সাঝের প্রণয়ডোর পর্ব-০৮

0
1

#সাঝের_প্রণয়ডোর
#সাদিয়া_সুলতানা_মনি
#পর্ব_০৮

হায়া আর আশিয়ানের বিয়ের আজ এক সপ্তাহ পূর্ণ হয়েছে। সবকিছু আগের মতো নরমাল হয়ে গেলেও নরমাল হচ্ছে না আশিয়ান আর হায়া’র সম্পর্কটা। আশিয়ান তার সর্বোচ্চ এফোর্ট দিচ্ছে সম্পর্কটা স্বাভাবিক করার জন্য। কিন্তু হায়া নিজেকে একটা বিন্দুতে আটকে নিয়েছে। আশিয়ান যেটা বলে সে করে তার উল্টোটা। আশিয়ান রেগে একটা ধমক দিলে হায়া তিনটে ধমক দিয়ে বসিয়ে রাখে তাকে।

এই যেমন আজ সকালের কথা। হায়া ভার্সিটির জন্য রেডি হচ্ছিল তখন আশিয়ান তাঁকে আদুরে গলায় বলে–

—বউজান টাই’টা একটু বেঁধে দিবে?

হায়া তো বেঁধে দিলোই না টাই উপরন্তু হায়া’র জবাব শুনে আশিয়ানের কলিজা ছ্যাত করে উঠলো। হায়া আশিয়ানকে বলে–

—কেন আপনার হাত কি শকুনে নিয়ে গিয়েছে? তাহলে শকুনের কাছ থেকে হাত ফিরিয়ে এনে তারপর নিজেই বেঁধে নেন। নিজের কাজ আমায় দিয়ে করিয়ে নেওয়ার স্বভাব এখনো গেলো না আপনার?

স্বামী কি বউয়ের কাছে আবদার করতে পারে না তার টাই বেঁধে দেওয়ার জন্য? এর জন্য হাত শকুনের কাছে বর্গা দেওয়া জরুরি? নিমিষেই আশিয়ানের ফুরফুরে মেজাজটা নিভে যায়। সেখানে ঠায় নেয় মলিনতা। হায়া হিজাবে লাস্টের পিনটা লাগাতে লাগাতে আশিয়ানের মলিন মুখটা সন্তপর্ণে দেখে নেয়। আশিয়ানের জন্য তার খারাপ লেগেও লাগে না। সে নিজের সাইড ব্যাগটা নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যেতে নিতে তখন আশিয়ান তাঁকে থামিয়ে দেয়। গম্ভীর গলায় আদেশ স্বরূপ বলে–

—একা একা যাবে না। আজ টিএসসির ঐদিকে আন্দোলন আছে। ঝামেলা হওয়ার চান্স শতভাগ। আমার সাথে যাবে,, তোমার ক্লাস শেষ হয়ে গেলে আমার গাড়িতে করে ড্রাইভার তোমায় নিয়ে আসবে। নিচে গিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করো।

হায়া বুঝি আশিয়ানের কথা শোনার পাবলিক। সে কোন কথা না বলে চুপচাপ রুম থেকে বের হয়ে যায়। আশিয়ান ভাবে সে হয়ত তার কথা মেনে নিয়েছে। সে নিশ্চিন্তে নিজের টাই বেঁধে ওয়ালেট আর ফোনটা প্যান্টের পকেটে ভরে নেয়। তারপর ল্যাপটপ ব্যাগটা নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে নিচে নেমে আসে।

নিচে এসে হায়া’কে না দেখতে পেয়ে আশিয়ানের কপালে ভাজ পরে। কোথায় গেলো মেয়েটা আবার? ড্রয়িংরুমে তখন তাদের হেল্পিং হ্যান্ড জরিনা খালা ঝাড়পোঁছ করছিলো। আশিয়ান জরিনা খালাকে জিজ্ঞেস করে–

—খালা হায়া কি কিচেনে গিয়েছে?

জরিনা খালা তার কাজ বন্ধ করে দিয়ে আশিয়ানকে বলে–

—হায়া মামুনি তো ভারছিডির জইন্য বাইরাইয়া গেছে আশিয়ান বাবা।

—কিইই?

—হ,, আমারে কইয়া গেছে যাওয়ার আগে।

আশিয়ানের রাগ তো সপ্তম আকাশে। মেয়েটা এই এক সপ্তাহে একটা কথা যদি শুনতো। আশিয়ানের আজ প্রচন্ড রাগ হচ্ছে হায়া’র উপর। সে রেগেমেগে রওনা হয় ভার্সিটি উদ্দেশ্য,, আজ ক্লাসে দেখে নিবে সে হায়া’কে।

________________

ভার্সিটিতে~~

হায়া রিকশা থেকে নেমে ভার্সিটির গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে তার বেস্টফ্রেন্ড মেহরিমার জন্য। দু’টোতে যেনো দুই দেহ এক প্রাণ। ক্লাস শুরু হওয়ার বিশ মিনিট আগে মেহরিমা ভার্সিটিতে আসে।

হায়া তাঁকে দেখে দাত কেলিয়ে বলে–

—ভাবী সাহেবা আজ এত লেট হলো কেন? রাতে কি ভাইয়ের সাথে কথা বলতে বলতে দেরি করে ঘুমিয়েছিলেন যার কারণে আজ এত লেট হলো?

—হায়াআআআ……

মেহরিমা হায়া’র কথা শুনে লজ্জায় পরে যায়। কথাটা অবশ্য হায়া মিথ্যে বলেনি। আসলেই কাল রাতে তারা রাত তিনটা পর্যন্ত কথা বলেছিলো। লোকটার সাথে কথা বলতে গেলে মেহরিমার সময়ের দিকে কোন খেয়াল থাকে না। তেমন কোন কথা বলে না তারা,, টুকটাক নিজেদের হালচাল জিজ্ঞেস করে চুপ হয়ে যায়। এরপর ঘন্টার পর ঘন্টা কানে ফোন লাগিয়ে চুপ করে থাকে। লোকটা নাকি তার নিঃশ্বাসের আওয়াজেও স্বস্তি পায়।

হায়া আর মেহরিমা কথা বলতে বলতে ক্লাসে চলে যায়। প্রথম দু’টো ক্লাস শেষ করার পর লাঞ্চের জন্য ব্রেক দেওয়া হয়। হায়া আর মেহরিমা ক্লাস থেকে বের হবে তখনই একজন পিয়ন এসে হায়া’কে বলে–

—আশিয়ান স্যার আপনাকে উনার ক্যাবিনে যেতে বলেছেন।

আশিয়ানের তাকে এমন তলব করে ডাকার কারণ বুঝতে বাকি থাকে না হায়া’র। সে পিয়ন কে বিদায় করে নিজে মেহরিমার হাত ধরে হাঁটা দেয় ক্যান্টিনের দিকে। তাকে ক্যান্টিনের দিকে যেতে দেখে মেহরিমা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে–

—কি রে? আশিয়ান স্যার যে তোকে যেতো বললো তার ক্যাবিনে সেখানে না গিয়ে ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছিস কেন?

—তার ক্যাবিনে আমার কি কাজ? আজাইরা পিরিতের আলাপ পারতে ডেকেছেন আমি সিউর। এর চেয়ে ভালো আমার পেটের মধ্যে রেস করতে থাকা ইঁদুর গুলোকে শান্ত করা। চল কিছু খেয়ে নেই।

মেহরিমা হায়া’কে আশিয়ানের ক্যাবিনে যাওয়ার বিষয়ে আরো কিছু বলতে চেয়েছিলো, কিন্তু হায়া তাকে থামিয়ে দেয়। হায়া মেহরিমাকে টেবিলে বসিয়ে কাউন্টার থেকে খাবার কিনে আনতে যায় তখনই তার দেখা হয় রাহা’র সাথে। রাহাতের মেয়ে রাহনুমা চৌধুরী রাহা। হায়া আর সে ছয়মাসের ছোট বড়। তাদের মধ্যে ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক না হলেও রাহা কেমন যেনো হায়া’র সাথে আলগা ভাব করতে চায় দেখা হলেই। এমনিতে কখনো ফোন বা টেক্সট করে খোঁজ খবর নেয় না।

হায়া রাহা’কে দেখে তার কাছে এগিয়ে গিয়ে বলে–

—আরে রাহা যে! কেমন আছো?

—আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি?

—আলহামদুলিল্লাহ। অনেকদিন পর তোমায় ভার্সিটিতে দেখলাম। আসো না রেগুলার?

—আসলে একটু ফিভার হয়েছিলো তাই কয়েকদিন মিস গিয়েছে।

কথা বলতে বলতে হায়া সৌজন্যতার খাতিরে রাহা’কে তাদের সাথে লাঞ্চ করার অফার করলে রাহা একবারেই রাজি হয়ে যায়। হায়া রাহা’কে নিয়ে মেহরিমার কাছে এসে পরে। মেহরিমা’কে দেখে রাহা’র কপাল কুঁচকে যায়। তার মুখ চোখ দেখে যে কেউ বলে দিতে পারবে সে মেহরিমাকে দেখে খুশি নয়। কিন্তু মেহরিমা তার সাথে হেঁসে হেঁসেই কথা বলে।

তারা তিনজন খেতে খেতে কথা বলছিলো তখনই মেহরিমা’র ফোন বেজে উঠে। মেহরিমা তার ফোনটা ব্যাগ থেকে বের করে টেবিলের উপর রেখেছিলো,, যার কারণে ফোন বেজে উঠতেই তিনজন রমণীর দৃষ্টি চলে যায় সেখানে। জাহান ফোন করেছে মেহরিমাকে।

হায়া ভাইয়ের কল দেখে মিটমিটিয়ে হেঁসে ভ্রু নাচিয়ে বলে–

—আপনার প্রিয়তমের কল এসে পরেছে। যান চিপায় গিয়ে একটু উম্মাহ আম্মাহ দিয়ে আসুন।

মেহরিমা ব্যাপক লজ্জা পেয়ে যায় হায়া’র এমন কথায়। মেয়েটা বড্ড লাজুক প্রকৃতির, আর তার এই স্বভাবটার সদ্ব্যবহার করে এ-ই দুই ভাই বোন। মেহরিমা হায়া’কে চোখ গরম করে শাসিয়ে সেখান থেকে উঠে চলে যায় কথা বলতে। তাদের এই খুনসুটির সবটাই নিরব ভাবে প্রত্যক্ষ পারছিলো রাহা। তার চোখমুখ অস্বাভাবিক রকমের শান্ত ও স্বাভাবিক।

মেহরিমা উঠে যেতেই রাহা হায়া’কে মেহরিমার বিরুদ্ধে উস্কে দিতে থাকে। সে বলে–

—হায়া,, তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে?

রাহার কথা শুনে হায়া’র কপালে কয়েকটা ভাজ পরে। সে ভ্রু কুচকিয়ে জিজ্ঞেস করে –

—কেনো মাথা খারাপের কি কাজ করলাম?

—তুমি এমন লো ক্লাস মেয়ের সাথে চলছো? ওর ক্লাস আর আমাদের ক্লাস কি এক হলো? কাপড়চোপড় দেখে তো মনে কোথাকার কোন বস্তি থেকে উঠে এসেছে,, তার উপর শুনেছি এতিম নাকি মেয়েটা। শুনো হায়া এসব মেয়ে প্রচন্ড সেয়ানা হয়,, এরা নিজেদের মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে নিজেদের ট্র্যাপে ফেলে তারপর ঝোপ বুঝে কোপ মারে। তোমায় সর্তক করে দিচ্ছি মেয়েটার সাথে যত কম পারবে মিশবে। আরেকটা কথা ওর ফোনে জাহান ভাইয়া ফোন দিচ্ছিলো কেন?

হায়া চট করে মাথা গরম করার মেয়ে না। মায়ের মতো শান্ত মেজাজে অধিকারী। কিন্তু এরা মা-মেয়ে নিজেদের প্রিয়তমের কাছেই অশান্ত ও অস্থির হয়ে থাকে। হায়া কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে রাহা’র সম্পূর্ণ কথাগুলো শুনে। একটা টু শব্দ পর্যন্ত করে না। বেস্টফ্রেন্ড সম্পর্কে এত বাজে বাজে কথা বলায় ভেতরে তার জোয়ালামুখীর মতো রাগের উদগ্রীব হলেও তার চেহারা দেখে ভেতরের অবস্থা বুঝা মুশকিল।

হায়া কফির ওয়ান টাইম কাপ থেকে মুখ তুলে রাহা’র দিকে তাকালে দেখতে পায়, রাহা’র পেছনে মেহরিমা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে দিয়ে অলরেডি বর্ষণ শুরু হয়ে গিয়েছে। আসলে নেটওয়ার্ক খারাপ থাকায় মেহরিমা কথা বলতে পারেনি আর তাদের ক্লাসের সময় হয়ে যাওয়ায় জাহান শুধু ‘সে খেয়েছে কিনা’ জিজ্ঞেস করেই কল কেটে দেয়। যার কারণে রাহার প্রায় সব কথাই সে শুনতে পায়।

হায়া রাহা’র দিকে তাকিয়ে মুখে একটা হাসি ফুটিয়ে বলে–

—কারণ ভাই আর মেহু রিলেশনে আছে। আর আমাদের ইয়ার ফাইনাল এক্সামের পর ওদের দুইজনের বিয়ে খেতে চলেছো।

—কিহহহহ?

—হ্যাঁ। জানো মেয়েটা এত বড় মিচকা শয়তান ভেতরে ভেতরে আমার ভাইকে ভালোবেসে গুমরে মরে আর আমায় একটু বলেওনি। এই মেয়ে নাকি নিজেকে আমার বেস্টফ্রেন্ড দাবী করে। কতবড় সেয়ানা বুঝতে পেরেছো? কেন জানায়নি জানো?

রাহা না-বোধক মাথা নাড়ায়। হায়া হেয়ালি করে বলে–

— ওহ্হ হো তুমি জানবে কি করে! আমিই বলছি। বেয়াদবটা তোমার মতো এমন চিপ ধারণা রাখত নিজের প্রতি। নিজেকে বামন আর ভাইকে চাঁদ মনে করত। কথায় আছে না “বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়া ” আমি কেমনে কেমনে জানতে পেরে গেলাম। প্রচন্ড রেগে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম ওকে আমার ভাবী বানিয়ে সিরিয়ালের জল্লাদ ননদের মতো কুট কাঁচালি করে ওকে ভাইয়ের কাছে মার খাওয়াবো।কিন্তু কপাল দেখো আমার (কথাটা ভীষণ আফসোস নিয়ে বলে হায়া) ওর বিয়ে হওয়ার আগেই আমি শ্বশুর বাড়ি চলে গেলাম। ওকে মিথ্যা কথা বলে ভাইয়ের কাছে মার খাওয়ানো হলো না আমার। কিন্তু ব্যাপার না। এটারও একটা ব্যাকআপ প্ল্যান ভেবে রেখেছি আমি। শুনবে কি?

রাহা উল্লুকের মতো মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়। হায়া একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলে –

—ওর মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে দিয়ে এর প্রতিশোধ নিবো আমি। ব্যাপার টা জোস না?

রাহা এবারও হায়া’র কথায় নিজের অজান্তেই সম্মতি দেয়। হায়া নিজের ব্যাগ নিয়ে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায়। যাওয়ার আগে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলে–

—মেন্টালিটি চেঞ্জ করে কথা বলতে পারলে আমার সাথে কথা কথা বলতে আসবে নাহলে বলার দরকার নেই। আমি মেহুকে যতটা চিনেছি এই দুই বছরে ততটা ও নিজের সম্পর্কে নিজেও জানে না। তাই বলছি আমার ভাইয়ের হবু বউ ওরফে আমার বেস্টফ্রেন্ড সম্পর্কে কিছু বলার আগে ভেবে চিন্তে বলবে। আসছি,, আল্লাহ হাফেজ।

কথাটা বলে হায়া মেহরিমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যায়। রাহা শুনতে পায় হায়া বলছে–

—তোর চোখের পানি বেশি হয়ে গিয়েছে না? চল তোরে দুটো ধমক খাওয়াবো আজ ভাইয়ের থেকে। যার তার কথায় চোখের ট্যাঙ্কি খুলে দেয় বেয়াদব একটা।

এদিকে রাহা হায়া’র সব কথা বুঝতে পারে একটু দেরিতে। যখন সবটা বুঝতে পারে তখন রাগে ফেটে পরে। সে এতটাই রেগে যায় যে তারা যেই টেবিলে বসেছিলো সেটা উল্টে ফেলে দেয়। ক্যান্টিনে থাকা গুটিকয়েক স্টুডেন্টরা তার দিকে অবাক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে।

_________________

আশিয়ানের আজ ভার্সিটি থেকে ফিরতে বেশ লেট হয়ে যায়। আসলে সে ক্লাস শেষ করে তার বাবার অফিসে গিয়েছিলো। মাঝে মধ্যে অফিসে গিয়ে বাবার কাজে সাহায্য করে।

আশিয়ান টাইয়ের নট ঢিলে করতে করতে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠছিলো তখনই তার মা তাকে ডেকে উঠে–

—আশু, হায়া আসেনি তোর সাথে?

আশিয়ান পেছন ফিরে বলে–

—আম্মু আমি তো অফিস থেকে ফিরছি। আর হায়া’র ক্লাস শেষ সেই বিকেলে। আমার সাথে ফিরবে কিভাবে ও? ওকে তো আমি গাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।

—ও তো বাসায় আসেনি। মনে হয় ও বাড়িতে চলে গিয়েছে।

কথাটা শুনে আশিয়ান রেগে যায়। মানে কি? বাপের বাড়ি যাবে ভালো কথা তাই বলে শ্বশুর বাড়ির কাউকে জানিয়ে পর্যন্ত যাবে না? সে তার মা’কে বলে–

—তুমি ফোন দিয়ে মাম্মামকে বলো হায়া যেন রেডি হয়ে থাকে। আমি ফ্রেশ হয়ে এসে ওকে নিয়ে আসবো।

—নিয়ে কেন আসবি? থাকুক কয়েকটা দিন।

—না। তুমি না করতে পারলে আমায় বলো আমি মাম্মামকে ফোন দিচ্ছি।

—আজব ব্যাপার স্যাপার তোদের। দু’জনে সারাদিন লেগে থাকবি একে অপরের সাথে আবার না দেখে একটা দিনও থাকতে পারবি না। যা তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমি দিচ্ছি ফোন।

মায়ের কথা শুনে আশিয়ান রুমে চলে যায়। হাতের ব্যাগটা ঢিল মেরে বেডে ফেলে রাগে গজগজ করতে করতে শার্ট খুলতে থাকে। তার জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় শাওয়ার নিতে।

আশিয়ান শাওয়ার নিয়ে মাত্রই বের হয়েছে তখনই হন্তদন্ত হয়ে তার রুমে আসে তার মা। অস্থির হয়ে বলে–

—আশু, হায়া তো ও বাড়িতে যায় নি রে।

—কি বলছো মা?

—হ্যাঁ তোর মাম্মাম তো তাই বললো আমাকে। মেয়েটা তাহলে কই গিয়েছে আশু? কত রাত হয়ে গেলো। যা দিন কাল পরেছে, ভয়ে আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।

আশিয়ান মায়ের কথা শুনে ঘড়ির দিকে তাকালে দেখতে পায় রাত নয়টা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি আছে। এতরাত হয়ে গেলো কই গেলো তার পুতুলবউ?

শব্দসংখ্যা~১৭৬২
চলবে?