সংসার পর্ব-১২

0
277

#সংসার
#লেখা_Bobita_Ray
পর্ব- ১২

এত উঁচু পাহাড়ে ওঠানামা করে অনুপমার পা দুটো ব্যথায় টনটন করছে। পাহাড় থেকে নামার সময় চড়া রোদে ঘেমে-নেয়ে একাকার অবস্থা। সুন্দর মুখটাও শুকিয়ে লাল টুকটুকে হয়ে গেছে। রূপায়ন কতক্ষণ বসে বসে অনুপমার পাদু’টো টিপে দিল। তারপর সকালের জলখাবার খাইয়ে দিয়ে ব্যথার ঔষধ দিল। ছোট্ট একটা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বলল,
-‘চলো?
অনুপমা দুচোখ বুঁজে বিছানায় ঘাপটি মেরে পরে রইল। এখন আর কোথাও যেতে ইচ্ছে করছে না। রূপায়ন দুষ্টুমি করে, ডানহাতের তর্জনী দিয়ে অনুপমার সুন্দর মুখখানিতে আঁকিবুঁকি করতে লাগল। অনুপমা অস্থির হয়ে রূপায়নের হাতটা চেপে ধরল। রূপায়ন, অনুপমাকে টেনে তুলল। বলল,
-‘দ্রুত পোষাক পাল্টে নাও। দেরি হলে কিন্তু আমিই পাল্টে দেব?
অনুপমা চোখ গরম করে, বাথরুমে চলে গেল। উফ্ এই মানুষটা যে এত ভ্রমণপিপাসু কে জানত?
অনুপমা মেরুনরঙা জামদানী শাড়ি পরেছে। রূপায়ন মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইল। এই মেয়েটার বাড়াবাড়ি সৌন্দর্য দেখলে, রূপায়নের বুকের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়। ইচ্ছে করে সারাক্ষণ অনুপমাতেই মত্ত থাকতে। আগেও অজস্রবার সাজেক ঘুরতে এসেছে রূপায়ন। প্রত্যেকটা পথঘাট রূপায়নের নখদর্পনে। সাহস করে ‘ট্যাকিং টিমের সাহায্যে ছাড়া একাই অনুপমাকে নিয়ে বেড়িয়ে পরল কংলাক ঝর্ণার উদ্দেশ্যে। কিছুদূর গিয়ে মনে হলো, এভাবে একা একা অনুপমাকে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। এখানকার স্থানীয় একজন রূপায়নের বেশ পরিচিত। তাকে ফোন করে ডেকে নিল রূপায়ন। কুশলাদি করে বেড়িয়ে পরল।
বেলা গড়িয়ে গেছে, কড়া রোদ মাথায় নিয়ে ওরা রওনা হলো কংলাক ঝর্ণার পথে।
পুরোটা পথ এখনো বন্য! সুরু পথটা ক্রমাগত জঙ্গলে ঢেকে যাচ্ছে। কোনো রকমে পা ফেলে ফেলে পথ শেষ করতে হচ্ছে। পুরোটা পথ ঘন জঙ্গল আর প্রাচীন বৃক্ষে ঢাকা। বড় বড় লতা দেখে যে কারও মনে পড়ে যাবে টারজানের সেই গল্পটা।

পাহাড় বেয়ে পুরোটাই নামার পথ। রূপায়ন আদিবাসী লোকটার সাথে কথা বলতে বলতে অনুপমার হাত ধরে নীচ দিকে ক্রমশ নামছে। অনুপমা সাজেকের উঁচু পাহাড় থেকে নীচের ভ্যালির জমানো মেঘের সৌর্ন্দয মুগ্ধ হয়ে দেখেছে। এসব পথে সারাটা সকাল মেঘের আনাগোনা। এবার সেই পথেই হাঁটছে।
অনুপমা নতুন হওয়ায় পাহাড়ী পথ চলতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। অচেনা বুনো পরিবেশে ট্রেকিং করে নীচে আসার পর দেখা মিলল শীতল জলের ঝিরিপথ।

অন্যসব ঝিরির মতো এটাও পাথরে ঠাঁসা। দীর্ঘপথ পাহাড় বেয়ে নামার পর, এমন ঝিরিটা ওদের মধ্যে কিছুটা বিশ্রামের সুযোগ করে দিল। দুটো পাহাড়ের মাঝখানে বয়ে যাওয়া ঝিরির পথে ধরে কিছুদূর হেঁটে গেল ওরা। আরও সামনে ছোট–বড় পাথর ডিঙিয়ে পানির স্রোত বয়ে যাচ্ছে উপর থেকে অনবরত। নিঃশব্দের পাহাড়জুড়ে ঝিরির এমন পথ চলা সত্যিকারের বন্য স্বাদ এনে দেয় প্রকৃতিতে।

অনুপমা ক্লান্ত হয়ে ঝিরিতে বসে পরল। রূপায়নও, অনুপমার গা ঘেঁষে বসল। ফিসফিস করে বলল,
-‘কষ্ট হচ্ছে?
অনুপমা, রূপায়মের ঘামার্ত মুখটা শাড়ির আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দিল। বলল,
-‘একটু তো কষ্ট হচ্ছেই। তবে কষ্ট না করলে এত সুন্দর দৃশ্য দেখতে পেতাম?
রূপায়ন হেসে দিল। কিছুক্ষণ বিশ্রাম সেরে উঠে পরল। আবার পাহাড় ধরে উঠতে হবে। ওরা দুপাশে জঙ্গল ঘেরা গভীর খাড়া পথ বেয়ে উঠছে। কিছুদূর যেতেই কানে আসল ঝর্ণার তীব্র আওয়াজ। সেই শব্দ হাঁটার গতি যেন বাড়িয়ে দিল। মনের ভেতর উচ্ছ্বাস নিয়ে, উঁচুনিচু পাহাড় বেয়ে নামতেই বড় পাথর ডিঙিয়ে চোখ পড়ে দীর্ঘ ঝর্ণার দিকে।

উঁচু পাহাড়ে খাঁজ বেয়ে উপর থেকে দুভাগে পড়ছে ঝর্ণা। তীব্র শব্দ ঘিরে রেখেছে এই অচেনা পরিবেশ। শুনশান নীরব পাহাড়ের মধ্যে একমাত্র শব্দ যেন এই জলের ধারা। অনবরত উপর থেকে বয়ে আসা এ্‌ই পানির স্রোত বন্দি করে নিল অনুপমার নজর। অনুপমা অবাক বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল পাহাড়ের বুকে বেয়ে বেয়ে চলা প্রাকৃতিক ঝর্ণার দিকে। রূপায়ন লোকটাকে ফিসফিস করে নীচু কণ্ঠে কিছু বলতেই লোকটা লাজুক হেসে কোথায় যেন চলে গেল। রূপায়ন ধীরে ধীরে অনুপমার খুব কাছে চলে এলো। রূপায়নের ঘোর লাগা বুনো চাউনী দেখে, অনুপমা কেঁপে উঠল। বুকের ভেতর শব্দ তুলে ধুকপুক করছে। রূপায়ন, আচমকা অনুপমাকে কোলে তুলে নিল। ধীরে ধীরে ছোট, বড় পাথর ডেঙিয়ে এগিয়ে গেল পাহাড়ী ঝর্ণার খুব কাছে। অনুপমা, রূপায়নের কাঁধ জড়িয়ে ধরে, রূপায়নের গভীর চোখের দিকে মায়াবী চোখ তুলে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। ঝর্ণার নীচে গিয়ে দাঁড়াতেই দুজনকে একসাথে বারংবার ভিজিয়ে দিয়ে গেল। ঝর্ণার ঝিরিঝিরি জলরাশি রূপায়ন, অনুপমার মাথায়, চোখেমুখে বেয়ে পরছে। রূপায়ন ভেজা মাথাটা ঝাড়া দিতেই অনুপমার সারামুখে বিন্দু বিন্দু জলের কণা লুটিয়ে পরল। পৃথিবীর আলো এখানে খুব কমই পড়ে। কেমন মোহগ্রস্ত, অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ। রূপায়ন, অনুপমাকে পাথরের উপরে, হাঁটু জলের নীচে বসিয়ে দিয়ে, নিজেও অনুপমার খুব কাছে গিয়ে বসল। অনুপমার পুরো শরীর ভিজে জবজবে হয়ে গেছে। শাড়ির উপর দিয়ে শরীরের প্রত্যেকটা বাঁক স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে। অনুপমা খুব লজ্জা পেল। ফিসফিস করে বলল,
-‘ভেজা কাপড়ে যাব কীভাবে?
রূপায়ন সেকথার উত্তর দিল না। সামান্য ঝুঁকে নেশা জড়ানো চাউনিতে তাকাল। অনুপমার অঙ্গ জুড়ে একরাশ মাদকতা। রূপায়ন ধীরে ধীরে অনুপমার খুব কাছে চলে গেল। তারপর অনুপমার চোখের পাতায় গভীর ভাবে চুমু এঁকে দিল। অনুপমার অস্থির লাগছে। চোখের পাতা তিরতির করে কাঁপছে। এই সত্যিকারের আদিমতা ঘিরে রাখা পুরো প্রাকৃতিক রাজ্যে প্রিয় মানুষটির সাথে একাকী ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলো খুব তীব্র ভাবে উপভোগ করছে অনুপমা। নিষিদ্ধ ইচ্ছেরা ডাল-পালা মেলে দিয়েছে। মাথায় ভোতা অনুভূতি। রূপায়নের আকুলতা ভরা চাউনী, কিছু উত্তপ্ত অনুভূতি পাওয়ার তৃষ্ণা। কিছু অসহ্যময় ভালোবাসা। কে কাকে বাঁধা দিবে? এই ঝিরিঝিরি ঝর্ণাকে সাক্ষী রেখে, দুজনই যে দুজনকে একান্ত আপন করে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।
এভাবে কতক্ষণ কাটল কে জানে! অনুপমার হুঁশ ফিরতেই প্রচণ্ড লজ্জা পেল। রূপায়নের বুকে মুখ গুঁজে বলল,
-‘আমার খুব লজ্জা লাগছে। এই ভেজা কাপড়ে ওই আদিবাসী লোকটার সামনে দিয়ে কীভাবে যাব?
রূপায়ন উঠে গিয়ে ফোন বের করে দুজনের কতগুলো ছবি তুলল। তারপর ব্যাগ থেকে অনুপমার জামা, প্লাজো বের করে দিয়ে বলল,
-‘ওই জঙ্গলে গিয়ে চেঞ্জ করে আসো!
অনুপমা হাফ ছেড়ে বাঁচল। রূপায়নের হাত থেকে জামা নিয়ে চলে গেল। রূপায়ন এই ফাঁকে হাফহাতা গেঞ্জি, শুকনো প্যান্ট পরে নিল। হাত দিয়ে ভেজা চুল ঝাড়তে ঝাড়তে অনুপমাকে তাড়া দিয়ে বলল,
-‘ কই হলো তোমার? বিকেল হতে হতে আলো কমছে কিন্তু। আলোর আয়ুকাল শেষ হওয়ার আগেই আমাদের ফিরতে হবে অনুপমা।
অনুপমা ঘন জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে এলো। ততক্ষণে আদিবাসী লোকটাও এসে গেছে। দুজনকে সাথে নিয়ে রওনা হলো ফিরতি পথে।

রাতে গা কাঁপিয়ে জ্বর এলো অনুপমার। রূপায়ন ভয় পেয়ে গেল। নাপা ঔষধেও কাজ হলো না। মেয়েটা জ্বরের ঘোরে কেমন যেন করছে। জ্বর কমার বদলে আরও যেন বেড়ে গেল। রূপায়ন ভয় পেয়ে কেঁদে দিল। কেমন দিশেহারা অস্থির লাগছে। কতবার কতভাবে অনুপমাকে ডাকছে। মেয়েটা কেমন নেতিয়ে গেছে। এদিকে ফোনেও সবসময় নেটওয়ার্ক থাকে না। রূপায়ন লাগাতার গোবিন্দকে ফোন দিল। এই তো রিং হচ্ছে। গোবিন্দ ফোন রিসিভ করে ঘুমঘুম কণ্ঠে বলল,
-‘কী হয়েছে বন্ধু?
রূপায়ন ভেজা কণ্ঠে অস্থির হয়ে বলল,
-‘অনুপমার গা কাঁপিয়ে জ্বর এসেছে। আমি এখন কী করব? বুঝতে পারছি না। আমার খুব ভয় করছে গোবিন্দ।
-‘তুই ঘাবড়ে যাস না রূপায়ন। এই নে রুম্পার সাথে কথা বল?
রুম্পা ফোনটা কানে চেপে ধরে, রূপায়নকে, অনুপনার মাথায় জল ঢালার কথা বলে দিল। তাতেও যদি জ্বর না কমে, মাথায় যেন একটা ওড়না দিয়ে জলপট্টি দিয়ে দেয়।
ফোন রেখে রূপায়ন অনেকক্ষণ অনুপমার মাথায় জল ঢাকল। এই তো শরীর একটু একটু ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। সারাটা রাত জেগে রইল রূপায়ন। ভোরের দিকে অনুপমার জ্বর ছেড়ে গেল। সারা শরীর ঘামে ভিজে জবজব করছে। রূপায়ন তোয়ালে ভিজিয়ে এনে অনুপমার শরীর মুছিয়ে দিয়ে, কাপড় পাল্টে দিল।
সকাল হয়ে গেছে। দূর্বলতায় অনুপমার শরীর ম্যাচম্যাচ করছে। রূপায়ন জোর করে অনুপমাকে হালকা খাবার খাইয়ে দিয়ে ঔষধ খাইয়ে দিল। এই শরীরেও অনুপমা জেদ ধরেছে। ঘুরতে যাবে। এবং সে আজকেও এখানে থাকবে। রূপায়ন, অনুপমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। বুঝিয়ে বলল,
-‘তোমার শরীর খুব দূর্বল। এই অবস্থায় ঘুরতে যাওয়া একদম ঠিক হবে না। একটু পরেই বের হবো আমরা।
অভিমানে অনুপমা, রূপায়নের হাতটা মাথা থেকে সরিয়ে দিল। বলল,
-‘একদম ছুঁবে না তুমি আমায়! কেউ আমার কথা শোনে না। কেউ না।
রূপায়ন সে কথায় পাত্তা না দিয়ে আর একটু ঘনিষ্ঠ হয়ে বসল। অনুপমা গড়িয়ে খাটের অপরপ্রান্তে চলে গেল। রূপায়ন হেসে দিয়ে বলল,
-‘হ্যাঁ..হ্যাঁ আমাকে কিন্তু ভুলেও ছুঁইয়ো না। আমি তো তোমার ভাসুর লাগি। আমি ছুঁয়ে দিলে পাপ হবে কিন্তু!
অনুপমা রাগী রাগী চোখ তুলে তাকাল।
রূপায়ন কত যুক্তিতর্ক করেও সফল হলো না। অবশেষে অনুপমার কথার জয় হলো। আরও একটা দিন থেকে যেতে বাধ্য হলো রূপায়ন। তবে শর্ত জুড়ে দিল। অসুস্থ শরীরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া যাবে না। পাহাড়, মেঘ দেখতে হলে বারান্দায় বসে দেখতে হবে। অনুপমা খুশিমনে তাতেই একবাক্যে রাজি হয়ে গেল। রূপায়নের কাঁধে মাথা রেখে, সারা বিকাল, সন্ধ্যা, গভীর রাত পর্যন্ত মেঘ দেখল। রূপায়নের সাথে নানা বিষয়ে গল্পগুজব করে কাঁটাল। ইচ্ছে করছে এখানেই মানুষটার সাথে সারাজীবন থেকে যেতে। বাড়ি গেলে, আবারও মানুষটার রাত ছাড়া দেখা মিলবে না। সারাদিন মানুষটাকে একপলক দেখার আশায়, একটু মানুষটার কণ্ঠস্বর শোনার আশায় অনুপমা চাতকপাখির মতো অপেক্ষা করে।

ওরা যখন রিসোর্ট থেকে চেক আউট করে , চান্দের গাড়িতে চেপে বসল। কিছুদূর গিয়ে রূপায়ন খেয়াল করল, এই গাড়ির ছেলেগুলো বেশি সুবিধার না। কেউ অনুপমার দিকে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছে। কেউবা লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অনুপমা কুণ্ঠিত বোধ করছে। কেমন জড়োসড়ো হয়ে রূপায়নের গা ঘেঁষে বসে আছে মেয়েটা। এতগুলো জ্বলজ্বলে চোখ ঘুরেফিরে বার বার অনুপমার দিকে তাকাচ্ছে। রূপায়ন খানিকক্ষণ কী যেন ভাবল। তারপর ব্যস্ত হাতে ফোনটা কানে চেপে ধরল। রাশভারি কণ্ঠে বলল,
-‘কেসটা আজ কোর্টে ওঠার কথা ছিল? উঠেছে? না..না.. আমি ছুটিতে আছি। আমার ওয়াইফকে নিয়ে একটু সাজেক ট্যুরে এসেছি। হ্যাঁ হ্যাঁ কাল পৌঁছেই, সরাসরি ডিউটিতে জয়েন্ট করব। রাখি!
অল্পবয়সী ছেলেগুলো নড়েচড়ে বসল। কেউ আর অনুপমার দিকে সরাসরি তাকানোর সাহস পেল না। রূপায়নের উপস্থিত বুদ্ধি দেখে, অন্যদিকে তাকিয়ে মুখ টিপে নিঃশব্দ হেসে দিল অনুপমা।

ছবির মতো অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় দৃশ্য পেছনে ফেলে ওরা একটু একটু করে চলে যাচ্ছে কোলাহলপূর্ণ ইট, পাথরের মেকী শহরে।

একটানা একুশ ঘণ্টা জার্নি করে, দুজনে বাড়িতে ফিরল। বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই নিপার ব্যপার নিয়ে শুরু হয়ে গেল অশান্তি। নিপা কেঁদেকেটে একাকার অবস্থা। সৌরভ দুদিন ধরে এসে, নিপার পা ধরে বসে আছে। যে কোন মূল্যে সে নিজের বউ ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। নিপা কিছুতেই ওই লম্পটটার আর সাথে যাবে না। অরুপ তেড়ে গিয়েছিল সৌরভকে মারতে। সীমা বাঁধা দিয়েছে। সবাই রূপায়নের ফিরে আসার দিন গুনছিল। রূপায়ন সবার সব কথা শুনে ক্লান্ত শরীরটা সোফায় এলিয়ে দিল। শরীর আর সায় দিচ্ছে না। ঘুমে দুচোখ বুজে আসছে। একগ্লাস ঠাণ্ডা জল খেয়ে, ধীর কণ্ঠে বলল,
-‘আমার ছোট বোনকে ভালোবেসে বিয়ে করার পরও আবার তোমাকে কেন বিয়ে করতে হলো সৌরভ?

(চলবে)