#সায়াহ্নের_প্রেমছন্দ
#পার্ট_২৩
জাওয়াদ জামী জামী
” ভাইয়া, তুমি একবারও পেখমের কথা জিজ্ঞেস করলেনাযে? ও কেমন আছে, তোমার জানতে ইচ্ছে করেনা? ”
বাহিরের উঠানে মাটিতে চুলা বানিয়ে সেখানে রান্না করছে নাবিলা আর প্রতিবেশি কয়েকজন মেয়ে। অনতিদূরেই বসে গল্প করছে রাজ্য, কানন, আর অরবিন্দ। অরবিন্দের একটা ফোন আসলে সে উঠে গেলে, তখনই জিজ্ঞেস করল কানন।
” অন্যের স্ত্রী’র কথা আমি জানতে চাইব কেন? তাছাড়া ও সুখে থাকবার জন্যই বিয়ে করেছে, তাহলে সুখী হবেনা কেন! ”
” এটা তোমার মনের কথা নয় নিশ্চয়ই? আর কেউ না জানুক, আমি জানি তুমি পেখমকে কতটা ভালোবাসতে। ভালোবাসতে বলছি কেন! তুমি এখনো ওকে ভালোবাস। ”
” তুই ভুল জানিস। এখন আমি আর কাউকেই ভালোবাসিনা। না জেনে নিজের ভালোবাসার মানুষকে অপমান করেছি। যখন সে সুখী হতে অন্যের ঘরনি হয়েছে, তখন কেন ওকে মিছেই ভালোবাসতে যাব। থাকুকনা সে তার দুনিয়ায় সুখে। ”
” আমার জানায় কোন ভুল নেই। তুমি ওকে ভালোবাসোনা বলে, নিজের মনকে প্রবোধ দিতে চাইলে কি হবে, তোমার চোখে পেখমের জন্য ভালোবাসা দেখেছি আমি। আর সে ভালোবাসা কভু ফুরোবার নয়, সেটাও আমি বুঝি। ”
” একটু বেশিই বুঝিস তুই। অতীত মনের গহীনে পুষে রেখে কষ্ট পাবার মানুষ আমি নই। নিজের দুনিয়ায় আমি বেশ সুখেই আছি। ”
” বিয়ে করছনা কেন? বড়মা তোমার জন্য কত পাত্রী দেখছে, কিন্তু তুমি প্রতিবারই মানা করে দিচ্ছ, কেন? ”
” এইতো বেশ আছি। অযথা কেন অন্য একজনকে নিজের জীবনে জড়াতে যাব। আমি নিজেকে নিয়েই আস্ত একটা পৃথিবী গড়েছি। সেই পৃথিবীতে আমি ছাড়া অন্য কারো ঠাঁই নেই। আমি আজকাল হিংসুটে হয়ে গেছি বুঝলি? নিজেকে নিয়েই সুখী থাকতে শিখেছি। তাই আমার পৃথিবীতে আমি একাই সুখী থাকতে চাই, অন্য কাউকে নিয়ে নয়। ”
” পেখম সুখে নেই, ভাইয়া। ওর হাজবেন্ডের একট্রা ম্যারিটাল এ্যাফেয়ার আছে। ও প্রতিনিয়ত নিজের সাথে, পরিবারের সাথে লড়াই করে বেঁচে আছে। ”
কাননের এই কয়েকটা কথাই রাজ্যের ভেতরের অদৃশ্য বলয় ভাঙতে যথেষ্ট ছিল। যে বলয়ের আড়ালে রাজ্য নিজের ভালোবাসা, বিরহ, কষ্ট আড়াল করে রেখেছিল। দুনিয়াকে জানিয়ে দিয়েছিল, ও বেশ আছে। দিনের আলোয় কষ্ট চেপে হাসতে শিখেছিল। কিন্তু রাতের আঁধারে সেই বলয় ছাপিয়ে কষ্টেরা হানা দেয় ঠিকই। ওকে ভাসিয়ে দেয় রোদনের জলধিতে। বেশ কিছু মুহূর্ত নিরব থাকার পর কাননের দিকে চোখ তুলে চায় রাজ্য। কানন লক্ষ্য করল, ওর ভাইয়া কাঁপছে। তার আঁখিদ্বয় অশ্রুতে পরিপূর্ণ।
” আমার সাথে মজা করবিনা বলে দিলাম। ” ফ্যাসফেসে গলায় এতটুকুই বলতে পারল রাজ্য। ওর হার্টবিটেরা পাগলা ঘোড়ার ন্যায় ছুটোছুটি করছে।
” আমি তোমার সাথে কখনো মিথ্যা বলিনা, সেটা তুমি জানো, ভাইয়া। ”
” কিভাবে জেনেছিস? ”
” ঋত জানিয়েছে আমাকে। ওরা পেখমকে ভিষণ কষ্ট দেয়। সারাক্ষণ কটুকথা শোনায়। এমনকি এখান থেকে কেউ গেলেও , তার সামনেই নানান অপমানজনক কথাবার্তা বলে। অবশ্য ওর হাসবেন্ডের পরকীয়ার কথা সবাই জানেনা। ঋত কয়দিন আগে ঢাকা গিয়েছিল। কোন কারনে প্রান্তর ভাইয়ার ফোন ওর হাতে আসে। ফোনের গ্যালারিতে ও পেখমের হাজবেন্ডের সাথে একটা মেয়ের ছবি দেখে। ছবিগুলো ক্লোজ ছিল। সেখান থেকেই ঋত যা বোঝার বুঝে নেয়। আর বিষয়টি যেহেতু প্রান্তর ভাইয়া জানে, তারমানে অবশ্যই পেখমও জানে। কারন ভাইয়া জানার পরও সেটা পেখমের কাছে অবশ্যই লুকাবেনা। ”
” এতকিছুর পরও ইডিয়ট মেয়েটা কেন হাজবেন্ডের সাথে থাকছে? চলে আসছেনা কেন? ওর পরিবারের লোকজন কিছু বলছেনা? ” রাজ্য রেগে জিজ্ঞেস করল।
” রাকিব চাচা, রাশেদ চাচা পেখমের শ্বাশুড়ি, হাজবেন্ডের ওপর নাখোশ। তারা চাচ্ছেন পেখমকে নিয়ে আসতে। কিন্তু পেখম এখনও তাদের কিছু জানায়নি। তাই তারাও কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেননা। ”
” অতিবুদ্ধিমতী মেয়ে। কোথায় হাজবেন্ডের মাথা ফাটিয়ে দিয়ে গ্রামে চলে আসবে। কিন্তু সেটা না করে দয়াবতী সাজতে গেছে বোধহয়। ”
রাজ্য রাগ হজম করার চেষ্টা করছে। ও ভালো করেই জানে, পেখমের ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলানোর অধিকার ওর নেই। কানন আজ ওর পুরোনো কষ্টের সাথে নতুন এক কষ্টও যোগ করে দিয়েছে। যে কষ্টের সংহার পেখম না চাইলে ও নিজে কখনোই করতে পারবেনা।
***
” রাতে বাসায় আসোনি যে? কোথায় ছিলে সারারাত? ”
সকালে বাসায় আসলে মৃদুলকে প্রশ্ন করল পেখম।
” সে কৈফিয়ত আমি তোমাকে দেবোনা নিশ্চয়ই? ”
” অবশ্যই দেবে। কৈফিয়ত দিতে তুমি বাধ্য। তুমি স্বীকার কর আর না কর, আইনত আমি তোমার স্ত্রী। তাই তোমার ভালোমন্দ জানার অধিকার, খোঁজ খবর নেয়ার অধিকার আমার আছে। আমি জানতে চাইলে তুমিও উত্তর দিতে বাধ্য। ”
” তাই নাকি! যদি উত্তর না দেই, তবে কি করবে তুমি? ”
” আমি যে কি করতে পারি সেই সম্পর্কে কোন ধারনাই নেই তোমার। শুধু শুধু নিজেকে কেউকেটা ভাবতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে এনোনা। মনে রেখ, পাপের শাস্তি কেউকেটারাও ভালোভাবেই পায়। ”
” তুমি এমন গলা বাজি করে কি প্রমান করতে চাও? নিজেকে আদর্শ বউ মনে কর নাকি! স্বামীকে আঁচলে বেঁধে রাখলেই কি আদর্শ বউ হওয়া যায়? আদর্শ বউ হতে গেলে, ভালোবাসতে জানতে হয়, সম্মান করা শিখতে হয়। যেগুলো তোমার মাঝে নেই। তাই গলা বাজি না করে নিজের চরকায় তেল দাও। ”
” কে হতে চায় আদর্শ বউ! হ্যাঁ, একসময় হয়তো আদর্শ বউ হবার প্রবল ইচ্ছে ছিল, কিন্তু তোমার আচরণে সে ইচ্ছে কবেই উবে গেছে। দুশ্চরিত্র, পরনারীতে আসক্ত ব্যক্তির বউ, আর যাই করুক কখনো আদর্শ বউ হতে চাইবেনা। বড়জোর তারা প্রতিবাদী হতে পারে। কারন আমি দেখেছি, আদর্শ বউ হয়ে কখনোই দুশ্চরিত্র স্বামীর স্বভাব ঠিক করা যায়না। বউকে কোমলপ্রান হতে দেখলেই স্বামীদের মনে শয়তান বাসা বাঁধে। ”
” এরপর থেকে তুমি যদি নিজের মুখকে কন্ট্রোল করতে না পার, তবে আমার হাতে থাপ্পড় নিশ্চয়ই খাবে। কথাটা মনে রাখতে পারলে তোমারই মঙ্গল। ”
” সময় আসলেই দেখা যাবে, কে কাকে থাপ্পড় মারে। বাই দ্য ওয়ে, সারারাত নিশ্চয়ই গার্লফ্রেন্ড রূপী রক্ষিতার সাথেই কাটিয়েছ? এখন ফ্রেশ হয়ে নাও, নাস্তা কর। আমি ভার্সিটিতে যাচ্ছি। ”
পেখমের কথা শুনে মৃদুল ওর দিকে তেড়ে আসলে, পেখম তাকে পাত্তা না দিয়েই রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
***
” ও মা মিমো বেইবি, তুমি এসেছ! এস ভেতরে এস। মৃদুলও আজ বাসায় আছে। আজ ও বোধহয় ছুটি নিয়েছে। আজ আমাদের সাথে লাঞ্চ করবে তুমি। তোমার পছন্দের খাবার রান্না হবে আজ। ” দরজা খুলে মিমোকে দেখে বিগলিত হয়ে গেলেন আইভি রহমান। তিনি হাত ধরে মিমোকে ড্রয়িংরুমে নিয়ে আসলেন।
” তুমি কেমন আছ, আন্টি? তোমার আদরের বউমা কোথায়? ”
” আমি কিভাবে ভালো থাকি বল? কি এক্টা ছেলের বউ কপালে জুটেছে। সংসারের সুখ নষ্ট করার জন্য এমন বউ এক পিস থাকলেই চলবে। ” আফসোসের সুরে বললেন আইভি রহমান।
” কষ্ট পেওনা, আন্টি। শুধুমাত্র ঐ মেয়েকে দোষ দিয়ে কি করবে বল? আংকেলও কিন্তু সমান দোষী। তার জন্যই এসব হয়েছে। ”
” তার কথা আর কি বলব। সে যেমন আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে, তেমনি আমার ছেলের জীবনটা নিয়েও জুয়া খেলেছে। ”
” মেইন কালপ্রিট যে আংকেল, এটা কিন্তু তোমাকে স্বীকার করতেই হবে। ”
” অস্বীকার আমি কোনকালেই করিনা। এসব কথা বাদ দাও। কি নেবে? সফ্ট ড্রিঙ্ক নাকি সোডা? মৃদুল বোধহয় ঘুমাচ্ছে। তুমি চাইলে ওর কাছে যেতে পার। আমাকে বল কি খাবে? আমি নিয়ে আসছি। তিনজন একসাথে খানিকক্ষণ আড্ডা দেব। ”
” থ্যাংকস, আন্টি। তুমি কত সহজেই আমার মনের কথা বুঝে নাও! আমি মৃদুলের কাছে যাচ্ছি। তুমি সোডা নিয়ে এস। ” মিমো দোতলায় মৃদুলের রুমে চলে গেল।
আইভি রহমান কিচেনে এসে শেফকে কয়েক রকম খাবারের কথা বলে সোডা নিয়ে ওপরে চলে গেলেন।
দুই ঘন্টা মৃদুল মিমোর সাথে আড্ডা দিয়ে আইভি রহমান নিজের রুমে আসলেন।
***
রুমে ঢুকেই পেখম স্তব্ধ হয়ে গেছে। বিয়ের পর থেকেই এই রুমে থাকছে ও। তাই কখনো নক করে ভেতরে ঢোকার কথা চিন্তাই করেনি। তবে এই মুহূর্তে ওর মনে হচ্ছে, নক করে ঢোকার অভ্যেস থাকলেই বোধহয় ভালো হত। কিংবা আজ পুরো ক্লাস করেই আসলে পারত। কেন শরীরটা আজই খারাপ হতে হল?
মৃদুল পেখমকে দেখেই মিমোকে ছেড়ে দিল। ও এতক্ষণ মিমোকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে ছিল।
” সারারাত ফূর্তি করে এসেও সাধ মেটেনি? রুমের বিছানায় তোমার রক্ষিতাকে না আনলে হতোনা? এই চরিত্র নিয়ে তুমি নিজেকে সুশীল দাবী কর? ”
” হে ইউ, কাকে তুমি রক্ষিতা বলছ? তুমি জানো আমি কে? আমি চাইলে এই মুহূর্তে তোমার চুলের মুঠো ধরে বাসা থেকে বের করে দিতে পারি? ”
” তুমি কে সেটা আমার কাছে ম্যাটার করেনা। আমার কাছে তোমার একমাত্র পরিচয় তুমি এই লোকটার রক্ষিতা। আর কি বললে? আমাকে চুলের মুঠো ধরে বের করে দেবে? পরে এর ঝাঁঝ সামলাতে পারবেতো? সামলাতে পারলে ধরো চুলের মুঠো। এক্ষুনি এই রুম ছেড়ে বেরিয়ে যাবে তুমি। যতদিন আমি এই বাড়িতে আছি, ততদিন ভুলেও যদি রুমের এক ইঞ্চিও ভেতরে ঢোক, তবে তোমার মাথা একটাও থাকবে কিনা তার গ্যারান্টি আমি দিতে পারছিনা। ”
পেখমের উগ্র রূপ দেখে মৃদুল মিমো দু’জনেই ভড়কে গেল। তবে মিমো হাল ছাড়লনা। নিজেকে জাহির করতে চাইল।
” জোর করে সম্পর্কটা ধরে রাখতে চাইছ তুমি? আচ্ছ ছ্যাঁচড়া মেয়েতো! যেখানে মৃদুল তোমাকে চায়না, সেখানে তুমি জোর করে ও৷ বাড়িতে থাকছ! একমাত্র তোমার মত মিডল ক্লাস মেয়ের পক্ষেই এসব সম্ভব। ”
” আমি কি করতে চাইছি তার ব্যাখ্যা তোমাকে দেবোনা নিশ্চয়ই? আমি কি করব, সেটা কয়দিন পরেই দেখতে পাবে। আর আমার ক্লাস সম্পর্কে না ভেবে নিজের শরীরে যে রক্ষিতার ট্যাগ পরে গেছে সেটা নিয়ে ভাব। আজ আমি তোমাকে রক্ষিতা বলছি, কয়দিন পর আরও অনেকেই ঐ নামে তোমাকে ডাকবে। সেটা শুনতে ভালো লাগবেতো? বেরিয়ে যাও। আর ভবিষ্যতে দু’জন চেষ্টা করো আমার সামনে না পরতে। বিষয়টা ভালো হবেনা। গেট আউট। ” পেখম প্রায় ঘাড় ধাক্কা দিয়েই মিমোকে রুম থেকে বের করে দিল। ওর পিছুপিছু মৃদুলও বেরিয়ে গেল।
চলবে…
#সায়াহ্নের_প্রেমছন্দ
#পার্ট_২৪
জাওয়াদ জামী জামী
” এই মেয়ে, তুমি আমার ছেলেকে অপমান করে, আবার ওর রুমেই আসন গেঁড়েছ? তুমি শুধু মিমোকেই অপমান করোনি, অপমান করেছ মৃদুলকেও। নেহাৎ মিমো তোমার মত আত্মসম্মানহীন মেয়ে নয়, তাই সে এই বাড়িতে একমিনিটও থাকেনি। দিনকে দিন তোমার সাহস বেড়ে যাচ্ছে। নইলে এতবড় একটা কাণ্ড ঘটানোর পরও তুমি গুনগুনিয়ে গান গাইছ! থাপড়ে আজ তোমার দাঁত ফেলে দেব। ” মিমো বাসা থেকে বেরিয়ে যেতেই আইভি রহমান তেড়ে আসলেন পেখমের রুমে। দু’কথা শুনিয়ে দিলেন পেখমকে।
আইভি রহমানের চোখ রাঙ্গানি গ্রাহ্য করলনা পেখম। আপন মনে নিজের কাজ করছে। তবে আইভি রহমানের কথার উত্তর দিতে ভুল করলনা।
” অযথা ভুলভাল চিন্তা মনে আনবেননা। আপনি থাপ্পড় মারলে যে আমি চুপ থাকব, এটা ভাববার কোন কারন নেই। আপনার আত্নমর্যাসম্পন্ন মিমোকে বলে দেবেন, নেক্সটে যেন সে তার বয়ফ্রেন্ডকে নিয়ে আমার সামনে না পরে। আজ তাকে ছাড় দিয়েছি, কিন্তু সেদিন ছেড়ে দেবনা। আর হ্যাঁ, এই রুমে থাকার কোনও ইচ্ছেই আমার নেই। আপনার ছেলের মত নোংরা চরিত্রের মানুষের রুমে থাকার কথা চিন্তা করলেই আমার শরীর ঘিনঘিন করে। কিন্তু আপনাদের কথা ভেবেই আমাকে এখানে থাকতে হচ্ছে। আপনার হাসবেন্ড যদি আপনাদের কীর্তির কথা জানতে পারে, তবে আপনাদের কি হবে একবারও ভেবে দেখেছেন? ”
” আমাদের কথা তোমার চিন্তা করতে হবেনা। তুমি তোমার কথা চিন্তা কর। এই বাড়ি থেকে মৃদুলকে বের করে দিলেও ওর থাকার জায়গার অভাব হবেনা। কিন্তু তোমাকে ঘাড় ধরে বের করে দিলে কি হবে চিন্তা করেছ একবারও? ”
” আপনার ছেলের পথেঘাটে রক্ষিতা আছে, তার চিন্তা না হওয়ারই কথা। আর আমাকে নিয়ে চিন্তা আপনারও করতে হবেনা। কল্পনাতেও আমার ঘাড় ধরার কথা ভাববেননা। তাহলে আপনার হাত আর হাতের জায়গায় থাকবেনা। তাই আমার ঘাড়ের চিন্তা না করে নিজের ঘাড় বাঁচাবেন কিভাবে সেটা ভাবুন। ”
” বেয়াদব মেয়ের সাথে কথা বলা মানে, স্বেচ্ছায় অপমানকে ডেকে আনা। কবে যে বাড়ি থেকে যাবে, তখন স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারব। ”
” আপনার স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়া আর কোনকালেই হবেনা। আমি বেরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই আপনার মাথায় নরক ভেঙে পরবে, সে ব্যবস্থাই আমি করব। আমাকে ঠকিয়ে আপনারা মাস্তি করবেন, এটা কখনোই হতে পারেনা। সো রেডি থাকুন। ”
পেখমের কথায় কিছু একটা ছিল যেটা আইভি রহমানের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিল। বিয়ের সময়কার পেখমের সাথে আজকের পেখমের বিরাট ফারাক, আজকাল যেটা ধরতে পারছেন আইভি রহমান। তাই পেখমের হুমকিকে হালকা ভাবে নিলেননা তিনি। তড়িঘড়ি করে চলে গেলে মৃদুলের কাছে।
***
” ডুড, তোর গ্রাম কিন্তু বেশ। অনেকদিন পর প্রকৃতির কাছাকাছি এসে বুক ভরে শ্বাস নিচ্ছি বুঝলি? আহ্ ফ্রেশ হাওয়া। ” অরবিন্দ দু হাত প্রসারিত করল। ও দু-চোখ বন্ধ করে রেখেছে।
রাজ্য মৃদু হেসে তাকায় সুদূরে। ওর শরীর গ্রামে থাকলেও মনটা পরে আছে তার বৃষ্টি বিলাসীনির কাছে। ওর মুখটা চোখে ভাসছে। সেই বৃষ্টিভেজা হাসিমাখা মুখ। মুহূর্তেই হাসি বিলীন হল রাজ্যের। তার বৃষ্টি বিলাসীনি ভালো নেই! কথাটা মনে আসতেই ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে যাচ্ছে। বাঁধ ভাঙ্গা ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে হৃদ কূলে। কোন কিছুতেই ওর মন বসছেনা। বারবার ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে মেয়েটার কাছে।
” কি ব্যাপার দোস্ত, চুপচাপ আছিস যে? এত মনযোগ দিয়ে কি চিন্তা করছিস? ” রাজ্যকে নিরব থাকতে দেখে আবারও কথা বলল অরবিন্দ।
” না তেমন কিছু নয়। ফাইনালি আমার গ্রাম তোর পছন্দ হল! ”
” এটা এখন শুধু তোর গ্রামই নয়, আমারও গ্রাম বুঝলি? আমরা দু’জনই যেমন মা’য়ের ছেলে, তেমনি এই গ্রামটাও আমার। মেয়েটা কে রে, দোস্ত? ” কথার মাঝেই হঠাৎ করেই অন্য প্রসঙ্গে গেল অরবিন্দ।
” কোন মেয়ে? আশেপাশে তো কাউকেই দেখছিনা। ”
” আশেপাশের কোন মেয়ের কথা তোকে জিজ্ঞেস করিনি। আমি বলতে চাইছি, তুই কোন মেয়ের জন্য সব সময় উদাস হয়ে থাকিস? কার কথা ভেবে মাঝেমধ্যে তোর চোখে জল জমে? কে সেই মেয়ে যার জন্য তুই হাসতে ভুলে গেছিস? ”
হুটহাট অরবিন্দের এহেন প্রশ্নে থতমত খায় রাজ্য। আমতাআমতা করে জিজ্ঞেস করল,
” তুই ভুল ভাবছিস। এমন উদ্ভব প্রশ্ন তোর মনে আসল কেন! ”
” প্রশ্নটা যে উদ্ভট নয়, সেটা যেমন আমিও জানি তেমনি তুইও জানিস। আমাকে বলতে না চাইলে বলসিনা। কিন্তু এমন ডাহা মিথ্যা কথা বলিসনা বুঝলি? তোর সাথে মিথ্যা জিনিসটা যায়না। ”
” ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করতে চাচ্ছিস! এসব ব্ল্যাকমেইলকে রাজ্য ভয় পায়না। নতুন কিছু ভাব। ”
” তোকে ব্ল্যাকমেইল করার মত বোকা আমি নই। তোর মনে অন্য কেউ বাসা বেঁধেছে, সেটা আমি অনেক আগেই টের পেয়েছি। নয়তো তোর মত বেহোমিয়ান একটা ছেলে হুট করেই পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গ ত্যাগ করল, কোন কারন ছাড়াই! মাঝেমধ্যে ড্রিংক করতিস, সেটাও ছাড়লি। হুট করেই ক্যারিয়ারের প্রতি মনোযোগী হলি। এসব এমনি এমনি হয়নি সেটা বুঝেছি। এর পেছনে কেউ একজন আছে। যাকে পাওয়ার আশায় তুই বুক বেঁধে ছিলি। ভুল কিছু বললাম? ”
” বলে যা। ” রাজ্য এক দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে আছে।
” কোন একটা কাজে দেশে আসলি। আমাকে বলেছিলি বেশ কিছুদিন থাকবি। কিন্তু একদিন হঠাৎ করেই তুই দেশ থেকে ইউএস চলে গেলি। পুরোদমে পাল্টে গেলি তুই। ধীরে ধীরে পরিচিত সবাইকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলি। সেবার দেশে আসার আগে তোর চেহারায় যে উচ্ছলতা দেখেছিলাম, ইউএস এ যাওয়ার পর তার ছিঁটেফোঁটাও রইলনা। হঠাৎ করেই হাসতে ভুলে গেলি তুই। ভার্সিটি টাইম বাদে তোকে খুঁজে পাওয়া যেত বিভিন্ন বারে। নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতি। এভাবেই চলল এক থেকে দেড় মাস। তারপর আবার নিজেকে স্বাভাবিক করার খেলায় মাতলি। কিন্তু ওপর থেকে নিজেকে স্বাভাবিক রাখলে কি হবে, ভেতর থেকে তুই ভেঙে চুরমার হয়ে গেছিস, সেটা আমি ঠিকই বুঝতাম। তোকে কিছু জিজ্ঞেস করিনি, পাছে কিছু মনে করিস তাই। তোকে হারানোর ভয় হত আমার। তাই তোকে কষ্ট পেতে দেখেও নিরব থেকেছি। চেষ্টা করেছি, আগের থেকে বেশি বেশি তোকে সঙ্গ দেয়ার। ”
অরবিন্দের কথা শুনে রাজ্য চমকে তাকায়। ছেলেটা প্রথম থেকেই সব বুঝতে পেরেছিল! তাইতো রাজ্যের বুঝে আসতনা, কেন অরবিন্দ নিজের কাজ ফেলে ওর কাছে থাকত। আজ সবকিছু ক্লিয়ার হয়ে গেল।
রাজ্য হুট করেই জড়িয়ে ধরল অরবিন্দকে। ওর পিঠ চাপড়ে দিল।
” ধন্যবাদ দিয়ে তোকে মহান করতে চাইনা। তুই এত প্রশংসা হজম করতে পারবিনা। ”
” দিলি তো বাঁশ? ”
” অন্য কিছু লাগত তোর? ”
” তোমরা এখানে? আমি তোমাদের খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে। বাসায় চলো। বড়মা তোমাদের ডাকছে। ” কানন এসে দু’জনের কথার মাঝে কথা বলল।
” ফোন করলেই পারতিস। অযথা খুঁজতে হতোনা। ”
” ফোন বাসায় রেখে বেরিয়েছি। কে জানত তোমরা এতদূর এসে প্রকৃতি দেখছ। অরবিন্দ দা, তাড়াতাড়ি চল। বড়মা পাটিসাপটা পিঠা বানিয়েছে। ”
” আরেকটু আগে আসবেনা? কত বছর হয়েছে পিঠা খাইনা জানো? চল যাই। ”
***
ফ্রেন্ডের বার্থ ডে উপলক্ষে পেখম আর ওর ফ্রেন্ড সার্কেল রেস্টুরেন্টে এসেছে। ওর ফ্রেন্ড ইশার বার্থ ডে আসকে। সে সবাইকে ট্রিট দিচ্ছে। যদিও পেখম আসতে চায়নি। প্রাপ্তির জোড়াজুড়িতে ওকে আসতে হয়েছে।
ওরা কোনার টেবিলে গিয়ে বসল। টেবিল আগে থেকেই বুক করে রেখেছিল ইশা। টেবিলে বসেই সবাই হৈ হুল্লোড় আর গল্পে মজে উঠল। পেখম চুপচাপ ওদের কর্মকাণ্ড দেখছে। রেস্টুরেন্টের পরিবেশ মন্দ নয়। আলো আঁধারের খেলা চলছে রেস্টুরেন্ট জুড়ে। ইশা সবার পছন্দের খাবার অর্ডার দিয়ে নিজেও বন্ধুদের সাথে গল্পে মেতে উঠল। এখনে বসে থাকতে পেখমের ভালো লাগছেনা। রেস্টুরেন্টে ঢুকতেই লক্ষ্য করেছে পেছনের দিকে ছোটখাট বাগান আছে। ও প্রাপ্তিকে বলে পেছনের দিকে যায়। পেছনে এসেই মনটা ভালো হয়ে যায় মেয়েটার। কয়েক রকমের জবা ফুটে আছে বাগানে। আরও বেশ কিছু গাছে নাম না জানা ফুল ফুটে আছে। পেখম এক পা দু পা করে প্রতিটা গাছের কাছেই যায়। হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেয় ফুলগুলোকে। কিছু সময় পর ভেতরে ঢুকতে গিয়ে লক্ষ্য করল এদিকেও রেস্টুরেন্টের আরেকটা অংশ আছে। হয়তো কাপলরা প্রাইভেসি রক্ষা করতে এদিকে এসে বসে। দু’পাশে চারটা রুম। একটা রুমের দরজা খোলা। মৃদু আলো জ্বলছে ভেতরে। হালকা মিউজিক বাজছে। পেখম সেদিকে এক ঝলক তাকিয়েই বন্ধুদের কাছে যেতে পা বাড়াল। আবার সাথে সাথে থেমেও গেল। মৃদুল আর মিমো জড়াজড়ি করে বসে আছে! ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল পেখম। দেখল, মৃদুলের কোলে বসে মিমো। লজ্জায় চোখ ঘোরাতেই দেখল আইভি রহমান এদিকেই আসছেন। পেখম ঝটপট ওদের দুইটা ছবি নিল। এরপর আড়ালে গিয়ে দাঁড়াল। আজ সবকিছুর শেষ দেখবে ও।
***
” মিমো বেইবি, মন খারাপ করোনা। ঐ মেয়েকে আমরা বাড়ি থেকে তাড়িয়েই ছাড়ব। তোমার আংকেলও দেশে নেই। যা করার এই সুযোগই করব। ”
” আপনার মুরোদ আমার জানা হয়ে গেছে, আন্টি। নইলে এতকিছুর পরও ঐ মেয়েকে আপনারা বাড়িতে রাখেন! আপনি চাননা ঐ মেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাক। আপনি আংকেলের প্রপার্টি নিয়ে ভাবেন। নিজের ছেলের সুখ আপনি চাননা ৷ যদি মৃদুলের সুখ চাইতেনই, তবে ঐ গাঁইয়া মেয়ের সাথে ওর বিয়ে দিতেননা। ”
” রাগ করোনা , বেইবি। তুমি কেন বুঝতে পারছনা, আমি কিংবা মৃদুল যদি বেশি বাড়াবাড়ি করি, তবে তোমার আংকেল তার সব প্রপার্টি দান করে দেবে। তাই আমি তার সব সিদ্ধান্তই মেনে নিয়েছি। বাবার প্রপার্টি ছেলেরা পাবেনা, এটা মেনে নেয়ার মত কথা, তুমিই বল? বুল কিন্তু তোমারও আছে। আমি মৃদুলের বিয়ের আগেই তোমাকে বলেছিলাম, দু বছরের আগে তুমি দেশে এসোনা। এরমধ্যে যা করার আমরা করব। আমি সে মত মৃদুলের সাথে প্ল্যানও করেছিলাম। ধীরে ধীরে বিষ দিয়ে মেয়েটাকে শেষ করে দিতাম। কেউ কিছু জানতেই পারতনা। কিন্তু তুমি সবকিছুই ভজঘট করে দিয়েছ। আগেই চলে আসলে দেশে। পেখমও তোমার ব্যাপারে জানতে পারল। নিজের স্বামীকে পরকীয়া করতে দেখলে কোন মেয়ে মেনে নিবে, তুমিই বল? ”
” বাদ দাওনা এসব কথা। নেক্সট এ আমাদের প্ল্যান কি হবে, সেটা ভাবি আমরা। ওর হাত থেকে নিস্তার পেতে কি করব সেটা ভাবছিনা কেন? তোমরা কাজের কাজ না করে দু’জন দু’জনকে ব্লেম করতে ব্যস্ত হয়ে গেছ। ” মৃদুল ধমকে উঠেল।
” কি আর করবে, সরাসরি ডিভোর্স নেবে। এখন আর তোমার বাবাকে ভয় পাওয়ার সময় নেই। তার প্রপার্টি আমাদের প্রয়োজন নেই। তুমি একজন এস্টাবলিশ ডক্টর। তোমার বাবার প্রাপার্টি ছাড়াও তোমার চলবে। যদি নাই হয়, প্রয়োজনে আমরা দেশের বাহিরে চলে যাব। তোমার মা’য়েরটা তিনিই বুঝে নেবেন। তার কথা শুনতে গিয়েই আমরা আলাদা হয়েছিলাম। যেটা করা মোটেও উচিত হয়নি। ” মিমো মুখ ঝামটা দিয়ে বলল।
” মৃদুল, মিমো এসব কি বলছে? সারাজীবন তোমার কথা চিন্তা করেছি। আর সে কিনা তোমাকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে চাইছে? এটা আমি কোনদিনও হতে দেবোনা। ”
” পারলে আটকে দেখান। সব ঝামেলার মূলে আপনি। ”
” সে না পারলে, আমি কিন্তু ঠিকই আটকে দেব। ”
ফোনে করা ভিডিও সেইভ করতে করতে ভেতরে আসল পেখম। ওকে দেখে চমকে উঠল সবাই। পেখম কারও দিকে না তাকিয়ে সোজা মৃদুলের সামনে গিয়ে ওর গালে পরপর কয়েকটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল।
” বলেছিলাম, ভবিষ্যতে কখনো যেন এই মেয়েকে তোমার সাথে না দেখি। তুমি আমার কথা মানতে পারোনি ঠিকই। আমি কিন্তু আমার কথা রেখেছি। ”
” হাউ ডেয়ার ইউ? তোমার এতবড় সাহস, আমার গায়ে হাত তুললে? ” মৃদুল তেড়ে আসল পেখমের দিকে। কিন্তু পেখম ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে।
” আমার গায়ে যদি ফুলের টোকাটিও পরে, তবে তোমাকে ছেড়ে কথা বলবনা। তাই যা করার ভেবেচিন্তে কর। কি ভেবেছিলে, আমাকে ঠকানোর শাস্তি তোমাদের দেবোনা? এমন একটা দিনের জন্যই আমি অপেক্ষায় ছিলাম। নয়তো কবেই তোমাকে লাথি মেরে চলে যেতাম। আমি চেয়েছিলাম যাবার আগে, জনসম্মুখে তোমাদের মুখোর উন্মোচন করব। ”
” বেয়াদব মেয়ে, তুমি আমাদের পেছনে গোয়েন্দাগিরি করছ? আমার ছেলেকে মারতে চাও জন্যই ওর পিছুপিছু এখানে এসেছ? তোমার হাত ভেঙে আমি কুকুরকে দিয়ে খাওয়াব। ” আইভি রহমান পেখমের হাত ধরতে চাইলে ও দু কদম পিছিয়ে গেল।
” নিজের পায়ের নিচে মাটি আছে কিনা আগে সেটা দেখে নিন। কি ভেবেছেন, আমার শরীরে হাত দিলে, আপনাদের হাত আস্ত রাখব আমি? ”
” তোর কিছুই করতে হবেনা, যা করার আমই করব। ঠিক বলেছিতো, মৃদুল? ” প্রান্তরের গলা পেয়ে ওর দিকে তাকায় পেখম।
প্রান্তরকে দেখে মৃদুল আর আইভি রহমান ভয়ে কুঁকড়ে গেল।
ইতোমধ্যেই সেখানে বেশ কয়েকজন ছেলেমেয়ে ভীড় করেছে। তার মধ্যে পেখমের বন্ধুরাও আছে। তারা চেঁচামেচির শব্দ শুনে চলে এসেছে।
এত লোকজন দেখে মৃদুল মাথা নিচু করল। হাজার হোক সে একজন রেপুটেডেড ডক্টর। এভাবে তাকে অপদস্ত হওয়া মানায়না।
প্রাপ্তি আর বন্ধুরা সবাই পেখমের কাছে এসে ওকে জড়িয়ে ধরেছে।
” পেখম, কি হয়েছে? তুই রেগে আছিস কেন? এরাই বা কারা? ” পেখমের বন্ধুরা মৃদুল কিংবা ওর পরিবারের কাউকেই চেনেনা। তারা শুধু জানে পেখম বিবাহিতা।
” চিনে রাখ, এরা সবাই বেইমান। এরা সবাই মিলে আমাকে ঠকিয়েছে। আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। এদের জন্যই এখন আমাকে সমাজের বুকে ডিভোর্সির ট্যাগ লাগিয়ে বাঁচতে হবে। ” কান্নায় ভেঙে পরল পেখম। আর কিছুই বলতে পারলনা সে।
চলবে…