সাতরঙা প্রজাপতি পর্ব-১১

0
382

#সাতরঙা প্রজাপতি
লেখনীতে: #মাশফিত্রা_মিমুই
||পর্ব:১১||

সকাল পেরিয়ে দুপুর। দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়ে গেছে। এদিকে শোভনের জ্বরও কমে এসেছে প্রায়। রাউফুন খাঁনের কথামতো তখনি শোভনের মাথায় পানি ঢেলেছে জ্যোতি।জোর করে অল্প কিছু খাবার খাইয়ে ওষুধ খাইয়ে দিয়েছে তাতেই জ্বর কমে গেছে।কপালে হাত রেখে শুয়ে আছে শোভন।

জ্যোতি স্বামীর উদ্দেশ্যে বললো,”কড়া করে চা বানিয়ে আনবো? খেলে ভালো লাগবে শরীরটা।”

“দরকার নেই।”

মন খারাপ করে বসে পড়ল জ্যোতি। কপাল থেকে হাত সরিয়ে চোখ মেলে স্ত্রীর দিকে তাকালো শোভন। প্রশ্ন করল,”চা খাবো না বলেছি বলেও মন খারাপ হয়েছে তোমার?”

“এটা কী মন খারাপ করার মতো কোনো কারণ?”

“তাহলে মুখ এমন করে রেখেছো কেন?”

“এমনি।”

তার বিপরীতে কিছু বললো না শোভন। খানিকক্ষণ বাদে জ্যোতি বললো,”কাল যদি আপনাকে ভেজার জন্য জোর না করতাম তাহলে হয়তো আজ এমনটা হতো না। আমার জন্যই আপনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন।”

স্ত্রীর কথায় দীর্ঘশ্বাস ফেললো শোভন। অনেক কষ্টে শোয়া থেকে উঠে বসলো।কিছুটা সময় নিয়ে বললো,
“তুমি কী জন্ম থেকেই এমন? নাকি বিয়ের হাওয়া গায়ে লেগে এমন হয়ে গেছো?”

“বিয়ের আবার হাওয়াও আছে? কেমন দেখতে সেটা?”

আশ্চর্য হলো শোভন। সিদ্ধান্ত নিলো এই মেয়ের সঙ্গে এই মুহূর্তে সে কোনো কথাই বলবে না। স্বামীর নিকট হতে কোনো উত্তর না পেয়ে পূর্বের ন্যায় হতাশ মুখে বসে রইলো জ্যোতি। মোবাইলের রিংটোন বাজতেই বসা থেকে উঠে মোবাইলের কাছে চলে গেলো। কথা বলবে না ভেবেও বাধ্য হয়েই শোভন প্রশ্ন করল,”কে কল দিয়েছে?”

“মা।”

“ওহ‌।”

মোবাইল নিয়ে বারান্দায় চলে এলো জ্যোতি। কল রিসিভ করে সালাম দিলো। অপরপাশ থেকে সালামের জবাব নিয়ে রাউফুন খাঁন প্রশ্ন করলেন,
“শোভনের জ্বর সেরেছে বউমা?”

“পুরোপুরি সারেনি বাবা। তবে এখন উনি ভালোই আছেন।”

“ওহ এটা জানার জন্যই ফোন করেছিলাম। রাতেও কিন্তু জ্বরের ওষুধ খাইয়ে দিও ওকে।”

“আচ্ছা। আপনার ছেলের সঙ্গে কথা বলবেন বাবা? মোবাইল দিবো উনার কাছে?”

অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন রাউফুন খাঁন। আমতা আমতা করে বললেন,”না বউমা। রাখি তাহলে। শুনো আমি যে কল দিয়েছিলাম তা আবার শোভনকে বলো না।”

সঙ্গে সঙ্গে কল কেটে দিলেন রাউফুন খাঁন। জ্যোতি কিছুটা অবাক হলো। খাঁন বাড়ির সবার সঙ্গে সবার সম্পর্ক গুলো অনেক সুন্দর এবং মজবুত থাকলেও শোভনের সঙ্গে আনোয়ারা বেগম বাদে বাকি সবার সম্পর্ক কেমন যেনো নড়বড়ে। কিন্তু কেন এমন? প্রশ্নের উত্তরটি খুঁজে পায় না জ্যোতি। কাউকে জিজ্ঞেস করতেও ভয় লাগে, যদি কেউ রাগ করে? ঘরে এলো জ্যোতি। শোভন শুয়ে আছে।

দ্বিধান্বিত কণ্ঠে জ্যোতি শোভনের উদ্দেশ্যে বললো,
“একটা প্রশ্ন করবো আপনাকে?”

“করো।”

“আপনার বাবার সঙ্গে কী আপনি কথা বলেন না? কিছু হয়েছে আপনাদের মধ্যে?”

ভূত দেখার মতো চমকে উঠল শোভন। শোভনের এমন চাহনিতে ভেতরে ভয় কাজ করা শুরু করে দিলো জ্যোতির। শুকনো ঢোক গিলে বললো,”না মানে এমনিই জিজ্ঞেস করেছি।কখনো কথা বলতে দেখিনি তো।”

শোভন উত্তর দিলো না। জ্যোতি আবারো বললো,
“বাবা-মায়ের মনে কখনো কষ্ট দিতে নেই। যদি কোনো ঝামেলা হয়ে থাকে তাহলে মিটিয়ে নেওয়া উচিত।”

শোভন শান্ত কণ্ঠে শুধালো,”দুপুরে খেয়েছিলে?”

দুদিকে মাথা নাড়ালো জ্যোতি।শোভন বললো,”আমি কী ছোটো বাচ্চা যে আমার কাছে সারাদিন বসে থাকতে হবে? নিজের খাওয়া দাওয়া সব বিসর্জন দিতে হবে?”

“তার থেকে কম কিসের?”

মুচকি হাসলো শোভন। বললো,”সন্ধ্যা নামছে। গোসলও তো করোনি মনে হচ্ছে। যাও গোসল করে এসে খেয়ে নাও নইলে নিজেরও শরীর খারাপ হবে।”

জ্যোতি মাথা নাড়িয়ে সেখান থেকে প্রস্থান করল। হুট করে শোভনের এমন জ্বর হওয়ায় চিন্তায় পড়ে গেছিল জ্যোতি। যার কারণে নাওয়া খাওয়া ভুলে বসে ছিলো স্বামীর শিয়রে। বাথরুমে ঢুকতে গিয়েও ফিরে এলো জ্যোতি। আবারো বললো,”আরেকটা প্রশ্ন ছিলো।”

“কী?”

বলতে গিয়েও কিছু একটা ভেবে থেমে গেলো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,”না কিছু না।” জিজ্ঞেস করেও লাভ নেই, শোভনের থেকে সঠিক কোনো উত্তর যে পাবে না তা জ্যোতি বুঝে গেছে। তাই মনের কথা মনেই চেপে রেখে গোসল করতে চলে গেলো। জ্যোতির অসম্পূর্ণ কথাতেও যেনো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই শোভনের। নেই কোনো আগ্ৰহ, সে তো তার মতোই বসে আছে দেওয়ালের দিকে দৃষ্টি স্থির করে। কিছু একটা ভেবে বিছানা ছেড়ে উঠে গেলো শোভন। চার্জ থেকে মোবাইল খুলে নিয়ে আবারো বিছানায় এলো।

গোসল শেষে ভেজা কাপড় বারান্দায় মেলে দিয়ে রান্নাঘরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো জ্যোতি। পেছন থেকে শোভন ডেকে বললো,”যাচ্ছো কোথায়?”

“রান্নাঘরে।”

“কেন?”

“কেন আবার কী? রান্না করতে হবে না? রাতে খাবো কী?”

“এখন আর রান্নার প্রয়োজন নেই এদিকে এসো।”

ভ্রু জোড়া কুঁচকে নিলো জ্যোতি। বললো,”বললেই হলো?আপনার জ্বর এখনো পুরোপুরি সারেনি। রাতে খাবার খেয়ে ওষুধ খেতে হবে।”

“তোমায় কে বললো আমি রাতে না খেয়ে থাকার চিন্তা ভাবনা করেছি? আমি তো শুধু তোমার কষ্টটা কমিয়ে দিলাম।”

“কীভাবে?”

“অনলাইনে খাবার অর্ডার দিয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে তাই রান্নাঘরে যেতে নিষেধ করেছি।”

“টাকা থাকলে মানুষের খেয়ে দেয়ে আর কাজ থাকে না। কীভাবে অপচয় করবে সেই চিন্তায় মশগুল থাকে। ধুম করে অনলাইনে খাবার অর্ডার করে দিলেন? কে জানে তারা ঠিক ভাবে সবকিছু পরিষ্কার করে রান্নাবান্না করে কিনা।”

“সেদিন এসব ভাবনা কোথায় ছিলো? আসার পর তো ঠিকই বাইরের খাবার খেলে।”

“সেদিন তো রান্নার মতো ঘরে কিছুই ছিলো না তাই তো বাধ্য হয়ে ওসব খেয়েছিলাম।”

“আজকেও মনে মনে ভাবো ঘরে কিছু নেই।”

শোভনের সঙ্গে যে এই মুহূর্তে সে কথায় পারবে না তা বুঝে গেলো। চুপচাপ বিছানার একপাশে এসে বসলো।শোভন বিছানা ছেড়ে আবারো উঠল।জ্যোতি শুধাল,”এ মা উঠছেন কেন?”

“তোমায় বলবো কেন?”

“তো কাকে বলবেন?”

“কাউকে বলবো না।”

শোভন হেঁটে আলমারির কাছে চলে গেলো।পোশাক নিয়ে বাথরুমে ঢুকলো। জ্যোতি বুঝতে পারলো সে এখন গোসল করতে গেছে।

কিছুক্ষণ বাদে কলিং বেল বাজার শব্দ পাওয়া গেলো। জ্যোতি যেতে চাইলো কিন্তু জ্যোতিকে আটকে নিজেই দরজা খুলতে চলে গেলো শোভন। ডেলিভারি বয় এসেছে খাবার নিয়ে। খাবারের প্যাকেট নিয়ে বিল পেমেন্ট করে দরজা আটকে দিলো শোভন। টেবিলে খাবার রাখলো। জ্যোতি এসে বললো,”বসুন আপনি। আমি বাড়ছি।”

শোভন চুপ করে চেয়ার টেনে বসলো। দুটো প্লেটে খাবার বেড়ে একটা প্লেট শোভনের দিকে এগিয়ে দিলো জ্যোতি। মজা করে বললো,”খেতে পারবেন নাকি তখনকার মতো খাইয়ে দিতে হবে?”

শোভন মাথা তুলে জ্যোতির দিকে তাকালো। থমথমে গলায় জবাব দিলো,”তোমার ইচ্ছে হলে খাইয়ে দিতেই পারো। তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই।”

অপ্রস্তুত হয়ে গেলো জ্যোতি। মুহুর্তেই লজ্জা গ্ৰাস করল তাকে।দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে নিরবে খেতে লাগলো। জ্যোতির এমন মুখভঙ্গিতে মুচকি হাসলো শোভন। খাওয়া শেষে ঘরে এলো। বিছানায় শুয়ে রইলো শোভন। জ্যোতি কাজ শেষ করে ঘরে এলো।
________

অসুস্থতার কারণে একদিন অফিস বন্ধ গিয়েছে শোভনের। আজ তৈরি হয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হলো।অফিসে প্রবেশ করতেই আজ সবাইকে কিছুটা আনন্দিত মনে হলো। সবার হাতে একটা ইনভাইটেশন কার্ড।

তনিমা শোভনকে ডেকে পাঠালো। শোভন ভেতরে প্রবেশ করতেই একই ধরনের একটি ইনভাইটেশন কার্ড তনিমা এগিয়ে দিলো তার দিকে। বললো, “আগামীকাল আমার জন্মদিন। সেই উপলক্ষ্যে আমার বাবা-মা একটি পার্টির আয়োজন করেছেন। আমিও আর তাদের মুখের উপর না করতে পারলাম না।”

কার্ডটি গ্ৰহণ করল শোভন। তনিমা পুনরায় বললো,
“কাল সন্ধ্যায় পার্টির আয়োজন করা হয়েছে। আশা রাখছি সবার মতো আপনিও উপস্থিত হবেন সেখানে।”

“জ্বি চেষ্টা করবো।”

“উহু চেষ্টা করলে তো হবে না মি.শোভন। আপনার উপস্থিতি যে থাকতেই হবে ওখানে। আমি অপেক্ষা করবো।”

“জ্বি ম্যাম।”

স্থানটি ত্যাগ করার জন্য পেছন ঘুরে পা বাড়ালো শোভন। পেছন থেকে তনিমা বললো,”ও হ্যাঁ একা একা এলে কিন্তু হবে না। পুরো পরিবার সঙ্গে নিয়ে কিন্তু আসবেন।”

“পুরো পরিবার কেন?”

অপ্রস্তুত হয়ে গেলো তনিমা। আমতা আমতা করে বললো,”সাত মাস হলো জয়েন করেছি অফিসে অথচ আপনাদের সবার সঙ্গে তো অত ভালো একটা সম্পর্কই গড়ে উঠলো না আমার। তাই ভাবলাম এই পার্টির মাধ্যমে যদি চেনা জানা আরো গভীর হয়।পরিবারসহ এলে খুশি হবো। বাকিদেরও কিন্তু এ কথাই বলেছি।”

“ওহ। আচ্ছা নিয়ে আসবো।”

খুশি হলো তনিমা। শোভন সেখান থেকে চলে গেলো। আজ হঠাৎ করেই খুব মন খারাপ হলো জ্যোতির। ইচ্ছে করছে কান্না করতে। অনেকদিন হলো মা’কে দেখে না সে। এইতো কিছুক্ষণ আগেই ভাবীর নাম্বারে কল দিয়েছিল। বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেছে, মায়ের সঙ্গেও কথা বলতে চেয়েছিল কিন্তু জায়েদা খাতুনের অবস্থা আগের থেকেও করুন। আগে যা একটু কথা বলতে পারতেন এখন যেনো তাও পারেন না। ভিডিও কলে যে মা’কে একটু দেখবে তার জো নেই। সম্পার কাছে বাটন ফোন। শ্বশুর বাড়িতে থাকলে এতদিনে হয়তো বেশ কয়েকবার মা’কে দেখে আসতে পারতো, কিন্তু এখন! এখন তো সে চেয়েও তা পারছে না। গালে হাত দিয়ে মুখখানা ভার করে বসে রইলো জ্যোতি।

রাতে শোভন বাড়ি ফিরলো। স্ত্রীর মুখায়ব দেখে বুঝতে পারলো কিছু একটা হয়েছে। হাতমুখ ধুয়ে বিছানায় এসে বসলো। শুধালো,”কী হয়েছে তোমার?”

নিরব রইলো জ্যোতি।শোভন আর ঘাটলো না স্ত্রীকে। থেমে গেলো সঙ্গে সঙ্গে। কয়েক মিনিট বাদে জ্যোতি নম্র স্বরে বললো,”আমার না মা’কে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। নিয়ে যাবেন আমায় মায়ের কাছে? একবার দেখেই না হয় চলে আসবো।”

ভ্রু কুঁচকে নিলো শোভন। জ্যোতি দুঃখ নিয়ে বললো,
“ভাবীর সঙ্গে কথা হয়েছে। কথা বলে মনে হলো মা অনেক অসুস্থ। নিয়ে যাবেন আমায়?”

প্রতিত্ত্যুরে না বলতে পারলো না শোভন। সময় নিয়ে বললো,”হুম নিয়ে যাবো।”

অধরে হাসি ফুটে উঠল। প্রশ্ন করল,”কবে?”

“পরশু অফিস থেকে ছুটি এনে না হয় যাবো।”

“আচ্ছা।”

শোভন একটা শপিং ব্যাগ জ্যোতির কোলের উপর রাখলো। জ্যোতি তার দিকে তাকালো। স্ত্রীর চাহনি দেখে শোভন বললো,”এটা তোমার জন্য।”

ব্যাগটি খুলে দেখলো জ্যোতি। ভেতরে একটা শাড়ি আর হিজাব। শোভন জিজ্ঞেস করল,”পছন্দ হয়েছে?”

“হুম শাড়িটা খুব সুন্দর। কিন্তু হঠাৎ শাড়ি কেন?”

“কাল একটা ইনভাইটেশন আছে তাই নিয়ে এলাম। এমনিতে শাড়িতে কিন্তু তোমায় মন্দ লাগে না।”

কথাটা বলেই উঠে গেলো শোভন। জ্যোতি সেখানেই ঠাঁই বসে রইলো। বিড়বিড় করে বললো,”হুহ সেদিন তো ঠিকই বললেন শাড়িতে আমায় ভালো লাগে না। এখন আবার ঢং করে অন্য কথা বলছেন?পাল্টিবাজ।”
_______

একদিন পার হলো। আজ তনিমার জন্মদিন।জন্মদিনের অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করা হয়েছে। ছোটো খাটো নয় বরং বেশ বড়োসড়ো আয়োজন করা হয়েছে সেখানে।জ্যোতির শাড়ি পরা প্রায় শেষের দিকে কিন্তু শেষে একটি ঝামেলায় পড়ে গেলো সে। কুচিটাই ঠিক করতে পারছে না। একবার ভাবলো,শোভনকে বলবে। কিন্তু মুহূর্তেই ভেতরে জড়তা কাজ করল।

ঘরের বাহির থেকে ডাক এলো,”হয়েছে তোমার?”

জ্যোতি কী করবে বুঝতে পারছে না। শেষে জড়তা দূরে ঠেলে দরজার ছিটকিনি খুলে দিলো। শোভন ভেতরে প্রবেশ করে ভ্রু কুঁচকে নিলো। কিছু বলার জন্য অগ্ৰসর হলো। তার আগেই জ্যোতি নিচু স্বরে বললো,”একা একা না আমি কুচিটা ঠিক করতে পারছি না। কুচিটা কী একটু ধরবেন?”

অপ্রস্তুত হয়ে গেলো শোভন। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে জ্যোতির দিকে। প্রশ্ন করল,”তাহলে সেদিন কীভাবে শাড়ি পরলে?”

“পাশের ফ্ল্যাটের ভাবী সাহায্য করেছিলেন।”

“ওহ।”

জ্যোতি চোখ তুলে তাকালো। বললো,”ধরবেন না?”

“হুম। কোথায় ধরতে হবে?”

জ্যোতি হাত দিয়ে দেখিয়ে দিলো। শোভন কুচিটা ধরে রাখলো। কুচি ঠিক হতেই শোভন সরে দাঁড়ালো। জ্যোতি মাথায় হিজাব বেঁধে ঠোঁটে লিপস্টিক দিলো তারপর শোভনের দিকে ঘুরলো। বললো,”হুম আমি তৈরি। এবার চলুন।”

শোভন কিছু বললো না। এগিয়ে এলো জ্যোতির দিকে। জ্যোতি ভ্রু কুঁচকে নিলো। শোভনের তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। ড্রেসিং টেবিলের উপর থেকে একটি টিস্যু নিলো হাতে। তারপর জ্যোতির খুব নিকটে গিয়ে ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দিলো। চমকে গেলো জ্যোতি। শোভন বললো,”এবার ঠিক আছে। চলো।”

চলবে _____