#সর্বনাশীনি_তুমি
#পর্ব:২২(সমাপ্তি)
#Mishmi_muntaha_moon
উপমা জুইয়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে ডানে বামে তাকিয়ে ভাবলো যাবে কি না।অনেক ভেবে শেষ পর্যন্ত মন শান্তি দেয়ার জন্য সাথে নিজেকে নিজে বললাম যে নাহ শুধুমাত্র রোকেয়া বেগমকে দেখতে যাচ্ছে।
সেহরিশের বাড়িতে পৌছেই অস্থির লাগতে শুরু করলো।রোকেয়া বেগম গেট খুলে উপমাকে দেখে খুশি হলেন।বাড়ির ভেতরে নিয়ে গিয়ে কথা বলতে লাগলো কিন্তু একটা বারও সেহরিশের কোনো কথা বলল না।য়পমার চিন্তার বাধ মানছে না।কিভাবে কি করবে।
অনেকবার নিজেই সেহরিয়াজের কথা জিজ্ঞেস করার জন্য মুখ খুলেও কথা গলায়ই গিলে ফেলে।জোড়পূর্বক হাসি মুখে হাসি টেনে সকল কথার হু হা জবাব দিয়ে বেড়িয়ে পড়লো।
___
উপমা অস্থির পায়ে রুমজুরে পায়চারি করছে।কিছুক্ষন পূর্বেই টিভিতে একটা বিস্ময়কর খবর দেখলো।অপরপক্ষ দলের লিডার কবির নাকি ড্রাগ গ্রহন সাথে পাচার করার দায়ে কারাবন্দী করা হয়েছে।
দেখার পর থেকেই উপমার কপালে চিন্তার রেখা দেখা যাচ্ছে।
মাত্রই সেহরিশ নির্বাচন জয়লাভ করলো আর তার পরপরই এই খবর।
‘কিরে উপমা তোর মুখের এই হাল কেনো।রোদে ঘুরতে ঘুরতে কালো হয়ে গিয়েছিস দেখছি।’
উপমা তার মায়ের কথা শুনে তার মার দিকে তাকালো।দ্রুত পায়ে এসে উপমার বিছানা ঠিক করছে।উপমা তার মার দিকে তাকিয়ে বলল
‘কালো ধলা দিয়ে কি হবে আর।তুমি আমার বিছানা ঠিক করছো কেনো আমি করে নিবো।’
‘চুপ কর।আর মুখের একটু যত্ন নে।’
উপমার মা ধুপধাপ কাজ করে চলে গেলো।তার মার কর্মকাণ্ড বুঝতে পারে না উপমা।হঠাৎ তার মুখ নিয়ে এতো চিন্তা দেখা দিলো কেনো বুঝে পায় না।
উপমা মাথা নাড়িয়ে মোবাইলে দসার্চ দিলো কবিরের কারাদন্ড এর বিষয় টা।বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন কথা পড়ে বিরক্ত হয়ে উপমা মোবাইল রেখে দিলো।
__
ভালো ভাবে পড়ালেখা শুরু করে দিলো উপমা।টানা সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোচিং করে বাড়ি ফিরলো।কি কাঠফাটা রোদ।এই বৃষ্টি তো এই রোদ ভালো।লাগে আর উপমার।
বাড়ি ফিরে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিলো।
আজ তার জন্মদিন কিন্তু কারো জেনো মনেই নেই।আর সে নিজে ভুলতে চেয়েও ভুলতে পারে নি।
সবচেয়ে বড় কষ্ট সেহরিশের কথা ভেবে লাগলো।বিয়ের পর তার প্রথম জন্মদিন কিন্তু তার কোনো ভাবাবেগ নেই।এতোই তুচ্ছ নাকি সে।
ভেবে চোখে জল চিকচিক করে উঠলো।উপমা রেডি হলো কিছুক্ষন আগে মারজিয়া কল করে একটা রেস্টুরেন্টের নাম বলে সেখানে যেতে বলল।উপমা কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো হয়তো তাকে কোনো সারপ্রাইজ দিবে। পরমুহূর্তেই ভাবলো এতো আগে আগে চিন্তা করা ঠিক হবে না।আর তার বান্ধবীরা যা ইতর।উল্টো নাকি তার থেকেই ট্রিট চেয়ে বসে তা ভেবে কিছু টাকা নিজের সাথে করে নিয়ে গেলো।
___
রেস্টুরেন্টে পৌছে ভিতরে যেতেই লাবিবা,মার্জিয়া,ইশফা জুই ঝাপিয়ে পড়লো উপমার উপর।উপমা মুখে হাসি ফুটালো।আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো অনেকে তাকিয়ে দেখছে।কর্নার সাইটের দেয়াল সহ টেবিল সাজানো।মাঝে কেক রাখা।আশেপাশের টেবিলেও মানুষ তাদের অবসর সময় কাটাচ্ছে, খাবার খাচ্ছে।
‘হ্যাপি বার্থডে উপ,, মা,,,৷ ‘
সকলে একসাথে উইশ করলো উপমাকে।উপমা তার সকল বান্ধবীদের দিকে তাকিয়ে বলল
‘এতোকিছু করার কি দরকার ছিলো?সামান্য উইশেই আমি খুশি।’
ইশফা মুখ ভেংচি কেটে বলল
‘আহা! ঢং, চুপচাপ কেক কাট।আর ট্রিট দে কতোবড় সারপ্রাইজ দিলাম।’
উপমা ঠোঁট বাকা করে বলল
‘তোদের ছ্যাসরামি আমার কাছে অপরিচিত না।সারপ্রাইজ দিয়ে সাথে সাথেই ট্রিট চাওয়া শুরু। ‘
‘ছ্যাসরামি হলে ছ্যাসরামিই যাহ।এখন টাকা বের কর।’
উপমা সকল কে অর্ডার করতে বলল যে যা খেতে চায়।শুরু হলো তাদের অর্ডার।খেয়ে দেয়ে বিল পে করতে গেলে জানতে পারলো বিল আগে থেকেই কেউ পে করে দিয়েছে।ভ্রু কুচকে আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কাউকে দেখতে পায় কি পরিচিত।কাউকে না দেখে বাহিরে গেলো উপমাসহ তার সকল ফ্রেন্ড।
‘হ্যালো শালিরা।’
সেহরিশের কন্ঠ পেয়ে সকলে তার দিকে নজর দিলো।পাঞ্জাবি গায়ে দাঁড়িয়ে আছে মুখে তার সুন্দর একটা হাসি।উপমা মুখ গম্ভীর করে দাঁড়িয়ে থাকলো
‘আরেহ ভাইয়া যে।কেমন আছেন।আপনারই কমতি ছিলো এই মুহূর্তে। ‘
জুই প্রচুর উৎফুল্ল হয়ে বলল।সেহরিশের মুখ হাসি লেগেই আছে।ইশফাও হাসি মুখে বলল
‘আপনাকে দেখে যে আমাদের কি খুশি লাগছে ভাবতে পারছেন।’
ইশফার কথা শুনে উপমা গম্ভীরমুখে বলল
‘তোদের এতো খুশি কেনো লাগছে। আজব উনি কি কোনো ফুচকাওয়ালা মামা নাকি উনি।যত্তসব। ‘
উপমার কথা শুনে মারজিয়া বলল
‘হোয়াট আ চিপ এক্সামপাম উপমা। ভাইয়া কে তুই সব ছেড়ে ফুচকাওয়ালা মামা বানিয়ে দিলি।’
উপমার কথা শুনে সেহরিশ হতাশ হলো।তারপর পরই আবারও মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল
‘ইটস ওকে। উপমা আসলে পড়া লেখায় একটু উইক তো তাই ভালো এক্সামপাল দিতে পারে না।তোমরা বলো ট্রিট কেমন লাগলো।’
উপমা নিভলো।অসভ্য,ইতর বলে মনে মনে কিছু গালিও দিলো।সেহরিশের প্রশ্নের জবাবে পালটা প্রশ্ন করলো মারজিয়া
‘কেনো এই ট্রিট টা আপনার পক্ষ থেকে ছিলো?’
‘আমার আর উপমার আলাদা ট্রিট নাকি আমি দিলেই ওর পক্ষ থেকে হবে।’
‘হুম তাও ঠিক।তবে ভালোই ছিলো ট্রিট।হিহি।’
মারজিয়া,ইশফা,জুইয়ের সাথে কথা বলে আশেপাশে তাকাতেই দেখতে পেলো উপমা কোথাও নেই।
‘এই উপমা কই গেলো?’
জুইয়ের কথায় সকলে আশেপাশে তাকালো। উপমাকে।না পেয়ে ইশফা হতাশ হয়ে সেহরিশের দিকে একপলক তাকিয়ে বলল
‘এই মেয়েটাও না।’
সেহরিশ দীর্ঘশ্বাস ফেললো।অভিমানের পর্দা তুলতে হবে তাকে এইটা কম কঠিন ব্যাপার না।’
____
বাড়িতে আসতেই দেখতে পেলো জাফর সাহেবও তার বার্থডের খাতিরে কেক এনে রেখেছে।উপমা তার আম্মু আব্বুর সাথে কেক কেটে রুমে গিয়ে গা এলিয়ে দিলো।বাকি সব বার্থডের থেকে আজকের বার্থডে তার ভালো কেটেছে সকলে তাকে স্পেশাল ফিল করাচ্ছে।কিন্তু এক জনের জন্য সব স্পেশালনেস টা ফিকে উপমার।
রাত ধীরে ধীরে গভীর হচ্ছে।উপমা এখনো ঘড়ির সময়ের দিকে তাকিয়ে আছে তার বার্থডে তো চলে যাচ্ছে সে কেনো কিছু করছে না।ভাবনার ছেদ ঘটে কলিং বেলের আওয়াজে।পর পর বাজতেই আছে কিন্তু কেউ খুলছে না।
উপমাই শেষমেষ বিরক্ত হয়ে উঠে গেলো।দরজায় খুলতেই একটা ফুলের বুকেট এগিয়ে দিয়ে একটা ছেলে বলল
‘আপু আপনার জন্য ভাই পাঠিয়েছে আর নিচে ওয়েট করছে।’
বলে চলে গেলো।উপমা ভ্রু কুচকে বুকেট টা নিয়ে রুমে গেলো।চোরা ভাবে তার আব্বু আম্মুর রুমে উঁকি দিতে দেখতে পেলো তারা একসাথে বসে আছে।কিছু কথা বলছে। মুখে তাদের প্রশান্তির হাসি।
উপমা রুমে গিয়ে নিচে তাকালো কিন্তু না কোনো গাড়ি না কোনো মানুষ দেখতে পেলো।
বুকেট টা রেখে মাথায় ওড়না দিয়ে বের হলো।
আশানুরূপ সেহরিশ দাঁড়িয়ে।উপমা গম্ভীর মুখেই সেহরিশের দিকে বাড়লো।অভিমান তার একটুও কমে নি।সেহরিশের মুখোমুখি দাড়াতেই সেহরিশ মুচকি হেসে বলল
‘হ্যাপি বার্থডে জানা।আজ তোমার সকল অভিমান ধূলোয় মিশিয়ে দেবো চলো আমার সাথে।’
বলে হাত ধরে সামনে বাড়লো।উপমা কোনো রাশব্দ করলো না।গাড়ি আনে নি সেহরিশ আজ ইচ্ছে করেই। রোমেন্সের জন্য গাড়িটা একদমই মানানসই না সেহরিশের মতে।দূরত্ব একটু বেশি থেকে যায়।
রিকশায় উপমাকে তুলে দিয়ে সেহরিশ নিজেও বসলো।একেবারে উপমার দিকে চেপে এক হাতে উপমার কোমড় জড়িয়ে।
উপমা ভ্রু কুচকালো কিন্তু তবুও কিছু বলল না।যেনো ব্রত করেছে কিছু না বলার।সেহরিশ হাসি মুখে রেখেই বলল
‘এতো কিসের অভিমান উপমা।কথা কেনো বলছো না।আর মুখটাকে এভাবে গম্ভীর করে রেখেছো কেনো?ইটস নট ফেয়ার।’
সেহরিশের কথা উপমা তার দিকে তাকালো।মুখ ভেংচি দিয়ে বলল
‘হুম গম্ভীর মুখ তো শুধু আপনি করতে পারবেন। নিজের নামে রেজিস্টার করে রেখেছেন তো।হাহ।’
উপমার কথায় সেহরিশ হাসলো।উপমার রাগ ভেঙে গেছে সেই কখনি কিন্তু সেহরিশকে একটা শাস্তি দেওয়া জরুরি ছিলো কিন্তু কিছুই হলো না উপমার দ্বারা অকর্মের ঢেকি বলে নিজেকে সম্বোধন করলো।
একটা সুন্দর লেকের সামনে রিকশা থামলো সেখানে আগেই কিছু পথশিশু বসা।উপমা রিকশা থেকে নামতেই দেখে সকলে একজন একজন করে একটা গোলাপ আর বেলুন হাতে দিলো।উপমার মুখে আপনাআপনি হাসি ফুটলো।বেলুন গুলো অনেকগুলো জমতেই উপমা আবাও সেই পথশিশুদের দিয়ে দেয়।
সকল পথশিশুর সাথে কথা বলে উপমার অভিমান আর শাস্তি দেয়ার মনভাব দুটোই কেটে গেলো।
সকল শেষে সেহরিশ উপমাকে নিয়ে তাদের সেই বাগান করা বাড়িতে গেলো।বাড়িতে ঢুকতেই ফুলের গন্ধে উপমা মাতাল হলো।ঢুকতেই দেখতে পেলো পুরো রুমজুড়ে গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।রুমে পৌছে আরেকদফা অবাক হলো তাদের রুমটা খুবই সুন্দর করে গোলাপ আর বেলির সংমিশ্রণে সাজানো।উপমা সব দেখে ছোট ছোট চোখ করে সেহরিশের দিকে তাকিয়ে বলল
‘এইসব কি।আপনার ইরাদা কি বলুন তো?’
ঊপমার কথা শুনে সেহরিশ আওয়াজ করে হাসলো।হাসি নিয়ে বলল
‘আমার নয় তোমার ইরাদার কথা চিন্তা করো।আর তাছাড়া আমাদের তো অফিসিয়ালি সেইদিন বাসর ছিলো সেই দিন বাসর হয় নি। না হয়েছে বাসর ঘর সাজানো তাই ভাবলাম খারাপ হয় না এই আইডিয়া।’
উপমা সেহরিশের বুকে থাপ্পড় দিলো হাল্কা।হঠাৎ তার আব্বু আম্মু কথা মনে আসতেই বলল
‘ওহ নো।আমি তো আব্বু আম্মুকে বলে আসি নি আর,,
উপমার ঠোঁটে আঙুল ঠেকিয়ে সেহরিশ বলল
‘হুশ, এতোক্ষণে কি তোমার জাফর বাবা চুপ থাকতো।আমি উনাদের আগেই জানিয়ে রেখেছিলাম।আর এভাবেও আমি তোমার হাসবেন্ড উনাদের কিছু বলার প্রশ্নই আসে না।’
‘তা যাই হোক।আপনার এতোদিনের বিহেভিয়ারের কথা বলুন আর খবরে যে দেখেলাম তার বিষয়?’
সেহরিশ উপমার হাত টেনে নিয়ে গিয়ে খাটে বসালো।গনভীর মুখে বলল
‘সেইদিন যে আমি এক্সিডেন্ট করাই নি সেইটা তো বিশ্বাস করো তাই না?’
উপমা উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে ‘হ্যা’ বুঝালো।সেহরিশ দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবারও বলল
‘সেই বিষয়ের শেষটাই আমি দেখতে চাইছিলাম।কার কারনে আমার বিশ্বাস ভাঙলো ইউসুফ,এমন কথা বলল। ওকে আমি আমার ভাইয়ের থেকে কম ভাবতাম না।তা যাই হোক সেই বিষয়ে কয়েকটা মানুষ লাগাতেই জানতে পারলাম কবিরের করা আর তাছাড়া আমার মানুষও লাগাতে হতো না পরবর্তিতে আমাকে ইউসুফ নিজেই বলে দিয়েছিলো। আর এক্সিডেন্ট এর কথা বলে আমি ওকে কারাদণ্ড করাতে পারতাম না তাই এই ড্রাগের প্লান করি।অবশ্য ও আগে থেকেই ড্রাগ করতো এইটা আমার সাজানো নয়।আর তোমাকে সব থেকে দূরে রাখতে চাইছিলাম।তাই তোমার সাথে পেচ আপ করি নি।আর যেই ছেলেটার সাথে ওইদিন কথা বলছিলে ওই ছেলেটা আস্ত একটা ছ্যাচড়া বুঝলে।এমনিতে কবিরের সাপর্টার কিন্তু তোমার সামনে কি।পার্ট টাই না নিলো।আই জাস্ট হেট দিস।’
সেহরিশের কথা শুনে উপমার মনটা শান্তি পেলো।কিছু ভেবে মুখ গোমড়া করে বলল
‘ইউসুফ ভাই থেকে এইটা একদমই আশা করি নি।’
‘নাহ ছেলেটা ভয় পেয়ে যায় সহজেই।তাই এই সব বলেছে আমার থেকে মাফ চেয়েছি আর আমিও মাফ করে দিয়েছি।’
‘ভালোবাসি আপনাকে। ‘
উপমার হঠাৎ কনফেস এ অবাক হলো।উপমার কাছে এসে উপমার ঠোঁটে কামড় দিয়ে বলল
‘তুমি আমার সর্বনাশীনি উপমা।এভাবে কনফেস করো না। হৃদয়ে চিনচিন ব্যাথা করে।আমার জন্য তুমি এক গভীর সুন্দর ব্যাথার নাম।’
‘আপনার কি সর্বনাশ করেছি বলুন তো।’
‘এইযে পাগল করে ছেড়েছো এইটা কি মারাত্মক সর্বনাশ নয়?’
উপমা সেহরিশের কথা শুনে হাসলো।আহা এমন ভালোবাসার মানুষ পাওয়াটা কি ভাগ্যের ব্যাপার নয়।
___
‘এই উপমা সাবধানে।আমার কথা শুনো না কেনো। ভয় পাও না আমাকে।’
সেহরিশের কথায় উপমা হাসতে লাগলো যেনো হাসির কোনো কথা বলেছে এইমাত্র সেহরিশ।সেহরিশের রাগান্বিত মুখে উপমা হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল
‘আপনাকে রাগলে খুবই কিউট লাগে। ‘
সেহরিশ শ্বাস ফেললো।অসহায় কন্ঠে বলল
‘এভাবে বলে কেউ বলো তো।রাগ কি করে ধরে রাখি এমন সর্বনাশীনি বউ থাকলে।’
সেহরিশ মাতাল করা হাসি হাসে সেহরিশের হাসিতে মাতাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।আজ ২ বছর হতে চলল তাদের বিয়ের।উপমা প্রেগন্যান্ট। বিয়ের আগে উপমা দেরি করে বাচ্চা নিতে চেয়েছিল কিন্তু বিয়ের পর কেনো যেনো আর মন মানলো না।সেহরিশ উপমাকে পড়ায় মনোযোগী হতে বলেছিলো কিন্তু উপমার নিজের ডিসিশন সে একটা বাচ্চা কনসিভ করবেই করবে।আর সেহরিশকে উপমার কাছে হার মানতেই হয়েছে।
আর কিছু সপ্তাহের মধ্যে আল্ট্রাসোনো করলেই দেখতে পাবে তাদের মেয়ে সন্তান নাকি ছেলে কিন্তু সেহরিশ তাতে সাফ মানা জানিয়েছে।তাদের প্রয়োজন নেই এইসবের।
উপমা আয়নাতে নিজের পেটে তাকিয়ে হাসলো।অবশ্য ততোটা ফুলে নি।
সেহরিশ এখন আবারও অফিসে যায়।তার বাবা বিজনেসের পুরো দায়িত্বই সেহরিশের হাতে দিয়ে দিয়েছে।
সেহরিশ গোসল করে বিছানা থেকে টি-শার্ট তুলে নিয়ে আয়নার কাছে এসে উপমার পিছনে দাঁড়িয়ে গায়ে দিতে লাগলো।ঠোঁট কামড়ে বলল
‘বুক ব্যাথা করে। মাথা ঘুরায় বলোতো কিসের সিম্পটম এইগুলো।’
উপমা অবাক চোখে তাকালো আয়নাতে সেহরিশের প্রতিচ্ছবির দিকে।কিছু ভেবে মুখে হাসি নিয়ে বলল
‘আমি মা হতে যাচ্ছি তাই যেমন কিছু সিম্পটম দেখা দিচ্ছে। আপনার গুলো হলো বাবা হওয়ার সিম্পটম।হিহি।’
উপমা হাসতে লাগলো।সেহরিশ উপমার হাসির দিকে তাকিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল
‘ভুল। এইটা তো ভালোবাসার সিম্পটম তাও মারাত্মক ভাবে।আমার সর্বনাশের সিম্পটম যা প্রতিদিনই লক্ষ করছি আমি।’
উপমা লজ্জাময়ীর মতো মাথা নুয়ালো।কিছুটা হাসি মুখে।তাদের দুজনের স্বর্গীয় মুহূর্ত যেনো এইটা।
সমাপ্ত,,