়া মুখে চল বললেও আবারো মোবাইলের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা করতে মনোযোগী হয়ে গেলো। এনাজ একা গিয়ে টিউবওয়েলে হাত-পা ধুতে নিলে আমি আস্তে করে খাওয়া ছেড়ে উঠে তার সামনে চলে এলাম। তার সামনে গিয়ে টিউবওয়েলের হাতল ধরে বললাম,

— আমি টিউবওয়েল চাপ দিয়ে দেই? যদি আপনার কোন অসুবিধা না হয়।

এনাজ এক চোখ মেরে দুষ্টুমীর সুরে বললো,
— কেউ আমার কাজে হেল্প করতে চাইলে আমি কি মানা করতে পারি? তাও আবার আমার প্রিয় মানুষ।

আমি মুচকি হেসে টিউবওয়েলের হাতল ধরে চাপ দিতে লাগলাম। এনাজ উবু হয়ে হাত-পা ধুতে মন দিলো। খালামণি, আব্বু, মামী কথা বলছে। তাই এদিকে খেয়াল নেই তাদের।

💖💖💖

হেমন্তের আগমণের সাথে সাথে শীতবার্তা পাঠিয়ে দেয়৷ যার মানে হলো হেমন্তের পরের রুক্ষরাজ ঋতু শীতের আগমন ঘটবে। হেমন্ত শেষ না হতে হতেই শীত বুড়ি তার অস্তিত্ব গেড়ে বসে। এই সময় গ্রামে আমন ধান কাটার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। ধান মাড়াই করার পর সকালবেলা কৃষক গিন্নি ঘোমটা টেনে ধান সিদ্ধ করতে ব্যস্ত হয়ে পরে। রোদ ওঠার সাথে সাথে সিদ্ধ ধান রোদে শুকাতে দিতে হবে। ধান ঝাড়া,
উড়ানো, রোদে শুকানো কত কাজ তার। শীতের আমেজটা তাদের উপভোগ করার সময় নেই।

অনেকখন ধরে এদিক সেদিক তাকিয়ে এনজিও সংস্থাকে খুঁজছি। কিন্তু তার দেখা নেই। পিঠা খেয়ে এনামের সাথে কলে কথা বলতে বলতে কোনদিকে গেলো কে জানে! তায়াং ভাইয়া নূর আপির সামনে বসে আছে। ভাইয়া আপিকে নানা কথা বলে রাগাচ্ছে। সবার সামনে নূর আপি কিছু বলতেও পারছে না। আবার সহ্যও করতে পারছে না। আমি তাদেরকে ক্রস করে পুকুরপাড়ের দিকে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি মহাশয় পুকুরপাড়ে দুই পায়ে ভর দিয়ে বসে আরামচে মোবাইল চালাচ্ছে। আমি তার সামনে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

— এখানে কি করছেন?

আমার কন্ঠ পেয়ে সে পেছন দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বললো,
— রোদ পোহাচ্ছি।

— তাই বলে পুকুরপাড়ে?

— হুম মিষ্টি রোদ উঠেছে আজ। সকালে দোকানে যাওয়ার সময় আমি ঠকঠক করে কাঁপছি। বাপরে, যা শীত ছিলো। ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়।

— হুট করে শীতটা পরে গেলো।

— হ্যাঁ, একটা টি-শার্ট পরে বের হয়েছিলাম। দেখি শীতে আমাকে জমিয়ে ফেলছে।দ্রুত বড় হাতার শার্ট পরে তারপর বের হলাম।

— কেন গিয়েছিলেন?

— এমনি হাঁটতে।

— মিথ্যে কথা কেন বলেন?

— মিথ্যে কেন বলবো?

— সিগারেট টানতে গিয়েছিলেন দুই বন্ধু। আমি জানি।

এনাজ চোখ দুটো বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
— তোমাকে কে বললো?

— আমি জানি তো এই কাজে গিয়েছিলেন। এটাই আপনাদের ইমপোর্টেন্স কাজ।

— 😶😶

— কি আমি মিথ্যে বলছি?

— না।

— আম্মু,খালামণি আর মামীকে বলবো?

উনি বসা থেকে উঠে আমার হাতদুটো তার হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো,
— প্লিজ কাউকে কিছু বলো না। তোমাকে আইসক্রিম খাওয়াবো।

আমি দ্রুত টান মেরে আমার হাত সরিয়ে কঠিন গলায় বললাম,
— এখন ঘুষ দেওয়া হচ্ছে? আমি তো কিছু শুনবো না।এবার সবাইকে বলে দিবো। লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খান আপনারা দুজন। তাছাড়া ড্রিংক করার ভিডিওতো আমার কাছে আছেই।

— প্লিজ এমন করো না। তুমি যা বলবে আমি তাই করবো। দশবার কান ধরে উঠবস করতে বললে তাতেও রাজী আছি।

— কান ধরে উঠবস করতে হবে না।

— তাহলে কি মাফ করে দিছো?

— জ্বি না।

— তাহলে?

—আমি যা বলবো তাই শুনবেন?

— অবশ্যই।

— এখন থেকে সিগারেট খাওয়া বন্ধ।

— আমি তো সবসময় খাই না। মাঝে মাঝে দু-একটা খাই। যখন সবকিছু অশান্তি লাগে তখন। সকালে তায়াং বললো ওর ভালো লাগছে না। দোকান থেকে দুটো খেয়ে এসে পরবে। ওর কথায় রাজী হয়ে গেলাম।

— ঐ মাঝে মাঝে দু-একটাও চলবে না। নয়তো আমি সারা বাড়িতে ঢোল পিটাতে গেলাম। আমার আব্বু সিগারেট পছন্দ করে না। উনি কোনদিন খাইনি। সে যদি জানতে পারে আপনি সিগারেট খান তাহলে আপনার কাছে আমাকে বিয়ে দিতে গেলে ঝামেলাও করতে পারে।

— ওকে আমি ছেড়ে দিবো।

— সত্যি তো?

— হুম সত্যি।

আমি ডান হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম,
— প্রমিজ করেন।

উনি আমার হাতটা লুফে নিয়ে বললো,
— প্রমিজ আর খাবো না।

— যদি বন্ধুদের পাল্লায় পরে আবার খান তাহলে কিন্তু খারাপ হয়ে যাবে। মনে রেখেন কথাটা।

উনি বাধ্য ছেলের মতো মাথা হেলিয়ে সম্মতি প্রকাশ করলো। আমি তার হাতের থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিতেই সে নিজের হাত দুটো হালকা ঘষে বললো,
— আমার হাত দুটো কি ঠান্ডা হয়ে আছে। কিন্তু তোমার হাতগুলো এতো গরম কেন?

— আপনার হাতগুলো সত্যি অনেক ঠান্ডা।

— আমার মনে হচ্ছে বরফ জমে আছে। এই যে দেখো।

আমার দুটো গালে সে তার দুটো হাত ছোঁয়াতেই আমি লাফ দিয়ে পেছনে চলে গেলাম। তার হাত সত্যি বরফ হয়ে আছে। উনি নিঃশব্দে হাসলেন। তারপর কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,

— আমরা দুজন যে সিগারেট খাই সেটা তুমি জানলে কি করে?

আমি মেকি হেসে বললাম,
— সিক্রেট।

— প্লিজ বলো।

— ভাইয়ার ওয়ারড্রবের ড্রয়ারে বহু আগে একদিন সিগারেটের খোসা পেয়েছিলাম। তখন থেকে জানি পাঠা সিগারেট খায়। সবসময় খেতো না বলে কাউকে বলিনি। আর সেদিন আপনার শার্ট ভাজ করতে গিয়ে সিগারেটের গন্ধ পেয়েছিলাম। তখুনি বুঝে গেছি আপনিও নিকোটিনের ধোঁয়া আসক্ত। আজ যখন দুজনের মুখে চুইংগাম দেখলাম আমি সিউর হয়ে গেলাম সিগারেট খেয়ে চুইংগাম চাবানো হচ্ছে।

— ওরে আল্লাহ খি ঠেলেন্ঠেড🥵!

— ইয়েস।

— তুমি একটা কথা ভুল বলছো।

— কি কথা?

— আমি নিকোটিনের ধোঁয়ায় আসক্ত নই। আমি তোমাতে আসক্ত। এটা আমার না হলেও চলবে। কিন্তু তোমাকে আমার সারাজীবনের জন্য লাগবে।

আমি লাজুক হেসে মাথা নিচু করে রাখলাম। এনাজ দুষ্টুমীর সুরে বললো,
— ইস, আমার লজ্জাবতী লজ্জা পেয়েছে।

আমি কোন কথা বললাম না। উনি কিছু সময় থেমে বললো,

— বড়শী আছে?

— কেন?

— অনেকখন ধরে ঘাটের পাশে একঝাঁক পুটিমাছের আনাগোনা দেখছি। বড়শী থাকলে মাছ ধরতে পারতাম।

— আপনি মাছ ধরতে পারেন?

— এমন করে বলছো যেন জীবনে বড়শী দিয়ে মাছই ধরিনি।

— না তা নয়। আমি এমনি জিজ্ঞেস করলাম।

— বড়শী আছে কি না তাই বলো?

— না নেই। মাছ এখন আর কেউ ধরে না। তাই বড়শীও রাখা হয় না।

— এই দোকানে পাওয়া যাবে বড়শী?

— হুম পেতে পারেন।

— তাহলে নিয়ে আসি গিয়ে।

এনাজ দ্রুত আমাকে সাইড কাটিয়ে চলে যেতে নিলে আমি বললাম,
— আবার সিগারেট খাওয়ার জন্য দোকানে যেতে চাইছেন না তো?

এনাজ থেমে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
— আমি প্রমিজ করেছি খাবো না আর। তুমি আমার জীবনে যতদিন থাকবে ততদিন আর স্পর্শও করবো না। কিন্তু তুমি আমার জীবনে না থাকলে সিগারেট আবার ফিরে আসবে।

আমি কপাল কুঁচকে, চোখ ছোট করে তার দিকে তাকাতেই সে হাত দিয়ে ঠোঁট স্পর্শ করে ফ্লাইং কিস দেখিয়ে তায়াং ভাইয়াকে খুঁজতে ছুটলো। তাকে নিয়ে এখুনি দোকানে যাবে। এর হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে আজকে, এখুনি মাছ না ধরলে তাকে আমরা সকালের খাবার দিবো না। আমি তার যাওয়ার পানে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে নিজের রুমে চলে গেলাম।

#চলবে।