#সাঝের_প্রণয়ডোর
#সাদিয়া_সুলতানা_মনি
#পর্ব_০৬
সাধারণত সকালে মানুষের ঘুম ভাঙে পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে। বড্ড মিষ্টি লাগে সেই কিচিরমিচির। কিন্তু পাখির কিচিরমিচিরের পরিবর্তে যদি মানুষের কিচিরমিচির আওয়াজ পাওয়া যায় তাহলে কি সেটা আর মিষ্টি লাগে?
আশিয়ান পিটপিট করে চোখ খুলে তাকায়। চোখ ডলে ঘুমটা পুরোপুরি ছাড়ায়। শোয়া থেকে উঠে বসে হাত দিয়ে ঘাড় টাকে একটু ম্যাসাজ করে। ঘাড়টা ডানে বায়ে ঘুরালে হঠাৎই নজরে আসে বেডের একদম কিনারে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে থাকা এক রমণীর উপর। ঘুম থেকে উঠায় তার মস্তিষ্ক তখনও সচল হয়ে উঠে নি। তাই প্রথমেই মাথায় একটা প্রশ্ন আসে–
—কে এই মেয়ে?
আশিয়ান জায়গা ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে হেঁটে মেয়েটির অপর পাশে যায়। হায়া’র ফেস দেখে মনে পরে–
—আরে এতো আমার আদুরে ননীর পুতুল বউ।
আশিয়ানের মনটা খুশিতে খলবলিয়ে উঠে। সে বেডের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরে হায়া’র কাছে। সময় নিয়ে আদুরে সেই মুখটায় চোখ বুলায়। কাল দৌড়াদৌড়ি আর বিভিন্ন ঝামেলার কারণে শান্তিতে বউটাকে একটু দেখতেও পারে নি। আজ একটু সুযোগ পেলো অবশেষে। আশিয়ান খেয়াল করে হায়া’র মুখের উপর কিছু কেশ এসে তার মুখটা প্রায় অর্ধেক ঢেকে দিয়েছে। আশিয়ানের এতেও হিংসে হয়। মনে মনে বিড়বিড়িয়ে বলে–
—আমি এখনো এই তুলতুলে গাল টায় ভালো করে মনের খায়েশ মিটিয়ে একটু আদর করতে পারলাম না। এই চুল এসে কি সুন্দর আমার বউয়ের গালে নিজের জায়গা করে নিয়েছে।
আশিয়ান হাত বাড়িয়ে চুল গুলো হায়া’র কানের পেছনে গুঁজে দেয়। হ্যাঁ এখন সুন্দর ভাবে দেখা যাচ্ছে। আশিয়ান আবার হাত নিয়ে যায় হায়া’র গালের কাছে। উদ্দেশ্য একটু আদর করা তুলতুলে সেই গাল টায় । সে হায়া’র গালে হাত রাখতেই অনুভব করে গালটা বেশ গরম হয়ে আছে। হাতটা মনে হচ্ছে পুড়ে যাচ্ছে।
আশিয়ান অস্থির হয়ে হায়া’র কপালে,,গালে,, গলায় হাত রেখে চেক করে। হ্যাঁ,, যা ভেবেছিলো সে। গা কাঁপিয়ে জ্বর এসেছে হায়া’র। নিশ্চয়ই কাল এতো রাতে শাওয়ার নেওয়ার জন্যই হয়েছে। কয়েক মুহূর্তের জন্য আশিয়ানের মাথা ব্ল্যাঙ্ক হয়ে যায়। সে কি রেখে কি করবে বুঝে উঠতে পারে না।
হুট করে দরজায় কে জানি নক করে। দরজার অপর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি বলছে–
—আশু,,হায়া তোমরা কি ঘুম থেকে উঠেছ? অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে। ব্রেকফাস্ট করবে না?
আশিয়ান ব্যক্তিটির গলা শুনে বুঝতে পারে সে আর কেউ না তার মা জননী। কি বলবে সে এখনো? তার বাবা আর মামা ওরফে শ্বশুর যদি জানে তাদের আদরের দুলালির এমন গা কাঁপানো জ্বর এসেছে নিশ্চয়ই এর জন্য আশিয়ানকে দায়িত্ব করবে। আর না জানিয়েও বা কতক্ষণ থাকবে? হায়া’র শরীর যেই গরম ডাক্তার না ডাকলে বোধহয় এটি জ্বর কমানো যাবে না। উফফফফ! বিয়ে করার পর এতো টেনশন, এত ঝামেলা পোহাতে হয় জানলে আশিয়ান এত খাটাখাটুনি করে বিয়েই করতো না। ধুরু ভালো লাগে না তার।
আশিয়ান ভাবে বলেই দিবে বাসার সবাইকে হায়া’র জ্বর আসার কথা সাথে এ-ও বলবে কেন জ্বর এসেছে তার। কিন্তু আবার ভাবে একটু চেষ্টা করে দেখি কোন ট্রিটমেন্ট দিয়ে সুস্থ করাতে পারি নাকি এই ননীর পুতুলকে। তার এসব ভাবনার মাঝেই স্পর্শ আবার নক করে দরজায়।
আশিয়ান এবার নিজের গলার স্বর বাড়িয়ে বলে–
—আম্মু মাত্র উঠেছি আমরা। একটু দেরি হবে। ঘুম এখনো ছাড়েনি। তুমি চলে যাও। আমরা নিজেরা নিয়ে নিতে পারবো ব্রেকফাস্ট।
—বেশি দেরি করো না আবার।
—আচ্ছা আম্মু।
স্পর্শ চলে যায়। এদিকে আশিয়ান লেগে পরে হায়া’র জ্বর কমানোর মিশনে। প্রথমে থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে দেখে নেয় কত জ্বর আছে। ১০৩° জ্বর হায়া’র। জ্বর মাপা হয়ে গেলে আশিয়ান ওয়াশরুমে গিয়ে মগে করে পানি নিয়ে আসে। তারপর তার একটা রুমাল বের করে পানিতে চুবিয়ে সেটা হায়া’র কপালে রাখে। জলপট্টি দিতে শুরু করে। তারপর একটা বালটিতে করে পানি এনে হায়া’র মাথাটা বেডের কিনারে এনে মাথায় পানি দিতে শুরু করে।
বেশ কিছুক্ষণ মাথায় পানি দেওয়ার পর বালটি ওয়াশরুমে রেখে এসে একটা ভেজা তোয়ালে দিয়ে হায়া’র মুখ,,হাত,, পা মুছে দিতে থাকে। এভাবে দীর্ঘ এক ঘন্টা সেবা শুশ্রূষা করার পর হায়া’র জ্বর কিছুটা কমে। আশিয়ান হায়া’র কপালে আর গালে হাত রাখলে বুঝতে জ্বরের তেজটা একটু কমেছে। সে আবার থার্মোমিটার দিয়ে চেক করলে দেখে,, হায়া’র জ্বর ১০০° তে নেমেছে।
হায়া’র হুশ ফিরতে থাকে আস্তে আস্তে করে। আশিয়ান খেয়াল করে হায়া বিড়বিড়িয়ে কিছু একটা বলছে। আশিয়ান হায়া’র মুখের কাছে কানটা আনে শোনার জন্য। সে শুনতে পায়–
—পাপা,, তুমি কোথায় পাপা? পাপা আই মিস ইউ।
অসুখবিসুখ বা আমাদের যেকোন প্রয়োজনে আমরা যার কথা সর্বপ্রথম স্মরণ করি সেই ব্যক্তিটি হলো “মা”। কিন্তু হায়া এক্ষেত্রে একটু ভিন্ন। তার অসুখবিসুখ থেকে শুরু করে মন খারাপ সবটায় তার বাবাকে চাই। হায়া’র জন্মের পর থেকে জাভিয়ানের অতিরিক্ত ভালোবাসায় মেয়েটা এমন বাবা পাগল হয়ে গিয়েছে। হানিয়া কাজের জন্য মাঝেমধ্যে ঢাকার বাহিরে গেলে তখন ছোট্ট হায়া’কে জাভিয়ান খুব সহজেই সামলে নিতো। কিন্তু জাভিয়ানের ক্ষেত্রে এমনটা হলে হানিয়া নিজের মাথার চুল ছিঁড়ে ফেলার মতো অবস্থা হয়ে যেতো। মেয়েটা একটা দিনও বাবাকে ছাড়া থাকতে পারে না।
আশিয়ানের বেশ মায়া হয় হায়া’র এমন ডাকে। সে হায়া’র একটা গালে হাত রেখে আলতো হাতে চাপড় দিতে দিতে তাকে ডাকে–
—হায়া,, সোনা উঠো। অনেক সকাল হয়ে গিয়েছে। ব্রেকফাস্ট করবে না? কিছু খেয়ে ঔষধ খেয়ে আবার ঘুমিয়ে থেকো। উঠো সোনা বউ।
আশিয়ানের ডাকাডাকিতে হায়া চোখ না খুলো আর পারে না। পিটপিট করে চোখ খুলে তাকানোর পর নিজের একদম কাছে আশিয়ানকে দেখতে পেয়ে হায়া কিছুটা ভরকে যায়। অনেকটা গতকাল রাতের মতো। কিন্তু গতকাল রাতের মতো চিৎকার করে উঠে না। সহজেই নিজেকে সামলে নেয়। হায়া আশিয়ানের হাতটা ঝাড়া দিয়ে নিজের গাল থেকে সরিয়ে দিয়ে দুই হাত দিয়ে ঠেলে আশিয়ানকেও দূরে সরিয়ে দেয়। তারপর শোয়া থেকে উঠে বসে।
আশিয়ান হায়া’র এমন কাজে অল্পবিস্তর কষ্ট পায়। কিন্তু কিছু বলে না। হায়া বালিশের পাশ হাতড়ে নিজের ওরনা খুঁজে বের করে তা গায়ে জড়িয়ে নেয়। তারপর বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে দূর্বলতার কারণে তার মাথা ঘুরে যায়। ধপ করে আবার বেডে বসে পরে। আশিয়ান তড়িঘড়ি করে হায়া’র একটা বাহু ধরে অস্থির গলায় জিজ্ঞেস করে–
—কি হয়েছে বউ,? খারাপ লাগছে বেশি? চলো ফ্রেশ হয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই।
হায়া এবারও তেজ দেখিয়ে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়। তারপর তড়াক করে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটা দেয়। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারে না তার আগেই ডান হাতে প্রবল বেগে টান পরায় তাকে পেছনে ফিরতে হয়। হায়া পেছনে ফিরে দেখে আশিয়ান রাগী দৃষ্টি আর শক্ত চোয়াল নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
হায়া নিজের হাত আশিয়ানের হাত থেকে ছাড়ানোর জন্য মোচড়ামুচড়ি করতে করতে বলে–
—সকাল হতে না হতেই অসভ্যতামি শুরু করে দিয়েছেন? হাত ছাড়ুন।
আশিয়ান হায়া’র হাত তো ছাড়েই না উল্টো তার হাত টান দিয়ে নিজের বুকের উপর এনে ফেলে। এতে হায়া আরো ক্ষেপে যায়। সে তার দুই হাত দিয়ে আশিয়ানের বুকে ধাক্কা দিতে থাকে ছাড়া পাওয়ার জন্য কিন্তু আশিয়ানের শক্তি আর নিজের শরীর দূর্বল থাকার কারণে তেমন একটা সুবিধা করতে পারে না। আশিয়ান তার এমন ধাক্কাধাক্কি দেখে হায়া’র দু’টো হাত নিয়ে একহাতের মধ্যে নিয়ে আরেক হাত দিয়ে হায়া’র চোয়াল চেপে ধরে হিসহিসিয়ে বলে–
—বাড়াবাড়ি কোন কালেই আমার পছন্দের ছিলো না। তাই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি করলে খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু।
আশিয়ানের এমন কথায় হায়া একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে–
—আর কি খারাপ করতে চান আপনি আমার? যা করেছেন এর চেয়েও খারাপ কিছু হয় বুঝি? আর আপনি বুঝি করেন নি বাড়াবাড়ি? সকালবেলা সকালে ঝামেলা করতে চাইছি না। বিয়ে দিয়েছে করেছি। এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করবেন না। কাল রাতে আবেগের বশে সাড়া দিয়ে ফেলেছিলাম সেটাকে ভালোবাসা ভেবে ভুল করবেন না।
আশিয়ান নিজের মুখটা হায়া’র মুখের আরেকটু কাছে নিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে বলে–
—আমি যা ভাবার ভেবে নিয়েছি। তুমি তোমারটা ভাবো বউউউউ।
কথাটা বলে আশিয়ান হায়া’র ওষ্ঠে আলতো করে নিজের ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দেয়। কথা বলতে বলতে আশিয়ান এমন একটা কাজ করবে হায়া কল্পনাও করতে পারে নি। রাগে তার গা কিড়মিড়িয়ে উঠে। সে নিজের পা দিয়ে আশিয়ানের পায়ে জোরে একটা পাড়া মারে।
হঠাৎ করে এমন পাড়া মারায় আশিয়ান ব্যথায় নিজের হাতে থাকা হায়া’র হাত ছেড়ে দিয়ে একটু পিছিয়ে যায়। হায়া আশিয়ান থেকে ছাড়া পেয়ে হাত দিয়ে ডলে ডলে নিজের ঠোঁট মুছতে থাকে। কাল রাতে আশিয়ানের ছোঁয়ায় সে যতটা হারিয়ে গিয়েছিলো আজ তার ছিটেফোটাও নেই। বরং আশিয়ানের এই ছোট্ট ছোঁয়া তাকে আরো রাগিয়ে দেয়।
হায়া আশিয়ানের দিলে আঙুল উঁচু করে শাসিয়ে বলে–
—আমাকে যদি সেই আগের হায়া মনে করেন তাহলে বলবো আপনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আমার ধারে কাছে আসবেন তো একদম মেরে বৃন্দাবন পাঠিয়ে দিবো। অসভ্য,, মেনারলেস চারচোখা মাস্টার।
আশিয়ান হায়া’র কথায় ভয় তো দূরের কথা উল্টো পেটে হাত চেপে হা হা করে হেসে দেয়। তার হাসি যেন হায়া’র রাগের আগুনে ঘি ঢালার কাজ করে। হায়া সেখান থেকে ওয়াশরুমে যেতে যেতে বলে–
—অসহ্যকর লোক! বাবাইকে আজই বিচার দিবো তোর নামে দাঁড়া শয়তান ছেলে।
কথাটা বলে হায়া ঠাশ করে ওয়াশরুমের দরজাটা লাগিয়ে দেয়। দরজা লাগানোর আওয়াজেই আশিয়ান বুঝতে পারে হায়া ঠিক কতটা রেগে আছে। হায়া ওয়াশরুমে চলে যাওয়ার পরও আশিয়ান হাসতে থাকে। কিছুক্ষণ পর নিজের হাসি থামিয়ে আশিয়ান বিছানা গুছিয়ে নেয়। তারপর নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে বেলকনিতে চলে যায়।
বেলকনিতে এসে আশিয়ান সেখানে দাড়িয়ে কাল রাতের কথা ভাবতে থাকে।
_____________
গতকাল রাত~
আশিয়ান যখন একদম হায়া’র নেশায় ডুবে যাচ্ছিল তখনই তার কানে আসে নারী কণ্ঠের কান্নার আওয়াজ। মুহূর্তেই সে অনুভূতির জগত থেকে বাস্তবে ফিরে। হায়া’র ঘাড় থেকে মুখ উঠিয়ে দেখে হায়া কাঁদছে। আশিয়ানের এভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে এতটা কাছে আসায় হায়া কিছুক্ষণের জন্য ঘোরে চলে গিয়েছিলো। কিন্তু আশিয়ানের রচিত সেই তিক্ত অতীত হায়া’কে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই অনুভূতির জগত থেকে টেনে হিঁচড়ে বাস্তবে ফিরিয়ে আনে। মনে করিয়ে দেয় সেই বিভীষিকাময় দিনটির কথা।
এদিকে হায়া’র এমন কান্নার কারণ আশিয়ানের বুঝতে বাকি থাকে না। নিমিষেই বুকের বাম পাশে চিনচিনিয়ে ব্যথা করে উঠে তার। আশিয়ান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে হায়া’র উপর থেকে সরে আসে।
আশিয়ান সরে যেতে হায়াও লাফ মেরে উঠে বসে। হাঁটুতে মুখ গুঁজে কাঁদতে থাকে। কি করছিলো সে? এমন এক লোকরে ডাকে সাড়া দিচ্ছিলো যার কারণে তাকে ও তার পরিবারকে বিনাদোষে অপমানিত হতে হয়েছিলো সমাজের কাছে। হায়া না চাওয়া সত্বেও তাঁকে মেনে নিতে হয়েছিলো সে নিকৃষ্ট সব অপবাদ। কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই তার আরো কান্না পায় সেই সাথে নিজের প্রতি রাগও হয়।
হায়া বেড থেকে নেমে রুমের দরজা খুলে গটগটিয়ে হাটা শুরু করে। আশিয়ান হতভম্ব হয়ে তার পেছন পেছন দৌড়াতে থাকে। আশিয়ান দেখে হায়া তাদের বাসার ছাঁদে যাচ্ছে। আশিয়ান ঘাবড়ে যায়। হায়া এই বিয়ে আর তাঁকে মেনে নিতে না পেরে সুইসাইড করতে যাচ্ছে না তো? প্রশ্নটা মনে হতেই ভয় জেঁকে ধরে তাকে।
আশিয়ান নিজের হাঁটার গতি বাড়িয়ে দেয় কিন্তু ততক্ষণে হায়া ছাঁদে পৌছে গিয়েছে। আশিয়ানের এই ভাবনা টাও ভুল প্রমাণিত হয় যখন আশিয়ান দেখতে পায় হায়া সুইসাইড করতে নয় বরং নিজের কষ্ট বিলাস করতে ছাঁদে এসেছে৷ হায়া ছাঁদে রাখা দোলনায় বসে পড়ে তারপর আপনমনে কাঁদতে থাকে। আশিয়ান তার কাছে যেতে নিয়েও যায় না। কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে অন্ধকারে মধ্যে দাঁড়ায় যাতে হায়া তাঁকে না দেখতে পায়।
বেশ কিছুক্ষণ পর হায়া কেঁদে কেটে নিজেকে শান্ত করে। তারপর বসা থেকে উঠে দাড়ায়। আশিয়ান যখন দেখে হায়া বসা থেকে দাঁড়িয়েছে তখন সে বুঝতে পারে হায়া এখন রুমে ফিরবে। সে ছাঁদের দরজার পেছনে লুকিয়ে পরে। হায়া ছাঁদ থেকে রুমে এসে আশিয়ানকে দেখতে পায় না। সে আশিয়ানের কথা আর না ভেবে নিজের মতো শুয়ে পরে।
অতিরিক্ত কান্না কাটি করায় তার মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়া এত রাত করে শাওয়ার নেওয়ায় ঠান্ডাও লেগে গিয়েছে। শোয়ার সাথে সাথে হায়া ঘুমিয়ে পরে। আশিয়ান রুমে ঢুকে ১৫/২০ মিনিট পর। এসে সেও চুপচাপ অপর সাইডে শুয়ে পরে হায়া’র দিকে মুখ করে। মাথার নিচে এক হাত রেখে দেখতে থাকে ঘুমন্ত হায়া’কে। হায়া’কে দেখতে দেখতে একসময় সেও ঘুমিয়ে পরে।
শব্দসংখ্যা~১৭৩৫
~চলবে?
[ভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। হ্যাপি রিডিং মাই লাভিং রিডার্স 🤍🤍]