সংসার পর্ব-০৫

0
271

#সংসার
#লেখা_Bobita_Ray
পর্ব- ০৫

অনুপমা মাথা উঁচু করে, মায়াবী চোখ তুলে তাকাল। কাঁপা কণ্ঠে বলল,
-‘আমাকে অনেক অনেক……… কী?
রূপায়নের হাতের বাঁধন আর একটু শক্ত হলো। অনুপমা কেঁপে উঠল। রূপায়নের পুরুষালী উষ্ণ স্পর্শে কেমন অবশ অবশ লাগছে। আবারও রূপায়নের বুকে মাথা রাখল। এই বুকে এত শান্তি কেন? রূপায়ন আনমনা হয়ে বলল,
-‘শূণ্যস্থানটা আজ বরং খালিই থাক। অন্য একদিন পূরণ করব।
-‘আচ্ছা।
-‘একটা কথা জিজ্ঞেস করব অনুপমা?
-‘বলুন?
-‘আমিই কী তোমার জীবনে প্রথম পুরুষ? না মানে..কখনো কাউকে মন দিয়েছ, ভালোবেসেছো?
অনুপমা, রূপায়নের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
-‘ছোটবেলা থেকে অনেক প্রেমের অফার পেয়েছি। একটু বড় হয়ে শারিরীক ভাবেও হ্যারাস্টমেন্ট হয়েছি। তবে কখনো কাউকে ভালোবাসিনি। একজনের পোস্ট পড়ে খুব ভালো লেগেছিল।
-‘সেই একজনটা কী আমি অনুপমা?
উত্তরে অনুপমা লাজুক হাসল।
রূপায়ন বলল,
-‘অনেক রাত হয়েছে। চলো ঘুমিয়ে পরি?
কথাটা বলে রূপায়ন, ওইভাবেই অনুপমাকে বুকের মাঝে নিয়ে শুয়ে পরল। অনুপমা, রূপায়নের বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে আছে। এই নিস্তব্ধ রাতের নিকষ কালো আঁধারে, রূপায়নের বুকে হৃৎস্পন্দনের শব্দ ছন্দ তুলেছে। রূপায়ন, অনুপমার কপালে চুমু খেলো। বলল,
-‘কালকেই কী আমার সাথে বাড়ি যাবে? না বৌভাত পর্যন্ত এখানে থেকে যাবে?
অনুপমা মাথা তুলে তাকাল। বলল,
-‘আপনার কী ইচ্ছা?
-‘আমি অবশ্যই চাইব, আমার বউকে নিয়ে আমার বাড়িতে বৌভাত করতে! স্মরণীয় মধুময় রাতকে ঘিরে দুজন মিলে জীবনের শ্রেষ্ঠ স্মৃতি জমাবো, আমার ঘরে। বৌভাতের দুপুরে আমার বাড়িতে দাঁড়িয়ে, আমার বউয়ের সারা জীবনের ভাত, কাপড়ের দায়িত্ব নেব।
-‘আপনার ইচ্ছেকে আমি সম্মান করি। আমি কাল আপনার সাথে যাব।
রূপায়নের খুব ভাল লাগল। এরকম বুঝদার জীবনসঙ্গী প্রতিটা পুরুষের কাম্য। জীবনে প্রথম একটা মেয়ের এত কাছে এসেও ভেতরের কামুক পুরুষটা একটুও জেগে উঠেনি। আসলে রূপায়ন উঠতে দেয়নি। বরং অন্যরকম ভালোলাগা, মানসিক প্রশান্তি কাজ করছে। অনুপমাকে নিজের অস্তিত্বের সাথে মিশিয়ে নেওয়ার জন্য সারাজীবন পরে আছে। এভাবে জোর করে নয়, রূপায়ন, অনুপমাকে ভালোবাসা দিয়ে নিজের করে নেবে। অনুপমার খুব ঘুম পাচ্ছে। রূপায়নের সাথে পরিচয় হওয়ার পর থেকেই রাত জেগে ফোনে কথা বলে দুটিতে। ‘প্রিয়’ মানুষটাকে সারাজীবনের জন্য নিজের করে পেয়ে খুব শান্তি লাগছে। মানসিক প্রশান্তি নিয়ে দুজনই কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে গেছে।

খুব ভোরে অনুপমার ঘুম ভেঙে গেল। কাছে কোথাও একঝাঁক পাখি মিহি শব্দে কিচিরমিচির করছে। রূপায়ন, অনুপমাকে জাপ্টে ধরে ঘুমিয়ে আছে। যেন কতদিনের পুরানো অভ্যাস। অনুপমা, ঘুমন্ত রূপায়নকে বালিশে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে উঠে গেল। স্নান সেরে বসার ঘরে যেতেই গোবিন্দর বউ রুম্পা বলল,
-‘কী গো ভালোবাসা দিবস দুটিতে মিলে, কেমন উদযাপন করলে? দাদা তোমায় গিফট দিয়েছে? ভেবো না আবার, কাল আমরা বাসরঘর সাজিয়েছিলাম। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে, তোমাদের সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্যই ঘরটা ফুল, মোমবাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। এ্যাঁই…তোমরা তো আবার উল্টাপাল্টা কিছু করে ফেলোনি?
অনুপমা খুব লজ্জা পেল। মুখ টিপে লাজুক হেসে ফিসফিস করে বলল,
-‘উল্টাপাল্টা কিছু করলে কী হবে দিদি?
রুম্পা চোখ গোল গোল করে বলল,
-‘কী হবে মানে..? বিয়ের রাতে কেউ ইয়ে..করে না কী? আজ রাতে তোমাদের কালরাত্রি। আগামীকাল বৌভাতের অনুষ্ঠানের পর তবেই না বাসর হবে! সত্যি করে বলোতো কী কী করেছো?
অনুপমার লজ্জা লাগছে। আবার খুব মজাও লাগছে। রুম্পাকে আর একটু ভড়কে দেওয়ার জন্য মুখটা কাঁদো কাঁদো করে বলল,
-‘সর্বনাশ হয়ে গেছে দিদি।
রুম্পা আঁতকে উঠল। একা একাই বকবক করতে লাগল।
-‘সব.. সব দোষ গোবিন্দর। কেন ঘরটা ফুলটুল দিয়ে সাজাতে হবে! ভাল হয়েছে। তুমিই বা কেমন মেয়ে, বলোতো? বর একটু আদর করে, কাছে টেনেছে। আর তুমিও সবটা…
অনুপমা আচমকা রুম্পার মুখ চেপে ধরল। হাসতে হাসতে নীচু কণ্ঠে বলল,
-‘আস্তে..তুমি যা ভাবছ, তার কিছুই হয়নি দিদি। এতদিনে মানুষটাকে এই চিনলে? সে অনেক ধৈর্যশীল। তা না হলে, এতগুলো বছর একাকী কাটিয়ে দিতে পারত না।
রুম্পা ফস করে দম ছাড়ল। বলল,
-‘তুমি অনেক পাঁজি গো। এভাবে বলে কেউ?
অনুপমা হেসে দিল। শাড়ির কুঁচি উঁচু করে ধরে পায়ের নূপুর দেখিয়ে বলল,
-‘কাল তোমাদের দাদা এই নূপুর জোড়া উপহার দিয়েছে দিদি।
-‘ওমা.. কী সুন্দর। দাদা নিজে পরিয়ে দিয়েছে, তোমার পায়ে?
-‘হ্যাঁ। তবে কখন পরিয়েছে জানি না। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, পায়ে নূপুর।
-‘দাদার সাথে তুমি অনেক সুখী হবে। মানুষটা সত্যিই খুব ভালমানুষ।

গোবিন্দ, রুম্পা অনেক জোড়াজুড়ি করল, রূপায়নদের থেকে যাওয়ার জন্য। রূপায়ন বলল,
-‘আমাদের জন্য অনেক করেছিস বন্ধু। আজকেই অনুপমাকে নিয়ে আমি বাড়ি যাব।
-‘সে তো যাবিই। আজকের দিনটা অন্তত থাক। কাল নাহয় যাস।
-‘ওদিকও তো গোছাতে হবে। কাল গিয়ে কখন কী করব?
-‘আচ্ছা বেশ। তবে যাওয়ার আগে তোর মাকে একবার ফোন দে..দেখ কাকিমা কী বলে..?
রূপায়ন নাম্বার ডায়াল করে ফোনটা কানের সাথে চেপে ধরল। নন্দিতাদেবী ফোন রিসিভ করে ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,
-‘রূপায়ন কোথায় তুই? দুদিন ধরে না কী দোকানেও যাস না৷ এদিকে তোর ফোনটাও বন্ধ। তোর শরীর ভাল আছে তো বাবা?
-‘আমি ভাল আছি মা।
-‘বাড়ি আসবি কখন?
-‘আসব। তবে আমি একা নয়, দুজন।
নন্দিতাদেবী চমকে উঠল। কাঁপা কণ্ঠে বলল,
-‘তুই বিয়ে করেছিস রূপায়ন?
কয়েক সেকেন্ড নীরবতা। আস্তে করে বলল,
-‘হ্যাঁ মা।
নন্দিতাদেবী কী বলবে ভেবেই পেল না। এই মুহূর্তে তার যেন কেমন লাগছে। অনুভূতিটা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। কই অরুপের বিয়ের সময় তো এত খারাপ লাগেনি? রূপায়নের বিয়ের কথা শুনে এমন লাগছে কেন? নন্দিতাদেবী আস্তে করে বিছানায় বসে পরল। আঁচলে বাঁধা চাবির গোছা ঝনঝনিয়ে উঠল। এই চাবির গোছা হয়ত কিছুদিন পর হাত বদল হবে। ভাবতেই মনটা তিক্ততায় ভরে গেল। ক্লান্ত গলায় বলল,
-‘একা একাই বিয়ে করলি? ভাইবোন গুলোকেও সাথে রাখলি না?
-‘কীভাবে সাথে রাখব মা? আমার বিয়ের কথা শুনেই তো ওরা আমার সাথে কেমন ব্যবহার করেছে, তুমি দেখোনি?
-‘তবুও একবার বলে দেখতি!
-‘আমি কী ছোট মা? সবার হাত-পায়ে ধরে, অনুমতি নিয়ে বিয়ে করতে হবে?
নন্দিতাদেবী উত্তরে কিছু বলল না। তার কিছুই ভাল লাগছে না। খুব কান্না পাচ্ছে। মেয়েগুলো ঠিকই বলতো। রূপায়ন বিয়ে করলেই পর হয়ে যাবে। তখন আর মা, বোনদের খাওয়াতে, পরাতে ভাল লাগবে না। মায়ের আঁচল ছেড়ে, বউয়ের আঁচল ধরবে। ফোনটা রেখে একে একে তিন মেয়ে রুপা, দিপা, নিপাকে, ফোন করে রূপায়নের বিয়ের কথা ও আজ বউ নিয়ে বাড়ি আসছে জানাল। রুপা, দিপার কাছে বিয়ে হয়েছে। ওরা এলো বলে, নিপার একটু দূরে বিয়ে হয়েছে। অতএব আসতে দেরি হবে। তবে তিন বোনই ফোনে মাকে যাতা বলেছে। অরুপের বউ সীমাও রূপায়নের বিয়ের কথা শুনে অরুপকে ফোন দিল। বলল,
-‘এই তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে আসো? বড়দাভাই বউ নিয়ে এলো বলে! বাড়িতে আজকে সেই সার্কাস হবে। উফ, আমার যে ভাবতেই কী আনন্দ লাগছে। তোমার বোনেরাও আসছে!

রূপায়ন, অনুপমাকে সাথে নিয়ে যখন বাড়ির উঠানে পা রাখল। তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে। চড়া রোদ সরে গিয়ে শীতল ছায়া পরেছে। বাতাসে শুকনো পাতা উঁড়ছে।
বসার ঘরে এসে দেখল, সবাই এসে গেছে। কতগুলো চোখ একসাথে রূপায়ন, অনুপমাকে পরখ করে দেখছে। রূপায়ন শীতল কণ্ঠে মাকে বলল,
-‘বাহ্.. সবাই এসে গেছে। শুধু আমাদেরই আসতে একটু দেরি হলো, তাই না মা?
দিপা বলল,
-‘কেন, এখন কী আমরা বাপের বাড়ি আসতেও পারব না? তুই ঠিক করে দিবি, আমরা কখন আসব না আসব?
-‘আমি কী তাই বলেছি?
রুপা বলল,
-‘তুই তো তাই মিন করলি বড়দাভাই।
রূপায়ন ফস করে দম ছেড়ে বলল,
-‘ভাল।
নিপা এগিয়ে এসে বলল,
-‘এ্যাঁই মেয়ে তুমি এখন আঁধমাথা ঘোমটা টেনে মুখ ঢেকে আছো কেন? আমার বড়দাভাইকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে করেছো। বাজারি মেয়েমানুষ কোথাকার!
রূপায়ন ঠাস করে নিপার গালে থাপ্পড় মারল। রাগে কাঁপতে কাঁপতে চিৎকার করে বলল,
-‘কী বললি তুই? বল…কী বললি? বাজারিমেয়ে কাকে বলে? এই শিক্ষা দিয়েছি আমি তোদের? সবাই কান খুলে শুনে রাখ…
রূপায়ন, অনুপমার একহাত মুঠো করে ধরে , দৃঢ় কণ্ঠে বলল,
-‘এই মেয়েটা তোদের বড়বৌদি হয়। যদি ওকে তোরা সম্মান দিয়ে কথা বলতে পারিস। তাহলে বলবি! আর নাহলে আমার বউয়ের সাথে কারো কথা বলার দরকার নেই। কারো না।
অরুপ তেড়ে এলো। বলল,
-‘তাই বলে তুই নিপার গায়ে হাত তুলবি?
-‘অন্যায় করলে একশোবার তুলবো। ও আমার গুরুজন না। যে অন্যায় দেখলেও চুপ থাকব। আমার হাঁটুর বয়সী একটা মেয়ে। ওর আমার বউকে এতবড় কথা বলার, সাহস হয় কী করে? তোর বউকে এই একই কথা বললে, তুই ছেড়ে দিতি?
সেই ছোটবেলা থেকে তোদের কোলে পিঠে করে বড় করেছি, নিজের রক্ত জল করা টাকা দিয়ে মানুষ করেছি। তোকে ঘুষ দিয়ে সরকারি চাকুরী পাইয়ে দিয়েছি। বোনগুলোকে ভাল ঘর দেখে, বিয়ে দিয়েছি। আজ এই দিন দেখার জন্য অরুপ? আর কী চাস তোরা সবাই আমার কাছ থেকে? আমি বিয়ে করায় তোদের এত সমস্যা হচ্ছে কেন? বল..বল.. আমাকে। আজ প্রত্যেকের কাছে এর উত্তর চাই আমি? বল…
রূপায়নের চিৎকার শুনে সবাই ভয় পেয়ে শুকনো ঢোক গিলল। এই ঠাণ্ডা, নিরীহ মানুষটা আজ এত রেগে গেল কেন? কখনো তো বড়দাভাইকে এতটা রাগ করতে দেখেনি কেউ। সবাই বড়দাভাইয়ের শান্তশিষ্ট রুপ দেখেই অভ্যস্ত।
সীমা, অরুপকে টেনে এক কোণায় নিয়ে গেল। চাপা কণ্ঠে বলল,
-‘তোমাকে এত পাকনামি করতে কে বলেছে? যা বলার তোমার বোনেরা বলতো। তুমি মুখ বন্ধ রাখতে পারো না? এখন যদি বড়দাভাই রাগ করে আলাদা সংসার পাতে, তখন কী করবা? তোমার বোনেরা দুদিন পর পরই বেড়াতে আসে। আমি কিন্তু তোমার বোনদের বাড়তি ঝামেলা করতে পারব না।
অরুপ দমে গেল। সীমা ফিসফিস করে বলল,
-‘যা হচ্ছে হতে দাও। তুমি আর কিছু বলো না।

নিপা কাঁদতে কাঁদতে নন্দিতাদেবীর মুখোমুখি দাঁড়াল। বলল,
-‘তোমার বড়ছেলে আমায় মারল মা। তুমি কিছুই বললে না কেন? বিয়ে করেই কুলাঙ্গারটা আমার গায়ে হাত তুলেছে। আর তুমি চেয়ে চেয়ে দেখছো?
রূপায়ন ঘুরে দাঁড়াল। নিপাকে বলল,
-‘আমি কুলাঙ্গার? তোদের কথা ভেবে নিজের শখ, আহ্লাদ বিসর্জন দেওয়ার এই প্রতিদান পেলাম। বাবা যখন মারা যায়, তখন তুই সাতমাসের বাচ্চা ছিলি নিপা। আজ সেই নিপা তার বড়দাভাইকে কুলাঙ্গার বলল। মা শুনেছো? তোমার ছোট্ট মেয়ে তোমার বড়ছেলেকে কুলাঙ্গার বলল। কেন বলল? কারণ সে আমার বউকে বাজারি মেয়ে বলে অপমান করেছে। তাকে একটা থাপ্পড় মেরেছি দেখে। এই ভাইবোন গুলোর জন্যই তুমি আমায় এতদিন বিয়ে করাওনি তাই না মা? এরা বছরের পর বছর আমার রক্ত জল করা টাকা চুষে খেয়ে একটু একটু করে বড় হয়েছে। আজ যখন ওদের স্বার্থে টান পরেছে। ওমনি আমি কুলাঙ্গার হয়ে গেলাম। ‘আমার মতো কোন কুলাঙ্গার বড় সন্তান যেন, তোমার মতো কোন মায়ের গর্ভে জন্ম না নেয়।’ আমি বড় দেখে, সারাজীবন সবকিছু থেকে বঞ্চিত করেছো তুমি আমায়।’ তোমার প্রশ্রয়ে আজ তোমার ছেলেমেয়েরা আমাকে এত বড় বড় কথা বলার সাহস পায় মা।’ অনুপমা ঘরে চলো!
নন্দিতাদেবী চোখের জল মুছে বলল,
-‘একটু দাঁড়া! নতুন বউকে বরণ করব।
-‘কোন দরকার নেই।
রূপায়ন, অনুপমার হাতটা শক্ত করে ধরে, সবার সামনে দিয়ে নিজের ঘরে নিয়ে গেল।
ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বলল,
-‘একটু দাঁড়াও…?
অনুপমা দরজায় হেলান দিয়ে চুপটি করে দাঁড়িয়ে রইল। চোখের জলে কাজল লেপ্টে গেছে। মানুষটা নিজের বাড়িতে এতটা লাঞ্ছিত, অবহেলিত অনুপমার জানা ছিল না। অনুপমা মনে মনে শপথ করল,
-‘নিজের শরীরের একবিন্দু রক্ত থাকতে আর কখনো মানুষটাকে কষ্ট পেতে দেবে না অনুপমা। ভাল মানুষগুলোর কপাল পোড়া হয় কেন, কে জানে!
রূপায়ন একটা মোমবাতি জ্বেলে অনুপমাকে বরণ করে নিল। ভেজা কণ্ঠে বলল,
-‘আমায় ক্ষমা করো অনুপমা। আমার জন্য তোমাকে এতটা অপমানিত হতে হলো।

(চলবে)