সাদা মন পর্ব-০১

0
1

সাদা_মন (পর্বঃ১)

ভাইয়ার বিয়েতে গিয়ে ভাবির বড় বোনকে দেখে আমি ফিদা। ভীষণ লম্বা,ফর্সা এক নজরকাড়া সুন্দরী। চোখের ভেতর যেন সমুদ্রের গভীরতা। সে গভীরতায় যে কাউকে ডুবিয়ে দিতে পারে ক্ষণিকেই। এতো সুন্দর মেয়ে আমি জীবনে খুব কমই দেখেছি।

ভাইয়ার পাত্রী দেখা থেকে শুরু করে গায়েহলুদ পর্যন্ত কোনো কিছুতেই আমি থাকতে পারিনি। জেলা শহরে নিজের ব্যক্তিগত ব্যবসা শুরু করেছি মাসকয়েক আগে। এরমধ্যে বাড়িতে আসাবিয়েরর সুযোগ পাই নি। আজকে তো ভাইয়ার বিয়ে। না এসে পারা যায়? বাড়িতে আমার নিজেরও কিছু দায়িত্ব আছে। সবাইকে নিয়ে বরযাত্রী হয়ে চলে এলাম ভাইয়ার শ্বশুর বাড়িতে।। এসে হলো ভয়াবহ দুর্ঘটনা; জীবনের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ের দেখা পেলাম। আমারও বিয়ের বয়স চলে। সাতাশ বছর বছর। ভাইয়ার বয়স ঊনত্রিশ। শুনেছি আমাদের হবু ভাবীর বয়স বাইশ বছর। সে হিসেবে ভাবীর বড় বোন বয়সে আমার থেকে ছোটও হতে পারে।

বিয়ে বাড়িতে আমি শুধু ঘুরেফিরে এই মেয়েটাকেই দেখেছি। ভীষণ চুপচাপ। পরিচয়ও হয়নি প্রথমে। আড়াল থেকেই দেখেছি সুন্দরীকে। আর ভাবিও দেখতে বেশ সুন্দর। কিন্তু বড় বোনটা আরো বেশি সুন্দর। ওনার জামাইটাকে এজবারও দেখলাম না সাথে। আমার ভীষণ আগ্রহ এই নারীর প্রতি।

আমার আম্মা আসেন নি আজকে বরযাত্রী হয়ে। শুধু আমরাই এসেছি। আড়ালে গিয়ে আম্মাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম–“আম্মা, ভাবীর বড় বোনের জামাই কি করে?”
“মহিলা মানুষের ব্যাপারে তোর এত কথা জানার দরকার কি?”

আম্মার ধ’মকে আমি আর কথাই বাড়াতে পারি নি। আমতা আমতা করে ফোনটা কে’টে দিলাম। মনে মনে ভাবছি আমি আবার ধরা খেয়ে গেলাম না তো আম্মার কাছে! কিছুটা ভয়ও পেলাম। শুনেছি ভাবীর ভাইয়েরা ছোটখাটো চাকরি করে। বাবা নেই ভাবীর।

বিয়ে বাড়িতে কত বার চেষ্টা করেছি শুধু বেয়াইনের সাথে একটু আলাপ করার জন্য। কিন্তু কোনোভাবেই আলাপ করার সুযোগ পেলাম না। যখন বিদায় নেবার পালা তখন উনি সামনে আসলেন। আমি কাছে গিয়ে সালাম দিয়ে বললাম–” আসসালামু আলাইকুম বিয়াইন সাহেবা! আমি সম্পর্কে আপনার বেয়াই, পাত্রের ছোট ভাই!”
“অআলাইকুমুস সালাম। ভালো আছেন আপনি?”

এটুকু বলেই তিনি কে’টে পড়লেন। আমার জবাব শোনারও অপেক্ষা করেন নি। এরপরে আমি কয়েকবার উঁকি দিয়েও আর দেখতে পেলাম না। ভঙ্গ হৃদয় ফিরে এলাম নিজ বাড়িতে। ভাইয়ার বউ নিয়ে পুরো বরযাত্রীও ফেরত এসেছে।

বাড়িতে এখন বধূবরণ চলছে। মা এসে ভাইয়ার সাথে ভাবিকে নিয়ে গেলেন ঘরে। ভাবছি কিভাবে কথা বলা যায় ভাবির সাথে! আমার মনের ভেতরে এখনো তার বড় বোনের চেহারাটাই।

অনেক মানুষজন এসেছে ভাবীকে দেখতে। একটু যে বসে আলাপ করব সেই সুযোগও নেই। বধূবরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলো এশার পরে।

রাতে খাবার পর্ব চলছে। এর মধ্যে কয়েকবার ভাবির আশেপাশে ঘুরেছিলাম কিন্তু আলাপ করতে পারিনি। রাতে ভাইয়া যখন বাসর ঘরে যাবে আমিও তার পিছু নিলাম। ভাইয়াকে বললাম–” আমাকে একটু নিয়ে যাও না! ভাবির সাথে একটু কথা বলি! সেভাবে কথাও হয় নি।”

ভাইয়া সহজেই আমার আবদার গ্রহণ করল। আমাকে নিয়ে গেল বাসর ঘরে। ভাবী বিশাল ঘোমটা দিয়েছে আমাকে দেখে। আমার সাথে যদিও পরিচয় হয় নি। সম্ভবত আমার ছবি দেখেছে আগে। চিনতে পেরেই ঘোমটা টেনেছে বড় করে। ভাইয়া বসেছে খাটের উপরে, ভাবীর পাশে। আমি একটা চেয়ার টেনে বসলাম বিছানায় অদূরে। ভাবির সাথে পরিচিত হতে শুরু করলাম–“আমি রিহান, আপনার একমাত্র দেবর!”

“জ্বী!”– বেশ লাজুক কণ্ঠে ভাবী জবাব দিলেন।

” কেমন লাগছে আমাদের এখানে?”

“আলহামদুলিল্লাহ ভালো।”

আমি আস্তে আস্তে ভাবীট ভাইদের সম্পর্কে জানতে চাইলাম। ভাবী জানালেন, তাট দুই ভাই বিবাহিত। বাচ্চাকাচ্চাও আছে দুজনেরই। ভাই-বোনদের মধ্যে সবার ছোট ভাবী। আমি ভীষণ আগ্রহে জিজ্ঞেস করলাম–” আপনার বড় বোনের হাজবেন্ড কি করে?”

“আপনি জানেন না আমার বড় বোনের কথা?”–ভাবী পাল্টা প্রশ্ন করল আমাকে।
আমি অবাক হলাম। কিভাবে জানবো তার বড় বোনের কথা! কৌতুহলী কণ্ঠে শুধালাম–” কি ঘটনা বলুন তো!”

ভাবি বলতে শুরু করলেন।

চলবে