#শেষ_থেকে_শুরু
#পর্ব_৩
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
আয়ান রুমের এই পাশে একবার ত ওই পাশে একবার ঘুরঘুর করছে। রাগে বার বার নিজে মোবাইলের দিকে তাকাচ্ছে। এক ত মায়ের এইসব ফালতু কথা শুনে আয়ান ভীষণ বিরক্ত। ভাইয়ের বিয়ে করা বউ মানে ভাবি! ভাবি হলো মায়ের আরেক রুপ।বড় ভাবি মায়ের মতো তাহলে মায়ের মতো মানুষ কে কিভাবে আয়ান বিয়ে করবে.?
আয়ান নিজের মা কে যথেষ্ট সম্মান করে, সব সময় মায়ের কথা মেনে চলার চেষ্টা করে ঠিক আসিফের মতো শুধু অভ্রই নিজের মন মতো চলবে, কারো কথা, ইমোশন সে বুঝার চেষ্টা করে না৷ যখন যা মনে আসবে তাই করে বেড়াবে।
আয়ান জানে বাহিরে গেলেই বড় আম্মুর হাজার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে।
আয়ান বাড়িতে খুব কম থাকে সারাদিন অফিস সামলে গভীর রাতে বাড়িতে আসে।
আসিফ নিখোঁজ হওয়ার পর ত প্রায় বাড়িতে আশায় বন্ধ করে দিয়ে ছিল কম খোঁজা খুজেনি সে আসিফ কে।
আসিফ মা-রা যাওয়া, আসিফের বিয়ে সব মিলিয়ে ত আজ দুই মাস। এই দুই মাসে আয়ান একবারের জন্য ও জবা কে বাহিরে দেখেনি বা কখনো জবার সাথে কথা বলতেও জায়নি। প্রথম কারণ হলো বড় আম্মু! বড় আম্মুর জবা কে পছন্দ না।
আয়ান জবার ছবি শুধু দেখে ছিল। ঘোমটা দিয়ে এক হাতে ওড়নার কোনা ধরে ভিতু চোখে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে একটা মেয়ে চেহারা তেমন স্পষ্ট ও না।
ছবিটা নিয়ে ছিলো জবার বাড়ির ঠিকানা বের করতে। যন জবার ছবি লোকদের দেখিয়ে খুব জলদি বের করতে পারে তাও ছবি নাকি তুলে এনে ছিলো বাড়ির পুরোনো কাজের মহিলা লতিকা। কি একটা অবস্থা এখন সেই মেয়েকেই কিনা ওর বিয়ে করতে হবে!
আয়ান অনেক ভেবে দেখলো কোনো বুদ্ধি পায় কিনা। ভাবতে ভাবতে অভ্রর কথা মাথায় আসলো।
বেলী ত শুনেছে ভাবি ভক্ত ওকে কিছু বলে কিছু হবে না অভ্রর থেকে বুদ্ধি নিতে হবে।
আয়ানের মস্তিষ্ক তখন সাথে সাথে বলে উঠলো, ‘ ছিঃ আয়ান তুই একজন এতো ভালো বুদ্ধিমান পুলিশ অফিসার হয়ে এখন ছোট ভাইয়ের থেকে বুদ্ধি নিতে যাবি!.? তোর কি বুদ্ধি কম আছে.? লোকে শুনলে কি বলবে.? লোকে আসে তোর থেকে বুদ্ধি নিতে আর তুই যাস ছোট ভাইয়ের কাছে
?’
মস্তিষ্কের বিপরীত বিতর্ক করে আয়ানের মন বলে উঠলো, ‘ তাতে কি হয়েছে.? ছোট বড় এটা কোনো বিষয় হতে পারে না! মাঝে মাঝে ছোটদের বুদ্ধিও কাজে লাগে এখানে লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু নেই।’
আয়ান সিধান্ত নিলো অভ্রর থেকে বুদ্ধি নিয়ে বিয়ে ভাঙবে। শায়েলা সিদ্দিকী যেহেতু বলেছে ছেলের বিয়ে দিবে উনি উনার কথার খিলাফ কখনো করবে না। শেষ পর্যন্ত ভাইয়ের বউকে বিয়ে! আয়ান আর ভাবতে পারছে না এত কষ্ট করে পুলিশ হয়ে এই পজিশনে এসে কিনা এমন কাউকে বিয়ে করতে হবে যার বংশ, পরিচয় কিছুই নেই!
__________
শায়েলা সিদ্দিকী রুমে এসে কাপড় গুছিয়ে বসতেই খেয়াল করলো উনার স্বামী সফিক আহমেদ আজ অফিস থেকে চলে এসেছে।
শফিক আহমেদ ভীষণ বদমেজাজি লোক।
শায়েলা সিদ্দিকী জিজ্ঞেস করলেন,’ তোমার জন্য চা বা কফি নিয়ে আসবো.?’
সফিক আহমেদ কোনো জবাব দিলো না।
শায়েলা সিদ্দিকী, ‘ কি হয়েছে কথা বলছো না কেন.? কিছু কি হয়েছে.? শরীর খারাপ.? অফিস থেকে চলে আসলে যে,আর কখন আসলে.?
সফিক সাহেব ঠান্ডা কন্ঠে বলে উঠলো, ‘ দিন দিন দেখছি তোমার সাহস বেড়েই যাচ্ছে, আজও বড় ভাবির সাথে ওই রাস্তার মেয়ের জন্য ঝগড়া করে ছিলে.?’
কন্ঠটা শান্ত ঠান্ডা হলেও শায়েলার বুঝতে বাকি নেই এই ঠান্ডা কন্ঠের পেছনে কতোটা ভয়ংকর কিছু লুকিয়ে আছে।
শায়েলা সিদ্দিকী মাথা নিচু করে আমতা আমতা করে বললো,’ হয়েছে কি বড় ভাবি জবা কে…’
সফিক সাহেব~ চুপপপপ!! ওই মেয়ের নাম আমি বলেছি আমার সামনে জেনো কেউ কখনো না নেয়! তোর এতো বড় সাহস তুই আমার ছেলের সাথে ওই রাস্তার মেয়ের বিয়ে ঠিক করিস!!
শায়েলা সিদ্দিকী স্বামীর হুংকারে কেঁপে উঠেন, কেঁপে উঠেছে জেনো পুরো বাড়ি।
শায়েলা সিদ্দিকী~ ছেলে ত আমারও তাই না.?
সফিক এই পর্যন্ত রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে শায়েলা সিদ্দিকীর চুলের মুঠি ধরে বলে উঠলো, ‘ তুই আমার মুখেমুখে কথা বলার সাহস কোথায় পেয়েছিস.? ওই রাস্তার মেয়ের প্রতি তোর এত দরদ কোথায় থেকে আসে.? আজই এই মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করছি আমি আর তোর সাহস কিভাবে কমাতে হয় আমার খুব ভালো করেই জানা আছে।
শায়েলা সিদ্দিকীর কি হলো জানা নেই। আজ এই প্রথম তিনি স্বামীর হাত ধাক্কা দিয়ে ছুটিয়ে নিলেন। ভালোবাসার বিয়ে ছিল তাদের। চার বছর লুকিয়ে প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করে ছিলো৷ আজও তার পরিবার এই বিয়ে মেনে নেননি। সফিক আহমেদ কে শায়েলা সিদ্দিকীর পরিবারের কারো পছন্দ ছিল না। বিয়ের আগেই উনি মদ,জোয়া,নেশা করে বেড়াতেন অথচ শায়েলা সিদ্দিকী এই খারাপ লোকটার প্রেমে এমন ভাবে অন্ধ হয়ে গিয়ে ছিলো কারো কথা না শুনে পালিয়ে এসে ছিলো বিয়ের এক বছর সব ঠিক ছিলো হঠাৎ করে সফিক নিজের আসল রুপে বেড়িয়ে আসলো। কখনো এই মেয়ে কখনো ওই মেয়ের সাথে সময় কাটিয়ে রাত করে বাড়ি ফিরতো শায়েলা সিদ্দিকী কিছু জিজ্ঞেস করলেই মারধর শুরু করতো তার কিছু দিন পর থেকে বড় ভাবি কুলসুমের সাথে শায়েলার টুকটাক কথা কাটাকাটি ঝামেলা হতে শুরু করলো সফিক জেনো আরও হিংস্র হয়ে উঠলো। শায়েলা সব সময় প্রতিবাদী নারী ছিলো অথচ সেই নারী এই সংসারে এসে সব হারিয়ে ফেললো যখন ভাবলো বাবার বাড়ি চলে যাবে তখনি শুনতে পেলো তার গর্ভে সন্তান। তাও সে সফিকের এত অত্যচার সহ্য করতে না পেরে একবাড চলে গিয়ে ছিল মা বাবা মেনেও নিয়ে ছিল শুধু শর্ত দিলো গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলতে হবে। মা হয়ে সন্তান কিভাবে নিজের হাতে খু’ন করবে.? কিভাবে পৃথিবীর আলো না দেখিয়ে কবর দিয়ে দিবে.? শায়েলা আরও ডিপ্রেশন চলে গেলো। নিজেকেই শেষ করতে গেলো বার বার, কিন্তু বার বার সে ব্যার্থ হলো ফিরে আসলো সফিকের কাছে। প্রতিবাদী নারী হয়ে গেলো একদম চুপচাপ শান্ত।
শায়েলা সিদ্দিকী স্বামীর দিকে আঙ্গুল তুলে বলে উঠলো, ‘ অনেক হয়েছে, অনেক সহ্য করেছি ্আমার সাথে যা ইচ্ছে করে সাহস পেয়েছো বলে ভেবো না ওই মেয়ের সাথে করেও পার পাবে তোমরা। আমার ছেলে আমি দশ মাস শশ দিন গর্ভে রেখেছি। তাকে ত তুমিও শেষ করার জন্য আমাকে কম টর্চার করোনি তবুও আমি তাকে এই পৃথিবীর আলো দেখিয়েছি। আজ সে তোমার ছেলে হয়ে গেলো.? আজ ২৮ বছরে কখনো তার দিকে সুনজরে তাকিয়ে ছিলে.? জিজ্ঞেস করে ছিলে ” বাবা কেমন আছিস.? কিছু প্রয়োজন.? ” আদর করে বুকে টেনে নিয়ে ছিলে.? এখনো ত আছো নিজের মেয়ের বয়সী মেয়েদের আর নেশার সাগরে ডুবে। লজ্জা করে না তোমার.? তোমার জন্য আমি সবকিছু হারিয়ে শুধু সন্তান কে বুকে জড়িয়ে বেঁচে আছি। তোমার নারীর নেশা মৃত্যুর আগে কাটবে না, যে পুরুষের প্রয়োজন হাজার নারী সে কিভাবে বুঝবে এক নারীর মর্ম। তোমার মার আমার সারা শরীরে ভালোবাসার কোনো ছুঁয়া নেই। আমার জীবনটা তুমি নষ্ট করে দিয়েছো লজ্জা করে তোমাকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিতে আমার। সবার সামনে কতো ভালো মানুষের মুখোশ পরে থাকো অথচ তোমার আসল নোংরা মানুষটাকে ত আমি চিনি৷ এই ছেলে শুধুই আমার, আমি যা ইচ্ছে করবো তোমার পারমিশন নেওয়ার কোনো প্রয়োজন মনে করছি না।
সফিক আহমেদ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আজ থেকে ২৯ বছর আগে যেই বাঘিনীকে সে দাফন দিয়ে ছিল আজ জেনো তা দ্বিগুণ হয়ে ফিরেছে।
শায়েলা সিদ্দিকী রুম থেকে বের হয়ে গেলেন।
___________
ঘুম ভাঙতে ভাঙতে দিনের বাজলো ১২টা।
জবার রুমে কোবো মোবাইল বা ঘড়ি নেই। জবা জানেনা এখন কয়টা বাজে। আসিফ একটা মোবাইল দিয়ে ছিলো সেটাও কুলসুম বেগম শার্লিন বেগম কে দিয়ে নিয়ে গেছে।
জবা দেখলো আজ তার অন্য দিনের তুলনায় শরীর অনেকটা হাল্কা মনে হচ্ছে । শরীরে কোনো ব্যাথা নেই। কাল রাতে বেলী রুমে এসে ছিল তারপর কি হয়ে ছিল.? জবা মনে করার চেষ্টা করলো কিন্তু কিছুই মনে আসছে না।
জবা চুলগুলো হাত খোঁপা করে নিচে পা রাখতে গিয়ে নিজেকে অনেকটা দুর্বল মনে করলো। সে দাঁড়াতে পারছে না এই একমাত্র সে খাবারের কষ্ট কম পায়নি৷ জবা লুকিয়ে লুকিয়ে একটু ভালো মন্দ দিয়ে গেছে শায়েলা সিদ্দিকী ও চেষ্টা করেছে অথচ কুলসুম আর শার্লিনের জন্য উনার হাত পা বাঁধা ছিল।
অন্যের ছেলের বউয়ের জন্য বেশি বাড়াবাড়ি করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে দূরেই থেকেছে সব সময়।
জবার বয়স কত হবে.? জবা হাসলো এই বাড়িতে এসে সে কান্না ছাড়া জীবনে হাসি উপহার পায়নি। আসিফ থাকার সময়টা বেশ ভালোই কেটেছে ও যাওয়ার পর জবার বুক ভাড় হয়ে আসলো। আসিফ নেই! কোথাও নেই সে! এমনটা ত হওয়ার কথা ছিল না! ভালো মানুষ গুলো এভাবে হারিয়ে যায় কেন.? নাকি সব জবার অন্ধকার জীবনের দোষ! কালো ছায়া! জবার জন্যই ত আসিফ আজ নেই। কুলসুম বেগম ত ভুল কিছু বলেন না। যার যা হারায় তার দুঃখ, শূন্যতা ত শুধু সেই বুঝে বাকিরা ত শুধু শান্তনা দিতে আসে।
_________
কাজের মহিলা লতিকা জবার জন্য খাবার নিয়ে রুমে আসছিল। আয়ান অভ্রর রুম থেকে বের হয়ে লতিকা কে জিজ্ঞেস করলো, ‘ কোথায় যাচ্ছ বুয়া.?’
~ স্যার ওই মাইয়া ডার জন্য খানা লইয়া যাই।
~ এত গুলো বছর হলো আমাদের বাড়িতে আছো এখনো শুদ্ধ ভাষাটা শিখতে পারলে না। তোমার ছেলে মেয়ে কেমন আছে.?
লতিকা হেঁসে বললো, ‘ ভালা তা স্যার আমনে কই যান.?’
আয়ান কিছু একটা মনে পড়ার ভঙ্গিমায় লতিকা কে বলে উঠলো, ‘ বুয়া তোমাকে অভ্র বলেছে দুই মিনিটে ওর রুমে যেতে।”
~ আইচ্চা স্যার আগে ওই মাইয়া ডারে খানাডা দিয়া আহি।
~ অভ্রর থেকে ওই মেয়ে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট নয়। তুমি আমার কাছে খাবার দিয়ে অভ্রর কাছে যাও।
লতিকা দিতে না চাইলেও আয়ান এটাসেটার ভয় দেখিয়ে জবার রুমে রযাওয়ার ফুন্দি খুঁজে নিলো। অভ্রর থেকে বুদ্ধি নিতে গিয়ে ছিলো উল্টো অভ্র ওকে জবার কাছে এই বিষয় কথা বলতে পাঠিয়ে দিয়েছে।
আয়ান অবাক হলো অভ্র জবার নাম জানে, আয়ানের কিছু সময়ের জন্য অভ্রর কথা শুনে মনে হলো অভ্র এই প্রথম জবাকে দেখেনি জেনো কতো বছরের পরিচিত কেও। আচ্ছা একটা অচেনা মেয়ের বিষয়ে অভ্র কিভাবে জানে.? কিভাবে জানে সে অতি বুদ্ধিমতী নারী!.? আয়ান এই বিষয় আবার কথা বলবে অভ্রর সাথে আগে জবার সাথে কথা বলতে হবে।
আয়ান দরজায় নক করলো। ভেতর থেকে কোনো শব্দ এলো না। আয়ান আবার নক করতে গিয়ে খাবারোর ডাকনা সরে গেলো।
আয়ানের চোখে পরলো ডাল আর ভাত। শুধু ডাল.? ডাল দেখে ত মনে হচ্ছে হাত ধুয়ার পানির মতো!.? আয়ান এতো পাত্তা দিলো না বিষয়টা।
দরজা হাল্কা ধাক্কা দিয়ে খুলে ভেতরে চোখ যেতেই আয়ান থমকে গেলো।
বিছানা এমন কেন.? রুমে একটা জানালা আর একটা ওয়াশরুম, একটা বিছানা তাও মনে হচ্ছে খুবই শক্ত।
আয়ান খাবার বিছানার উপর রাখতেই ওয়াশরুমের দরজা খুলে বেড়িয়ে আসলো সাদা শাড়ি পড়া, চুল হাত খোঁপা করা,হাতে, কানে,গলায়, নাকে কিছু নেই, মুখের এক পাশে কালচে হয়ে আছে, কপাল কাটা আয়ানের হঠাৎ শ্বাস নিতে কষ্ট হলো৷ বার বার কয়েক চোখের পাপড়ি ফেলে অন্য দিকে ফিরে গেলো৷
নিজের রুমে এমন লম্বা, পুলিশের ড্রেস পড়া লোক দেখে ভয়ে জমে গেলো জবা।
আয়ান আবার পেছন ফিরে জবার দিকে তাকালো।
জবার ভয়ার্ত মুখ দেখে বললো,’ ভয় পাবেন না ভাবি আমি আপনার ছোট দেবর..’
জবার ভয় কাটলো না, ভয়ে ভয়ে বলে উঠলো, ‘ এখানে কি.? ‘
আয়ান হাসার চেষ্টা করে বললো,’ একটু কথা ছিল আপনার সাথে। ‘
জবা এখনো এক পা ওয়াশরুমের ভেতর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
~ আপনি ওয়াশরুম থেকে বাহিরে এসে দাঁড়ান বেশি না পাঁচ মিনিট নিচ্ছি।
জবা বের হলো না দূর্বল শরীরে দাঁড়িয়ে রইলো।
আয়ান কি বলবে.? সে ত যা মুখস্থ করে এসে ছিল সব ভুলে গেছে! কি আজব আয়ানের বুক ধরফর করছে, সে একজন ছেলে তার উপর পুলিশ অফিসার হয়ে সামান্য একটা মেয়ের সাথে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে, কথা সব হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
জবা আয়ান কে এভাবে হেবলার মতো তাকিয়ে থাকতে দেখে চোখ মুখ শক্ত করে বললো,’ রুম থেকে বের হন।’
আয়ান নিজেই নিজের গমন বেহায়ার মতো তাকিয়ে থাকায় লজ্জায় ইচ্ছে করলো নিজের গালে থাপ্পড় মারতে ্ওর কি দোষ সাদা শাড়িতে বিধবা নারীকে এত সুন্দর লাগে.? এত আকর্ষণীয় লাগে আয়ানের জানা ছিল না! কাজের সুত্রে কম বাধবা নারী আয়ান দেখেনি জীবনে কই কাউকে ত এমন হুরপরী মনে হয়নি। মনে ত হয়নি সামনে কোনো মানুষ নয় পরী দাঁড়িয়ে আছে এমন একটা মেয়ের গায়ে বড় আম্মু হাত কিভাবে তুলে.? কিভাবে সম্ভব.?
জবা আয়ানের এমন তাকিয়ে থাকা দেখে নিজেকে ভালো করে শাড়ির আঁচল দিয়ে ডেকে নেওয়ার চেষ্টা করলো। আয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো,’ আপনি কি চান আমি চিৎকার করি.?’
আয়ানের ধ্যান ভাঙতেই মাথা নিচু করে বলে উঠলো, ‘ সরি ভাবি.. ভাবি বলে থেমে গেলো… নিজের হবু স্ত্রী কে কেও ভাবি বলে না। নিজের ভাবনায় নিজেই থমকে গেলো হবু স্ত্রী!.? কি ভাবছে এইসব আয়ান! আজ হয়তো সে নিজের বাবার মতো নেশায় আছে ছিঃ।
আয়ান চোখ বন্ধ করে আবার বলে উঠলো, ‘ আম্মু আমার সাথে আপনার বিয়ে ঠিক করেছে সেটা আপনি জানেন.?’
জবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো। জবা আয়ানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে বললো,’ এটা ত খুশির খবর মিষ্টি নিয়ে আশার কথা ছিল খালি হাতে কেন!.?’
আয়ান আরেকধফা অবাক হয়ে জবার হাসির দিকে তাকিয়ে রইলো। সে আজ পর্যন্ত যেই মেয়ের কথা শুনে এসেছে ভিতু,শান্ত এটাসেটা এই হাসি ত তা বলে না। কে এই মেয়ে.? আয়ান জবার রহস্যময়ী হাসির দিকে তাকিয়ে বললো,’ আপনি রাজি.?’
চলবে,
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।